নগ্ন সবুজ ভূমি

সবুজ (জুলাই ২০১২)

কামরুল হাছান মাসুক
  • ১৪
  • ৫৪
আমরা সরকারি দল। সুতরাং আমাদের অবস্থানটা ভাল করে ধরে রাখতে হবে। আপনাদের এই
গোলটেবিল বৈঠকের মধ্যে জানাতে চাই, যে ভাবেই হোক সরকারি দলের অবস্থানটা ধরে রাখতে হবে।
ছাত্র সংগঠন গুলোকে বলেন তারা যেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দখলে নিয়ে নেয়। দখল নিতে
দরকার হলে শক্তি প্রয়োগ করতে বলবেন। দেখবেন নিজের দলের লোক যাতে না মরে। বিরোধী বা
অন্য কোন দলের লোক মারা গেলে আমরা পরে দেখব। পুলিশ বাহিনীদের হাতে নিয়ে নেন। দলীয়
পুলিশদের পদউন্নতি দিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সেট করুন। বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনীদের সজাগ
রাখবেন তাদের যেন কাজের সময় পাওয়া যায়। নিজের সাথে ও কয়েকজন রাখবেন। মনে রাখবেন
জনগণ, সংবাদপত্র এবং বিরোধীদল যাতে টের না পায়। চুরি করতে মজা যদি ধরা না পরে। আপনারা
এমনভাবে কাজ করবেন যেন ধরা না পরেন। জনগণকে বুঝিয়ে শুনিয়ে যা করতে পারেন এর সব কিছু
অনুমোদন পাবে। দলের জন্য যা যা করার দরকার হবে তা আপনারা নিজের বুদ্ধিতে করবেন। দলের
অবস্থান এবং উন্নতিই আমাদের একমাত্র কাম্য।
আমরা বিরোধী দল। আমরা হেরেছি বলে আমাদের জনসমর্থন কম এটা কেউ ভাববেন না। সরকারি
দলকে এখন চাপের মুখে রাখতে হবে। জনগণকে বুঝাতে হবে এই সরকারকে বিজয়ী করে কত বোকামি
করেছে। তা না হলে ক্ষমতা যাওয়ার টিকেট চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। ছাত্র সংগঠনগুলোকে
বলবেন যতক্ষণ পারা যায় ততক্ষণ যেন লড়াই করে যায়। কোন অবস্থাতেই পিছু হটবে না। হরতালের
জন্য বিশেষ বাহিনীদের ঠিক করুন। তাদের প্রধান কাজ হবে হরতালের আগের দিন গাড়ি ভাঙচুর করা,
ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা। এদের অধীনে যা যা লাগে তা আপনারা ঠিক করুন। খরচ করতে থাকুন।
দল ক্ষমতায় গেলে সুদে মূলে শোধ করা হবে। ত্যাগী নেতাদের জন্য আলাদা বরাদ্দ দিয়া হবে।
আমরা কোনদিন ক্ষমতায় যেতে পারব না। আমরা আমাদের তৃতীয় শক্তি বললেও বাসত্দবে আমাদের
কোন শক্তিই নেই। আমাদের সবচেয়ে বেশি যেটি প্রয়োজন সেটা হল বুদ্ধিজীবী বুদ্ধিজীবী ভাবটা ধরে
রাখা। আমরা সরকারি এবং বিরোধী উভয় দলের সমালোচনাই করব। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত না। ক্ষমতায়
গেলে যেন কোন সরকারই আমাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে না পারে।
আমরা সাধারণ জনগণ। এতকিছু বুঝি না। সমগ্র সাধারণ জনগণকে একটা ফুটবল বানিয়ে দিলাম।
যাতে করে যার ক্ষমতা এবং অর্থকড়ি আছে সেই কিক মারতে পারে। সবাই সামনা সামনি জনগণের জন্য
কাজ করে, জনগণের চাহিদা পুরণ করার জন্যই সব কিছু করে। আড়ালে গিয়ে কিক মারতে থাকে। যে
