ব র্ষা তার নাম। দশ বছরের ফুটোন্ত বালিকা। ফুটফুটে পরীর বাচ্চার মত দেখতে। প্রথম দেখেই ভাল লেগে গেল।
আমি বললাম কি খুকী কেমান আছো। আমাকে খুকী বলবেন না। তাহলে তোমাকে কি বলব বুড়ী না আমাকে বড়ুী বলবেন না তাহলে কি বলব খালা না আমাকে খালাও বলবেন না তাহলে কিছুই না বলে ছুটি পালিয়ে গেল। মেয়েটি সম্পর্কে আমার ভাইয়ের শালী। চাচাত ভাইয়ের মামাত শালী। আমার বয়স কত হবে ১৪/১৫ গাইবান্ধা হাইসকুলে পড়াশনা করি। অনেক দিন পর বাড়ী এসে দেখি টুকটুকে ঐ মেয়েটি। আমার মনের বাগানে সবে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। বসন্তের ঝড়ো হাওয়া প্রবল বেগে বইছে। তার মধ্যে পরীর বাচ্চা দেখে মনটা কে সামলাতে পারলাম না। ছুটতে থাকলাম ওর পিছু, ওকে ধরতে যাই ও বলে আমাকে ধরতে পারবে না। এদিক ওদিক যেতে লাগল। আমার ভারী কাছে গিয়ে পালালো। আমি ভাবীর আচলে নিচে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। বর্ষা আমাকে বলে এই তুমি আমাকে ধরবে না। কেন ধরব না। তুমি ত আমি বউ। না আমি তোমার বউ না। কোনদিন তোমার বউ হব না। ওকে জড়িয়ে ধরে লাগার প্রথম স্পর্শ অনুভব করলাম। জড়িয়ে ধরে ওকে কোলে নিয়ে বললাম। চল আমাদের বাড়ী আর তোমাকে আসতে দিব না। আপা ও আমাকে নিয়ে গেল। তুমি না কর। আর আমার কোল থেকে নামার জন্য চেষ্টা করতে থাকল। কেন যা তুই ওর বউ। না আপু এখন হব না। যখন বড় হবো তখন। ভাবী হেসে উঠল। আমি হেসে ওকে নামিয়ে দিলাম। ওর স্পর্শ আমাকে কমন যেন একটি মোহে পড়ে গেলাম।
আমাদের ও চাচা দের উঠান আলাদা। এক ফাকে বাড়ী এসে সংগ্রহ করা কয়েকটি ভিউকার্ড ও ডাকটিকেট নিয়ে ওর চোখের সামনে ধরলাম। তখন আমারও বয়স কম ছিল। আর ভিউকার্ড তখন নতুন বাজারে আসছে। বর্ষা দেখে বলল আমাকে দাও। আমাকে দাও। আমি হাত টেনে নিয়ে বললাম তাহলে তুই আমাকে বর বল। না বল না। তাহলে তোকে দিব না। আমার ভাবীকে বলল আপা তুমি দিতে বল না। এই ওকে ভিউকার্ড দিস না দে। দিব ও যদি বলে আমি ও বর তাহলে দিব ভাবী হেসে বলল বর্ষা তুই বল তুমি আমার বর না আমি বলব না ভাবী বলল হেসে বর বললেই আর বর হয় না বর্ষা আচ্ছা ঠিক আছে তুমি আমার বর হল দাও এখন। আমার হাত হতে ছো মেরে ভিউকার্ড ও ডাক টিকিট গুলি নিয়ে পালালো।
আমি ওর খুশি ও ছুটে চলার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ভাবী বলল তুই কি ওকে বিয়ে করবি। দেখ ভাবী তুমি যদি রাজী থাকো পড়াশনা শেষ করি তারপর ওকেই বিয়ে করব। হাসতে হাসতে বললাম। ভাবী বলল ঠিক আছে যা বর্ষা কে তোকেই দিলাম। পড়াশনা শেষ করা তারপর ওকে পাবি। ভাবী তুমি ওকে দেখে রেখো। দেখ ও যেমন সুন্দর ওকে আবার কেউ বাগিয়ে নিয়ে না যায়। ও চিন্তা তোর করতে হবে না। এম এ পাশ কর তার পর দেখা যাবে। মনে সুখ পেলাম।
