দিগন্তের শেষ প্লাবণ

বর্ষা (আগষ্ট ২০১১)

এ কে এম মাজহারুল আবেদিন
  • ২৯
  • 0
উত্তাল শ্রাবন ঝড়ে ভেসে চলেছে দিগন্ত,
ভেসে চলেছে অপরাপর জীবন নৌকো |
উত্তরের শেষ সীমানা থেকে দক্ষিনে,
পূর্বের অশান্ত ঘনকালো রেখা থেকে পশ্চিমে,
শুধু দিগন্ত প্লাবিত ঝড়ের মাতম খেলা |

ভেসে যায় খাল বিল নদী,
ভেসে যায় গ্রামের মেঠো পথ,
ভেসে যায় শহর বন্দর,
ভেসে যায় বনের পশু পাখি,
আর ভেসে যায়,
রক্তে ভেজা মানুষের শরীর |

রক্তের প্লাবণ বয়ে চলে
শ্রাবণ মেঘের আসুরিক খেলার সাথে |
ভেসে যায় গনি মিয়ার গাভীন গোয়াল,
পেছনে পেছনে ভেসে আসে মনু মিয়ার ছিন্ন ভিন্ন শরীর,
পোয়াতি সালেহার নগ্ন মৃত দেহ |

দিগন্তের শেষ সীমানার দিকে ভেসে চলে
নিথর কালো শ্রাবণ মেঘ,
পৃথিবীকে ধুইয়ে দিয়ে তার সব কলঙ্ক থেকে |
তার সাথে ভেসে চলে, নধর গাই, মতি মিয়া, গনি মিয়া,
সালেহা, আরো নাম না জানা বহু গায়ের বধু, কৃষক,
রিক্সা চালক, স্কুল ছাত্র, বনের পশু, ঘর বাড়ি |

সবার শেষে,
দিগন্ত কাঁপিয়ে ভেসে আসে - শব্দ |
গুলির, বোমার, মর্টার শেল আরো আরো অনেক নাম না জানা
আত্মা কাঁপানো, মৃতের আর্তনাদ মুছে দেওয়া শব্দ |

শ্রাবনের কান্না মৃত দেহ দেখে থামে না,
থামে না কোনো শব্দেও |
শুধু বেড়ে চলে দিগন্তকে ভাসিয়ে দিয়ে,
একূল ওকূল চরাচর সব ভাসিয়ে দিয়ে,
মেঘের গর্জনে বোমার আওয়াজ ঢাকার বৃথা চেষ্টায়,
শেষের আশ্রয়ের পানে যেন |

প্রান্তরে পায় না কোনো ঘর,
সব ভেসে গেছে বাংলার রক্তে,
শ্রাবনের প্লাবিত কান্নায় মুছে গেছে হত্যার দাগ,
তবু মুছতে পারেনি রক্ত লাল ঘরের কপাট |
সে ব্যথায় কাতর শ্রাবণ কেদে চলেছে
জীবনের শেষ কান্না যেন |

ম্লান হতে হতে মিলে গেছে বাংলার পানির স্বচ্ছ রঙ,
মৃত রক্তের রঙ, মুছিয়ে দিয়েছে সকল স্বচ্ছতা,
গহণ বর্ষার জল, সেই ম্লানতা বাড়িয়ে দিয়েছে যেন |

শুধু থেমে নেই বজ্রের হুঙ্কার|
থেমে নেই আধার কালো করা মেঘের বর্ষণ |
তাদের সব কান্না, সব হুঙ্কার, বাংলার বাতাসে দিয়ে চলেছে কি এক নতুন বারতা যেন,
আকাশের মেঘের দোলায়, ঝরতে থাকা বৃষ্টির প্রতিটি ফোটায়,
বর্ষার ভেসে যাওয়া পানির স্রোতের ধারায়,
শুধু যেন একই বাণী, ফিস ফিস ফিস ফিস করে
বলে চলেছে বাংলার প্রকৃতির কানে কানে যেন |

"আসছে, সে আসছে,
সকল রক্তের ভেলায় চড়ে,
শ্রাবণ ঝড়ের তীব্র স্রোতে ভাসতে ভাসতে,
বাংলার মাঠ নদী ক্ষেত বিদীর্ণ করে,
আকাশের প্রতিটি মেঘের ফাঁক গলে,
প্রতিটি ঘরের রক্তের দাগ মাড়িয়ে,
প্রতিটি পোয়াতি মায়ের কোল ভরিয়ে,
সকল মুক্তি পাগল মানুষের শক্ত কাধে ভর দিয়ে,
সে আসছে |
বাংলার বর্ষায় ভেসে যাওয়া প্রতিটি ইঞ্চি মাটি কণা জুড়ে,
স্বাধীনতা আসছে |"
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সূর্য এক কবিতাতেই পুরো নয়মাস তুলে দিলে! বেশ ভাল চিন্তার ফসল। স্বাধীনতা আসে না কেড়ে নিতে হয়। ভাল লিখেছ
মনির মুকুল ব্যতিক্রম বাবনায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। ভালোই লিখেছেন। অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
খোরশেদুল আলম "আসছে, সে আসছে,/সকল রক্তের ভেলায় চড়ে,/শ্রাবণ ঝড়ের তীব্র স্রোতে ভাসতে ভাসতে, // কবিতায় অনেক শক্তি শক্তি আছে, অনেক ভালো লাগলো কবিতা।
Akther Hossain (আকাশ) আমার মতে দীর্ঘ কবিতার চেয়ে তুলনা মূলক অল্প দীর্ঘ কবিতা আকর্সনীয় হয় !
sakil হুম , বেশ মননশীল লেখা . ভালো লেগেছে . শুভকামনা রইলো .
মিজানুর রহমান রানা সকল মুক্তি পাগল মানুষের শক্ত কাধে ভর দিয়ে, সে আসছে | ভোট গৃহীত হয়েছে, শুভ কামনা বন্ধু।
নিরব নিশাচর ................. এ স্যালিয়ুট ফ্রম নিরব'স কর্নার... সত্যিই ভালো লাগলো...
মোঃ ইকরামুজ্জামান (বাতেন) সুন্দর ভাবে প্রকৃতির মত্ততা প্রকাশ করলেন। শুভ কামনা বন্ধু।
পন্ডিত মাহী অসাধারণ লাগলো

০২ জুন - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