যত বেশি কিক মারতে পারবে সে ততবেশি গোল করতে পারবে এবং সে ততবেশি মেসি, রোনাল্ডো হতে
পারবে।
শুরু করা যাক গল্প খেলা, আমরা সরকারে এসে সে উন্নয়ন করেছি তা চলি্#৮৭২২;শ বছরে ও কেউ করতে পারে
নি। আমরা সবদিক থেকে সফল। দেশের জনগণ এখন খেয়ে পড়ে বাচঁতে পারে। আমরা বিরোধী দল। আমরা যখন সরকারে ছিলাম তখন অনেক উন্নত হয়েছে। এখন দেশের অবস্থা
বারটা বেজে গেছে। আর কয়েকদিন যদি দেশটা এমন অবস্থায় চলতে থাকে। তাহলে দেশ দেশ থাকবে
না। দেশ মরুভূমি হয়ে যাবে। দেশকে বিক্রি হয়ে যেতে হবে।
আমি জনগণরুপি ফুটবল। আমার গ্যাস, বিদু্যৎ, এবং পানি দরকার। গ্যাসের জন্য চুলা জ্বালাতে পারি
না। মাঝে মাঝে যা জ্বালাই তাও আসে মধ্যরাতে। দিনে একবার রান্না করে বাসী পঁচা জিনিষ সারাদিন
খেয়ে কোন রকম বেঁচে আছি। বিদু্যতের জন্য কারখানা চালাতে পারছি না। গরমে পুরান ঢাকার ভাঘর
খানির মত সিদ্ধ হয়ে যাচ্ছি। পানির অবস্থা খুবই খারাপ। মনে হয় বুড়িগঙ্গার নর্দমার পানি খাচ্ছি। পানির
এত গন্ধ ভাবলেই বোমি আসে। সে পানি দৈনিক পান করতে হচ্ছে। সবারই মনে হয়, যে পানি দিয়ে
বাথরুম ছাড়ছি সে পানি দিয়ে পানির পিপাসা মিটাচ্ছি।
আমরা যেহেতু সরকারে আছি সেহেতু জনগণের সব সমস্যা সমাধান করা হবে। জনগণের চাহিদা
অনুযায়ী এ সরকার কাজ করবে। এ সরকার জনগণের সরকার। এ সরকার জনগণের জানমালে নিরাপত্তা
থেকে শুরু করে জনগণ যেন দুমুঠো খেয়ে পড়ে শানত্দিতে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করার সরকার।
বিরোধী দলের মত এ সরকার না।
আমরা বিরোধী দলের লোকেরা সরকারের কথা মানি না। সরকার জনগণকে মিথ্যা আশ্বাস দিচ্ছে।
আবার ক্ষমতা বসার পাঁয়তারা করছে। আমাদের নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করছে। আমাদের মামলা, হামলা
দিয়ে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। সরকারকে বুঝতে হবে আমাদের দাবিয়ে রাখা যাবে না। আমরা কারো
হুমকির ভয়ে ভীত নই। আমরা রাজপথে নেমে সংগ্রাম করতে জানি। আমাদের দল সংগ্রামী দল।
সরকারি দলের মিথ্যা বক্তব্য পত্যহারের জন্য আগামী কাল হরতাল। বিভিন্ন ইসু্য বানিয়ে সরকার
জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর পায়তারা করছে।
কিছু ফুটবলকে মাঠে নামানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। কিছু কিছু ফুটবল মাঠে ও নেমে গেছে। ফুটবলের
চাহিদা কিন্তু তা ছিল না। ফুটবলের চাহিদা ছিল গ্যাস, বিদু্যৎ, পানি, এবং আইনশৃংখলার উন্নতি। কিছু
ফুটবলকে দিয়ে অর্থের বিনিময়ে গাড়ি পুরানো হল। কিছু ফুটবল দিয়ে হরতাল প্রতিহত করার আহবান
করা হল। সেবক ফুটবলারদের মানে পুলিশদের হরতাল প্রতিহত করার জন্য মৌসুম পুরষ্কার ঘোষণা
