রাত ৩টায় ঢাকা মহানগরীর আবাসিক, অনাবাসিক এলাকার বাসিন্দারা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, আলো-আঁধারের আবছায়ায় চঞ্চলা শহর আলু-থালু বসনে নিদ্রামগ্ন, কারওয়ান বাজারের পাইকারি আড়তে তখন অন্য এক দৃশ্য।
শত শত মালবোঝাই ট্রাক দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসে এক সারিতে দাঁড়িয়ে খালাসের অপেক্ষায়। চাল, ডাল, আলু, বেগুন, পটোল, করলা চিচিঙ্গা, কাঁচামরিচ, শসা ইত্যাদি হরেকরকম পসরার বোঝা পিঠে নিয়ে ট্রাকগুলো দণ্ডায়মাণ।
আড়তদারের জিম্মায় মালগুলো পৌঁছে দিতে পাইকার, ফরিয়া কুলি-মজুররা যখন দৌড়াদৌড়িতে ব্যস্ত, তখনই সুযোগ পেয়ে একদল ভাসমান ছেলেমেয়ে ট্রাকের চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ওদের সংখ্যা শত শত হলেও ওরা এমনভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে যেন কারুর নজরে না পড়ে।
একদল ট্রাকের উপরে উঠে যায়, একদল ট্রাকের তলায় লুকিয়ে থাকে, একদল ট্রাকের চতুর্দিকে ঘুরঘুর করতে থাকে। সবার একই উদ্দেশ্য চুরি করে হোক, আর কুড়িয়ে হোক, কিছু পণ্য জোগাড় করা যা বিক্রি করে একদিনের উদরপূর্তির ব্যবস্থা করা।
ওরা চোর নয়, শবালী, আসল পেশা ট্রাকগুলোর পরিত্যক্ত, পচা-বাসি, চাল-ডাল, তরি-তরকারি কুড়িয়ে জীবন ধারণ করা। কিন্তু সুযোগ পেলে ওরা দু’চার-দশ টাকার পণ্য চুরি করতেও ছাড়ে না। সেজন্য যে শাস্তি পেতে হয় তা অবিশ্বাস্য, বর্বর ও অমানবিক।
চার সন্তানের জন্মদাত্রী আলেয়া বেগুনবাড়ির বস্তিতে থাকত। স্বামী ছিল ট্রাকচালক। আয়-রোজগার ভালোই ছিল। মাছ-মাংসের অভাব ছিল না সংসারে। হঠাৎ করে দুর্ঘটনায় স্বামী মারা গেলে আলেয়া বেগম পথে বসে।
ট্রাকচালক স্বামী যা আয় করত সবটুকু খাওয়া-দাওয়ায়, কাপড়-চোপড়ে ব্যয় করত, একটি পয়সাও সঞ্চয় রেখে যায়নি। বাধ্য হয়ে আলেয়া কারওয়ান বাজারের ফুটপাতে আশ্রয় নেয় এবং বাচ্চাগুলোকে পণ্য কুড়ানোর কাজে লাগায়।
সে দিন সন্ধ্যা থেকেই বৃষ্টি নেমেছিল। আষাঢ় মাসের বৃষ্টি একবার নামলে নেশার মতো ঝরতেই থাকে। রাত ১০টা নাগাদ বৃষ্টি থামলেও রাজপথে হাঁটু পানি জমেছে। ফুটপাতে পানি উঠেনি, কিন্তু আলেয়ার পলিথিনের ছাউনি বৃষ্টির ভার বইতে না পেরে নেতিয়ে পড়েছিল।
তাতে পানিতে ভিজে গিয়েছে ওদের একমাত্র সম্বল ধূলি-ময়লায়-ভরা রঙচটা বালিশ আর চাদর, নিরুপায় আলেয়া তাই সে রাতে আশ্রয় নিয়েছিল চোর-চামার-সন্ত্রাসীর আড্ডাখানা সেই জনতা টাওয়ারে। ঝুপড়ির চাল হিসেবে ব্যবহৃত পলিথিনটাকে ভাঁজ করে ভেতরে ভেজা চাদর ভরে বালিশ বানিয়ে চার বাচ্চা আর মা শুয়ার জোগাড় করল।
সিমেন্টের মেঝেতে বালি, আবর্জনায় ভরে আছে, কিন্তু বাচ্চাগুলোর অভ্যাস সন্ধ্যায় শুয়ে পড়া, আজ তিন ঘণ্টা বিলম্ব হয়ে গেছে, তদুপরি বৃষ্টিস্নাত শীতল বাতাস হু হু করে জানালাবিহীন হলে প্রবেশ করে চোখের পাতাকে জোর করে বন্ধ করে দিচ্ছে। নিমেষেই বাচ্চাগুলো ঘুমে আচ্ছন্ন হল।