ভাবীর ঐ কথা গুলি বারবার আমার কানে বাজে। বর্ষা নাম মনে হলেই আমার মনের ভিতরে একটা সুখ অনুভব করতাম। এখনও করি। প্রথম দেখায় ও ছোয়ায় যে সুখ অনুভব করেছি সে সুখ এখনও পাই। বর্ষার সাথে কয়েকদিন বেশ মজাতে কাটল। জীবনের এই প্রথম বাড়ী এসে এতো ভাল লাগল সে এক বর্ষার কারণে। চলে এলাম গাইবান্ধা। পড়ায় মন বসে না। কি করি কি করি। এত ছোট মেয়ে তাকে কি লিখব না । আমি ত প্রেম বুঝি না। শুধু বুঝি বর্ষাকে ভাল লাগে।
বর্ষা মাস এলেই আমার মনটা ভীষন খারাপ হয়ে যায়। এই জন্য বর্ষা মাসে কখনও বাড়ী আসি না। আমি রেডিও বেইজিং এর সদস্য ছিলাম। তাই ভিউকার্ড, বিভিন্ন রঙের ঘোড়া, মাছ, সাপ ও ড্রাগনের ছবি পেতাম। সব বর্ষার জন্য রেখে িদিতাম। আমার সব স্বপ্নই ছিল বর্ষাকে ঘিরে। চাচাত বোনের কাছে সব পাঠিয়ে দিতাম বর্ষাকে দিয়ে দিত। বর্ষা সব কার্ড, বিভিন্ন জিনিষপত্র গুলি শোকেসে সাজিয়ে রেখে দিত। চাচাত বোন বলত এই তুই কি শুভ ভাইকে বিয়ে করবি। হেসে মোটেই না। আমি বিয়ে করব রাজপুত্র। কেন আমার ভাই ত রাজপুত্র। মোটে ই না। তাহলে ওর কথা তুই জানতে চাস কেন। এমনি জানতে চাই। আমাকে কত কিছু উপহার দেয় তাই। ভালোবাসিস। মোটেই না। আর বাসলে তোকে বলব কেন। ততদিনে বর্ষা হাইস্কুলে ৮ম শ্রেনীতে পড়ে। ওর সাথে আমার দীর্ঘ চার বছর দেখা হয় না। মনটা খুব ছটফট করে। কিন্তু সুযোগ হয় না। তখন আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। ছুটিতে বাড়ী এসেছি। ওকে ভুলতে পারি না। কাচা মনের পাকা প্রেম । একটা কৌশলে চিঠি লিখে ফেললাম। আমার ভালবাসা জানালাম।
কিন্তু উত্তর পেলাম না। চাচাত বোন বলল তোকে একটা চিঠি দিবে। কিন্তু পরে সে চিঠি ও দেয়নি। কেন দেয় নি আজোও জানতে পারিনি। আমার নিয়মিত ভিউকার্ড, শোপিছ ও বিভিন্ন ধরণের আকর্ষনীয় বস্তু ,ঈদকার্ড, নববর্ষ কাড দিতে থাকলাম। তখন আমিও বেশ বড়। ভালবাসা প্রেম ভালো বুঝি্ আর ওর শরীরে বসন্তের ছোয়া। ওর শরীরের প্রতিটি ক্ষেত্রে বসন্তের ফুল ফুটা। মনে হয় স্বর্গের অপশরী।
আমাদের গ্রামে ওয়াদার একটা রাস্তা ছিল। ঐ রাস্তা দিয়েই শহরে গিয়ে ট্রেনে চড়ে রাজশাহী যেতে হয়। আমি রাজশাহী যাওয়ার জন্য রাস্তায় দাড়িয়ে আসি। ঐ সময় বর্ষা স্কুল থেকে ফেরছে। আমার সামনে আসতেই আমি বললাম কেমন আছো। বলল ভাল আছি আপনি কেমন আছে। আমি বললাম ভাল। তারপর বেশীক্ষণ থাকতে পারেনি বান্ধবীরা সাথে থাকায়। তাছাড়া তখন বেশ বড় হয়েছে। লজ্জা পায়।
