একটি ফেব্রুয়ারীর গল্প

২১শে ফেব্রুয়ারী (ফেব্রুয়ারী ২০১২)

SM Mishkat
  • ১৬
  • 0
  • ৮৬
শর্ত, কণা, জিসান, হৃদি, সানজিদা ঢাকায় একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। তারা খুব ভালো বন্ধু।তারা পড়াশুনার পাশাপাশি আনন্দ-ফূর্তি করে নাকি আনন্দ-ফূর্তির মাঝে পড়াশুনা করে তা বলা যাবেনা। কারণ তারা খুব আড্ডাবাজ। দিনের অধিকাংশ সময় তারা আড্ডা দিতে ভালবাসে।খুবই আধুনিক এরা সব সময় আপডেট থাকে। আধুনিক প্রযুক্তি, পোশাক, মিডিয়া সাধারনত এগুলো তাদের আড্ডার বিষয়।লিংকিন পার্ক নতুন কি গান করল, এমা ওয়ার্টসন এর নতুন ছবি কবে আসছে, জেমস ক্যামেরুন তার নতুন ছবিতে কাকে নিবে এসব আলোচনা প্রতিদিন থাকে তাদের আড্ডাতে।ফেব্রুয়ারী মাস এলে তাদের মধ্যে একটা নতুনদিগন্তের সূচনা ঘটে।ফেব্রুয়ারী মাসকে নিয়ে তাদের অনেক পূর্ব প্রস্তুতি থাকে।আজ ফেব্রুয়ারীর ৭ তারিখ। ক্লাস শেষে জরুরী মিটিং ডেকেছে সানজিদা। ক্লাস শেষে সবাইকে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কি করবে তারা। অন্য বছরগুলোতে ফেব্রুয়ারী মাস আসার আগে থেকে তারা প্রস্তুতি নেয় কিন্তু এবছরএতো দেরি হবার কথা নয়।তাই এই জরুরী মিটিং।
মিটিং এ সবাই উপস্থিত হল।
সানজিদা: কি ব্যাপার তোরা কি ভূলে গেছিস আজ ৭ তারিখ।আর মাত্র কয়েক দিন বাকি আছে তোরা কে কি প্লান করলি?
শর্ত: পরীক্ষা ছিল তো তাই দেরি হল।তা বল কি করা যায় এবার, নাকি গত বারের মত পার্টি দিবি?
জিসান: এবারও পার্টি দিব তবে একটু ভিন্ন আমেজে। আমি চিন্তা করছি এবার পার্টিতে স্পেশাল ড্রিঙ্কস্ এর ব্যবস্থা করব
কণা: আমি ওসব খাই টাই না। অন্য কিছু কর। সারা দিন এবার ঘুরলে কেমন হয়?
জিসান: আসলে না কণা তুই এখনো খেত রয়ে গেছিস। কোথায় ভাবছি ডিজে নাইটে যাব। আর তুই …
(সবাই হাসাহাসি শুরু করল)
কণা: আচ্ছা ঠিক আছে তোরা যা করবি কর আমার কোন সমস্যা নেই।
শর্ত: জিসান এবার ডিজে নাইটে গেলে কেমন হয়?
সানজিদা: আমার কোন সমস্যা নাই। যা সিন্ধান্ত নেবার দ্রূত নিতে হবে। আর মাত্র ৭ দিন বাকি আছে।গত ভালোবাসা দিবসে কত মজাইনা করেছিলাম। আর এবার ভালোবাসা দিবসে যদি একটু আনন্দ করতে না পারি তাহলে পুরো বছরটা ভালোবাসা শূন্য হয়ে যাবে।
হৃদি: মজা করতেই হবে। সবাই তার প্রেমিক প্রেমিকাকে নিয়ে ভালোবাসা দিবস সেলিব্রেট করে। আমার ওসব ভালো লাগেনা।এরচেয়ে আমরা ফ্রেন্ডরা অনেক মজা করি এটাই আমার ভালো লাগে।
সানজিদা: আমারও একজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে ভালো লাগেনা।এই জন্যইতো কাউকে ভালোবাসি না। আচ্ছা এসব বাদ দিয়ে বল কি করা যায়?
শর্ত: এবার আমরা ডিজে পার্টিতে যাব।সারা রাত নাচানাচি করব একটু হালকা পাতলা ড্রিঙ্কস্ করব।
সানজিদা: আসলে লাইফটা হলো এনজয় করার জন্য।আমার ডিজে পার্টিতে যেতে কোন আপত্তি নাই।
হৃদি:কেন তোর প্যারেন্টস্ কিছু বলবেনা?
সানজিদা: আরে না ড্যাড আর মম আলাদা থাকে।আমি যদি ড্যাডকে বলি আমি মম এর কাছে যাচ্ছি তাহলে ড্যাড কখনো মম এর কাছে আস্ক করবেনা আমার কথা। আর মম কে যদি বলি আমি ড্যাড এর কাছে যাচ্ছি তাহলে মমও ড্যাড কে আস্ক করেনা আমি এসেছি কিনা।সো আমার কোন প্রবলেম নাই।আমি এভাবে কত রাত বাইরে থেকেছি।
হৃদি: কিন্তু আমাকে তো বের হতে দেবেনা।তাছাড়া ১৪ তারিখে যে ভালোবাসা দিবস সবাই জানে।সুতরাং কি বলে বের হব?
সানজিদা: তোর কোন চিন্তা করতে হবেনা।সেদিন আমি ম্যানেজ করব।
কণা: আমি কোন ভাবে আসতে পারবোনা।
সানজিদা: শোন আমার প্লান। ১২ তারিখে আমি অসুস্থ হব।তোরা তোদের প্যারেন্টস কে বলবি।ঠিক ১৪ তারিখে আমার অসুস্থের মাত্রা বেড়ে যাবে।তোরা তোদের প্যরেন্টসকে বলবি যে আমার বাবা দেশের বাইরে গেছে তাছাড়া আমার মা আমার কাছে থাকে না।বাসায় কাজের লোক ছাড়া আমাকে দেখাশোনা করার কেউ নেই। এই বলে চলে আসবি।
কণা: তোর মাথায় এত বু্দ্ধি যে কিভাবে আসে? আচ্ছা বলব। এতো গেল রাতের পার্টির কথা সারা দিন কি করবি?
জিসান:সকালে ভাসির্টিতে আসবো এসে সবাই মিলে আনন্দ করব। আচ্ছা আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে একটা প্রোগ্রাম করলে কেমন হয়?
সানজিদা: মন্দ হয়না।কাল ক্লাসে এসে সবাইকে বলব। একটাই মাত্র দিন যদি আনন্দ ফূর্তি না করি তাহলে লাইফটা তো মাটি হয়ে যাবে।
হৃদি: আমার অনেক কিছু কেনাকাটা করা লাগবে।
সানজিদা: আমাদের সবারই তো মার্কেটিং করা লাগবে।তোরা কে কি নিবি এবার?
হৃদি: আমি দুইটা টি-শার্ট, দুইটা জিন্স, কসমেটিকস্, এভাবে বলা যায় নাকি মার্কেটে গেলে তখন কত কিছু মনে পড়বে
সানজিদা: মার্কেটে কবে যাবি?
হৃদি: আজইবিকালে যাব আর সময় আছে নাকি? কি কণা তুই কোন কথা বলছিস না যে ..
কণ: কি বলব , আচ্ছা আজ বিকালে মার্কেটে যাব
জিসান: এবার ভালোবাসা দিবসটা জোস করে পালন করতে হবে।
শর্ত: সবই শুনলাম এখন বাড়ি যা বিকালে দেখা হবে
সানজিদা: তাহলে সবাই ৪ টার মধ্যে চলে আসিস। বাই


