মতির পত্র লাঞ্চ ও ডিনার

সবুজ (জুলাই ২০১২)

পন্ডিত মাহী
  • ২০
  • ৮৫
এক
ঘর থেকে বের হলেই কে যেনো লোহার খুন্তি গরম করে সেঁকা দেয়। জরিনার ছোট বোনও দিলে এত বড় ছেঁকা দেয় নাই। চারিদিকে ভালো করে দেখলে বোঝা যায়। প্রচন্ড রোদ। গাছের পাতা ধরে ধরে নড়ালেও নড়তে চায় না।। পুকুরের পানি শুকিয়ে অনেক আগেই কৈ, টাকি, পুটিঁর ইহজীবন সাঙ্গ হয়েছে। তারা এখন সর্গবাসী। মাঠের ফসল পুড়ে যাচ্ছে। এই তো সেদিন আব্বাসের খেতে কি করে যেনো আগুন লেগে গেলো। পুরো ফসল পুড়ে শেষ!
শুনেছি আগের কালে নাকি বৃষ্টি হলে বাড়িতে বাড়িতে মানত করতো। বাঙ্গের বিয়ে দেওয়া হতো, সারা গা’য় কাদা মেখে- আল্লাহ মেঘ দে , পানি দে বলে গলা ফাটাতো। আল্লাহ তারপরেই ঝুম ঝুম করে নাকি বৃষ্টি দিত। এখন দেয় না। এখন মানুষের কলজে, কিডনি মানত করলেও বৃষ্টি হবে না। ব্যাং কেন হাতি, ঘোড়া, বাঘের বিয়ে দিলেও বৃষ্টি প্রসব হবে না। পানির দাম যা বেশী! ফিল্টারের পানি এক টাকা এক গ্লাস। ফিল্টার করে মেঘ বানাতে খরচ আছে না! চাইলেই হলো!

কিন্তু আমাদের ছোট্ট গ্রামে গরমের দিনে গরমের থেকেও একটা ভয়ানক সমস্যা দেখা দেয়। গ্রামের মানুষ জান হাতে নিয়ে ঘুমায়, বালিষের তলায় রেখে ঘুমায়। সেই ভয়ানক ব্যাপার হলো, মতি পাগলার পাগলামি।
মতি কিভাবে পাগল হলো তা নিয়ে অনেক মহাভারত রচনা হয়েছে। গ্রামের টুনা ফকির মতি পাগলারে নিয়ে আটখান গান বাধঁছে। প্রতি পূর্ণিমায় সেগুলো গাওয়া হয়। শোনা যায় এক ভাদ্রে মতি রাস্তার পাশের মান্দার গাছের ডাল ভেঙ্গে চিবিয়ে চিবিয়ে গরু চড়াতে যাচ্ছিল। এমন সময় কোত্থেকে যেনো এক ঘূর্নি বাতাস এসে মতি কে উড়িয়ে নিয়ে তুলে আছড়ে ফেলে পুকুরে। সেই থেকে মতি পাগল। গরম বাড়ার সাথে সাথে মতির পাগলামি বাড়ে। গাছ দেখলেই বাদরের মত গাছে ঝুলে পড়ে। ছাগলের মত মুঠ ভরে ভরে পাতা খায়। ও ব্যাটার আজো পেট খারাপ হলো না তাতে!

