ভাটিগাঁও এর পাগলা রাজা

শুন্যতা (অক্টোবর ২০১৩)

এস, এম, ইমদাদুল ইসলাম
  • ১৪
  • ৭৩
সার্কুলারটার প্রথম স্তবক পড়েই শরীফ হন্ত-দন্ত হয়ে ব্যাচমেট হকিকতের কাছে দৌড়ে এল। ওর মাথাটা বেশ মোটা। আবেগ বেশী। হঠাৎ নতুন কোন চমক দেখলে তার আদ্যোপান্ত না বুঝেই এমন সব কান্ড করে বসে যে, সবাই তাকে একনামে পাগোল বলেই জানে । এরকম একটা স্থূল বুদ্ধির মানুষ কেমন করে যে এ্যাডমিন ক্যাডারে চান্স পেয়েছিল, তা ভাবতে অবাক লাগে। তবে ওর স্মৃতি শক্তি প্রখর। হকিকত ওর এ স্বভাব দেখতে দেখতে অভ্যস্থ হয়ে গেছে। তাই স্বভাসুলভ ভংগিমায় চশমাটা নাকের ওপর থেকে আর একটু ওপরের দিকে ঠেলে দিয়ে তাকাল ওর দিকে। মুখে একটু মুচকি হাসির রেখা টেনে বলল,
কি, হে ? এত খুশী যে ? আবার ?
-না, না । কিসের আবার খুশী ?
হাতের কাগজটা ওর টেবিলে ফেলে দিয়ে বলল,
-এটা দেখেছিস ?
কী, এটা ?
-এখুনি ডাউনলোড করে আনলাম। কেবিনেট সচিবের চিঠি। তুই দেখিশ নি ?
কৈ. দেখি ?
হাতে নিয়ে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ল ।
বুঝলাম, তা এতে অবাক হবার কি হল ?
-না পড়েই বলছিস, বুঝলাম ? পড়ে দেখ। তোরাতো আমার কথা বিশ্বাস করিস না। ও বেটার যে মাথা খারাপ হয়ে গেছে, আমিতো এর আগে বহুবার বলেছি। এটাই হল তার চরম প্রমাণপত্র। এখন দেখলি তো ? ব্যাটার ব্রেইনের তার একটাও আর আস্ত নেই। বেচারার অপশন নিয়ে চলে যাওয়াই উচিত, কি বলিশ?
হা ঃ হা ঃ হা ঃ ।
- এত হাসছিস কেন ?
তুই এ চিঠির পুরোটা পড়েছিস ?
- হ্যা, মানে , না । এখনো সব পড়া হয়নি ।
হা ঃ হা ঃ হা ঃ
-ওর সাথে সাথে তো দেখছি তোরও গেছে । এত হাসছিস কেন ?
এবার হাসি থামিয়ে হকিকত একই চিঠি ওর ড্রয়ার থেকে বের করে শরীফের হাতে দিয়ে বলল,
এই নে, মার্কার পেন দিয়ে কয়েকটা লাইন হাইলাইট করা আছে । রুমে বসে ঠান্ডা মাথায় ভাল করে পড়। দেখবি, তোর ব্রেইন ক্লিয়ার হয়ে গেছে। আমি খুব ব্যস্ত আছি । প্লীজ, তুই এখন যা।
পাগলাটা বিদেয় হল । হকিকত তার হাতের ডাক প্যাডটা পড়া শেষ করে একটু দম নিল। অনেক কাজের চাপ। কথা বলার সময় হয় না তার। মাঝে মধ্যে শরীফ এসে পাগলামী শুরু করলে কিছুটা রিল্যাক্স হয় , আবার বিব্রতও হতে হয়। সবই এখন গা সহা হয়ে গেছে।
কিছুক্ষণ পরই আবার ফিরে এল শরীফ । ওকে আসতে দেখেই বুঝতে পেরেছিল, এগুলো পড়ে ও স্থির হয়ে বসে থাকবে না।
আবার ? প্লীজ, দোস্ত, ডোন্ট মাইন্ড। তুই একটু পরে আয়। আমার হাতে অনেক কাজ।
- জাষ্ট এ মিনিট, এটা কি হল ?
কেন ? ভাল লাগল না ? প্রথম স্তবকটাতো খুব ভাল লেগেছিল , তাই না ?
- আরে, না । তা লাগবে কেন ? এটা কোন ভাল লাগার বিষয় ? আমিতো ভেবে অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম । যেখানে সিডিউল টাইমের মধ্যেই কাজ শেষ হয় না, সেখানে -----। কিন্তু এসব কি পাগলামী শুরু করেছে, বলতো ?