হাসান খুলনা বিভাগীয় শহরে একটি কলেজে অনার্স পড়ে। সে প্রত্যন্ত একটি গ্রাম থেকে এসেছে।এই পর্যন্ত আসতে তার অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে।অনেক বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে সে আজ একটি কলেজে ভর্তি হতে পেরেছে।এটা তার জন্য অনেক বড় পাওয়া। সে টিউশনি করে নিজের খরচ জোগায়।নিজের খরচ মেটানোর পর বাকি টাকা সে তার বাড়িতে দেয়।পড়াশুনার প্রতি তার আগ্রহ আজ তাকে এত দূর নিয়ে এসেছে।হাসানের কিছু ভাল বন্ধু আছে।কলেজে যদি কোন ক্লাস অফ থাকে তখন তারা আড্ডা দেয়।অনেক মজা করতে পারে হাসান। তাকে জোকার ও বলা চলে। হয়তো তা কষ্টগুলো মনে না করার জন্য হয়তো সব সময় হাসি খুসি থাকে।হাসানের হাসি মাখা মুখটি আবার লাবণ্য খুব ভালোবাসে।তাদের মধ্যে ভালোবাসা আছে কিনা কেউ জানেনা লাবণ্য কখনো হাসানকে বলিনি। তবে লাবণ্যর অন্যান্য বন্ধুদের থেকে হাসানকে একটু বেশি প্রাধান্য দেয়।হতে পারে খুব ভাল বন্ধু।


