নস্টালজিয়া

অন্ধকার (জুন ২০১৩)

সালেহ মাহমুদ
  • ১৯
বিয়ের বয়স তিন বছর পার হতে থাকলেও স্ত্রী রেশমা’র গর্ভে কোন সন্তনের সম্ভাবনা না দেখে রায়হান টুকু একটু দমে যায়। কি করবে না করবে ভেবে ভেবে অস্থির হয়ে ওঠে ক্রমশ। নিজে নিজেই অনেক উদ্ভট ধারণা তৈরি করে নেয়। অফিসের কাজে মন বসে না। উদাস থাকে সব সময়। মাঝে মাঝে ইচেছ করেই দেরীতে বাসায় ফেরে। কেন যেন বাসায় ফিরতে ইচ্ছে করে না। রেশমা কিংবা মা দেরী করে বাসায় ফেরার কারণ জিজ্ঞেস করলে, অফিসের কাজ কিংবা কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে এড়িয়ে যায়।
রায়হানের এই মনোজাগতিক বিশৃঙ্খল অবস্থাটি প্রথম টের পায় তার বান্ধবী চন্দ্রমল্লিকা। এনজিও’র কাজে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই তাকে ঢাকা আসতে হয়। ঢাকা আসলে সে রায়হানের সাথে দেখা করে আড্ডা দিয়েই তবে আবার আপন কর্মস্থল নিজ এলাকায় ফিরে যায়।
এনজিও’র প্রধান কার্যালয়ে এক কর্মশালায় এসে দুপুরের বিরতিতে চন্দ্রমল্লিকা রায়হানের অফিসে ফোন দেয়। তারা ঠিক করে বিকালে রমনা পার্কে দেখা করবে।
সেদিনের বিকেলটা ছিল খুব সুন্দর। ঝিরঝিরে বাতাস বইছিল। শরীর জুড়িয়ে যাচ্ছিল সেই বাতাসে। সপ্তাহের মাঝামাঝি হওয়াতে পার্কে লোক সমাগমও সামান্য। পড়ন্ত বিকেলের তেজহীন সূর্যালোকে বেশ মোহনীয় হয়ে উঠেছিল প্রকৃতি। এর মাঝেও বেঞ্চিতে হেলান দিয়ে বসে থাকা রায়হানকে কেমন যেন নির্জীব মনে হচ্ছিল। অপেক্ষা করতে করতে বেশ কয়েকটা সিগারেট শেষ করলো সে। সিগারেটে লম্বা দম নিয়ে মুখ উপরে তুলে আয়েশ করে ধোঁয়া ছাড়তে থাকা অবস্থায় পাশে এসে বসে চন্দ্রমল্লিকা। কোন কথা না বলে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রায়হানের দিকে। অকস্মাৎ প্রশ্ন করে বসে চন্দ্র- কি হয়েছে তোমার বলো তো?
রায়হান চমকে উঠে চন্দ্রকে দেখে হেসে ওঠে। কেমন বিষাদময় হাসি। সিগারেটে দু’তিনটা টান দিয়ে টোকা দিয়ে ছূঁড়ে ফেলে দেয় লেকের পানিতে। বলে, কই, তেমন কিছু হয় নি তো?
আমি তোমাকে চিনি টুকু। খুব গোপন কোন একটা কিছু ঘটেছে তোমার, ঠিক না।
আরে না, কিছু না। তারপর বলো, তোমার খবর কি? ওয়ার্কশপ কেমন হলো?
হ্যাঁ খুব ভালো। আজকের ওয়ার্কশপ ছিলো ‘‘ফ্যামিলি পস্ন্যানিং এন্ড কমন রিস্ক অব মাদার এন্ড চাইল্ড’’-এর উপর। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একজন ডেনিশ ডেলিগেট। নাইস প্রোগ্রাম, দেখো প্রোগ্রাম শিটটা দেখো, একবার দেখলেই বুঝবে কত রিচ প্রোগ্রাম।
টুকু নিষ্পৃহ ভঙ্গিতে শিটটা নেয়। বিষয়টা লক্ষ্য করে চন্দ্র। বলে, আমার দিকে তাকাও তো।
টুকু তাকায়। চোখে চোখ রেখে চন্দ্র বলে, সত্যি করে বলো তো তোমার সমস্যা কি?
