বিষয়ভিত্তিক লেখা নিয়ে লিখতে বসলেই হৃদয়ে শ্রাবণ ধারার মত কান্না নেমে আসে । ভাবুক মন বড় অদ্ভুত যন্ত্র । সে যখন ভাবতে বসে , তখন কি কোন চাপিয়ে দেয়া ভাবনার জেলখানায় বন্দী থাকতে চায় ? --- চায় না। যুগ যুগ ধরে মনের স্বাধীনতা এভাবেই হরণ হয়েছে বার বার । নিজের মনই অনেক সময় স্ববিরোধী হয়ে সে স্বাধীনতার বিরোধীতা করে বসে। সেই সাথে রয়েছে কত না নিয়মের বাঁধন। নিয়ম মেনে চলার নির্ধারিত ছবকের ছক। এটাই নিয়তি। সব মেনে নিতে হয়। নাহলে এগিয়ে চলার পথ যে রুদ্ধ হয়ে যায় । অতএব হে আমার মনোসাথী, চল না, আজ অন্য কোথাও ঘুরে আসি। ক্ষতি কি ? প্রকৃতি এখন যেভাবে বিগড়ে বসেছে, তাতে কী ই বা করার আছে তোমার ।
টিনের চালে গাছের ডালে
বৃষ্টি পড়ে তালে তালে
---- এসব এখন ভুলে যাও । সভ্য মানুষেরা আকাশ ছুঁতে চাইছে। তাদের এখন কবিতা লেখার সময় নেই। সবুজ শ্যামলিমা রক্ষার বর্ষা ? কোনই প্রয়োজন নেই ।
হে মন , তুমি যেমন ভাবছিলে-
শ্রাবণের রোদে হল খর খর, আউশের ক্ষেত পুড়ে ছার খার --- ।
কত রকম ছারখারের গল্প-কবিতা লিখবে তুমি ? তোমাকে ঘিরে ফেলেছে কত জঞ্জালের জালে ? কোন্ যন্ত্রণার জাল ছিড়ে বেরোতে চাও তুমি ?
এমন ঘন বরষায় ---- আহা ! এ গান এখন খা খা রোদে কেড়ে নিয়ে যায় । প্রতি নিয়ত। পৃথীবির উষ্মতা না বাড়লে নাকি বেকারত্ব বাড়বে । যার মরণ থাবায় নাকি মানব সভ্যতাই বিলিন হয়ে যাবে। হাল যুগের মিসম্যাসড্ আমার এ মন-মেমোরী চীপ। ওয়েষ্টেজ এক্সেসরিজের ঝুড়িতে যার ঠাই । অবুঝের মত চেয়ে থাকি আকাশের দিকে। এত বড় বৈজ্ঞানিক তত্বের বিরুদ্ধে আমি কি বলব, প্রভু? তুমিই বলে দাও । সারা ভুবনের ভাবনা এ গোবর ভরা মাথা থেকে ঝেড়ে দিয়ে আমার ছোট্ট ভুবনে ফিরে দেখি, প্রকৃতির বর্ষা না থাকলে কি হবে? এ হৃদয়ে বর্ষণ-প্লাবনের কমতি নেই ।
বৃষ্টি নিয়ে সাহিত্য কবিতা যে কত লেখা হয়েছে তা সংখ্যার বিচারে গণনা করে শেষ করা যাবে না। যেটাই মাথায় জেঁকে বসে, ধূলোয় জমানো তাক থেকে এনে ধুলো ঝেড়ে খুলে দেখি, ও বাবা, এতো লেখা হয়ে গেছে আরো শত শত বছর আগেই । বাহ ! কলমের কি স্বাধীনতা ! বৃষ্টিকে যে এক একটা কলম কত রূপে, কত সাজে সাজিয়েছে , তা বলে শেষ করা যাবে না।
সেই যে, দিদির বিয়েতে খুশীতে আপ্লুত শিশু সাতটা রং নিয়ে নানা রঙে সাজাতে দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিল, আমার অবস্থা হয়েছে তাই ।
হঠাৎ মনটা ভারী মেঘে ছেয়ে গেল। শীতল হয়ে গেল শরীর । যদিও এসব এখন আর আমাদের সাধারণ মানুষদের মনে তেমন দোলা দেয় না। বিচলতি করে না। প্রকৃতির স্বাভাবিক ঘটনার মতই স্মৃতীতে বিলিন হয়ে গেছে। তবু আমার গোবর স্বর্বস্ব মাথা তো? তাই কেন জানিনা বিশেষ কোন স্মৃতীবিজড়িত আবেগের কাছে আত্ম সমর্পন করে বসে ।