জিসান, কণা, সানজিদা, হৃদি, শর্ত মার্কেটে গিয়েছে। এটা কিনি ওটা কিনি, এটা পছন্দ হয়না ওটা পছন্দ হয়না। হৃদির পছন্দ হয় তো সানজিদার পছন্দ হয় না ইত্যাদি ইত্যাদি। রাত ৯ টা পর্যন্ত মার্কেটিং করার পরও তেমন কিছু কিনতে পারিনি। কাল আবার আসবে।
পরদিন তারা ভার্সিটিতে গেল। সেখানে ক্লাসে ঘোষনা দেওয়া হল ভালবাসা দিবসে বিশাল পার্টি হবে ক্যাম্পাসে।সবার অভিমত নেওয়া হল। অধিকাংশের মতামত হল কনসার্ট করা হোক।তারা ঠিক করল ১৪ তারিখ বিকালে তার কনসার্ট করবে। ভার্সিটির কিছু বড় ভাইদের নিয়ে কনসার্টের আয়োজনের বিষয়ে সিন্ধান্ত নেওয়া হল।
আর মাত্র কয়েক দিন আছে। সবাই ভালোবাসা দিবস উৎযাপন নিয়ে ব্যস্ত। ভার্সিটির ক্লাসগুলোতে এখন আর প্রাণ নেই। ক্লা্স করার দিকে কারোর মনযোগ নেই। জিসান, কণা, সানজিদা, হৃদি, শর্ত এরা ব্যস্ত আছে মার্কেটিং নিয়ে। প্রতিদিন কি যেন কেনা হচ্ছে না । তাই প্রতিদিনই তারা মার্কেটে যাচ্ছে।এদিকে কনসার্টের আয়োজন চলছে। কারা কারা পারফরম্যান্স করবে তা ঠিক করা হয়ে গেছে। সবার মঝে উৎফুল্ল ভাব। সবার চিন্তা ভাবনা ভালবাসা দিবস ঘিরে।এই পাঁচ ছয় দিন কারো যেন বিরাম নেই।সবার চিন্তা ধ্যান জ্ঞান ঐএকটি বিষয়কে নিয়ে।তারা প্রথমে যা ভেবেছিল তারচেয়ে অনেক কিছু হচ্ছে।তারা রাত ১২টা থেকে তাদের প্রোগ্রাম শুরু করবে।কিভাবে যেন সব ম্যনেজ হয়ে গেছে। তারা পুরো দিনের একটি তালিকা করে ফেলল।
১২টা এক মিনিটে ভার্সিটি ক্যাম্পাসে কেক কাটার মাধম্যে শুরু হবে ভালোবাসা দিবসের প্রথম শুভ সুচনা।তারপর ১৪০০টি মোম জ্বেলে সেলিব্রেট করা হবে ভালোবাসা দিবস।একে অপরকে শুভেচ্ছা জানানো সহ আরো অনেক কিছু।

হাসান দিনের অধিকাংশ সময় টিউশনি আর নিজের পড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকে।শুধু মাত্র কলেজে ক্লাস অফ থাকলে সেই সময়ে আড্ডা দেয় বন্ধু দের সাথে।দুদিন পরে ভালোবাসা দিবস।এই নিয়ে কারো তেমন মাথা ব্যাথ্যা নেই।হঠাৎ আড্ডার মাঝে লাবণ্য বলে উঠল ভালবাসা দিবসে কে কি করবে? জবাবে হাসান বলল কি আর করব।কলেজে আসব ক্লাস করব। তাছাড়া টিউশনি আছে।তাদের পড়াতে যাব।আর অন্যান্যরা তেমন কিছু বললনা।লাবণ্য বলল বিকালে সবাই ঘুরতে বের হলে কেমন হয়? হাসান বলল বিকালে পড়ানো আছে তাই সে বের হতে পারবেনা।তবে কলেজে এসে ক্লাস না হলে কোথাও ঘুরতে যেতে পারি।সবাই সম্মত হল।


