নিশি কন্যা

ক্ষুধা (সেপ্টেম্বর ২০১১)

Muhammad Fazlul Amin Shohag
  • ৫৭
  • 0
  • ৬৯
এই মাসে গল্প-কবিতার ক্ষুধা সংখ্যায় কি লিখবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। তার উপর বাস্তবতার ব্যস্ততায় লেখা-লেখি করার মতো মানসিকতা খুঁেজ পাই না। আমি ছোট খাটো ব্যবসা করি কিন্তু ব্যাস্ত থাকতে হয় অনেক বেশি। তাই ভেবেছি এই সংখ্যায় কোন লেখা দিব না। এই কারনেই অলস ব্যাস্ততার দিন কাটাচ্ছিলাম। এবার ২১ শে বই মেলায় আমার প্রথম লেখা বই ''রক্তে যাযাবর স্বপ্ন'' প্রকাশিত হবার পরে আমি অনেক আবেগি পাঠক পেয়েছি। যারা আমার লেখাকে অনেক বেশি ভালোবেসেছে। এবং আমার ভক্ত হয়ে গেছে। অনেক পাঠকের ফোন পেয়েছি, অনেক পাঠক এসে দেখা করেছে। তাদের সকলের কাছে আমি ঋণী। আমার মতো সামান্য একজন স্বপ্নবাজ পথিককে তারা লেখক হিসেবে অনেক বেশি ভালবাসা এবং সম্মান দিয়েছে। তাদের সম্মানেই মাঝে মাঝে লিখতে বসি। আজ ১৫ আগষ্ট একটা ফোন পেলাম। যাকে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। আমার সেই চেনা-অচেনা (নিশি কন্যা আপু) এখানে তার আসল নামটা প্রকাশ করার নিষেধ থাকায়, তাকে নিশি কন্যা আপু নাম দিলাম। তার সাথে আমার মাত্র তিনটি বার দেখা হয়েছিল। প্রথম দেখা হয়েছিল আরো তিনটি বছর আগে। তখন নিশি কন্যা আপুর বয়স ২৩ বা ২৪ হবে আনুমানিক। তার গাঁেয়র রং ফসর্া এবং দেখতে খুব সুন্দর। আমি তখন গুলিস্তানের বঙ্গ মার্কেটে আমার বন্ধুর কাপড়ের দোকানে চাকরি করি। বন্ধুর দোকানটা মার্কেটের ভিতরে একটা চিপা গলির মধ্যে ছিল। তখন সেখানে মানুষের যাতায়াত খুব বেশি ছিল না। আমাদের দোকানের সামনেই একটা গোপন সিড়ি ছিল। ''বঙ্গরাজ'' আবাসিক হোটেলে যখন পুলিশ বা র্যাব সাপ্তাহিক মাশোয়ারা না পেত, তখন হোটেলে র্যাট ফেলতো (তল্লাশি করতো)। হোটেলের দালাল আর নিশি কন্যাদের পালানোর জন্যই ছিল সেই গোপন সিড়ি। একদিন সন্ধ্যায় আমি একা দোকানে বসে আছি। সামনে ইদ তবু ও আমাদের চিপা গলিতে কোন কাষ্টমার নেই। হঠাৎ দেখলাম সেই গোপন সিড়ি দিয়ে একের পর এক বিভিন্ন বয়সের নারী দৌড়ে নেমে আসছে। আমি জানতাম এরা নিশি কন্যা। তাদের সবার চোখে মুখেই আতঙ্ক। কারো কারো শরীরে উড়না নেই, কারো আবার পায়ে জুতা নেই। সবাই আমার চোখের সামনে দিয়ে যে, যেভাবে পারছে দৌড়ে পালাচ্ছে। জানি আমার করার কিছুই নেই। তাই নিরব দর্শক হয়ে সেই দৃশ্য দেখে যাচ্ছি। হঠাৎ আমার নিরবতা ভেঙ্গে একজন নিশি কন্যা দোকানের সামনে দাড়িয়ে বললো ছোট ভাইয়া ঐ টি শার্টটা দেখাও তো ! তার কন্ঠে জড়তা ছিল। চোখ দুটি জলে টলমল করছিল। মাথায় এলোমেলো চুল, কাধে ভ্যানটি ব্যাগ। তার ফসর্া গালে পাঁচ আঙ্গুলের চরের দাগ স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। পায়ে জুতা ছিল না। অস্থীরতায় তার শরীর কাপছিলো। আমাকে নিশি কন্যা আপু দ্বিতীয়বার বললো ভাইয়া ঐ টি শার্টটা দেখাও। এবার আমার নিরবতা ভাঙ্গলো, আমি টি শার্টটা হাতে নিয়ে তার সামনে মেলে ধরলাম। সে একবার আমার দিকে একবার টি শার্টের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো দাম কত? আমি বললাম আপু আপনি ঐ দিক দিয়ে সোজা চলে যান। কেউ আপনাকে দেখতে পাবে না। তখনই তার চোখে মুখে কৃতজ্ঞতার ছাপ ফুটে উঠলো, জড়তা নিয়ে কোন রকম আমাকে ধন্যবাদ দিয়েই সে আমার দেখানো পথে হাটা ধরলো। আমি বুঝতে পেরেছিলাম সে কিছুই কিনবে না। শুধু কাষ্টমার সাজতে চেয়েছিল।

দ্বিতীবার তার সাথে যখন আমার দেখা হয়েছিলো তখন বঙ্গ মার্কেটে আমার নিজের দোকান। রাত ১০ টায় দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছি। গুলিস্থানে এসে দেখি কোন গাড়ি নেই। গাড়ি পাবার আশায় আমি সামনে হাটতে শুরু করলাম। কিছু দূর যাবার পরই দেখলাম মাঝ বয়সি একজন নারী আমার দিকে হেটে আসছে। তার হাতের জালি ব্যাগে কাচাঁ -তরকারি ছিল। সম্ভবত আলু, পোটল আর পুইশাক। যখনই সে আমাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিল তখন নিয়ন আলোয় সেই চেনা-অচেনা মুখটা ষ্পষ্ট হয়ে উঠলো আমার কাছে। সেই নিশি কন্যা আপু। আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি সে ১০, ১২ হাত সামনে চলে গেছে। তুবু তাকে ডাক দিলাম। প্রথম ডাকেই সে পিছনে ফিরে তাকালো। আমি তার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে বললাম আমাকে চিনতে পেরেছেন আপু? তার চোখে মুখে তখন প্রচন্ড ক্লান্তি। কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো চিনতে পেরেছি। তুমি ভালো আছো ভাইয়া? আমি হ্যাঁ সূচক জবাব দিলাম। এবং প্রশ্ন করলাম এতো রাতে কোথায় যাচ্ছেন? বললো বাজারে এসেছিলাম এখন বাসায় যাচ্ছি। আমি তার ক্লান্তি দেখে যা বুঝার বুঝে নিলাম, বললাম ঠিক আছে যান। সে কিছু বলতে চেয়ে ও থেমে গেল। তারপর ধীর পায়ে সামনে হেটে চললো। আমার তখন প্রিতমের সেই গানটার কথা মনে পড়ে গেল। কে বাবা আর কে সন্তান তার কাছে সবই সমান, হোক হিন্দু বা মুসলান বোদ্ধৗ অথবা খ্রিষ্টান, যাত পাতের ধার ধারে না টাকায় বিক্রি যায়, ক্ষধুার জ্বালা পেটে তুবু ঠোটে হাসির বন্যা, নিশি কন্যা। প্রতি রাতেই বাসর সাজায় খোপায় গুজে ফুল, বোবা চোখে ঝড়তে থাকে বেদনা বকুল, কামনার নায়িকা সে নায়ক পথও লোক, ক্ষুধার কাছে হার মেনে যায় জন্ম মৃতু্য শোক। রাতে সমাজ ভোগ করে আর দিনে করে ঘৃনা। নিশি কন্যা। পেটের আগুন নেভে কিছু টাকা পাবার শোকে, অভিশপ্ত জীবন কাটে জ্বর আর অসুখে, ভদ্র মানুষ নিদ্বিদাতে যখন পাশবিক, মুচকি হাসে এই শহরের সভ্য নাগরিক। রাতে সমাজ ভোগ করে আর দিনে করে ঘৃনা নিশি কন্যা।

