পরি হিনা ও আজব দেশে আকমল ( দশম ও শেষ পর্ব )

স্বাধীনতা (মার্চ ২০১৩)

হোসেন মোশাররফ
মায়ের কাছ থেকে পাওয়া বাবার রেখে যাওয়া বেঢপ সাইজের আলখাল্লা টা গায়ে চাপিয়ে আকমল পাহাড়ের উপর দিয়ে হাঁটছিল। প্রচ- কুয়াশায় ঢেকে আছে দূরের পাহাড়গুলো। পায়ের জুতো, সেটাও অনেক পুরানো। জাগায় জাগায় তালি দেয়া। কুয়াশায় ভিজে গেছে জুতোটা। বাবার রেখে যাওয়া এই জুতোটাও উত্তরাধিকার সুত্রে পেয়েছে সে মায়ের কাছ থেকে। বাবাকে সে কোনদিন দেখেনি। কিন্তু যখন বাবার ফেলে যাওয়া পোশাক গুলো পরে হাঁটে তখন সে বাবাকে অনুভব করে খুব কাছে থেকেই। শিতে ঠক্ ঠক্ করে কাঁপছিল আকমল। কোথায় যাচ্ছে সে জানে না-
একটু আগেই পরী হিনা তাকে এই পাহাড় গুলোর উপরে নামিয়ে দিয়ে কোথায় অদৃশ্য হয়েছে। সম্ভবত মামার বাড়িতেই ফিরছে সে। কেননা এর আগের বারও পরী হিনা তাকে আজব দেশ সফরের পর মামার বাড়িতে ফেরত এনেছিল। যদিও প্রচ- কুয়াশায় চারদিকটা ঢাকা পড়ায় জায়গাটা এখনো অপরিচিত মনে হচ্ছে আকমলের কাছে। কাছে না থাকলে আপন যেমন পর হয়ে যায় ঠিক তেমনি জায়গায় না থাকলে পরিচিত জায়গাও অপরিচিত হয়ে যায়। আকমলেরও তাই মনে হতে লাগল। একটু সামনে এগুলেই হয়তো বা পরিচিত গিরিপথ আর উপত্যকা গুলো চোখে পড়তে শুরু করবে তার। কুয়াশা আর তুষার পাতের কারণে চারদিকটা ঢেকে থাকায় কয়েক হাত দূরের দৃশ্যাবলিও চোখে পড়ছে না আকমলের। দূরের পাহাড় গুলো আকারে যা একটু বোঝা যাচ্ছে। পাহাড় থেকে খুব সাবধানে আস্তে আস্তে পা ফেলে নামতে লাগল আকমল। এমনিতে খাড়া পাহাড় তার উপর তুষার পাতের কারনে পিছল হয়ে গেছে পুরো রাস্তাটা। একবার পা ফস্কালেই গভীর খাদের মধ্যে পড়ে যাওয়াটা অসম্ভব কিছু না। তবে আকমলের অভ্যাস আছে এমন রাস্তায় পথ মাপার। পাহাড়ের সাথে তার জীবনটা যেন মিশে আছে, পাহাড়েই যার জন্ম; পাহাড় থেকেই যার জীবন শুরু। আকমল তাই নিশ্চিন্তে পথ চলতে লাগল।
বেশ কিছুক্ষণ ধরে এলোমেলো ভাবে পথ চলার পর একটা পরিচিত গিরিপথ চোখে পড়ল তার। এবার আর অসুবিধে নেই তার মামার বাড়ি পৌঁছাতে। পথ নিশ্চিন্ত হওয়ার পর ঠা-ায় আড়ষ্ট হয়ে যাওয়া হাত দুটো জামার পকেটে ঢুকাল আকমল । হঠাৎ যেন একটা নূতন কিছু আবিস্কার করে ফেলল সে। পকেট থেকে হাত বাইরে বের করে আনতেই চোখ মাথায় উঠল তার। যা ভেবেছিল তাই।
একটু আগেই ছেড়ে আসা আজব দেশটির কথা মনে পড়ে গেল আকমলের। রাজকুমারী নিমু বিদায় দেয়ার সময় তাকে অনেক ধন-রতœ দিয়ে পুরস্কৃত করতে চেয়েছিল। কিন্তু আকমল সেসব নিতে রাজি হয়নি। তার কথা একটাই সে তার মায়ের হারিয়ে যাওয়া গলার হার খুঁজতে বেরিয়েছিল। অন্য কোন ধন সম্পদে তার লোভ নেই। তার কথা শুনে রাজকুমারী নিমু তখন বলেছিল, ‘চাইলে তোমাকে আমি এর চেয়ে অনেক বেশি বেশি ধন-সম্পদ দিতে পারি কিন্তু তোমার মায়ের গলার হার দেয়াতো আমার সাধ্যের বাইরে। কেননা ওটা তো শুধু গলার হার না, ওতে মিশে আছে তোমার মায়ের স্নেহ আর ভালবাসা। যার মূল্য পৃথিবীর অন্য কিছু দিয়ে আর হয়না।’
