Amar Priyo Bondhura (Golpo)

আমার প্রিয়ো বন্ধু (আগষ্ট ২০১৫)

মারুফ আহমেদ অন্তর
  • 0
  • 0
  • ৬৭৭
আমার প্রিয় বন্ধুরা
এবারের গল্প কবিতার বিষয়টি দেখে আমার প্রিয় বন্ধুদের নিয়ে লেখার লোভটি সামলাতে পারলাম না। আমার জীবনে হাই-হ্যালো সম্পর্কের বন্ধু অনেক এসেছে। তাদের সাথে শুধু হাই-হ্যালোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকাতে তেমন ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেনি। এরকম ভাবে প্রাইমারী স্কুল জীবনে আমার ২ জন বন্ধু ছিল খুবই ঘনিষ্ঠ, যাকে বলে জানের জান পরানের পরান টাইপ আর কি। ওদের নাম আমান ও আজিজ। আমরা ৩ বন্ধু আমি, আজিজ ও আমান একসাথে স্কুলে যেতাম, একই বেঞ্চে পাশাপাশি বসতাম। টিফিনে একসাথে ভাগে করে খাওয়া, কত দুষ্টুমি-খেলা-ধুলা, ছুটির পর আবার এক সাথে বাড়ি ফেরা। কাছাকাছি বাড়ি থাকায় আমাদের মধ্যে দেখাশোনাও বেশি হতো। জীবনের প্রায় ২৫-২৬ বছর আগের আমাদের এ বন্ধুত্বের বন্ধন; এখনো ভুলতে পারিনা।
মাধ্যমিক নতুন স্কুল, নতুন বন্ধু। একে একে পরিচয় হয় আমির, মামুন, জাহিদ, আনসার সহ আরো অনেকের সাথে। এখানেও একই সাথে ভর্তি হয় আমান ও আজিজ। ২ জন ২ সেকশনে থাকায় আমানের সাথে বন্ধুত্বটা আরো দৃঢ় হতে থাকে। একই সাথে এখানেও পার করলাম শিক্ষা জীবনের আরো ৫টি বছর।
কলেজ জীবন নিজেকে আরো বড় বড় মনে হতে লাগল। স্বাধীন জীবন, নেই কোন বাঁধা। মাধ্যমিকের আরো ২ জন বন্ধু জাহিদ ও কাউসার একই কলেজে একই বিভাগে ভর্তি হওয়ায় ওদের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। তখন আরো পরিচয় হয় আলামিন, আজিজ, ইলিয়াস, সোহেল, শাহজাহান সহ আরো অনেকের সাথে। এক পর্যায়ে আমরা ৫ জন খুবই ঘনিষ্ঠ হয়ে গেলাম। আমি, আলামিন, অজিজ, ইলিয়াস ও কাউসার। আমাদের সকলের নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে আমরা একটা গ্র“প ও তৈরী করলাম (অঅগঊক) ”আমিকে গ্র“প”। ৫ জন একসাথে সবসময়। এক বেঞ্চে বসা, টিফিন, গ্রুপ স্টডি করা, ঘুরতে যাওয়া, ছুটির দিনে কারো বাড়িতে আড্ডা দেওয়া আরো কত কি? সময়ের আবর্তে ওরা যার যার জগতে খুবই ব্যস্ত। ঈদে ওদের শুভেচ্ছা জানানো হলেও কেউ কেউ রেসপন্স করেনা।যাক এটা ওদের ব্যাপার। কিন্তু আমি এখনো কলেজ লাইফটাকে ফিল করি।