নিশি কন্যা আপুর সাথে আমার তৃতীয় বারের মতো দেখা হলো এবারের একুশে বই মেলাতে। সেদিন আমার মনটা খুব খারাপ ছিল। কারন আমার প্রথম প্রকাশিত বইটির কোন সাড়া পাচ্ছিলাম না। এদিকে মেলা শেষ হতে আর মাত্র দু দিন বাকি। আমি নিরবে মাথা নিচু করে বই মেলা চত্বর থেকে বের হয়ে আসছিলাম। তখন ও সন্ধ্যা হতে ঘন্টাখানেক সময় বাকি। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন আমার হাত ধরে টান দিলো। পিছনে তাকিয়ে দেখলাম সেই নিশি কন্যা আপু এবং তার সাথে একজন বয়স্ক পুরুষ। নিশি কন্যা আপু আমাকে বললো ছোট ভাইয়া চিনতে পেরেছ আমাকে? তখন আমার চোখের সামনে পুরনো দিন গুলো ছায়াছবির মতো ভেসে উঠলো। আমি মুচকি হেসে বললাম চিনতে পেরেছি আপু আপনি ভালো আছেন? তারপর পাশের চটপটির দোকানে বসতে বাধ্য হলাম। অনেকক্ষন কথা বললাম। তাকে দেখে খুব সুখি মনে হলো। তার সাথে থাকা বয়স্ক লোকটির সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললো- ও আমার স্বামী। আর আমাকে দেখিয়ে বললো এটা আমার ছোট ভাই। তখন বয়স্ক লোকটি খুব হাসি মুখেই নিশি কন্যা আপুকে বললো, তোমার যে কোন ছোট ভাই আছে আমাকে তো কোনদিন বলোনি? এটা তোমার কেমন সম্পর্কের ভাই? নিশি কন্যা আপু বললো ও আমার আত্মার সম্পর্কের ভাই। মাঝে মাঝে ওর সাথে দেখা হয়। আমি নিরবে তাদের কথা শুনছিলাম। তারা হঠাৎ কি মনে করে যেন দু' জনেই হেসে উঠলো। আমার নিরবতা দেখে বয়স্ক লোকটি বললো ভাইয়া তোমার কি কোন কারনে মন খারাপ? আমি একটু স্বাভাবিক হয়ে বললাম আসলে আজ আমার শরীরটা অনেক খারাপ লাগছে। মন ঠিকই আছে। নিশি কন্যা আপু বললো বই মেলাতে কি তুমি একা এসেছ? চলো মেলা থেকে তোমাকে কয়েকটা বই কিনে দিবো। আমি বললাম, হ্যা একা এসেছি। আর আজ আমি আর মেলার ভিতরে যাবো না। তারপর আমার কলেজ ব্যাগ থেকে দুইটা বই বের করে তাদের দু জনের হাতে দিয়ে বললাম, বইটা আমার লেখা। এবার বই মেলাতে প্রকাশ করেছি। নিশি কন্যা আপু বইটা হাতে নিয়ে খুব অবাক হয়ে জোড়ে জোড়ে বইয়ের নামটা পড়লো - ''রক্তে যাযাবর স্বপ্ন'' ছায়া পথের স্বপ্নবাজ পথিক, বাঁধন আহমেদ সোহাগ। তার পর আমার দিকে খুব বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে বললো এই বয়সেই তুমি লেখক হয়ে গেছে। চমৎকার। তুমি অনেক বড় হও ভাইয়া, আমি তোমার জন্য দোয়া করি। সেদিন বই দুটা দিয়ে চলে আসার পরে কয়েকবার নিশি কন্যা আপু আমাকে ফোন করে আমার লেখার প্রসংসা করেছিল। আজ ১৫ আগস্ট যখন নিশি কন্যা আপু আমাকে ফোন করলো তখন কথা বলতে বলতে আমি তাকে জিঙ্গেস করলাম, আপু আপনার সাথে যেদিন আমার