শোন, বয়স তো কম হল না, তাই না ? চাকরী প্রায় শেষের দিকে। এরকম সময় চিঠি পত্র আধা পড়েই পাগলামী করাটা ছাড়। মাথা ঠান্ডা কর। নাহলে জুনিয়ররা কিন্তু তোকে বেকায়দায় ফেলে দেবে ।
-দুত্তরি, রাখ তোর জুনিয়র ? না, না, এসব পাগলামী সহ্য করা যায় না। এর প্রতিবাদ করা দরকার ।
আমারতো খুব ভাল লাগছে।
- কি বললি ? তোর ভাল লাগছে ? তোরও কি গেল সব ? তা’হলে তোকেও ধরে পাগলা গারদে পাঠাবার ব্যবস্থা করবে।
হ্যা, পাগোলরা সর্বদা তাই করতে চায় ।
-তার মানে ? আমি পাগোল ?
আরে না । আর শোন, এটা উনার সিদ্ধান্ত নয় । রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত। উনি শুধু বিলি করেছেন মাত্র।
-যাহ ! এতকাল ধরে দেখে আসছি। এদেশের রাষ্ট্রপতির আবার কোন সিদ্ধান্ত দেবার ক্ষমতা আছে না কি ? সব তো হয় এখান থেকে । এর আগেও তো এরকম হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি একটু কিছু চিন্তা করলেই এরা আগ বাড়িয়ে এখান থেকে তিলকে তাল করে তেল মারতে শুরু করে ।
কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে, বিপ্লব ঘটেছে শেষ পর্যন্ত । বদলে গেছে সব ।
-তখন থেকে কী সব আবোল তাবোল বকছিস, বলতো ? এরকম কত পাগলামী দেখলাম । দেখে দেখে জীবনটাইতো শেষ করলাম। কিন্ত এই শেষ বয়সে এসে এসব পাগলামীর যাতা কলে আবার ?
আমার হাতে অনেক কাজ। প্লীজ, তুই এখন যা ।
-কেমন সেয়ানা দেখ, নিজেকে আর অর্থ সচিবকে এই আদেশের আওতার বাইরে রেখেছে। শালা , আমরা ঘাস খাই ? উনি কি মনে করেন নিজেকে ? আমরা কিছূই বুঝি না ? এটা নিয়ে আন্দোলন করতে হবে । সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ।
শরীফ, প্লীজ, এ নিয়ে পরে কথা হবে, এখন যা । আর একটা কথা, এ চিঠির অপর পৃষ্ঠায় আরো চমক আছে, ভাল করে পড়ে নিশ।
-যাচ্ছি, কিন্তু তুই দালালী করলে তোকে কিন্তু বন্ধু বলে খাতির করব না। শালা, তোর কন্ঠেও ওর মত সুর আছে।
আচ্ছা । ঠিক আছে ।
আযমনগর চৌরাস্তার দক্ষিণ কোণে বড় একটা বট গাছ। এর নীচে হক্কা মিয়ার ছোট্ট চায়ের দোকান। ভেতরে অল্প একটু জায়গা । সেখানে একটা চৌদ্দ ইঞ্চি মনিটরের রঙিন টেলিভিষন আছে। দোকানের সামনে বাড়তি অংশের উপর চা তৈরীর ব্যবস্থা। হিন্দি সিনেমার চ্যানেল সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়। চব্বিশ ঘন্টাই শুধু সিনেমা প্রচারিত হয়। স্যাটেলাইট সংযোগের বিল মাসে দু'শো টাকা । কিন্তু তাতে কি ? এই একটা চ্যানেলই সে বিলের ব্যয় মেটানোর জন্য হক্কা মিয়ার কাছে যথেষ্ট। সকাল আট টার মধ্যেই দোকানে চলে আসে। রাত বার টা থেকে এক টা , কোন কোনদিন দু’টাও বেজে যায়। কাষ্টমার ফুরায় না। হিন্দি সিনেমা যত হিট হয়, তার চা বিক্রিও ততো বেড়ে যায়। সংগে বিস্কুট, বন রুটি, কলা আর সিগারেট তো আছেই। অনেকে আছে , দৈনিক চার পাঁচ বার চা-সিগারেটের আড্ডা জমায়। প্রথম দিকে হক্কা মিয়া ফুটপাতে , পার্কে হেটে হেটে চা বিক্রি করত । ক’বছর হল এখানে দোকানটা করেছে। দেখতে দেখতে বেশ জমিয়ে ফেলেছে সে। প্রতিদিন সকাল বেলায় দোকান খুলে আগে পরিস্কার একটা তোয়ালে দিয়ে টিভিটা খুব সযতনে পরিস্কার করে। এর পর সে এতে একটা চুমু খায়। এটা তাকে ভাগ্যবান করেছে। এটাকেই সে তার ভাগ্য বিধাতার স্থানে স্থান দিয়ে ফেলেছে।
