একটা লালশাড়ি

শাড়ী (সেপ্টেম্বর ২০১২)

মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন
  • ২৯
  • 0
  • ২৫
খবর পাঠিয়েছে এখনই যেতে হবে।
সে বাগেরহাটে। তার নাকি মহা বিপদ।

আমার সহপাঠি গেঁয়ো এক বালক। সুদুর বাগেরহাট থেকে পূর্ব রূপসার গ্রামে এসে একটা লজিং ম্যানেজ করে সরাসরি মাইল দেড়েক উত্তরের একটা স্কুলে নবম শ্রেণির একজন ছাত্র হিসাবে আগে থেকেই ছিল। পশ্চিম রূপসার এই অধম কীভাবে যেন গোত্তা খেয়ে সেখানে গিয়ে ঢুকে পড়লাম। প্রথম দিনে সরে নিজের বেঞ্চে আমার জায়গা করে দেওয়ার সুবাদে তার বন্ধুত্ব মেনে নিলাম। আর সবাই আমাদের বন্ধু হল। লোক দেখানো নয়, সত্যিকারের, অন্তত তখনকারমত। রূপসা কোন বাধা দিতে এলোনা।

বাকি পঞ্চকন্যা বন্ধু বা শত্রু কিছুই হলনা। মনে কী আছে সেটা জানা গেলনা, তবে তারা সবাই আমাদের ভাব গতিক লক্ষ করে যেতে লাগল। একুশ বা পাঁচ, কোন দিক থেকে কখনই কোন অসৌজন্যমূলক আচরণ দেখা যায়নি। তারা হয়ত এটাকে পছন্দ করল।

মিতা।

দোহারা গড়নের পাঁচ ফুটের কাছাকাছি ফর্সা মেয়েটার মুখে কথা কম, হাসি বেশি। আচরণ ভাল। প্রায় আড়াই মাইল পূর্ব থেকে আসে। সাথে আসে সেভেনের তার ভাই, আর দুটো নাইনের মেয়ে। মিতার বাড়ি, জসিমের লজিং আর স্কুল- এই ত্রিভুজের ভিতরে আমাকে ফাঁসানোর জন্যই যে মাসুম প্রথম দিন আমাকে খাতির করে তার পাশে বসিয়েছিল সেটা বছর দেড়েকের ভিতরে বুঝতে পারিনি। হয় আমি মহা আহাম্মক, নয়তো হতভাগাটা উচ্চাংগের ধান্দাবাজ। অথবা দুজনেই আধাআধা মাপের। ধারণাটা ভুলও হতে পারে। দেড়বার্ষিকী পরিকল্পনা করে আসন ছেড়ে দেওয়ারমত বুদ্ধিমত্তা তার থাকতে পারে কিনা সেটা জানারমত বুদ্ধিমত্তা আমার নেই।

মেয়েটা জানল আমারও পরে। আমার মাধ্যমে। হতচ্ছাড়াটা আমাকে দিয়েই সেটা করালো!

আমি আসলেই একটা আহাম্মক, মেয়েটা যদি বিরক্ত হয়ে গুরুজনদের জানাতো- যার সম্ভবনা ছিল বেশি- ঠ্যাঙ্গানিটা আমিই খেতাম। তাকে দেওয়ার জন্য মিতার ভায়ের হাতে নিরীহ ধরণের একটা ইংরেজি পাঠ্য বই ধরিয়ে দিয়েছিলাম, যেটা কখনই পড়ানো হত না। সে খুব ভক্তির সাথে সেটা নিয়ে বাড়ি গিয়ে চরম অভক্তির সাথে বোনের সামনে প্রতিটা পাতা খুঁটিয়ে দেখে তার দিকে ছুড়ে মারে। বোমা জাতীয় কিছু একটা পাওয়ার ব্যাপারে সে প্রায় নিশ্চিত ছিল।
'নে, ...তোকে বইটা দিয়েছে।'

সে আবিষ্কার করতে পারেনি- বোমাটা ছিল আঁঠা দিয়ে আঁটা অতিরিক্ত মলাটের আড়ালে।

মিতা পরে আমাকে হাসতে হাসতে বলেছিল, তখন তার এত রাগ হয়েছিল, ইচ্ছা হয়েছিল তার ভায়ের গালে ঠাঁস করে একটা চড় কষিয়ে দিয়ে বইটা বাইরে ছুড়ে ফেলে। সে কখনই করো কাছে একটা পদার্থ বা অপদার্থ বইয়ের জন্য অনুরোধ করতে যায়নি। কিন্তু নাম মহাত্ম বলে একটা কথা আছে। ভাইকে বিদায় দিয়ে বইটা তুলে নিল। ভবিতব্য ...।