আলেয়ারও চোখ বন্ধ হওয়ার কথা। কিন্তু নতুন জায়গা, বাজে লোকদের আড্ডাখানা, ঘুমিয়ে পড়লে কখন কোন চোর-চামার-সন্ত্রাসী মেয়েগুলোর ওপর চড়াও হয় সে আশংকায় তার ঘুম আসছিল না। কিন্তু সারাদিনের খাটুনির পর কতণ নির্ঘুম কাটানো যায়, শেষে আলেয়াও ঘুমিয়ে পড়ল।
মহানগরীর অধিকাংশ কাজ শুরু করে ভোরে অথবা সকালে আর রাত ২টায় কারওয়ান বাজারের সবজি ব্যবসায়ীরা কাজ শুরু করে রাত ২টায় দৈত্য মার্কা দশটনি ট্রাকগুলো দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে মধ্যরাতে শহরে পৌঁছে এবং কারওয়ান বাজারে লাইন দিয়ে দাঁড়ায়।
ট্রাকের হর্ন ও চলার শব্দে কারওয়ান বাজারের সবজি ব্যবসায়ী, ফরিয়া, দালাল, ভ্যানচালক, মিনতি, আর ভাসমান ছেলেমেয়ে, স্বামী পরিত্যক্ত মহিলা, ভিক্ষুক, দেহ পসারিনী ইত্যাকার পেশাধারীরা। ট্রাকের আগমন শব্দ বাজারে নতুন আনন্দ রেশের সৃষ্টি করে, শুরু হয় হাঁকডাক, হইচই, চিলাচিলি, যেন কোন উৎসবের সমারোহ।
ওই সময় মা’র স্তন্যপায়ী বাচ্চা ছাড়া একটি প্রাণীও নিদ্রামগ্ন থাকে না, সবাই রাস্তায় নেমে পড়ে। এমনকি রাস্তার অপোষা কুকুরগুলোও হইচই-এর সঙ্গে একাত্নতা দেখিয়ে এদিক-ওদিক দৌড়াতে থাকে। আলেয়ার রগড়ানোরত ছেলেমেয়েগুলো অন্যান্য রাতের মতো হাতে পলিথিনের ব্যাগ নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ল।
আলেয়া ওদের নাশতার জোগাড় করতে ব্যস্ত। অন্ধকার নয়, আলো-আঁধারের মিশ্রণে রাস্তার বাতির সহায়তায় যে পরিবেশ সৃষ্টি হয় কবি-সাহিত্যিকরা এ পরিবেশে প্রকৃতির রূপ দেখে ভাবুক হয়ে ওঠেন। কিন্তু কারওয়ান বাজার তখন উদরপূর্তির প্রয়াসে প্রায় ৪০০ ছেলেমেয়ে, পুরুষ-মহিলা সবজি-পরিবহনকারী ট্রাকগুলোর ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
হঠাৎ একটি জটলার ভেতর থেকে কান্নার আওয়াজ শুনা গেল। ১২ বছরের মেয়েটি কেঁদে কেঁদে বলছে ‘আমি চুরি করিনি, আমি কুড়াচ্ছিলাম’। কিন্তু যারা ওর বাহু ধরে, চুল ধরে, পরনের জামা টেনে তাকে নিগৃহিত করছিল সেই উঠতি বয়সের ছেলেগুলো ওকে টেনেহেঁচড়ে একটি অপোকৃত অন্ধকার স্থানে নিয়ে গেল।
মেয়েটির চিৎকার তখন ক্ষীণ হয়ে আসছে। শরীরের লোভে ওরা মেয়েটিকে নিয়ে গেলেও কিছুক্ষণ উত্ত্যক্ত করে ছেড়ে দিল। মেয়েটি ছাড়া পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এসে গালি দিতে লাগল ‘খানকির পোলারা, তোদের ঘরে মা-বোন নাই’ আর ওদের উদ্দেশ্যে থুথুর দলা ফেলতে লাগল।
ঘটনা শুনে আলেয়াও ছুটে এসেছে, ভাগ্যিস তার মেয়েরা ধরা পড়েনি। প্রায় আধা ঘণ্টা পর আবার চিৎকারের আওয়াজ। এবার ছেলে কণ্ঠ। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, একটি ১০ বছরের ছেলেকে এক সবজি বেপারি পিটাচ্ছে, ভয়ার্ত ছেলেটি ছাড়া পেতে চিৎকার করছে, বস্তা থেকে সবজি চুরি করার সময় হাতে-নাতে ছেলেটি ধরা পড়ে।
আলেয়া আবার স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল, তার ছেলেমেয়ে ধরা পড়েনি। রাত দুপুর থেকে ভোর পর্যন্ত কারওয়ান বাজারে অসংখ্য ঘটনা ঘটে। একদল ছেলেমেয়ে আছে যারা ট্রাকের উপরে উঠে বস্তা কেটে নিচে সবজি ফেলে দেয়, আর একদল নিচে থেকে কুড়িয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেয়।