বেলা তখন প্রায় সাড়ে এগারটা বাজে । কয়েকজন যুবক তখন চুটিয়ে চায়ের আড্ডায় মশগুল। নাচের তালে মাতোয়ারা । বাবার পকেট থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকা চা সিগারেটের পেছনে ধ্বংস করে চলেছে। বড় কেতলীর চুলাটাও জ্বালিয়ে দিল । হক্কা জানে, এরকম নাচের তালে তালে চায়ের অর্ডার বাড়ে। এমন সময় একজন লোক এল। লোকটাকে এর আগে কেউ এখানে দেখেনি। বিশাল দেহের অধিকারী। মুখ ভর্তি ঘন চাপা সাদা-কালো মিক্সড দাড়ি। গায়ে শতচ্ছিন্ন একটা জামা। বিভিন্ন কালারের টুকরো কাপড় দিয়ে এমনভাবে তালি-পট্টি মেরেছে, মনে হচ্ছে যেন সার্কাসের জোকার । পরনে ছেড়া লুংগি। কাঁধে তেল চিটচিটে ময়লা শততালিতে আবৃত একটা ঝোলা। দেখতে অনেকটা কাবুলিওয়ালার মতও বলা যায়। অবয়ব দেখে মনে হচ্ছে বয়স ষাটোর্ধ হবে। কিন্তু তার বডি ল্যাংগুয়েজ বলছে অন্য কথা । মনে হচ্ছে যেন মঞ্চে অভিনয়ের জন্য তিনি বৃদ্ধ সেজেছেন। অনেকটা উদ্দেশ্যহীনভাবে যুবকদের পাশে যেয়ে বসলেন। তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
-কিছু মনে করনা, বাবারা, তোমাদের একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারি ?
অপরিচিত এক আগন্তকের ভরাট কন্ঠে এমন আহ্ববানে কৌতুহলী যুবকরা এক যোগে তার দিকে তাকিয়ে পড়ল । ওরা আগন্তকের খুব কাছাকাছি এসে বসল। অন্য রকম পরিবেশের আঁচ পেয়ে হক্কা মিয়া টিভির ভল্যুম একটু কমিয়ে দিল। একজন বলল,
হ্যা, বলুন ।
- যদি কিছু মনে না কর , তোমরা কে , কি কাজ কর ? জানতে পারি ?
এক একজন করে বলেছে । ৭ জনই বলেছে তারা লেখা পড়া শেষ করে চাকরী খুঁজছে ।
আর একজন বলেছে,
”আমি কিছুই করি না। লেখা পড়া বেশী করতে পারিনি। বাবা খুব মার ধর করত। বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি। এখানে আমার এক বন্ধু ফুটপাথে পান, সিগারেট বিক্রি করে, তার কাছে উঠেছি। কাজ খুঁজছি ” ।
-শুনে খুব খুশী হলাম। আচ্ছা, তোমাদের কারো কারো গলায় আইডেনটিটি কার্ড দেখছি, কারো কাছে নেই । বিষয়টা খুলে বলবে ?
যাদের কাছে নেই, তারা দ্রুত পকেট থেকে বের করে গলায় পরল।
আসলে এখন আমাদের দেশে এক আজব পাগলা রাজা এসেছে । ভাল করেছেন, মনে করে দিয়ে। নাহলে পুলিশের সামনে পড়লে এতক্ষণ খবর হয়ে যেত ।
-তাই নাকি ? তা, আর কি করেছে সে পাগলা রাজা ?
অনেক নতুন নতুন আইন হয়েছে, আমরা এখনো সব কিছু জানিনা। তবে আগে যেমন যত্রতত্র দোকান পাট ছিল এখন নেই। সব নির্দিষ্ট মর্কেটে চলে গেছে। আর সব দোকানেই ইলেক্ট্রনিক ক্যাশ রেজিষ্টার যন্ত্র ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে । এটি ছাড়া এখন কেনা বেচা করা যায় না। শুনেছি আয়কর নাকি স্বয়ংক্রীয় পদ্ধতিতে আদায় হয়, এতে নাকি ধনীরা খুব বিপদে পড়ে গেছে।
দেশের অনেক কিছু নাকি পরিবর্তন করা হবে। কোন লোক কর্মহীন থাকতে পারবে না, এদেশ থেকে বিদেশী সংস্কৃতির চ্যানেলগুলো বিলুপ্ত করা হবে--- এরকম আরো কত কি হবে । এতে মনে হয় আমাদের ভালই হবে, তবে এক হিন্দি সিনেমার চ্যানেলই হক্কা মিয়ার ব্যবসাকে সফল করেছে। এখন এটি যদি বন্ধ হয়, তাহলে ওর ক্ষতি হবে না, বলুন ?
