আলোকিত অন্ধকার

বিশ্বকাপ ক্রিকেট / নববর্ষ (এপ্রিল ২০১১)

মোঃ শামছুল আরেফিন
  • ২০৮
  • ১১৩
বিস্তৃত যে কালো মেঘটুকু এতক্ষণ ধরে পুরো আকাশটা শাসন করছিলো তা এখন হঠাৎ করে বিলীন হয়ে গেছে। তবে তার রেশটুকু এখনো রয়ে গেছে কিছুটা। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। তার ফাঁকে ফাঁকে রোদ উঁকি দিয়ে নিজের উপস্থিতি জানান দেয়ার চেষ্টা করেছে বারবার। মেঘের সাথে রোদের ঢাল তলোয়ারহীন শাশ্বত যে যুদ্ধ চলছে সে যুদ্ধে রোদ এখন পুরোপুরি জয়ী হতে পাড়েনি।তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই রোদ যে এই যুদ্ধে হয়ে তার সাম্রাজ্য বিস্তার করবে তা নিশ্চিত। এই নিশ্চিত সত্যটা জেনেই ফাঁকা টি.এস.সি.চত্বরটা আবারো পূর্ণ হতে শুরু করেছে। তবে এতক্ষণ যে পুরোপুরি ফাঁকা ছিল তা কিন্তু নয়। অনেকেই ছিল মৌসুমের প্রথম বৃষ্টি কণা গায়ে মাখিয়ে ভেঁজা কাক হওয়ার বাসনায়। তার মধ্যে চৈতিও একজন।
নীল ফতুয়া আর কালো জিন্স পড়া মেয়েটি পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে টুলের উপর। তার সামনে তের-চৌদ্দ বছরের ছেলেটি চায়ের কাপে চামুচ ঘুড়িয়ে যাচ্ছে। চা বানানো শেষ হতেই ছেলেটি চায়ের কাপটা এগিয়ে দেয় চৈতির দিকে।
ন্যান আপা,চিনি ছাড়া আপনার গরম লাল চা। চৈতি সানন্দে চায়ের কাপটা হাতে নিয়েই তাতে চুমুক বসায়। সে খেয়াল করে ছেলেটি তার দিকে তাকিয়ে আছে। তবে তা নেহায়েত সরল ভঙ্গিতে এবং চোখের মাঝে চায়ের সাধ খুঁজে পাওয়ার তাড়নায়। চা ভাল হয় নি একটুও।চৈতির উত্তর পেয়ে চোখ নামিয়ে নেয় ছেলেটি।
তাইলে আপা লগে আর একটু চিনি দিই?
না তা আর দরকার হবে না। আচ্ছা গাবলু, খেলাতো শেষ সেই কবে, তুই এখনো ক্রিকেট দলের জার্সি গায়ে দিয়ে ঘুরিস কেন?
গাবলু খেয়াল করলো বৃষ্টিতে ভিজে তার জার্সির রং আর সবুজ হয়ে গেছে। ঠিক যেন পতাকার রং। গাবলু টাকা কামিয়ে অনেক কষ্টে কিনেছে জার্সিটি। এতে তার কোন কষ্ট নেই।, কিন্তু সামান্য না পাওয়ার বেদনা বুকের কোন এক অজানা গলিতে লুকিয়ে আছে নিশ্চয়ই। নিঃশব্দে বড় একটি নিঃশ্বাস ছেড়ে হালকা হওয়ার বৃথা চেষ্টা করল গাবলু।বলল, আপা জার্সিটার লাইগা কেমন জানি একটা টান লাগে মনে হয় গায়ের মধ্যে পতাকা উড়তেছে। তাই পড়ি। হুঁম ভালো । আজকের বৃষ্টিটা অনেক সুন্দর তাই না রে? তোর আবীর ভাই থাকলে আরো ভালো হত।আবীর ভাই থাকলে আরো ভালো হত কথাটা সহজেই মেনে নিল গাবলু।কিন্তু বৃষ্টি যে সুন্দর তা যে কোন মতেই মানতে পারছে না। বৃষ্টি আজ তার চা বিক্রি অনেক কমিয়ে দিলো। বৃষ্টি তার জন্য নয়,পাকা বাড়ীতে থাকা ধনী মানুষদের জন্য সুখকর। চৈতি আর আবীর গাবলুর রেগুলার কাস্টোমার। তাই চৈতির কথায় গাবলু যে নীরব সমর্থন করল, তা বুঝতে দেরি হলো না।
গাবলু প্রশ্ন করে, আবীর ভাই আইজ আসে নাই ক্যান?