প্রথম দেখা হয়েছিল, সেই দিনটার কথা কি আপনার মনে আছে? অপর প্রান্তে তখন নিরবতা। আমি আবার তাকে বললাম, আপু আমি আপনার সম্পর্কে কিছু জানতে চাই, যদি আপনার আপওি না থাকে। তখন নিশি কন্যা আপু আমাকে বললো আমার সম্পর্কে জানতে হলে তোমাকে অনেক সময় ব্যায় করতে হবে, তোমার কি সেই সময় হবে? আমি নতুন কিছু জানতে পারলে আমার লেখা লেখি করতে সুবিধা হয়, তাই আমি খুব আগ্রহী হয়ে বললাম, আপু আমার সময় আছে তুমি বলো। নিশি কন্যা আপু বলতে শুরু করলো- ঠিক এই ভাবে, শোন তাহলে, আমি হিন্দু পরিবারের মেয়ে ছিলাম। জন্মের পরে বাবাকে দেখিনি। গ্রামে মায়ের কাছে থেকে বড় হয়েছি। ছোট বেলা থেকেই অভাব কাকে বলে আমি বুঝতে পেরেছি। মা খুব কষ্ট করেই আমাকে পড়ালেখা শিখিয়ে বড় করেছে। যখন আমি নবম শ্রেনীতে উঠলাম, তখন মার দূর সম্পর্কের এক ভাই, যাকে আমি মামা ডাকতাম, সে ছাড়া আমাদের কোন আত্মীয় ছিল না। সেই মামা একদিন তার এক বন্ধুকে ঢাকা আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসলো। তখন মামা এবং মা মিলে আমার বিয়ে ঠিক করলো সেই ছেলেটির সাথে। ছেলের ঢাকাতে বাড়ি আছে, ব্যবসা আছে। বিয়ের পরে মাকে এবং আমাকে ছেলে ঢাকা নিয়ে যাবে। কথা শুনে মা খুব খুশি হলো। ভাবলো এইবার হয়তো আমাদের অভাব আর দুঃখ চিরতরে যাবে। তাই অতি তাড়াহুড়া করে মামার সেই বন্ধুটির সঙ্গে আমার বিয়ে হলো। মা এবং আমি ঢাকায় আসলাম। এসেই যে বাড়িতে আমরা উঠলাম সেটা ছিল আমার স্বামীর ভাড়া বাড়ি। বস্তির মতো পরিবেশ। অনেক ভাড়াটিয়ার যৌথ বসবাস সেই বাড়িতে। এই বাড়িতে এসেই মা খুব কষ্ট পেয়ে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়লো। ইটের তৈরি চার দেওয়ালের ছোট একটি ঘরে দুটি চৌকি (সস্তার খাট) বিছানো ছিলো। রান্নার জন্য কয়েকটা হাড়ি পাতিল ছাড়া ঘরে আর কিছুই ছিল না। আমার স্বামী সকালে বের হতো আর গভীর রাতে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরতো। দুটি খাটের মাঝখানে পদর্া টানিয়ে সে আমার উপর মাতালের মতো নিযার্তন চালাতো। লজ্জা আর কষ্টে আমার নিরব বুক ভাটা চিৎকার , আর পাশের খাটে শুয়ে থাকা মায়ের নিরব কান্না, তাই নিজেই নিজেকে ঘৃনা করতাম আর অভিশাপ দিতাম পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য। স্বামীর এই অমানুষিক নিযার্তন সহৎ করা ছাড়া কোন উপায় ছিলো না। লজ্জায় দিনের বেলাতে মায়ের সামনে মুখ দেখাতে পারি না।