-কি জানি, বাপু , হতে পারে হয়তো বা। তবে তোমাদের নিজেদের ভাল কিছু করলেই তো হয়।
না, তা কোনদিনই হবে না।
-আচ্ছা যাক সে কথা। তোমাদের কাছে একটা অনুরোধ রাখতে চাই। রাখবে আমার অনুরোধটা ?
বলুন ।
-তোমরা সবাই আমার সংগে কিছুক্ষণের জন্য যাবে ?
কোথায় ?
-বেশী দূরে নয় । পাশেই । তোমরা বরাট নদীর নাম শুনেছ ?
একজন বোদ্ধা ছেলে উৎফুল্লের সাথে বলল, হ্যা, ঐ যে বরাট ব্রীজের নীচে। শুনেছি , ওটা নাকি অনেক বড় নদী ছিল।
-হ্যা, তুমি ঠিকই শুনেছ। তোমরা যদি কিছু মনে না কর, চল ওখানে একটুখানি ঘুরে আসি । আবার তোমাদের সাথে এখানে এসে একসংগে চা পান করব ।
অনেকে হো হো করে হেসে উঠে বলল, এখানে আবার নদী কোত্থেকে এল রে ? সবার হাসি থামিয়ে দিয়ে বোদ্ধা ছেলেটা বলল, তোদের কাছে হাসি লাগতে পারে, কিন্তু হ্যা, আমি আমার দাদার মুখে শুনেছি, এখানে অনেক বড় নদী ছিল।
তাই বুঝি ? আবার সব অট্ট হাসিতে লুটিয়ে পড়ল । প্রায় সবাই সমস্বরে খুব কৌতুহলী হয়ে বলল,
হ্যা, চলুন । যাব আমরা ।
কিন্তু বোদ্ধা ছেলেটা একটু গম্ভীর হয়ে গেল । সে সবাইকে থামিয়ে দিয়ে বলল, এই , রাখ । সব মাথা মোটার দল । হুট করে বললেই হল, যাব ? যুবকটা আগন্তকের চোখের দিকে খুব তীক্ষè দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
তার আগে বলুন, আপনি কে ? আপনাকে তো এর আগে এখানে কখনো দেখিনি । আপনাকে আমরা চিনি না, জানি না, আপনিও আমাদের চেনেন না। তা হঠাৎ আমাদের প্রতি আপনার এ প্রস্তাবটাই বা কেন ? আর আমরাই বা আপনার মত একজন অপরিচিতের সংগে যাব কেন ?
আগন্তক একটুখানি মুচকি হেসে যুবকটার দিকে তাকালেন এবং বসলেন। সবাইকে বসতে বললেন। তোমরা যেহেতু সবাই উচ্চ শিক্ষিত, তাই আমি আশা করেছিলাম, আমার প্রস্তাবটা শুনে তোমরা সবাই একযোগে আমাকে এ প্রশ্নটাই করে আক্রমণ করবে। কিন্তু সবাই যখন রাজি হয়ে গেলে, তখন তোমাদের অসচেতনতা দেখে আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। এখন অন্তত আমি একটু স্বস্তি পেলাম।
-যুবক, তোমার নাম কি ?
জ্বি, আমার নাম সাবের হোসেন।
-কোন বিষয়ে পড়ালেখা করেছ ?
সাইকোলজি, ইকোনমিক্স এবং ম্যানেজমেন্টে মাষ্টার্স ।
-বাপরে , ট্রিপল মাষ্টার্স ! ভেরী গুড ।
আচ্ছা, অনেক্ষণ ধরে লক্ষ্য করছি আপনাকে। আপনি নিশ্চই লেখা পড়া জানেন। কিন্তু নিজেকে লুকিয়ে রাখছেন, কেন ? আপনি তো আমাদের কৌতুহল বাড়িয়েই তুলেছেন। কে আপনি ?
