পেটকাটা, বিরিশাল জেলার কোতয়ালী থানার একটি গ্রামের নাম। ও গ্রামের মুন্সী বাড়ির গর্বিত সন্তান মরহুম রসুল আলী মুন্সী আমার বাবা। তিনি আমাকে জন্ম না দিলে হয়তো আমি পৃথিবীর আলোর মুখ দেখতাম না। আমি আমার বাবার ছোট ছেলে। তাই আমর প্রতি বাবার ভালোবাসার কমতি ছিল না। বাবা ঝীবিত থাকা কালিন তাকে দেখতাম মসজিদে নামাজ পড়াতেন। গ্রামের মসজিদের ঈমাম ছিলেন তিনি। আমার বাবার মৃত্যু বরণ ঘটনা একটা ট্রাজেডি, একটি জীবন্ত উপন্যাস। যা না বললেই নয়, আমার সৎ দুই ভাই এবং আপন পাঁচ ভাই এক বোন এর মধ্যে আমরা জীবিত আছি সৎ দুই ভাই এবং আমরা আপন দুই ভাই। আর বাকি সবগুল ছোট কালে বিভিন্নভাবে মৃত্যু বরণ করেন। মায়ের মুখে শুনেছি আমার বাবা পাগল ছিলেন। তবে তার পাগলামী বেশী দিন থাকতো না। তিনি প্রতি বছর পাগল হয়ে যেতেন এবং পনের বিশ দিন একটানা রাস্তায় পাগলামী করতেন। আমার বয়স এখন তেত্রিশ বছর চলে, আমি যখন পাঁচ-ছয় বছরের তখন আমার বাবা এক মর্মান্তিক ঘটনায় মৃত্য বরণ করেন। শুনেছি বাবা আমাদের গ্রামের অন্য এক ইউনিয়ানের গিয়ে পাগলামী করার কারণে ওই গ্রামের লোকজন প্রচন্ড রকম মারধরসহ বুকে আঘাত করে, যে আঘাতে আমার প্রিয় বাবার বুকের কলিজা পঁচে যায় এবং ধুকে ধুকে সাত দিন পর বাবা মৃত্যুর কোলে ঢলেপড়ে। বাবার পাগলামী করায় মা আমাদের দুই ভাইকে নিয়ে বরিশাল শহরে আলোকান্দা এলাকায় আশ্রয় নেয় এবং অন্যের বাসায় কাজ করে আমাদের মানুষ করার চেষ্টা করে, অথচ আমরা কেউ মানুষ হলাম না! বাবার মৃত্যু আমরা দেখিনি। বাবা মারা যাবার তিন দিন পর প্রমের প্রতিবেশী এক গবীব মহিলার মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আমরা পেটকাটা গ্রামে ছুটে যায়। গিয়ে দেখি আমার বাবার কবর। তখন বাবার কষ্ট বুঝি নাই, এখন বুঝি বাবাকে কত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, সমাজের মুখোশধারী অমানুষগুলো। আমরা চার ভাই অথচ বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে পারেনি। কারণ আমরা চার ভাই মানুষ নামে কলংক। কলংক বলেছি এই কারণে যে আমার সৎ দুই বড় ভাই মোস্তফা মুন্সী সেও পাগল সংসার ধর্মের প্রতি কোন খেয়াল নেই। আমার দ্বীতিয় সৎ ভাই মোফাজ্জল মুন্সিও একধরনের পাগল। তারও পৃথিবীর সংসার ধর্মের প্রতি খেয়াল নেই। আমার আপন বড় ভাই মোঃ নাছির মুন্সি বরিশাল শহরের একজন রিক্সা চালক। তার স্ত্রী এ দুই ছেলে আছে। কিন্তু নাছির মুন্সীও পাগল। সেও প্রতি বছর আমার বাবার মতো পনের বিশ দিন পাগলামী করে। তখন তার সঙসারের প্রতি কোন হুস থাকে না। আমার মা তার জীবনের শ্রমের সব টাকা আমার ভাইয়ের চিকিৎসায় ঢেলে দিয়েছে কিন্তু কোন লাভ হয়নি। মাকে মাঝে মাঝে বলি মা দাদা আর ভালো হবে না, এটা বংশগত সমস্যা। যে টাকা খরচ করবা তাই জলে যাবে। অথচ মা শুনে না, মায়ের মন থামিয়ে রাখা যায় না। আমি বশির মুন্সি কিছুই হলাম না! যদি সন্ত্রাসী হতাম তাহলে জীবনে অনেক ধন সম্পদের মারিক হতে পারতাম। এবং বাবা হত্যার প্রতিশোধও নিতে পারতাম। কিন্তু আমার বাবার কপাল খারাপ, তা না হলে কেউ পাগল সন্তানদের জন্ম দেয়? আমি পাগল হইনি, তাই মা আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতো। কিন্তু আমি বশির মুন্সি অষ্টম শ্রনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। যে শিক্ষার কোন মূল্য নেই। তবুও এই মূল্যহীন শিক্ষা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ চালিয়ে যাচ্ছি লেখারেখি। জাতীয় পত্রিকায় এখন আমার গল্প, কবিতা, ফিচার ছাপা হয়। লেখা ছাপা হলে ভালই লাগে আমার। কিন্তু আমার প্রিয় বাবা জানে না, কবিতা লিখি বলে সমাজের একশ্রেনীর মানুষ আমাকে পাগর বলে! কিন্তু বাব বিশ্বাস কর আমি পাগল না। তুমি বল বাবা পাগল হলে কি কেউ কবিতা লিখতে পারে?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফাতেমা প্রমি
কষ্টের রোজনামচা...অনুগল্প বলা চলে...আরো লিখবেন,আশা করি.
সূর্য
পুরো গল্পটাই কেমন যেন লেগেছে যতক্ষন না শেষ তিনটা লাইন পড়লাম........... এই লাইন তিনটা আমরা যারা কবিতা লিখি তাদের জন্য অতীব সত্য কথা...............
মিজানুর রহমান রানা
কবিতা লিখি বলে সমাজের একশ্রেনীর মানুষ আমাকে পাগর বলে! কিন্তু বাব বিশ্বাস কর আমি পাগল না। তুমি বল বাবা পাগল হলে কি কেউ কবিতা লিখতে পারে?------Fine. Thanks
মামুন ম. আজিজ
ডায়েরীর যেন ছেঁড়া পাতা। দুই নামে একই গল্পের এক টুকরো এখানে, আর এই টুকরোর কিছুটা আপনার অন্য গল্পটিতে। কর্তৃপক্ষকে বলে একটা ( যেটা সম্পূর্ণ) রাখতে বলুন। ...........সামনে আশা করছি আরও সুন্দর গল্প কবিতা লিখবেন।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।