ভাগ্য বলে খোলা আকাশের নীচে থাক

শীত (জানুয়ারী ২০১২)

ছালেক আহমদ শায়েস্থা
  • ১১
  • 0
  • ২৫
কারো জন্য পৌষ মাস,কারো সর্বনাশ" কথাটির মর্মাথ ভিন্ন দ্বারায় প্রযোজ্য যেহেতু আজ শীতার্থদের বেলায় এই কথাটি মানাবে কি ? মাছুমের ছোট্ট পরিবার রেহানা-মা-বাবা এই মাত্র চার জন সদস্য। কত স্বপ্ন স্বাদের মিলন মেলা এই পরিবারে তা বলার অবকাশ রাখেনা। কথায় আছে না ছোট পরিবার মানে সুখের সংসার। মাছুমের বাবা ৰেতের কাজে মজুরী করেন, আর পরিবার ভরন পোষনের দায়িত্ব তাঁর। মা করেন রান্না বান্নার কাজ। মাছুম স্কুলে ক্লাস থ্রীতে পড়ে আর রেহেনা ক্লাস টু-তে। গ্রামেই সরকারী স্কুল। সুনিয়া প্রতিদিন তাদের স্কুলে দিয়ে বাড়ি আসেন। মাছুম আর রেহানা স্কুল থেকে ফিরে মায়ের কাছে-কাছে খেলাধুলা আর কত কিছুর বায়না ধরে হিসাব রাখা যায় না। মায়ের মুখে প্রতিদিন শুধু শানত্দনার বানী কালই তোমাদের এটা ওঠা কিনে দিব। কিন্তু রহিম মিয়া কামলা দিয়ে যা পান ডাল-চাল,তরি-তরকারীতেই তিনির পাওনা গুলো শেষ করে বাড়ি আসেন। এভাবেই চলছে। শানত্দনার বাণীতে বুক বাধা আগামী প্রতু্যষে সুখ সূর্য্য উদয় হবে। হঠাত একদিন মহাজনের কাজে গিয়ে তার ফিরতে দেরি হচ্ছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো,প্রচন্ড কোয়াশা পড়ছে বৃষ্টির মত ঝরঝরে। হাত পা শরীর ঠান্ডায় অবস হয়ে যাচ্ছে ঘরে বসে থাকা মানুষের। তখন পৌষ মাসের শেষের দিক, দু'একদিন পরেই মাঘ মাস শুরম্ন হবে। পৌষ মাঘ এ দু'টি মাসই শীত কাল। হায় হায়..., কি হাড় কাপানো শীত সহ্য করা যায় না। লেফ তোষক যার আছে তারা সন্ধ্যা থেকেই হাত পা ঘুছিয়ে শুয়ে থাকে। কেউ খড় কোঠায় আগুন ধরিয়ে শীত পোহাতে থাকে ব্যস্থ। হত দরিদ্র আর খেটে খাওয়া মানুষদের কি কষ্ট হয় যেন প্রাণ যায় যায়। অভাবী আর রাসত্দা ঘাটের ছিন্নমূল মানুষ বসত্দা গায়ে জড়িয়ে রেহাই পায়না। গ্রামাঞ্চল আর পার্বত্য এলাকা ও সাগর পারের মানুষের তো আরো নাজেহাল অবস্থা হয় শীত কালে। তবোও জীবন জীবিকার সন্ধানে ৰেতে খামারে, হাটে-ঘাটে, নদীতে এবং সাগরে ছুটে চলতে হয় লাল সবুজের পতাকা দেশের মানুষের। দেশের বিভিন্ন এলাকাতে শীতের কবলে বেশির ভাগ শিশু ও বৃদ্ধরা মারা যায়। শর্দি কাশি নিউমোনিয়া সহ কত প্রকার রোগের আক্রমন হয়। তাছাড়া মাত্রারিক্ত ঘন কোয়াশায় নদী যোগে চলাচল কারী লঞ্চ, ষ্টিমার, ফেরি আটকা পড়ে। বাস পর্যনত্দ আটকে দূর্ভোগে পড়ে লাখো মানুষ। আবার গাড়ি এঙ্েিডন্টে প্রাণ যায় শীতের আগমনে। কিন্তু মানুষ থেমে থাকেনা থেমে থাকলে কারো চলেনা। জীবিকার তাগিদে সর্বনাশের আশংকা মাথায় নিয়ে জীবন ভর পেট মহাশয়ের সন্তুষ্টি যোগাতে ব্যস্থ থাকতে হয়। যাক রহিম মিয়ার কথা বলছিলাম। তিনি ফিরতে দেরি দেখে সুনিয়া বিবি এশার আযানের সাথে সাথে মহাজনের বাড়ির দিকে রওয়ানা হলেন। হাতে একটি কুপিবাতি জ্বালিয়ে হাঠছেন । এসময় দেখলেন সম্মুখে কারা আসছে। মাছুম রেহানাকে দেখে রাখার জন্য পাশের ঘরের শেলীকে রেখে এসেছেন বাড়িতে।