তাং ৬-৪-২০১১
বুধবার/ আবুধাবী/ ২:৩৪ মিনি
খোকার উড়ন্ত চিঠি ,
প্রাপক , জান্নাত বাসী মা !---
মা !--- প্রতিটি নিশির নিদ্রা যাপনের আগে প্রভুর স্মরণের পর ,ধরণীর স্মরণে তোমায় রচনা করি । কখনো মনে হয় মুলতানের উঠানের ধারে বসে আছ আমার পাশে । কখনো আবেগ ঘন অশ্রুত প্লাবনের জোয়ারে ঢেউ খেলে তোমার অন্তিম স্নেহত্বের অপূর্ণতা । তোমার মর্মত্ব তোমার আচলের ছোঁয়ার বন্ধন ছৌচির, রৌদ্রতার মত , বিন্দু বিন্দু ফোটা আমার বিশ্বকে কড়া তাপে জাগিয়ে দেয় ।
সেদিন আকাশের ঘনীভূত আলোড়ন ভিরো ভিরো বাদলের অবারিত বর্ষণ । ঘরে আহার বলতে কিছুই নেই, কোথাও ধার চেয়ে একশটা টাকা না পেয়ে যখন ঘরে নীরব হয়ে বসে আছি । সংসারের সবাই যখন আমার দিকে তাকিয়ে রহিল পেটের ক্ষুধা মেটানোর আশায় ,তখন অশ্রুতে যেন আমার বুকের ভেতর পৃথিবীতে বন্যা বয়ে তলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অসহায় মানুষের সমস্ত সুখ । আমি কাহারো মুখের দিকে তাকাতেই পারছিনা । ভাই , বোন আর বাবার কাছ হতে আড়ালে লুকিয়ে থাকি । নিস্তবতা মন , কেউ যদি বলে উপবাসের যাতন আর সহ্য হচ্ছেনা । তুমি বিশ্বাস কর মা ! সেদিন বার বার আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছি আর কাদঁছি , আর আবেগের বন্যার কাছে বলছি এই দিন তুমি যদি পাশে থাকতে মা ! তাহলে আমাদের সবাইকে তোমার আচঁলে লুকিয়ে রেখে অবশ্যই তোমার মমতার সান্তনা দিতে । যা আমি তোমার সন্তান হয়ে দিতে পারিনি । তারপর হতে সংসারের সংগ্রামে নেমেছি । আজ আমার অনেক ধন , সম্পদ, হয়েছে প্রতিপত্তি হয়েছে , তবে আবেগ অপূর্ণতায় আমার চেয়ে পৃথিবীর অন্য কেউ মায়ের ছিন্নআচঁেলর ভুক্ত ভোগী আছে কিনা আমার জানা নেই ।
মা !---- পাঁচ বৎসর কর্ম জীবনের পারবাস হয়ে গেল এখনো স্বদেশের মুখ আমি দেখিনি ,শুধু মাত্র সংসারের খাতিরে । তবে একদিনের জন্যও দেশের মাটির কণা আর তোমার অনাবিল উচ্ছল মুখের হাসি বুলতে পারিনি । (প্রিয় পাঠক , এ চিরন্তন সত্য যে, জীবনের বস্তবতা যেখানে ছায়ারপ্রতিবিম্ব বা এত দুষর্বিহ, করুনাময়, সেখানে কাল্পনিক জীবনের মানেই,খঁজবই বা কি ?) । যেখানে প্রতিনিশির অশ্রুধৌত অনাবিত সংগ্রাম সে আনুসাঙ্গিক অসহায় মায়ের অপূর্ণতা আমাকে গভীরত্বে গ্রাস করে মম পিণ্ড উড়াল দিয়ে ছুটে যেতে চাই ঐ নিরুপায় মায়ের দোয়ারে । পুত্র তাহার কত সুখের সোনার পালংকে ঘুমায় , অথচ মা কোথায় কোন বৃদ্ধাশ্রমে সে হয়ত জানেনা । তবে জানিা মা !---
এ বাণি আমার বোধগম্য হবে কিনা । সে এমন মায়ের করুন বাস্তবতা দেখে নিশিতে চমকে উঠেছি ,আর নিরবে নিরবে কেঁদেছি । নিজেকে বড্ড বেশি রচন করেছি ,সেদিন প্রভুর কাছে পার্থনা করেছিলাম জীবনের যুগ্যতার সঞ্চয় এক অনা,এক পয়সা দিও প্রভু ,তাতে আমার কোনো দুঃখ নাই ,সেই এক পয়সা যেন আমি আমার সংসারকে সুখে রাখতে পারি ।
মা ! ----
সত্যিই - -- আজ সংসার আমার অনেক সুখী, কিন্তু এ সুখ তুমি ছাড়া সুখের মনে হয়না। তাই এই অশ্রু জড়া উড়ন্ত চিঠি । তুমি নিরবে একান্তে পড়িও আর এ সুখের অনুভতি অনুভব করিও । তোমার ছোট্র ওবাইদুল আজ অনেক বড় হয়েছে , অনকে কিছু বুঝতে শিখেছে ,অনেক অসহায় মাকে সাহায্য করেছে ।শুধু টাকা দিয়ে নয় ,কখনো নিজেকে তাদের সেবায় নিয়োজিত রেখে , কখনো তাদের চুখে অশ্রু দেখে আমার চুখের অশ্রু জড়িয়ে সান্তনা দিয়েছিলাম ।
মা ! --- আমার আজো মনে পড়ে, সেদিন তুমি গৃহের কোনায় বসে কেদেঁছিলে , বাবা টাকার অভাবে একটা নতুন শাড়ি কিনে আনতে পারেনি । তখন আমি ছোট তারপরও সবকিছু বুঝতাম । অতচ আজ আমি হাজারো শাড়ি দিয়ে তোমায় পূর্ণ করতে পারি , সে এক ভরি স্বর্ণের অভাব তোমার চুখে মুখে আমি দেখেছিলাম মা । অথচ ভাগ্য আমার অসহায় নিরুপায় । সেই আজকের এই দিন আমার বড়ই মর্মান্তিক বড়ই কাল্পনিক ।
মা! --- যেদিন তুমি স্বপ্ন দেখেছিলে সেদিন বাস্তব আসেনী , আজ বাস্তবে এসে দাড়িয়েছি স্বপ্ন স্বাদের ছোঁয়া মিলেনি । তাই আবেগের অশ্রু ঝড়া নিশির এই উড়ন্ত চিঠি । তুমি পড়িও মা ! তুমি অবশ্যই পড়িও \\
ইতি তোমার বেদনাময়ী সন্তান // ওবাইদুল \\
৩১ জানুয়ারী - ২০১১
গল্প/কবিতা:
২৭ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