আজ ১৩ই ফেব্রুয়ারী।
সব অ্যারেঞ্জমেন্ট প্রায় শেষ।কাল ভালোবাসা দিবস। জিসান, কণা, সানজিদা, হৃদি, শর্ত সবাই অনেক খুশিকারণ কেউ চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখেনি।আজ রাত ১০ টার দিকে সবাই ক্যাম্পাসে আসবে।তারপর সিডিউল অনুযায়ী সব কিছু হতে থাকবে।
রাত ১০ টা বাজে সবাই একে একে ভার্সিটিতে চলে এসেছে। নতুন নতুন ড্রেস পরে এসেছে এবং সবাই গর্জিয়াস ভাবে সেজে এসেছে।সব প্রস্তুতি শেষ এখন।আর মাত্র কয়েক মিনিট বাকি সবাই এক স্থানে জড়ো হয়েছে একটু পরেই কেক কাটা হবে। সবাই কাউন্টডাউন শুরু করল ৯ ৮ ৭ ৬ ৫ ৪ ৩ ২ ১ ০। ১২.০১ বাজার সাথে সাথে বাজি ফোটানো হলো, চারিদিকে আলোয় আলোকিত হয়ে গেল। এ এক অপরুপ চোখ ধাধানো দৃশ্য।সাথে সাথে কেক কাটা হলো। সবাই সবাইকে কেক কেটে খাওয়াল।একে আপরকে গিফট দিল।অনেক আনন্দ আর আনন্দের সীমাহীন স্বাধীনতা যেন পুরো শহরটাকে গ্রাস করেছে।মোম জালানো হলো।অব্যক্ত আরো অনেক কিছু করা হলো।রাত তিনটার দিকে সবাই ফিরে গেল।অনেকেরই ফিরতে ইচ্ছা করছিলনা কিন্তু কাল যে আরো অনেক প্রোগ্রাম আছে।তাই সবাই বাসায় ফিরে গেল।

সকাল ১০ টা।হাসান কলেজে এসেছে।সবার সাথে দেখা করল।কেউ কেউ ভালোবাসার শুভেচ্ছা জানাল।লাবণ্য হাসানের জন্য একটি গিফট এনেছে।দিবে কি দিবেনা ভাবছে। আজ আর ক্লাস হবেনা মনে হচ্ছে না। কারণ তেমন কেউ কলেজে আসেনি।তাই হাসান লাবণ্য ও তার বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে।লাবণ্য বার বার হাসানের দিকে তাকাচ্ছিল কিন্তু বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকতে পারছিনা। প্রায় ১২ টা পর্যন্ত আড্ডা দেওয়ার পর সবাই বাড়িতে ফিরে গেল।লাবণ্য জানে আজ আর হাসানের সাথে দেখা হবে না।যদি দিতে হয় তাহলে এখন দিতে হবে।অনেক সাহস করেও লাবণ্য হাসানকে তার গিফটা দিতে পারলনা।


সকাল বলব না দুপুর বুঝতে পারছিনা।১২টার সময় ঘুম ভাঙল সানজিদার। ঘুম থেকে উঠে সব ফ্রেন্ডকে ফোন দিল।কেউ তখনো উঠেনাই।সকালে তাদের আর বের হওয়া হলো না। এক বারে দুপুরে খেয়ে বের হবে।চার টার সময় ভার্সিটিতে কনসার্ট শুরু হবার কথা । ওরা চার টার দিকে পৌছে গেল।কনসার্টে অনেক মজা করল।পুরো সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত তারা কনসার্টে আনন্দ করল।সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে ড্রেস চেঞ্জ করে আবার সবাই বের হয়ে গেল।রাজধানীর একটি আভিজাত হোটেলে রাতে ডিজে পার্টিতে গেল।আগে থেকে সেখানে সব ব্য্বস্থা করা ছিল।সারা রাত গানের সাথে সাথে নাচ, একে অপরের সাথে যেন তারা একাকার হয়ে গেল।মাঝে কিছুক্ষন ড্রিঙ্কস্ করল।রাত তিন টার দিকে হোটেলে রুম বুক করা ছিল সেখানে যেয়ে থাকল। পরদিন যে যার বাড়িতে চলে গেল।