তোর আবীর ভাই পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে ব্যস্ত তাই আসতে পারেনি।
পহেলা বৈশাখের কথা শুনেই গাবলুর বুকের ভিতরটা ধকড়-পকড় করে উঠল। মনে হলো ঐ বুঝি বৈশাখী ঝড়টা আবারো
আসলো। আবারো সব কিছু উড়িয়ে দেবে নিমিষেই।
চৈতি তিনটা পাঁচ টাকার নোট এগিয়ে দেয় গাবলুর দিকে। অবাক হয় গাবলু।
আরে রাখ। ধরেনে- আবীরও চা খেয়েছে। বাকী পাঁচ টাকা আজ তোর বোনাস।
টাকাটা দিয়েই চৈতি রোকেয়া হলের দিকে হাঁটা শুরু করলো। গাবলু তাকিয়ে থাকে তার দিকে। কি মনে করে চৈতি আবার পিছু ফিরে আসে।
আমি তোর দিদির জন্য একটা চাকরি জোগাড় করেছি। তোর দিদি কি করবে?
দিদি কি যেন একটা চাকরি পাইছে, বেতন মনে হয় ভালোই পায়। উত্তর দেয় গাবলু।
-ও, আচ্ছা। ভালো। তার পরেও যদি লাগে আমাকে বলিস।
ঠিক আছে। ঠিক তখন অন্য দিক থেকে ডাক আসে- এই গাবলু- এক কাপ চা। গাবলু ছুটে যায় সে দিকে।
এই ক্ষুদ্র চা বিক্রেতা ছেলেটিকে সবাই গাবলু নামে চিনলেও ওর আসল নাম হলো শ্রী গণেশ চন্দ্র দাশ। গাবলু নামটি চৈতি আর আবীরের দেয়া। মা লক্ষ্মী রাণী আর দুই বোন মল্লিকা ও মনিকাকে নিয়ে চাঁদপুর জেলার দূর্গাপুর গ্রামে বাস করত ওরা। বাবা সুরেশচন্দ্র দাশ পেশায় ছিলেন মাছের ব্যবসায়ী। তবে তার সান্নিধ্য বেশী দিন পায়নি গাবলু। গাবলুর বয়স যখন পাঁচ তখন এক অজানা রোগে মারা যান তিনি। এ নিয়ে গাবলুর মনে কোন আফসোস নেই, কেননা একজন বামনের ঘরে জন্ম নিয়েছে সে। আর বামনের ঘরে জন্ম নেয়াটাই যেন আজন্ম পাপ তাদের। বামন ঘরের সন্তান বলেই কি না দিদির কপালের সিঁধুর মুছে ফেলতে হলো অকালে। দিদি মা কালীকে সাক্ষী রেখে যে ভালোবাসার মানুষটির সাথে মালাবদল করেছিল সেই মালাও মিথ্যে হয়ে গেল।
কেন না যে মানুষটির সাথে মালাবদল করেছিলো তারা ছিলো ব্রাক্ষ্ণণ। বংশ উপাধি চক্রবর্তী।
ব্রাক্ষ্ণণের ঘরে বামনের মেয়ে, তা সে মেয়ে যত রূপবতী আর গুণবতীই হোক; সমাজের অন্যান্য মানুষ যে ব্যাপরটাকে শুধু আড়চোখেই দেখবে না বরং জাত গেল জাত গেল বলে কাঁদা ছুড়তে ছুড়তে স্বচ্ছ ব্যাপারটিকে চরম ঘোলাটে করে তুলবে তা মল্লিকা আগেই বুঝতে পেরেছিলো। তবুও শুধু মাত্র ভালোবাসার টানে শত আঘাত সহ্য করার যন্ত্রণা মাথায় রেখেই বিয়ে
করেছিলে হীরালাল চক্রবর্তীর ছেলে দীপক চক্রবর্তীকে।
কিন্তু গায়ের মোড়ল, সমাজ পতি আর অসাধু ধর্ম ব্যবসায়ী মানুষজন যে ব্যাপারটিকে এই ভাবে সুরতহাল করে নাড়ি-ভুঁড়ি সব বের করবেন এবং তাতে পাপী, নষ্টা, দুশ্চরিত্রা, অপয়া নামক বিশেষণ গুলো যোগ করে তাদেরকে সমাজচ্যুত করবেন আর তার মা এই অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহননের পথ বেছে নিবেন, মল্লিকা তা কখনই বুঝতে পারেনি। বুঝতে পারলে এত বড় ভুলটি জীবনেও করতো না সে।
এই সমাজ, সমাজের মানুষগুলোর নামে শেষে পদমর্যাদার উপাধি, অন্ধ সমাজপতি আর ধর্ম ব্যবসায়ীদের চরম ঘৃণা করে গাবলু।
যদি কখনও হীরালাল চক্রবর্তী আর সমাজপতিদের বুকে একটা ছুরি মেরে আসতে পারতো, এই ভাবনায় গাবলুর রক্ত সবসময় টগবগ করে।
গাবলুরা খিলগাঁওয়ের এই বস্তিতে উঠেছে প্রায় এক বছর হতে চলল। একটি মাত্র ঘর ভাড়া করে থাকে তারা তিন ভাই বোন।
এতদিন ওদের ঘর ভাড়া আর দুমুঠো অন্নের একমাত্র উৎস ছিল তার চা বিক্রির পয়সা। তবে দিদি শেষ পর্যন্ত একটা চাকরি পেল কয়দিন আগে, এই ভেবে একটু সস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে সে। তাই আজ একটু তাড়াতাড়ি ফিরে আসল।
আজকের সন্ধ্যাটা একটু অন্য রকম। সন্ধ্যা নামার অনেক আগেই পুরো আকাশটা কালো হয়ে পৃথিবীর বুকে সন্ধ্যা নামিয়ে এনেছে। চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। বাতাস বইছে জোড়ে জোড়ে। বাতাসে কেমন জানি একটা ভ্যাপসা গন্ধ। ঝড় হওয়া্র পূর্বাভাস।
গাবলুদের রুমে একটি মাত্র জানালা। জানালা খুলে বাইরের অবস্থাটা বুঝার চেষ্টা করলো সে। আজকের এ হঠাৎ বৃষ্টি টুকু যে বস্তিবাসীর প্রত্যাহিক জীবনের ছকবাঁধা রুটিনে অনেক ব্যাঘাত ঘটিয়েছে তা শতভাগ নিশ্চিত।চারদিকে স্যাঁতস্যাঁতে, বিশ্রী কঁদাকার অবস্থা। বস্তির ভিতরকার একমাত্র গলিটি যে বর্ষার আমন ধানের ক্ষেতের মতই কর্দমাক্ত তা দেখলেই বুঝা যায়, আগ বাড়িয়ে পরখ করার দরকার নেই। সেখানে ময়লা কালো বর্ণের পানি গুলো ঘোলাটে হয়ে আছে। আর সামান্য বৃষ্টি হলেই এই কালো পানিগুলো যে সবার ঘরে উঁকি দিবে কিংবা ছোট ছোট ঢেউ খেলাবে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। এই বিশ্রী কাল্পনিক সত্য কথাগুলো ভাবতে ভাবতে রোমাঞ্চিত হয় গাবলু।
গাবলুর জানালার পাশে অনেকক্ষণ এইভাবে দাড়িয়ে থাকা দেখে ছোটবোন মণিকা এসে কৌতূহল ভরে জিজ্ঞেস করে-কি করছ দাদা?
কিছু না।
দাদা জান, আইজ বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম।
কি করলি বললি- বৃষ্টিতে ভিজে ছিলি?
হুঁ, আদর ভরা করুণ কণ্ঠে উত্তর দেয় মনিকা।
তাতে গাবলুর ক্ষেপার কথা না। তবুও সে সশব্দে মনিকার গালে একটা চড় বসিয়ে দিলো। চপাট্ শব্দটি পাশের ঘরে থাকা
মল্লিকার কানকে অগ্রাহ্য করতে পারলো না।ছুটে এসেই সে দেখলো চৌকিতে মাথা রেখে কাঁদছে মণিকা। আর জানালার পাশে
তখনও দাড়িয়ে আছে গাবলু। কয়েক সেকেন্ড আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার সূচনা থেকে উপসংহার পর্যন্ত সব কিছু বুঝে নিল মল্লিকা।
ছোট বোনকে শাসন করার নামে যখন তখন গায়ে হাত তোলাটা আজ কাল দেখি খুব ভালো করেই রপ্ত করেছিস। এটাকে শাসন
বলে না জীদ বলে। কথা গুলো বলেই মল্লিকা মণিকাকে জড়িয়ে ধরে। মনিকা কান্নার শব্দটা হঠাৎ করে অনেক বেড়ে গেল।
কাঁদিস না বোন। মনিকাকে আদর করে দেয় দিদি।
যদি ওর গায়ে জ্বর বিঁধে, তখন কি অইব? তখন ঔষধ দিবো কেডা? মল্লিকা বুঝতে পারলো গাবলুর চোখ পানিতে টলমল করছে।
একটু আগে যে গাবলু পাথর হয়ে ছোটবোনকে শাসন করেছিলো সে এখন ভাতৃস্নেহের পরম মায়ায় অসহায় আত্মসমর্পণ করলে যেন।
আমি আজ অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে যাব। কবে আসব ঠিক নেই। ৪-৫দিন লাগতে পারে। তোরা দু’জনে মিলেমিশে থাকিস। ঝগড়া ঝাটি করবি না যেন।
পহেলা বৈশাখে আর মাত্র ৩ দিন বাঁকি। তুমি থাকবে না দিদি? প্রশ্ন করে মণিকা। আচমকা এই প্রশ্নে তাল হারিয়ে ফেলে মল্লিকা। তবে কেউ কিছু বুঝার আগেই নিজেকে সমলে নেয় আবার।
না গো দিদি। নতুন চাকরি। ঢিলামি দিলে চলবে কেমন করে বল? আমি এসেই তোকে একটা স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিবো, কেমন?
আর আমরা এ বস্তিতে থাকবো না। পাকা দালানে গিয়ে উঠবো।
সত্যি?
হুঁ, নির্লিপ্ত উত্তর দেয় মল্লিকা।
মণিকার প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পর পুনরায় দিদিকে খারাপ আবহাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে যেতে বারণ করলো না গাবলু।
গাবলু খেয়াল করল তার দিদিকে আশ্চর্য রকম সুন্দর লাগছে এখন। ঠিক প্রতিমার মত। দিদি আজ অনেক সেজেছে। গাবলু আরো খেয়াল করল যে তার দিদি এখন চৈতি আপার মত শুদ্ধ ভাষায় কথা বলে।
মল্লিকা ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছে অনেক আগেই। গাবলু চাইল দিদিকে গলি পেড়িয়ে মেইন রাস্তা পর্যন্ত এগিয়ে দিতে। কিন্তু মল্লিকা অনুমতি দিলো না। পাশের ঘরের সুরাইয়া আপাও যাবে। গাবলুর কষ্ট করে যাওয়ার দরকার নেই। মল্লিকা যাওয়ার আগে আগামী কয়েক দিনের খরচের জন্য দুইটি কচকচে পাঁচশত টাকার নোট দিয়ে গেল। গাবলু একটুও অবাক হল না। বরং দিদি অনেক বড় চাকরি করছে এই ভেবে মনে মনে গর্ব বোধ করল সে। শুধু যাওয়ার আগে দিদিকে অনুরোধ করলো সে যেন একটু তাড়াতাড়ি ফিরে আসে।
সে আসলে মন্দিরে গিয়ে একবার পুঁজো দিয়ে আসবে।
সেই রাতে সত্যি সত্যি মণিকার গায়ে অনেক জ্বর আসে। গাবলু সারারাত ধরে তার মাথায় জলপট্টি দিল। তবে নিজে শোবার অবকাশ পেলনা এতটুকু। কেননা ছোট্ট চৌকিটিতে মণিকার জন্য শোবার জায়গাটুকু রেখে বাকীটাতে ঘরের যাবতীয় জিনিষপত্র উঠানো হয়েছে। খুব বৃষ্টি হচ্ছে অনেকক্ষণ ধরে। নোংরা ঘোলা জলগুলি তাদের ঘরে লুটোপুটি খাচ্ছে। তাই দরকারি জিনিষগুলো চৌকিতে উঠানো ছাড়া অন্য কোন উপায় জানা ছিল না গাবলুর।
এই বস্তিতে কম করে হলেও দুইশ ঘর লোকের বাস। তাই সারাক্ষণ কোলাহল লেগেই থাকে এইখানে। কখনও হাসি, কখনও কান্না, আবার কখনও ঠাট্টা তামাশা এমন কি বিশ্রী গালা গালিও বাধ্য হয়ে শুনতে হয়। এখানে সবার দুঃখের কাহিনী এক নয় এবং কারো দুঃখে কেউ দুঃখী হয় না কখনও।অবিরাম এই দুখের মাঝ থেকেই তারা জীবনের চরম সুখ খুঁজে বেড়ায়। কেউ পায় আবার কেউ পায়না। যারা পায় তারা আবার অনায়াসে হারিয়েও ফেলে। কেননা দুঃখেই তাদের নিত্য সঙ্গী। বস্তিবাসীর চরম কোলাহল আর টিনের চালে বৃষ্টির রুম ঝুম শব্দে দিশেহারা হয়ে গাবলু যে কখন টুলে বসেই মণিকার মাথার কাছে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেল টের পেলনা। পরের দিন ফ্লাস্ক ভর্তি গরম চা আর কাপের বালতি নিয়ে গাবলুর আর বের হওয়া হয় নি। তবে তা বিলাসিতা করে নয়। ছোট বোন মণিকার পাশে থাকার জন্য। তার জ্বর এখনও নামেনি। তবে এইটুকু ভেবে স্বস্তি যে ঘুম থেকে উঠে গাবলু ঘরে পানি দেখতে পায়নি। কেরোসিনের চুলোয় ভাত বসিয়ে গাবলু মোড়ের ফার্মেসির দোকান থেকে মণিকার জন্য ঔষধ নিয়ে আসে। দিনে আরো কয়েক বার তার মাথায় জ্বল পট্টি দেয়। রাতে নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারলো গাবলু। কেননা মণিকার জ্বর সন্ধ্যার সময় পুরোপুরি ছেড়ে গিয়েছিলো।
বুধবার সকাল সকাল টি,এস,সি চত্বরে গিয়ে হাজির গাবলু। অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে রিক্সার জ্যাম পড়ে নি তখনও। খুব সুন্দর সকাল। দক্ষিণা বাতাসের ঝাপটায় কৃষ্ণচূড়া আর বকুলের পাপড়িতে জমে থাকা শিশির বিন্দু গুলো বৃষ্টির মতো মাটিতে পড়ে। আর বকুল ও কৃষ্ণচূড়ার মলিন পাপড়িগুলো বাতাসে ভেসে বেড়ায় অনেক দূর। যথাসময়ে চৈতি আর আবীরের সাথে দেখা হয় গাবলুর। তারা দুজনেই খুব ফুরফুরে মেজাজে আছে। কাল পহেলা বৈশাখ। গোটা রাজধানী যেন আজ থেকেই উৎসবমুখর। গাবলু আজ ওদেরকে বিনা পয়সায় চা খাওয়ানোর প্রস্তাব করে। ওরা দুজনেই অবাক হয়, তবে তার বিশেষ কারণ জানতে কার্পণ্যতা করেনি। দিদির চাকরিটা বেশ ভালো। দুই দিনে এক হাজার টাকা ইনকাম। তাই আপনাগরে আইজ ফ্রি চা খাওয়ামু।
বেশ তো ভালো । তা চাকরি করে কোথায়? প্রশ্ন করে আবীর। তা তো জানি না। তবে এখন ঢাকার বাইরে আছে। কবে আইবো
ঠিক নাই।
চৈতি আর আবীর একে অপরের মুখের দিকে তাকায়। কিছু যেন অনুমান করতে চেষ্টা করে তারা। ওদের এই ভাষা টুকু গাবলুর বোধগম্য নয়। চা খেতে খেতে আবীর বলে, শুন, চৈতি তোর দিদির জন্য খুব ভালো একটা চাকরি পেয়েছে। এক ভদ্র লোকের বাচ্ছাকাচ্চার দেখ ভাল করবে, স্কুলে নিয়ে যাবে। মাসে টাকা দিবে পাঁচ হাজার। তোর দিদিকে বলিস,ঐ কাজটা ছেড়ে দিয়ে এই চাকরিটা করতে। তোর দিদির কাছ থেকে শিউর হয়ে আমাদের জানাবি কিন্তু আবার।এই কথা গুলোর সমর্থন চৈতির চোখে মুখেও ধরা পড়ল।
দিদি আসবে এই প্রতীক্ষায় পহেলা বৈশাখের দিনটিতেও ঘর থেকে বের হয়নি গাবলু। সে আর মণিকা সারাদিন অপেক্ষায় ছিলো কখন দিদি আসবে। খুশির খবরটা কে আগে দিদিকে শুনাবে তা নিয়ে কয়েক দফা ঝগড়াও হয় ওদের মাঝে। যদিও দিদির কথা অনুযায়ী আজ তার আসার কথা নয়। তবুও আজকের দিনে দিদিকে গাবলুর মনে পড়ছে খুব। চৈতি আর আবীরের কথা মনে পড়ে তার। আবীর ভাই হয়তোবা লাল পাঞ্জাবী আর চৈতি আপা নিশ্চয়ই পাতলা হলুদ জামদানি শাড়ী পড়েছে। দুজনে হয়তোবা হাত ধরে রাস্তায় নেচেও ছিল কিছুক্ষণ। এগুলো ভাবে গাবলু। তবে দিদির কথা মনে পড়লে অন্য সকল চিন্তা আবার উধাও হয়ে যায়। দিদিকে খুশির খবরটি জানানোর তর সইছেনা আর। দিদি কি জানে দীপকদা তার খবর নিয়েছিল। শুধু তাই নয় তাদের জন্য মিষ্টি আর সন্দেশও পাঠিয়েছে। আর একটা প্রস্তাবও দিয়ে গেছে সে।
