কলেজ এ যাচ্চিলাম সেদিন । হঠাৎ করে প্রচণ্ড বৃষ্টি নামল । তাড়াতাড়ি পাশের চায়ের দোকানটাতে ঢুকে পড়লাম । ওরনা দিয়ে মাথা টা মুছলাম । বৃষ্টি আমি খুব ভয় পাই । বৃষ্টির পানি মাথায় পরলেই জ্বর আসে । বিরক্তিকর বৃষ্টি । কি আর করার। চা মামাকে এক কাপ চা দিতে বললাম । তখন বাজে আঁটটা । দেখলাম দোকানে আমি ছাড়া আর কেউ নেই । এত সকালে এমন ব্রিস্রি বৃষ্টি কখনও নামে ? মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। বৃষ্টি থামার কোনও নাম না দেখে বেঞ্চে গিয়ে বসলাম। চা মামা বললেন’’ মামা চা’’ । চাটা হাতে নিলাম । একটু পর আমার পাশ থেকে একটা অউয়াজ ভেসে আসল ’’আহ কি সুন্দর বৃষ্টি!’’ কলেজ এর চিন্তায় আত ব্যস্ত ছিলাম যে বুঝতেই পারি নি কখন একজন মানুষ আমার পাশে এসে বসেছে। ঘার ঘুরিয়া দেখলাম একজন বৃদ্ধ হাপাচ্ছেন । মর্নিং ওয়াক এ বেরিয়েছিলেন নিশ্চয়ই । কে জানত যে এই সুন্দর রোদেলা সকাল বদলে সবার ভগান্তি বারাতে বৃষ্টি আসবে। একটু পরে বৃদ্ধ আমার দিকে তাকালেন আর বললেন’’ কি ব্যাপার দাদু? এই সকাল বেলা এখানে?’’ আমি একটা ভদ্রতার হাসি দিয়ে বললাম’’কলেজ এ যাচ্ছিলাম দাদু। তার মধ্যে এই ব্রিস্রি বৃষ্টিটা নামল। আমার আবার একটু বৃষ্টির পানি গায়ে লাগলেই জ্বর এসে যায়। সামনে আবার পরীক্ষা তো।’’ ‘’হুম পরীক্ষা। এই পরীক্ষা পরীক্ষা করেই সারা জীবন শেষ করে দিলাম। যখন স্টুডেন্ট ছিলাম তখন পরীক্ষা পরীক্ষা করে আর চাকরি তে ঢুকে টাকা টাকা করে । মনে পরে আমার সেই কলেজ জীবনের কথা । সারা দিন বই আর উপর মুখ থুব্রে পরে থাকতাম। আমার কিছু বন্ধু ছিল ওরা প্রায়ই বৃষ্টিতে ভিজত, পরীক্ষা নিয়ে তাদের একটু কমে মাথা ব্যথা ছিল । আমকেও ডাকতো । আমি বলতাম এখন বৃষ্টিতে ভিজব না।জ্বর আসবে । তখন আমার একটা বন্ধু বলত ‘’তুই ভয় পাশ দেখে তোর জ্বর আসে একদিন একটু বৃষ্টি টাকে একটু ভালবেসে ভিজিস দেখবি আর জ্বর আসবে না।কিন্তু আমার কাছে সেগুলকে নিতান্তই অর্থহীন মনে হত । এই বুড়ো বয়সে এসে আমার চোখ ফুটেছে দাদু । জীবনের বিশাল দৌড় শেষে আজ যখন একটু অবসর পেয়েছি তখন যেন শেগূলোর অর্থ বুঝতে পারছি । সারা জীবন টাকার পিছে ছুটেছি । আজ মনে হয় সেই টাকাই কী সব ?‘’ দাদুর কথা গুলো আমার কাছে একদম অবাস্তব মনে হল। আজ কাল কার এই ব্যস্ত জিবনে কারো বৃষ্টি নিয়ে ভাবার সময় আচ্ছে। যেটুকু সময় বৃষ্টি নিয়ে ভাবব সেই সময়টাউতো নষ্ট। আর যদি কেউ ভাবেও তাউ ভাবতে হবে প্রফেসসইনালি । আর যাদের টাকা আছে তারা কি বুঝবে টাকার মর্ম। দাদুর কথাটা শুনে চা মামা বলে উঠলেন’’ জাগোর পইশা আছে হেরা কি বুঝব পইসার কি দরকার ।আমগর মত গরীব রাই না বুঝি পইশার কত দরকার । ‘’ দাদু কোনও উত্তর করলেন না। আমি বললাম’’ টাকা পয়সাও তো অনেক জরুরি দাদু জিবনে। হইত দাদু আজ আপনার টাকা আছে বলেই হয়ত আপনি আইশব নিয়ে ভাবতে পারছেন । হইত বা আপনার সেই বন্ধুরা এখন সেইটা নিয়ে আফসস করছে যে কেন তারা তখন সেই বৃষ্টিতে ভিজেছিলেন।‘’ দাদু একটু হাসলেন তারপর বললেন ‘ ওরা সেই দিন বৃষ্টিতে ভিজেছিল বলে কি তারা পরা শোনা করে নি ? ওদের আর আমার মধ্যে একটাই পার্থক্য ছিল ওরা বুঝতে পেরেছিল পরা শোনা টাকা পয়শা জাই বল সেটা জীবনের একটা গুরত্ত পূর্ণ অংশ কিন্তু শুধুই একটা অংশ, সম্পূর্ণ জীবন নই। আমি সেই পরা শোণা টাকেই জীবন বানিয়ে ফেলেছিলাম। আটাই আমার ভুল ছিল । আমি আমার জীবন পার করে এসেছি চোখ বন্ধ করে আজ যখন চোখ খুলেছি। তখন আফসস হচ্ছে যে পেছনে কতইনা সুন্দর জিনিস না দেখে এসে পরেছি। দাদু একটা কথাই বলি জাই কর আর তাই কর জিবনটা চোখ বন্ধ করে পার কর না জাতে আমার মত বুড়ো হয়ে বড় হতে হয় তুমি বড় হয়ে তারপর বুড়ো হয়ো। আমি এখন উঠি।‘’ বৃষ্টি থেমে গেসে। দাদু উথে দাঁড়ালেন ‘’তোমার সাথে কথা বলে ভালই লাগল দাদু। ভাল ভাবে পরা সোনা কর আজ আমি যাই।‘’ আমি একটা ভদ্রতার হাসি দিলাম কিছু বললাম না। সেই দিন কলেজ থেকে ফেরার পথে ঝুম ঝুম করে বৃষ্টি নামল সেই ববৃষ্টি তে আমি ভিজলাম বৃষ্টি টাকে ভালবেসে ।তখন আমার সেটাকে একদম এ অর্থহীন মনে হল না। সব চেয়ে অদ্ভুত ব্যপার হচ্ছে সেদিন আমার জ্বর আসে নি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।