ক্ষুধার যন্ত্রণায় একদিন

ক্ষুধা (সেপ্টেম্বর ২০১১)

noor
  • ৩৫
  • 0
  • ৬৬
তখন ঢাকায় নতুন এসেছি। ২০০৬ সাল। ধানমন্ডি ১৯ এ থাকি। বাসার সবার আপত্তি থাকা সত্ত্বেও একরকম জেদ করে আসা। আমাদের পাড়ার এক বড় ভাই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তাদের তিন জনের যৌথ একটা সফটওয়্যার হাউজে গ্রাফিক এবং ওয়েব ইন্সট্রাক্টর হিসাবে। ৩৫০০ টাকা বেতন। প্রথম প্রথম ঐ কোম্পানির এম.ডি সাহেব (তিন জনের একজন) রাতে যাবার সময় প্রতিদিন ১০০ টাকা করে দিতেন। তাই দিয়ে সারাদিন চলতে হতো। আমি আজও বুঝতে পারিনি, এভাবে প্রতিদিন হাজিরা দেয়ার মানে টা কি ছিল।

সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হতো। সকাল থেকে ক্লাস চলতো রাত অবধি। ক্লাস শেষে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট করতাম। একদিন রাতে ক্লাস শেষে আড্ডা দিয়ে সবাই চলে গেলো। পরদিন শুক্রবার। অফিস বন্ধ। এম.ডি সাহেব যাবার সময় আমার হাজিরা দেয়ার কথা বেমালুম ভুলে গেলেন। কারো কাছ থেকে কোন কিছু চাওয়ার অভ্যাসটা কখনো ছিলনা। আমার হাজিরা আর চাইতে পারলাম না। সারা রাত কিছু না খেয়েই থাকতে হল। সেই রাতে তেমন একটা বুঝিনি। ঘুম থেকে উঠে সকাল বেলা বুঝলাম ক্ষুধার কষ্ট। বাসায় যোগাযোগ করেই বা আর কি হতো। না খেয়েই কাটালাম দুপুর পর্যন্ত। শেষমেশ আর পারলাম না। আমাদের পাড়ার সেই বড় ভাই, তিনি থাকতেন উত্তরায়। প্রতিদিন উত্তরা থেকে এসে অফিস করতেন। ভাবলাম তাকে ফোন দিয়ে সব খুলে বলি। কথা শুরু করতে না করতেই মোবাইল এ পর্যাপ্ত ব্যাল্যান্স না থাকায় সে আশাও গুড়ে-বালি। তিনিও আর ফোন ব্যাক করেন নি। অগত্যা বুঝলাম ঘুমিয়ে পরা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তাতে যদি ক্ষুধার কষ্ট থেকে বাঁচা যায়। আর, একদিন না খেয়ে থাকলে তো আর মরে যাবনা। তবে চেষ্টা করে কোন লাভ হয়নি। শুধু বিছানায় এপাশ ওপাশ করে এভাবেই সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্ষুধার কষ্ট নিয়ে কাটাতে হয়েছে।

