পৌষ মাসের মাঝামাঝি, শেষ দুপুর, বেশ ঠাণ্ডা পড়েছে। কিন্তু এই ঠাণ্ডাও আমিনা বেগমের মেজাজ ঠাণ্ডা করতে পারতেছে না। আমিনা বেগমের মন ভালো না, কেমন যেন সবকিছু অসহ্যবোধ হচ্ছে। আমিনা বেগমের বড় ছেলে রিপনের বৌভাত আগামিকাল, কোথায় অনুষ্ঠানের জোগাড়মন্তোর নিয়ে এখন আমিনা বেগমের ব্যস্ত থাকার কথা, তা না করে, আমিনা বেগম এখন লেপমুরি দিয়ে বিছানায় শুয়ে আছে। আমিনা বেগম যখনই তার ছেলের বৌয়ের কথা ভাবতেছে, তখনই আমিনা বেগমের ভয় লাগতছে। আমিনে বেগম নিজে খুব ঠান্ডা মানুষ, তার কপালে এমন দজ্জাল বৌ পরবে সেটা আমিনা বেগম কখনই ভাবে নাই। বিছানায় শুয়ে আমিনা বেগমের মনে ঘুরে ফিরে শুধু পুরান কথাই ভাবতেছে। রিপনকে ময়মনসিং রেখে পড়ানোই উচিত হয় নাই। গ্রামে ভালো পড়াশোনা হবে না ভেবে, রিপনকে ম্যাট্রিকের পরই ময়মনসিং শহরের কলেজে ভর্তি করে দেয়া হয়। বড় ছেলেকে এভাবে দূরে ঠেলে দিতে আমিনা বেগমের অনেক কষ্ট হইছিলো কিন্তু ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমিনা বেগম সব দুঃখ মুখ বুঝে সয়ে নেয়। কলেজটা ভালো ভাবে রিপন পাশ করে, কিন্তু তারপরই রিপনের মাথায় ঢুকে টাকার চিন্তা। ঠিকাদারি ব্যবসায় নামে অল্পকিছু পুঁজি নিয়ে, কাজ ভালোই আগায়। মাসে একবার করে গ্রামে এসে মা-বাবাকে কিছু কিছু টাকাও হাতখরচ হিসাবে দিয়ে যায়। এভাবে তিন বছর ভালোই চলল। মাস ছয়েক আগে হঠাৎ করে রিপন বাড়িতে এসে জানায় ময়মনসিং শহরের নামকরা সর্দার বাড়ির ছোট মেয়ে নিনার সঙ্গে তার পাঁচ বছরের প্রেম এবং ঐ মেয়েকে যততাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে করতে চায়। রিপনের বয়স মাত্র বাইশ, এত তাড়াতাড়ি ওর বিয়া দিতে মা-বাবা কারোই ইচ্ছা ছিলও না। শুধুমাত্র রিপনের পিড়াপিড়িতেই রিপনের কৃষক বাবা আবুল হোসেন ময়মনসিং শহরে মেয়ের বাসায় যায় বিয়ার প্রস্তাব নিয়ে। ওখানে যেয়ে সবকিছু শুনে সহজসরল আবুল হোসেনের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরে। সেই কলেজ থেকেই নাকি রিপন-নিনা প্রেম শুরু হয়। একে, নিনা দেখতে খুব সুন্দরী, তারউপরে নিনার বাবার আর্থিকভাবে খুব স্বচ্ছল তাই রিপন পড়াশোনা বাদ দিয়ে ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করে এবং নিনাদের বাসায় যেয়ে তিন বছর সময় চায়, এবং ঠিক তিন বছর পরে নিনাকে বিয়ে করবে এমন কথা দেয়। এমন সাহসী, উদ্যমী ছেলেকে মেয়ের জামাই হিসাবে