- বেশী কিছু না। ছেলেবেলায় অল্প বিস্তর শিখেছিলাম। গরীব ঘরের মানুষ। নদী ভাংগনে সব হারিয়েছি। তাই আর লেখাপড়া হয়নি। এখন এই- ভবঘুরে । শুধু ঘুরি আর ঘুরি । তোমাদের মত মানুষকে দেখি। মানুষের কাছ থেকে শিখছি। প্রকৃতির কাছ থেকে শিখছি।
বলুন না, কে আপনি ?
-আমি একজন শ্রমিক । এর বেশী পরিচয় আমার জানা নেই। বাড়ি ঘর নেই। যেখানে রাত হয়, সেখানেই ঘুমিয়ে পড়ি। দিনের সব টুকু সময় সাধ্যমত শ্রম বিক্রি করে নিজের ক্ষুধা মেটাই। ভিক্ষে করি না। তোমাদের প্রশ্নের চেয়েও আমি অনেক বেশী জবাব দিলাম।
কি কাজ করেন ?
-যখন যে কাজ পাই । নিদৃষ্ট কোন কিছু নয় ।
তা, আমাদেরকে নিয়ে আপনি ঐ শুকনো ,মরা নদীতে কেন যেতে চাইছেন ?
- গেলেই দেখতে পাবে। আর একটা কথা, তোমরা কখনো স্বেচ্ছা শ্রম দিয়েছ?
দু’একজন বলল, হ্যা ।
-আমার সংগে যাবে ? মাত্র আধ ঘন্টার জন্য ।
সবাই কিছুটা ভরসা পেল তার কথায়। আর তা ছাড়া খুব বেশী দূরে তো নয়। মাত্র দু’কিলোমিটার উত্তরে।
পথে যেতে যেতে একজন কৌতুক করে বলে উঠল,
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার পিছে পিছে চলছি বলে মনে হচ্ছে।
বৃদ্ধ পেছনে না তাকিয়েই বললেন,
-তোমাদের সন্দেহ হলে আমার সংগে এস না । আমি পেছনে ফিরে তাকাব না। তোমরা ইচ্ছে হলে সবাই ফিরে যেতে পার।
সরি, স্যার ।
-স্যার নয় । স্যার শব্দটা আমি একেবারেই পছন্দ করি না।
কিছুক্ষণের মধ্যেই বরাট নদীর কাছে এসে গেল সবাই। শত শত মানুষ কোদাল আর ঝুড়ি নিয়ে এটিকে খনন করছে। এখানে লুংগী, নেংটি পরা লেবার থেকে শুরু করে অনেক নামী দামী মানুষও কাজ করছে। মাটি দিয়ে দুই পাড়ে উঁচু এবং চওড়া বাঁধ নির্মান করছে। বৃদ্ধ লোকটা নিজেও একটা কোদাল আর ঝুড়ি নিয়ে নেমে গেলেন ওদের সাথে। এসব দেখে ছেলেগুলো হঠাৎ চমকে গেল ।
সাবেরের নজরে পড়ল একটা লোকের দিকে । তার কাছে গিয়ে বলল,
সচিব সাহেব, আপনি ?
-কে, হে ? মানে, আপনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাহেব না ?
-হ্যা, কিন্তু তুমি কে ? আমাকে স্যার না বলে সচিব সাহেব বলছ ?
আপনি আমার একটা ভাইভা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন । আমাকে অনেক প্রশ্ন করেছিলেন। যার প্রতিটার জবাব আমি ঠিক ঠিক দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার যখন চাকরী হল না, তখন আপনার একটা ছবি আমার মোবাইলে তুলেছিলাম এবং পরিচয় সংগ্রহ করেছিলাম। তো ? এই সরকার আপনাদের হালুয়া টাইট করেই ছাড়ছে, কেমন লাগছে ?
-অই, ব্যাটা । কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিস না।
উহু ! ”দিসনা” নয় । ”দিবেন না” বলেন । সম্মান করে কথা বলেন। স্যার ডাক শুনতে চান ? এখনো সাহস হয় ? সরকার যেমন করে সাধারণ জনগনের সাথে আচরণ করতে আদেশ করেছে, ঠিক তেমন আচরণ করুন। নইলে পাশেই কমিশনারের অফিসে অভিযোগ বই আছে। রিপোর্ট করে দেব কিন্ত। একেবারে চাকরী নট।
-দুত্তরী, কত দেখলাম !