করা হল। সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হল। কয়েকজন নিরিহ মানুষ মারা গেল। কেউ পঙ্গু, বিকলাঙ্গ হয়ে
গেল।
সরকারি দলের ঘোষণা মতে হরতাল সর্বাত্তক পালিত হয়নি। বিরোধী দলের ঘোষণা মতে এই ফ্যাসিবাদি
সরকারের পতনের জন্য মানুষের স্বতঃফূর্ত অংশগ্রহণ আগামীতে আন্দোলনকে চাঙ্গা করতে সহায়তা
করবে।
সরকারি দলের বৈঠক চলছে। জনগণের কথা বিবেচনা না করে কিভাবে বিরোধী দলকে মোকাবেলা করা
যায় তার নকশা করা হচ্ছে। দলীয় লোকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রশাসন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ
অবস্থানে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিরোধী দলের কয়েকজন নেতাকে গুম অথবা হত্যার
নীল নকশা প্রণয়ন করা হচ্ছে। পুলিশ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ জনগণের গোলাম হলেও তারা
সরকারি দলের কথামত কাজ করার জন্য এই গোলটেবিল বৈঠকে বসেছে। এমন সময় ফুটবলের অনুপ্রবেশ। কোথায় যাচ্ছেন ফুলবল সাহেব।
এই যে দারোয়ান ভাই। আপনে ও ফুটবলের দলেই পরেন কিন্তু। আমি ভিতরে যাচ্ছি। সরকারি দলের
কথা গুলো একটু শুনে আসি।
তাহলে যান। সমস্যা নেই। ম্যাডম বলেছে, ফুটবলকে যেন ঢুকতে দেওয়া হয়। তারাই নাকি সকল
ক্ষমতার উৎস।
হা হা হা। সকল ক্ষমতার উৎস। এই উৎস জনগণকে ফুটবল বানিয়ে দুই দল খেলছে। দর্শক হিসেবে
গাছ গাছালি পাখ পাখালি প্রত্যক্ষণ করছে। কি মজা? কি মজা?
এই যে সরকারি দলের লোকেরা কে প্রবেশ করল। বিরোধী দলের কোন গুপ্তচর নাত। মেমোগেট
কেলেঙ্কারির মত হলে কিন্তু সব শেষ হয়ে যাবে।
না ম্যাডাম। আমি ফুটবল। যাকে নিয়ে কিক দিয়ে মেস খেলছেন। খেলাটা কিন্তু অমীমাংসিত হয়েছে।
ফাঁকে দিয়ে দুটি ফুটবল চিরতরে হারিয়ে গেছে।
ও ফুটবল, বোস। কথা বলবি না। বেশি কথা বললে বের করে দিব।
ম্যাডাম বলছিলাম কি? অনেক ত হল। খেলাধুলা ছেড়ে দিয়ে ফুটবলটাকে উন্নয়ন করার চেষ্টা করুন।
ফুটবলটাকে উন্নত করতে না পারলে দেশের উন্নয়ন হবে না। এত এত গোপন বৈঠক করে কি লাভ। যদি
জনগণের কোন উন্নয়ন না হয়। আমার এক ভাইকে কারা যেন গুম করে ফেলেছে, আরেক ভাইকে মেরে
ফেলেছে, রাসত্দাঘাটের বেহাল অবস্থার জন্য বিভিন্ন জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটছে। চাকুরির নামে বিভিন্ন ধরণের
প্রতিষ্ঠানে যুবকরা ধরা খাচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে রোলারের তলায় পিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। এম
এল এম ব্যবসার ফাঁদে পড়ে দেশের জনগণ মূলধন হারাচ্ছে। অনলাইনে আয় এবং বিভিন্ন ভাবে
জনগণকে বুঝিয়ে যুব সমাজকে ধ্বংসের দ্বার পানত্দে নিয়ে যাচ্ছে। যুবকরা ক্ষুদ্র স্বাার্থের জন্য অনলাইন
ভোয়া ব্যবসার সাথে জড়িত হয়ে সর্বত্র হারাচ্ছে। তড়িৎ গতিতে যদি ব্যবস্থা না করা যায় তাহলে যুবকরা