২০শে ফেব্রুয়ারি।
ভাসির্টি ক্যাম্পাসে বসে জিসান, শর্ত, কণা, হৃদি বসে আড্ডা দিচ্ছে।এরই মাঝে সানজিদা চলে আসল।
সানজিদা: কিরে কাল নাকি ভার্সিটি বন্ধ কেন রে?
জিসান: কাল ২১ শে ফেব্রুয়ারি।আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
সানজিদা: তাহলে কালতো আর দেখা হচ্ছে না।
শর্ত: কালকে ছুটি তোদের সাথে দেখা হবে না তাই সারা দিন ঘুমাবো।
হৃদি: যাক ঘুমানোর জন্য তাহলে একটা দিন পাওয়া গেল।
কণা: কেন কালতো ভার্সিটিতে সবাই আসবে।শহীদ মিনারে ফুল দিবে।আমরা যদি আসি তাহলে তো দেখা হবে।
সানজিদা: সকাল ভোরে খালি পায়ে এসে ফুল দাও। আমার ওসব ভালো লাগেনা।এজন্যই তো কাল আসবো না।সারা দিন ঘুমাবো।
কণা:তাহলে আমি ও আসবো না। বাসায় বসে বসে মুভি দেখবো।আচ্ছা আমি গেলাম।
সানজিদা: চলে যাবি।আচ্ছা তাহলে আমি আর থেকে কি করব।যাই দোস্তরা।


আজ দ্বিতীয় ক্লাস হবেনা।তাই হাসান ও তার বন্ধুরা বসে গল্প করছে।কাল একুশে ফেব্রুয়ারী।বাঙালি জাতির ইতিহাসে অন্যতম স্বরণীয় দিন।১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষাকে রক্ষা করার জন্য জীবন দিয়েছিল সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিক সহআরো নাম না জানা দেশ প্রেমিরা।তারা দেশকে ভালোবেসে, যে ভাষায় মা কথা বলে, মায়ের কাছ খেকে শিখেছি যে ভাষা সেই ভাষাকে রক্ষা করার জন্য নিজের জীবনের মায়া না করে সংগ্রাম করেছিল।সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিকের রক্তে কালো পিচ ঢালা রাস্তা লাল হয়েছিল।যাদের ত্যাগের বিনিময়ে পেয়েছি বাংলা ভাষা।এভাবে কথা গুলো বলছিল হাসান। এজন্য সে কাল শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কিছু করতে চায়।হাসানের কথায় সাবাই রাজি হল।লাবণ্য হাসানকে জিজ্ঞাসা করল কাল কি করা যায়?
হাসান: কাল ভোরে কলেজে এসে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে তাদের শ্রদ্ধা জানাবো।তারপর ১০টার দিকে কলেজের হলরুমে শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটা আলোচনা অনুষ্ঠান করা হবে।তারপর দুপুরে মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
লাবণ্য: একদিনের মধ্যে এত কিছু করবে কিভাবে?
হাসান: এখন ক্লাসের সবাইকে বলব।তাছাড়া কলেজ থেকে ও একটা অনুষ্ঠান করা হবে সেখানে আমরা অংশ গ্রহণ করব।স্যারের সাথে কথা বললেআশা করি সব কিছু হবে।