এদিকে গরম বাড়ার সাথে সাথে গ্রামের মানুষ চার নম্বর সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। মতি পাগলার মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়। আশে পাশের দু’চার গ্রামের যত বাড়িতে ডাব গাছ আছে। সেখান থেকে ডাব নিয়ে আসা হয়। সেগুলো কখনো মতি পাগলাকে খাওয়ানো হয়, কখনো মাথায় ঢালা হয়। আমাদের গ্রামের মেম্বার সাহেব একটা ফ্রীজের ব্যবস্থা করেছেন। যেন মাথা গরম হলেই মতির মাথা ফ্রীজে ঢোকানো হয়। কিন্তু সমস্যা অন্যখানে। ফ্রীজের তো শুধু মাথা ঢোকানো যায় না, পুরো শরীর ঢোকাতে হবে। তাই এখনো ফ্রীজ কোন কাজে লাগেনি। কিছু উৎসাহী ছেলে-পেলে ওটাকে আইস্ক্রীম বানানোর মেশিন হিসেবে ব্যবহার করছে।

মতি পাগলার চারপাশে সব সময় ডজন খানেক মানুষ থাকে। যারা মতির আরাম আয়েশের ব্যবস্থা করে। কিছু মেয়ে আছে, তারা ইয়া বড় বড় হাত পাখা নিয়ে বাতাস করতেই থাকে। সামনে তার কিছু সাগরেদ জুটেছে। ইদানিং শোনা যাচ্ছে মতি পাগলার নাকি আসলে অলৌকিক ক্ষমতা আছে। সে চাইলে সব করতে পারে। বাশ গাছকে গাব গাছ বানাতে পারে, গাছের পাতাকে টাকা বানাতে পারে। আর কত কি!
আমি কি যেন ভাবলাম। তারপর মতি পাগলার পায়ের কাছে এক বিকেলে ধপ করে বসে হাউ মাউ করে কান্না শুরু করলাম। কারন কিছু না, মেট্রিক পরীক্ষায় পাশ করা দরকার। আদু ভাই হিসেবে যে আমার সুনাম গ্রাম ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
মতি পাগলার অবশ্য এতে কোন ভাবান্তর হলো না। আমি তাই ভয়ে ভয়ে ওর পা জড়িয়ে ধরি। মতি পাগলা নড়ে না। এক ভাবে তাকিয়ে থাকে। ওর দৃষ্টি আমার চোখ দিয়ে তীরের মত ভেতরে ঢুকে যায়। তলপেটে চাপ বাড়ে। মতি পাগলার বাড়িতে কি টয়লেট আছে, কোথায়?
তখনই মতি পাগলা হাঁক ছাড়ে। আশেপাশের মহিলারা ভয়ে তিন পা পিছিয়ে যায়।
“আকো”
আমার ভালো নাম আসলে আক্কাস আলী। সবাই ছোট করে নিয়েছে।
আমি ভয়ে খানিকটা কাপড় ভিজিয়ে ফেললাম। কোনমতে উত্তর নিলাম...
“জ্বে, মতি ভাই...”
“আমার পাতা খাইবার মুন চায়, কচিপাতা। বরই, জিকা, তেতুলের কচি পাতা।“
এই হলো মতি পাগলার আরেক গুন। মাথা গেলেই ও গাছের পাতা খাবে। গাছে উঠে বসে মুঠ ভরে ভরে পাতা খাবে। যেন পাতা না মুড়ি খায়। তবে আমি প্রমোদ গুনলাম। আমি তো পাতা আনি নাই। কয়েকটা বাতাসা চুরি করে আনছি মানত করতে। মতি পাগলা চোখ রগরায়, চিৎকার করে...
“আকো, আমি পাতা খামু, পাতা দে। আমার মাথা চুলকায়, মাথার বাল চুলকায়... তোরে আমি গোবরের হালুয়া দিমু। আমারে পাতা আইনা দে... দে... দে...”
মতি পাগলা গোঁ গোঁ করতে থাকে। আমি এক লাফে উঠে দাড়াই। অবস্থা খারাপ, মতি ষাড়ের মত ফুসছে। আমার লুঙ্গির গিট ঢিলা মনে হচ্ছে। টাইট করার সময় নেই। মতি ঘাড় ঘুরায়, পা ঝাকায়। এখনই বোধহয় ১০০ মিটার দৌড়ে সোনা জিতবে, না হয় নিশ্চিত রুপা। মতি পাগলার আশপাশ থেকে সব ভাগছে। মতি ওর পাশের ঝোলার তল থেকে পেয়ারা গাছের তেল দেওয়া লাঠি বের করে।
“আমারে পাতা দে... সোনা আমার পাতা দে... হারামী আমার পাতা দে... পাতা দিবি না...আমারে পাতা দে...”