ধংশ হয়ে যাবে। দেশের অর্থনীতি একেবারে শেষ হয়ে যাবে। এমনিতেই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম
পাগলা ঘোড়ার মত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বিভিন্ন এলাকায় পাঁচার কারীরা মেয়েদের ধরে নিয়ে
যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা খুন, ভর্তি বাণিজ্য, চাঁদাবাজি করছে। মানুষ ন্যায় বিচার পাচ্ছে না।
এই ফুটবলটাকে কে ঢুকতে দিয়েছে। ফুটবল টাকে বলছিলাম কথা না বলতে। তারপরও ফুটবলটা শুনল
না।
ম্যাডাম আমি ফুটবলটাকে একটা লাথি দেই। অনেক দিনের স্বাদ ছিল। এই ফুটবলের জন্যই আমি
একবার হেরেছিলাম। আবার এর জন্যই জিতেছি। জিতাটা ভূলে গেছি। হারাটা এখনো দাগ কেঁটে
আছে। দিতে যখন চাচ্ছেন দেন। বলতে হবে কেন। সব কথা ম্যাডামকেই বলতে হবে। দুর্ণীতির সময়
ম্যাডামকে কিছু বলে দুর্ণীতি করেন না। ম্যাডাম জেলে গেলে নিজের আখের গোছানোর জন্য ব্যসত্দ হয়ে
যান। ম্যাডামের কথা মনে থাকে না। এখন ম্যাডাম ম্যাডাম কুলির মত ডাকতে থাকেন। আপনাদের ভাল
করেই চিনা আছে। সব সুযোগ সন্ধানী।
সবাই উড়াউড়ি করে ফুটবলকে লাথি মারতে যায়।
এই যে, আপনারা কি করছেন। বিদ্যা বুদ্ধি আছে। সবাই এক সাথে গেলে সংবাদ মাধ্যম আছে না।
একে একে যান। একটা একটা করে লাথি দিয়ে আসেন। সর্বশেষটা আমার জন্য রাখবেন। সময় বুঝে
আমি ও একটা দিব। প্রধানমন্ত্রী হলে কত যে সমস্যা। কত কিছু যে ভাবতে হয়। আপনারাই ভাল
আছেন। আমাদের পায়ে পায়ে দুষ। কিছু বললেই কত যে সমালোচনা।
ফুটবল রূপি জনগণ ক্যাঁ ক্যাঁ ক্যাঁ। মরে গেলাম। মরে গেলাম রে।
এই যে নেতারা ফুটবল চেচাঁচ্ছে কেন।
ম্যাডাম আমি ফুটবলের চেচাঁনি বন্ধ করে দেই। আমি আপনার জন্য জান দিয়ে দিতে পারি। মাত্র
ফুটবলের চেচাঁনি বন্ধ করা কোন ব্যাপারই না।
তোষামোদ ভালই শিখেছেন। আগামীতে আপনাকেই দলের সাধারণ সম্পাদক বানানো হবে। দেখি বন্ধ
করেন।
ম্যাডাম সবই আপনার দয়া। একটা মোকড় নিয়ে ফুটবলের পিছে আঘাত।
ফুটবলের জ্ঞান ফিরে আসলে আবার দৌড়াতে থাকে বিরোধী দলের বৈঠক ঘরে। কিরে ফুটবল। কেমন
আছিস। তদের কত বলি মাঠে নাম। তরা মাঠে নামতে চাস না। টাকা-পয়সা ছাড়লে কিছু নামিস।
সবাইকে টাকা-পয়সা দিয়ে ও মাঠে নামানো যায় না। তরা যে কি চিজ। তা ভাবাই মুশকিল।
ম্যাডাম, আপনি যখন সরকারি দলে থাকেন তখন আপনিও কিন্তু চান জনগণ যেন না নামে। তাহলে
আপনার গদিটার একটু সমস্যা হতে পারে। এটা যে ক্ষমতায় আসে সেই ই চায়।
এই ব্যাটা তুই বেশি বকবক করিস। তাই তদের উন্নতি হয় না। নিজেদের উন্নত করতে হলে ছাগলের
তিন নাম্বার বাচ্চার মত বকবক না করে মাঠে নেমে পড়। তাহলে দেখবি দেশ উন্নত হয়ে যাবে। দেশ
উন্নত হলে জনগণ ও উন্নত হবে। আমাদের সাথে থাক। তাহলে দেখবি কি উন্নত করছি।
ম্যাডাম, সরকারি দলও একই কথা বলেছিল। এখন দেখেন না আমার কমরটা ভেঙ্গে ফেলেছে। আপনিও
ক্ষমতায় আসলে এই কাজটা করবেন। বিরোধী দলে থাকলে একটু নরম সুরে কথা বলেন। সরকারি দলে
গেলে লাথি ছাড়া কোন কথাই বলেন না। আমরা ফুটবল আমাদের উচিত কারো দলেই না থাকা। কিন্তু সব জনগণ বুঝে না। এই জন্য এই
সমস্যা। যারা বুঝাতে যায় তারা ও ক্ষমতা পেয়ে গেলে সব ভূলে যায়। আপনাদের উচিত রাজনৈতিক
কারণে নয় জনগণের যেই সমস্যা হয় সেই সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা করা। আপনারা ও যখন
ক্ষমতায় যাবেন তখন বিরোধী দল অথবা সরকারি দল বাদ দিয়ে শুধু মাত্র জনগণের সমস্যা সমাধান
করার চেষ্টা করা উচিত।
এই কে কোথায় আছিস একটা করে লাথি মারত। আমাদের জ্ঞান দেয়। খাইতে পায় না আবার জ্ঞান।
ফুটবল অনেক চেষ্টা করে সব রাজনৈতিক নেতাদের একত্র করে। সবার উদ্দেশ্য বলে, দলগত ভাবে
বিভিন্নতা থাকলেও দেশের ক্ষেত্রে আমাদের সবার উচিত এক থাকা। আমরা অনেক কষ্ট এবং সংগ্রামের
বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি। এই স্বাধীনতাকে এত সহজে ধুলায় মিশিয়ে দিতে পারি না। ছাত্র
সংগঠনগুলো ভর্তি বাণিজ্য করছে, চাঁদাবাজি, খুন, খারাপি করছে। মেয়েদের ধর্ষণ করছে। কেউ কেউ
অর্থের বিনিময়ে মন্ত্রি এমপিদের জন্য ধর্ষণের উপভোগ্য সামগ্রী যোগার করে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছাত্রগুলি যেভাবে অস্ত্র, রামদা, চাপাতির মহড়া দিচ্ছে তাদের দেখে মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সন্ত্রাস
বিষয়ক মৌলিক সাবজেক্ট পড়ানো হয়। যার ব্যবহারিক কিছু বিষয় পত্রপত্রিকায় দিতে হয়। আমাদের
দেশের দুই প্রধান নেত্রী হয়েও মেয়েদের অবস্থার কোন উন্নতি হচ্ছে না। শিক্ষক কর্তৃক মেয়েদের ধর্ষণ,
ছাত্র কর্তৃক মেয়েদের ধর্ষণ, ইভটিজিং, যৌতুক, স্বামী কতর্ৃক নির্যাতনের স্বীকার। এখন আবার নতুন করে
যাদের নাম আসছে তারা হল পুলিশ বাহিনী কর্তৃক। শুনতাম তারা ঘুষ এবং চাঁদাবাজি করে। এখন দেখি
তারা মেয়েদের ইজ্জত ও নেয়। মিছিল মিটিংয়ে সুযোগ পেলেই মেয়েদের সত্দন, বাহু, বুক এবং গোপন
অঙ্গ গুলো ধরার চেষ্টা করে। জেলে নিয়ে কি করে তা হয়ত নাই বললাম। তাদের কাছে নাকি মেয়েদের
গোপন অঙ্গগুলি স্বর্গের খুড়দের মত লাগে।
এই শালা তকে এত মারি তবুও তর লাজ হয় না। লাথি খেয়ে খেয়ে কি করেছিস তা দেখতে পাচ্ছিস।
আমাদের যে গোলটেবিলে বেঠকে এনেছিস। কি হল এনে। আমরা সবাই একই। আমাদের মধ্যে কোন
মত পার্থক্য নেই। যেই টুকু দেখিস তা হল ক্ষমতার লড়াই। বুঝতে পারলি। দেখস না। স্বার্থ হানি হলে
এক সাথে এক যুগে কাজ করি। জেলের মধ্যে একজন আরেকজনকে রান্না করে খাওয়াই। তবে ইদানিং
সরকারি দল আমাদের সাথে বেশি খারাপ ব্যবহার করে ফেলছে। সমস্যা নেই, আমরাও ক্ষমতায় এলে
