প্রতিদিন ইন্টারনেট ঘেটে বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারের খোঁজ করাটা আমার কাছে নেশার মতো দাড়িঁয়েছে।আজ একটা নিউজ দেখলাম প্রতিটি ব্লগে স্থান করে নিয়েছে।খবরটা খুব আশ্চর্যজনক।পুরো ব্যাপারটা বিজ্ঞানের দৃষ্টি সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। 'Science Vision'-এর Web Page এ গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারলাম।চিলির দক্ষিণে আনুকাঠ চিলোইদ্বীপে আশ্চর্য এক ফসিল পাওয়া গেছে।ফসিলের বয়স খুব বেশি নয়।আশ্চর্যের কারণ হল ফসিলের কোষ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এর প্রতিটি কোষে তিনটি নিউক্লিয়াস রয়েছে।যা কিনা পৃথিবীর প্রোক্যারিওটিক কিংবা ইউক্যারিওটিক কোন জীবেই দেখা যায় না।তাই বিজ্ঞানীরা এর নামকরণ করেছেন ত্রি.এ.এ.(তিন নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট প্রাণী)।সবচে' অদ্ভূত ব্যাপার হলো,প্রাণীটার আকৃতি সম্পূর্ণ মানুষের মতো।কয়েকজন আর্টিস্টের আকা কাল্পনিক কিছু ছবিও দেখতে পেলাম। নতুন আবিষ্কৃত ফসিলটা নিয়ে বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের শেষ নেই।একের পর এক মত আসছে এ নিয়ে।বর্তমানকালের সেরা বিজ্ঞানী রুশ নাগরিক বার্নার্ড ইভানোভস্কির একটা আর্টিকেল পড়ে শিহরিত হলাম।তিনি লিখেছেন, পৃথিবীর পাচশ কোটি বছরের ইতিহাসে বিবর্তনবাদ কিংবা প্রাকৃতিক জীন প্রকৌশলের ফলে এই ত্রি.এন.এ. প্রানীদের আগমন।কল্পনীয় হলেও ব্যাপারটা সত্য যে,এই তিন নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট প্রানীটা এখনো মানুষের ভিতর টিকে আছে ,দিব্যি মানুষের দলবুক্ত হয়ে।এই প্রানীগুলো এখনো যে টিকে আছে তা অনেক বিজ্ঞানীর কথাতে জানতে পারলাম।চিলির বিভিন্ন প্রদেশে খোঁজাখুজির কাজও শুরু হয়ে আছে। ০০০ ০০০ ০০০ ০০০ আমাদের কলেজে সব মেধাবী ছাত্ররা ভর্তি হলেও আচার আচরণে সম্পূর্ণ ভিন্ন এ রকম ছেলে খুঁজে পাওয়া মুস্কিল।আমাদের ক্লাসের তেমনি এক ছেলে রুশো।সবসময় খুব চুপচাপ থাকে আবার কথা বললেও অনেকটা যান্ত্রিক মনে হয়।তাছাড়া ওর গায়ের রংও আমাদের থেকে আলাদা।তামাটে শরীর হলদে ছাচ। প্রথম দিকে আমরা ওর সাথে না মিশলেও পরবর্তীতে আষ্তে আস্তে বন্ধুত্ব করে ফেলি।
রুশো আমাদের ভিতর জনপ্রিয় ছিল তার কিছু অদ্ভুত গুণের কারণে । মানুষের মনের কথা ও খটাস করে বলে দিতে পারত । তাই আমরা ওর সাথে কথা বলার সময় মুখের চেয়ে মনের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতাম বেশি । লিপ রিডিং-এ ওর তুলনা ছিল না। দূর থেকে ও ঠোঁট নড়াচড়া দেখেও বলে দিতে পারত কি কথা বলছে।
মেধার দিক দিয়েও যে রুশো কম ছিল তা কিন্তু নয়। একবার দেখলেই সবকিছু মনে রাখতে পারত । পড়ালেখায় ওকে কখনো আটকাতে দেখিনি।
আমাদের Zoology টিচার গাজী আকমল যিন ছিলেন খুব বুদ্ধিমান একজন টিচার। উনি মিনহাজকে প্রথম থেকেই কেমন জানি সন্দেহ করতেন। ত্রি.এন.এ. এর খবরটা প্রকাশ হওয়ার পর তার ধারণা আরো দৃঢ় হয়।
স্যার একদিন পড়া ধরার নাম করে রুশোকে ডেস্কে ডেকে নিলেন। তারপর বুদ্ধি করে রুমালের ভিতর ও কোষের কিছু অস্তিত্ব রেখে দিলেন। স্যারের পরিচিতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিস্টোলজি বিভাগের একজন টিচারের কাছে দিলেন সেই কোষ পরীক্ষা করার জন্য।
কিছুদিন পর অবাক করা এক তথ্য পাওয়া গেল, যা স্যার নিজেও বিশ্বাস করতে পারলেন না। ওর D.N.A.Structure মানুষের মত নয়। এমনকি অন্য কোন জীবিত প্রাণীর সাথেও মিলছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসররা উঠে পড়ে লাগলেন এই কোষ কার জানার জন্য। কিন্তু স্যার কিছুই প্রকাশ করলেন না। আজমল স্যারের এক সময় সখ ছিল বিজ্ঞানী হবার,কিন্তু নানা প্রিতকুলতার দরুণ তা আর হয়ে উঠেনি। স্যার ভাবলেন, বিজ্ঞানীদের কাতারে নাম লেখাবার এটাই একটা মোক্ষম সুযোগ। ত্রি.এন.এ. নিয়ে তিনি নিজেই গবেষণা করবেন বলে ঠিক করলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ এ ক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। স্যার দ্বিগুণ উৎসাহে গবেষণা শুরু করলেন।