পরে ওরা ভাগাভাগি করে ওগুলো বেচে। ট্রাকের উপরে চড়া সদস্যদের বিপদ অধিক, ধরা পড়লে পালাতে কষ্ট, অনেক সময় লাফ দিয়ে মাটিতে পড়ে পা ভাঙে। নিচে থাকা সদস্যরা সহজেই পালিয়ে যায়। কিন্তু যারাই ধরা পড়ে তাদের অদৃষ্ট মন্দ।
বেপারিরা এদের এমনভাবে পিটায়, বেচারারা পরের কয়েকদিন বাজারে আসতে পারে না, তাই উপোস দিতে হয়। তাই বেপারিদের অবিচারের বিরুদ্ধে ওরা সোচ্চার হতে চায়। চুরি করে মাত্র ১ কেজি থেকে ২ কেজি সবজি প্রত্যেকের ভাগে আসে, যা বিক্রি করে একবেলার খাবার জোটে, অথচ বেপারিদের সামান্যই ক্ষতি হয়।
জনতা টাওয়ার নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশে এমনিতেই আলেয়ার নির্ঘুম শরীর, তদুপরি মানসিক চাপ, বাচ্চাগুলো কখন বেপারিদের হাতে ধরা পড়ে। ইচ্ছার বিরুদ্ধেও ওদের চুরি করতে বারণ করেনি, কারণ চুরি না করলে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে যেটুকু তরি-তরকারি জোগাড় হবে, তা দিয়ে নিজেদের খাওয়াই চলবে না, বিক্রি করা তো দূরের কথা।
নাশতা বানাতে গিয়ে আলেয়ার হাত-পা অবলীলায় বন্ধ হয়ে যায়, কখন বাচ্চাগুলো বিশেষ করে মেয়ে দুটি চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে, ধরলে তো লুচ্চাগুলো মেয়েদের শরীর নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করে। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় এখন পর্যন্ত নাবালক মেয়ে দুটি ধরা পড়েনি।
কারওয়ান বাজারের রাতগুলো যেন দৈত্যের মতো, যেমন ভয়ংকর, তেমনি অসহ্য, অবাঞ্চিত। শেষ রাত এলেই আলেয়ার মানসিক চাপ বেড়ে যায়, তাই কোন কোন রাতে সে মেয়ে দুটিকে ঝুপড়িতে রেখে নিজেই সবজি কুড়াতে বের হয়ে যায়।
তাতেও দুঃশ্চিন্তা কমে না, লুচ্চাগুলো ঝুপড়িতে ঢুকেও মেয়েদের সর্বনাশ করতে পারে। হঠাৎ একটা হট্টগোলের আওয়াজে আলেয়ার চিন্তায় ছেদ পড়ল। রাস্তায় আবার জটলা বেধেছে। এগিয়ে গিয়ে দেখল কিছু জোয়ান ছেলে ও মধ্য বয়সী পুরুষ দু’জন মেয়েলোককে হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
বুঝা গেল, ওরা চুরিতে ধরা পড়েছে। ‘মেয়েলোককে ধরতে তোদের লজ্জা করে না, তোদের কত টাকার মাল চুরি করেছি বলত?’ মেয়েলোক দুটি প্রশ্ন করল। উত্তরে পুরুষদের একজন বলল, ‘কত টাকার মাল চুরি করেছিস সেটা বিষয় নয়, বিষয় হল চুরিতে ধরা পড়েছিস শাস্তি পেতে হবে’।
শাস্তি যে কি, তা ভিড়ের লোকরা সবাই জানে। রাতের কারওয়ান বাজারে আইন-কানুন নেই, পুলিশ নেই, বেপারিদের সিদ্ধান্তই আইন। অন্য মেয়েলোকটি তখন বলে উঠল- ‘ঠিক আছে, আমরা চুরি করেছি জেল দে, তোদের ইচ্ছামতো শাস্তি দিতে পারবি না, শরীর বেচলে তো আমরা হাজার টাকা এমনিতেই কামাই করতে পারি, তোদের দু’পয়সার সবজি চুরি করব কেন’।