পেয়ে নিনাদের বাসার সবাই খুশী। কিন্তু এসবের কিছুই রিপন তার নিজের পরিবারের কাউকেই জানায় নাই, এটা যতবার আমিনা বেগমের মনে পড়ে, ততবার তার মন খারাপ হয়। তারপর, আবুল হোসেন ময়মনসিং থেকে ফিরে আমিনা বেগমকে সব খুলে বলে এবং বিয়ের প্রস্তুতিতে নেমে পড়ে। স্বামীর কাছ থকে সবকিছু শুনে আমিনা বেগমের মুখে কথা ফুটে না, কেননা আমিনা বেগমের মনে অন্যরকম স্বপ্ন ছিল। প্রতিবেশির মেয়ে খুশিকে আমিনা বেগম নিজের পুত্রবধূ হিসাবে ধরে নিয়েছিলো। কিন্তু বাস্তবতা বেশিভাগ সময়ই সুখকর নয়। ঐ মেয়ের নামটাও আমিনা বেগমের কাছে ভালো লাগে নাই, নিনা আবার কেমন নাম, কেমন যেন শ্রী-ছাড়া। নিজের ছেলের উপর এতটাই বিরক্ত হয় যে, ছেলের বৌয়ের একটা ছবিও আমিনা বেগমের দেখার ইচ্ছা হয় নাই। আমিনা বেগম তার মনের সব দুঃখ চাপা দিয়ে ছেলের বিয়েতে ময়মনসিং যায়। ছেলের শ্বশুরবাড়ির আদর-আপ্যায়নের ঘটা দেখে তার কিছু শংকা কাটে। বিয়ের মঞ্চেই আমিনা বেগম প্রথম বারের মতো ছেলের বৌ নিনাকে দেখে, ভালোরকম সুন্দরি কিন্তু রূপের দেমাগও আছে ষোলআনা। মিনিটদশেক তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমিনা বেগম লক্ষ্য করে তার ছেলের বৌকে, কিন্তু সৌন্দর্য ছাড়া আর কিছু দেখতে পায় না। নতুন বৌ হয়েও নিনা কেমন নির্লজ্জের মতো অনবরত কথা বলতেছিলো আর উচ্চ স্বরে হাসতেছিলো। আমিনা বেগমের মেজাজ সবচেয়ে বেশী খারাপ হয় নিনার সালাম করার ভঙ্গী দেখে, মাটিতে না বসে খানিকটা উপর হয়ে আমিনা বেগমের পা ছোঁয়ার ভঙ্গী করে শুধু, তাও শুধু একবারই। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে, দুইমাস পর বৌভাতের দিনক্ষণ ঠিক করে ছেলে আর ছেলের বৌকে নিয়ে গাড়িতে উঠেন আমিনা বেগম, গাড়িতে উঠে আরেকবার ধাক্কা খান, কেননা নতুন বৌ এরই মধ্যে বিয়ের শাড়ি খুলে ফেলে সালোয়ার-কামিজ পড়ছে, গরম আর লম্বা যাত্রার অজুহাতে। বৌয়ের যে একেবারেই সহ্য শক্তি নাই, এতেই প্রমাণ হয়ে যায় কেননা রাস্তা মাত্র তিন ঘণ্টার, তাও বৌয়ের সহ্য হয়নাই। গাড়িতেও আরেকবার নির্লজ্জতার প্রমাণ দিলো নতুন বৌ, স্বামীর কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো, একবারও চিন্তা করলো না যে, শ্বশুর-শাশুড়িও একই গাড়িতে আছে। শেষ বিকেলে যখন তারা বাড়িতে পৌঁছালো, তখন আত্মীয়স্বজন-পাড়া-প্রতিবেশিরা ভেঙ্গে পড়লো নতুন বৌকে দেখতে। নতুন বৌয়ের পড়া সালোয়ার-কামিজ আর আলুথালু বেশ দেখে প্রতিবেশিরা ফিসফাস কথা আরাম্ভ করলো। কিন্তু তাতেও রিপনের বৌয়ের ভ্রূক্ষেপ নাই, নিজের মতো করে স্বামীর হাত ধরে বাড়িতে ঢুকলো। আমিনা বেগমের ঠোঁটকাটা ননদ রোকসানা তো বলেই বসলো, “ভাবী, শহর থেইকা খুইজা এমন লক্ষ্মীছাড়া বৌ আনলা??!! দেশ-গেরামে কি মাইয়ার অভাব পরছিল??!!” এসব কোন কথার জবাব দিতে পারে নাই আমিনা বেগম। মাত্র দুইদিন বাড়িতে ছিল রিপন আর রিপনের বৌ, এর মধ্যে একবারও বৌ রান্নাঘরে উঁকি দেই নাই, খড়ির ধোঁয়ার অজুহাতে। কাদার অজুহাতে উঠানে পা দেয় নাই। ধূলা আর গরমের অজুহাতে দরজা দিয়ে রিপনের ঘরেই বসে ছিল। আর সবসময়ই সালোয়ার-কামিজ পড়েছিলো আর মাথা ছিল খালি। এইসব দেখে আত্মীয়স্বজন-পাড়া-প্রতিবেশিরা নানারকম কথা আমিনা বেগমকে শুনিয়ে গেলো। তাদের মুখ বন্ধ করার মতো কোন কথাই আমিনা বেগমের ছিলো না। দুইদিন পরে যখন রিপন বৌ নিয়ে চলে গেলে শুরু হয় আরেক যন্ত্রণা। সবাই আবুল হোসেন আর আমিনা বেগমকে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে পাগল করে ফেলে, রিপন কি বৌকে নিয়ে ময়মনসিং এই থাকবে?! রিপন কি শেষমেশ ঘড়-জামাই হয়ে যাবে??!! ছেলেটাকে কি টাকার লোভে আবুল হোসেন আর আমিনা বেগম পর করে দিলো??!! এতোসব প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে আবুল হোসেন আর আমিনা বেগম নির্বাক হয়ে যায়, কপাল ছাড়া আর কাউকেই দোষ দিতে পারে না।
বৌকে নিয়ে ময়মনসিং যাওয়ার বিশদিন পর রিপন গ্রামে আসে, তাও আবার বৌ ছাড়া। বৌ কোথায় জিজ্ঞাসা করলে বলে বৌ বাপের বাড়ি রেস্ট নিতে গেছে!! আবারো শুরু হয় আত্মীয়স্বজন-পাড়া-প্রতিবেশিদের প্রশ্নের ঝড়। রিপনের মুখ নাকি শুঁকিয়ে গেছে!! রিপন কি বৌয়ের সাথে ঝগড়া করে গ্রামে এসেছে??!! নাকি রিপনের বৌয়ের সাথে রিপনের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে???!!! এইসব দেখেশুনে আমিনা বেগম ভয় পায়, ছেলেকে এইসব শোনা থেকে বিরত রাখতে চায়। সন্ধ্যার সময় রিপন যখন আত্মীয়স্বজনের বাসা থেকে ঘুরে আসতে চায়, তখন আমিনা বেগম বিভিন্ন অজুহাতে বাঁধা দেয়। কিন্তু রিপন আমিনা বেগমের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঠিকই তার ফুপু রোকসানার বাসায় যায়। রাতে খাবার সময় যখন আমিনা বেগম ছেলেকে খুঁজে পান না, তখন বুজতে পারেন রিপন বাসায় নাই। তার বুকটা কেঁপে উঠে। রাত বাড়লেও বাসার সবাই না খেয়ে চুপচাপ বসে থাকে। বেশ রাত করে রিপন বাসায় ফিরে, তার মুখ কালো। আমিনা বেগম ভয় পায় রিপনকে কিছু জিগ্যেস করতে, কিন্তু রিপনই মুখ খুলে। আমিনা বেগম যা ভয় করছিলো তাই হইছে, রিপনকে তার ফুপু সব কথাই খুলে বলছে। রিপন শুধু বলে “আমি তোমাদের বৌকে চিনতে কোন ভুল করি নাই, আর নিনা খুব ভালো মেয়ে একটু আহ্লাদী কেননা, নিনা বাড়ির সবচেয়ে ছোট।”