অষ্টম শ্রেনীর পর আর বর্ষার সাথে দেখা হয়নি। আমি তাকে ভালবাসলেও সে আমাকে ভালোবাসে কি না জানতে পারিনি। আরো চার টি বছর পাচ হয়ে গেছে। আমি তখন পরিণত কিন্তু ছাত্র। তখন আমার অনার্স পাশ হয়নি। সেসন জটের কারণে তিন বছরের কোর্স ৫ বছরে শেষ হয়। বর্ষাকে ভালোবাসি বলে কারো সাথে প্রেম করতে পারিনি। ও আমার মনের মধ্যে কাকে জায়গা দিব বল কিভাবে দিব।
ক্লাসে ১৪০ জনের মধ্যে ১০ জন ছাত্রী। তাহলে একেকজনকে ১০ টুকরো করলেও ভাগে সবার হয় না। ১৩০জন ছেলে ১০ মেয়ের পিছু নিতো। মেয়েরা মজাও পেত আবার কষ্টও পেত। ওদের সাথে মেশার তেমন চেষ্টা না থাকলেও ইচ্ছে ছিল। হয়ত কারো কারে সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি। সেটা ক্লাসমেট হিসাবে। তার হঠাৎ লিমা নামের একটা মেয়ে আমার সাথে আগ বাড়িয়ে কথা বলল। আমিও কথা বললাম। আমার ক্লাসমেট। বেশ সুন্দরী না হলেও আকর্ষনীয়। একসাথে পড়ি। তখন থার্ড ইয়ারের ছাত্র আমরা। লিমা বলল একটু আমার সাথে যাবে। কোথায়? কলা ভবনে। আমাদের ক্লাস বেশী থাকায় সকাল বিকাল থাকত। সেদিন তিনটা বাজে ক্লাস শেষ। কমার্স বিভাগের ছাত্রছাত্রী ছাড়া ক্যাম্পাসে আর কোন ছাত্রছাত্রী নেই। কলা ভবন একে বাবে ফাকা। ওখানে একটা গাছের নিচে গিয়ে বসলাম। আসে পাশে কেউ নেই। যদিও থাকে জোড়া জোড়া। তারা বেশ তাদের নিয়ে। লিমা বসে আমার হাত ধরে বলল শুভ আমি তোমাকে ভালবাসি। আমি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম। বুঝতে পারলাম না কি বলল। লিমাা বলল কি বুঝতে পারছ না কি বলছি। হ্যা কি বললে। আমার হাতটা জোড় করে চেপে ধরে আমি তোমাকে ভালবাসি। তোমার সাথে সারাজীবন কাটাতে চাই। আমি কিছুই বললাম না বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে রইলাম। কি কিছু বলছ না যে। তুমি কি সত্যি আমাকে ভালোবাস। কেন বিশ্বাস হচ্ছে না। আমি শুধু তাকিয়ে আছি। ও চারদিকে তাকিয়ে মাথাটা কাছে এনে ছোট্ট করে একটা চুমো দিয়ে দিল। আমি হা করে তাকিয়ে আছি। প্রথম প্রেমের প্রস্তাব আমার প্রথম চুমো। আমি কিংকতব্যমিমূঢ় হয়ে আছি। কি এখন বিশ্বাস হলো আমি তোমাকে ভালো বাসি কিনা। কি আমাকে ভালবাসা জানাবে না। দেখ লিমা । আমি অত্যন্ত গরীব মানুষ্। এখনও ছাত্র। সে চিন্তা তোমার করতে হবে না। ঠিক আমি তোমাকে পড়ে জানাবে। আমি এখন কিছু বলতে পারব না। ঠিক আছে এখন চলো হলে দিয়ে আসি।
