দুঃস্বপ্নবিলাস

আমার স্বপ্ন (ডিসেম্বর ২০১৬)

জলধারা মোহনা
  • ১৩
  • ২৯
মৃতদেহগুলো চক্রাকারে সাজানো, যেন কেউ খুব যত্ন করে আল্পনা এঁকেছে। কি ভয়াবহ পৈশাচিকতা! চক্রের ঠিক মাঝখানে আমি দাঁড়িয়ে.. আতঙ্কিত? একদম না! আমার পায়ের কাছে চিৎ হয়ে পড়ে থাকা জানোয়ারটা মানুষের মত দেখতে, তার চোখে তীব্র ভয়। অমানবিক একটা আতঙ্ক নিয়ে সে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি সজোরে তার হৃদপিন্ডে ধারালো কি যেন একটা ঢুকিয়ে দিলাম। গলগল করে লাল রক্তে ভিজে যেতে লাগলো সে। আর আমি আজন্ম তৃপ্তি নিয়ে দেখতে থাকলাম কি করে তার বিস্ফারিত চোখ একটু একটু করে পুরোটা দখলে নিয়ে নিলো মৃত্যু......
তীব্র পিপাসা নিয়ে ঘুম ভেঙ্গে গেলো আমার। গায়ে পানি ছিটে আসছে জানালা দিয়ে.. বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। আর এই মধ্যরাতের শীতলতার মাঝেও আমি ঘেমে ভিজে গেছি। উঠে জানালা বন্ধ করতে করতে ভাবলাম স্বপ্নটার কথা.. কেন এমন একটা ভয়ংকর দুঃস্বপ্নের মাঝে আমি আনন্দিত ছিলাম, যেন ওটাই আমার আসল রূপ। আর চারপাশের চক্রাকার লাশের শিল্পকর্মটাও আমারই করা। শিল্পকর্ম! এই শব্দটাই বা কেন আমার মাথায় আসলো..ছি ছি ছি! আচ্ছা, আমার মাথাটা কি খারাপ হয়ে যাচ্ছে? প্রায় প্রতিটা রাতেই বিভিন্ন পরিস্থিতিতে অসংখ্য মৃতদেহ নিয়ে কোন সাধারণ মেয়ে স্বপ্ন দেখে.. তাও আবার স্বপ্নগুলোর প্রত্যেটিতে খুনি সে নিজেই!
কফির কাপে চুমুক দিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে সকাল হতে দেখা আমার পুরনো অভ্যেস। এইটুকু সময় আমার একার জন্যে বরাদ্দ। কত কি ভাবি এলোমেলো.. আজও ভাবছিলাম। আচ্ছা, সত্যি সত্যি না হোক.. এমনি এমনি তো ভাবতেই পারি খুনটা কাকে করা যায়? কে হবে সেই সুযোগ্য প্রার্থী! বিলাস নামের অসভ্য ছেলেটা, যে কিনা কোন মেয়ে রাস্তা দিয়ে গেলেই বাজে সব মন্তব্য করে আর গা ঘেষে হেটে যায়? নাকি পাশের বাড়ির মধ্যবয়স্ক আনু আংকেল, যিনি সেদিনও বাচ্চা মেয়ে রুনিকে কাছে নিয়ে বিশ্রীভাবে আদর করছিলেন আর রুনি জোর করে ছটফটিয়ে দৌড়িয়ে আমার কাছে চলে এসেছিল? নাহ.. কঠিন সিদ্ধান্ত, আরো ভাবতে হবে! হাসি পেলো তারপর। মাথাটা কি পুরোই গেলো তাহলে আমার!
কফি শেষ.. ঘরে চলে এলাম। এলোমেলো বিছানা ঠিক করতে গিয়ে বালিশের তলায় হাত দিয়েই স্থির হয়ে গেলাম, জিনিষটা কি আমিই রেখেছিলাম এখানে? কিন্তু কখন আনলাম, কখন রাখলাম.. কিছুই মনে পড়ছেনা। গতমাসে বাবা বাইরে থেকে এনে দিয়েছিল এটা। পুরানো দিনের মত পিতলের বাটে নকশা করা ধারালো ছুরিটা আমার ভীষণ শখের!
আজ আবারো হল.. এই নিয়ে কতগুলো রাত খুনে দুঃস্বপ্ন দেখে চলেছি? সেই হিসেব এখন আর নেই... অসংখ্য রাত! জানালার ফাক গলে একরাশ জোছনা এসে ঘর আলো করে দিয়েছে। বালিশের তলা হাতড়ালাম... আহ! শান্তি! নেই ছুরিটা! ওপাশ ফিরে আরাম করে শুয়ে ঘুমিয়ে গেলাম একনিমেষে। আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরের বিশাল ডাস্টবিনে তখন ঠিক আমারই মতন নিশ্চিন্তে শুয়ে আমার প্রিয় ছুরিটা... জোছনায় ঠিক বোঝা যাচ্ছেনা ছুরিতে লেগে থাকা কালচে পদার্থের স্বরূপ!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফেরদৌস আলম অনেক দিন ধরে লেখা পাচ্ছিনা । সামনে হয়তো পাব।
এম এ রউফ বেশ লাগলো। শুভকামনা...
মুহাম্মাদ লুকমান রাকীব গল্প ভালো লাগলো। শুভ কামনা
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,ভোট রেখে গেলাম।আমার কবিতা পড়ার আমন্ত্রন রইল।
ধন্যবাদ.. আমন্ত্রণ গ্রহণ করলাম
জয় শর্মা (আকিঞ্চন) অনুগল্প হলেও বেশ দারুণ অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ মনে হল। ধারালো ছুড়িটার মত- ধারালো লেখা। ভোট আর শুভকামনা।
দারুণ বলেছেন তো.. অনেক ধন্যবাদ ☺
আহা রুবন আমার কাছে গল্পটা বেশ লাগল। পড়তে পড়তে ভাবতে হয়। শুভেচ্ছা।
তাই রুবনদা? অনেক ধন্যবাদ ☺
Fahmida Bari Bipu Besh likheso mohona. Rohosso ta golpo tike mohima diyese. Ebar bujhi golpo teo vag boshab? ;)
গল্পতে ভাগ বসাবো? কি যে মজা করেন না আপু.. আমার এইসব অনুগল্প আবার গল্প হল নাকি? হা হা :D আর আপনাদের গল্পগুলো... উফফ, কখন যে কোন রাজ্যে নিয়ে যায়.. দারুন সব কাহিনি আর উত্তেজনায় নখ কামড়ানো :p আমি কবিতার মানুষ বরাবরই.. শখ করে একটু আধটু চেষ্টা করি গল্প লিখবার ☺

১৪ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