অনাকাঙ্খিত চিঠি

বাবা (জুন ২০১২)

অনইক আহমেদ
  • ২০
চিঠিটা তোমার জন্য একদমই অনাকাঙ্খিত, তুমি ভাবতেও পারনি যে এমন সময়ে আমার কাছ থেকে তুমি চিঠি পাবে। আমিও কিছু না বুঝেই চিঠি লিখতে বসে গেলাম। কি দিয়ে শুরু করব সেটাও বুঝতে পারছিনা এখন।
পঁচিশ বছরের এই জীবনে, তোমাকে আমি যেমন অনেক চিঠি দিয়েছি, তুমিও আমাকে তেমনি অনেক চিঠি দিয়েছ।
কিন্তু আজ যখনই মনে পড়ছে যে এটাই তোমার কাছে আমার লেখা শেষ চিঠি, তখনই হাত আর চলতে চাচ্ছেনা।
কত কথা তোমাকে বলব বলে ঠিক করে রেখেছি, কিন্তু লিখতে বসে কিচ্ছু মনে পড়ছেনা।
হাত কাঁপছে আমার,বাবা।
এখন তুমি আমার সামনে থাকলে তোমাকে জড়িয়ে ধরতাম,আর ক্ষমা চাইতাম এটাই শেষ চিঠি বলে। যত কথা বলতে চাই তার সবটা একটা চিঠিতে বলা সম্ভবনা। আরেকটা চিঠি লিখার সময় যদি পেতাম!
আমাকে ক্ষমা করো বাবা।

তোমার কি মনে আছে,যখন একদম ছোট ছিলাম; মাত্র 'অ - আ , ক - খ' পড়তে শিখেছি তখন স্কুলে পড়াতো
'অ তে-অজগর' , 'আ-তে আম' , 'ক তে-কলম' , 'ব তে-বল'। কিন্তু যখনই 'ব' অক্ষরটা আসত আমি বলতাম
'ব তে-বাবা' !
আমি কখনো ' ব তে-বাবা' ছাড়া কিচ্ছু বলিনি।
আম্মু বলত, "বইয়ে যা আছে তাই পড়" ।
আমি বলতাম, "বইয়ে 'ব তে-বাবা' নেই কেন?আমি এই বই পড়বনা।"
তুমি যখন পাশে থাকতে তখন আম্মুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতে।
আর আম্মু তোমাকে বলত, "তুমি বাবুর মাথাতো খেয়েছো, সব তোমার দোষ।"
আমি তখন পিছন থেকে বলতাম, "ব তে-বাবুর বাবা"।
আর আম্মুও তখন হেসে দিত।
তুমিও হাসতে,আমিও হাসতাম।

তুমি ছোটবেলা থেকেই আমাকে নিয়মানুবর্তীতার চর্চা করাতে, আমাকে শিখাতে শৃঙ্খলা কাকে বলে,সময়ের মূল্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
কিভাবে চলতে হবে,ভাল খারাপ কাকে বলে,কোনটা গ্রহণ আর কোনটা বর্জন করতে হবে,সবই তুমি ধৈর্য্য নিয়ে শিখাতে আমাকে।
আমি তোমাকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করে দিতাম,আবোল তাবোল শত শত অর্থহীন কথা জিজ্ঞেস করতাম তোমাকে।
কতবার না বুঝে কত অবান্তর প্রশ্ন করেছি তোমাকে ভরা মজলিসে, কিন্তু বাবা, তুমি কখনো বিরক্ত হতে না,তিরস্কার করতে না আমাকে।
যতটুকু জানার দরকার তা আমাকে জানাতে,বোঝাতে।
একবার না বুঝলে শতবার বোঝাতে।
আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ বাবা।

একবার তুমি আমাকে পড়ানো শেষ করার পর বলেছিলে দুই পাতা হাতের লিখা লিখে রাখতে।
তুমি অফিস থেকে এসে পড়ানোর সময় বললে হাতের লেখা দেখাতে।
আমি খাতা দেখালাম আর তোমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল, তোমার চোখে পানি এসে গেল।
আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই তুমি জড়িয়ে ধরলে আমাকে।
তখন বুঝিনি কিন্তু এখন বুঝি কেন তোমার চোখে পানি এসেছিল,কারন খাতার পাতা জুড়ে শুধু 'বাবা' শব্দটাই বারবার লিখেছিলাম হাতের লেখা হিসেবে।
তাও আবার গুণে গুণে দশ পাতা ভর্তি শুধু 'বাবা' শব্দটি লিখা।
লিখতে লিখতে আমার ছোট হাতটা ব্যথা হয়ে গিয়েছিল বাবা, কিন্তু তারপরেও আমি থামিনি,কেন জানো?
কারন ঐদিন তোমার জন্মদিন ছিল,কিন্তু বুঝতে দেইনি যে এটা তোমার জন্য উপহার ছিল।
আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের ক্ষুদ্র উপহার।
আমি জানি তুমি সেদিন অনেক খুশি হয়েছিলে।

একটা সত্যি কথা বলি তোমাকে বাবা।
তুমি আমাকে যতটা ভদ্র,ভালো ছেলে হিসেবে জানো,আমি কিন্তু ততটা ছিলামনা।
তুমি আমাকে যতটা বিশ্বাস কর,ততটুকু বিশ্বস্তও আমি নই।
তোমার অজান্তে কতবার যে তোমার বিশ্বাস ভেঙেছি,তার ইয়ত্তা নেই।
আমাকে ক্ষমা করো বাবা।

যখন একটু বড় হয়েছি,প্রাইমারী শেষ করেছি,তুমিতো জানোই যে তখন থেকেই বইয়ের প্রতি নেশা আমার।
আর তুমিও আমাকে অনেক বই এনে দিতে।
আম্মু আমাকে বকা দিত টেক্সট বইয়ের বাইরে বই পড়লে।
আর তুমি বকা দিতে আম্মুকে,
আমি তখন কি যে খুশি হতাম।
কিন্তু গাল ফুলিয়ে মুখ গোমড়া করে বসে থাকতাম,
তোমার আরেকটু আদর পাওয়ার জন্য এটা ছিল আমার একটা কৌশল,আমি যে তোমার আদরের কাঙাল বাবা।

কোন বাবা যে কাজটি কখনো করেনি ছেলের জন্য তুমি তা করেছ বাবা,
তুমি আমায় শিখিয়েছ কিভাবে মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে বই পড়তে হয়। তোমার বুদ্ধিতে আমি ভূতে ভয় পাওয়ার অভিনয় করতাম আর রাতে বাতি জ্বালিয়ে রাখতাম,কাঁথার নিচে চুপি চুপি লুকিয়ে বই পড়ার জন্য। আমার কি যে ভাল লাগত! পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে যেতাম,তুমি খুব ভোরে এসে বই সরিয়ে রেখে যেতে, যাতে আম্মু দেখে না ফেলে! এটা আমি কিভাবে জেনেছি জানো বাবা? এমন অনেক রাত আছে আমি ঘুমাইনি,সারারাত বই পড়েছি আর ভোরে তোমার পায়ের শব্দ শুনে ঘুমের ভান করেছি।
এটা কি তুমি কখনো বুঝেছিলে বাবা?
তোমাকে দিয়ে বিশ্বাস নেই,কিভাবে কিভাবে যেন আমার সব বুঝে যেতে তুমি!
তুমি আমায় কখনো কোন কাজে বাধা দিতে না,আমি যা চেয়েছি সব করতে দিতে।
আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ বাবা।

বাবা, ছোট থাকতে তোমার কনিষ্ঠ আঙুল ধরে ঘুড়ে বেড়ানোর দৃশ্যটা আমার চোখে এখনো স্পষ্ট।
এমন কোন সন্তান নেই যে বড় হয়ে যাবার পরেও বাবার কনিষ্ট আঙুল ধরে ঘুরে বেড়ানোর কথা ভুলে যায়।
আমি তোমার চরম কুসন্তান হয়েও ভুলিনি।

একবার আমি অনেক কেঁদেছিলাম। কেন কেঁদেছিলাম তোমাকে মনে করিয়ে দেই বাবা?