ঢাকায় এসেছি ১০-১২ দিন হবে এর মধ্যেই স্বামীর এই অমানুষিক অত্যাচার সহৎ করছি। সে তখন ঠিকমতো বাজার ও করতো না। শুথু রাতের চাহিদটুকু মেটানোর জন্য আমার কাছে আসতো। নিজে না খেয়ে থাকতাম কষ্ট লাগতো না। কিন্তু বৃদ্ধ মা যখন ক্ষুধার জ্বালায় ছটফট করতো তখন নিজেকে প্রচন্ড ঘৃনিত মনে হতো। অসুস্থ মাকে একটি ট্যাবলেট পর্যন্ত খাওয়াতে পারি নি আমি। ক্ষুধার জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে একদিন আমি খুব হিংস হয়ে উঠলাম। সেই দিন রাতে আমার স্বামীর শরীর ইচ্ছা মতো কমড়ে দিলাম। কিন্তু সে পুরুষ আর আমি গ্রামের অবলা নারী বলেই হয়তো তার জয় হলো। সে দিন রাতে স্বামীর হাতে মার খেয়ে আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম। দুদিন পরে যখন আমার জ্ঞান ফিরলো তখন আমি ''বঙ্গরাজ আবাসিক হোটেলে'' এক পর পুরুষের সামনে। তখন আমার দূর্বল শরীরের উপর সে জোর করেই নিযর্াতন চালালো।

কথা গুলো বলার সময় নিশি কন্যা আপুর গলার স্বর ভাড়ি হয়ে উঠছিলো। আমাকে বললো, বাধঁন ভাইয়া, তোমার সাথে আমার বয়সের যে পার্থক্য, তা ছাড়া আমাদের ভাই বোন সম্পর্ক, তাতে তোমার কাছে এই সব কথা বলতে আমার লজ্জাই হচ্ছে। তুমি কি আমার কথা শুনতে পারছো। আমি যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। শুধু বললাম, শুনছি, তুমি বলতে থাকো। নিশি কন্যা আপু আবার বলতে শুরু করলো - সেই পর পুরুষটি চলে যাবার পরে আমি আবার অজ্ঞান হয়ে পরি। তার পর যখন আমার জ্ঞান ফিরলো, দেখলাম আমার স্বামী পাশে বসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আমি উঠে বসতে চাইলাম, কিন্তু সে দিলো না। বললো, এখন থেকে এটাই তোমার ঠিকানা। যদি কথা মতো না চলো তাহলে তোমার মায়ের মতোই তোমাকে ও খুন করবো। সেই থেকে আমি হোটেল বঙ্গরাজের নর্তকী হয়ে গেলাম। হাজারো কষ্ট বুকে জমা থাকা স্বর্থে ও ছয়টি মাস নিরবে তার কথা মতো হাসি মুখে থাকার অভিনয় করতে বাধ্য হলাম। ঢাকা শহরের হাজারো মানুষের সাথে মিশে নিজের ভিতর সাহস খুজেঁ পেলাম। ভাবলাম বদলাবো জীবনটাকে এবং প্রতিশোধ নিবো। একদিন আমার স্বামী রুপি দালাল কে বললাম, তোমাকে নিয়ে আমি কঙ্বাজার ঘুরতে যাবো। তোমার মদ সহ যাবতীয় নেশার খরচ আমি দিবো। তুমি কি আমাকে নিবে? শুনেছি কঙ্বাজার অনেক সুন্দর,আমি কখনো যাইনি। যদি তুমি নিয়ে যাও তবে যাবো। কারন তুমি ছাড়া তো আর কেউ নেই আমার। তখন হয়তো আমার স্বামী ভেবেছিলো আমি সেই গ্রামের অবলা বোকা নারীটি একটু ও বদলায়নি। তাই সে খুব সহজেই আমাকে নিয়ে কঙ্বাজার যেতে রাজী হলো। আর আমি তাকে পথেই খুব কৌশলে খুন করে পালালাম। তার পর বই মেলাতে যেই লোকটির সাথে তোমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম, তার সাথে দেখা হলো। তার কাছে সব কিছু খুলে বললাম। তার টাকার অভাব নেই। সে আমাকে বিয়ে করতে চাইলো। শর্ত একটাই - হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলান হতে হবে এবং তার কথা মতো চলতে হবে। আমি