মোম যুক্তি, ভিড়ের মধ্যে অনেকেই তার যুক্তিতে সায় দিল, কারণ বেপারিরা অন্যায়ভাবে এতদিন চুরির অজুহাতে মেয়েদের উত্ত্যক্ত এমনকি ভোগ করে আসছিল। এবার বেপারিরা মেয়েলোক দুটিকে আর ধরে রাখতে পারল না, একটা শাসানি দিয়ে ছেড়ে দিল।
এসব ঘটনা দেখে আলেয়ার দুঃশ্চিন্তা আরও বাড়ল। ছেলেমেয়েরা তখনও ফেরেনি। কালো রাতটাও শেষ হচ্ছে না। দৈত্য মার্কা ট্রাকগুলো গর্জন করে এখনও লাইন দিয়ে দাঁড়াচ্ছে আর মিনতি, ভ্যানগাড়িওয়ালা, বেপারিরা হুমড়ি খেয়ে ট্রাকের ওপর পড়ছে।
আলেয়া তার বরাদ্দ এক চিলতে জায়গায় ফিরে গেল। জানালাবিহীন দেয়ালের ফাঁক দিয়ে হু হু করে শীতল বাতাস আসছিল, গরিবের জন্য বিনা পয়সার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হাওয়া। আরামে আলেয়ার তন্দ্রা আসছিল।
তন্দ্রাচ্ছন্ন আলেয়া হঠাৎ হট্টগোলে ভড়কে গিয়ে ওঠে দাঁড়াল। সামনেই রাস্তার জটলা বাধা পুরুষগুলো তার দু’মেয়েকে ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সবগুলো উঠতি বয়সের যুবক, মনে হচ্ছে এরা মিনতি, ভ্যানওয়ালা, ফরিয়া-দালাল গোছের। কচি মেয়ে দুটিকে হাতে-নাতে ধরতে পেরে ওদের উচ্ছ্বাস ও লালসা উতলে উঠেছে।
শাস্তি হিসেবে ওরা মেয়ে দুটিকে উত্ত্যক্ত করছে আর মেয়ে দুটি কাঁদছে। সর্বশেষ শাস্তি দেয়ার জন্য ওরা মেয়ে দুটিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে। আলেয়া ত্বরিৎগতিতে রাস্তায় নেমে জটলার মাঝখানে পৌঁছল।
‘দাঁড়াও, এরা আমার মেয়ে, এদের শাস্তি দিও না, এরা নির্দোষ, আমিই পেটের দায়ে মেয়েদের সবজি চুরি করতে বলেছি, যা শাস্তি দিতে চাও, আমাকে দাও’ বলেই আলেয়া মেয়ে দুটিকে ছেলেদের হাত থেকে ছাড়িয়ে জড়িয়ে ধরল।
এ রকম আকস্মিক ঘটনায় জটলা গতিহীন হয়ে গেল, জোয়ান ছেলেরা নিরুৎসাহিত হল। এমনটা ওরা আশা করেনি। ওরা শিকার হাতছাড়া করতে চাইল না, আলেয়াও মেয়ে দুটিকে ছাড়বে না। দুর্ভাগ্যক্রমে তখনই বিদ্যুতের লোডশেডিং শুরু হয়। ছেলেরা জানে লোডশেডিং কমপক্ষে এক ঘণ্টা চলবে।
এ সুযোগে ওরা আলেয়াকে ধাক্কা মেরে মেয়ে দুটিকে টেনে-হেঁচড়ে গন্তব্যের দিকে ছুটল। আলেয়া মেয়েদের চিৎকার অনুসরণ করে পাগলিনীর মতো ছুটছিল, কিন্তু অন্ধকারে শরীরের টাল সামলাতে না পেরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের গায়ে জোরে ধাক্কা খেল।
তার মাথায় আঘাত লাগাতে সে সংজ্ঞা হারাল। ভোরের আলো দেখা দিলে জনতা টাওয়ারের নিবাসীরা আলেয়ার চোখে-মুখে পানি ছিটিয়ে সংজ্ঞা ফিরিয়ে আনলে আলেয়া আবার পাগলের মতো অপহৃত মেয়েদের খুঁজতে লাগল।
সে মুহূর্তে কে একজন খবর দিল যে, আলেয়ার ছেলেমেয়েরা তাদের এক চিলতে জায়গায় জড়াজড়ি করে শুয়ে আছে। রাতের অনিদ্রা পুষিয়ে নিতে ওরা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। আলেয়া ওদের না জাগিয়ে নিজেও এক পাশে শুয়ে পড়ল।
দুপুরে সবার ঘুম ভাঙলে নিত্যদিনের মতো মেয়ে দুটি মা’র কাছে খাবার চাইল, রাতের দুর্ঘটনা নিয়ে নালিশ বা অভিযোগ কিছুই জানাল না, যেন এ রকম শাস্তি ওদের গা-সওয়া হয়ে গেছে। এ মুহূর্তে ক্ষুধার জ্বালাই তাদের কাছে মুখ্য বিষয়।