মুক্তি আবর্তে জীবন

মুক্তির চেতনা (মার্চ ২০১২)

অম্লান অভি
  • ১৮
  • ৮৩
ড. ইসমত। ভাগ্য বিতারিত একজন মানুষ প্রচণ্ড ভাগ্য বিশ্বাসীও বটে। উন্নত বিশ্বে তার স্থায়ী নিবাস যদিও জন্ম সোনার বাংলাদেশে। প্রতিযোগিতার রোষানলে জীবন জড়িয়ে এক সময় আবার বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসা কিন্তু তাল না পাওয়ায়; দ্বন্দ্ব চলেছে সব সময়ই।
ড. ইসমত। ইতিমধ্যে জীবনে জড়িয়েছে অনেক কিছু শুধু নেশা ছাড়া। তাই বা বলি কেমন করে! নেশার টানেই নাকি দেশে ফিরেছেন। এমনই মন্তব্য লোপার। তবে এ নেশা ঋণাত্মকতাকে ছাপিয়ে তোলে ভাবালুতাকেই। না তেমনই বা কেন বলব! কোন ভাবলেশ নেই এই জীবন খেলায়। যদি ভাবই থাকতো তবে তার জন্য অন্য রকম জীবন চলতো। গীত-গন্ধ-ছন্দ আর রমনীয় উন্মাদনায়। নিজের জন্মের বন্ধনে আগামীকে আলোকিত করার নির্মোহ আবেদন বুকে নিয়ে- বেঁচে থাকার আর বাঁচিয়ে রাখার জন্য কর্মযজ্ঞ রচনার সাধ হয়তো হতো না।
ড. ইসমতের স্ত্রী; নিজ গ্রামের নয় তবে নিজ অঞ্চলের মেয়ে। ড. ইসমতের স্ত্রী নয় ড. ইসমত’ই আমাদের উপজীব্য। তথাপি, এই অবসরে তার স্ত্রী কিছুটা আমাদের আসর ঘুরে যাক। এমবিএ শেষ করে দেশে ফিরেছে ড. ইসমত! তিনি এখনও ডক্টর পদবীতে ভূষিত হননি। তবুও তাকে আগামীর ডাকেই ডাকব। যে নামে তিনি বর্তমান। ফেলে যাওয়া কালো ব্যাগের একধাপ উপরে চাকরী না পেয়ে বেশ আর্থিক ও মন কষ্টে দিন যাপন করেছে ড. ইসমত। কারণ বিদেশে উপাজন করে পড়াশুনা করেছে। আগামীর জন্য পড়াশুনার ব্যবস্থা করেছে, পিআর এর আবেদন করেছে এবং স্বদেশী আর দশজন যা করে- আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু-বান্ধবের সহযোগিতা, ধার শোধরানো ইত্যাদি। তাই হাতের সাবলীলতা ক্রমশঃ ক্ষয়ীষ্ণু তখনই ড. ইসমত চোখে পড়ে একজন ধন্যাঢ ব্যবসায়ীর। কারণ বিদেশে পড়াশুনা করেছে ব্যবসা শিক্ষায়। খাঁচায় বন্দি করে তার ব্যবসার উন্নয়ন আশায় ধন্যাঢ ব্যবসায়ীর কন্যাই হয়ে উঠে ড. ইসমতের স্ত্রী। যদিও সেই আশায় গুড়ে বালি পড়ছে ড. ইসমতের স্ত্রী লোপার বাবার।
বিয়ের পরই আবার পাড়ি জমায় টেম্পস পাড়ে। ফেলে রাখা এ্যাংকরের সুতার টানে। আবার সেই জীবন পড়া আর কাজ। রাত ভোর করে দিন আর দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা। এমন করতে করতে তার জীবন চাকায় জন্ম নেয় অন্য রকম দিন। ভোর হয়ে সকাল দেখা দেয় তার জীবনে। সেই পুরানো চেইন সপের এখন রিজোনাল ম্যানেজার। এখন সে উন্নত দেশের একজন সম্মানীত ট্যাক্স পেয়ী। তার ফেলে আসা দিনের কষ্ট এখন সুখ স্মৃতিতে উপচে পড়ছে। লোপা এখন স্বামী বলতে পাগল; কারন তার স্বামী এখন তার অতীতকে হারমানিয়েছে। আবার ভ্রমর আসছে ফুলে বসন্তের আগমনে।
বাবার পেনশনের টাকা দিয়ে কালো ব্যাগের চাকরী ছেড়ে উচ্চতর শিক্ষার আশায় বিদেশে যায়। তারপর একটি ডিগ্রী অর্জন করে দেশে ফেরা; মাকে সার্থকতা নিয়ে বলা ‘আমি তোমার দেয়া বাবার পেনশনের টাকা নষ্ট করিনি-এই যে তার সার্টিফিকেট’ এবং লোপাকে বিয়ে করা। তার বাবা নেই তবে বাবা ডাক শুনে ভোর শুরু হয় প্রতিটি দিনের। এমন স্বাচ্ছন্দ জীবন ফেলে লোপা সহ দুই সন্তান নিয়ে হঠাৎ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন। লোপার ভাষ্য মতে ‘এই হলো ড. ইসমতের পাগলামী নেশা’।