২১ ফেব্রুয়ারী।
হাসান চারটার সময় উঠল।তাহাযুদ্দের নামায পড়বে বলে। হাসান সাধারনত তাহাযুদ্দের নামায পড়েনা।এমনি পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে।ওজু করে হাসান তাহাযুদ্দের জন্য ১২ রাকাত নামায আদায় করল। নামায শেষে অনেকক্ষন কান্নাকাটি করে শহীদদের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করল।ফজরের নামায শেষ। কিছুক্ষন পর হাসান কলেজের দিকে রওনা দিল। আস্তে আস্তে অনেক লোকের সমাগম হলো।ভোরের শীতকে উপেক্ষা করে ছোট বড় আবাল বৃদ্ধ সব স্তরের লোক এসেছে শহীদ মিনারে।ছোট্ট শিশুটা যে জানেনা শহীদ কি, কেন এই একুশে ফেব্রুয়ারী, কেন এই ভাষা দিবস, সেও তার বাবার হাত ধরে এসেছে ফুল দিতে।মানুষের মুখে মুখে একটি গান-
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভূলিতে পারি
ছেলে হারা শত মায়ের অশ্রু গড়া এ ফেব্রুয়ারী আমি কি ভূলিতে পারি,
আমার সোনার দেশের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভূলিতে পারি”
গোটা দেশ আজ গাইছে একটি গান। সবাইকে একসাথে নিয়ে হাসান শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করল।দিনের অন্যান্য যেসব কার্যক্রম ছিল সবগুলোতে হাসান ও তার বন্ধুরা অংশ গ্রহন করল।মসজিদ, মন্দির, গির্জা সব ধর্মীয় স্থানে আলাদা আলাদা ভাবে তাদের জন্য প্রার্থনা করা হল।
এভাবে কেটে গেল গোটা দিন।সারাদিন প্রতিটি মুহূর্ত লাবণ্য হাসানের সাথে সাথে ছিল।হাসান কোন কিছু উপলব্ধি করতে পারেনি।

২২ ফেব্রুয়ারী
সানজিদা, শর্ত, জিসান সবাই কলেজে এসেছে।
হৃদি:কাল কে কি করলি
সানজিদা: কালকে আমি লং ড্রাইভে গিয়ে ছিলাম আমার কাজিনের সাথে
জিসান:আমি সারা দিন ঘুমাইছি।আর মুভি দেখছি।
শর্ত: আমি ঘুমাতে পারিনি বাসার পাশে শহীদ মিনার সারা দিন কেউ কেউ আওয়াজ
সানজিদা: ওসব বাদদে। আচ্ছা জিসান তোর কাছে কি নতুন কোন ইংলিশ মুভি আছে থাকলে দিস।
জিসান: আচ্ছা নিস।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
sakil সুন্দর এবং প্রাঞ্জল উপস্থাপনা লেখাটাকে ভিন্ন মাত্র দিয়েছে . সুন্দর গল্প .
ভালো লাগেনি ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
ধন্যবাদ ভাই। যতই ভাল লিখি না কেন সেরা ২৫ শে যাবার সৌভাগ্য নাই। দোয়া করবেন। আরো ভাল করতে পারি যেন।
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি ভালো লাগলো|
ভালো লাগেনি ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি golpo lekhar hat tomar valo Mishkat....aro beshi beshi porbe kamon....oboshoi tumi parbe.....khub valo laglo.dhonnobad tomake.........
ভালো লাগেনি ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
মিলন বনিক শুধু গল্প নয়, এই সমাজের কিছু অনিয়ম, অসংগতি খুব সুন্দরভাবে ফুটে উটেছে, গল্পটা ভালো লাগলো। আরো ভালো করতে হবে, লেখকের প্রতি শুভেচ্ছা।
ভালো লাগেনি ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
SM Mishkat nilanjona নিল ম্যাম ধন্যবাদ আপনাকে। আমি চেষ্টা করেছি মাত্র কতটুকু পেরেছি জানিনা।
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
নিলাঞ্জনা নীল সুন্দর ভাবনা .... দুটি মানুষিকতাকে সমান্তরাল ভাবে তুলে এনেছেন... সুন্দর.....
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
Sujon ১৪ফেব্রুয়ারী বেশী গুরুত্ব পেল..............
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
SM Mishkat আনিসুর রহমান মানিক স্যারকে ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
আনিসুর রহমান মানিক ভালইতো লিখেছ ,চালিয়ে যাও ...
ভালো লাগেনি ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১২
SM Mishkat মারুফ মুস্তাফা আযাদ স্যার কে ধন্যবাদ। আসলে গল্পের শেষটা আরো ভালো হওয়া উচিৎ ছিল।
ভালো লাগেনি ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

০৩ অক্টোবর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“মে ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ মে, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী