কষ্টকে যে ভয় পায় কষ্টতে সে কষ্ট পায় । কষ্টতে যে কষ্ট পায় সে কষ্ট থেকে বেচে থাকতে চায় । কষ্টই যার জীবনের উপহার হয় তার আর কোনকিছুতেই কষ্ট হয়না ।
পল্লবের অনেক দূরসম্পর্কের আত্মীয়া নাসরিন । এই সম্পর্ককে আত্নীয় কে আত্নীয় বলা যায়না । পল্লবের প্রতিবেশী পাশের বাড়ি নাসরিনের খালার বাড়ি । সে বাড়িতে আসা যাওয়ার সুবাদে পল্লবের সাথে নাসরিনের খুব ভাল বন্ধুত্ব আর সে কারণে নাসরিনের পরিবারেও পল্লবের খুব সমাদর। নাসরিনের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী আঁখিকে নিয়ে নাসরিন তার খালার বাড়ি এলো বেড়াতে । একথা যখন পল্লব জানতে পারল সে গেল নাসরিনের সাথে দেখা করতে । সেখানে গিয়ে সে নাসরিনের সাথে আঁখিকে দেখতে পেল । আখির অবয়ব মুখ দেখে পল্লব মুগ্ধ হলো । প্রথম দেখাতেই আঁখিকে তার প্রচণ্ড ভাল লেগে গেল সে অপলক চেয়ে রইল কিছুক্ষণ আখির দিকে । কিন্তু সে আঁখিকে কিছুই বল্লনা । পল্লব নাসরিনের ভাল মন্দ খোজ খবর নিয়ে বেশকিছুক্ষন তাদের সাথে সময় কাটিয়ে সে বড়ি চলে গেল ।
নাসরিন আঁখিকে নিয়ে চলে যাওয়ার পর পল্লব একা একা মনে মনে আঁখিকে নিয়ে প্রেমের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে । স্বপ্ন দেখতে দেখতে দুদিনেই সে সিদ্ধান্ত নিলো সে আঁখিকে তার ইচ্ছার কথা জানাবে । তার জন্য মাধ্যম হিসেবে নাসরিনকেই কাজ করতে হবে । পল্লব নাসরিনকে ফোন দিল নাসরিন ফোন ধরে জানতে চাইল কেমন আছো ? পল্লব বলল ভাল নেই । নাসরিন বলল কেন ? পল্লব বলল অবশ্যই বলব এবং তোমাকেই বলব । নাসরিন বলল হ্যাঁ বল । পল্লব বলল আমার জন্য তোমাকে একটা কাজ করতে হবে । নাসরিন বলল বলে ফেল । পল্লব বলল ফোনে নয় । নাসরিন বলল চলে এসো আমাদের বাড়ি । পল্লব বলল হ্যাঁ আমি দুয়েকদিনের মধ্যেই তোমাদের বাড়ি আসব ।
পল্লব যখন নাসরিনদের বাড়ি গেল নাসরিন আঁখিকে সাথে নিয়ে পল্লবের সাথে সারাদিন কাঁটাল । আখির সাথে পল্লবের অনেক কথা হল কিন্তু আসল কথা কাজের কথাটা এখনও পল্লবের মনে মনেই আছে । এখনও পর্যন্ত নাসরিনকেও বলা হয়নি । সন্ধে হওয়ার পর যখন আঁখি বড়ি চলে গেল তখন পল্লব নাসরিনকে তার ইচ্ছের কথা বলল এবং অনুরোধ করল আঁখিকে বলার জন্য । এবং পরদিন সকাল বেলা পল্লব বাড়ি চলে এলো ।
সারাদিন ধরে পল্লব নাসরিনের ফোনের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল । পল্লব জানে নাসরিনের কাজ হয়ে গেলে নাসরিন নিজেই পল্লবের কাছে ফোন করবে সে জন্য পল্লব ফোন দিচ্ছেনা । অপেক্ষায় সারাদিন কেটে গেল নাসরিনের ফোন এলোনা । পরদিন ও এভাবে অপেক্ষায় অপেক্ষায় বিকাল হয়ে গেল কিন্তু কোন ফোন নেই । পল্লব ধৈর্য হারিয়ে বিকাল বেলা সে নাসরিনকে ফোন দিল । নাসরিন ফোন ধরার পর পল্লব অতি আগ্রহের সাথে জানতে চাইল কি খবর ? নাসরিন সরাসরি বলল খবর ভালনা । পল্লব বলল কেমন ? আঁখি কি বলেছে ? নাসরিন বলল আঁখি বলেছে সম্ভব নয় । পল্লব আর কোন প্রশ্ন না করে সে বলল আচ্ছা ঠিক আছে ।
পল্লব এখনও আঁখিকে স্বপ্ন দেখে কিন্তু তার সাথে প্রেমের স্বপ্ন এখন আর সে দেখেনা । প্রায় এক সপ্তাহ পর রাতের বেলায় হঠাৎ আখির ফোন পল্লব জানেনা আঁখি তার কাছে কেন কল করেছে তবুও সে আখির কল পেয়ে বেজায় খুশি । বিশেষ কোন কারণ নয় এমনিতেই সময় কাটানোর জন্য আঁখি ফোন দিয়েছে । দুজনার মাঝে বেশকিছুক্ষন কথা হল । তারপর থেকে প্রতিদিন রাতে আঁখি পল্লবকে কল করে । প্রতিদিন ফোন করে এভাবে প্রতিদিন ফোনে আড্ডা দিতে দিতে দুজনের মাঝে সত্যি প্রেম হয়ে গেল। এই প্রেমে পল্লবের থেকে আখির আগ্রহটা অনেক বেশি । যদিও এখন আগ্রহের কারণে আখির ইচ্ছাতেই প্রেম হয়েছে তবু আখির দিক থেকে সেটা ছিল খুব স্পর্শকাতর একেবারে ঠুনকো । প্রেম যখন সামান্য পুরনো হলো তখন দেখা গেল সামান্য কারণে আখির বিশাল অভিমান । আখির এই অভিমান ভাঙ্গাতে ভাঙ্গাতে পল্লব হয়রান । আখির আচরণে মনে হয় এখন আর পল্লবকে তার ভাল লাগেনা । এখন আগের মত আঁখি পল্লবকে ফোন দেয়না পল্লব ই প্রতিদিন আঁখিকে ফোন দেয় । সর্বশেষ পল্লব যেদিন আঁখিকে ফোন দেয় সেটি আখির মা রিসিভ করে আঁখিকে দিল । আখির মা আঁখিকে কি বলল সেটি ফোনে বুঝা গেলনা । আঁখি মোবাইলটা ধরে পল্লবকে ধমক দিয়ে বলল যখন তখন ফোন করবেনা । তখন পল্লব আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলনা সে ভাবল একটুখানি প্রতিবাদ করা দরকার তাহলে আখই তার ভুল বুঝতে পারবে । পল্লব বলল ঠিক আছে আর কোন দিন ফোন করবনা । এই কথা বলে পল্লব লাইনটা কেটে দিল । লাইনটা কেটে দিয়ে পল্লব সারা রাত অশান্তিতে ভোগল । তারপর দিন এভাবে । তারপরও এভাবে । এভাবে প্রতিদিন । দিন যায় রাত যায় শত যন্ত্রণায় । পল্লব প্রতিদিন আশায় থাকে আঁখি তাকে ফোন দিবে তার এই অভিমান ভাঙ্গাবে আঁখি তাকে আগের চেয়ে বেশি ভালবাসবে । কিন্তু আঁখি তাকে ফোন করেনা । পল্লবও অভিমানের কারণে আঁখিকে ফোন করেনা ।
দুই মাষ পর একদিন দুপুরের আগে পল্লব খোলা আকাশের নিচে দাড়িয়ে আছে । উদার আকাশটা আজ বড় উদাস মনে হচ্ছে । হঠাৎ করে নাসরিন পল্লবকে ফোন দিল । নাসরিন বলল কেমন আছ ? পল্লব বলল ভাল নেই। নাসরিন বলল আমি জানি তুমি ভাল নেই , আর তুমি কেন ভাল নেই সেটা আমি তোমাকে বলছি । পল্লব বলল কি বলবে ? নাসরিন বলল ও বাড়ির থেকে কঠোর ভাবে নিষেধ ছিল তোমাকে বলতে , তাই তোমাকে আগে বলতে পারিনি আজ এক সপ্তাহ হল আখির বিয়ে হয়েছে । নাসরিনের কথা শুনে পল্লব আর কোন কথা বলতে পারলনা । তার কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে গেল । হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় এসে যখন মানুষের চোখের সামনে তার সর্বস্ব লুটে নেয়, লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায় চারপাশ । তখন সেই মানুষটা শুধু অসহায় হয়ে যেভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্রকৃতির দিকে চেয়ে থাকে। সেভাবে নয়ন খোলা জায়গায় দাড়িয়ে মেঘে মেঘে ভারি হওয়া আকাশের মত অন্ধকারাচ্ছন্ন মনে সে উপর মুখি হয়ে মহান এই খোলা আকাশের পানে তাকিয়ে রইল । তার দুচোখের অশ্রু গুলো বৃষ্টি হয়ে তার সমস্ত কষ্টগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল। প্রেমের সমস্ত যন্ত্রণাগুলো চিরতরে মিশিয়ে দিল মাটির মাঝে।।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সূর্য
কারো সত্যাশ্রীত ঘটনার বর্ণনা। আর লেখনী খুব একটা পাঁকা হয়নি। অনেক আবেগ দিয়ে লেখাগুলো এমনিতেই কাঁচা থেকে যায়। বাক্যগঠনে অনেক ভাবতে হবে যেমন>পল্লবের প্রতিবেশী পাশের বাড়ি নাসরিনের খালার বাড়ি ।) আর প্রথম লাইনদুটোরও কোন দরকার ছিলনা। সামনে আরো পরিণত লেখা পাব বলে বিশ্বাস
মিজানুর রহমান রানা
ঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় এসে যখন মানুষের চোখের সামনে তার সর্বস্ব লুটে নেয়, লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায় চারপাশ ।----আমাদের জীবনটাই এমন, সমস্যা, দ্বন্দ্ব সংঘাত চিরদিনই থাকবে। গল্প ভালো লেগেছে, ধন্যবাদ।
sakil
ভালবাসার কাহিনী , মনে হয় আত্মকাহিনী , যত্ন আর আবেগ নিয়ে লিখলে ভালো একটা গল্প হত নিসন্দেহে . ভালবাসা এবং না পাওয়ার বেদনা ....লিখতে থাকেন একসময় আরো ভালো লিখতে পারবেন আশা করি .
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“ডিসেম্বর ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।