বৃষ্টিকে পুঁজি করে বাইজী ঘরে নুপুরের আওয়াজে আত্মহারা ভোগ-বিলাসীদের বিলাসিতার আড়ালে নিরবে ঝরেছে কত কান্নার বৃষ্টি , কে তার হিসেব রেখেছে ? মহাকাল কেবল তার সাক্ষী । কত অভিনব চিন্তা-চেতনার বিকাশ ঘটেছিল কোন কোন নর-পিশাচরূপী মানবের মস্তিষ্কে । ঐতিহ্যের আবরণ বার হাত শাড়ি ? বাংগালী ললনার মার্জিত রুচির রূপায়ন । ভাগ্য বিধাতার ভাললাগা বলে কথা। ধরে আন খাস কামরায় । বার হাত শাড়ি । বড় উন্নত শৈল্পিক আবিষ্কার । দৌড়বে ? পারবে না। কোন কোন তেজী পাখিকে কিছু দিন খাঁচায় পুষে দুর্বল করে নিজের হাতে বসিয়ে তার উড়তে না পারার ব্যর্থতাকে মহানন্দে ভরিয়ে তোলার স্বাদ - সে এক অন্য রকম স্বাদ ।
শরাবের নেশায় বুদ হয়ে থাকার দুর্বল সময়টাকে পুঁজি করে পালাবে ? না, না ,না । সেখানেও অনেক গবেষণালব্ধ আবিষ্কার সব বাঁধা দূর করে দিয়েছে । কানে, হাতে, গলায়, মাথায়, বাজুতে, কোমরে নানারকম ডিজাইনের সব অলংকারের জিঞ্জির ! আত্ম-সম্মানের যা কিছু অবশিষ্ট রয়েছে তা নিয়ে চুপি চুপি পালাবার কোন উপায় নেই । একসাথে গর্জে ওঠে শরীরে মোড়ানো আভিজাত্যের ভারে ভারী সব অলংকার নামক জিঞ্জির। পাইক পেয়াদারা সাবধান হয় প্রধান ফটকের বাইরে।
ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের প্রলোভন দেখিয়ে এরকম কত শত কোটি মায়ের হৃদয়ে ঝরেছে বৃষ্টির কান্না , ুআজ ক’জনার তা মনে আছে ? কত গবেষণা করে বাংগালী ললনাদের কামণার আগুনে নিক্ষেপ করে করা হত মাতৃত্বের অপমান। কেবল ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের অহংকারে চাঁপা পড়ে গেছে সে আর্তনাদ।
হাসছেন ? প্রাগৈতিহাসিক এসব পুরণ কেচ্ছা কাহিনী- কে না জানে ? তা কেন এসব পচা লেবু কচলানো হে ? রাগ করে ছুঁড়ে ফেললেন, তো ? তা ফেলতেই পারেন। সে আপনার একান্ত নিজস্ব অধিকার ।
কিন্তু এ অধুনা যুগে আপনার বালিশের খুব কাছে একটা মুখ লুকিয়ে খুব গোপনে যে বৃষ্টি ঝরিয়ে আর একটা বালিশ ভিজিয়ে চলেছে। আপনি কি তা জানেন ? সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগের আত্মা প্রেত হয়ে একান্ত আপনার পাশে ---
কি বলেন ? কৈ ? আমি তো কোন কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই না ?
কিন্তু চমকে উঠলেন কেন ?
আপনি চমকে দিলেন, তাই ।
শুধূই কি তাই ?
কি বলতে চাইছেন ? এভাবে আমার ঘুমের বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন ?
তাহলে যেটা ছুড়ে ফেলেছিলেন, ওটা একটু মিলিয়ে দেখুন । আমি আর বিরক্ত করব না ।
এদেশে এখনো বৃষ্টিস্নাত রাতে বাইজী নাচের ধ্বনীতে মুখরিত হয় রঙিন কাঁচের ঘর। এখনো মা তার সম্মান বাঁচাতে ছট ফট করে মরছেন। তবে এর ধরনটা হয়েছে অত্যাধুনিক । হাল সভ্যতার মানদন্ডে একেবারেই আপডেটেড। আগে চাবুকের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত নারীর নৃত্য ছন্দ বৃষ্টি হয়ে মুখরিত করত । এখন চাবুকের বদলে এসেছে পি এইচ ডি ডিগ্রী, নাম ,যশ , খ্যাতির সার্টিফিকেট নামক আধুনিক মারণ ফাঁদ । মেধা বিকাশের নামে চিত্ত দোলানোর নব্য কৌশলের এমন বিচিত্র ফাঁদ আবিষ্কার সপ্তা্শ্চর্যকেও হার মানিয়েছে। এখনো অনেক হৃদয়ে বর্ষার কান্নার আওয়াজ ধ্বনিত হয় । তবে তার শব্দ সাময়িকভাবে সনদপত্রের স্বীকৃতি, নাম, যশ, খ্যাতি, বিত্ত-বৈভব আর ঐশ্বর্যের আড়ালে নপিতিত হয়ে শত কোটি হৃদয়ের গহীনে রক্তক্ষরণ হয়ে আপন হৃদয়েই বিলিন হয়ে যাচ্ছে।
কোন এক নিশিথে বৃষ্টির রিম ঝিম তালের সাথে তাল মিলিয়ে একান্ত সংগোপনে যখন সে লজ্জা আর অপমানের আর্তনাদ প্রস্ফুটিত হতে শোনা যায়, তখন সাংবাদিকদের ক্যামেরা অফ রাখার অনুরোধ জানানো হয়। শরীরের বর্তমান বানিজ্যিক মূল্য টোটাল ডেপ্রিসিয়েশন কষ্ট এর চেয়ে কম হওয়ায় এর নীট এ্যাসেট ভেল্যু মাইনাস এর কোঠায় এসেছে বলে প্রডিউসার আরো উল্টো দাবীর হিসেব ধরিয়ে বিদেয় করে দিয়েছে। এ বিষয়ে পি এইচ ডি ডিগ্রির ব্যবহারিক মেয়াদ শরীরে বয়সের সীল লাগার পূর্ব পর্যন্ত বহাল থাকে । এখন এসব ডিগ্রীর মূল্য শুধুই তাত্তিক । মাঝে মাঝে পত্রিকার পাতায় তার বড়ত্ব আর মহত্তের স্ত্ততিগাহন আর প্রডিউসারের ঘোর আপত্তি স্বত্তেও কোন কোন পরিচালক কর্তৃক আর্কাইভ থেকে কিছুটা ফিতে কেটে এনে কোন টক শো’তে দয়া করে প্রদেয় কয়েক সেকেন্ড সময় ফ্ল্যাশ ব্যাক। এ কি কম পাওয়া?
মিলিয়ে দেখুন জনাব, আপনার বালিশের কাছে আর একটা বালিশ ভিজেছে কি না ?
না, না, হতাশ হবেন না। ঐ চেয়ে দেখুন । টিনের চালে রিম-ঝিম বৃষ্টির তালে তালে প্রিয়ার হাতের কাকন চুড়ির কন কন ধ্বনীতে মোহিত হয়েছে কত রঙিন জীবন। সে রংগে রাঙায়িত করে গড়েছেন সাহিত্য কবিতার পাহাড় । হাজার বছরের বৃষ্টির ছন্দের তালে মিশে আছে কত হৃদয় বর্ষার রাগ রাগিনীর সুর । আছে প্রসব যন্ত্রনার হাহাকার । তবু প্রশান্তি । নতুনের কান্নার আওয়াজ । সব যন্ত্রণার অবসান ।
একটা শব্দ ধ্বনি-প্রতিধ্বনি শোনার প্রতীক্ষায় ’মা’’ - আ -আ- ।
হ্যা, আমার মা । আমি । আমার আমি । আমার পরিবার । আমার নিরাপত্তার খুঁটি ধরে শক্ত হাতে দাঁড়িয়ে আছেন আমার মাথার উপরে ঐ বট গাছটা। তার শীতল বুকে মাথা রেখে একটুখানি আনন্দাশ্রু - ঝেটিয়ে বিদেয় করে দেয় সব বেদনার । নতুন শৈশব , নতুন কৈশোর, নতুন যৌবন । লাংগলের ফলা চলেছে তার সাধ্য মত কর্ষণ করে । নতুনের , সবুজের স্বাদ । সোনালী গন্ধ । এ বৃষ্টির সুখ-স্বাদ অন্যরকম এক জীবনের স্বাদ ।
এখনো বাংগালীর ঘরে ঘরে এরকম স্বাদ লেপটে রয়েছে লাখো মায়ের ঠোটে। কিন্তু আমাদের শহুরে জড়ো সভ্যতার দাপটে তথা তাবত শিক্ষিত লোকদের কলম নামক চাবুকের কষাঘাতে আমরা সে সুখের বৃষ্টির মধুর গৃঞ্জন শুনতে পাই না। কোন কোন ক্ষেত্রে এত সুখের সম্ভবনা থাকা স্বত্তেও অনেক সুখ-সুর-গীতি বেদনার বর্ষায় প্লাবন বইয়ে দেয় গোটা জাতির জীবন জমিনে ।
না, আমি এটা কোন কল্প কাহিনী বলছি না। শেষ বয়সের সঞ্চিত কড়ি দিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মকে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ধারে কাছে রাখবার প্রত্যাশায় শহরতলীতে এতটুকু ঠাই নিতে চেয়েছিলেন মহিন সাহেব। তিনি মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাবার জন্য ভুভুক্ষদের ভীড়ে নিজেকে কখনো ঠেলে দেননি যে বিবেক , সেই বিবেক আজ সমাজের সবচেয়ে ক্ষমতাধর বিকৃত মানুষের বিকৃত কলমের কাল কেউটের ছোবলে মৃত্যু শয্যায় শুয়ে কেবল পরবর্তী প্রজন্মকে এই বলে অনুরোধ করছেন, ’’ খবরদার, স্বীকৃতির দোহাই পেড়ে ঐ ভুভূক্ষদের ভীড়ে এসব নর পিশাচদের কাছে কেউ হাত পেতে আমাকে ছোট করবে না। তিনি বলছেন, দেখ, রবীন্দ্রনাথ বহু আগেই উদাহরণ দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন ,
’’বাবু কহিলেন, বুঝেছ উপেন ? এ জমি লইব কিনে । ’’
তখন তো বাবুরা অন্তত কিছু দাম দিয়ে দিয়ে হলেও কিনে নিতেন । আর এখন ? জোর করে নিচ্ছেন- বিনা মূল্যে । ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে । আমি আমার এ আড়াই কাঠা জমি ভুভুক্ষদের ভিক্ষে দিয়ে গেলাম । তোমরাও ওদের ক্ষমা করে দিও ।
বাবার আদেশ - ক্ষমা করে দিও । কিন্তু এ হৃদয়ে প্রতিনিয়ত যে বৃষ্টির কান্না প্লাবন হয়ে ছুটছে- তা রুখবো কি করে ?