মতির চিৎকারে বাড়ির উঠোন, গোয়ালের গরু, ছাগল কেঁপে ওঠে। আমি শেষ চেষ্টা হিসেবে আশেপাশের গাছে তাকাই। কোন গাছেই কচিপাতা নাই। মতিরে কে বোঝাইবো এখন পাতা খাইতে চাওয়া ঠিক না। আমি আল্লাহ, আল্লাহ করতে থাকি। বাড়ির গরুটার এক পা মানত করে ফেলি, তারপর আরেক পা। এভাবে লেজে গিয়ে ঠেকে। মতি থামে না। ওর বড় বড় শ্বাস পড়ে। এইবার আর উপায় নাই।
মতি ইয়ালি বলে চিৎকার দেয়। আমি “বাবা গো” বলে দৌড় দেই। লুঙ্গিটা প্রথম ধাক্কায় খুলে গেলো কিভাবে বুঝলাম না। আমি দৌড়াই, মতিও দৌড়ায়। মাথার উপর হেলিকাপ্টারের মত লাঠি ঘোড়াচ্ছে। বিচিত্র কারনে ওর পরনেও লুঙ্গি নাই।

দুই
মরে যাওয়াটা বিচিত্র ছিলো না। কিন্তু জ্ঞাব ফিরে আসতেই আমি নিজেকে জ্যান্ত ফিরে পেলাম। গা কাপুনি দিয়ে জ্বর এসেছে টের পেলাম। মরে যাওয়াটাই বোধহয় ভালো ছিলো। আমার দিগম্বর দৌড়ের পর আমার আর বেঁচে থাকা মানায় না।
“না, না, না... আমি বাঁচতে চাইনা। আমাকে মরতে দাও।“
বাংলা সিনেমার নায়িকার মত চিৎকার করে বলতে চাইলাম। কিন্তু পারলাম না, কারন আমার তো কোন নায়িকা নেই। জরিনার বোন এখন পাশের গ্রামের নান্টুর সাথে বেগুন খেতে যায়, সিনেমা দেখতে যায়। হলে নতুন সিনেমা এসেছে “মন বসে না পড়ার টেবিলে”।
আমার বাবা গ্রামে শরীফ মাস্টার নামে পরিচিত। প্রাইমারী স্কুলের মাস্টার, কিন্তু ভাবে বুঝা যায় কোন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর। সে এখন হাতের ছড়ি ঘোরাতে ঘোরাতে এ ঘর ও ঘর করছে।
“শালার হারামী মৈত্তারে আমি মাটিএ পুইতাফালামু। আমারে পোলারে ভয় দেখায়।“

বাপ আমার বর চিন্তায় পরে গেছে। আমি কোন উপায় দেখি না। মতিরে মাটিতে পুতে লাভ নাই। ও ওখানেও পাতা খেতে চাইবে, ওর ভুত নাঙ্গা দোড় দেবে। শেষ পর্যন্ত গ্রামে সালিশ বসলো। গ্রামের মাতবরকে খবর দেওয়া হয়েছে। দেওয়ান মাতবর একটা আজীব প্রানী। ব্যাটা এক নম্বরের ধরিবাজ। গত বছর বৈশাখে ঝড়ে বড় রাস্তার এক আম গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে। আমাদের গ্রামের ভ্যান ড্রাইভার হারুন সারাদিন খেটেখুটে আসছিল। গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ায় বেচারা গেলো মরে। হারুন মরতেই ওর বৌটা পড়লো অথৈ সাগরে। বসত বারী মাতবরের কাছে বন্ধক। হারামীটা কেমন করে যেনো সব দখল নিয়ে নিলো। আহারে, সবাই ভাবলো মেয়েটার কি হবে! দেওয়ান মাতবর এই ফাঁকে খালি মাঠে তিন নম্বর গোলটা দিয়ে দিল। হারুনের বৌ এখন মাতবরের বৌ। নতুন বৌ আসতেই বাড়িতে এসি লাগিয়েছে। একটু গরম পড়লেই বলে,
“আহারে, বৌটা গেমে নেয়ে গেলো”
বলেই ঘাম মোছার ছলে ব্লাউজের বোতামে হাত দেয়। আবার শীত পড়লেই বলে,
“আহারে, বৌটার শীত করতাছে। আসো সোনা বৌ আমার বুকে ওম আছে”
বলেই চোর ধরা মত জাপটে ধরে। মতি যে কেন ওরে দিগম্বর দৌড় দিলো না। আফসোস!