গাবলু আর মণিকার সকল প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে মল্লিকা ফিরে আসে ১লা বৈশাখের ঠিক দুদিন পরে। অনেক ক্লান্ত সে। যেন শরীরের ভারে এখুনি নুয়ে পড়বে। মণিকা দিদিকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে। বলে, দিদি জানো দীপকদা আমাদের জন্য মিষ্টি আর সন্দেশ পাঠাইছে। কইছে ওনার বাপ নাকি মারা গেছে। তোমারে আবার ঘরে বউ কইরা নিবো। কথাগুলো মল্লিকা শুধু মাত্র কানেই শুনল,
তার চোখের পাতা নড়ল না এতটুকুও। মুখের কোন রেখাতেই আনন্দের ঝিলিক দেখা যায় নি। শুধুই ক্লান্তির ছাপ। এ্যাই নে, টাকাটা ট্যাংকে রেখেদে। কত আছে এখানে? প্রশ্ন করল গাবলু,
পাঁচ হাজার। যেন অনেক কষ্ট করেই উত্তরটা দেয় মল্লিকা। পাঁচ হাজার টাকার কথা শুনে চোখ কপালে উঠে গাবলুর। দিদি পাঁচ দিনে পাঁচ হাজার টাকা রোজগার করে ঘরে ফিরেছে। এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কি হতে পারে? চৈতি আপার মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতনের চাকরির খবরটা দিদিকে জানানোর বাসনা নিমিষেই ধূলিসাৎ হয়ে যায় গাবলুর মন থেকে।
হাত মুখধুয়ে সামান্য কিছু খাবার পেটে দিয়েই সেদিনের মত ঘুমাতে যায় মল্লিকা। সেই সাথে মণিকাও দিদির গলা জড়িয়ে ঘুমিয়ে যায়। তবে মল্লিকা তখনও ঘুমাতে পারেনি।
মল্লিকাদের বস্তিতে কোলাহল গভীর রাত পর্যন্তও থামে না কোন দিন। আর রেল লাইনের ধারে বসতি হওয়ায় সারারাত আন্ত-নগর ট্রেনের শব্দে তাদের বসতি কেঁপে উঠে। কিন্তু তাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটেনা এখন আর। বরঞ্চ পরিস্থিতি আর অভ্যস্ততায় সেগুলো যেন এখন ঘুমানোর জন্য চরম এক অনুষঙ্গ। তবুও মল্লিকার ঘুম ভেঙে গেল মাঝ রাতের অনেক আগেই। তার সমগ্র অতীত যেন বর্তমান হয়ে ভাসতে থাকলো তার দু’চোখের পর্দায়।
কি সুন্দরই না ছিল দূর্গাপুর গ্রামে আম কুড়ানোর সেই সোনালী দিনগুলি। তিন ভাইবোনের সংসারে মা ছিলেন ছায়াদানকারিণী বৃক্ষের মত। বাবার অনুপস্থিতি কোনদিন বুঝতে দেননি তিনি। পূজা-অর্চনা আর তের পাবনে গ্রামে সব সময় উৎসব লেগেই থাকতো। ঢেঁকিতে চাল কুটার ধুম্ ধুম্ শব্দ শোনা যেত বার মাস ধরে। তাদের সাধারণ জীবনে দেবীর প্রসাধ হয়ে আসত পহেলা বৈশাখ।
পহেলা বৈশাখ সকাল বেলা তিন ভাই বোন মিলে নদী থেকে স্নান পর্ব সেরে আসত। ঘরে ফিরলেই মা লক্ষীরাণী আবার শুচিতা রক্ষায় হলুদ,সরিষা,দূর্বা আর বেলপাতা ভেজানো জ্বল তাদের গায়ে চিটিয়ে দিত। খই,মুড়ি, চিড়া, দুধ-কলা দিয়ে তৈরি বিশেষ পিঠা দিয়ে পেট চুকিয়ে চলে যেত বৈশাখী মেলায়। ছোট দুই ভাইবোনকে খুব সাজিয়ে ঘুচিয়ে নিলেও মল্লিকা নিজে যেত খুব সাধারণ বেশে। খুব সাধারণ একটা থ্রি পিস গায়ে জড়িয়ে আর দুই হাতে কিছু কাঁসের চুড়ি পড়ে মেলায় ঘুরে বেড়াত সে। মন দিয়ে শুনলে যে কেউ তার চলার সময় চুড়ির কিঙ্কণ শব্দ পেত।
সেদিন ছিল মঙ্গলবার। মেলায় সাজানো দোকানগুলো ঘুরে দেখতে দেখতে যেন কোন স্বর্গলোকের আশীর্বাদে মুখোমুখি হয়ে গেল ওরা দু’জন।দীপক আর মল্লিকা। মল্লিকা পাশ কাটিয়ে যেতে চাইল, কিন্তু পারলো না। দীপক হাত বাড়িয়ে আগলে রাখল তাকে।
এমন সুন্দরী মেয়ে জীবনে আর কোনদিন দেখেনি সে। তাই চোখ আর মনের সাথে প্রতারণা করতে পারলো না। প্রথম দর্শনেই মুগ্ধ দীপক মল্লিকার প্রেমে পড়ে গেল। মল্লিকাও বেশীদিন নিজেকে মুক্ত রাখতে পারলো না। দীপকের ভালোবাসা আর নম্রতার কাছে নত হয়ে ধরা দেয় তার বুকের খাঁচায়। তখন ও সামাজিক প্রথা, রীতি-নীতি আর কুসংস্কারের বেড়াজালের আচড় লাগেনি তাদের মনে। তাদের কাছে সবকিছুই মনে হত রঙিন।
দীপককে জীবনের চেয়েও বেশী ভালোবাসত মল্লিকা। দীপক ঢাকায় পড়াশুনা করত আর মল্লিকা গ্রামে। ওদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি। প্রতিদিন দীপককে একটি করে চিঠি পাঠাতে কখনোই ভুল হতো না মল্লিকার। প্রতিদিন তার জন্য মন্দিরে পুঁজো ও দিতো সে। দীপক ঢাকা থেকে গ্রামে আসলে মায়ের গোছরে অথবা অগোচরে তার জন্য খাবার তৈরি করে পাঠাত সে। নিজেদেরকে মনে হতো রজকিনী আর চণ্ডীদাস। এভাবেই চলে গেল একটি বছর।
দীপক খুব ভালোভাবেই জানত তার বাবা হীরালাল চক্রবর্তী তাদের এই সম্পর্ক কোন কালেই মেনে নিবে না। তাই দীপক মনে মনে স্থির করল আগামী পহেলা বৈশাখে তারা পালিয়ে যাবে। বিয়ে করে সংসার করবে। মল্লিকাও কোন আপত্তি করলো না। দীপকের হাত ধরে যেকোনো পথেই হাটতে প্রস্তুত সে। হোক সে পথ বন্ধুর, কন্টকাকীর্ণ কিংবা কুসুমাস্তীর্ণ।
বুধবার পহেলা বৈশাখ তারা সত্যি পালিয়ে আসল ঢাকায়। প্রথমে মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করল তারা তারপর উঠল দীপকের বন্ধুর বাসায়। সেখানে হাজার বছর মনে রাখার মত একটি মধুরাতও পার করলো তারা। এর পরের সমীকরণগুলো আর ঠিক নেই। সব কিছু এলোমেলো। হীরালাল চক্রবর্তী তাদেরকে বের করে ফেললেন। বিচারের নামে প্রহসনের স্বীকার হয় মল্লিকা। সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার নামে সমাজ সেবক আর সমাজপতিদের যে কুৎসিত কালো রূপটা মল্লিকার সামনে দৃশ্যায়িত হয় তা ভাবতেই মল্লিকার চোখ জ্বলে ভেসে যায়।
দীপকের প্রতি মল্লিকার কোন ভালোবাসা অবশিষ্ট নেই এখন আর। তাকে ঘৃণা করে না, তবে তাকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবে না।
কেননা মল্লিকার জীবনের এতসব অন্ধকার ঘটনার নেপথ্যের নায়ক সে। সেই দীপক আবার মল্লিকাকে ঘরে নেওয়ার আশা করে কি ভাবে?
তাহলে সে কি এতদিন বাবার মৃত্যুর অপেক্ষায় ছিল? আর একজন মানুষের মৃত্যুতেই কি অন্য সবার মুখে তালা লেগে যাবে?
অন্যান্য ন্যায়বান সমাজপতি, কুসংষ্কারী বক ধার্মিক আর ধর্মভীরু মানুষদের চোখ রাঙানি কি সে বন্ধ করতে পারবে? যখন গাঁয়ের লোকেরা অন্যায় অপবাদ দিয়ে মল্লিকার মুখে থু থু ছিটিয়েছে, যখন গায়ের মোড়লরা তাকে বামন, দুঃশ্চরিত্রা, নষ্টা, বেধরমী বলে আখ্যা দিয়ে তাকে স্বধর্ম ত্যাগে উদ্ধত হয়েছে, যখন তাকে এবং তার পরিবারকে সমাজ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, তখনতো দীপক একবারের জন্যও মুখ খোলেনি, প্রতিবাদ করে বলেনি যে সব দোষ শুধু মল্লিকার একার নয়, স্বীকার করেনি যে সেও সমান দোষে দুষ্ট। বরঞ্চ নিজের বংশ মর্যদার কথা ভেবে নিজেকে সাধু প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। এত অপমান সহ্য করতে না পেরে মল্লিকার মাও চলে গেলেন বাবার কাছে। মল্লিকা কি এই সব কিছু ভুলে গেছে? কখনোই নয়।
দীপকের কাছে আর কখনোই ফিরে যাবে না মল্লিকা। সে ঐ গ্রামেও কখনো ফিরে যাবে না আর যা কিছু হারিয়েছে তা আর ফিরে পেতে চাইবে কেন?
যে মল্লিকা গত বছর পহেলা বৈশাখে ফুলশয্যার রাতে নিজের সবকিছু উজাড় করে দিয়েছিলো দীপককে। সেই মল্লিকা এই পহেলা বৈশাখের রাতে অন্যের কাছে ভোগ্যপণ্য হয়, নিজের রূপের পসরা মেলে ধরে শুধুমাত্র জীবিকা নির্বাহের তাগিদে, ছোট ভাইবোনদেরকে আলোর পথ দেখাতে নিজে চলে যায় অন্ধকার পথে।এর চেয়ে বড় আলকিতো অন্ধকার মল্লিকার জীবনে আর কি হতে পারতো।
আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ আসল বহুদিন হয়ে গেল। মেঘের সাথে যুদ্ধ করে সূর্য এখন আর কুলিয়ে উঠতে পারে না। কালো মেঘ পুরো আকাশ ঢেকে রাখে দিনের অনেকটা সময় ধরে। এই রকম দিনে গাবলু এখন আর চা বেচতে আসে না। তার দিদির বারণ।
তবুও মাঝে মাঝে দিদি যখন বাসায় থাকে না তখন সে চলে আসে টি.এস.সি তে। যেমনটি আজো আসল। এই এলাকা আর এলাকার মানুষগুলো তার খুব চেনা।
চৈতি আর আবীর চেনা ভঙিতে চা খাচ্ছে। আবীর বলে, মল্লিকার জন্য খুব কষ্ট লাগে। মেয়েটার জন্য আমরা কিছুই করতে পারলাম না।যে যেভাবে চলছে চলতে দাও, একটা মানুষের কল্যাণে যদি আরো দুটি মানুষ সুখে থাকে, ক্ষতি কী? উত্তর দেয় চৈতি।
সেদিন সন্ধ্যায়ও অনেক বৃষ্টি হচ্ছিল। এই বৃষ্টির মধ্যেও এক হাতে একটি ছাতা আর অন্যহাতে ব্যাগ নিয়ে একটি পাকাবাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে মল্লিকা। সে তার কাজে যাবে। কবে ফিরে আসবে কিছু বলে যায়নি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
%3C%21-- %3C%21-- অসাধারণ
সুন্দর সকাল অসাধারণ লেক্লেনতো ভাই ! সুন্দর একটা থিম পেলাম !....
সেলিনা ইসলাম গল্পের ধারাবাহিকতা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার । ভাল লাগল ধন্যবাদ ।
সেলিনা ইসলাম গল্পের ধারাভিকতা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার । ভাল লাগল ধন্যবাদ ।
মোঃ শামছুল আরেফিন রবিউল আলম ভাইয়া আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
মোঃ শামছুল আরেফিন সুমন ভাইয়া আমিতো বলতে গেলে কপাল গুনে বিজয়ীর তালিকায় ঠাই পেলাম। কিন্তু অনেক ভাল ভাল লেখা যে বাদ পড়ে যাচ্ছে সেটি ভাবতে অনেক খারাপ লাগে।
রবিউল আলম রবু অনেক ভালো লাগলো লেখাটি অনেক সুন্দর
বিষণ্ন সুমন হয়ত তোমার কাছে আমার আশাটা বেশি ছিল, হলেই বা চতুর্থ তবুও বিজিতদের একজন হতে পেরেছ, সেই জন্য তোমায় অভিনন্দন.
দীপক সাহা বিজয়ী ! আন্তরিক অভিনন্দন তোমাকে.

৩১ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