আকমল তখন কৃতজ্ঞতার সাথে তার দেয়া ধন-সম্পদ আর পুরস্কার ফেরত দিয়েছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তার পকেটে ভরে দেয়া এগুলো তারই কিছু অংশ। রাজকুমারী নিমু হয়তো কোন কৌশলে তার পকেটে ঢুকিয়ে দিয়েছে এইসব ধনরতœ। যা মহা মূল্যবান। তা ছাড়া এগুলো তার আজব দেশ সফরের নিদর্শন। যা নিশ্চিত প্রমাণ দেয় সে আজব দেশ সফরে গিয়ে রাজকুমারী নিমুর কাছ থেকে এসব পেয়েছে।
এলোমেলো নানা ভাবনা ভাবতে ভাবতে আকমল এক সময় মামার বাড়ির প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেল। আর একটা পাহাড় পেরুলেই পাহাড়ের উপর মামার বাড়িটা সে দেখতে পাবে। আবার একবার পকেটে হাত ঢুকিয়ে দেখল আকমল। না, সে ভুল দেখেনি; সব ঠিকই আছে। এর থেকে একটা সোলাইমান কে উপহার দেবে সে। তার মামাত ভাই সোলাইমান এটা পেলে নিশ্চয় খুব খুশি হবে। তা ছাড়া তার কাছে আর কিছু নেই যে সেটা সে তাকে দিতে পারবে।
কুয়াশা অনেকটা কেটে যাওয়ায় পাহাড়ের উপরে মামার বাড়িটা স্পষ্ট দেখতে পেল আকমল। এত সকালে নিশ্চয় কেউ ঘুম থেকে ওঠেনি। তবে সোলাইমানের কথা আলাদা। সে বেচারা অনেক সকাল করেই ঘুম থেকে ওঠে। আর এটা তো সবার জানা কথা, যে সকাল করে ঘুম থেকে ওঠে সে পায় তিনটি পুরস্কার; স্বাস্থ্য, সম্পদ আর জ্ঞান। আগে পরের দু’টো সে আগেই পেয়েছে মাঝের পুরস্কারটি সে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পাবে। তবে দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া ও দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার কারণে মামা তা থেকে বঞ্চিত হবে।
আকমলের ভাবনাই সত্যি হল। দরজার কড়া নাড়ার আগেই সোলাইমান জানালা দিয়ে তার আগমন দেখে ফেলল। দৌড়ে এসে দরজা খুলে দিয়ে জাপটে ধরল আকমলকে। তারপর জোরে চেঁচিয়ে উঠে বলল, ‘ভাইয়া তুমি কোথায় ছিলে এতদিন? প্রতিদিন আমি জানালায় এসে সকাল সকাল দাঁড়িয়ে থাকি কিন্তু তোমাকে পাইনা একদিনও।’
আকমল পকেটে হাত দিতেই পেয়ে গেল একটা সোনার মোহর। বহু পুরানো আর মহা মূল্যবান মোহরটা সোলাইমানের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল সে, ‘নাও, এটা তোমার সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার পুরস্কার।’
আর পায় কে সোলাইমান কে, এক দৌড়ে মোহর টা হাতে নিয়ে ঘরে ঢুকে পড়ল সে। অন্য সময় হলে চেঁচামেচি জুড়ে দিত এতক্ষণে। কিন্তু সকালের এই সময়টাতে বাবা মায়ের ঘুম নষ্ট হলে খেশারত যা দেয়ার তাকেই দিতে হবে। মার একটাও পিঠের বাইরে পড়বে না তার। সুতরাং দ্বিগুণ উৎসাহ আর আনন্দ তার বুকে জমা হলেও বাইরে সে ‘টু’ শব্দটাও করল না। বরং নিশ্চিন্তে সোনার মোহরটা মেঝেয় গড়িয়ে দিয়ে খেলতে শুরু করল। একবার সে একহাতে মোহরটা মেঝেয় ছেড়ে দেয় সেটা গড়াতে শুরু করলেই অন্য হাতে খপ করে ধরে ফেলে। এভাবেই চলতে লাগল তার মোহরটা নিয়ে ইঁদুর বেড়াল খেলা।
একটু পর মোহরের টুং টাং শব্দে আকমলের মামির সকালের ঘুমটা ভেঙে গেল। ভীষন রাগ হল তার, বিড় বিড় করে বলল, ‘সাত সকালে নচ্ছারটা চোখে একটুও ঘুম নেই। আবার একটু যে আরামের সাথে ঘুমাব তারও উপায় নেই।’
তারপর চেঁচিয়ে উঠে বলল, ‘এই দুষ্টু কাঁহিকা, পাজির পা-ঝাড়া; বদের শিরোমণি.. বলি, চোখে কী একটুও ঘুম নেই। এই সাত সকালে উঠে লোকের ঘুম নষ্ট করা। যত্তোসব!’
মায়ের রাশভারি কন্ঠে চেঁচান শুনে সোলাইমানের খেলার রেশ কেটে গেল। এই সামান্য একটু টুং টাং শব্দে যে মায়ের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে তা তার কল্পনায়ও ছিল না। ভয়ে দুরু দুরু বুকে কাঁপতে লাগল সোলাইমান। না জানি কী লেখা আছে আজ তার কপালে।
সোলাইমানের তো জানা ছিল না ঘি’য়ে সামান্য ভাজার বাসনা আর মোহরের সামান্য শব্দও অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছায়।
আকমল ততক্ষণে তার জন্যে বরাদ্দ করে রাখা ছোট্ট খোঁয়াড় ঘরটির মেঝেতে গুটি সুটি মেরে শুয়ে পড়েছে। পথশ্রম আর আজব দেশ সফরের ক্লান্তি তাকে পেয়ে বসেছে। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে সে।
আকমলের মামি ইতোমধ্যেই শব্দ শুনে মনের সন্দেহ দূর করতে এ ঘরে ছুটে এসেছে। সোলাইমান ততক্ষণে মোহরটা হাতের মুঠোর মধ্যে লুকিয়ে ফেলেছে। এতে করে সন্দেহ আরো বেড়ে গেল মায়ের।
বেড়ালের শিকার ধরার মতো কিছুক্ষণ ওর দিকে চেয়ে থেকে বলল, ‘দেখি কী লুকিয়েছিস্ হাতের মধ্যে?’
সোলাইমানের ধড়ে যেন প্রাণ ফিরে এল সেই মুহূর্তে। এত বড় একটা অপরাধ করার পরও মায়ের হাতে মার খাওয়ার আগেই প্রশ্ন শোনা মানেই রাগ নেমে গেছে। মায়ের রাগ নেমে যাওয়া অনেকটা জ্বর নেমে যাওয়ার সামিল। জ্বর পড়ে গেলে মনে প্রশান্তি জাগে। সোলাইমানও মনে মনে প্রশান্তি অনুভব করল। আজ সকালে বিনা শাস্তিতে প্রাণ ফিরে পেয়ে সে আহ্লাদে আটখানা হল। ছোটরা আহ্লাদে আটখানা হলে যা হয় তাই হল এবার।
সে তার হাতের মুঠোটা আরও শক্ত করে কষে বেঁধে ফেলল। তারপর বলল, ‘উঁহু , দেখাব না..’
সোলাইমানের আচরণে মায়ের মনে সন্দেহটা এবার শতগুনে বেড়ে গেল। জোর করে ওর হাতটা চেপে ধরে মুঠোটা আলগা করতেই হতবাক হয়ে গেল সে। কিছুক্ষণ বিস্ফোরিত চোখে চেয়ে থেকে বলল, ‘ও-মা, এ যে দেখি সোনার মোহর! কোথায় পেয়েছিস্ রে- ওটা?’ সোলাইমান কোন কথা না বলে মিটি মিটি হাসতে লাগল। মায়ের আর সহ্য হল না তার এই কালক্ষেপন। সকাল বেলা উঠে ছেলেকে বকুনি দিতে এসে যে এমন অভাবিত কা- ঘটতে পারে তা তার কল্পনায়ও ছিল না। অন্য সময় হলে কষে একটা থাপ্পর মেরে কালক্ষেপনের শাস্তিটা দিয়ে দিতে দ্বিধা করত না সে। কিন্তু যেহেতু মোহর সুতরাং খুব সাবধানে পা ফেলাই যুক্তি যুক্ত মনে করল সে। কেননা বৈষয়িক মেয়ে আকমলের মামি ভালই জানে বল প্রয়োগে শক্ত আর কঠিন হওয়া যায় কিন্তু তাতে ফলাফল হয় শুন্য। অপরদিকে বিনা শক্তিতে নরম আর তরল জিনিস প্রবাহিত হয় তাতে ফলাফলও ভাল।
একেবারে মোমের মতো গলে গিয়ে মা ছেলেকে সুর কেটে বলল, ‘বাবা, সোলাইমান; বলতো দেখি এ জিনিস তুমি কোথায় পেয়েছ? ’