ইংরেজি বইয়ের পাতায় কলমে লেখা ইংরেজি পাদটীকা থাকতেই পারে, তাতে সন্দেহের কী আছে? ভাইয়ের সন্দেহ না হলেও বোন সেটা নিয়ে মাথা ঘামাল, আর পাদটীকার সূত্র ধরে ঠিকই আসল মাল বের করল। আমার মুসাবিদায় মাসুমের হাতে লেখা ইংরেজি একটা হাফ-প্রেম পত্র।

কোন এক হা-ভাতে লজিঙ্গের ছোঁকড়া, সে কিনা একটা...।

মাসুমটা লেখাপড়ায় চৌকস। সম্ভবত সেটা মাথায় রেখেই মেয়েটা পরে ভদ্রভাবে আমার কাছে জানতে চাইল। আমি গৌরচন্দ্রীকার কাজ সেরে কেটে পাড়লাম- এখন তোমাদের চরকায় তোমারা তেল দিলে দাও, মবিল ঢাললে ঢাল। মনে করেছিলাম, দু'চার দিন তারা চাওয়া চাওয়ি দেখা সাক্ষাত এই সব করে বিরক্ত হয়ে ক্ষান্ত দেবে। স্কুল আর ক'দিন? তারপরে ইয়ে করার জন্য দুই মাইল পথ ঠ্যাঙ্গাতে যাবে কোন আহাম্মক। কিন্তু...পঞ্চশরে দগ্ধ করে...।

তারা বিয়ে করে ফেলল।

হ্ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেওয়া হতে না হতেই তারা কাজটা সেরে ফেলল। অবশ্য সেটাও আমাকে উপস্থিত থেকেই দিতে হল। কন্যাপক্ষ পাত্রপক্ষ উভয়পক্ষ হিসাবেই। তার জন্য নিজের গাঁটের কড়ি খর্চা করে বাগেরহাট যেতে হয়েছিল।

তার বড়ভাই নিজেও একটা লজিঙ্গে থেকে পড়াশুনা করছিল আর মাসুমের পড়ার ব্যাপারটাও সামলাচ্ছিল। খরচগুলো আসতো তাদের বাড়ি থেকে। লজিংটা ছিল মেয়ের বাড়ির নাকের ডগায়, এলাকাটা তাকে ছাড়তে হল। সেই সাথে মাসুমের দিক থেকে মুক্তও হল। বেচারা নিজে ছিল বিবাহিত, কাজেই খুব একটা ট্যাঁ-ফোঁ করার মুখ ছিলনা। নিজের শ্যালককে আর একটা লজিঙ্গে জমা দিয়ে নিজে কোন মুলুকে পাড়ি দিল গড নোজ। মাসুমের এই বেয়াইটা ছিল আমাদের সংবাদ বাহক।

'সে এখন লায়েক হয়েছে, তার নিজের ব্যাপার নিজেই দেখুক।' পরে সুযোগমত তার হয়ে সাফাই গাইতে গিয়ে আমাকে শুনতে হল।

ভাল। আমার লাভ এটাই, মাসুমকে কথা দিতে হল, আমার যদি লেখাপড়া করার সুযোগ আসে, তবে তারটা যাতে হয়, সেটাও দেখব।

'ধরে নিচ্ছি আমরা পাশ করে যাব,' তাকে বললাম। 'কলেজে ভর্তি হতে এখনো মাস চারেক সময় আছে। আপাতত বাড়ি গিয়ে সংসার ধর্ম পালান করতে থাকো, আর সেই সাথে পড়াশুনাটাও। কলেজে ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে একটা না একটা কিছু হবেই।' বাড়িতে ভায়ের উপরের ক্লাসের কিছু বই ছিল, সেগুলো দড়িতে বেঁধে আর পকেটের কিছু পয়সা তার হাতে দিলাম। চাঁদপনা মুখ করে নিয়ে সরে পড়ল।

পরে জানলাম মাসুমদের অবস্থা বেশ ভাল। মিতার পরিবার কোন জটিলতার সৃষ্টি না করে ব্যাপারটা মেনে নিল। অনেক দিন আমি সেদিকে না যাওয়ার কারণে কিছুই জানতাম না।
সুধু জানতাম, মেয়েটাকে সেখানে সাদরে স্থান দেওয়া হয়েছে। মাসুম মাঝে মাঝে আমার কাছে আসত আর আমার পকেট খালি করে ফিরে যেত। লেখা পড়ার জন্য নানান কিছুর প্রয়োজন আর সে জন্য প্রয়োজন নগদ নারায়ণের। তার ভাবটা ছিল- তুমি যখন আমার পড়ার দায়িত্ব নিয়েছ তখন সেটা দাও। কলেজে ভর্তি না হতেই।

