অভিমানে অনুভবে শুধুই তুমি!

মা (জুন ২০১৪)

জাকিয়া জেসমিন যূথী
  • ২৬

মাস কয়েক আগের ঘটনা! সম্ভবত এপ্রিল।
আম্মার হাতে আড়াইশো মিলি পেপসির বোতল দেখলাম একটা।
- কী এটা? পেপসি? আমাকে একটু দাও তো!
- এটা ঈশান খেয়েছিলো। খালি বোতলটা আমাকে দিলো।
- ওহ হো! আমাকে তাইলে একটা দোকান থেকে আনায় দাও না!
- তোমার না পেট খারাপ? পেট খারাপে এইসব খায়?
পেট খারাপ তো গতকাল ছিলো। আজকে তো নাই। ভালো হয়ে গেছি। আর তাছাড়া সারা দুনিয়ার মানুষ জানে গ্যাস হলে কোল্ড ড্রিংক্স খেলে গ্যাস কমে! মনে মনে গজগজ করে মুখে ‘থাক, লাগবে না!’ বলে আমার ঘরে চলে আসলাম।
- একটুতেই রাগ হয়ে যায়! আনাইতেছি!
কিছুক্ষণ পরে পেপসি আনা হয়েছে। আমার খুব ফ্যাট বেড়েছে। তাই আম্মা এসব আমাকে খেতে দিতে চায় না। একটু আগে ঈশানের বোতলটা দেখে একটু খেতে মনে চাইলেও এখন আর কিছু খেতে মনে চাইছে না। ওদিকে মা পেপসি আনিয়েছে। খাওয়ার জন্যে ডাকছে। আমি এর মধ্যে আবার মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা টুনটুনি ও ছোটাচ্চু গল্পের বইটা নিয়ে শুয়ে পড়ছি। উঠতে ইচ্ছা করছে না। পেট খারাপ হলে আমার শরীর খুব দূর্বল হয়ে যায়। পেপসি এনেছে পরে খাওয়া যাবে, এখনই কেন?
কিন্তু নাহ! মা রেগে যাচ্ছে। মাঝেমাঝে এত অবুঝ হয়ে যায়! জেদ! ইচ্ছের বিরুদ্ধে আনিয়েছে তাই এখনই খাওয়াবে!
- কি হইলো? আইনা দিলাম খাও না?
- ‘একটু প-রে খাচ্ছিইইই!’ কথাটা বেশি আস্তে হয়ে গেলো। এত আস্তে যে নিজের কানেই ঠিকমত শুনতে পেলাম না। একদিকে গতকাল পেট খারাপ ছিলো। আর আরেকদিকে মাসের বিশেষ সময়ের তারিখ আসার আগে আগে আমি ভীষণ দূর্বল হয়ে যাই। ভীষণ ঘুম পায়। সারা শরীরে নামে অসহ্য আলস্য। হাত পা ম্যাজ ম্যাজ করতে থাকে।
কিছুক্ষণ পড়ে উঠলাম বিছানা থেকে। এক গ্লাস পেপসি ভরে নিয়ে এলাম নিজের ঘরে। খাওয়ার জন্যই আনছিলাম। কিন্তু গ্লাস নিয়ে নিজের ঘরে ঢুকার সময় মায়ের সাথে পাশ কাটাতে গিয়ে দেখলাম মায়ের মুখ অসম্ভব গম্ভীর। রাজ্যের বিরক্তি তার চোখে মুখে। খাওয়ার ইচ্ছেটা ফের দমে গেলো। গ্লাস নিয়ে আমি বাথরুমে ঢুকে গেলাম। গোসলের মগে পুরোটা পেপসি ঢেলে দিলাম গ্লাস থেকে।
দুপুরে ভাত খেতে বসে মা দেখলো পেপসির বোতলে তিন ভাগের দুই ভাগ শেষ।
- বাহ! এতগুলা খেয়ে ফেলছো? পারো ও! (টিটকারী মার্কা হাসি!)
- আমি খাই নাই! (আমার গম্ভীর জবাব)
- তো কে খাইলো? (মা অবাক)
- বাথরুম! (আবারও গম্ভীর জবাব আমার)
- বাথরুম মানে?
- তোমরাই না বলো- কোক, পেপসি এগুলা হারপিকের কাজ করে! তাই একটু টেস্ট করে দেখলাম কেমন পরিস্কার হয়! (আমার কণ্ঠস্বর নরমাল, হাসিও না, রাগও না, বিদ্রুপও না!)
আম্মু আমার দিকে চেয়ে রইলো কিছুক্ষণ। তারপরে বললো- ‘সেটা এখন টেস্ট করে দেখতে মনে চাইলো? ইচ্ছা কইরা রাগ দেখাইয়া করছো এইটা!’
- মুখ কালা কইরা খাওয়াইতে কে বলছে? আমার একটা জিনিস প্রয়োজন হইছে আমি চাইছি। তুমি মুখ কালা করলা কেন? শিরিন আন্টি বলছে পেট খারাপ হইলে স্প্রাইট খাইলে পেটের গ্যাস যায়! আমি আগে কত্ত খাইছি! তুমিই খালি জানো না। আর খাবার নিয়া এত্ত তর্কাতর্কি করলে যে আমার সেটা খাওয়ার ইচ্ছা থাকে? আমার তো খাওয়ার ইচ্ছা তখনই চলে গেছে তবু তুমি জেদ দেখাইয়া আনলা কেন? আমার দোষ?
- এত কথা ধরো কেন?
- তুমি তো জানোই আমি এইরকম। এভাবে খাওয়ার খোটা না দিলেই হয়!


ঘুম থেকে উঠে নিজের ঘরের ফ্যান বন্ধ করেছি আর ওদিকে সামনের ঘর থেকে খালামনি ডাকছে-‘সোনিয়া, আর কাউকে দেই নাই। তোমার জন্যেই আনলাম।’
‘কি আনছে আমার জন্য’ দেখতে গিয়ে দেখি খালামনি আমার জন্য লিচু নিয়ে এসেছে। ‘লিচু? লিচু কই পাইলেন? আমি প্রায় প্রতিদিনই বাইরে যাচ্ছি কিন্তু ভালো লিচু চোখে পরছে না! আম্মার খুব প্রিয় ফল!’
আমার আম্মা লিচু খেতে খুব পছন্দ করে। লিচু একটা গরম ফল। একবারে বেশি খাওয়া যায় না। অন্তত আমার ক্ষেত্রে তাই হয়। বিশ-পঁচিশটা একবারে খেয়ে ফেললে পেট ফেঁপে থাকে, গ্যাস হয়। কিন্তু আম্মার কিচ্ছু হয় না। আম্মা এক বসায় একশো লিচু একাই সাবড়ে দিতে পারে। কেউ যদি এক ঝোপা লিচু খেতে বসিয়ে দেয় আর যদি কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকে যে আর কেউ খাবে কি খাবে না তাহলে মনে হয় আমার আম্মা সব খেয়ে নেবে। কিছুটা ছেলেমানুষি কথা হয়ে যাচ্ছে আমি জানি। আমার আম্মা অনেক হিসেবি এবং সংযত মানুষ। কেবল এই একটি জায়গায় ছেলেমানুষি আছে তাঁর।
আর তাই আমি তাঁর এই একটা বিষয় প্রতি বছর মাথায় রাখি। সবাই জানেন লিচুর মৌসুমে ভালো লিচুটা খুব অল্প সময়ের জন্য বাজারে আসে। তাই বেতনের টাকা পেতে যদি দেরী হয় তাই আমি আগে থেকেই আগের মাস থেকেই পাঁচ সাতশো টাকা গুছিয়ে রাখি। নিউমার্কেটের আজিমপুরের দিকের গেটে স্পেশাল সিজনাল ফল বিক্রি হয়। যদিও সেই গেটে ফলের গলাকাটা দাম চায় তবু সেরা জিনিসটাই ওই গেটে পাওয়া যায়। আর আমি তো আমার আম্মার জন্য সারা বছরে নয় শুধু এই একটা মাসই মাত্র একটা ফল কিনবো তা সে যত দামই হোক। আমার আম্মা সেটা খেয়ে তৃপ্তিময় হাসি দেবে সেই হাসির দাম লাখ টাকা! এই লাখ টাকার হাসি কি আর কিছু দিয়ে পাওয়া যায়?

বাসায় মেহমান এসেছে। এলাকার আন্টি হয়। দুই বোন এসেছে- রাইশা আন্টি আর বোরুন আন্টি। রাইশা আন্টি অগ্রণী ব্যাংকের অফিসার ছিলো, এখন রিটায়ার। ওনার কাছে এখনও ব্যাংক সংক্রান্ত নানা সমস্যায় যাওয়া হয়। আম্মার আর রাইশা আন্টির কথা শুরু হলো-
- আপার কি শরীর ভালো হইছে?
- না! কঈত্থে? ডায়াবেটিস আরো বাড়ছে। কিডনীর সমস্যাটাও বাড়ছে!
- হু, সেইজন্যেই তো এইবার ব্যাংকের সমস্যার জন্য আপনারে ডাকি নাই। একাই গেছিলাম। সকাল সকাল না গেলে তো আবার সমস্যা। বাসায় আইসা সব আমাকেই তো রানতে হয়! আর কেউ তো নাই, বুঝছো বরুন?
- কেন বুয়া নাই? বুয়াকে দিয়ে রাধালেইন তো পারেন।
- না বুয়া দিয়ে তো রান্না করাই না!
আমি যে এখন প্রতিদিন রান্না করি সে কথাটা একবারও বললো না। মানুষের কাছে নিজের মেয়ের গুনাগুণ একটু তুলে ধরলে কি সমস্যা হয় বুঝি না! আমার মা’টা যে কী!
ঘন্টাখানেক পরে ওনাদের যাওয়ার সময় হয়েছে। তখন বরুন আন্টির ভাত খেতে মনে চেয়েছে। এই আন্টি যেখানেই যায় ভাত খেতে বসে। নাশতাও খাবে আবার পাতিল উদাম করে তরকারী পছন্দ হলে ভাতও খাবে। আম্মা তাকে ভাত খেতে দিচ্ছে। বরুন আন্টি আমাকে বারে বারে ডাকছিলো কাছে গিয়ে বসার জন্য। আমি কাছে গিয়ে বসলাম না। কিন্তু কাছে গিয়ে বলে এলাম-‘আন্টি খান। আজকের তরকারিটা আমি রেঁধেছি।’ আমার মা যখন বলে না তো আর কি করা! আমিই নিজেরটা নিজেই বললাম।
আরেক বার আমাদের এক পরিচিত আন্টি আমার বিয়ের ঘটকালী করছে। সেই আন্টি আমাদেড় বাসায় বেড়াতে আসতে চেয়েছে। সারাদিন থাকবে। আম্মার রান্না আর আচারের বিষয়ে উনি আগে থেকেই জানেন। আমার আম্মার মাছ রান্না অনেক মজা হয়। পোলাও অনেক মজা হয়। উনি সেই কথা বলেছেন ফোনে-‘ভাবী, আপনার হাতের মাছের তরকারী খাবো। অনেক দিন খাইনা তো!’ আম্মা ‘আচ্ছা’ বলল শুধু। আম্মার সেখানে বলতে পারতো-‘হ্যা ভাবী, আমার মেয়ের হাতের রান্নাও অনেক ভালো হয়! আমার হাতের রান্না তো খেয়েছেন, এবার আমার মেয়ের হাতের রান্নাও চেখে যাবেন!’ নাহ! এরকম কিছু মায়ের কাছ থেকে আশা করাই যায় না! সারা জীবন তিনি একার প্রশংসাই পেতে আগ্রহী; মেয়ের প্রশংসা কেউ করুক বা মেয়ের গুনাগুণ গুলো মানুষের দ্বারে পৌঁছাক তার কোন পথ উনি তৈরি করতে আগ্রহী নয়।


পানির ফিল্টারটা ময়লা হয়েছে। কয়েকদিন ধরে আমিও দেখছি। আম্মাও দেখছে। কিন্তু কেউই সময় পাচ্ছিনা সেটা পরিস্কার করার। আজকে চিংড়ি মাছ দিয়ে ডাঁটা তরকারী রেঁধেছি। চিংড়ি মাছ রান্না করলেই হাত, রান্নাঘরের সিংক সব এক্কেবারে গন্ধ হয়ে যায়। আজকে দেখলাম ফিল্টারটা ধোয়া একেবারে জরুরী হয়ে গেছে। কিন্তু এখন যদি ওটা মাজি তাহলে দেখা যাবে ওটায় মাছের গন্ধ ধরে গেছে।
যা ভাবছিলাম, আম্মা দেখি ওটাকে নামাচ্ছে। ধুবে। আমি মানা করলাম আজকে বাদ দাও। কালকে ধুয়ে দেবো নে। আমার মতো পরিস্কার করে ধুতে পারবেও না। তাছাড়া ওইটার প্রত্যেকটা বাটি ধুতে গিয়ে অনেক পানি নেড়ে ঠান্ডা লাগাবে। তাছাড়া হাতও ব্যথা করবে। আমি ধুবো না ধুবো না করেও হাত লাগাতে বাধ্য হোলাম।
- এই, সরো তো। তুমি আমার মত পারবা না।
- হু, তাইতো! পারবো না তো! (স্পষ্ট ব্যাঙ্গ ঝরলো আম্মার কণ্ঠে!)
- ভ্যাঙ্গাও কেন? দেখো কি করে ধুই।
- আচ্ছা ধোও! বলে মা সরে গেলো।
আমি ধুতে লাগলাম। ধোয়া শেষ। এবার বললাম, ‘একটা ন্যাকড়া দাও এটাকে মুছি।’ ন্যাকড়া দিয়ে মুছে ফিল্টার রাখতেছি এর মধ্যে আম্মা এসে বললো-‘ও ভালোই তো পারছো!’
- হু, পারিই তো! তুমি তো আমাকে অকর্মার ঢেঁকি মনে করো!


ভাত খেতে বসছি। আম্মার গম্ভীর প্রশ্ন- ‘কি করো সারাদিন ল্যাপটপে বসে? সারাদিনই তো বইসা থাকো দেখি! গল্প লেখো?’
যাহ বাবা! এ আবার কী রকম প্রশ্ন? সারাদিন কই বসে থাকি? ঘর দোর, বাথরুম কিভাবে পরিস্কার থাকে যদি আমি সারাদিন এই ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকি?
আমি জানি এরকম গম্ভীর হয়ে প্রশ্ন করার মানে বিপদ সংকেত! আমিও গম্ভীর হয়ে জবাব দিলাম-‘না! গল্প লেখার সময় নাই! চাকরী খুঁজি! সিভি রেডি করি আর সাবমিট করি!’ বলে আমি খুব দ্রুত ভাত মেখে গলায় ঢুকাতে লাগলাম।
জবাবটা যে আম্মার বিশ্বাস হয়নি তা তার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে।
যতটা দ্রুত সম্ভব ভাত খেয়ে আমি উঠে পরলাম। অন্যান্য দিনে ভাত খেয়ে এঁটো প্লেটটা আমি রান্নাঘরের সিংকে গিয়ে ভিজিয়ে পানি দিয়ে এঁটো ঝোল সরিয়ে ভিজিয়ে রেখে তারপরে সরি। আজকে আমার ভাতের প্লেট রাখার আগেই মা গিয়ে সেখানে দাঁড়িয়েছে। আমি তো তার আশেপাশেই এই মুহুর্তে থাকতে চাইছি না। তাই প্লেটটা কলের নিচে রেখে দ্রুত কেটে পরলাম।
বাথরুমে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ওজু করে ফেললাম। এখন বাজে রাত সাড়ে দশটা। আধা ঘন্টা কোরআন শরীফ পড়ে নেই। মাথায় একটা প্লট এসেছে। দ্রুত লিখে না ফেললে ভুলে যাবো। কিন্তু এই মুহুর্তে পুনরায় কম্পিউটারে বসলে মা যে মেজাজটা দেখাবে তাতে গল্পের প্লট পুরোপুরি দু চারদিনের জন্য উধাও হয়ে যেতে পারে! তার চেয়ে আগে তার মাথাটা ঠান্ডা করা যাক!
ওজু করা শেষে টাওয়েল দিয়ে হাত মুখ মুছে টেবিলের উপরে জায়নামাজ বিছালাম। তারপরে কোরআন শরীফ এনে খুলে বসলাম। এর আগে আমার ঘরের দরজাটা ভিড়িয়ে দিয়ে এসেছি। মায়ের ঘর থেকে টিভির সাউন্ড আসছে খুব জোরে। সাউন্ড কমিয়ে দিয়ে আসা যেত। কিন্তু এই মুহুর্তে সেদিকে যাওয়ার ইচ্ছা করছে না। মায়ের গম্ভীর মুখ দেখলে আমার মেজাজটা উত্তপ্ত হতে থাকে। এখন আমার মেজাজ উত্তপ্ত হচ্ছে ক্রমশ! মায়ের ঘরে সারা দিন-রাত টিভিটা অন করাই থাকে। এমনিতে কেউ কয়েক ঘন্টা টিভি অন করে বসে থাকলে মায়ের মেজাজ সপ্তমে উঠে যায় কিন্তু নিজে প্রায় সারাদিনই টিভি দেখে। হয় হজ্জের চ্যানেল দেখে অথবা নিজের প্রিয় কোন নাটক অথবা কোন দেশি বা কোলকাতার বাংলা গানের অনুষ্ঠান! তখন কিছু হয় না! আমরা কেউ দেখতে থাকলেই ‘টিভিটা একটু রেস্ট পাচ্ছে না! এভাবে এক নাগাড়ে টিভি ছেড়ে রাখলে মেমোরী ড্যামেজ হয়ে যায়!’ ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমার মেজাজ গরম হলেই আমার ঘরের দরজা ভিড়িয়ে দিয়ে একা হয়ে যাওয়া আমার স্বভাব। এখন তো ঐ ঘরে টিভির সাউন্ড জোরে চলছে তাই আমি দরজা ভিড়িয়েছি! সো, এ বিষয়ে রাগ দেখালে আমার যুক্তি আছে।
কোরআন শরীফ খুলে আমি সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত শুরু করলাম। নামাজের সাত দিন ছুটির পড়ে আরো সাত দিন পেরিয়ে গেছে! এই সাতদিন ধরে আমার কোরআন তেলাওয়াতে ফাঁকি তো চলছেই সেই সাথে গত তিন চারদিন ধরে ফজরের নামাজও ভোরে উঠে পড়া হচ্ছে না! মাঝে একটা চাকরীর ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে সারাদিন বসে থেকে পরে বাসে দেড় ঘন্টা ধরে এসে শরীর দূর্বল হয়ে গেছে। শরীর সেই ধাক্কা সামলাচ্ছে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে। আর আমার আম্মাজান সেই ফাঁকিঝুকি সহ্য করছেন আর মনে মনে ফুলছেন। ওনার কাছে মেয়ের শরীরের দূর্বলতাটা আমলে নেয়ার বিষয় নয়; নামাজে ফাঁকি দেয়া হচ্ছে এটা কিছুতেই বরদাস্ত করা যাবে না! তার মেজাজ ধীরে ধীরে সপ্তমে উঠছে। রেগে গেলে উনি গুছিয়ে কথা বলতে পারেন না! আমিও পারি না! একেবারে মা-কা বেটি যাকে বলে! আজানের সময়ে আমি কেন নামাজ পড়তে পারবো না? এই নিয়ে উনি পেছনে পেছনে লেগে থাকেন! আমার অসহ্য লাগে! ‘আরে বাবা, নামাজ কোরআন আমি আমার নিজের তাগিদেই পড়বো! আমি তো একটা মুসলমান মেয়ে। আমাকে কেন খোঁচাতে হবে? আমি যদি দেরী করিও তাহলেও আল্লাহ তো অন্তর্জামী! উনি আমার মায়ের চেয়ে আমাকে বেশি জানেন! কেন দেরী করছি তা আল্লাহ খুব ভালোই জানেন!’
কিন্তু এ কথা আমার আম্মাকে কে বুঝাবে? উনি নিজেই তো একা মুসল্লি আর সব জানেন তাইনা? একেবারে ঘড়ি ধরে কাঁটায় কাঁটায় ওনার মতো করে চলতে হবে। ওনার মতই আমাকে হতে হবে। অন্যথা হলে চলবেনা কিছুতেই। তার ইচ্ছা আমি ডুপ্লিকেট তার মতো হই। একটা মানুষ যে আরেকটা মানুষের ডুপ্লিকেট হয় না, হতে হলে জমজ হতে হয় তা উনি মানতে রাজী নন।
‘এত পড়াশুনা করানো হলো তবু কেন জব হয়না?’ তা বলছে আমাকে এখন। সারা দুনিয়ার মানুষ চাকরি করছে, আমি কেন করতে পারিনা! বিএড ও এমএড এ ফার্স্ট ক্লাস! তবুও কেন জব হবে না? অনার্স নাই যে! অনার্স না থাকার কারণে আমি যে বহু জায়গায় এপ্লাই করার ক্ষেত্রেই আটকে যাচ্ছি তা এনারা বুঝেন না!
মফস্বল শহর থেকে নরমাল সেকেন্ড ক্লাসে ইন্টার পাশ করে ঢাকা শহরের ভালো কলেজে চান্স পেতে হলে যে কোচিং করানো বা গাইড বই কিনে পড়ানো দরকার সেটা তো এনারা জানেন না। কত সাধ ছিলো মেডিকেলে ভর্তি হবো! কোচিং এ ভর্তি হতে চেয়েছিলাম, তাও দিলো না। বাবার তখন সীমিত আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে! আমাকে কোচিং এ ভর্তি করাবেন অত টাকা কোথায় তার? একটা ভালো গাইড বই কিনে দিতে বলেছিলাম তাও দিলো না! গোড়া ভালো হলে উপরের অংশ সতেজ না হলেও গাছে কিছু ফুল ফল ধরে। তা তো এনারা জানেন না! এনারা আমার স্বপ্ন পূরনে বার বার বাঁধা সৃষ্টি করবেন আর পরে এসে আমাকেই দুষবেন! ইডেনে যখন বিকম এ চান্স পেয়ে গেলাম সবাই ভাবলো যাক একটা হিল্লে হলো। হৈ হৈ করে ভর্তি করিয়ে বাঁচলো। কেউ একবারও অনুরোধ করলো না যে পরের বছরে অনার্সের জন্য আবার চেষ্টা করো। ‘না না না, ইয়ার লস করার কোন দরকার নেই!’ আর এখন যখন সবাই বলে অনার্সে কেন পড়ালেন না? তখন এরা বলে-‘ও’ই তো পড়তে চাইলোনা!’ বিকম-এ ও নর্মাল সেকেন্ড ক্লাস পেয়ে মাস্টার্স ভর্তি হয়ে গেলাম সিটি কলেজে। আর তখনই সুযোগ আসলো ফাইন আর্টস এন্ড ক্রাফটসে ডিপ্লোমা করার। নিজের টিউশনির টাকায় আমি সেটা শুরু করলাম। আমার একটা সৃজনশীল গুণ আছে তা নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু হলো। না, তখন আমাকে ছবি আঁকা শিখতে দিবেন না। ধর্মে আর্টিস্ট হওয়া নিষেধ আছে যে! সপ্তাহে একটা মাত্র দিন আমি বাসার সবার রেস্ট নেয়ার সময়ে ছবি আঁকা শিখতে যেতাম তাতেও সবার বিরক্তি ছিলো। আর ঠিক তার দশ বছর পরে এসে সেটাও বদলে গেছে! এখন আমাকেই বলা হয়-‘তখন ভালো করে শিখলা না কেন? ভালো করে শিখলেই তো চিত্রকলা দিয়েও তোমার একটা ভালো ক্যারিয়ার হতে পারতো!’ ইস! এদের কথাগুলোকে রেকর্ড করে কেন রাখিনি! আহ! খুব আফসোস হচ্ছে এখন! অভিভাবকরা নিজেদের স্বার্থে ছেলেমেয়েদের ব্যবহার করে শুধু! নিজেদের ধ্যান ধারণা চাপিয়ে দিতে ভালবাসে! আমিও একটা গাধি! তাই সব সময় ওদের ইচ্ছের পুতুল হয়ে বেঁচে থাকি আর ভাবি আমি আমার বাবা-মায়ের ইচ্ছের দাস হয়ে তাদের সন্তুষ্টি নেবো!। কিন্তু আমার ভাবনাই সার! আমি না পারি নিজের স্বাধীনতামত চলতে না পারি ওদের মনের মতন হয়ে উঠতে! মানব জনম আমার পুরাই বৃথা!
পড়াশুনা চলাকালীন এবং পড়াশুনার এক একটা ধাপ শেষ করে আমি চাকরী করার চেষ্টা করেছি কয়েকবার। কিন্তু ছেড়ে দিতে হয়েছে। বা বলা ভালো চাকরী থেকে আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছে এরা। চাকরীর ডিউটি থেকে ফিরে সবাইই ক্লান্ত হয়েই বাসায় ফেরে। আমার ক্ষেত্রেই বা তার ব্যতিক্রম হবে কেন? আমি বরং আরও কিছুটা বেশি দূর্বল। বাসায় থাকি না সারাদিন। অফিসের কাজ করে বাসায় ফিরে একটু বিশ্রাম প্রয়োজন হয়েছে আমার। এটা যখন রেগুলার হয়ে গেছে তখনই বাসা থেকে প্রস্তাব এসেছে, করা লাগবে না ঘোড়ার ডিমের এই চাকরি। তোমার যা খরচ লাগে আমরাই দেবো।
আমি কয়েক মাস চাকরী করে যাতায়াত করে কিছুটা বিরক্ত হয়ে গেছি। বেতন যা দেবে বলেছিলো তা দেয় না। রিকশা ভাড়া, বাস ভাড়ায় অর্ধেক খরচ হয়ে যায়। এইসব হিসাব করে দিলাম দুম করে চাকরীটা ছেড়ে। এরকম কয়েকবার হলো। তারপরে আবার বাসা থেকে বলা হলো এবার বিএড করো। মাঝে এমকম পাশ করা হয়ে গেছে। ফাইন আর্টস এন্ড ক্রাফটসের চার বছরের ডিপ্লোমা নেয়া হয়ে গেছে। চারটা পেইন্টিং একজিবিশনেও অংশ নেয়া হয়ে গেছে। এসবে চারটা বছর চলে গেলো। এসেছে দু’হাজার নয় সাল। বিসিএস পরীক্ষার বহুত চেষ্টা করার পরে সেই চেষ্টায় ইস্তফা দিয়ে টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে টিকে গেলাম। সেখান থেকে দেখতে দেখতে বছর পেরিয়ে বিপুল সংখ্যক স্কোর করে ফার্স্ট ক্লাস নিয়ে বেরিয়েও গেলাম। এখন?
আমি জানালাম ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে এম এড করতে পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা লাগবে। এত টাকা কই পাবো? বাবা ততদিনে রিটায়ার্ড! ভাই মাত্র দাঁড়াচ্ছে পিএইচডি এর মাধ্যমে। আম্মা বললো-‘আমি পড়াবো! নাতি নাতনীদেরকে আমি বলব-আমার মেয়েকে আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়িয়েছি!’ কিসের মধ্যে কি পান্তা ভাতে ঘি! বিয়েরই খবর নাই নাতি নাতনীর স্বপ্ন দেখছে আমার আম্মা। তা উনি যে স্বপ্নই দেখুন আমার এম এড এর পড়াশুনার খরচ পাইলেই আমি খুশী।
দু’হাজার এগারো সালের শেষ। সম্ভবত ডিসেম্বর মাস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমএড সান্ধ্যকালীন কোর্সের জন্য ফর্ম তুলতে গিয়ে ফর্মের দাম দেখে তো আমি টাশকি! পাঁচশো টাকা! ওরে বাপরে! যাই হোক নিজের পকেটের টাকা দিয়ে ফর্ম কিনে আনলাম। ভর্তির জন্য নাকি সাক্ষাতকার পরীক্ষা দিতে হবে। বি এড এর পড়াশুনা থেকেই প্রশ্ন আসবে। সাক্ষাৎকার মানে ভাইবা। যা হোক, এক সময় ভাইবায় পাশ করে ভর্তি যোগ্যতা পেয়ে গেলাম। কিন্তু শুধু ভর্তিতেই নাকি নয় হাজার লাগবে আর সাথে সাবজেক্ট ফী পনেরো’শ করে সাত হাজার পাঁচশো। ওরে বাপরে! নিজেরই ত আক্কেল গুরুম হয়ে যাচ্ছে! বাসা থেকে কেউ কিছু বলা তো দূরে থাক! অবশেষে ভর্তি হওয়া হয়ে গেলো। ক্লাস শুরুর পড়ে আর দম নেয়ার সময় নেই। সপ্তাহে তিন দিন বন্ধ থাকে বাকী চারদিন ক্লাস তবু যেন দৌঁড়ের উপর পথ চলা শুরু হলো। সেই দম ছাড়া মুহুর্তগুলোতে আমার সাথে সাথে আমার আম্মাও ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে শেষ! সারাদিন বাসায় থাকলেও আমি পড়াশুনা এসাইনমেন্ট এই সেই নিয়ে ব্যস্ত! আর বিকেল পাঁচটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত ক্লাস করে দশটা পর্যন্ত বাসায় ফেরা নামাজ কালাম খাওয়া দাওয়ার ব্যস্ততা তো আছেই। এভাবেই একে একে তিন সেমিস্টার পার হয়ে গেলো। রেজাল্টও পেয়ে গেলাম। একেক সেমিস্টারে সত্তর, আশি নাম্বার পেয়ে পেয়ে আমার সাথে সাথে আমার মায়ের মুখও খুশীতে ডগোমগো। ফাইনালে এসে ফোর-এর মধ্যে থ্রি পয়েন্ট ফাইভ টু। কানের কাছ দিয়ে গেলেও ফার্স্ট ক্লাসটা থাকলো আর কি। সব জায়গায় সিক্সটি পারসেন্টের ফার্স্ট ক্লাস আর ঢাবি’তে সেভেন্টি পার্সেন্টে! বাবাগো!
মার্চ মাস দু’হাজার চৌদ্দ সাল। এইতো মাত্র দু’মাস আগের কাহিনী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের বিজ্ঞপ্তি এসেছে পেপারে। তাই দেখে আমরা চার বান্ধবী ফর্ম কিনলাম। সমাবর্তনে অংশ নেবো। পানির মতো চলে গেলো প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। উফ রে বাবা! মাছের তেলেই মাছ ভাজো! তারপরে এলো স্মরণীয় সাত এপ্রিল দু’হাজার চৌদ্দ। আটচল্লিশতম সমাবর্তনের দিন। রাষ্ট্রপতির সামনে থেকে সার্টিফিকেট নেয়ার উচ্ছ্বাস! কিন্তু নাহ! সব নামে মাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসারদের হাত থেকেই কালো গাউন, কালো টুপি, ইনভাইটেশন কার্ড, সার্টিফিকেট এইসব নিতে হয়। রাষ্ট্রপতির সামনে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর সাথে বসে বসে শুধু অনুষ্ঠান উপভোগ করা।
অনুষ্ঠান শেষ হবার আগেই আমরা কয়েকজন চম্পট বাড়ির উদ্দেশ্যে। তাবুর নিচে গরমে সেদ্ধ প্রায়। আর বসা যাচ্ছিলো না। এর চেয়ে বরং আম্মাকে সময় দেয়া যাক বাসাতে গিয়ে!
বাসায় ফিরে গাউন, টুপি, নিমন্ত্রণ কার্ড, ক্রেস্ট, শুভেচ্ছার ব্যাগ সহ চটের তৈরি সমাবর্তনের ব্যাগটা আম্মার হাতে দিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে গেলাম আর মুখে বললাম-‘নাও, আমাকে তুমি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়াইছো। এই সমাবর্তন আসলে তোমার মেয়ের নয়, সমাবর্তন তোমারই। এত জীবন পর্যন্ত আমাকে এত এত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সমস্ত সম্মাননা তোমার জন্য, মা!’ এইটুক বলেছি এই বেশি! মা’কে সরাসরি গলা জড়িয়ে ধরে কখনো আমি বলতে পারিনি-‘মা তোমাকে খুব ভালোবাসি!’ অথবা কখনো ভুল হয়ে গেলেও মান ভাঙ্গাতে পারিনি। কখনো কষ্ট দিয়ে ফেললেও সরি বলতে পারিনি। আমি যেন কেমন! সব মেয়ে সন্তানরাই মায়ের জন্য আবেগে ভেসে যায়! গলা জড়িয়ে ধরে, পায়ে পরে সে আবেগ প্রকাশ করে। আমি করি সেটা একা একা! তার সামনে নয়, পেছনে! তার প্রতি আমার সমস্ত অভিমান জমতে জমতে পাহাড় সমান হয়ে একদিন রাগের মাধ্যমে প্রকাশ পায়! আর তারপরে রাগের তো কোন সীমা পরিসীমাই থাকে না! পড়ে ‘সরি’ বলার জন্য কত শত প্ল্যান করি কিন্তু আর বলা হয়না। পারিই না আমি! কেন যে পারিনা খোদাই জানেন! লজ্জা লাগে? নাকি ভয়? সত্যিই জানিনা!
...কোরআন তেলাওয়াত করলাম না মায়ের সাথের রাগ অভিমান পাঠ করলাম এতক্ষণ? জানি না। মেজাজ খারাপ হয়ে গেলে কত কথা মনে হয়। নিজের ইচ্ছায় কোরআন তেলাওয়াতে বসলে এক দেড় ঘন্টা পাঠ করি। নামাজের পরের পড়ার যত সূরা আছে সুরা ঈয়াসিন, সূরা আর রহমান, সূরা মূলক, সূরা ওয়াক্বিয়াহ কোনটাই বাদ যায় না! এর সাথে আলাদা করে পারা অনুযায়ীও পাঠ করি। কিন্তু অন্যের সুবিধামত কাজে কি আর মন বসে? তা সে যে কাজই হোক।
সুরা ইয়াসীন পাঠ করা শেষ। আমি কোরআন শরীফ বন্ধ করে সব জায়গামত রেখে এলাম। ল্যাপটপে জরুরী কাজ আছে। মা দিবস নিয়ে মা’কে নিয়ে কিছু লেখা হয়নি। লেখাটা আজকে লিখতে না বসলে কালকেই শেষ তারিখে লেখা হয়ে উঠবে কি? মাত্র একটা দিন এবং শেষ দিন!
থাক গে! একটা লেখা না হয় নাই লিখলাম। কালকে একটা শেষ চেষ্টা করবো। অত তাড়াহুড়া করে কি আর ভালো লেখা তৈরি হবে? না হোক, তবু মায়ের মাথাটা ঠান্ডা থাক!
আমি ল্যাপটপ গুছিয়ে রেখে বিছানায় এক গাদা পেপার নিয়ে বসলাম। বিনোদন পেপার কয়েকটা জমে গেছে! রাত বাজে সাড়ে এগারোটা। ঘুম পেয়ে গেছে! এতক্ষণে মনে হলো- মা কি চেয়েছিলো আজকে? আমি যেন রাত না জানি সেটা? নাকি কোরআন তেলাওয়াত? যেটাই চেয়ে থাকুক, আমার তো দুটো উপকার হয়েছে। এক-কোরআন পাঠ আর দুই-রাত না জেগে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরা। মা আসলে ভালোই করতে চায়। আমিই উলটা ভাবি!
আসলে তাও নয়। মা সবসময় পেছনে লেগে থেকে আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায় এটাই বিরক্তিকর! মা কেন বড় হতে দেয় না? এখনও কি ছোট রয়ে গেছি?
আসলে মায়েরা বোধহয় এমনই। তাদের সন্তানকে কখনো বড় মনে করতে চায় না। আর চায় শুধু পারফেক্ট বানাতে! আমি তো পারফেক্ট হতে চাইনা। আমি যা আমি তা’ই থাকতে চাই!

পরিশেষঃ মায়ের গল্প বলে কি শেষ করা যায়? মা আর সন্তানের সম্পর্ক নিয়ে শব্দের সীমাবদ্ধতায় গল্প লেখা কখনো সম্ভব নয়। তবে কি উপন্যাস? নাহ! সেটাও সম্ভব না! মা আর সন্তানের সম্পর্কের গল্পের কোন শেষ নেই। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত লাখ লাখ শব্দের হাজার হাজার সুখ দুখের শব্দে শত শত গল্পের প্লট! কোনটা রেখে কোনটা লিখবো? তাই আপাতত এখানেই সমাপ্তি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আমির ইশতিয়াক মাকে আমি অসম্ভব ভালোবাসি। মায়ের গল্প ভাল লাগল।
আপনাকে আমার লেখাটায় প্রথম পাঠক হিসেবে পেয়ে আমারও ভালো লাগলো খুব, আমির হোসেন ভাই।

১৭ অক্টোবর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