কুপিবাতির আলোতে সামনে এগুলে দু'তিন জনের কথা বলার শব্দ কানে ভাসে। কণ্ঠগুলো নিজের গ্রামের লোকের। তাদের হাতে হারিকেন জ্বালানো। মিনিটে আগন্তুকরা সামনে চলে এলো। দু'জনের কাধে ভর করে একজনকে ওরা ধরে ধরে নিয়ে আসছে। সবাই দাড়িয়ে পড়লে সুনিয়া হারিকেনের আলোতে রহিমের মুখ দেখে হতভিম্ভ আর শুষ্ক গলায় জানতে চাইলেন ওগো তোমার এ কি হলো। সাথে থাকা জব্বার বলল কি আর হবে, মহাজনের বোরো রোপনের কাজে ঠান্ডায় ধরেছে। তাই একটু জ্বর এসেছে গায়। আমরা ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ সংগে নিয়ে এসেছি। ভেঙ্গে পড়না ওকে নিয়ে বাড়ি চলো। একজনের হাত সরিয়ে তিনির কাধে রহিম মিয়ার হাতের ভর রাখলেন। কয়েক পা এগুতেই রহিম পড়ে গেল মাটিতে। ঠান্ডায় হাত-পা অবস হয়ে আসার পরও জ্বরে মাথা পুড়ে যাচ্ছে। কি আর করার" আবার দাড় করিয়ে বাড়ির দিকে হাটছেন। এমন মহুর্তে মানুষের চিতকার শুনতে পেলেন বাচাঁও বাচাঁও আগুন। আশপাশের বাড়ির লোকেরা দৌড়ে নদীর পারের ঐ বাড়িটির দিকে যাচ্ছেন। সুনিয়া ভাবছেন কি ব্যপার কিসের আগুন,কিসের ছুটাছুটি। কারা বা চিতকার করছে। কার জানি কি হচ্ছে। ভাবানত্দে মাথা তুলে দৰিন দিকে তাকালেন। দেখলেন এ যেন আগুনের সুর্য্যদয় হচ্ছে। ঘন কোয়াশা আর অন্ধকার আগুনে লাল হয়ে আলোকৃত হয়ে গেছে। প্রতিবেশীরা আগুন নেভাতে দৌড়াচ্ছে। তার সাথে থাকা গ্রামের লোক গুলো দৌড় দিল তাকে একা রেখে। সুনিয়া এখন রহিমকে নিয়ে কোন রকম বাড়ির দিকে হাটছেন । ভাবছেন নিশ্চয় কেউ শীত পোহাতে গিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে এখন নিভে যেতে শুরম্ন করেছ। জড়ো হওয়া সবাই সাধ্যমত চেষ্টা করায় আগুন নিয়ন্ত্রনে এলেও রহিম মিয়ার ঘর খানি আর পাশের লিচু মিয়ার খড়ের ঘোলা জ্বলে ভষ্ম। সুনিয়া স্বামীকে নিয়ে বাড়ির সম্মুখে এলেই একটি লোক চিতকার দিয়ে বলল ওরা গেল কোথায় ? ঘর দোয়ার ছেড়ে কোথায় গিয়ে মরল ? কেউ বলল কোথায় আর যাবে ! আগুনে বুঝি শেষ হয়ে গেছে। কথাটি নিরেট গতিতে সুনিয়ার কানে বিধল, মাথায় আকাশ ভেঙ্গে বজ্রপাত পড়লো। এ কি ! তাহলে আমার ঘরে আগুন, আমার বাচ্চা...