আচ্ছা, এত অহংকার ? তাহলেতো আপনাকে আর ছাড় দেয়া যায় না। অবশ্যই রিপোর্ট করব।
-দূ--উ---র ! এরকম কত উন্মাদ দেখলাম ! এই তো কয়েকটা দিন। এসব পাগলামী কয় দিন চলবে ? জনগন এরকম পাগোল -ছাগোলকে বেশীদিন সহ্য করবে ? এর দেশটার নাম ভাটি গাঁও । টেনে নামালো বলে ।
আচ্ছা, যতদিন না নামায় ততোদিন দেখেন, কি হয়, কেমন ? আচ্ছা, চলি।
ওরাও একে একে কাজ শুরু করল। আধ ঘন্টার স্থলে কখন যে চার ঘন্টা কেটে গেল তা কেউ বুঝতেই পারল না। কাজ শেষে কৌতুহলী যুবকরা বৃদ্ধকে আবারো চেপে ধরল।
- কে আপনি ?
আর একদিন বলব। এখন সবাই ক্লান্ত। যাও , ঘরে ফিরে যাও । বিশ্রাম কর।
কিন্তু একটা কথা, এর আগে আমাদের দেশের কোন এক সরকার এরকম শুরু করেছিল, কিছুদিন পর তার হস্যকর পরিণতি ঘটেছিল।
-হ্যা, আমি জানি।
আপনি জানেন ? তাহলে আবার কেন ? এ জাতির দ্বারা কিচ্ছু হবে না। এ আবেগ মাত্র কয়েকদিন চলবে। এর পর আবার যা তাই হবে । আমাদের দেশের মানুষ সম্ভবত জন্মগত কারণেই এরকম। এরা অনেক পজিটিভ বিষয় কল্পণা করে, কিন্তু বাস্তবায়ন করে না।
-তুমি খুব মূল্যবান কথা বলেছ। কিন্তু কাউকে না কাউকে তো শুরু করতে হবে , কেবল হবে না বলে বসে থাকলে তো কোন কাজই করা সম্ভব না, তাই না ?
বেড়ালের গলায় ঘন্টাটা বাঁধবে কে ?
কে আবার ? তুমি , আমি, আমরা । আচ্ছা, এই যে পরিশ্রম তোমরা করেছ, কোন বিনিময় পেতে ইচ্ছে করছে ?
সাবের বলল, শ্রমতো স্বেচ্ছায়ই দিলাম, বিনিময় পাবার তো প্রশ্নই আসে না।
-তোমরা সবাই কি একমত ?
অবশ্যই।
-শুনে খুশী হলাম। এটা হচ্ছে মানুষের বোধ শক্তি । এ অনেক বড় শক্তি । সবাই এরকম শক্তি নিজের জীবনে ধারন করতে পারে না। এধরনের যে কোন কাজকে যদি তোমার জীবনের নিত্য কর্মসূচি মনে কর, যেমন শরীর চর্চার অংশ মনে কর, তাহলে ব্যাপারটা কেমন হয়, ভাব তো ?
ঠিকই তো। আপনি ঠিকই বলেছেন। এভাবে তো কখনওই চিন্তা করিনি।
-এই চেতনাবোধ যদি যুবকরা দলে দলে তাদের জীবনে জাগ্রত করতে পারে, তাহলে কি হতে পারে, একটু কল্পণা করে দেখ তো ? কোন মানুষের পক্ষে একটা মুহুর্ত কর্মহীন থাকা সম্ভব কি ? জান, জাপানের জনগন এভাবেই তাদের ব্যক্তিগত জীবন এবং রাষ্ট্রীয় উন্নতি সাধন করেছে। একটু ভাব তো, তোমাদের পক্ষেও তা সম্ভব কি না ?
অবশ্যই সম্ভব । আপনাকে যত দেখছি, আপনার কথা যত শুনছি ততোই অবাক হচ্ছি ! কে আপনি ?
-আগেইতো বলেছি, একজন সাধারণ শ্রমিক। আচ্ছা, আজ যাই। আবার দেখা হবে।
আচ্ছা, আর একটা কথা । আপনার থলেতে কি আছে ? জানতে পারি ?
-আছে কিছু জিনিষ পত্র । সব কিছু দেখানো যাবে না। কিছু কিছু দেখাতে পারি, দেখবে ?
একটা পোটলা বের করে খয়ের রঙের কিছূ শুকনো ছেড়া পাতার মত টুকরো দেখিয়ে বলল,
-বলতে পার এগুলো কি ?
ছেড়া পাতার মত মনে হচ্ছে । কিন্তু একটা অংশ একটু স্ফীত। কী , এগুলো ?
-এস দেখবে ।
একটা গাছের নীচে এলেন সবাইকে নিয়ে ।
-দেখ, এ গাছটার নীচে এরকম পড়ে আছে অসংখ্য । অগনিত ।
তিনি কথা বলছেন আর তুলে তুলে সেগুলো থলেতে ভরছেন।
-দেখ, গাছের দিকে তাকিয়ে। শুকনো পাতার মত ঝুলে আছে। বাতাসে দুলছে আর থেকে থেকে ঝরে পড়ছে। এ গাছটার নাম কি বলতে পার ?
সাবের বলল, এটা মেহগনি গাছ।
-তোমরা সবাই চেনো, এটা মেহগনি গাছ ?
দু’একজন মাথা নাড়ল। অন্যরা চুপ করে দাঁড়িয়ে ।
-এর মধ্যে লুকনো এই স্ফীত অংশই হচ্ছে মেহগনি গাছের বীজ। কী অসাধারণ আল্লাহর সৃষ্টি! এগুলো শহরের পাকা রাস্তায় পড়ে মানুষের পদদলে পিষ্ট হয়ে নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু যেখানে এরা মাটির ছোঁয়া পায় সেখানে বর্ষার পানি পেলেই কিছুদিনের মধ্যে অংকুরিত হয়। জমি চাষ করা লাগেনা, নিড়ানী দেবার প্রয়োজন হয় না। সার, কীট নাশকের দরকার হয় না। সৃষ্টির এ এক বিষ্ময় ! এরকম আরো কোটি কোটি প্রজাতির উদ্ভিদ আল্লাহর নির্দেশে এ জমিনে আমাদের ভাবনার আগেই সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। ক’জন আমরা সে খবর রাখি ? আরো অবাক ব্যাপার হল এ বীজ অংকুরিত হবার পর পরই দেখবে খুব দ্রুত এরা সোজা বেড়ে উঠে । তোমরা যখন খাল খনন করছিলে আমি কাজের ফাঁকে ফাঁকে এগুলোর কিছু কিছু বাঁধের মাটিতে ফেলে এসেছি। এস, তোমাদের প্রাকটিক্যাল দেখাই।
হাটতে হাটতে একটা লেকের পাড়ে এলেন। এগুলোকে ভেজা স্যাঁতসেঁতে মাটির উপর ছড়িয়ে দিলেন ।
-ব্যাস, বপন হয়ে গেল ।
এতেই হবে ?
-হ্যা । এখানে যদি এগুলো পড়ে থাকে, তবে কিছুদিন পর এখান থেকেই জন্ম হবে এরকম বড় বড় মূল্যবান বৃক্ষ । এখন তোমরাই বল, এ কাজ করার জন্য কোন বিনিময় আশা করা যায় ? এ কাজ করার জন্য আলাদা কোন শিক্ষার দরকার আছে ?
অসাধারণ ! আপনি আমাদের তৃতীয় নয়নের আলো জ্বেলে দিয়েছেন, স্যার ।
-আবার স্যার ? বলেছি না, এ শব্দটা ব্যবহার করবে না। আমি অতি নগন্য একজন মানুষ । আসলে আমাদের সবার স্যার হচ্ছেন, ঐ তিনি । আর কেউ এর যোগ্য নন।
আচ্ছা চলি ।
আগন্তক বিদেয় হবার পর ছেলেরা অনেকগুলো বীজ সংগ্রহ করেছে।
হিন্দী সিনেমা যাদের এত প্রিয় ছিল, তারা এখন শুধু নিউজ চ্যানেল ছাড়া আর কিছু দেখবার সময়ই পায় না।
আজকের বিশেষ বিশেষ খবর,
এক নদী থেকে অন্য নদী পর্যন্ত খাল সংযোগ করায় দেশের প্রায় সবগুলো নদীতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে । নদী গবেষকরা বলছেন, এর ফলে বড় বড় চর ক্ষয়ে গিয়ে নদী তার আগের রূপ ফিরে পাবে। খালের দু’পাড়ে অসংখ্য হাস, মুরগী ও মৎসের সমন্বিত খামার গড়ে উঠেছে, পাশাপাশি প্রচুর রবি ফসল উৎপাদিত হচ্ছে। এ থেকে গুচ্ছগ্রামবাসী প্রতিটি পরিবার স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়েছে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা একে যুগান্তকারী অর্থনৈতিক বিপ্লব বলে আখ্যায়িত করেছেন।
সার্কুলার জারির পরও ’রাষ্ট্রপতি’র পরিবর্তে এখনো যারা ’মহামান্য রাষ্ট্রপতি’ শব্দগুলো লিখেছেন , তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে । এ বিষয়ে সকলকে আবরো সতর্ক করা যাচ্ছে।
ঘুষ নেবার সময় হাতে নাতে ধরা পড়ায় আজ ৭ জনকে চাকরী থেকে বরখাস্থ করা হয়েছে।
জনস্বার্থে সচিবের কাছে আগত একজন সাধারণ নাগরিককে সম্মানসূচক সম্বোধন না করায় সংশ্লিষ্ট সচিবকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