প্রথম প্রেমের প্রস্তাব ও চুমো দুটোই আমাকে আকর্ষন করেছিল বটে। কিন্তু আমার মনের মধ্যে ছিল বর্ষা। তাই লিমা আমার আর ভালোবাসার কথা জানানো হয়নি। লিমা লজ্জা ভরে আমাকে আর কিছু বলেনি। পরে ওর একটা চিঠি পাই। ও লিখেছে আমি জানি তুমি হয়ত কোন মেয়ের প্রেমে পড়েছো। হয়ত আমাকে বলোনি। কিন্তু তুমি আমার জীবনের প্রথম পুরুষ যে আমারে মনের ভিতরে প্রবেশ করেছ। হয়ত কোন দিন তোমাকে ভুলতে পারব না। আমার আমাদের চার ঠোটের যে মিলন হয়েছে তা কোন দিন ভুলার না। মনের গভীরের কোট চিলে কোঠায় তুমি সারাজীবন থাকবে। আমি এখন অন্যের বাহু বন্ধনে আবদ্ধ। দোয়া করি তুমি ভালো থাকো। আর তোমার ভালোবাসার মানুষকে পাও। আর আমার জন্য দোয়া করো। পাররে বাসাতের কাছে আমার জন্য একটি চুম্বন পাঠিয়ে দিও। তোমার চুম্বন পাবার জন্য মনটা বড়ই ক্ষুধার্ত ছিল।
ভীষন খারাপ লেখেছিল একটি মেয়ের আকুতি শুনে। আমি বাতাসে একটি চুম্বন পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। জানি না ও পেয়েছে কিনা। কোন দিন বাতাসকেও জিজ্ঞাসা করেনি বাসাত ভাই আমার চুম্বন টা কি ঠিক ঠিকানায় পৌছে দিয়েছো কিনা। একটা কষ্ট মনের ভিতরে চাপা পড়া থাকত। মনে হতো ভুল করলাম। যখন বর্ষার মুখের ছবি টা আমার কাছে আসত নতুন লিমার কথা ভুলে যেতাম।
আমি থাকতাম নওয়াব আব্দুল লতিফ হলের ১৪৪ নম্বর কক্ষে। আমার রুমমেট রাসেল। ওর সাথেই আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ঘনিষ্ট সংসার। সামনে পরীক্ষা ক্লাসে যাই না। পড়াশনা নিয়ে ব্যস্ত। তখন বারোটা বাজে। শুয়ে শুয়ে পড়ছি। দরজা নক করতেই খুলে দিলাম। পিয়ন চিঠি দিয়ে বলল সাইন করুন। চিঠি হাতে নিয়ে অবাক হলাম। গ্রামের নাম আজুগড়া। নাম টা ছেলে মানুষের। অবাক হলাম। এখান থেকে আমার চিঠি পাবার কথা নয়। তাড়াতাড়ি করে খুললাম। খুলে অবাক।
নাম টা দেখে খুশিতে আমি লাফাতে লাগলাম। আমার মনে খুশি আর ধরে না। চিঠি পড়া বাদ দিয়ে গান গাই লাগলাম। এসো এসো আমার ঘরে এসো । নিজেকে শান্ত করে চিঠিটা পড়তে লাগলাম।
প্রিয় শুভ জানি না তুমি কেমন আছো? তবে আমি ভাল নেই তা তোমাকে জানিয়ে গেলাম। প্রথম যখন তোমার সাথে আমার দেখা তুমি আমাকে ভিউকার্ড দিয়েছিলে । ঐ ভিউকার্ডের বিনিময়ে তুমি আমার মনটা কেড়ে নিয়েছিলে। আমি তখন থেকে তোমাকে ভালবাসতাম। তখন থেকেই তোমাকে অনুভব করতাম। আর আমার শরীরে যখন যৌবনের মহা বান এসে গেল তখন তোমাকে আরো একবার দেখলাম। তখন আমি আনন্দে আপলুত যে তোমাকে তোমাকে আমি ভালোবাসি। আমার অজান্তেই তুমি আমার মধ্যে বড় হতে লাগলে। তোমাকে নিয়ে আমি কল্পনা ও স্বপ্ন বুনতে লাগলাম। আপার কাছ হতে তোমার সব খবর আমি পেতাম। কিন্তু আমি তোমার সাথে দেখা করিনি। সবাই জেনে যাবে আমাদের ভালবাসার কথা। আমি চাইনি তোমার আমার গোপন প্রেম অন্য কেউ জানুক। মনের দিক থেকে তৈরী হয়ে ছিলাম তুমিই হবে আমার বর। কিন্তু সে স্বপ্ন সত্যি হতে দিল না আমার বাবা। আমার বাবা ভালো ছেলে পেয়েছ তার সাথে আমার বিয়ে দিব্।