আমি কন্যাপক্ষ পাত্রপক্ষ- আমার ভাগ্য ভাল যে কন্যাও সেই একই দাবি নিয়ে আসত না। বরং আমার কাছ থেকে কিছু নেওয়ার জন্য নিজের ঘরের লোকের সাথেই ক্যাটক্যাট করত। পাদটীকার সূত্র ধরে যে প্রেমপত্র উদ্ধার করতে পারে সে যে সত্যিই বুদ্ধিমতি সেটা জানারমত বুদ্ধি আমার ছিলনা। পরে বেয়াইয়ের মাধ্যমে জানতে পারি। মাসুমের বাড়ি থেকে তার লেখাপড়ার ব্যাপারে সব রকমের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সে সেটা আমার কাছে গোপন করে টাকা নিতে আসত, এটা মেয়েটাকে কষ্ট দিত।
আমি যে জানি, সেটা কিন্তু তাকে বুঝতে দিইনি। আগের মতই আমার সাধ্যমত দিয়ে যেতাম। কতই বা সে আর নিতে পারে? আমার পকেটে যা আছে তার বেশি তো নয়। বাড়ির পক্ষে আমার হাত খরচের যোগান দেওয়াটাও কঠিন ছিল।

আগের কথাটা বলি...।

বিয়ে না করে তাদের, বিশেষ করে মাসুমের উপায়ও ছিলনা।

সে এতটাই বাড়াবাড়ি শুরু করল- হয়তো মেয়েটাও- যে, মেয়েটাকে চাচার বাড়িতে আটকে রেখে বেঁধে ভাল রকমের ঠ্যাঙ্গানি দেওয়া হল। আমি কিছুই জানলাম না। বিরক্ত হয়ে অনেক আগেই তাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করেছিলাম। কালে ভদ্রে সে নদী পার হয়ে আমার কাছে আসত, কিন্তু তাদের 'উন্নতির ব্যাপারে' আমাকে কিছুই বলত না, আর আমিও কিছু জানতে চাইতাম না। এই পরিস্থিতিতে হঠাত একদিন নিজে না এসে খবর পাঠাল, জরুরি প্রয়োজন, যেন তখনই সেখানে চলে আসি। সেটা ছিল তার একটা মহা বিপদের দিন, হয়ত সে সেটা জানত। আমার ধারনা ছিল, তারা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে, কোন জটিলতার সৃষ্টি হয়নি।

স্কুলের পাট শেষ হয়েছিল। কয়েক আনা পয়সা বাঁচানোর জন্য্ আমি আর নদী পাড়ি দিতাম না। গোটা কয়েক টিউশনিও ধরেছিলাম, মাস গেলে পনের টাকারমত আসত- হাতখরচ চলত, দু'একটা সিনেমা দেখা যেত। ছোঁড়াটার কাজ কারবারে আমি বিরক্ত। সেখানে মেয়েটার বাড়ির কাছে আমাদের কয়েকজন সহপাঠি ছিল, মাঝে মধ্যে সেদিকে গেলেও তারা এমনকি আমার সাথেও কথা বলতে চাইত না। বন্ধুত্বের ধার একেবারে ভোঁতা হয়ে পড়েছে। আমার সাথে যে মাসুমের বিশেষ একটা যোগাযোগ নেই, সেটা তাদের জানার কোন সুযোগ ছিলনা। তাদের ধারণা, তাদেরকে ড্যাম কেয়ার করে আমরা তাদের এলাকায় আপকর্ম করে চলেছি। কাজেই এটা যে কতটা জটিল হয়ে উঠেছিল সেটা আমার ধারণার বাইরে ছিল। সহজে যারা বন্ধু হবে, তারা সহজে শত্রু হবেনা তা হতে পারেনা। যদি ইয়ে ঘটিত ব্যাপার হয়, আর তাদের কারো মিতার প্রতি ইয়ে থেকে থাকে...।

শবে-বরাতের দিন।
দিনেই ভারী কিছু ওর বরাতে এসে পড়েছে হয়ত। রূপসা থেকে বাগেরহাট...সেটা বাষ্পীয় শকটের ঘাড়ে চাপানো যায়, কিন্ত দড়াটানা-চন্ত্রপুর? বিষম দূর। বন্ধুর বোঝাই যদি না টানি, তাহলে কিসের বন্ধুত্ব? কিন্তু বুঝিনি, বোঝাটা এতই ভারী যে, নিজেদের ঘাঁড় থেকে ফেলে পালানোটাই আমাদের জন্য কঠিন হবে।

সন্ধ্যার আগেই খেয়া পার হলাম। ষ্টেশনটা একটু দূরে ছিল, নদীর ভাংগনে আনেকটা কাছিয়ে এসেছে। সেটার ডান দিকের পিচের রাস্তায় এসে উঠলাম। এটা নাক বরাবর সেজা বাইশ মাইল রেল লাইনের সাথি হয়ে বাগেরহাটে উঠেছে। আমাকে অতদূর যেতে হচ্ছে না, মিনিট পাঁচেক সোজা গিয়ে ডান দিকে মেঠো পথে মিনিট দশেক।

সেখানে নেই। আধা-ঘণ্টা হাওয়া। হাটার কষ্টটা ফাও। বেয়াইয়ের সাথে দেখা। 'আরে, আমি তোমার অপেক্ষায় আছি,' সে বলল। 'সে সেখানে।'
'কী হয়েছে?'
সেখানে বলতে- এই পথটা দুই মাইল এগিয়ে বাম দিকে রেললাইন ক্রস করিয়ে মিতাদের বাড়ির সামনে দিয়ে একটা শাখার সৃষ্টি করে নিকলাপুরের দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে। সেখানকার দোকানপাট আর ঝাঁকড়া বটগাছটা নির্দেশ করছে। শাখাটা অপর দিকে ত্রিভুজের আড়াই মাইল বাহুটার সাথে মিশেছে। সেই কোনাটায় আমাদের এক সহপাঠি ওবায়েদের বাড়ি। তাদের অবস্থা বেশ ভাল। গ্রামে ইজ্জত আছে। এদিকে আমাদের এখন পা পড়েনা।
'সাংঘাতিক ব্যাপার,' সে উত্তেজিত ভাবে বলল। 'মিতাকে চাচার বাড়িতে বেঁধে রেখেছে। মারধর করেছে।'

'চল, যাই।' আমি ভেবে পেলাম না, আমি এই পরিস্থিতে তাদের কোন উপকার করতে পারব। মাসুমই বা এখন সেখানে কী করছে। মেয়েকেই যখন বেঁধে রেখে ঠ্যাঙ্গাচ্ছে, তখন হবু শ্বশুরের গুষ্টি নিশ্চয় তাকে জামাই আদর করতে যাবেনা।
'না বাবা, আমাকে পেলে তারা মেরে ফেলবে।' তাকে সত্যিই আতঙ্কীত দেখাল। 'তুমি যাও। তাড়াতাড়ি।'
আমি কথা না বাড়িয়ে চললাম। সেখানে পৌছাতে সন্ধ্যা পার হয়ে গেল।

সে আমার জন্যই একটা দোকানের সামনের বেঞ্চে বসেছিল।

'কী হয়েছে?'
'তার...।' তাকে খুবই উতকন্ঠিত দেখাল। 'খুব মেরেছে। চল, আমরা এখন সেখানে যাব।' তাকে এতটাই বিপর্যস্ত লাগছিল যে, আমি বলতেই পারলাম না, এখন সেখানে গিয়ে কিছুই করা সম্ভব না। মুখ বুঁজে তার পাশাপাশি রাস্তা আর রেললাইন পার হয়ে এগিয়ে চললাম।

ছ'শ গজেরমত পথটা কেমন যেন উদ্ভট মনে হয়। দু'পাশেই বাড়িঘর নাহয় ছোটখাট ফসলের ক্ষেত বা পুকুর। ফাঁকফোঁকরগুলো গাছপালায় ভর্তি। তারমানে, এটাতে ঢুকলে শেষপ্রান্ত পর্যন্ত না গিয়ে ডানে-বামে সটকে পড়ার উপায় নেই। মাত্র দুটো গলি, একটা মিতাদের বাড়ির ডান দিকের আম আর নারকেল গাছের বাগানের পাশ দিয়ে পিছনে ঢুকে তাদেরই কয়েকজন শরিকের বাড়ি পেঁচিয়ে একটা পুকুরের পাশ দিয়ে আবার এই পথটাতে এসে মিশেছে। গলিটার মুখের কাছটা একটু নিচু আর কাদায় ভরা।

মিতাদের আর চাচার বাড়ি রাস্তাটার দুই পাশে মুখোমুখি। লাইটপোষ্টে একটা বাতি জ্বলছে। চাচার বাড়ির সামনের গাছপালার ফাঁক দিয়ে সাদা একতলা বাড়িটার কিছুটা দেখা যায়। প্রবেশ পথটার মুখে দশ পনেরজন মানুষ। সবার গায়েই পাঞ্জাবী। পরনে পায়জামা অথবা লুঙ্গি। মাথায় টুপি। শবে বরাতের রাতে এটাই স্বাভাবিক। চাচা সাহেব একজন গ্রাম্য মাতব্বর, কাজেই তার বাড়ির সামনে মানুষজনের জটলা থাকতেই পারে। চিন্তিত হওয়ার কী আছে? চিন্তিত হতে হচ্ছে, কারণ এদের কারো হাতে তসবির বদলে লাঠি। জেহাদী?

যাওয়াটা ছিল আমাদের একটা মহা ভুল।

তারা সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে। পিছনে তাকালাম। কেউ কি আসছে, এরা যার জন্য অপেক্ষা করছে? না। একটা কুকুর- হয়ত শেয়াল- কলাগাছের ঝোঁপ থেকে বের হয়ে রাস্তা পার হয়ে অপর পাশের ক্ষেতে নামল।

মাসুম আড়ষ্ট হয়ে উঠছে। যতই আলোটার কাছাকাছি হতে লাগলাম, সে ততই আমার পিছনে পড়তে লাগল। সে যেন আমার ছায়ার ভিতরে ঢুকে যেতে চাচ্ছে। তাদের দৃষ্টি আমাদের উপরে আঠারমত লেগে আছে।

আমরা তাদের সমান্তরালে আসতেই দু'জন মোটামুটি বয়স্ক লোক আমাদের কাছে এল। দাঁড়ালাম। মাসুম আমার পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যেতে লাগল। বুঝেতে পারছি, যদিও তারা পথ আটকে দাঁড়ায়নি, কিন্তু এখন এদের মুখোমুখি না হওয়াটা হবে একটা চরম বোকামো।
'বাড়ি কনে?'
'খুলনা।' আমার কন্ঠে কোন জড়তা নেই।
'এদিকে কনে যাবা?'
'ওবায়েদের কাছে।'

কিছু না বলে পিছন ফিরে তাদের সাথিদের কিছু একটা ইঙ্গিত করল। আমি চলতে শুরু করলাম। চারজন দল থেকে বের হয়ে হালকা চালে লাঠি দুলিয়ে দৌড়ে আমাদেরকে আতিক্রম করে সামনের দিকে গেল। বুঝলাম, সেদিকের পথ বন্ধ হল। আমরা যেদিক থেকে এসেছিলাম সেদিকে গেল আরো চারজন। ভাল। মাসুমের আচরণ আমাকে পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছে, এরা আমাদের কোন ধরণের যত্ন নিতে যাচ্ছে। সম্ভবত মাতব্বরের বাড়ির সামনে তার সেটা করতে লজ্জা পাচ্ছে। এখন এদেরকে ধাপ্পা দিতে যাওয়ায় কোন লাভ নেই। আমি দ্রূত হেটে মাসুমের বাহু চেপে ধরে পিছন ফিরে হাটতে শুরু করলাম। সে থরথর করে কাঁপছে। লোক দুটোকে অতিক্রম করলাম, তারা খুব আগ্রহের সাথে আমাদেরকে লক্ষ করতে লাগল, কিন্তু ফিরে আসা নিয়ে কিছু বলল না।

বিন্দুমাত্র ভয় পাচ্ছিলাম না, বরং মজা লাগছিল। লুকোচুরি যদিও একটা মেয়েদের খেলা, তবু সেটা যে একেবারে খেলিনি, তা নয়। আমার খুব ভাল জানা আছে, কীভাবে আর কোথায় লুকানো সবচেয়ে ভাল। আমি দৃঢ়পায়ে হতভাগাটাকে টানতে টানতে এগিয়ে চললাম। তারা আমাদের বাম দিকের গলিটা পার হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করল, তারপর সবাই আবার বাড়িটার দিকে চলে গেল। গলিটাতে ঢুকছি না তাদেরকে সেটার নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য আমি আরো দু'পা এগিয়ে গেলাম। তারপর মাসুমকে টেনে এক ছুটে গলির কাদায় নামলাম। দ্বিতীয় পদক্ষেপের পরে পা আর ওঠেনা, স্যান্ডেল সেটাকে কাদার নিচে টেনে ধরেছে। এই ধস্তাধস্তির ফাঁকে মাসুম আমার হাত থেকে পালাল। সেখ সা'দি কী বলেছেন জানিনা- কিন্তু ভালই জানি, আড়াই টাকার স্পঞ্জের স্যান্ডেলের চেয়েও বিনা পয়সার পায়ের দাম অনেক বেশি। বিশেষ করে যখন আমাকে এদের উপরে ভর করে হয়ত জাহান্নাম পর্যন্ত ছুটতে হবে। ভদ্র আর ছ্যাঁচড় দুটোকেই ফেলে ছুটে মাসুমকে টেনে ধরলাম। তারপরে টেনে তুললাম তার হবু শ্বশুরবাড়ির বাগানে। পথের কাছাকাছি থাকা নিরাপদ মনে হলনা, টেনে বাড়িটার পিছনের একটা নারকেল গাছের সাথে দাঁড় করিয়ে দিলাম। নিজে দাড়ালাম আর একটা গাছের গোঁড়ায়। এবার অপেক্ষার পালা। বাঁশের বেড়ার বাড়িটার এতটাই কাছে ছিলাম যে ঘরের ভিতরের কথা শুনতে পাচ্ছিলাম। একমাত্র সমস্যা মশার কামড়। কত ঘণ্টা ছিলাম জানিনা, কিন্তু তাকে আমি ঠিকই বের করে আনতে পেরেছিলাম। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছিলেন।

মেয়েটাকেও।

...রাত তিনটের দিকে ঝিমুনির ভিতরে বাম বাহুতে একটা কোমল স্পর্শ পেয়ে চমকে জেগে উঠল মিতা। সে ঘরের পিলারে ঠেস দিয়ে দুইপা সামনে ছড়িয়ে বসে ছিল। পিলারের সাথে হালকা ভাবে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। পিঠের আর বাহুর লাঠির বাড়ির দাগগুলো এখনো যন্ত্রনায় ভরা। প্রায় সারাটা দিন আর রাতের এতটা সময় সে এভাবেই কাটিয়েছে। তাকে খাবার দেওয়া হয়েছিল, পানি ছাড়া কিছুই খায়নি।

হাতের স্পর্শটা এবার কাঁধ বেয়ে মাথায় উঠে সেখানে কিছুক্ষণ স্থির থাকল। মিতা মাথা নিচু করল। শত মার খেয়েও যে এক ফোঁটা চোখের পানি ফেলেনি, এই স্পর্শ যেন তার চোখের জলের ধারা দুটোকে মুক্তি দিল।

বুকটাকে সাঁপেরমত পেঁচিয়ে থাকা দঁড়িটা কোলে খসে পড়ল। সে সেটাকে ছুঁয়েও দেখলনা।পরমুহূর্তেই সেটা যেন ছিটকে উঠে ঘরের কোনায় পড়ল। দুটো হাত তাকে জডিয়ে ধরে একটা কোমল বুকের ভিতরে গুঁজে দিল। সে ফুঁপিয়ে উঠল। বাহুর বাঁধন এক মুহূর্তের জন্য শক্ত হয়ে আবার কোমল হল।

'মা, খাবি কিছু?' বুকের ভিতরের মাথাটা নড়ে জানিয়ে দিল, খাবে না। একটা দীর্ঘশ্বাস।
'তুই চলে যা।'
'না, চাচি,' নিজের বুকটাই যেন গুমরে উঠল। 'চাচা তোমাকে মেরে ফেলবে।'
'এসব দেখার চেয়ে মরে যাওয়াও ভাল।' আবার দীর্ঘশ্বাস। 'ছেলেটা সন্ধ্যায় এসেছিল। সাথে আরো একজন ছিল, তাকে চিনিনা। কিন্তু তারা গেল কোথায়? এত খুঁজেও এরা তাদের পায়নি।' মিতার বুকের হাতুড়ির বাড়ি আনুভব করা যাচ্ছে। 'তোর জন্য এসেছিল। এরা বলছিল দুজনেরই হাড্ডিগুড্ডি ভেঙ্গে কচুরিপানার নিচে ঢুকিয়ে রাখবে।' মৃদু কন্ঠস্বরটা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল। 'পালানোর সব পথ বন্ধ, নিশ্চয় কোথাও লুকিয়ে আছে, তারা গলিঘুজি চেনে না। এখন যদি পালাতে না পারে তাহলে ধরা পড়বেই। নামাজ-কালাম বাদ দিয়ে সবগুলো এখন মসজিদ ঘরে ঘুমাচ্ছে। আমি দেখে এসেছি। কিন্তু সকাল হলে আর রক্ষা থাকবে না। তুই যা মা, তাদের খুঁজে বের করে সাথে নিয়ে পালিয়ে যা।' তার কন্ঠে আকুতি ঝরে পড়ছে।
'না চাচি,' মিতা বলল। তার কন্ঠস্বর দুর্বল। 'তুমি বিপদে পড়বা।'
'আমাকে তো মেরে ফেলতে পারবে না, কিন্তু তাদেরকে হয়তো মেরেই ফেলবে।' কন্ঠস্বরটা কেঁপে গেল।
মিতা হাতের বাঁধন সরিয়ে টলতে টলতে উঠে দাঁড়াল।
'নিশ্চয় এতক্ষণ লুকিয়ে থাকবে না,' মিতা দুর্বল গলায় বলল। 'তারা নিশ্চয় একভাবে না একভাবে পালাতে পেরেছে। আমি তাদের খুঁজে পাব না। সাথের ছেলেটাকে আমি চিনি, সে কখনই কাউকে ফেলে পালাবেনা। ও একা থাকলে...,' সে ফোঁপাতে লাগল।
'তুই পালা। যদি এখানে থাকিস আর তোর খোঁজে আবার আসে তাহলে মারা পড়বে।'
'হ্যা, চাচি, আমি যাব।' সে বন্ধ দরজার দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বলল। 'বাগেরহাট চলে যাব। বাগান আর বাড়ির ভিতর দিয়ে সামন্তসেনা চলে যেতে পারব। এই আন্ধকারে কে আমাকে দেখতে পারবে? ভোর সাড়ে ছ'টায় ট্রেন। ততক্ষণ সেখানে কোন ঝোপঝাড়ে নাহয় লুকিয়ে থাকব।'
চাচি এগিয়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে দরজার কাছে নিয়ে গেল, দরজা খুলল। তারপর মিতার হাত তুলে ধরে মুঠোয় কিছু গুঁজে দিল। 'এটা রাখ, পথে লাগবে।'

সে গ্রামের মেয়ে, বনে বাদাড়ে কীভাবে চলতে হয় তা তার জানা আছে। তবুও এই অন্ধকারে প্রায় আচেনা বুনো পথ দিয়ে কীভাবে এগিয়ে যেতে পারছে সেটা তার নিজের কাছেই একটা বিস্ময়। দু'একটা পাখি মাঝে মাঝে ডেকে উঠছে, ভোর হতে খুব একটা দেরী নেই। পথও বেশি নেই। সামনে একটা ছোট কালভার্ট। দুপাশেই বেশ কিছু ঝোপঝাড়। এর পরে ছোট একটা মাঠ পার হলে ষ্টেশন আধা মাইলও হবেনা।
তার বুকটা ছ্যাত করে উঠল, খুক করে কেউ কি কেশে উঠল? এখন ভয় করার সময় নেই। সে এগিয়ে চলল। কিন্তু সেটা পার হয়ে ঠিক দুপা হাটার পরেই তাকে থমকে দাঁড়াতে হল। পিঠে, হৃদপিন্ডের ঠিক বিপরীত পাশেই শীতল একটা কাঁটার মত কিছু বিঁধছে।

'কে? কোথা থেকে আসছো?' কন্ঠস্বরটা খুব বেশি বয়স্ক কারো হতে পারেনা।
পাশের ঝোঁপের আড়াল থেকে আর একজন বেরিয়ে এলো। অন্ধকারেও তার বাড়িয়ে ধরা ডান হাতের ছুরির ফলাটা ঝকঝক করছে। অস্ফুট একটা শব্দ করে মিতা জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।

'...পরদিন সকালে আমার জ্ঞান ফেরার একটু পরেই ট্রেনের বাঁশির শব্দ শুনলাম।' মিতা হাসিমুখে বলেছিল। 'আমি দেখলাম, একটা ছোট বেড়ার ঘরের ভিতরে আমি একটা চৌকির উপরে শুয়ে আছি। আমরমত বয়সের একটা মেয়ে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। জানালার কাছে একজন শার্ট-প্যান্ট পরা বয়স্ক মানুষ একটা বই হাতে বসে আছে। লাল মলাটে সোনালি কালিতে মাও-সেতুঙ্গের ছবি। তার পাশে পনের ষোল ব্ছর বয়সের একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দুধ খেতে দেওয়া হল। আমি তাদের সব খুলে বললাম। আমার বিছানা থেকে ওঠার ক্ষমতা ছিলনা। পরের দিন তারাই আমাকে ট্রেনে তুলে দেয়...।'

তারপরে দুইমাস আট দিন আমি বাগেরহাট তো দূরের কথা, রূপসাও পার হইনি। আজকে যেতে হচ্ছে। জরুরি তলব, না গিয়ে কী করি? শেষ ট্রেন বিকাল চারটায়। নগদ আড়াই টাকা গচ্চা দিয়ে টিকেট কাটলাম। ঝামেলায় পড়তে চাইনা। আসার সময় দেখা যাবে।

কমপক্ষে তিন ঘণ্টা লাগবে। সন্ধ্যায় হয়ত সেখানে পৌছাতে পারব। দড়াটানাটাই যা হোক একটু ঝামেলার। সেটা পার হতে পারলে যত রাতই হোক চন্ত্রপুর গিয়ে উঠতে পারব। তারপরে দিন দুয়েক শুয়ে বসে আরাম করে খুলনা ফিরে আসলেই হবে।

ছ'টার দিকে ষাটগম্বুজ এসে গাড়ি আর নড়েনা।

আমরা নড়িচড়ি, এরে শুধোই ওরে শুধোই- জানে ক্যাডা। শেষে জানা গেল, কিছুদুর সামনে আসন্তি গাড়ি চিতপটাং। সেটা সরানো হবে, তারপর আমাদের যাওন্তি গাড়ির চলন্তি। কখন? কখন বা কবে- জানে ক্যাডা। জানেন আল্লাহ। অনেকেই নেমে যেতে শুরু করেছে। আমিও নামলাম। সন্ধ্যা হচ্ছে। আমি হাটব। কিন্তু কথা হচ্ছে, কোন দিকে- পূর্ব না পশ্চিম? বাগেরহাট না খুলনা? বাগেরহাট। মাসুমের বিপদ বড় কথা নয়, নিজের বাড়িতে আবার কিসের বিপদ? আসলে খুলনা হেটে ফিরে যাওয়া আমার ঠ্যাঙ্গের পক্ষে সম্ভব নয়। আমাকে বয়ে।

রেললাইন ধরে হেটে কত রাতে বাগেরহাট পৌঁছালাম কে জানে। আজ রেল কোম্পানি সেই কবেকার টিকিট না কাটার শোধ তুলল। পুরোটা পারেনি, টাকা খানেক হবে। কিন্তু হাটিয়েও তো মারল। এখন যাই কোথায়? দড়াটানা দূরের কথা, সাঁপের বাজারেও পা দিচ্ছিনা। বাম দিকের পথে দেখলাম বিস্তর মানুষের আনাগোনা। সেদিকেই চললাম।

ঢাকঢোলের আওয়াজ।
পূজামন্ডপ। শারদীয় দুর্গাপূজা।

ভালই হল, রাতটা এখানেই কাটানো যাবে। মুসলমানের ব্যাটা বলে কি ইনি আমাকে ঠেলে বের করে দেবেন? মনে হয়না। তাহলে আমাকে ডেকে আনতেন না। কপালে থাকলে প্রসাদও হতে পারে। আমি অন্যের অন্নেপূর্ণ বাচ্চা। স্বয়ং অন্নপূর্ণা উপস্থিত, একটু অন্ন-ব্যঞ্জন জুটবেনা? একটু সন্দেশ? গুড়? অন্তত একটু চাল-কলা-বাতাবীনেবুর ঘ্যাট? না?

ভিতরে ঢুকলাম। ...ড্যাং ড্যাডা ড্যাং ড্যাডাং ড্যাডাং... ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ? ঠাকুর যাবে বিসর্জন...। আরতি চলছে।

সারা শরীরে ব্যাথা, তার উপরে ধূলা কাদা মাখা পোশাক আর লাল চোখ নিয়ে মোকামে পৌছালাম।'
'আরে, এত সকালে কীভাবে...?'
বললাম।

হাতমুখ ধোওয়ার পানি আর গরম খাবার এলো।
আর মাসুম এলো একটা প্যাকেট নিয়ে।
'এটা নিয়ে এখনই রওনা হতে হবে। দেড়ঘন্টা পরে ট্রেন। কর্ণপুরে নামবা, মিতার বাড়িতে গিয়ে তাকে দেবা। এই জন্য তোমাকে আসতে বলেছিলাম। কাজ না থাকলে নিজেই যেতাম।'
'কী এটা?' হাতে নিয়ে বললাম।
'একটা লালশাড়ি।'
...?
সমাপ্ত।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
জাকিয়া জেসমিন যূথী সুন্দর জ্যী্যবনের গল্পটা।
ভালো লাগেনি ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১২
.......মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগল। আশা করি ভাল লেগেছে।
ভালো লাগেনি ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১২
এশরার লতিফ আপনি কিন্তু একটা নিজস্স সাহিত্য ভাষা নির্মান করছেন যেটার কথাও মসৃনতা কথাও চড়াই-উতরাই । একজন লেখকের এমন ভাষাভঙ্গী থাকা কিন্তু খুব একটা শক্তির পরিচয় ।
ভালো লাগেনি ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২
.....আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। এটা পরীক্ষামূলক। এই 'চড়াই-উতরাই' ভাল লেগেছে কিনা তা কিন্তু বলেন নি। আর সবিনয়ে- আমি কিন্তু শক্তিবান নই, আন্তত লেখার ক্ষেত্রে।
ভালো লাগেনি ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ভালো লেগেছে Wahid ভাই.
ভালো লাগেনি ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২
মামুন ম. আজিজ িসিরয়ান েনস আছে গল্পের পরেত পরতে, মাঝে মাঝে িকছুটা কঠিন বাক্য সংগঠন..আবার সরল। পঠেন মিশ্র অনুভূতি...গল্পের বক্তব্যে ভালো লাগা বেশ।
ভালো লাগেনি ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২
........পড়েছেন আর ভাল লেগেছে জানে খুব ভাল লাগল। ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২
মোহাঃ সাইদুল হক খুব ভাল লাগলো ।
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১২
.......ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১২
মাহবুব খান একটা সময় থাকে যখন সব কিশোর/যুবক এ পাগলামি করে /আপনার বর্ণনা অনন্য /ভালো লাগলো
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২
.....সময় করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগল।
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১২
প্রিয়ম খুব দারুন একটা পথ পারি দিলাম অনেক অনেক মজা করে |
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২
........মজা করলেন, কষ্ট পাননি তো? পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২
পারভেজ রূপক এক কথায় অসাধারণ গল্প
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
........ভাল লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম। ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১২
মো. ইকবাল হোসেন আপনার সেন্স ওফ হিউমার আসাধারন।বণর্না ভঙ্গীও খুব ভাল ।ভাল লাগল।
ভালো লাগেনি ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২
.......আপনাদের শুভেচ্ছার ফল। অনেক ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ইউশা হামিদ শত মার খেয়েও যে এক ফোঁটা চোখের পানি ফেলেনি, এই স্পর্শ যেন তার চোখের জলের ধারা দুটোকে মুক্তি দিল। ----- অসাধারণ !
ভালো লাগেনি ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২
......ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। পড়া ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১২
ম তাজিমুল ইসলাম ভাল লাগলো........
ভালো লাগেনি ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১২
.......পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১২

০৪ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