তারপর এলো বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। কত বড় পরিসর! কত জেলার, কত ধরনের সহপাঠী। পরিচয় হয় জুলফিকার, খাইরুল, কামরুল, বিপ্লব, মলয়, রশিদ, সাইদ, আফজাল, বাবু সহ আরো অনেকের সাথে। অনার্স ও মাস্টার্স পর্যন্ত বন্ধুত্ব টিকে থাকে হাতে গোনা কয়েকজনের সাথে। কিন্তু আমি, জুলফিকার ও খাইরুলের সমন্বয়ে গড়া আমাদের বন্ধুত্ব সত্যিই অসাধারন ছিল। আমরা তিনজন ভিন্ন তিন জেলার হলেও আমাদের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল অতুলনীয়। সুখে-দুঃখে আমরা ছিলাম একে অপরের সহযাত্রী। আমি হলে না থাকলেও ওদের সাথে বঙ্গবন্ধু হল ও সূর্যসেন হলের আবাসিক রুমে একসাথে গ্র“প স্টাডি করা, বাজার করে এনে একসাথে রান্না করা, পিকনিক করে খাওয়া সেই মধুর সব দিনগুলো আজো চোখে ভাসে। আমাদের বন্ধুত্বের মধ্যে কোন কৃত্রিমতা, সার্থপরতা কখনোই ছিলনা।
আরেকটি মজার বিষয় হলো আমার তেমন কোন মেয়ে বন্ধু ছিলনা। ছোটবেলা থেকেই আমি মেয়েদের সাথে সহজে মিশতে পারতামনা। স্কুল জীবন থেকে মেয়ে সহপাঠীদের অন্য গ্রহের প্রাণী মনে হতো। আমর ভার্সিটি লাইফে আমার ডিপার্টমেন্টের মেয়েরা কেমন জানি ছিল। কারো সাথে মিশতোনা তেমন। আমিও আগ বাড়িয়ে ওদের সাথে কথা বলতামনা। তারপরেও কয়েকজন মেয়ে বন্ধুর কথা না বললেই নয়। হয়তো কখনো আমার এ লেখা ওরা দেখলে মাইন্ডও করতে পারে.হা.হা.হা। ওদের মধ্যে লাবনী, স্বর্ণা, সম্পা, আনিকার নাম উল্লেখযোগ্য।
বর্তমানে আমার তিনজন বন্ধু আছে তাদের সাথেও জানের জান সম্পর্ক। স্কুল বন্ধু আজিজ, মাধ্যমিকের আরিফ ও এলাকার বন্ধু সুমন। আমরা প্রায় প্রতিদিন এখনো মিট করি, আড্ডা দেই। একসাথে ছুটির দিনে ঘুরতে যাই। কেনাকাটা করা সহ একসাথে আমাদের ভালোই সময় কাটে।
ফেসবুককে বিশেষভাবে ধন্যবাদ; অনেক হারানো বন্ধুদের আমি ফিরে পেয়েছি ফেসবুকে। এখনো কলেজ ও ভার্সিটি লাইফের প্রায় ৫০ জন বন্ধুর সাথে ফেসবুকে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। ভার্চুয়াল লাইফ আর রিয়েল লাইফ দুটি আলাদা জগৎ। ব্যস্তময় এ জীবনে সময় কোথায় আমাদের খোঁজ-খবর রাখার? যার যার নিজ ভুবনে সবাই অমরা খুব ব্যস্ত। জীবনে কিছু কিছু সময় আসে নিজের জগৎ থেকে বের হয়ে মুক্ত মনে, প্রাণ খুলে বন্ধুদের সাথে মিশতে ইচ্ছে করে, সুখ-দুঃখের অনুভুতি শেয়ার করতে ইচ্ছা হয়। আমার সকল বন্ধু যাদের নাম এসেছে এখানে হয়তো স্মৃতিতে অনেকের নাম মনেও পরছেনা, সবাইকে বন্ধুত্ব দিবসের শুভেচ্ছা। বন্ধুরা তোমাদের কথা আজো মনে পরে; তাইতো বিজ্ঞাপনের ভাষায় বলতে হয়..........বন্ধুরা থাকলে জিতবে সবাই; আসলেই বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল!!!!

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

১৬ নভেম্বর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৭৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