মায়ের কাছ থেকে এমন আদর নিকট অতীতে আর কখনো পেয়েছে কিনা মনে করতে পারল না সোলাইমান। এদিক সেদিক একবার ভাল করে দেখে নিয়ে, একটু ইতি-উতি করে একেবারে মায়ের কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বলল,‘ভাইয়া ফিরেছে , সেই দিয়েছে।’
ছেলের কথা শুনে আকমলের মা প্রায় আকাশ থেকে পড়ে বলল, ‘এ্যাঁ, বলিস্ কি তুই, সেকি? কখন ফিরেছে সেই আপ..দ’ সামলে নিয়ে আবার বলল, ‘তাইতো বলি, এ তো কোন সাধারণ জিনিস না। জিন-ভূত ছাড়া কোন মানুষের কাজও না, এসব এনে দেয়া।’
মনে মনে একবার সস্তির নিশ্বাস ফেলে বলল, ‘যাক্ বাবা, বাঁচা গেল। এবার আর অসুবিধে নেই, এবার তো আর বাঘে খায়নি। জিন-ভূতে নিয়েছিল আবার ফেরত দিয়ে গেছে।’
গেলবার আকমলের নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে পাড়ার লোকের কাছে বাঘে খাওয়ার গল্প ফেঁদেছিল আকমলের মামি। এবার নিখোঁজ হওয়ার পর তা আর ফাঁদেনি। কেননা বদ্ধ গুহা থেকে যে ফেরত আসতে পারে পঁচা কুয়ো থেকেও ফেরত আসাটা তার জন্য বিচিত্র কোন ব্যাপার না। তাই এবার বুদ্ধি করে সবাইকে বলেছিল জিন-ভূতেই নিয়েছে তাকে। কথায় আছে মেয়েদের বুদ্ধি-কৌশল ভেদ করা একমাত্র খোদার পক্ষেই সম্ভব।
সকাল সকাল একটা কাজ বেড়ে গেল আকমলের মামির। অন্যদিন যা নিশ্চন্তে সহ্য করা তার জন্য সহজ ছিল। আজ তা তার মোটেও সহ্য হল না। অন্যদিন আকমলের মামার সকালের ঘুম ভাঙতে বেলা দুপুরের কাছাকাছি হলেও আজ তা আর সম্ভব হলো না আকমলের মামির কারণে। ভীষণ জোরে জোরে নাক ডাকার পরিসমাপ্তি ঘটল সাত-সকালেই। আকমলকে কে দেখার চেয়ে স্বামীকে তলব করাই তার জন্য জরুরী হয়ে পড়ল। সাত-সকালে তার চেঁচা-মেচি শুনে মনে হল, হয় বাড়িতে ডাকাত পড়েছে নয়তো আগুন লেগেছে। ধড়মড় করে বিছানায় উঠে বসে চোখ কচলাতে কচলাতে বলল আকমলের মামা, ‘বলি হয়েছে টা কী শুনি? এই সাত-সকালে উঠে চেঁচামেচি জুড়ে দিয়েছ?’
রাগে জ্বলতে জ্বলতে নির্বিকার ভাবে উত্তর দিল আকমলের মামি, ‘হবে আবার কী, কিছুই হয়নি।’
‘কিছু হয়নি তো, বাড়ি মাথায় তুলছ কেন? মনে হচ্ছে ডাকাত পড়েছে বাড়ি মধ্যে?’ অবাক হয়ে প্রশ্ন করল আকমলের মামা।
‘পড়েনি এখনো, তবে পড়তে আর বাকি কোথায়?’ খুব স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর করল আকমলের মামি।
রহস্যজনক কথাবার্তা শুনে বৈষয়িক লোক রহস্যের গন্ধ পায় আর বোকা লোক ঝগড়া শুরু করে। আকমলের মামা জবরদস্ত বৈষয়িক লোক, অ¯্র তৈরি করতে লোহা কতটুকু পোড়াতে হবে এটা একমাত্র কামারই ভাল বোঝে। গলা ভারি করে দাঁতে দাঁত চেপে বলল এবার, ‘এই সাত-সকালে হয়েছে টা কী, বলতো দেখি; মানুষের ঘুম নষ্ট করে চেঁচামেচি ?’
আকমলের মামির রাগটা তখনো পুরোপুরি পড়ে যায়নি। গলা খাটো করে সেও বলল, ‘সারা জীবন ধরেই তো দেখছি শুধু ঘুমাচ্ছ; ঘুমিয়েই যাচ্ছ, একদিনও তো মরতে দেখলাম না। মরন হয়না তোমার?’
‘সে কী, কী অলুক্ষুণে কথা। বউ কী কখনো স্বামীর মৃত্যু কামনা করে..ছি, ছি..’ পিছনে কোন গুরুতর বিষয় আছে বুঝেও স্ত্রীর কথায় নিন্দা জানাল আকমলের মামা।
এদিকে স্বামীর ঘুমের রেশটা পুরোপুরি কেটে গেছে দেখে স্ত্রী তখন ধরা গলায় বলল, ‘করে না আবার করতেও হয়। না হলে আর জগৎ সংসার মিছে মিছি হয়। তাতে না থাকে কোন রস্কস্, না থাকে কোন আয়- উন্নতি।’ তারপর এলো সে আসল কথায়। এবার চেপে গিয়ে প্রায় ফিস্ ফিস্ করে বলল, ‘বলি, ছোঁড়াটাকে যে সেদিন পঁচা কুয়োয় ফেলে এলে; চোখে দেখে ফেলেছিলে নাকি চোখ মাথায় উঠেছিল ফেলার সময়।’
‘কেন, ফিরেছে নাকি সেই বজ্জাতটা আবার?’.. হতবিহ্বল হয়ে প্রশ্ন করল মামা।
‘শুধু কী ফিরেছে? হাতে দেখতো এটা কী?’ হাতের মুঠো খুুলে ততক্ষণে সোনার মোহরটা স্বামীর চোখের সামনে মেলে ধরল আকমলের মামি। অবাক বিষ্ময়ে মোহরটা চেয়ে চেয়ে দেখতে লাগল আকমলের মামা। তারপর অস্ফুটে তার মুখ দিয়ে বের হয়ে গেল, ‘এতো মহা-মূল্যবান অতি পুরনো সোনার মোহর, এ তুমি কোথায় পেলে?’
‘কোথায় আর পাব তোমার ছেলের হাতেই পেলাম। সে ফিরেছে কখন আমি তা জানিনে। এই মূল্যবান মোহরটা সে ছেলের হাতে দিয়েছে, ছেলে তা নিয়ে খেলছে। ঐ শব্দেই তো আমার সকালের ঘুমটা মাটি হল।’ গড় গড় করে বলে গেল স্ত্রী। আকমলের মামা রাগে এবার দাঁতে দাঁত চেপে বলল, ‘ঐ পঁচা কুয়ো, ওখানে একবার যে পড়বে সে আর কখনো বেঁচে ফিরে আসতে পারে না। যেখানে দিনের আলোই ঠিকমতো ঢোকে না, কতশত বছর মানুষ ওটা ব্যবহার করেনি। না;না এ অসম্ভব! সে ফিরে আসতে পারে না।’
কিন্তু কে শোনে কার কথা। আকমলের মামি রীতিমত বায়না ধরে বসল, ‘ওগো শুনছো, আমার মনে হয় ঠিক ঐ পঁচা কুয়ার মধ্যেই রয়েছে এইসব গুপ্ত ধন-ভা-ার। তুমি একবার নেমে দেখই না আরো আছে কিনা, একবার নামতে পারলে আমরা অনেক বড়লোক হয়ে যাব।’
আকমলের মামা পরিস্থিতি বিবেচনা করে বলল, ‘এ অসম্ভব! আমি নামতে পারব না ওটায়। নির্ঘাত মারা যাব আমি।’
এবার আর অনুনয় বিনয় নয় রীতিমত রেগে গিয়ে বলল আকমলের মামি, ‘শোন, তোমার মতো অকর্মা লোক মরাই ভাল। বড়লোক হতে হলে মরতে হয় বুঝেছ? না মরলে বড়লোকও হওয়া যায় না। সারা জীবন মেয়ে মানুষের মতো ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই কাটাও। আমারও কপাল! কী অলুক্ষুণে কপাল নিয়েই না জন্মেছিলাম, মরনও হয়না আমার?’
এ জগৎ সংসারে যে যত শক্ত লোকই হোক্, শেষ মেশ স্ত্রীর বায়নার কাছে হার মানে না এমন লোক কমই আছে। আকমলের মামাও শেষ মেশ রাজি হল ঐ কুয়ায় নামতে। শেষে বিড় বিড় করে বলল,‘নামার আগে একবার আকমলের কাছ থেকে পথ-ঘাট জেনে নেয়া দরকার, বলা যায় না ভিতরে সাপ খোপও তো থাকতে পারে।’
কিন্তু তাতেও বাদ সাধল আকমলের মামি। সে বলল, ‘ সম্পদ কখনো কেউ কাউকে দিতে চায় না। তেমনি সম্পদের সন্ধানও কেউ কোনদিন কাউকে দিতে রাজি হয় না। সুতরাং নামতে হলে চুপি চুপি নামতে হবে, আর আকমল কেন, কাক পাক্ষিটাও যেন জানতে না পারে।’
কিন্তু আকমলের মামা এতে রাজি হল না। দীর্ঘ দিনের অব্যবহৃত বদ্ধ পঁচা কুয়া যা দেখলেই ভয় করে। যেখানে দিনের বেলায়ও আলো প্রবেশ করে না, সেখান থেকে কেউ বেঁচে ফিরে আসতে পারে তা কেমন যেন অসম্ভব মনে হল তার কাছে। কিন্তু অন্য কিছু না ; রীতিমত স্ত্রী কে দেয়া কথা যা না রাখলে আপদ, আবার রাখতে গেলেও বিপদ।
সুতরাং আকমল ঘুম থেকে উঠলে স্ত্রী কে না জানিয়ে রীতিমত গোপনে দেখা করল মামা আকমলের সাথে। তারপর বলা নেই কওয়া নেই, এতদিন ভাগ্নে কোথায় কেমন ছিল কোন কিছুতেই তার যেন বিন্দু মাত্রও আগ্রহ কিংবা কৌতুহল নেই। এমন কী আকমল কে নিয়েও তার কোন চিন্তা কিংবা দুশ্চিন্তা নেই। বেচারা যে ফিরবে এটা যেন মামার আগে থেকেই জানা ছিল। জানা ছিল না শুধু মোহর, সোনার মোহর নিয়ে ফিরবে এই গোপন তথ্যটা।
আকমলকে গোপনে ডেকে নিয়ে বলল, ‘দেখ বাপু, তুমি ভাগ্নে হও আর যেই হও ঐ পঁচা কুয়ার সন্ধান কিন্তু তোমাকে আমিই দিয়েছিলাম। এটা তোমাকে মানতেই হবে। আজ তুমি যে এত ধন-সম্পদ আর সোনার মোহরের মালিক বনে গেছ এসব আমারই কারণে এ তো তুমি মান?’
মামার কথা শুনে আকমল যারপরনাই অবাক হল। কিন্তু উপস্থিত কিছুই বলতে পারল না, যেহেতু মামা। মায়ের একমাত্র ভাই। বেচারার মা ও বেঁচে নেই, মামাই সম্বল। তারপরও ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বলল, ‘মামা, এ সব কিছু খোদাই দিয়েছে আমাকে; ঐ পঁচা কুয়া..’
আকমলের কথাটা আর শেষ করতে দিল না মামা। দু’চোখ বুজে মনে মনে কিছুক্ষণ কী যেন বিড় বিড় করে বকে নিয়ে বলল, ‘দেখ বাপু অত খোদা খোদা করোনা, যা বলার সোজা সাপ্টা বল। তুমি আমাকে ঐ গুপ্তধনের সন্ধান কী দিতে চাও, না চাও না। এদিকে আমার তোমার সাথে বেশি বকার সময় নেই।’
আকমল এবার সত্যি সত্যি যেন আকাশ থেকেই পড়ল। একটা মোহর দেখেই মামা এমন পাগল হবে জানলে তো আগেই সোলাইমান কে সতর্ক করে দিত সে। যেমন এর আগেরবার আজব দেশ থেকে ফিরে বুড়োর ব্যাপারে সতর্ক করেছিল সে তাকে। কিন্তু এখন যা হওয়ার তা হয়েই গেছে, আর উপায় নেই তার। কথায় আছে ধনুকের তীর আর মুখের কথা একবার বের হয়ে গেলে তাকে আর ফেরানো যায় না।
আকমলের উত্তর দিতে দেরি হচ্ছে দেখে মামা বলল, ‘দেখ বাপু আমি সব বুঝতে পেরেছি, তুমি আমাকে ঐ গুপ্তধনের সন্ধান দেবে না। আমি তো আর ছোট বাচ্চা ছেলেও না, আবার দুগ্ধ পোষ্য শিশুও না। সব বুঝি; এই জন্যেই বলে, কারো কখনো উপকার করতে নেই। আর অসহায় দেখলে তাকে সাহায্য করতে নেই।’
কী বলবে আর কী করবে সহসা ভেবে পেল না আকমল। শেষ পর্যন্ত সে ভাবল যদি রাজকন্যা নিমুর কাছ থেকে পাওয়া তার সম্পদের পুরো অংশটা মামাকে দিয়ে দেয় তাহলেই হয়তো মামা খুশি হতে পারে। আগপাছ না ভেবে তাই করল সে। আল্লাখাল্লার পকেট থেকে মুঠো ভরে সোনা আর মণিমুক্তা যা ছিল সব বের করে এনে মামার সামনে দিয়ে বলল, ‘মামা, আমার কাছে যা আছে সব তোমাকে দিয়ে দিলাম। আমার কাছে আর কিছু নেই, এই দেখ..’ তারপর পকেট উল্টে দেখিয়েও দিল মামাকে।
কিন্তু যত সহজ মনে করেছিল আকমল ঠিক তত সহজে গলল না মামার মন। ধন রতœ গুলো সব হাতে নিয়ে একটা বড় রুমালে সেগুলো ভাল করে বেঁধে নিল। তারপর কিছুক্ষণ গোল গোল চোখ লাল করে আকমলের দিকে চেয়ে থেকে বলল, ‘ভেব না মামা তোমার অত বোকা, কিছু দিয়ে মামা কে ভুলিয়ে পথ থেকে সরিয়ে দিতে পারলেই হল। বাকিটা দিয়ে সারা জীবন তোমার আরামেই চলে যাবে।’
আকমল এবার হাসবে না কাঁদবে ঠিক করতে পারল না। কথায় আছে যে জেগে ঘুমায় তাকে যেমন জাগান যায় না, ঠিক তেমনি যে বুঝেও না বোঝার ভান করে তাকে তেমন বোঝান যায় না। কথা বেশি না বাড়িয়ে শুধু এতটুকুই বলল সে, ‘মামা, তুমি আমার একমাত্র মামা। মাকে হারিয়ে এখন তুমি ছাড়া এই জগতে আমার আর কেউ নেই। আমি আমার মায়ের হারান গলার হার আর চাইনে, ধন-সম্পদও চাইনে, শুধু তুমি থাক। বিনিময়ে যা চাও সবই তোমাকে আমি দিতে পারি কিন্তু আমার একটাই অনুরোধ তুমি ঐ পঁচা কুয়ায় নেমো না। ওখানে কিছু নেই, ওখানে নামলে তুমি নির্ঘাত মারা পড়বে।’
কিন্তু চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী।
রাতেই পরামর্শ হয়ে গেল মামা মামির মধ্যে। একটা ব্যাপারে দু’জনেই একমত। আর তা হল আকমল পুরো সম্পদ কুক্ষিগত করার জন্যেই মামাকে ও পথ থেকে সরিয়ে রাখতে চায়।
স্বামী স্ত্রী পরামর্শ করে ঠিক করল, ‘রাতে যখন আকমল আর সোলাইমান গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে পড়বে তখনই স্বামী স্ত্রী দু’জনা মিলে অভিযান চালাবে।’
কথার ফাঁকে মাঝে একবার সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাল আকমলের মামি তার স্বামীর মুখের দিকে। তারপর জিজ্ঞাসা করল, ‘তোমার ঠিক মনে আছে তো কোন কুয়াটায় নামিয়েছিলে তুমি আকমল কে।’
বিরত্বের হাসি হেসে মামা বলল, ‘আছে বৈকি, তুমি কী ভেবেছ আমি অতটাই কাঁচা মাথার লোক।’
এদিকে আকমল রাতে শুয়ে ভাবতে লাগল। পরী হিনা তাকে শেষ বিদায়ের আগে জানিয়েছিল বাকি সব কথা যা সে জানতো না। সে বলেছিল যখন আকমল পঁচা ঐ কুয়ায় মৃতপ্রায় অবস্থায় অচেতন হয়ে পড়েছিল তখনই ভাগ্যক্রমে পরী হিনা সেখানে উপস্থিত হয়েছিল। তারপর তাকে উদ্ধার করে আজব দেশে পৌঁছেও দিয়েছিল। কেনানা তার ইচ্ছা ছিল তাকে বাকি আজব দেশটাও ঘুরে দেখানো। আর তার সেই ইচ্ছাটা খোদাও সময় মতোই পূরণ করেছে। এছাড়া প্রথমদিকে তাকে সে অদৃশ্য অবস্থায় থেকেই নানা ভাবে সাহায্য সহযোগিতাও করেছিল। যেমন ইঁদুরের গর্তে পড়ে যাওয়ার পর দড়ি নামিয়ে তাকে উদ্ধার করা। বিড়ালের রূপ ধরে তাকে রাজকন্যার কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করা ইত্যাদি।
আকমল মনে মনে ঠিক করল কালকেই মামাকে সব খুলে বলবে সে। কেননা মামাতো আর জানে না তার ধন সম্পদ প্রাপ্তির আসল রহস্য। হয়তো মামা তার মুখে থেকে এসব শুনে পঁচা কুয়ায় ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ হারানোর দায় থেকে বেঁচে যাবে। কিন্তু কে বা জানতো ভাগ্যের লিখন কেউ খ-াতে পারে না। শেষ পর্যন্ত যা হওয়ার তাই হল।
গভীর রাতে খান চারেক বস্তা সঙ্গে নিয়ে আকমলের মামা মামি দু’জনেই রওনা হয়ে পড়ল গুপ্তধনের সন্ধানে। তারপর কুয়ার কাছে পৌঁছে কোমরে দড়ি আর খান চারেক বস্তা বেঁধে মামা লাফ দিল অন্ধকার কুয়ায়। মামি লম্প হাতে উপরে দাঁড়িয়ে বার বার চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলতে লাগল,‘দেখো যত যাই হোক্, বস্তা কিন্তু চারটিই পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত উপরে উঠো না যেন।’
পরদিন সরগোল আর চেঁচামেচি শুনে আকমলের ঘুম ভাঙল। তারপর বাইরে এসে যা দেখল সে, তা রীতিমতো বিষ্ময়কর ও ভয়ংকরও বটে। মামি বার বার উঠানে মূর্ছা যাচ্ছে আর বলছে, ‘সোলাইমানের বাপ রাতে কুয়ায় নেমেছে বস্তা নিয়ে কিন্তু সকাল হয়ে গেল এখন পর্যন্ত সে উপরে উঠল না। হায়, হায় আমার কী হল, আমার যে সব গেল।’
আকমল কপালে হাত মেরে শুধু বলল, ‘যাঃ’
এমনই হয়, চীন দেশে কেউ যদি কখনো যাও সেখানে কোন পুরানো কূপ পেলে কাছে গিয়ে লক্ষ্য করে দেখ কোন শব্দ পাওয়া যায় কীনা। ভাগ্যে থাকলে হয়তো কোন না কোনটা থেকে একটা আওয়াজ শুনতে পাবে, আর তা হল ‘লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু।’
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ কবির হোসেন শিক্ষনীয় গল্প. আমার কাছে গল্পটি ভাল লেগেছে. ধন্যবাদ.
তানি হক শেষ অবধি আকমলের লোভী মামা মামীর উপযুক্ত শাস্তি দিয়ে গল্পের ইতি হলো ..এই পর্বে পরি হিনার সরব উপস্থিতি না থাকলেও ..কিন্তু গল্প সুন্দর ভাবে এগিয়েছে ..অনেক অনেক ধন্যবাদ মোশারফ ভাইয়াকে আমাদের জন্য পরী হিনা ও আকমলের এই সিরিজ রূপ কথা গল্পের জন্য ..সালাম ও শুভেচ্ছা রইলো ..ধন্যবাদ
এশরার লতিফ খুব সুন্দর রূপকথার গল্প, ভাষা অসম্ভব সাবলীল আর গতিময়.
সুমন লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু বেশ সুন্দর শিক্ষনীয় গল্প, ভাল লাগল।
মিলন বনিক ‘শোন, তোমার মতো অকর্মা লোক মরাই ভাল। বড়লোক হতে হলে মরতে হয় বুঝেছ? না মরলে বড়লোকও হওয়া যায় না। গল্পের সুন্দর আর শিক্কনীয় পরিসমাপ্তি অসাধারণ....খুব ভালো লাগলো.....
ফাহিম তানভীর আপনাকে অনেক অনেক শুভকামনা.............লেখককে ধন্যবাদ ।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি এমনই হয়, চীন দেশে কেউ যদি কখনো যাও সেখানে কোন পুরানো কূপ পেলে কাছে গিয়ে লক্ষ্য করে দেখ কোন শব্দ পাওয়া যায় কীনা। ভাগ্যে থাকলে হয়তো কোন না কোনটা থেকে একটা আওয়াজ শুনতে পাবে, আর তা হল ‘লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু।’ ..........// শেষ পর্বে এসে যে মেসেজটা দিয়ে শেষ করলেন মোশাররফ ভাই সত্যিই তা এই রুপ কথার দীর্ঘ গল্পের পরিপূর্নতা এবং স্বার্থকতা পেয়েছে.....আপনাকে অনেক অনেক শুভকামনা...............
এফ, আই , জুয়েল # বেশ বড় গল্প । অনেক সুন্দর । রুপকথার মধ্যেও অনেক শিক্ষনীয় দিক রয়েছে । = লেখককে ধন্যবাদ ।।
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ এক মাস অপেক্ষার পর আবার পরী হিনা ! কি যে ভাল লাগছে! চলুক মোশাররফ ভাইয়ের গল্প বলা ।

২৫ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