সেদিন আমি তোমাকে জিজ্ঞাস করেছিলাম,"সবারইতো বাবা থাকে,তাইনা বাবা?কিন্তু তোমার বাবা নেই কেন?"
তুমি বলেছিলে,"আমারও বাবা আছেতো বাবু।আমার বাবা হল তোমার দাদা।"
আমি বলেছিলাম, "কিন্তু দাদা এখন কোথায়?'
তুমি বলেছিলে,"তিনিতো মারা গিয়েছেন বাবুসোনা। সবাই একসময় মারা যাবে, এটা স্বাভাবিক, জগতের নিয়ম।"
আমি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলাম,"তুমি আমি সবাই মারা যাব?"
তুমি বলেছিলে, "হ্যাঁ। আমরা সবাই মারা যাব। তুমি বড় হতে হতে আমিও মারা যাব। আমার যেমন এখন বাবা নেই তেমনি তোমারও থাকবেনা। কিন্তু আমার যেমন তুমি আছ, তেমনি তোমার একটি লক্ষীবাবু থাকবে।"

নিজের জন্য না কিন্তু তোমার মারা যাবার কথা শুনে আমিতো কাঁদতে কাঁদতে অস্হির। তুমি কোন কথাতেই আমার কান্না থামাতে পারছিলেনা।

কিন্তু বাবা,আমি এখন খুশি কারন আমার আগে তুমি মারা যাচ্ছনা।
আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাবা, ডাক্তার আংকেল বলেছেন।
তুমি ডাক্তার আঙ্কেলের একথা শুনে কাঁদতে কাঁদতে কেমন যেন হয়ে গিয়েছিলে। আমি সেদিন যেটুকু কেঁদেছি তার চেয়ে বেশি তুমি কেঁদেছো আজ। মানুষতো মরবেই, এটাইতো জগতের নিয়ম। তুমি আর কেঁদনা বাবা,আমার কষ্ট হচ্ছে।
আমার সুখ একটাই যে, "আমার কখনো এমন হবেনা যে আমার বাবা নেই"। বাবা তোমাকে জীবিত দেখে মরতে পারছি এর চেয়ে বড় সুখ আর আছে,বল?

ভাল থেকো বাবা,আমাকে মনে রেখো। আর মাঝরাতে ঘুম ভাঙলে ভুল করে আবার আমাকে খুঁজতে এসোনা আমার ঘরে, তোমার যেই ভুলমনা স্বভাব! এসে আমায় খুঁজবে আর না পেয়ে কষ্ট পাবে, তখন?
আর শোন , এই চিঠি তুমি একবারের বেশি পড়বেনা, ঠিকাছে?
আম্মুর যত্ন নিয়ো, আমি নাহয় নেই, তাই বলে তোমরা যদি খারাপ থাক তাহলে কিন্তু আমার অনেক কষ্ট হবে বাবা। তুমি কত্ত ভালো, লক্ষ্মী একটা বাবা, মন খারাপ করনা। আরও অনেক কিছু বলার ছিল কিন্তু আর যে সময় নেই, আর বলাও হল না, হবেও না, কি আর করা! আবার বলছি, ভালো থেক সবসময়য়, যত্ন নিয়ো আর একদম কান্না করবে না। শুভকামনা রইল তোমার জন্য।
চললাম বাবা, আর বেশি সময় নেই আমার হাতে, চললাম .........

ইতি ,
তোমার
বাবুই সোনা


বিঃ দ্রঃ আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি বাবা, আমাকে ক্ষমা করো এভাবে চলে যাচ্ছি বলে। আমি যদি পারতাম তবে কি যেতাম, বলো? তুমি যখন আমাকে রেখে অফিসে যেতে আমি তখন অনেক মন খারাপ করতাম আর তোমার ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকতাম। তুমি যখন আসতে আমার তখন কি যে খুশি লাগতো! আজ বাবা আমি অজানা এক জায়গায় যাচ্ছি আর তুমি আমার ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকবে। কিন্তু তুমি যেমন ফিরে আসতে পারতে আমিতো ফিরে আসতে পারবোনা! তাই তুমি যদি আমার জন্য অপেক্ষায় থাক তাহলে আমার কষ্ট হবে। এজন্য লক্ষ্মী বাবা আমার, তুমি কিন্তু মোটেও অপেক্ষায় থাকবেনা আমার জন্য, নিশ্চয়ই তুমি চাওনা আমি কষ্ট পাই। মনে থাকবে? আর পারছিনা, ভালো থেক বাবা। এবার সত্যিই চললাম ......।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি সাবলীল সহজবোধ্য আবেগী লেখা| ভালো লাগলো বেশ|
বশির আহমেদ চমৎকার একটি গল্প লেখার জন্য লেখককে ধন্যবাদ ।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ।
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ গল্প নয় সত্যি ! ভাল লাগলো খুব ।
আপনি যেটা ভাববেন সেটাই, হয়ত গল্প নয়ত বাস্তব। ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ।
রোদের ছায়া আহমেদ সাবের ভাইয়ের সাথে একমত, প্রেক্ষাপট জানা থাকলে এটাকে আরও বাস্তব মনে হতো ......তবে লেখাতা অসম্ভব ভালো লেগেছে , চোখে পানি এসে গেছে ।
আবারো একই কথা বলি, /আসলে মৃত্যুর প্রেক্ষাপটটা আমি ইচ্ছা করেই দেইনি,সমাপ্তিটা পাঠকের হাতে ছেড়ে দিয়েছি।/ এখন মনে হচ্ছে দিলেই ভালো হত। যাইল হোক, অনেক ধন্যবাদ মতামতের জন্য। অভিজ্ঞতা কম, তাই হয়ত বুঝিনি :) ভালো থাকবেন।
নিলাঞ্জনা নীল খুব আবেগ দিয়ে লেখা মর্মস্পর্শী চিঠি একটু মন খারাপ হয়ে গেল ভাই..
আসলেই একটু আবেগ দিয়েই লিখছিলাম, ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
মিলন বনিক খুব সুন্দর আবেগপূর্ণ লেখনী...ভালো লাগলো আর বাবার প্রতি অসীম ভালবাসা আর মমতার পরশ যে কতখানি তা অন্তর দিয়ে অনুভব করলাম..শুভ কামনা রইলো,,,
কয়েকদিন ধরে বাবার শরীরটা খারাপ। বুঝতেছিনা কি হবে। আপনার জন্যও শুভ কামনা রইলো,ভালো থাকবেন।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি আমার খুবই ভালো লেগেছে এই গল্প পড়ে লেখার মান ভালো বক্তব্য এবং ভাষা সাবলিল ....অণইক আপনাকে অনেক ধন্যবাদ........
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য ।
রোদেলা শিশির (লাইজু মনি ) অনুভুতি যেখানে গভীর , ভাষা সেখানে নিরব ...... ! নিরব ভাষাতেই বলে যাই...... কলমের তুলনা নাই ...... ! অনেক অনেক .... শুভ কামনা .... !
আপনার মন্তব্যটা অনেক ভালো লাগল। আমিও আপনাকে নীরব ভাষাতেই ধন্যবাদ আর শুভ কামনা জানিয়ে গেলাম :)
শাহ্‌নাজ আক্তার চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না এই চিঠি পড়ে, বাবা ছেলের কি মধুর সৃতি ... আমি মুঘ্ধ আপনার লেখনীতে |
অনেক ধন্যবাদ আপু। আপনি বোধয় একটু বেশি আবেগপ্রবণ, অল্পতেই মন নরম হয়ে যায়... শুভকামনা রইলো।
আহমাদ মুকুল অপূর্ব লেখনি! মুগ্ধ হলাম....এতটা আবেগ কিভাবে আনা সম্ভব?
আমার মনে হয়, "যার লেখা যত বেশি আবেগপূর্ণ, সে তত বেশি আবেগহীন" -এটা আমার নিজস্ব অভিমত। যার যেটার অভাব সে সেটার প্রতি নজর দেয় বেশি। সত্যি কথাটা হল, আমার আবেগ অনেক অনেক কম তাই লেখায় আবেগটা হয়ত একটু বেশি চলে এসেছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য, মন্তব্য পড়ে বুঝলাম আপনার সময় নষ্ট হয়নি, এজন্য অনেক অনুপ্রেরণা পেলাম। ভালো থাকবেন :)

০২ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