নেশার তোড়ে দেশের টানে বা মা-বোনদের আদর-যত্নের আশায় ফিরে আসা! সে জানে জীবন চলে যায় জীবনের গতিতে তাকে শুধু মুঠিতে ধরে রাখতে হয় ইচ্ছে ও সাধ্যের মধ্যে। কিন্তু এই ধরে রাখার যুদ্ধ যে বড় কঠিন। সেই স্বাদ পায়- লোভে কি পাপে অথবা অযাচিত স্বপ্নের আস্বাদনে- দেশে এসে আবার জীবন শুরু করাতে। এমন তিক্ত দেশীয় অভিজ্ঞতার সঞ্চয় আগেই ছিল; যদিও তখন চাকরী প্রার্থী হিসেবে। আর এবার কর্ম যোগানদাতা হিসেবে। ত্যক্ততা আর ব্যর্থতা সাথে নিয়ে তাই তো ফিরে গিয়েছিল বছর আটেক আগে ভিন্নদেশে এবং এখন ভিন্নদেশী পাসপোর্টের অধিকারী হয়ে আবার জন্ম দেশে ফিরেছে। ফিরে চার বছর ধরে যুদ্ধ করছে আপন আলয়ে আপন কর্মযজ্ঞ রচনার। দেশে ও দেশের মানুষের কিছু করার জন্য। সে ইতিমধ্যে চিনে নিয়েছে অফিসপাড়া, সাধারণ মানুষ এবং সম্পর্কের ভিন্ন আঙ্গিক নতুন রূপে। যাদের সাহচর্যে আর প্রতিবেশে সে বড় হয়েছে, তারা, তার প্রতিদিনের চিন্তায় অন্যমাত্রা যোগ করেছে। সম্পর্ক গুলো ছেড়া ছেড়া মেঘের মতন ঘুড়ছে চারিদিকে। তবুও তার একাগ্রতাই সম্বল। কারণ বিদেশ বিভূইয়ে এরচেয়েও চরম কষ্টের দিন যাপন করেছে সে। সুপার সপের টলিতে করে মাল সাজানো থেকে ডিউটি অফিসার এবং দ্বিতীয় দফায় ডিউটি অফিসার থেকে রিজোনাল ম্যানেজার। তাই নিজ দেশে ফিরে কিছু করার আশায় দুপুরে অফিস পাড়ায় না খেতে পেয়ে কষ্ট পায়নি। এই গল্প সঞ্চয় করে রেখেছে জীবনের জন্য। তার সন্তানদের জন্য। আর যে তাকে দেশে ফিরতে মানা করেছিল, সেই ডাক্তার বন্ধুর জন্য। যে বলেছিল-‘তোর জন্য দেশ নয় বরং সোনালী দেশই তোর সোনার বাংলা ভাব’।
দেশকে ভালোবেসে তার স্বাচ্ছন্দ জীবন ছেড়ে কেন এসেছিল তার উত্তর প্রতি নিয়ত খুঁজে ফিরে তার চার পাশের মানুষ। অতপর চার বছর শেষে অনাকাঙ্খিত সব অশুভ দিনের শেষ হয়। মুক্তি আবর্তে জীবন শুরু হয়। একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা শুরু করে কিছু মানুষের চাকরীর যোগান দেয়। চিন্তার শিকল মুক্তি শেষে মনজগতে এখন নতুন চিন্তা আবার টেম্পস..........
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক জীবনের আবর্তে চমত্কার শব্দ চয়ন..একটু যত্নবান হলে আরো ভালো কিছু পাব আমরা..শুভ কামনা থাকলো...
নিরব নিশাচর গল্পটার আরো বিস্তৃতি প্রয়োজন ছিল বন্ধু.. আরো কিছু আবেগী বিষয় এবং দেশের চাল চরিত্র হয়ত ঢুকানো যেত.. যতটুকু লিখেছিস সেটাও অসাধারণ লাগলো... কবিতা কিংবা গল্পে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছিস.. দেখে ভালো লাগছে...
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ চমৎকার কথার শিল্প। আইডিয়াটাও বেশ ভালো। শুভেচ্ছা রইলো।
শেখ একেএম জাকারিয়া চমৎকার লিখেছেন গল্পটি ।শুভকামনা।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি Maner dik theke lekhati aktu agiye....sei jonno Ovike...suvo kamona......5
সালেহ মাহমুদ গল্পের ঘটনা সুন্দর, কিন্তু লেখায় কোন টার্ন নেই। কেবলমাত্র বর্ণনা লেখকের দৃষ্টিভঙ্গিতে। যদি পয়েন্ট অব ভিউটা ডঃ ইসমত সাহেবের দিকে টার্ন করা যেতো তাহলে মনে হয় গল্পটা আরো সুন্দর হতো। ধন্যবাদ অম্লান অভি।
মাহবুব খান অনেক ভালো /৫ দিলাম
মামুন ম. আজিজ যত্নের অভাব হয়েছে ভেতরে ভেতরে মনে হচ্ছে। সুন্দর ভাব আরেকটু গুছিয়ে লিখলেই চম]কা র হতে পারত। কাহিনী ভাল হয়েছে।
স্বাধীন চাকুরী স্ট্যাটাস জানি না বলে চিরুনী চালিয়ে "কালো ব্যাগের" চাকুরী র‍েঙ্ক ধরতে পারলাম না। আর মাঝখানে বড় গল্পের আদলে সময় (ঘটনার স্থান এবং সময়কাল ৪র্থ প্যারা) পরিবর্তনে গল্পের ধারাবাহিকতায় ও একটু সমস্যা হয়েছে। চমৎকার উপস্থাপনা।
দিগন্ত রেখা [মুক্তি আবর্তে জীবন শুরু হয়। একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা শুরু করে কিছু মানুষের চাকরীর যোগান দেয়।] ভালো লাগলো

১৩ সেপ্টেম্বর - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