হেসে ফেলে টুকু। চোখ সরিয়ে নেয় শিটের দিকে। মনোযোগ দিয়ে উল্টেপাল্টে দেখতে থাকে শিটটা। এক সময় কিছুটা অসহিষ্ণু কণ্ঠে বলে ওঠে- এইসব ফ্যামিলি পস্ন্যানিং ট্যানিং দিয়ে কি হবে বলো তো? যাদের সমত্মানই হয় না তাদের তো এগুলোর কোন প্রয়োজন নেই।
চন্দ্রমল্লিকা যেন খানিকটা ধরতে পারে বিষয়টা। ধীরেসুস্থে বলে, তুমি এমন আপসেট হচ্ছ কেন? আমি কি তোমাকে কোন কষ্ট দিয়েছি?
না তেমন কিছু না, তবে ফ্যামিলি বলতে যদি কেবল স্বামী-স্ত্রী বোঝায় তবে এসব পেপার মূল্যহীন।
তা ঠিক, তবে ক্রমবর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার লাগাম টেনে ধরার জন্য এগুলোর প্রয়োজন আছে কিনা বল?
টুকু কোন কথা বলে না। লেকের পানির দিকে তাকিয়ে থাকে নির্নিমেষ। পায়ের কাছে পড়ে থাকা এক টুকরো ইট হাতে নিয়ে ছুঁড়ে মারে লেকের পানিতে। পানিতে ঢেউ তুলে তা ছড়িয়ে যায় চারিদিকে।
অনুভূতিপ্রবন হয়ে ওঠে চন্দ্রমল্লিকা। টুকুর একটা হাত টেনে নেয় নিজের কোলে। হাত নিয়ে খেলতে খেলতে বলে, তোমাদের সমত্মান হচ্ছে না কেন বলতে পার?
টুকু অসহিষ্ণু হয়ে হাত ছাড়িয়ে নেয়। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে- জানি না।
ডাক্তার দেখিয়েছ?
নাহ্, ডাক্তার দেখিয়ে কি হবে? চেষ্টা তো কম করছি না।
তুমি এক কাজ কর, ভাবীকে নিয়ে আগামীকাল আমাদের অফিসে চলে আসো। একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আছেন আমাদের। উনি হয়তো ভালো পরামর্শ দিতে পারবেন তোমাদের।
টুকু কোন কথা বলে না। দূর পানে তাকিয়ে থাকে অনির্দেশ্যভাবে। চন্দ্রমল্লিকা টুকুকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বলে, কি হলো, কিছু বলছ না কেন?
কি বলব? তোমাদের অফিসে ওকে নিয়ে গেলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে?
হয়তো হবে, হয়তো না। তুমি একবার এসেই দেখো।
টুকু চুপ করে যায়। একটু নিরব থেকে বলে, তুমি কি মনে কর তাতে কোন লাভ হবে?
সেটা ভগবানের দয়া। চেষ্টা করতে দোষ কি?
আচ্ছা মানলাম। কিন্তু আমার বউ কি ভাববে বল তো?
কি আর ভাববে? আমাকে তো ভাবি চেনেনই। তোমাদের বাসায় যেদিন গেলাম সেদিনই তো ভাবীকে আমাদের বন্ধুত্বের কথা খুলে বলেছি। ভাবীকে তো দেখলাম বেশ সহজ ভাবেই নিয়েছেন ব্যাপারটা।
তা ঠিক, কিন্তু তোমার সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ আছে তা তো আমি তাকে বলি নি।
তাতে কি? ভাবীকে ম্যানেজ করা আমার দায়িত্ব। তুমি শুধু নিয়ে এসো একবার।
তাহলে কাল ঠিক দশটায় আমাদের হেড অফিসে চলে এসো। রিসিপশনে আমার কথা বললেই ডেকে দেবে। এখন চল, কিছু খাব।
খাবে? তাহলে কোহিনূরে চল, কিংবা সিলভানায়।
না, ওদিকে যাবো না। এখন অনেক ভিড় হবে ওখানটায়।
তাহলে রমনায়ই বসি চলো।
উঠে পড়ে ওরা দু’জন। হাত ধরাধরি করে হাঁটতে থাকে মৃদু পায়ে। ঝিরঝিরে বাতাসে জুড়িয়ে যায় ওদের সমস্ত অস্তিত্ব। টুকু’র মন ভালো হয়ে যায় হঠাৎ। মুঠোয় ধরা চন্দ্রমল্লিকার হাতে মৃদু চাপ দেয়। চন্দ্রমল্লিকাও সাড়া দেয় তাতে। একে অপরের দিকে তাকায়, মিষ্টি হাসে দু’জনই।

চন্দ্রমল্লিকার অফিসে ঢুকে তো রেশমা অবাক। খুব গোছানো অফিস। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত। তার দিকে তাকানোর ফুরসৎ নেই কারো। সাথে টুকু না থাকলে সে বিব্রত বোধ করতো। রিসিপশনে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় না। চন্দ্রমল্লিকা এসে ওদেরকে ভিতরে নিয়ে যায়। ওদেরকে গেস্ট রুমে বসিয়ে ভেতরে আসা-যাওয়া করে কয়েকবার। কিছুক্ষণ পর এসে বলে, চলো, স্যার অপেক্ষা করছেন তোমাদের জন্য।
ডাক্তার ভদ্রলোক বেশ অমায়িক। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, মাঝারি বয়স। টুকু রেশমার কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শোনেন। টুকটাক প্রশ্ন করেন। গভীর মনোযোগে ভাবেন কিছুক্ষণ। আবার প্রশ্ন করেন, উত্তর শোনেন। এক সময় উল্লসিত হয়ে উঠে বলেন, রায়হান সাহেব আপনাদের সমস্যা আসলে কোন সমস্যাই না। আপনারা আসলে একটা ভাইটাল সময় পার করছেন। আপনাদের টাইমিং ইত্যাদি সব ঠিকই আছে, আমার বিশ্বাস সব ঠিক হয়ে যাবে। আপাতত আমি কোন টেস্টে যাব না। কয়েকটা ঔষধ লিখে দিচ্ছি, নিয়ম করে খেয়ে যান। তিন-চার মাসেও কোন ভাল ফল না পেলে তারপর ইনভেসটিগেশনে যাব। দেখুন কি হয়! সব কিছুর মালিক তো ওপরওয়ালাই, কি বলেন!
রায়হান-রেশমা লাজুক হাসে। কোন কথা বলে না। ডাক্তার সাহেব প্রেসক্রিপশন লিখে চন্দ্রমল্লিকার দিকে বাড়িয়ে দিতে দিতে বলে, আপনার বন্ধু আর বন্ধুপত্নী তো চমৎকার মানুষ। এই অল্প সময়েই আমি তাদের দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি। আপনিও লাকি ভীষণ রকম।
চন্দ্রমল্লিকা অমায়িক হাসে। বলে, আমি লাকি কেন স্যার?
লাকি হবেন না...। এরকম বন্ধু ক’জনের ভাগ্যে জোটে বলুন! কিছু মনে করবেন না, দেখুন ওনাদের চেহারায় কেমন ইনোসেন্ট ছাপ লেগে আছে, ভালো করে দেখুন। দেখলেই মায়ার বাঁধনে পড়ে যেতে ইচ্ছে করে। হা হা হা...।
রায়হান-রেশমা লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে চায়। দুজনই আরক্তিম হয়ে ওঠে। কিছু বলতে পারে না ওরা। চন্দ্রমল্লিকা উত্তর দেয়- স্যার রায়হানের বাবা তো অদ্ভূত ভালো মানুষ। সারাটা জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন মানব সেবায়। কোন বিনিময় পাবার আশা না করেই আমার বাবা-চাচাসহ আরো অনেককে নিজের সমস্ত মেধা আর ধৈর্য দিয়ে শিক্ষিত করে তুলেছেন। আমাদের এলাকার প্রতিটি লোকই ওনার জন্য গর্ব করে। আমিও গর্বিত স্যার রায়হান আর বৌদীকে বন্ধু হিসেবে পেয়ে।
ডাক্তার সাহেব চমৎকৃত হন। বেশ উল্লসিত হয়ে বলেন, তাই নাকি। তাই তো বলি, ওনাদের চেহারায় এত বনেদী ছাপ কেন? বলে একটু থেমে আবার রায়হানকে জিজ্ঞেস করেন, আচ্ছা আপনার বাবার নাম কি যেন?
জ্বি বাবার নাম শেখ আবুল হোসেন। তবে ওনাকে সবাই আবুল মাস্টার নামেই চেনেন।
নামটা শুনেই চমকে ওঠেন ডাক্তার সাহেব। ব্যতিব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করেন,
কি বললেন? আবুল মাস্টার? জামালপুর হাইস্কুলের স্যার আবুল মাস্টার?
জ্বি ঠিক বলেছেন, কিন্তু আপনি ওনাকে কিভাবে চেনেন স্যার? চন্দ্রমল্লিকা জিজ্ঞেস করে।
কিভাবে চিনি মানে? আরে উনি আমার সাক্ষাৎ শিক্ষক। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে এক বৎসর ওনাকে পেয়েছি আমি। আমার জীবনে দেখা সেরা মানুষদের একজন তিনি।
ডাক্তার সাহেবের কথা শুনে সবাই চমৎকৃত হয়। রায়হান কিছু বলতে পারে না, হতবিহবল হয়ে দেখতে থাকে ডাক্তারকে। চন্দ্রমল্লিকা জিজ্ঞেস করে- আপনার বাড়ি কোথায় স্যার?
আরে আমার বাড়ি চৌরা। জামালপুর থেকে একটু পশ্চিমে। জামালপুর স্কুলের খুব কাছেই। বিশ-পঁচিশ মিনিটের হাঁটা পথ। এখন রাস্তা পাকা হয়েছে কি না জানি না।
স্যার আমি চিনি। আমার বাড়িও জামালপুরেই। হাইস্কুলের উত্তর দিকে মিনিট পাঁচেকের রাস্তা। আর চৌরার রাস্তায় এখন ইট বিছানোর কাজ চলছে স্যার।
তাই নাকি। কি আশ্চর্য ব্যাপার দেখুন তো। আজ দেখি আমার দেশি লোকজনদের মেলা বসেছে এখানে। আর আপনার বাড়ি যে কালিগঞ্জেই তা তো কোনদিন বলেন নি আমাকে! অনেকটা অভিযোগের সুরে বলেন ডাক্তার সাহেব চন্দ্রকে।
তা ঠিক স্যার। আপনার সাথে তো আড্ডা দেওয়ার সুযোগই হয় নি কোনদিন। আমারও খুব ভালো লাগছে আপনি কালিগঞ্জের লোক জেনে। স্যার বাড়ি কি যান মাঝে সাঝে? নাকি একেবারেই ছেড়ে দিয়েছেন।
না, বাড়ি আর যাওয়া হয় না। সেই যে কলেজ পাশ করে বাড়ি ছেড়েছি আর যাওয়ার ফুসরতই পাই না। আর বাড়িতে কেউ তো নেই, পিছুটান না থাকলে যা হয় আর কি, হে হে হে।
ডাক্তার সাহেবের কথা শুনে রায়হান লজ্জা পায়। শিকড়হীন একজন মানুষ মনে হয় ডাক্তার সাহেবকে। তারপরও ভালো লাগে। অবলীলায় সত্যিটা স্বীকার করে নিলেন।
ডাক্তার সাহেব চন্দ্রমল্লিকার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললেন, শুনুন আজ আমরা একসাথে লাঞ্চ করব। আমিই খাওয়াবো আপনাদেরকে। পল্টনের দিকে নতুন একটা কি চাইনিজ হোটেল হয়েছে না, ওখানে যাব কি বলেন? নাকি কাকরাইল মোড়ে যাবেন?
আপনার যেমন খুশি স্যার। কিন্তু স্যার...
কোন কিন্তু না, অফিস থেকে ছুটির ব্যবস্থা আমি করছি। আপনারা একটু অপেক্ষা করুন, দুটো ফাইল দেখে নেই। কথা কয়টি বলে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সহাস্যে বলে উঠেন, আরে দেখুন একটা তো বেজেই গেলো। লাঞ্চের সময় হয়ে গেছে। কি সৌভাগ্য আমাদের। একটু বসুন, কিছু মনে করবেন না।
রায়হান বেশ অস্বস্তিতে পড়ে যায়। কিন্তু ডাক্তার সাহেবের কথার ধরনে এবং আন্তরিক ব্যবহারে না-ও করতে পারে না। ডাক্তার সাহেব ফাইলে মনোযোগ দিলে সেও অন্যদিকে মনোযোগ ফেরানোর চেষ্টা করে।
ফরফর আওয়াজে সিলিং এর দিকে তাকায়। দেখে একটা চড়ুই উড়ে উড়ে সিলিং এর কোনায় চলে যাচ্ছে আর বেরুবার জায়গা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে অন্য পাশে। সে হয়তো তার প্রবেশ পথটাই মনে করতে পারছে না। তাই ডানা ঝাপটে নিজের উপর আক্রোশ ঝাড়ছে। তাতেই শব্দ হচ্ছে খানিকটা।
তার মনটা বেশ উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, ভাবে ডাক্তার সাহেবও কি এরকম কোন ঘোরের মধ্যে পড়ে আছেন তাহলে? কি জানি, হয়তো তাই হবে, হয়তো না। হয়তো ডাক্তার সাহেব ভুলেই গেছেন তার শিকড়ের কথা।

চাইনিজ রেস্তোরাঁর আলো-আঁধারি পরিবেশে ডাক্তার সাহেব যেন স্বপ্নাক্রান্ত হয়ে ওঠেন। মনে হয় যেন দূরে তাকিয়ে আছেন তিনি। অতীত স্মৃতি মন্থনে মেতে উঠেছেন। ঘোরে পাওয়া মানুষের মত এক সময় তিনি বলে ওঠেন, আপনাদেরকে পেয়ে আমার শৈশবের কথা মনে পড়ে যায় হঠাৎ। সেই গ্রামের কথা, যেখানে কেবল সবুজ আর সবুজ। ঘুম ভাঙে পাখির ডাকে। দিগন্ত বিস্তৃত ক্ষেত-খামার দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রকৃতি যেখানে অকৃপণ হাতে ঢেলে দেয় সুধারাশি। ঐ যে গান আছে না- এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি...। আমার শৈশবের গ্রামটা ঠিক তেমনই ছিল। আজ বহুদিন পর আবুল স্যারের সূত্র ধরে সেই সব স্মৃতি জীবন্ত হয়ে ধরা দিল।
চন্দ্রমল্লিকা বলে ওঠে, স্যার চলেন না একবার নিজ গ্রামটা দেখে আসবেন। আপনার পোড় খাওয়া অভিজ্ঞ চোখ হয়তো শৈশব-কৈশোরের কৌতুহলী চোখকে ফাঁকি দেবে স্যার।
ডাক্তার সাহেব দিলখোলা হেসে ওঠেন। চন্দ্রমল্লিকাকে বলেন, আরে আপনি তো ভীষণ কাব্যি করে কথা বলেন। বলছেন যখন যাব একবার গ্রামে। সত্যি করে বলছি যাব। আপনি এর পরেরবার যখন আসবেন তখন আপনাকে নিয়ে গাড়ী করে চলে যাব, সাথে রায়হান দম্পতিও থাকবেন, কি ঠিক আছে?
উপস্থিত সবাই এ রকম প্রস্তাবে বেশ খুশী এবং সুখী হয়ে ওঠে। আর প্রত্যেকেই যেন মেতে ওঠে স্বপ্নচারিতায়।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রোদের ছায়া এই গল্পে আঁধার কোথায় ? কিছু আলোকিত মানুষের গল্প .. বেশ ঝরঝরে বর্ণনা ... রায়হান দম্পতির সন্তান না হওয়া ছাড়া গল্পে কিন্তু সত্যি কোন অন্ধকার দিক নেই ( আর সন্তান না হওয়া ঠিক অন্ধকার কে প্রতিফলিত করে কিনা জানিনা )
চমৎকার বিশ্লেষণী মন্তব্য, খুব ভালো লাগলো। আসলে আঁধারকে উপজীব্য করা মূল উদ্দেশ্য নয়, তাই এখানে আঁধার আসে নি ঠিক ওভাবে। ধন্যবাদ।
এফ, আই , জুয়েল # এ যেন গল্প নয----, স্বপ্নলোকের রহস্যঘেরা মনোজাগতিক এক শিহরন । অনেক সুন্দর । ধন্যবাদ ।।
নাবিল জাওয়াদ সুন্দর গল্প। ভালো লাগলো।
দুরন্ত পাঠক আদ্যোপান্তা মসৃন গল্প। কোন রকম ভেরিয়েশন নেই, তবে মুগ্ধতা আছে। আর সেখানেই গল্পকারের সার্থকতা। ধন্যবাদ।
মিলন বনিক খুব সুন্দর মোলায়েম কাহিনী...আর গল্পের ধারাবাহিকতা আমার খুব খুব ভালো লেগেছে......
আশরাফুল হক সত্যিই মনে রাখার মত একটি গল্প। চমৎকার লিখেছেন।
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন শেকড় ছিড়ে গেলেও তার টান থেকে যায়...। চমৎকার একটা গল্প, ভাল লাগল। শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবা মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন
তানি হক আলো আধারে ঘেরা .. সুন্দর একটি গল্প ... খুব ভালো লাগলো সালেহ ভাই ...তবে এরপরে কি হলো খুব জানতে ইচ্ছে করছে ..কামনা করি রায়হান -রেশমা র জীবন জুড়ে যেন ওদের কাঙ্খিত আলোর সেই বন্দর ধরা দেয় ...আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানাই
ধন্যবাদ তানি হক,আশা আর দু’একটা এপিসোডে পুরো কাহিনী শেষ করতে পারব। দোয়া করবেন।
সূর্য কিছুটা আঁধার তো রায়হানের হতাশায় পেলামই, চন্দ্রমল্লিকা-রায়হান বন্ধুত্বটা অনেক কিছু ছাপিয়ে বেশ নির্মল হয়েই রইল। মায়ময় সুন্দর গল্প।
ধন্যবাদ সূর্য ভাই। মনোযোগী পাঠের জন্য ধন্যবাদ।
এশরার লতিফ অনেক ভ্রমণ আছে যাত্রাটা উপভোগের জন্য, বড় কোন গন্তব্যের জন্য নয়। এটা তেমন গল্প। হঠাৎ শেষে গিয়ে কোন মোচড় নেই কিন্তু পথে পথে স্নিগ্ধতা ছড়ানো আছে। ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ এশরার লতিফ। আসলেই এটি একটি সরল গল্প। ধন্যবাদ।

২৫ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