স্যারের গবেষণায় নতুন নতুন সব তথ্য বের হতে লাগল। স্যার একদিন চুপিচুপি রুশোদের বাড়িতে গেলেন। ওদের বাড়িটাও দেখতে অনেকটা অদ্ভুত। পৃথিবীর কোন বাড়ির সাথে মিল নেই। অ্যালুমিনিয়ামের পাতের তৈরি খোপের মতো বাড়ি। স্যার অনেক চেষ্টা করে জানতে পারলেন, রুশোর কোন মা নেই। আর কখনো ছিল কিনা জানা গেল না। এ তথ্যটা স্যারকে খুব ভাবিয়ে তুলল।
গবেষণার জন্য মানুষ কত কিছুই না করে, তেমনি স্যারকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু কাজ করতে হলো। মিনহাজকে তিনি তার রুমে ডেকে পাঠালেন।শরীর চেকআপ করে ওর অবস্থা দেখে পুরো হতভম্ব হয়ে গেলেন। এই ত্রি.এন.এ. প্রাণীগুলো উভলিঙ্গ ! অর্থাৎ রুশোর মত একটা প্রাণী সন্তান উৎপাদনের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ। শুক্রানু আর ডিম্বানু একই শরীরে উৎপন্ন হয়।আকমল স্যারের এ আবিষ্কার বিজ্ঞানকে কী এগিয়ে দিল নাকি পিছিয়ে দিল তা ভাববার বিষয়।
স্যার গবেষণার কাজ মোটামুটি গুছিয়ে নিলেন।তবে তিনি নতুন একটা ভাবনায় পড়লেন,এই ত্রি.এন.এ. প্রাণীদের মানুষের গোত্রে ফেলবেন নাকি অন্য কোন নতুন গোত্র!!আচার ব্যবহার গঠন মানুষের মতো হলেও কোষের গঠন তো আর এক না!তাছাড়া D.N.A. Structure ও তো এক না!স্যার ভাবলেন অত আজগুবি চিন্তা করে লাভ নেই, গবেষনার ফলাফল আগে প্রকাশ হোক তারপর নতুন আরো অনেক কিছু বের হবে।
ইন্টারনেটে প্রকাশ হলো আকমল স্যারের গবেষনার ফল।স্যারের এই আশ্চর্য প্রতিবেদনটা আমাদের সবাইকে অবাক করল,কারণ আমরা এর কিছুই জানতাম না।তাছাড়া সারা পৃথিবী তোলপাড় করলো এই একটা প্রতিবেদন!আর এই প্রতিবেদনের জন্য আজমল স্যার বনে গেলেন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ট বিজ্ঞানীদের একজন।
নানা দেশের বিজ্ঞানীরা রুশোকে পাওয়ার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে রাজি হল।অনেক চিড়িয়াখানাও এ ব্যাপারে খুব আগ্রহ দেখাল।ঢাকা চিড়িয়াখানা দাবি করল এই প্রাণীটা যেহেতু বাংলাদেশেই পাওয়া গেছে তাই এটা এই চিড়িয়াখানাতেই স্থান পাওয়া উচিত ।
এদিকে স্যারের প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর থেকে রুশোও উধাও । কোথায় গেছে কেউ তার কোন হদিশ দিতে পারল না! আমরা স্যারের সাথে ওর বাড়িতে গিয়েছিলাম কিন্তু বাড়িশুদ্ধ উধাও।
ও উধাও হয়েছে দেখে আমরা অন্তত শান্তি পেলাম। কারণ ওকে পেলে হয়তো এ যুগের মানুষ গবেষনাগারের গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করতো। রুশোর উধাও হওয়ার গঠনায় স্যারের মুখে শুধু হাসি দেখলাম,কিন্তু তার মানে বুঝা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।ত্রি.এন.এ.-কে না পাওয়ার দুঃখ হয়তো পৃথিবীর থেকে যাবে কিন্তু আমাদের থাকবে না। আমাদের কামনা যেখানেই থাকো ত্রি.এন.এ. রুশো ভাল থেকো,আর আমাদের মনে রেখো......।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিন আরফান.
এসব আমি বুঝি কম. পড়তে যেয়ে বার বার ফেলেছি দম. অনেক সাধনা আর গবেষণা করেছেন. কিন্তু উদ্ভট মনে হলো আমারে নিকট. চমক যেরূপ দেয়ার কথা সেটা পাইনি. তবে চেষ্টা চমত্কার. তারপরেও খুব ভালো লাগলো. একটু ভিন্নতাতো পেলাম. শুভ কামনা রইল. চেষ্টা চালিয়ে যান.
নিরব নিশাচর
................. বলা যায় যে ভালই লিখেছ... তবে ৫/৫ দিতে পারলাম না ভাইয়া ... কারণ, হাত থেকে এমেচার ভাবটা যায় নি... আরেকটা কথা বলি বোকা ছেলে - আহমেদ মুকুল ভাই কিন্তু সায়েন্স ফিকশন এর একজন দারুন লেখক... তাকে সাই-ফাই বুঝাতে যেও না... তোমাকে ছোট ভাই হিসেবে কথা বললাম, ভালো থেকো...
তানভীর আহমেদ
খুব ভালো লাগল গল্পটি। নামে বিভ্রাট লাগিয়েছেন রুশোকে মিনহাজ বলে, আবার আকমল সাহেবকে আজমল সাহেব বলে। গল্পটা আরো প্রাঞ্জল হতো যদি বর্ণনাভঙ্গিতে ডায়লগ যোগ করা হতো। আপনার আরো আরো লেখার প্রত্যাশায় থাকলাম।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।