রিপনের কয়েকদিন থাকার কথা থাকলেও পরেরদিন সকালেই রিপন ময়মনসিং চলে যায়। এর মধ্যে রিপন আর একবারও বাড়িতে আসে নাই। আমিনা বেগম ভাবছিলেন রিপন হয়তো সবার উপর রাগ করছে, বৌভাতের অনুষ্ঠান হয়তো করবে না। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে রিপনের বাবা আবুল হোসেন অতি উৎসাহে বৌভাতের প্রস্তুতি নিতে লাগলো। সারা বাড়ি রঙ করালো। যে ঘরে খড়ি রাখা হয়, সেই ঘর খালি করলো, ঠিকঠাক করে তাতে চৌকি বসালো। ধান রাখার ঘরও ঠিকঠাক করে তাতেও চৌকি বসালো। বাবুর্চি আর তার সাঙ্গপাঙ্গ উঠানে মেলা বসিয়েছে। গ্রামের প্রায় সবাইকেই দাওয়াত দেয়া হয়েছে। আমিনা বেগমের মনে হচ্ছে রিপনের বাবা সবকিছুতেই খুব বাড়াবাড়ি করতেছে। আমিনা বেগম যখন তার স্বামীকে জিজ্ঞাসা করলো ব্যাপার কি, তখন আবুল হোসেন জানাল রিপনের শ্বশুরবাড়ির সবাই নাকি বৌভাতেরদিন দুপুরে আসবে এবং রাতে থাকবে, সবমিলেয়ে ত্রিশজন। আর ছেলের মুখ রক্ষা করতে আবুল হোসেন উঠেপড়ে লাগছে। আমিনা বেগম শুয়ে শুয়ে ভাবতেছেন, ছেলের মুখ রক্ষা হবে ঠিকই কিন্তু আগে তাদের মুখ রক্ষা হবে না, আগেতো শুধু আত্মীয়স্বজন-পাড়া-প্রতিবেশিরাই ছিছি করত। বৌয়ের আসল রূপ দেখার পর এইবার পুরাগ্রাম ছিছি করবে।
শুয়ে থেকেই আমিনা বেগম টের পেলেন রিপন আর রিপনের বৌ বাড়ি আসছে, কিন্তু আমিনা বেগম শুয়েই থাকলেন, কি হবে উঠে গিয়ে তাদের স্বাগত জানালে?!?! রাগে আমিনা বেগমের মুখটা তিতে হয়ে যাচ্ছে। এমন সময় মা-মা করে ডাক ছেড়ে রিপন আমিনা বেগমের ঘরে ঢুকল। রিপনের পিছনে রিপনের বৌ, অবাক কাণ্ড বৌয়ের পরনে শাড়ি আর মাথায়ও ঘোমটা দেয়া। ছেলে-ছেলের বৌ দুইজনই আমিনা বেগমের পা ধরে সালাম করে। কি মিষ্টি লাগছে বৌয়ের মুখখানা!! নতুন বৌয়ের মতই স্নিগ্ধ আর লাজনম্র। আমিনা বেগম ছেলে আর ছেলের বৌকে হাত-মুখ ধুতে পাঠিয়ে খাবারের আয়োজন করতে যান, গরুর মাংশের তরকারি গরম করতে করতে ভাবতে থাকেন এত তাড়াতাড়ি বৌয়ের এত পরিবর্তন কেমনে সম্ভব হলো। ভাত গরম করতে করতেই বৌ রান্নাঘরে এসে ঢুকে। এরিমধ্যে বৌ হাত-মুখ ধুয়ে