আমাদের চারপাশে এতো এতো অসহায় মানুষের বেঁচে থাকা কষ্টের কাছে আমার এ একদিনের ক্ষুধার কষ্ট কোনও ভাবাবেগ সৃষ্টি করেনা, জানি। তবে কেন আমরা সে সব মানুষের পাশে দাঁড়াতে কুণ্ঠা বোধ করি। দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি না করে উঁচু উঁচু অট্টালিকা আর অর্থের পাহাড় গড়ে তুলতে আমরা যান্ত্রিক হয়ে গেছি। আমরা এতটাই অভ্যস্ত যে উপর থেকে পিপীলিকার মতো দেখতে এসব মানুষের ক্ষুধার কষ্টে বাড়িয়ে দেয়া হাতও আর মনে দাগ কাটে না। এইতো সেদিন একটি জাতীয় পত্রিকার খবরে দেখলাম ছোট্ট দুটি শিশুর খাবার চুরি করার অপরাধে কি বীভৎস মারপিট। সেখানে কি এমন একটা মানুষও ছিলনা যে তাদের অসহায়ত্ব বুঝতে পারে। আর কবে, কিভাবে আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী সমৃদ্ধ একটি দেশ গড়তে পারবো সে আশা আপনাদের কাছে রেখে গেলাম।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তানভীর আহমেদ যদিও গল্প হিসেবে স্বীকার করব না। অনেকটা আত্মকথন এবং সেই সাথে কিছু মানবিক দর্শন তুলে ধরা হয়েছে। তবে এই মানবিক দর্শনের জয় সর্বদাই চাইব। তা না হলে মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার অধিকারটুকুও নিজের মনের কাছে থাকবে না।
ভালো লাগেনি ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১১
noor প্রজাপতি মন, কথাগুলো ভালো লাগলো। অনুপ্রেরণা পেলাম।
ভালো লাগেনি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১১
noor M.A.HALIM আন্তরিক শুভেচ্ছা।
ভালো লাগেনি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১১
noor তবে F.I. JEWEL এর সাথে একমত হতে পারলাম না। কারন সমাজ তো বাক্তিরই সমষ্টি। তাই আমি মনে করি শূন্যে গা না ভাসিয়ে যার যার অবস্থান থেকে যতটুকু সম্ভব সবারই এগিয়ে আসা উচিত। আর আমরা সবসময় আহ্বানের অপেক্ষায় থাকি। এতে আপনাকে কোনোভাবেই দোষারোপ করছি না। আর করলেও আপনার কিছু আসে-যায় না। আসলে আমাদের সিস্টেম আমাদেরকে গ্রাস করে ফেলছে, আমরা সিস্টেম কে পারছিনা।
ভালো লাগেনি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১১
noor ব্যাস্ততার কারনে গল্প-কবিতায় আসা হয়না। লেখাটি পড়ার জন্য- বিষণ্ণ সুমন, মিজানুর রহমান রানা, হোসেন মোশাররফ, NIROB, তৌহিদ উল্লাহ শাকিল, Akther Hossain (আকাশ) , ইসমাইল বিন আবেদীন, Khondaker Nahid Hossain, F.I. JEWEL, প্রজাপতি মন, চৌধুরী ফাহাদ, M.A.HALIM, পাঁচ হাজার সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১১
পাঁচ হাজার সবাই আপনার মতো ভাবতে শিখুক, তাহলেই বদলে যাবে অনেক কিছু.........
ভালো লাগেনি ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১১
M.A.HALIM খুব সুন্দর হয়েছে বন্ধুর গল্প। শুভ কামনা সাথে ভোট।
ভালো লাগেনি ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১১
চৌধুরী ফাহাদ ভাল লাগল গল্পটি আর সবার মুল্যবান মতামতগুলোর সাথে সহমত পোষন করছি।
প্রজাপতি মন আপনার গল্পের শেষের অংশটুকুই বেশি ভাল লাগল। একদিনের ক্ষুধা সহ্য করেই আপনি বুঝে গেছেন, ক্ষুধা যে কত কষ্টকর একটা অনুভূতি আর তা থেকে আপনার যে উপলব্ধি এসেছে ক্ষুধার্ত মানুষগুলোর জন্য কিছু করার এটা সত্যিই প্রশংশনীয়। আমরাও আছি সেই স্বপ্নপূরণ করার অংশীদার হওয়ার।
F.I. JEWEL N/A # ব্যক্তি আর সমষ্টি এক জিনিস নয় । সমাজ তো আরো বিরাট ।সমাজের ভয়াবহ রুপ একদিনে সৃষ্টি হয় না । = নিজেকে বদলাও , সমাজকে বদলাও --- এই জাতীয় কথা --, কল্পনা বিলাস মাত্র । আসলে এই বদলানোর পদ্ধতি বা কৌশলটাই আসল কথা ।= [ গল্পে ভাবনার গভীরতা ও প্রকাশ অতীব সুন্দর ।]

০৫ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "হতাশা”
কবিতার বিষয় "হতাশা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর,২০২৫