সালিশে বসে আমি বহুত টেনশনে আছি। মাতবর কি না কি বিচার করে। কপাল ভালো মেয়ে হই নাই। না হলে কোন ফাঁকে যে মেম্বারের চার নাম্বার বৌ হইয়া যেতাম। আল্লাহ বাঁচাইছে। সালিশে গিয়ে আমি লজ্জায় মিশে যাই। মেয়ে-বুড়ো সবাই মুখ টিপে হাসে। আমার নীচের অংশে সিরসির করে। শালার আর জীবনে যদি লুঙ্গি পড়ছি!
মাতবর তার সম্মানিত নড়বরে কাঠের চেয়ার দখল করেছে। মতি পাগলাকে গাছের সাথে বাধা হয়েছে। ওকে দেখে খুব একটা চিন্তিত মনে হলো না। আরামে দক্ষিণাঞ্চল থেকে আমদানী করা পাতা ছাগলের মত চিবাচ্ছে। আমার বাপ তার অভ্যাসের ছড়ি ঘুড়ানো রপ্ত করছে। গায়ে তার সেকেলে মুজিব কোট। আর আমি চিরিয়াখানার বিচিত্র জীব হয়ে রইলাম। মাতবর গলা খাকারি দেয়।
“মতি”
মতি মুখ তুলে তাকায়
“তুই মাস্টার সাহেবের পোলারে মারতে গেছোস?”
মতি যেনো লজ্জা পেলো। মুচকি একটা হাসি দিয়ে আবার পাতা চিবাতে লাগলো।
“কথা কস না ক্যান?” মাতবর আরো জোরে হাঁক দেয়।
মতি কথা কয় না, হাসে। মাতবর খেপে যায়। সালিশ তারাতারি শেষ করা লাগবে। আজ তার নতুন স’মিলের শুভ উদ্ভোধন হবে। শুভকাজ। কত বেকার লোকের চাকরি হবে এর মাঝে।
মাতবর আরেকটু খেপতেই মতি মুখ খোলে,
“পাতা খাইতে মুন চায়। কচি পাতা খামু, আপনের কচি বৌটার মত কচি পাতা... হে হে...”
সালিশে চাপা হাসির গুঞ্জন শোনা যায়। কেউ কেউ জোড়ে হেসে ওঠে। মাতবরের চেয়ারা লাল, নীল, বেগুনি হয়ে যায়। এরপর আর বিচার হয় না। হাসি-তামাশা হতে পারে। মাতবর মতির ভয়ে আর কিছু বললো না। মতি পাগলাকে দোয়া দুরুদ পাড়িয়ে লাভ হবে। কেউ কেউ মতিরে বিয়ে দেবার প্রস্তাব করলো। নিশ্চই এইতা যৌবনের দোষ। এসময় সবাই এক-আধটু পাগলামি করে। মতি না হয় একটু বেশী করে। তবে বৌ আসলে নিশ্চই ঠিক হয়ে যাবে। মাতবর সোজা না করে দিলো। কেনো দিলো জানি না। বিয়েটা কি সে করতে চায়? অবশ্য না করে দেওয়াতে ভালোই হলো। কোন মেয়ের কপাল পুড়লো না। কার এত সাধ মতিকে বিয়ে করে।
বিচারে মতিকে বেঁধে শুধু কচি পাতা দেবার নির্দেশ দেওয়া হলো। এছাড়া কোন ঔষুধ নেই। মাতবর আমার দূঃখে কিছুক্ষন গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করে পাঁচ-ছয় সেকেন্ড দাঁড়িয়ে শোক প্রকাশ করলো। আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম।

তিন
দেখতে দেখতে গ্রামের সব গাছের কচি পাতা যে কয়েকটা ছিলো শেষ হয়ে গেলো। কেউ কেউ হামাগুড়ি দিয়ে রাস্তায়, মাথে, ঝোপে ঝোপে কচি ঘাস খুঁজলো। তবু মতি ছাগলের জন্য কোন কচি ঘাস-পাতা পাওয়া গেলো না। গ্রামে প্রাতিদিন মিটিং বসে। মাতবর পায়চারি করে, হাত মটকায় আর তার কচি বৌয়ের লাল ব্লাউজের কথা ভাবে।