দেশের সকল শিল্প মালিকদের কারখানার বর্জ্য তাদের নিজস্ব প্ল্যান্টে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা হয়েছে। এ থেকে দেশের জ্বালানী ও জৈব সার উৎপাদনের নতুন দ্বার উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। জলাশয়ে বর্জ্য ফেলার জন্য দায়ী তিনটা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিককে ১২ বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
যৌক্তিক কারণ ছাড়া কর্মহীন মানুষকে স্পটেই গ্রেফতার করা হবে। এ আইনের আওতায় আজ পার্কে আড্ডারত কর্মহীন ১৩ যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে ।
মিথ্যাবাদীকে সনাক্ত করার যন্ত্র দেশের সবগুলো আইন প্রয়েগকারী সংস্থায় সংযোজিত হয়েছে।
এবছর আট জন সফল মাকে রাষ্ট্র কর্তৃক স্বর্ণগর্ভা উপাধিতে ভুষিত করা হয়েছে এবং তাদের মাসিক ১০ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা প্রদান করা হবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এফ, আই , জুয়েল # সুন্দর আবেদন । অনেক শিক্ষনীয় একটি গল্প ।
মিলন বনিক দীর্ঘ গল্পের ধারাবাহিকতা আর নিটোল বর্ণনা খুবই চমৎকার দাদা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেসেজগুলো “ আমাদের দেশের মানুষ সম্ভবত জন্মগত কারণেই এরকম। এরা অনেক পজিটিভ বিষয় কল্পণা করে, কিন্তু বাস্তবায়ন করে না।” খুব মন ছুয়ে গেলো...অনেক অনেক শুভকামনা...
অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।
আমার গল্পটা পড়ার অনুরোধ থাকলো...
তানজির হোসেন পলাশ ভাল লাগার মতো গুণ এই গল্পে আছে। ধন্যবাদ।
মামুন ম. আজিজ সুন্দর প্রত্যাশার জন্য সুন্দর সমাধানের কল্পনা ..বেশে বড় ভাই। বেশ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
খোরশেদুল আলম প্রয়োজনীয় একটি বিষয় নিয়ে আপনার লেখা গল্পটি ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
বিদিতা রানি দেশকে বর্তমান দুর্দশা থেকে রক্ষা করার জন্য এমন দেশ প্রেমিকের প্রয়োজন ঘরে ঘরে। সব বড় কর্মর্তার শত শত কোটি টাকা লুটপাট দেখেই বুঝা যায় তাদের একজনেরও প্রকৃত দেশপ্রেম নেই। বর্তমান সময়ের উপযুক্ত গল্প। খুব ভালো লাগলো।
সূর্য অনিয়ম, অনৈতিকতার উপর খড়গ নেমে এলে সেটা সমাজ, রাষ্ট্রের জন্য হিতকর হবেই। (আজকের বিশেষ খবর )এমন কিছু শুধু গল্পে আর কল্পনায়ই সম্ভব। যদি বেশির ভাগ মানুষই অনিয়মকে নিয়ম আর অনৈতিকতাকে নীতি ভাবে তখন প্রশাসনও ভেঙ্গে পড়ে। ভালো লেগেছে
আপনার বিশ্লেষণমূলক মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
বশির আহমেদ আপনার গল্পের মত দেশটাকে যদি আমরা সাজাতে পারতাম তা হলে রবীঠাকুরের স্বপ্নের শোনার বাংলা গড়া খুব একটা কঠিন হতো না । আপনার কল্পনা বাস্তবায়ন হউক এই কানা রইল ।
আসলে পজিটিভ ভাবনা ভাবতেই ভাল লাগে । কিন্তু ৪২টা বছর যেন সে ভাবনার শূণ্যস্থানটি পূরণ হল না । আপনার কামনা শুভ হোক । অনেক ধন্যবাদ ।
ঐশিকা বসু খুব ভাল লেখা। আপনার লেখা পড়ার সময় কোথাও থামতে পারিনি। আপনি লিখে যান।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি বর্তমান কালের খুব দরকারী/জরুরী একটা লিখা উপহার দিলেন ভাই। হ্যাটস অফ......................
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

২৯ অক্টোবর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