সেদিন কোন কিছু না ভেবেই একটু আশ্রয় পাবার আশায় মুসলমান হয়ে তাকে বিয়ে করলাম। সে আমাকে মুসলমান ধর্ম খুব ভালো ভাবে শিক্ষা দিলো। আজ তিনটি বছর যাবত আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো এবং সুখের জীবন কাটাচ্ছি। কথাটা শেষ করেই নিশি কন্যা আপু আমাকে বললো - ভাইয়া, তুমি দ্বিতীয় ব্যাক্তি যার কাছে আমি আমার জীবনের সব কথা খুলে বললাম। আর যতটা সহজে তোমাকে বললাম ততটা সহজে কিন্তু ঘটনা গুলো ঘটেনি। আজ ও সেই সব দিনের কথা মনে হলে আমার শরীর মন ভয়ে কেপে উঠে। তখন আমি নিশি কন্যা আপুকে কি বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। খুব কষ্টে আমার মনটা ও তখন ছটফট করছিলো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Muhammad Fazlul Amin Shohag ai sonkhai ami kono lekha dte pari ne. Likthe akon ar valo lage na.
সেলিনা ইসলাম গল্পের উপাস্থপনা সুন্দর কিন্তু গল্পটাকে যদি আর একটু যত্ন করে কাহিনীর আবেগটা ফুটিয়ে তোলা যেন তাহলে গল্পটা নিঃসন্দেহে আরও জীবন্ত হত । আশাকরি আপনার আরও বাস্তব কাহিনী ভিত্তিক লেখা পাব সেই প্রত্যাশায় শুভকামনা ।
ভালো লাগেনি ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১১
নিলাঞ্জনা নীল তথাকথিত পুরুষের অত্যাচারে নিশিকন্যারা এভাবেই অকালে ঝরতে থাকে.ভালো লাগলো.
আলামিন খান সাদ্দাম golpo ta bastobick ortha hola boysko lokta ka Thank
ভালো লাগেনি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১১
বিন আরফান. ভালো লাগলো. ভুল বলেছি, এর চেয়েও বেশি. তবে শুরুটা ভিন্ন রকম লিখলে বেশি ভালো লাগত তথা অসাধারণ হত.
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১১
Md. Mostafizur Rahman আমাদের সমাজের পরিচিত চেহারা এটি l গল্পটি ভালই বাছাই করেছেন কিন্তু সাহিত্য গুনে একটু কমতি আছে বলে মনে হলো l
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১১
খন্দকার নাহিদ হোসেন বাঁধন, ফাটিয়ে দিয়েছ। গল্প লেখা ভুলেও থামিয়ো না। গল্পকারের আশাবাদী মন দেখে খুশি হলাম। সামনে আরও গল্প চাই কিন্তু। ও ৫ এর বেশি দিতে পারলে ভালো লাগতো।
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১১
রনীল নিশিকন্যাদের মত দুর্ভাগা আর কি কেউ আছে! খুব করুন একটি বিষয়ে লিখেছেন। লেখনী বেশ ভালো, তবে গল্প সাজানোর ক্ষেত্রে আরেকটু মনোযোগ দিতে হবে। শুভ কামনা।
ভালো লাগেনি ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১১
আনিসুর রহমান মানিক বর্ণনাগুনে অনেক ভালো লাগলো /
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১

০১ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