কোথাও কোন উপায় নেই। পাশের গ্রাম গুলোতেও কোন গাছে কচি পাতা নেই। গ্রামে যা আছে সে গাছ গুলো মরে যাবার যোগার। সেগুলো মাতবরের স’মিলে কাটা হবে। প্রতিদিন কেটে নেওয়া হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে গাছ কেনো ঘাসও থাকবে না। তাই কিছু অর্ধনগ্ন বুড়ো ব্যাঙএর বিয়ে দিলো, রাস্তার কুকুরের বিয়ে দিলো। মাতবরও বিয়ে করতে চাইছিলো, কিন্তু মতি পাগলা দূর্যোগে সে আশা পূরন হলো না। কেউ কেউ পুকুরের ঢেলা গায়ে ঘসে ঘসে চামড়া তুলে ফেললো। কারন পুকুরে কাদা নেই। তবু কাজের কাজ কিছু হলো না।
শেষমেশ সবাই যখন হাল ছেড়ে দিচ্ছে। ঠিক তখন হারামী মাতবর, গ্রামের সবাই একটা দৈববানী পেলো। এক কালো কুচকুচে দরবেশ, তার হাত পায়ে কিলবিল করছে সাপের মত অজস্র লতাপাতা। সেখানে লক্ষ লক্ষ কচি পাতা। মতিও স্বপ্ন দেখলো। দরবেশ বলছে,
“গাছ লাগা। মতি মরলেও তোরাও মরবি। ভূত হয়ে যাবি। দিগম্বর ভূত”
গ্রামে আবার সভা বসলো। গাছ লাগাতে হবে। কিন্তু গ্রামে তো পানি নাই। গাছ তো মরে যাবে। এ বছর বৃষ্টি হয় নাই। মাতবর বললো পাইপ দিয়ে নদী থেকে পানি আনবে। তাই করা হলো। এই প্রথম মাতবর একটা ভালো কাজ করলো। আসলে মানুষটা চরিত্র একটু আমার লুঙ্গির মত ঢিলা হলেও, অত খারাপ না। বালি দিয়ে জমি ভয়াট করার জন্য যে পাইপ গুলো মাতবর এনেছে সেগুলো পানি আনার কাজে লাগালো। সবাই গাছের চারা আনলো শহর থেকে। গাছ লাগালো। রাস্তার পাশে, বাড়িতে, জমিতে, সব জায়গায়। আমিও লাগলাম। দিগম্বর ভূত হবার কোন ইচ্ছা আর নাই। মাতবরের স’মিলে আর নতুন করে গাছ কেটে নেওয়া হয়নি।
কিন্তু লাগানো গাছ গুলো বড় হবার আগেই মতি পাগলা মরে গেলো। গরম কমে এসেছিলো। মতি রাতের বেলা চুপ করে থাকতো। একদিন সকালে পাতা খেতে না চেয়ে বললো,
“আমারে ভাত দে, আমারে নতুন ধানের ভাত দে”
মতি কি সত্যি বলছে! রোদ বাড়তে বাড়তেই মতি মারা গেলো। মতি মারা যাবার পর অনেকদিন পর্যন্ত সবাই দিগম্বর ভূত হবার ভয়ে তটস্থ থাকলো। মাতবর আর নতুন বিয়ে করেনি। সে সাময়িক ধর্মে-কর্মে মন দিয়েছে। তবে আসলে মন কোথায় থাকে সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। গ্রামের একোনা থেকে ওকোনা মতির জন্য লাগানো গাছগুলো দিন দিন বড় হচ্ছে। আর কিছুদিন পরেই কোন কোন গাছে ফল ধরবে, ফুল ফুটবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সূর্য চমৎকার রসালো গল্প। মতি পাগলারে বাঁচায়ে রাখা লাগতো। আবার কোন কামে ওরে লাগে। গল্প শুধুমাত্র লিখার গুনেই ভাল লাগলো মাহী
ধন্যবাদ সূর্য দা।
সিয়াম সোহানূর বেশ মজাদার গল্প । আনন্দ, বেদনার ফাঁকে জীবনবোধ উঁকি দেয় গোপন কোণে। ভাল লাগল বেশ।
মাহবুব খান মাহী তোমার লেখার ধরন অনেক ভালো হয়েছে / ভালো লাগলো