নতুন একটা শাড়ি পড়েছে। মাথায় ঘোমটা আর চুল পরিপাটি করে আঁচড়ানো। শাশুড়িকে সাহায্য করতে আসে বৌ, আমিনা বেগম খুশী হলেও বৌকে আগুন-ধোঁয়া থেকে দূরে থাকতে বলেন। কিন্তু নিনা জোর শাশুড়িকে সরিয়ে নিপুন হাতে সবকিছু গরম করে এবং খাওয়ার টেবিলে পরিবেশনও করে একজন পাকা গৃহিণীর মতো। আমিনা বেগম যেন অবাক হওয়াও ভুলে যান। বৌয়ের এত পরিবর্তনের কারন জানার জন্য মনে মনে ছটফট করতে থাকেন আমিন বেগম। আগের বৌয়ের সাথে এই বৌয়ের যেন কোন মিলই নাই। রাতের খাওয়ার পর রিপনকে একে পেয়ে আমিনা বেগম নিনার এই পরিবর্তন কিভাবে সম্ভব হোল তা জিগ্যেস করেন। হেসে রিপন জবাব দেয়, সময়ই নিনাকে সবকিছু শিখিয়েছে, এর সাথে দরকার ছিল অল্পকিছু উপদেশ যা কিনা, রোকসানা ফুপু দিয়েছেন। এটা শুনে আমিনা বেগমের মনেপড়ে এরই মধ্যে তার ননদ রোকসানা দুই দফা ময়মনসিং যেয়ে দুই সপ্তাহ থেকে এসেছে। আমিনা বেগম রোকসানাকে তার ময়মনসিং যাওয়া নিয়ে যতবার জিগ্যেস করেছেন, ততবার রোকসানা মুচকি হেসে জবাব দিয়েছেন, ময়মনসিং এ উনি ঘুরতে গিয়েছিলেন। এইবার সব রহস্য পরিষ্কার হয়ে গেলো আমিনা বেগমের কাছে। আমিনা বেগম লজ্জা পেলেন এটা ভেবে যে, যে কাজটা তার করার কথা ছিল সেটা অন্যজন করেছে। রিপনের কাছে আরও জানতে পেলেন, আবুল হোসেনও এই ব্যাপারটা জানত। সবাই আমিনা বেগমকে অবাক করে দেয়ার জন্যই তাকে কিছু জানায় নাই!! আমিনা বেগম ঠিক করলেন, আগামিকাল সকালেই রোকসানাকে ধরবেন, এভাবে জব্দ হয়ে আমিনা বেগম বেশ বিব্রতবোধ করছিলেন।
আজ শুক্রবার, রিপনের বৌভাত, মুল অনুষ্ঠান জুমার নামাজের পর। সকাল থেকেই বাড়ি ভর্তি হয়ে গেলো আত্মীয়স্বজন-পাড়া-প্রতিবেশির আনাগোনাই। অনেক কষ্টে দুপুরের দিকে রোকসানাকে একা পেয়ে আমিনা বেগম চেপে ধরলেন, কেন নিনার ব্যাপারে তাকে কিছুই জানানো হয় নাই??!!! রোকসানা হেসে বললেন, “ভাবী তোমার ঋণ শুধাইলাম, তুমিই আমারে শাড়ি পড়া, রান্না-বান্না, চুল বাঁধা, সংসারের খুঁটিনাটি সবকিছু শিখাইছিলা! ঋণটা কি ভালোভাবে শুধাইতে পারছি, ভাবী?!” আমিনা বেগম আবেগে আপ্লুত হয়ে ননদকে জড়িয়ে ধরেন। আবুল হোসেনের ভরাট গলার ডাক শোনা যায়, “কোথায় গেলা হক্কলে, মেহমান চলে আইসছে, তাড়াতাড়ি আইছো।”
চোখ মুছে, ননদ-ভাবি মঞ্চের দিকে আগায়, নতুন বৌকে ঘিরে সবাই ভীড় করে আছে। টুকটুকে লাল শাড়ি পড়া, সোনালী জ্বরির কাজকরা ওড়না মাথায় দেয়া নতুন বৌকে কি সুন্দরই না লাগছে!!!