ে আমার বড় হবার ইচ্ছে। তাছাড়া তোমার পড়াশনা শেষ হয়নি তাই বিয়ে নিয়ে আমি ভাবছি না। কিন্তু বাবা মারধর করলেন। জানালেন এত ভালো ছেলে নাকি পাওয়া যাবে না। আমি অনেক চেষ্টা করেছি যে মাত্র আমার ইন্টার শেষ হলো। অনার্স পড়ি তারপর। কিন্তু বাবা আমার কোন কথা শুনলেন না। মা জানতেন তুমি আমাকে খুব পছন্দ করো এবং মা বুঝতেন আমি তোমাকে ভীষন ভালোবাসি। তাই মাও চেষ্টা করলেন বিয়ে বন্ধ করার কিন্তু মাও ব্যর্থ হলেন। ফলে আমার ভাগ্যে নিমে এলো অন্ধকার। আমি ভীষন সার্থপর হয়ে গেলাম। জানি না তুমি আমার এ স্বার্থপরতা মেনে নেবে কিনা। পৃথিবীর আর কারো জন্য আমার মায়া নেই। শুধু তোমার জন্য এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে কষ্ট পাচ্ছি। কিন্তু পৃথিবীতে থেকে তোমাকে ছাড়া বেচে থাকার কষ্ট আমার আরো বেশী হবে তাই এ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলাম। আমাকে ক্ষমা কর। মাত্র দুই বারের দেখায় ভালবাসা এত প্রখর হয় জানতাম না। তুমি আমার প্রতিটি রক্ত কনায় প্রবাহমান তাই তোমাকে ছাড়া আর কাউকে সঙ্গী হিসাবে গ্রহন করা সম্ভব হলো না। এবং বাবার কথার অবাধ্য হওয়াও সম্ভব ছিল না। এই দুটি অসম্ভবের মাঝ খানে আমার চিরপ্রস্থান ছিল বাধ্যতামূল। আমি এও জানি তুমি আমাকে ছাড়া এ জীবনে কাউকে গ্রহণ করবে না। তোমার এত বড় ক্ষতি করার জন্য আমি ক্ষমা চাচ্ছি। বল তুমি, তোমার বর্ষা অন্যের বাহুবন্ধনে থাকলে তোমার ভালো লাগত? বল। জানি তখন তুমি আমার পথ বেছে নিতে। আমি তোমাকে মরতে দিতে পারি না। শুভ তোমার জন্য ওপারে অপেক্ষা করব। আমি শুধু তোমার।
তুমি যখন এ চিঠিটা পাবে তখন আমি মাটির নিচে থাকব। তোমাকে যে চিঠিটা দিয়েছি তা তুমি কাউকে জানিও না । তোমার আমার ভালবাসা তোমার আমার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাক। তোমাকে আমি ভীষন ভালোবাসি শুভ।
তুমি ভালো থাকো।
তোমার, শুধুই তোমার পরকালে বর্ষা।
চিঠিটা পড়ে হাও মাও করে কেদেছিলাম। এত জোরে জোরে চিৎকার করেছিলাম যে পাশের রুমের ছেলেরা চলে এসেছে। ভয় পেয়েছে অন্য কিছু। আমার কান্না দেখে ওরা বুঝতে পারল যে কান্না বড়ই নির্মম কান্না। এ কান্না না দিলে ও কষ্ট দূর হবে না। কোন ছেলে আমাকে কোন প্রশ্ন করেনি কোন দিন । যারা আমার কান্না দেখেছিল তার বুঝতে পেরে ছিল এটা ব্যর্থ প্রেমের কান্না। এটা নিমর্ম স্মৃতির আর্তনাত।
আমার স্বাভাবিক হতে দুই দিন সময় লাগল। তারপর একটা চিঠি পেলাম ভাবীর।
শুভ তোর বর্ষার আর নেই। বিষ খেয়ে আত্নহনন করেছে। অনেক চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আমরা বাচাতে পারিনি। বিষ খাওয়া মাত্র তিন ঘন্টা আগে এসে বলল আপু আমি শুভকে ছাড়া বিয়ে করব না। তোমরা যদি এই বিয়ে দাও তাহলে আমার লাশ পাবে। অনেক বুঝিয়েছি । কিন্তু ও আমার কোন কথা শুনেনি। আমি ব্যর্থ হলাম শুভ তুই আমাকে ক্ষমা করে দে। আজও আমি একা। ৪০ পার হলেও বর্ষার স্মৃতির মাঝে কষ্টের জাল বুনে চলেছি। শুধু অপেক্ষায় আছি বর্ষার সাথে কবে দেখা হবে। আমার মন প্রাণে সব সময় একটি শব্দই উচ্চারিত হয় বর্ষা বর্ষা বর্ষা আর বর্ষা।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সূর্য
কোন এক দৈব কারনে অনেক শব্দ এবং বাক্য অসম্পূর্ণ। আর কম বয়সের বর্ণনাগুলো বেশ ম্যাচিউরড্ হয়ে গেছে। লেখকের বয়স যাই হোকনা কেন চরিত্রের বয়সানুযায়ী ডায়লগ এবং পারিপাশ্বিকতা সাজাতে হয়। --------- গল্পটা আরো সুন্দর হতে পারতো। আর বর্ষা [আষাঢ়-শ্রাবণের বর্ষা] গল্পে নেই.............
M.A.HALIM
করুণ কাহিনী অমর প্রেম। মরল মানুষ বাছলো ভালোবাসা। ভালো লাগলো তাই খুব মন দিয়ে পড়লাম। বাস্তবিক হলে আবার ভালোবাসা রচনা করুণ , জীবনত একটা!!!!!!!!!!!!!!!!!!
শামীম আরা চৌধুরী
গল্প তো গল্পই। তবে এটা সত্য গল্প বলে মনে হল। এখনও আমাদের গ্রাম্য সমাজে এধরনের আবেগ প্রবাহমান। যা আমার খুবই অপছন্দ। লেখটা একটু খাপছাড়া মনে হয়েছে। তবে চেস্টা অব্যাহত রাখলে ভাল করবেন। ধন্যবাদ।
প্রজাপতি মন
আজও আমি একা। ৪০ পার হলেও বর্ষার স্মৃতির মাঝে কষ্টের জাল বুনে চলেছি। শুধু অপেক্ষায় আছি বর্ষার সাথে কবে দেখা হবে। আমার মন প্রাণে সব সময় একটি শব্দই উচ্চারিত হয় বর্ষা বর্ষা বর্ষা আর বর্ষা। এটা কি গল্প না আপনার জীবনের কাহিনী? তেমন বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হলোনা। তবু প্রচেষ্টা ভাল লাগলো।
sakil
আপনার লেখার হাত খুব ভালো সেকথা প্রথমে বলে নিলাম . গল্পটি অত্যন্ত সাবলীল ভাবে এগিয়ে নিয়েছেন সেদিকে সার্থক, অন্যদিকে বিষয় বস্তু থেকে সামান্য দুরে সরে গেলেও বসা ঋতু আপনার মনে দোল খেলে সেক্ষেত্রে ঠিক আছে . আশা করি নিয়মিত লিখবেন . শুভকামনা রইলো . অত্তহনের বেপারে" দি বস মামুন ভাই ' যা বলেছেন তাই ঠিক মনে করি .
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।