পুষিয়ে নিব।
আমরা ফুটবল। আমাদের দিয়েই আপনারা ক্ষমতায় আসেন। সর্বশেষ একটা কথা বলি। এই চিরসবুজের
দেশটাকে উলঙ্গ করবেন না। দুর্ণীতির জন্য মুখ দেখাতে পারি না। মেয়েদের যেভাবে ধর্ষণ করা হয় তা
কানে শুনতে পারি না। আইনশৃংখলা বাহিনী যেই অপকর্ম করে তা চোখে দেখতে পারি না। অবলাদের
কান্না সহ্য করতে পারি না।
এই দেশটা চিরসবুজ একটা দেশ। এখানের মানুষগুলি অনেক ভাল। চাহিদা একেবারেই কম। অল্পতেই
তুষ্ট থাকে। এই ভুস্বর্গ ক্ষেত দেশটাকে নগ্ন করবেন না। ইতিমধ্যেই অনেক নগ্ন দেশ হিসেবে পরিচিতি
পেয়ে গেছে। বাহিরের দেশে এই দেশের নামই বলা যায় না। দরিদ্র, দুর্ণীতগ্রসত্দ অভাবী একটা দেশ।
যেখানে মানুষ মানুষের মত থাকে না। পশুদের মত জীবন যাপন করে। মেয়েদের কোন নিরাপত্তা নাই।
যে পারে সেই খেয়ে খেয়ে যায়। এই সবাই আসেনত। আগে দলে দলে লাথি দিয়ে ও মুখ বন্ধ করতে পারি নাই। এখন সবাই মিলিত হয়ে
লাথি দিয়ে মেরেই ফেলি। সবুজ দেশে উনি নগ্ন হতে দিবেন না। কেমন দেশ পাগল জনগণ। যত্রসব।
মারেন। সবাই মিলে মারতে থাকেন। যেন কোন আওয়াজ বের না হয়। মারেন, মারেন। যতদিন মুখ বন্ধ
না হবে ততদিন মারতে থাকেন।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রফিকুল ইসলাম সাগর এক কথায় চমত্কার। ভালো থাকুন। লিখতে থাকুন........।
রোদের ছায়া গল্পের একটা জিনিস খুব ভালো লাগলো , জনগনকে অসহায় ফুটবলের সাথে তুলনা করা // তবে সংলাপ গুলো আরো স্পস্ট হলে ভালো হতো / একটু প্যারা করে লিখলে আর বানানে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন // এত বানান ভুল থাকলে গল্প পড়ার আগ্রহ থাকেনা //
সিয়াম সোহানূর অনেক সুন্দর একটা গল্প পড়লাম। বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন দক্ষ হাতের ছোঁয়ায়। কখন যে জঙ্গনের ঘুম ভাঙবে! ধন্যবাদ ও শুভকামনা কামরুল হাসান মাসুক ভাই।
মিলন বনিক শেষের পরিসমাপ্তিটা বিরাট শিক্ষনীয়...রম্য হলেও এটাই কাম্য...আমরা সাধারণ মানুষরা ফুটবল হতে চায় না....ভালো লাগলো..অনেক অনেক ধন্যবাদ....
প্রফেসর আব্দুস সালাম চমৎকার লিখেছেন, ভালো লাগল
সূর্য গল্পটা আগেই পড়েছিলাম কিছু বলা হয়নি। কি বলব আমি নিজেও যে একটা অংশ ফুটবলের। চমতকার স্যাটায়ার
বশির আহমেদ ব্যাঙ্গাত্বক ঢংয়ে লেখা হলেও কথাগুলো খাটি ও নিরেট । আমরা আমজনতা সারা জীবন রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের ফুটবল হয়ে লাথি গুতাই খেয়ে যাব ।

১৮ মার্চ - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৩৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“মে ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ মে, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী