বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচ্ছন্ন

বাবা (জুন ২০১২)

জাকিয়া জেসমিন যূথী
  • ২৭
  • ১৪
ঘটনা-১
সকাল থেকে কি হয়েছে জানিনা। আমি এমনিতেই ঘুম থেকে সকাল দশটার আগে উঠিনা। আগের রাতে মা বকেছিলো! “সারাদিন কম্পিউটার নিয়েই পরে থাকো! সংসারের কাজে একটুও মন দিও না! আমি কাজ করতে করতে মরে যাই!” কথাটা খুব গায়ে লেগেছিলো! সাথে সাথে কম্পিউটার বন্ধ করে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দিয়ে শুয়ে পরেছি।

অন্যান্য রাতের চেয়ে দুই ঘন্টা আগে শুয়েও রাত প্রায় সাড়ে তিনটা পর্যন্ত এপাশ আর ওপাশই করেছি। ঘুম কেন হলোনা বুঝলামনা! আমি তো ভীষণ ঘুমকাতুরে। ঘুমের মধ্যে কেউ তুলে নিয়ে গেলেও টের পাবো না এমন গভীর! তার উপর মোবাইলে ফজরের এলার্ম বেজে উঠেছে চারটা বেজে দশ মিনিটে। তারপরে নামাজ পরে শুয়েও একই অবস্থা! এই কাত আর ওই কাত! একবার ডানে । একবার বামে! ঘুমের পুরোই ফালুদা! কিচ্ছু ঘুম হয়নি!

সকাল নয়টায় আবারো ঘুম ভেঙ্গে গেল এলার্ম এর শব্দে। ঘুম হয়নি তাই রাতে যতই রাগ করে সকাল সকাল উঠবার কথা বলি না কেন উঠতে ইচ্ছে করলো না!শুয়েই রইলাম। তারপরে উঠলাম আরো পঁয়তাল্লিশ মিনিট পর।

শোয়া থেকে উঠে দাঁত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নাশতা খেতে বসে দেখি বাবা-মা’র তর্ক চলছে। মা বলছে, “রাইন্ধা একেবারে উদ্ধার করবা!”

বাবা বলে উঠলেন,“তোমার চেয়েও ভালো পারবো! যাও টিভি দেখো গা! এদিকে আসবানা!”

বাবাকে সবসময় দেখি মুখেই বড় বড় কথা বলে। পারেনা কিচ্ছু। সব জায়গায় ঝামেলা লাগায়। গ্লাসে পানি ঢালতে গেলে টেবিলে পানি দিয়ে একাকার করেন। ভাত খেতে বসে প্লেটের চারদিকে ভাত ফেলে বিদিকিছরি অবস্থা বানান। এরকম আরো অনেক অনাসৃষ্টি! মা তাই নিশ্চিন্ত হতে পারলেন না।

“ও তাহলে এই ব্যাপার! আজকে বাবা রান্না করবে!”আমি বসে বসে মজা দেখতে থাকলাম।

রান্না করতে বসেছে। কোন্ পাতিলে রানবে। মাছ কিসে ধুবে। কিছুই তাল পাচ্ছে না! আমি রান্না ঘরের দরজার সামনেই খাবার টেবিলের চেয়ারে বসে আছি। না আম্মাকে ডাকি দেখে যেতে! না আব্বাকে কিছু এগিয়ে দিয়ে হেল্প করি! চরম বদমাইশের মত বসেই আছি।

একটু পরেই মায়ের ডাক পরলো,

- এইই,পেঁয়াজ বাটা লাগবে!
-আমরা পেঁয়াজ বাটি নাকি?কুচি করে কেটে দেই।
-দেও কুচি কইরা!
-এহ্, নিজে রান্তে চাইছো। নিজেই কইরা ন্যাও!আমারে কও ক্যাঁ!
-যাহ্ লাগবো না। পাটা কই?আমিই বাইটা নিতেছি!
থালাবাসনের স্ট্যান্ডের নিচে পাটা আছে।দেখিয়ে দিলো মা।
পাটা বের করে শিল ধোয়ার খবর নেই। আগেই বাঁটতে বসে যাচ্ছে!আম্মা হায় হায় করে উঠলো, “আরে করো কি? পাটা কি কোনকিছু দিয়া ঢাকা থাকে? ইঁদুর উঠে। তেলাপোকা বসে। ধুলা পরে না? এইটা না ধুইয়াই বাটতে লাগছো! এরেই কয় পুরুষ মানুষের কাম!”

আম্মার দাবরানি খেয়ে বাবা পাটা ধুয়ে নিলো। শিল ধুয়েছে কিনা দেখলাম না। খেয়াল করিনি। মনে হয় ধোয়নি।
তারপরে বসে বসে একটা একটা করে পেঁয়াজ পাটার উপরে রেখে থেঁতো করে মিহি বেটে বেটে স্টিলের বাটিতে তুলে তুলে রাখলেন। সেই ছবিটা তুলে রাখা দরকার ছিলো। মনে ছিলো না! আফসোস!

তারপর আমি বসে বসে নাশতা খাচ্ছি। এদিকে মায়ের ডাক পরেছে,“এএএএই কোন পাতিলে রানবোওওও?”রান্নাঘর থেকে চেঁচিয়ে মাকে ডাকছে।

মা বাবার ডাক শুনতে পায়নি। আমি গিয়ে মাকে শোবার ঘর থেকে ডেকে নিয়ে এলাম, “তোমাকে ডাকে”।
- কি ব্যাপার,আমাকে ডাকো ক্যা?
-কোন্ পাতিলে রানবো?পাতিল দেও!
-এই ডিস্কো হাড়িটায়।
-আচ্ছা যাও,সরো এখান থেকে।

আম্মা সরে গেলেন। আমি রান্নাঘরে গেলাম চা গরম করতে। গিয়ে দেখি মাছ আর মশলাকে একত্রে খুনতি দিয়ে উল্টেপাল্টে দিচ্ছে। “মাছ না ভর্তাই করে ফেলে!”এর মধ্যে আমাকে বলা হলো,কল থেকে পিচ্চি পাতিলে করে পানি দিতে। আমি ভরে দিলাম। পানি দেয়ার পরে সবটুকু পানিই বাবা দিয়ে দিলো পাতিলে। একেবারে ডালের পানির মতন। টুবুটুবু। আঁতকে উঠলাম, “এই মরেছে!”আমি চা নিয়ে সরে আসতে আসতে দেখলাম, লবণ দিচ্ছে তরকারীতে তাড়াতাড়ি। মনে হয় আগে দিতে ভুলে গিয়েছিলো।

কিছুক্ষণ পর আবার মায়ের ডাক পরলো, “এই, পটল কই? পটল দেয়া লাগবে তো!”

-“এতক্ষণে পটল দিবা?কুটতেই তো কিছুক্ষণ সময় লাগবে”।মা বললেন এসে।
- কাটো।

মা আর কথা না বাড়িয়ে তরকারিতে শেষে কাচা থাকে কিনা, এই ভেবে ঝটপট কেটে দিয়ে আবার সরে গেলেন। এখন বাবাকে আবার কিছু বললেরাগ দেখিয়ে কিভাবে পটল ছিলবে বা কাটবে তার ও তো ঠিক নেই। তরকারী প্রায় হয়ে এসেছে এই সময় বাবা আবার চেঁচিয়ে উঠলেন, “আলু নাই?”
-আলু দিয়া কি করবা?এতক্ষণে আলু দিলে সিদ্ধ হইবো?
-থাক তাইলে।:)

এর মধ্যে আমি ব্যস্ত হয়ে পরলাম। আমার কম্পিউটারের স্পিকারটা নষ্ট। মা খুব গান শুনতে পছন্দ করেন। হেড ফোন দিয়ে শোনা যায়। কিন্তু-ওটা দিয়ে শোনার এত সময় কোথায় তার! তাই স্পিকার হলে ভালো হয়। গান শুনলে মায়ের মন মেজাজ ভালো থাকে। আর আমি কম্পিঊটার নিয়ে বসে থাকলেও তখন রাগ করবে না।তাই বাসার অনেক আগে কেনা আরো একটি স্পিকার ছিলো প্রিন্টারের বাক্সে; সেটা ফেলেই দেয়ার কথা। তবু, টেস্ট করে দেখলাম। “বাহ্! ভালৈ তো আছে। ভাগ্যিস ফেলে দেয়া হয়নি।“

গান শুনছিলাম।কম্পিউটারে কাজের ফাঁকে ফাঁকে রান্নাঘরের দিকে যেয়ে দেখতে পেলামবাবা চলে গেছে নামাজে। মাকেই নিতে হলো মাছের তরকারির ফিনিশিং দেয়ার কাজ। পাতিলটা টেবিলে রেখে ছবি তুলে নিলাম। কিন্তু, পাতিলের চেহারা ভালো হয়নি। পাতিলের কানায় জ্বাল জোরে দেয়ার ফলে পোড়া পোড়া ভাব ধরেছে। তাই তরকারী সুন্দর করে ঢেলে আবার ছবি তুলে নিলাম, ব্লগে এটা নিয়ে একটা মজার পোস্ট দেওয়া যাবে, “ভাগনা মাছের সাথে পটলের ঝোল!”

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মা খেতে বসেছে। জিজ্ঞেস করে সন্তুষ্ট হাসি পেলাম। সেই সাথে আরো জানা গেলো,“মাছের তরকারীটা ভালোই হয়েছে। খাওয়া যাচ্ছে!”

বাবা নামাজ থেকে আসার পর বললেন,“ভালোই তো পারো। আমি অসুস্থ হইলে আর চিন্তার কিছু নাই। রাইন্ধা খাওয়াইতে পারবা!”

-“রানলে এমনেই রানবো। শুধু অসুস্থ হইলে কেন?”বলে বাবা খেতে বসলেন।

আমি তো নাক শিটকে শুটকে খেতে বসলাম। পরে খেতে শুরু করে দেখলাম, মায়ের রান্নার সাথে তেমন একটা পার্থক্য হয়নি। বাবা রেঁধেছেন জানা না থাকলে বুঝতেই পারতাম না!





ঘটনা-২
একদিন আমি বিকেল বেলা বাসায় বসে বাচ্চাদের পড়াচ্ছিলাম। ছবি আঁকা শিখতে এসেছিলো ওরা। এর মধ্যে আবার কারেন্ট চলে গেছে। চার্জ লাইটের আলোও কমে এসেছে! মোমবাতির আলোয় পড়াতে আর ভালো লাগছে না! জুন মাসের চরম গরম!

দরজায় শব্দ। বাবা ঢুকছেন। হুড়মুড়িয়ে। এক হাতে ডজন খানেক ডিম। আরেক হাতে এক লিটার দুধ। হন্তদন্ত হয়ে রান্নাঘরে ঢুকলেন। আমি তো অবাক! রান্না ঘরে কি করবেন! আম্মা বাসায় ছিলো না। বাবা কি চা খেতে চাইছেন? আমি পড়ানো ছেড়ে উঠে গেলাম। দেখি একটা মোটামুটি আকারের বড় বাটিতে দুধ ঢেলে দিলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কি করতেছেন?” কোন উত্তর নাই। প্যাকেট থেকে ডিমগুলো বের করে একটা একটা করে ডিম ফাঁটিয়ে পুরা দুই হালি ডিমই বাটির মধ্যে ভেঙ্গে চামচ দিয়ে নাড়তে লাগলেন। এর পর চিনির বয়াম থেকে প্রায় এক কাপ চিনিও। আমি ভাবলাম, বাবা পুডিং বানাতে চাইছে! জিজ্ঞেস করলাম, “পুডিং বানাবেন?” চুপ করে আছে! কিছু বলেনা! রান্নাঘরের পাতিল যেদিকে থাকে সেদিকে গিয়ে ডালের পাতিলে হাত দিলেন। আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে হাত থেকে নিয়ে বললাম, “আরে, এটায় তো ডাল রাঁধে! মিষ্টি জিনিস রাঁধার পাতিল আলাদা!” তারপরে, কোন পাতিলে মিষ্টি জিনিস রাঁধে তা চাইলেন। আমি আবারো জিজ্ঞেস করলাম, “কি বানাতে চান?”
এবার বললো, “হালুয়া”।
এতক্ষণে আমার খুব রাগ হলো! “ডিমের হালুয়া!”
“ডিমের হালুয়া বানাবেন আগে বলবেন না আমাকে? শুধু শুধু কতগুলা ডিম নষ্ট করলেন!” আমার কণ্ঠের ঝাঁঝ দেখে বাবা একটু মিইয়ে গেলেন। তবুও সরে গেলেন না! নিজেই কাজ করতে চান। আমার পাশ থেকে সরে চুলার পাশে গিয়ে নিজেই বড় কড়াই দিয়েছিলাম ওর মধ্যে ডিম দুধের মিশ্রণটা ঢেলে জ্বাল বাড়িয়ে দিলেন। তারপরে,
খুন্তি দিয়ে নেড়েচেড়ে একেবারে দলা দলা বানায় ফেলতেছে। আমি যতই বলি আমারে দ্যান, ঠিক মত করে দেই! দ্যায় না আমার হাতে! নিজেই করবে।

জোর করে বাবার হাত থেকে খুন্তি নিয়ে এক পাশে সরিয়ে দিয়ে বকা লাগালাম, “আমি এখন পড়াচ্ছি! আপনি আগে বললেই তো আমি ওদের ছুটি দিয়ে শান্তিমত করে দিতে পারতাম! তার উপরে কারেন্ট নাই! এই অন্ধকারেই এইসব নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হওয়ার কি দরকার ছিলো!”

গরমে বাবা অতিষ্ট! সেই সাথে মেয়ে ক্ষেপেছে! বাবা আর রান্না ঘরে থাকা নিরাপদ মনে করলেন না! চলে গেলেন নিজের ঘরে। আর এদিকে আমি না পারছি হালুয়া বানানো শেষ করে পড়াতে যেতে, না পারছি পড়াতে! আমি পড়ানোর জন্য রান্নাঘর থেকে সরে গেলেই বাবা আবার ঝামেলা করতে ছুটে আসবে।

সেদিন আমার ছাত্রগুলোও বেশ মজা পেয়েছিলো। মিসের বাবার কান্ডকীর্তি নিয়ে!


ঘটনা-৩
বাবা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন না। কম্পিউটারের এম এস অফিসের কাজ তাঁর কাছ থেকেই শিখেছিলাম। তাও বছর কয়েক আগে। প্রায় আট বছর আগের কথা তাও।

আমি সারাদিন পরে থাকি এটা নিয়েই। তাই এখন অনেক কাজই আমি শিখে ফেলেছি। এম এস অফিস ছাড়াও। কিন্তু, বাবা তো আর আমার মতন এত এই বাক্স নিয়ে পরে থাকেন না। আর আমাদের ভাই বোনের যন্ত্রণায় কম্পিউটার ব্যবহারের খুব একটা সুযোগও পান না সেরকম। নিজের অফিসের জরুরী কোন ডকুমেন্ট ফাইল টাইপ করতে হলেও আমাদের কাছে আসেন খুব কাচুমাচু ভংগীতে। কি জানি আবার আমাদের কোনও ইম্পর্ট্যান্ট কাজ থাকে কিনা! বাবার এই অসহায়ত্বটা খুব কষ্ট দিত আমাকে এক সময়। যখন আমাদের বাসায় শুধু একটি কম্পিউটারই ছিলো। এখন অবশ্য তিনি নিজের ইচ্ছেমতন কাজ করতে পারেন। এখন শুধু উনিই ব্যবহার করেন ডেস্কটপটা।

তো, যে কথা বলতে চাইছিলাম। বাবার ইমেইল এড্রেস খোলার দরকার। যে সময়ের কথা বলছি, তখন আমি ইন্টারনেটের কাজে অত দক্ষ হয়ে উঠিনি। বাবার একটা ইমেইল একাউন্ট খোলা দরকার। ভাই আমাকে জানালো, “এই কেমন নেট ইউজ করা শিখছো দেখি! একটা ইমেইল একাউন্ট খোল তো!” কথা শুনেই একটু জড়সড়ো হয়ে গেলাম। যাই হোক, করতে বসলাম। ইমেইল একাউন্ট এর জন্য নিজের ইচ্ছে মত নাম অনেক সময় নেট থেকে দিতে দেয় না। ওরা বেশকিছু আইডিয়া দেয়। সেটা যারা নেট ইউজ করেন, ইমেইল ঠিকানা আছে তারা ভালোই জানেন। তো, আমার বাবার নামে সেটা কিছুতেই ঠিক হচ্ছিলো না। খন্দকার নাজমুল! শুধু নাজমুল! শুধু খন্দকার! ধুউউউর! সব কমন! একটা শব্দও নিচ্ছেনা!

আমি একাউন্ট করতেছি। আমার ভাই পেছন থেকে এসে দেখছে। হাসাহাসি পরে গেলো দু’জনের মধ্যে। বাবা বসে আছেন কাচুমাচু মুখ করে। আর একটা ইমেইল একাউন্ট করতে যে এত সময় লাগে! উনি তা ভাবতেই পারেন নি। অস্থির হয়ে যাচ্ছেন!

যে সময়ে আমরা ওনাকে সাথে নিয়ে বসেছি, দিনের সে সময়টা বাবা ও মা একসাথে বসে টিভি দেখেন। নাটকের সিরিয়াল। এক পর্ব না দেখলে পরের পর্বে মনে হয় অনেক কিছু মিস হয়ে গেলো! এমন না যে ইমেইল একাউন্ট করা দেখতেই হবে। উনি না দেখলেও, পাশে না থাকলেও ওটা বানিয়ে দেওয়া যায়। আমি জাস্ট তাকে শেখাতে চাইছিলাম বলে পাশে বসিয়ে রেখেছি। বাবার উশখুশ ভালোই বুঝতে পারছিলাম আমি। আহারে! বাবা না পারছেন ও ঘরে যেয়ে বসতে! না পারছেন এ ঘরে খুশি মনে থাকতে। তাঁর উপর ছেলে মেয়ে দু’টো আবার হাসাহাসি করছে কেন! ভালো অস্বস্তিতে পরে গেলেন তিনি!

এর মধ্যে ইমেইল এড্রেস যাহোক একটা কিছু দাঁড় করানো হয়েছে। সবকিছুই করা শেষে। বিপত্তি এলো একেবারে শেষে “ক্লিয়ার ক্যাচে” বলে একটা জায়গা আছে , বারে বারে কি একটা এবড়ো খেবড়ো লেখা আসে! বারে বারে টাইপ করতে বলে আর সাবমিট করতে বলে। সেগুলো মাঝেমাঝে বড্ড জ্বালায়। সেদিনও সেরকম জ্বলাচ্ছিলো। পাঁচ-ছয়বার দেওয়া হয়ে গেলো তাও বারে বারে নতুন কোড আসতেই আছে। আমি বিরক্তিতে কয়েকবার “ধুর!” বলে উঠলাম। আমি বিরক্ত কম্পিউটারের কাজের উপর। বাবার উপরে না! বাবা ভেবেছে, তাঁর জন্য করতে হয়েছে, এজন্যে আমি ক্ষেপে যাচ্ছি! উনি উঠে চলে যেতে চাইলেন। আমি আবার তাঁর দিকে চেয়ে বলে উঠলাম, “আরে এত মন খারাপ করেন কেন শুধুশুধু? আপনাকে কিছু বলছি?”
এ কথা শুনে আবার ফিরে এসে বসে পরলো আমার পাশের চেয়ারে।

মজার ব্যাপার হলো, ইমেইল একাউন্ট খুলেছেন ঠিকই। কিন্তু, ওনার ইমেইল কিভাবে চেক করতে হয় শেখানোর পরেও মনে রাখতে পারেন না। ওনার পাসওয়ার্ড আমাকেই মনে রাখতে হয়। আর ওনার ইমেইল একাউন্টও আমাকেই চেক করতে হয়! বিশাল একটা পাসওয়ার্ড দিয়ে দিয়েছে আমার ভাইটা ওনার ইমেলের! মাইনেমইজনাজমুল! কি বিশাল পাসওয়ার্ড! হাসতে হাসতে শেষ আমরা ভাই বোনরা!


ঘটনা-৪
বছর কয়েক আগের এক বাবা দিবসে বাবাকে কি দেবো ভাবছি। হাতে টাকা নেই। যেটা আছে তা দিয়ে কোনমতে একটা গিফট কিনে দেয়া যায়। আসলে সেই বাজেটে দেয়া যেত অনেক কিছুই। কিন্তু, আমার বাবা হলো এমন একজন মানুষ যাকে তাঁর প্রয়োজনীয় কিছু দিলেই মনে হয় তাঁর আনন্দটা বোঝা যাবে! আর, ফ্যাশনেবল কিছু দিলাম, বাবা দিবসের গিফট হলো ঠিকই। কিন্তু যাকে দেয়া তাঁরই যদি পছন্দই না হলো, তাহলে দিয়ে লাভ কি!

যাহোক, দনোমনো করে করে শেষে ছ’শো টাকা তুলে দিলাম বাবার হাতে। নিজের পছন্দমত কিছু কিনে নেবার জন্য। অন্তত হাজার টাকা দিতে পারলে শান্তি পেতাম! কারও সত্যিকারের খুশিতে উদ্ভাসিত চেহারা দেখার আনন্দ লাখ টাকার চেয়েও দামী।

এর পরের ঘটনা মারাত্মক! অন্তত আমার কাছে। আমি এইসব বিশেষ ‘মা দিবস’, ‘বাবা দিবসে’ বড় চাচার বাড়ির দিকে যাই না। আপু ভাইয়া ভালো জব করে। পকেট ভর্তি টাকা! ইচ্ছে মতন ‘সাদা কালো’ বা ‘রঙ’ থেকে প্রতি বছর দামী দামী গিফট দেয় যা আমি পারি না! এসব আমাকে অনেক কষ্ট দেয়!

যাবোনা, যাই না! ওদিকে তবু যাওয়া হয়ে গেলো। আর, আমার মন পুড়লো! গিয়ে বসতে না বসতেই বড় চাচা নিজের আলমারী খুলে বসলেন। এটা আমাকে দিয়েছে তামান্না। সাদাকালো থেকে। আর জামাই দিয়েছে এটা। রঙ থেকে! তিন হাজার টাকা দাম। ওতা এমন দামই নেয়। আমার চাচা সরল মানুষ! কোন কিছু উনি কিনলে সেটাই সবার সেরা। আর দাম বলতে খুব পছন্দ করেন।

আমিও কিছুটা চুপসে আছি। বাবাকে আমিও কিছু দিয়েছি। সেটা না বললেই নয়। যদিও দামী কিছু না। তবু তো দিয়েছি। শুনে চাচী ভীষণ খুশি। টিউশনি করে তা থেকে কম কি দিয়েছি।

কিন্তু বাবা’ই দিলেন হাঁটে হাড়ি ভেঙে! তিনি নিজে কাপড় চোপর কিনতে পারেন না। বিশেষ করে নিজে মার্কেটে গিয়েও শার্ট কিনে বাসায় নিয়ে আসার পর দেখা যায় হাতা ছোট হয়েছে বা ঘাড়ে হচ্ছে না। নিজে শখ করে এবার যে শার্ট কিনে এনেছেন সেটা পরে শান্তি পাচ্ছেন না। সিনথেটিক! পড়লে ভীষণ গরম লাগে! সেটা কি আমার দোষ? উনি চাচীর বাসায় বলে দিলেন, “কম দামী শার্ট আর কত ভালো হবে! কাপড়টা ভালো হয় নাই!”আমার এত কষ্ট লাগলো! আমি কি শার্টটা কিনেছি? নিজে কিনে নিজেই ঠকে গেছে! দোষটা পরলো কার ঘাড়ে!

এর পরের কয়েক বছর বাবা দিবসে বাবাকে ইচ্ছে করেই আর কিছু দেইনি। খুব অভিমান ভরে বলে দিয়েছি, “আমার দেয়া গিফট তো পছন্দই হয় না। দিয়ে লাভ কি!”


...... বাবাকে নিয়ে এমন কান্না হাসির অথবা মজার অনেক অনেক ঘটনা আছে। যার সব নিয়ে লিখতে গেলে একটা উপন্যাসও হয়ে যেতে পারে। সবাই বলে বাবার সাথে মেয়ের নাকি অনেক মিল থাকে। বন্ধুত্ব থাকে! কি জানি! আমার বাবার সাথে আমার রয়েছে ঠিক তাঁর উল্টো। একটু দূরত্বই রয়েছে বলা চলে। তাঁর সাথে ছোট খাটো সামান্য ব্যাপার নিয়ে খুব লেগে যায় আমার। মা মাঝেমাঝে বলে উঠে, “উফ! জুঁই! তুই বড় হবি কবে?” আর বাবাকে বলে উঠে, “সব বাবারাই মেয়েদের চরম ভালোবাসে! তুমি তোমার একটা মাত্র মেয়ের সাথে লেগে যাও! অদ্ভূত!” মা যতই বাবা–মেয়ে কে বকুন না কেন! কিছুদিন সব ঠিক থাকে। আবার হয়ে যায় গোলমাল! মাঝেমাঝে বাবার সাথে রাগ করে কথা বন্ধ হয়ে যায়। আবার মায়ের সাথে রাগারাগি হলে বাবাই মীমাংসা করেন। রাগ ভাঙান। আমি হয়তো না খেয়ে বসে আছি। ঘরের দরজা বন্ধ করে। বাবা নিজের খাওয়ায় বসেন না। আর ডাকতে থাকেন, “জুঁইমনি, তাড়াতাড়ি আসো! আমি এখনো বসে আছি!” আমি তবুও উঠি না। ভাবি, মা কখন ডাকবে। না বাবাই আবার ডেকে উঠে, “ঘরের মধ্যে আমরা এই ক’জন মাত্র মানুষ! এর ভেতরে আবার কথা বন্ধ করে রাখলে কিভাবে চলে?” বাবার এমন কথার পরে আর রাগটা থাকে না!

পৃথিবীর সব মায়েরাই সন্তানের অসুখ হলে পাশে সময় দেন। খেতে না পারলে হাতে তুলে তুলে খাইয়ে দেন। আমার মায়ের মধ্যে যেন সেটার অনুপস্থিতি খুঁজে পাই। মা বমিটমি সহ্য করতে পারেন না! আর হাতে তুলে খাইয়ে দিতে তাঁর নাকি কেমন জানি লাগে! উনি সেটা কখনই করেন না। আর সেই অনুপস্থিতি পূরণ করে আমার বাবা। আমার অভিমানী বাবা। ঝগরুটে বাবা। আমার বোকা বোকা বাবা পরিবর্তিত হয়ে উঠেন তখন সেবাময়ী মায়ের ভূমিকায়।

বাবার সাথে দূরত্ব থাকলেও বাবার কিছু দোষ গুণের সমাহার আছে আমার মধ্যে। তাঁর বসার ও শোয়ার ধরন আছে আমার মধ্যে। বাবার মত আমিও একটু অভিমানী। রাগ, জেদ সব। তাঁর মতন লম্বা। সবাই বলে মেধাও নাকি আমি তাঁর মতই পেয়েছি। বাবা নাকি এক সময় অংকের প্রশ্ন দেখে উত্তর বলে দিতেন। অবশ্য যে সময়টা অংক শেখার দরকার ছিলো সে সময়টা তাকে চাকরীর কাজে ভীষণ ব্যস্ত থাকতে হতো বলে বাড়ি ফিরে পড়াতে বসে অকারণ রেগে যেতেন। তাঁর সে রাগকে ভয় পেয়ে কত রাত অংক না করে জোর করে ঘুমিয়ে গিয়েছি এই বলে, “মা, প্লিজ তুমি অংকগুলো বাবাকে দিয়ে করিয়ে রেখো। আমি সকালে উঠে বাড়ির কাজের খাতায় তুলে নিয়ে স্কুলে যাবো”। বাবাকে তখন ভীষণ ভয় পেতাম। যদিও বাবা শুধু চোখ রাঙ্গাতেন। এত বড় হয়ে গেছি। অথচ, একটা মারও খাওয়ার দূর্ভাগ্য হয়নি আমার বাবা-মার কাছে থেকে। এ যেন এক অন্যরকম গর্ব আমার বাড়ির আর সব ছোট ভাইবোনদের কাছে! অবশ্য খুব যে ডানপিটে ছিলাম তাও নয়। সেরকম হলে নিশ্চয়ই পিটুনি জুটতো প্রতিদিনই।

সবাই একই ধরনের বাবা ভাগ্যবতী হয় না! আমার বান্ধবী মৌ ওর মা’কে নয় বরং বাবাকেই বেছে নেয় ওর হাসি কান্না প্রেমের সব ইতিহাস খুলে বলতে। মাঝেমাঝে খুব আফসোস হয়, আমি কেন এমন একটা বাবা পেলাম না! আমিও বলতে চাই আমার বাবাকে আমার সুখ দুখের সমস্ত টুকরো টুকরো ইতিহাস।

তবে, হ্যাঁ, আমার বাবার মধ্যে যেসব গুণ আছে তা হয়তো অন্য অনেকেরই নেই। আমার বাবা খুব ভ্রমণ পিয়াসূ। হতে পারে এটা তাঁর চাকরিক্ষেত্রের কারণেই হয়েছে। বাংলাদেশের সবকয়টি বিভাগীয় শহর, জেলা এমনকি সবগুলো থানা শহর ওনার চষে বেড়ানো হয়ে গেছে। তিনি যখন যেখানে যান ফেরার সময়ে বস্তা বোঝাই করে বাড়ি ফেরেন। হ্যাঁ, বন্ধুরা, ঠিকই শুনেছেন। বস্তা! বস্তা বোঝাই করে তিনি টাটকা শাক সবজি থেকে শুরু করে আম জাম লিচু কলা তো বটেই কোন জেলার সেরা মিষ্টি কি, সেরা খাবার কি সব ঝোলা বোঝাই করে বাড়ি ফেরেন। একবার আমরা এক এপার্টমেন্টে ভাড়া ছিলাম। সেখানে আমরা নতুন। বাবা তাঁর সফর শেষে এক বস্তা নিয়ে ফিরেছেন। সেই বস্তা সিএনজি ওয়ালা বাসার দরজার কাছে দাঁড় করিয়ে রেখে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু, বেশি বোঝাই থাকার কারণে ওটা কাত হয়ে পরে মেঝেতে সমস্ত আলু পটল শাক সবজি খুলে বেড়িয়ে সারা ঘুরময় ছড়িয়ে পরেছে। দরজা তখনো খোলাই ছিলো। উপর তলার এক আন্টি নিচে নামছেন। উনি জিজ্ঞেস করলেন, “ভাই কি এইসব গ্রামের বাড়ি থেকে আনলেন?” অর্থাৎ ওনার ধারনা হয়েছে বাবা গ্রামের বাড়ি থেকে টাটকা সবজি নিয়ে এসেছেন!

আমার বাবার সারা জীবনের স্বভাব কোন জায়গা থেকে ফেরার সময় রাতের জার্নি করেন। বেশিরভাগ সময়েই সারা এলাকা চষে ওনার এমন সময়ে গাড়িতে চড়ে বসতে মনে চায় যখন গাড়িতে উঠলে ফেরা হবে মাঝ রাতে। মাঝ রাতে পৌঁছে নিজের বাড়ির মেইন গেট খোলা পাবেন কি পাবেন না এই নিয়ে ওনাকে অনেক বার সতর্ক করে দিলেও সেটা তিনি পরের বার ভুলে যান। এবং মাঝ রাতে সবার ঘুম ভাঙ্গিয়ে “জুঁই পলাশ উঠো উঠো! দেখো কি আনছি। খাইয়া দেখো তো কেমন আনলাম!” নিজের পোশাক ছাড়ার নাম নেই। উনি আয়েশ করে বসে বসে উপভোগ করছেন ওনার ছেলে মেয়ে বউয়ের মাঝ রাতের মিষ্টি খাওয়া!

এইরকম পাগল আমার বাবা! ওনার এজমার সমস্যা আছে। ওনার আছে হাই প্রেশার। তবুও তিনি না ওষুধ খান নিয়ম করে না আমাদের কারো কথা শুনেন। এই যে বস্তা টেনে জিনিসপত্র আনেন এতে ওনার শরীরের উপরে যে প্রেশার পরে, সেটা ওনার কানে যায় না কখনই। উনি বস্তা বোঝাই করে আলু পটল আনেন এক গাদা! মা বলে, “আমি এত সবজি দিয়ে কি করবো? ডেইলী কি একই সবজি দিয়ে তরকারী রান্না করবো! সবজিগুলো পঁচবে শুধু! এভাবে এক গাদা টাকা পয়সা নষ্ট কর তুমি!” কিন্তু উনি শুনেন না! প্রতিবারই আনেন আর বকা শুনেন। এসব করতে গিয়ে মাঝেমাঝে দূর্ঘটনার শিকার ও হয়েছেন। একবার কয়েক ডিব্বা খাঁটি ঘি, একটা বড় কাঁঠাল, এক পাতিল দৈ, দুই প্যাকেট মিষ্টি আর আরও এনেছেন এক বস্তা টাটকা সবজি! সব এক সাথে নিয়ে বাস থেকে নামতে না নামতেই সিএনজি’র তলায় পরতে পরতে বেঁচে গেছেন। ব্যস্ত রাস্তায় বেকায়দায় পরে কাঁঠাল ভেঙে গেছিলো। আর দৈয়ের হাড়িও ট্যামা হয়ে গেছে। এইসব নিয়ে তবুও তিনি বাসায় পৌঁছেছিলেন। সেবার বাবাকে অনেক বকা হয়েছিলো। এই পাগল বাবাকে নিয়ে কি করি!

মাঝেমাঝে কতরকম ভাবেই বাবাকে পেতে ইচ্ছে করে। বিশেষ করে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের “আয় খুকু আয়” গানটি শুনলে কেমন আনমনা হয়ে যাই! আমার বাবাকে এমন করে কি পেতে পারতাম না! হয়তো পারতাম। হয়তো নয়। তবুও মাঝেমাঝে উল্টোটাও হয়। আমার অভিমানী বাবাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে যাই, একদিন হয়ে উঠবো বড় কিছু। তখন বাবার সব স্বপ্ন পূরণ করবো। তখন বাবার ভেতরে খুঁজে নেবো আমার ভালো লাগাগুলো। আমার চাওয়া গুলো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিদিতা রানি আমাদের সংসারে কত ঘটনাই ঘটে। বাবাকে নিয়ে অনেক ঘটনা বেশ সুন্দর করে লিখেছেন।
সূর্য টুকরো টুকরো স্মৃতিগুলো সুন্দর গল্প হয়ে উঠেছে। বেশ নষ্টলজিক
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি sabolilotay sundor abong boktobbo pranjol....khub valo man sommoto lekha......dhonnobad..jui apu..
কৃতজ্ঞতা ভাইয়া। আপনি পড়লেন, ভালো লাগলো।
দিপা নূরী সুন্দর বর্ণনা, খুব ভালো লাগলো।
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন .......................এত সহজ করে এত সুন্দর লেখা যায় না পড়লে বিশ্বাস হত না। খুব ভাল লাগল। শুভেচ্ছা রইল।
রোদের ছায়া একদম জীবন্ত , প্রানবন্ত লেখা ..........এই লেখা পড়ে বলতে ইচ্ছা করছে আমার আব্বা ও রান্না করেন মাঝে মাঝে .......ছোট মাছের ঝোল , নানা রকম সবজি দিয়ে শুটকি মাছ , আর রোস্ট তো খুব ভালই করেন ..খুবই ভালো লাগলো ..........
আল্লাহ, আপু, তোমার বাবার তৈরী করা খাবার এর বর্ণনাতেই আমার জিভে জল চলে আসছে। খুবই ভালো লাগলো তোমার বাবার কথা শুনে।
নাজমুল হাসান নিরো অদ্ভুত সুন্দর স্মৃতিকথা, বাবাকে নিয়ে ভাবতে মাঝে মাঝে ভালই লাগে। তবে বর্ণনাটা আরেকটু ঝরঝরে, ছলছলে হলে আরো ভাল লাগত। সাহিত্যের বিচারে মনে হয়েছে বর্ণনাটা আরেকটু সাবলীল হলে বোধহয় আরো ভাল লাগত কিন্তু একজন পাঠক হিসেবে পরিপূর্ণ তৃপ্ত আমি। অনেক অনেক মজা পেয়েছি। এত বেশি হাসছিলাম যে রূমমেটরা তো পাগলই ভাবছিল। আচ্ছা আপু একটা প্রশ্ন: ডালের পাতিলে হালুয়া রাঁধা যাবে না কেন?
ডালের পাতিলে হালুয়া রাধলে ঝাল ভাব আসবে। কারণ হালুয়া বানাতে পাতিলের বা কড়াইয়ের নিচের অংশে অনেক নাড়াচাড়া করতে হয়। ডালের পাতিল মাজা হলেও ওর ভেতরে তরকারী টাইপের একটা ঝাঁজ থেকেই যায়! ...গল্পের প্রসংগে বলি। এত ব্যস্ত থাকি যে, আগে থেকে ঠিক করে রাখার পরেও অনেক সময় মন মতো সব কথা গল্পে উঠে আসেনা; মনে থাকেনা বলে। সাহিত্য চর্চার আসল সাধনা এখনো করে উঠতে পারছিনা বলেই পূর্ণতা পাচ্ছেনা লেখাগুলো; ফাঁক রয়েই যাচ্ছে। ...আমার লেখায় প্রথমবার পদার্পণের জন্য কৃতজ্ঞতা সহ ধন্যবাদ।
rakib uddin ahmed বাবার প্রতি, হৃদয় ক্যানভাসে আঁকা সমস্ত ভালবাসা, অব্যক্ত রঙতুলির স্নিগ্ধ স্পন্দনে প্রষ্ফুটিত স্মৃতির ফ্রেমে....সুন্দর জীবনের প্রতিচ্ছবি...!মুগ্ধ দর্শক স্রোতা হয়ে অবলোকন করলাম...!শ্রদ্ধা আপনার প্রতি,শ্রদ্ধা আপনার বাবার প্রতি।অনেক সুন্দর প্রান্জল লেখনি,খুব ভাল লাগল।*****শুভেচ্ছা রইলো।
খুব সুন্দর মনকাড়া মন্তব্য করেছেন যা আমাকে পরবর্তী লেখার অনুপ্রেরণা যোগালো। কৃতজ্ঞতা জানবেন। ভালো থাকুন।
মামুন ম. আজিজ গল্পের আদলটা ঠিক ধরে লাখতে পেরেছ স্মৃতিচারণ বাক্যাবলির মাঝেও ///এটা ভাল দিক........
এস.কে.দোয়েল ভালো লাগলো গল্পটা। অভিনন্দন।
ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।

১৭ অক্টোবর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