বলেই এক দৌড়ে এলেন স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে। এসেই উঠোনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন। কিছুৰন পর জ্ঞান ফিরে এলো সুনিয়ার। দেখলেন মাছুম রেহানা তার পাশে কাদঁছে আর রহিম মিয়া কুকাচ্ছেন। শেলী আর তার পরিবার ছাড়া সবাই চলে গেছে যে যার পথে। মাছুম আর রেহানাকে বুকে জড়িয়ে ধরে নয়ন ভরা জলে ব্যথিত কন্ঠে বললেন মাছুমরে এ কি হলো ? আমাদের সব জ্বলে গেল কেন ? মাছুম রেহানা শুধু ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাদঁছে। মরার উপর খাড়ার ঘা এই কথাটির মত সুনিয়ার জীবনে এল হঠাত ঝড়। শেলী শানত্দনা দিয়ে বলল চাচী তুমি যাওয়ার পর মাছুম রেহানা খড় দিয়ে আগুন পোহাতে বলে আমাকে। আমি তাদের বারণ করলাম। শেষ পর্যনত্দ খড়ের ঘোলা থেকে খড় নিয়ে ওরা আগুন জ্বালায় খড়ে। আর খড় জ্বলে জ্বলে ঘোলায় আগুন ধরে শেষ পরিনতী ঘর পর্যনত্দ জ্বলে ছাই হল। আগুন দেখে আমি মাছুম রেহানাকে নিয়ে দুরে পালাই। এখন কি আর করবেন ভাগ্যেই ছিল। সবুর করো চাচী। সুনিয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন সবুর ছাড়া কিছুই করার নেই ঠিক, কিন্তু এখন মাঘের হাড় কাপানো শীতে খোলা আকাশের নীচে থাকব কি করে। চাচী খোলা আকাশের নীচে শুধু তুমি নও এদেশের লৰ লৰ মানুষ থাকে যাদের কথা একবারই ভাবার সময় কারো হয়না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিজানুর রহমান রানা চমৎকার একটি থিম নিয়ে লিখছেন। আপনার প্রতি শুভ কামনা থাকলো
ভালো লাগেনি ২২ জানুয়ারী, ২০১২
মামুন ম. আজিজ এর পর থেকে একটু প্যারা প্যারা করে লেখার চেষ্টা করলে পাঠকের জন্য সুবিধা হবে পড়তে। লেখা গাতানুগতিের মধ্যেও বেশ হয়েছে।
ভালো লাগেনি ২২ জানুয়ারী, ২০১২
সালেহ মাহমুদ UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL# খুব সুন্দর হয়েছে। তবে আরো বেশী বেশী করে পড়তে হবে। তাহলে দুর্বলতাগুলো নিজে থেকেই উপলব্ধি করা যাবে। দুর্বলতাগুলো কেটে গেলেই আপনার লেখা হয়ে উঠবে অসাধারণ। ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২১ জানুয়ারী, ২০১২
রোদের ছায়া বেশ লাগলো , সবার লেখা পড়ার অনুরোধ রইলো
ভালো লাগেনি ১৯ জানুয়ারী, ২০১২
নিলাঞ্জনা নীল সুন্দর গল্প....
ভালো লাগেনি ১৮ জানুয়ারী, ২০১২
এফ, আই , জুয়েল # দুঃখী ,হতভাগ্য মানুষদের করুন কাহিনীর বর্ননায় অনেক সুন্দর একটি গল্প ।।
ভালো লাগেনি ১৪ জানুয়ারী, ২০১২
sakil এত করুন একটা সুন্দর গল্পে পাঠক নেই দেখে হতাশ হলাম .
ভালো লাগেনি ১১ জানুয়ারী, ২০১২
শাহরিয়ার হায়দার সালক ভাই , মুগ্ধ হলাম ...........................
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি ভালো প্রয়াশ অন্যদের লেখা গুলো পড়লে ণিজের লেখা আরো সমৃদ্ধ হবে বলে আমার বিশ্বাস। সালক আহম্মদ আপনার কবিতার হাতও ভালো। এগিয়ে যান....শুভ কামনা।

২২ ডিসেম্বর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "নগ্নতা”
কবিতার বিষয় "নগ্নতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ মে,২০২৪