না, এটাও কোন কল্প কাহিনী নয়। যেদিন ৭ম শ্রেণীর একটা মেয়ে সময় টি ভির মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিল, আমার যদি একটা বয় ফ্রেন্ড না থাকে তাহলে আমার সব বান্ধবীরা আমাকে আনস্মার্ট বলবে । তাই ------- । সেদিন আমার ৫ বছরের মেয়ের মুখটার দিকে তাকিয়ে ওর সপ্তম শ্রেণীর চেহারাটা অগ্রিম কল্পণা করে শিউরে উঠেছিলাম। এ কোন জগতে ওকে জন্ম দিলে প্রভু ? তোমার কাছেই নিবেদন করছি ।
র’বিব-আন্নী, মাগলুবুন ফানতাসীর --- হে, আল্লাহ । আমি পরাভূত, একমাত্র তোমার আশ্রয় কামণা করা ছাড়া আমার যে আর কোন উপায় নেই ।
আমার রুমমেট । ৩০ বি সি এস - কৃষি ক্যাডার এ নতুন জয়েন করেছেন। তিনি আমার ছেলের মত প্রায়। তবে বন্ধুত্ব বেশ জমেছে। বলছেন, অনেকটা হতাশার সুরেই ।
কী করব ভাই, এ কোন জগতে এসে পড়লাম ? একটাও বউ খুঁজে পাচ্ছি না। যাকেই পেতে চাইছি, তার ব্যাকগ্রাউন্ড ভয়াবহ । আমি বোকার মত ওর মুখের দিকে চেয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। ভাবছি , সভ্যতার নামে আমরা কোথায় এলাম ? আমার ছেলের ইন্টার্নী শেষ হলে আমি তার জন্য একটা সুন্দর বউ পাবার দ্বার উন্মোচন করব বলে মনে মনে পুলকিত হচ্ছি । অনুজ প্রতীম এই কৃষি কর্মকর্তার মুখের দিকে চেয়ে নিজের ছেলের হতাশ ছবিটাই যে ভেসে উঠছে বার বার । এরকম ভারী বর্ষণে প্রতি নিয়ত হাজারো, লাখো হৃদয় প্লাবিত হচ্ছে - এ প্লাবন ঠেকাবে কে ?
অজন্তা ষ্টাইল ব্লাউজ দিয়ে ৪০ বছর আগে আমাদের নারীসভ্যতার আরো এক ধাপ অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল। নেকাবের আড়ালে মুখ লুকিয়ে দাদী বলতেন,
ছিঃ , এ কেমনতর পোষাক ? কাপড় একটু বেশী করে কিনলে কি হয় ?
আর সে যুগ নেই। এখন চৌদ্দ গিরা কাপড় ফিক্সড করা হয় শাড়ির সাথে । সেই বার হাত শাড়ি । আমার মায়েদের ঐতিহ্য । সংগে অজন্তা ষ্টাইল কাটিং ব্লাউজ । দর্জিরা এ ছাড়া আর কোনভাবে বানাতেই পারে না।
দাদী হাই তুলে বলেন, মেয়ে-ছেলেরা এভাবে যদি শরীরের সবটুক বাইরে বের করে প্রদর্শনী কর, তাহলে আর বাকী পোষাক রেখে লাভ কী ? সব খুলে ফেল ? কেয়ামত আর বেশী দূরে নেই বুঝি ?
ও, দাদী, তুমি কি ঐ আকাশের তারা হয়ে এখনও দেখতে পাচ্ছ ?
আজ আর কেবল সেখানেই থেমে নেই সভ্যতা । আরো অনেক দূর এগিয়ে গেছে। যা দেখলে তোমার চোখ অন্ধ হয়ে যেত । আল্লাহ তোমাকে মুক্তি দিয়ে রহম করেছেন । কিন্তু আমাদের রেখেছেন এ চরম কঠিন অগ্নী-পরীক্ষার মধ্যে ।
আর কত কান্নার শব্দ শোনাব বলুন তো ? আমি যে বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছি ।
সমাধানের পথ নাকি রুদ্ধ ।
আমার বিবেক ডুকরে কেঁদে ওঠে । চিৎকার করে বলে উঠি- সত্যিই কি রুদ্ধ ? নাঃ ----
’’ওয়াল আস্র , ইন্নাল ইনসানা লা ফি খুস্র ’’--
সময়ের কছম, নিশ্চই মানুষ ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত রয়েছে ।
কিন্তু এখানেই থেমে গেলে চলবে ? এর পরের চরন ক’টি কি সমাধানের পথ নয় ?
দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয় সে আওয়াজ ।
চিৎকার শুনে বলে ওঠে সহযাত্রীরা । ওকে ধর । পাবনার হেমায়েতপুরে পাঠিয়ে দাও , সব ঠিক হয়ে যাবে ।