সেদিন অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবেই দেখা হয়ে গেল শিউলির সাথে। ক্যাম্পাসে বকুল গাছ তলায় বেদির উপর বসে ছিল। হাতে কি যেন ফাইল আর কিছু কাগজপত্র ছিল। ঠিক এই জায়গাতেই ওর সাথে আমার শেষ দেখা হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। আমি যেন নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলামনা। মনের মাঝে দমকা হাওয়ার মত হঠাত এসে ভিড় করল বছর দুয়েক আগের হাজারো স্মৃতি। শিউলি আর আমার সেই রোমান্টিক দিনগুলোর কথা। প্রতিনিয়ত বকুল গাছ তলায় পাশাপাশি বসে আড্ডা, চোখে চোখে ভাব বিনিময়, কুটুর কুটুর করে বাদাম খাওয়া, কখনো টুকটাক ঝগড়া, খুনসুটি। কখনো বা ক্যান্টি্নে বসে শিঙ্গাড়া, সমুচা খাওয়ার প্রতিযোগিতা। এমনই হাজারো স্মৃতি। সময়ের ব্যাবধানে হয়ত স্মৃতিগুলো ভুলতেই বসেছিলাম। কিন্তু আজ এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি স্মরণ করিয়ে দিল ওকে আমি আজো ভুলিনি। ঠিক তেমনটাই ভালবাসি যেমনটি আগে বাসতাম। হয়ত শিউলি ও আমাকে অনেক ভালবাসত, কিন্তু একটি তুছ্ছ ঘটনা বাধাঁ হয়ে দাড়াল দুজনার মাঝে।
ঘটনাটি নাই বললাম, কিন্তু এটুকু বলতে পারি আমার কোন দোষ ছিলনা, শিউলি শুধু শুধুই আমাকে ভুল বুঝল। অনেক বার করে বোঝাতে চেষ্টা করেছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি। ও আমাকে ছেড়ে চলেই গেল, একটিবারের জন্য হলেও আমার দিকে ফিরে তাকায়নি। অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন।সেই চাপা কষ্ট বুকে নিয়ে এই দুই বছর আমার পথ চলা। একটা অচেনা অভিমানে কোন মেয়ের দিকে ফিরেও তাকাইনি। ভালবাসা কত কষ্ট দিতে পারে তা তখনই বুঝেছিলাম।
-আবির, কেমন আছিস?
শিউলির পরিচিত গলা শুনে চমকে গেলাম। কল্পনার জগত থেকে বের হয়ে আসলাম। ভাবলাম হয়ত শিউলি ওর ভুল বুঝতে পেরেছে। মনের মাঝে আনন্দের স্রোত বয়ে গেল। আমি এতটাই অভিভুত হয়ে গিয়েছিলাম যে মুখ দিয়ে কোন কথা সরছিলনা। কোনরকম আমতা আমতা করে বললাম, ভাল আছি।
শিউলি বলল, চল, ক্যান্টিনে চল।
আমি বাধ্য ছেলেটির মত ওর পিছু নিলাম। ক্যান্টিনে গিয়ে দেখলাম আমার চেয়ে বছর পাচেঁকের বড় একটি সুদর্শন যুবক বসে আছে, ঠিক আমি যে চেয়ারটিতে বসতাম। মোটামুটি স্মার্ট। ওকে আগে কখনই দেখিনি।
ধাক্কাটি তখনই খেলাম যখন শিউলি পরিচয় করিয়ে দিল, ও শুভ্র, আমার বাগদত্তা। সামনের রোববার বিয়ে। ভার্সিটি থেকে সার্টিফিকেট টা নিতে এলাম, বিদেশে চলে যাব তো। মূহুর্তের মধ্যে আমার সব আনন্দ মাটি হয়ে গেল। সৌজন্যবোধের জন্য হ্যান্ডশেক করলাম। তারপর শিউলিকে বললাম, আমার দুই তিন দিন ধরে গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে। কিছুই খাবনা। তোরা থাক।
বাইরে চলে আসলাম। অবাক হয়ে গেলাম শিউলির পরিবর্তন দেখে। একটু আগে ওকে যতটা আপন মনে হচ্ছিল, এখন মনে হচ্ছে ও তার চেয়ে বেশি পর। ওকে নিয়ে যে সপ্ন দেখেছিলাম তা এক নিমেশেই ভেঙ্গে গেল। শিউলি কে আজ মনে হল সম্পূর্ণ অপরিচিত। একেবারেই নতুন কেউ।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি
আশরাফুল তোমার লেখারহাত ভালো তবে লেখার বক্তব্য বা মেসেজ দিতে গেলে আরো যত্নশীল হতে হবে ভাই শুভ কামনা রইল তোমার জন্য....
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।