রোদের ছায়া গল্প পড়ে কি কমেন্ট করব ভাবছিলাম , চোখে পড়ল প্রথম কমেন্টটি ( আহমেদ মুকুলের ) ওটাই যথাযথ মনে হলো / গল্পের জন্য শুভকামনা থাকলো. /দৃ: আ: '' শুনেছি আগের কালে নাকি বৃষ্টি হলে বাড়িতে বাড়িতে মানত করতো।'' এই লাইনে সম্ভবত বৃষ্টি না হলে হবে //
মিলন বনিক অসাধারণ একটা মেসেজধর্মী রম্য গল্প... ভাবের গভীরতা বর্ণনাশৈলী হাস্য রসটাকে আরো বেশি বর্ণিল এবং আকর্ষনীয় করে তুলেছে...লেখকের হাতে এক গুচ্ছ তাজা লাল গোলাপ..(নতুন গাছ থেকে)..অনেক অনেক শুভ কামনা...
বশির আহমেদ এযে দেখছি এক একটা রসের খনি বেড়িয়ে আসছে । রসালো গল্পে ভরপুর হয়ে উঠছে গল্প কবিতা । মতি পাগলার জনক কে ধন্যবাদ ।
রনীল N/A UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL# উস্তাদ- পাগল নিয়া সিরিয়াস গবেসনা করচ্যান মনে হইতাছে. ফুল টাইম পাগলের দাওয়াই দিলেন, সিজনাল গো ব্যাপারে কিসু কইলেননা! ! গাছের কচি পাতায় ত্যানাগো মাথা ঠান্ডা হইব কি? হিউমারের কাজগুলো চরম হয়েছে. শশুরবাড়ি পাবনাই হওনের যে কত সুবিধা...! :J :J :J
আমারে আর তাল দিয়েন না অস্তাদ। সিজনাল পাগল খুব ভয়ানক!! তাগো জন্য আক্তার ভাইয়ের মৌ চিকিৎসা দরকার।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি শুনেছি আগের কালে নাকি বৃষ্টি হলে বাড়িতে বাড়িতে মানত করতো। বাঙ্গের বিয়ে দেওয়া হতো, সারা গা’য় কাদা মেখে- আল্লাহ মেঘ দে , পানি দে বলে গলা ফাটাতো। আল্লাহ তারপরেই ঝুম ঝুম করে নাকি বৃষ্টি দিত। // Mahi Vai apnar tik ei kothar sathe mil rekhe amar golper boktobbo pesh kobar chesta korechhi....oneke montobbo korechhe bristi sonkhar lekha hoye gechhe...achchha apni bolun to sobujer sathe bristir somporko ta khub kachher na....kortipokkho keno je poroborti sonkha bristi dilen na hole emon prosno keu kortona......golpo pore khub moja peyechhi....valo thakben........
আপনার বক্তব্যের সাথে একমত।
স্বাধীন শুনেছি আগের কালে নাকি বৃষ্টি হলে বাড়িতে বাড়িতে মানত করতো। এই বাক্যে শুধু মাত্র একটা না যুক্ত হবে হলে এর আগে। রম্যের সাথে সচেতনতার দাওয়াই অনেক ভাল লাগল।
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন ..................বর্ষা তো এলো, মতির পরে কী আসছে? পাতা দে=গাছ লাগা- নাকি? ভাল হাসেলেন চমতকার লাগল। শুভেচ্ছা রইল।
এর পর ডুবে যাওয়া মানুষের গল্প। ডুবন্ত কিছু ভাবনা। মাথায় ঘুরছে, লিখে ফেলবো যেকোন সময়। আমার দুয়ারে আসার জন্য ধন্যবাদ।

০১ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৬৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“মে ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ মে, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী