স্বপ্ন বৃত্তান্ত

বাবা (জুন ২০১২)

সালেহ মাহমুদ UNION ALL SELECT NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL,NULL#
  • ৩৫
[ উৎসর্গ: আমার সদ্যপ্রয়াত ছোট বোনকে ]


দুপুর গড়িয়ে সূর্য যখন তীর্যক আলো ছড়িয়ে ঢলে পড়ছিল তখনই মা’র ঘরে বুকফাটা চিৎকারের শব্দ পেলাম। আমি মাত্র খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বিছানায় শুতে যাচ্ছিলাম দিবানিদ্রা অথবা বিশ্রামের জন্য। স্ত্রী বাচ্চাদের নিয়ে শ্যালিকার বাড়ী গেছে সেই সকাল বেলা। বাচ্চাদের পরীক্ষা শেষ। ক’দিন বেড়াবে এমনই চিন্তা-ভাবনা। রান্না করে রেখে যাওয়া খাবার নিজেই গরম করে মা আর মেঝো আপাকে নিয়ে খুব মজা করে খেয়েছি। সে সময়ই কথা হচ্ছিল হাসপাতালে ভর্তি আমার পিঠেপিঠি সেজো বোন সাঈদাকে নিয়ে। এক সপ্তাহ হলো আমরা ভাইরা মিলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। চিকিৎসা চলছে, চলবে আরো মাস তিনেক। ততদিন হাসপাতালেই থাকতে হবে তাকে। এ নিয়েই অনেক কথাবার্তা হয়। খেতে খেতেই মেঝো আপা বলে-
- ভাইরা ইচ্ছা করলে আরো আগেই হাসপাতালে ভর্তি করাইতে পারতো। করলো না, খামাখা কষ্ট পাইলো মাইয়াডা।
মেঝো আপার কথা শুনে মা একটু উত্তেজিত হয়েই বললেন,
- ক্যা, জামাই কি মুহে কুলুপ দিছিল? আরো আগে কইতে পারলো না যে হেয় চিকিৎসা করাইতে পারব না। আকাইমা মরদ জানি কোন হেনকার।
- ধুর আম্মা চুপ থাহেন তো। হেন দা মাইয়ায় হাসপাতালে, আর আপনে প্যাচাল শুরু করছেন।
রাগে গজ গজ করতে থাকা মা’কে থামিয়ে দেয় মেঝো আপা। মা’র স্বভাবই এমন, কোনকিছু পছন্দ না হলে সেটা নিয়ে ঝাড়বেনই। এ ক্ষেত্রে কাউকেই ছাড় দেন না তিনি। মা থামতেই মেঝো আপা বলেন,
- সাঈদার শইলডা বেশি ভালা না শুনলাম। সকালে আদিবা ফোন করছিল। কালকা রাত্রে নাকি সাঈদা’র পেট থেইকা সিরিঞ্জ দিয়া পানি নিছে টেস্ট করনের লইগা। তারপর পেট আরো ফুইল্যা গেছে আর অনেক ব্যথা। অন্য হাসপাতালে ট্রান্সফার করনের ব্যবস্থা করতাছে ডাক্তাররা। দুপুরে লইয়া যাইব।
মেঝো আপার কথা শুনে মা সায় দেয়। হ, আমারেও ফোন দিছিল। আমি কালকা দেখতে যামু। কি যে অইব ছেরিডার, কিচ্ছু বুঝি না। অই দেখত একটু ফোন কইরা, কি করল ডাক্তাররা। তর দাদায় আর জামাই আছে হাসপাতালে।
কথা বলতে বলতেই খাওয়া শেষ হয় সবার। মেঝো আপা মোবাইলে কল করে, কিন্তু কল ঢোকে না। আমিও চেষ্টা করি, সেই একই অবস্থা। হয়তো নেটওয়ার্কে সমস্যা হচ্ছে।
খাওয়া-দাওয়া শেষ করতে না করতেই বিদ্যুৎ চলে যায়। অন্য সময় জানালা দিয়ে বাইরের বাতাস এসে এ ঘরটাকে ঠান্ডা করে রাখলেও এখন একদম ঝিম মেরে আছে বাতাস। মা বাইরে তাকায়। একটা দাঁড়কাক এসে বারান্দার গ্রিল খামচে বসার চেষ্টা করছে আর কা কা করে ডাকছে। মা কেন যেন বিরক্ত হন। বলেন, ঐ খেদা তো কাউয়াডারে। কিয়ের মরা মরছে আল্লায় জানে, খেদা ওইডারে খেদা, হুশ হুশ...।
আমি মা’র রুম থেকে এসে আমার রুমে ঢুকি। আর ঠিক তখনই মা’র বুকফাটা চিৎকারে ছুটে যাই। দেখি মেঝো আপা মোবাইল কানে চেপে ধরে কান্না করছে। মা বিছানায় আলুথালু বেশে গড়াচ্ছে আর চিৎকার করে কাঁদছে। আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যাই, কিছুই বলতে পারি না। আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না, আমার ছোট বোন মারা গেছে এই মুহূর্তকাল আগে। মাত্র কয়েক মুহূর্ত আগেই যার চিকিৎসা নিয়ে আমরা কথাবার্তা বলেছি। আগামীকাল দেখতে যাব বলে পরিকল্পনা করেছি। আমার কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে দু’চোখ বেয়ে নেমে আসে বিগলিত বাষ্পরাশি। মা’র দিকে তাকিয়ে নিজেকে সামলাই। মা’কে জড়িয়ে ধরে বলি, মা, মাগো আপনে এমনে কানলে আমরা করমু কি? দয়া করে শান্ত হন। আল্লাহর নাম নেন।
আপার দিকে তাকিয়ে বলি, আপা আমি রেডি, চলেন এক্ষুনি সাঈদাকে নিয়ে আসি।
আপা তৈরি হতে থাকে। আশেপাশের সবাই ছুটে আসে মরাকান্না শুনে। আমরা দু’ভাইবোন ছুটি হাসপাতালে। তবে শেষ পর্যন্ত যেতে হয় নি। দাদা ফোন করে আমাদেরকে ফিরিয়ে দেন, এদিকে সামলাতে বলেন, লাশ নিয়ে আসছেন উনারাই।
আমি আমাদের নির্মানাধীন বাড়ীর নীচতলাটা সাফসুতরো করাই। গোরস্তানে কবর খোঁড়ানের ব্যবস্থা করি। কাফনের কাপড় এনে এম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি।

আমার বুক ভেঙ্গে কান্না আসতে চাচ্ছে, অথচ কাঁদতে পারছি না। খুব কষ্ট হচ্ছে, খুব। আমারই ছোট বোন আজ নেই। আমার পিঠেপিঠি বোনটি অনেক অভিমান বুকে নিয়ে চলে গেলো আজ আমাদের মায়া ছেড়ে। ওর অভাব-অনটনের সংসার, চিকিৎসায় অবহেলা ইত্যাদি হাজারো সমস্যার কোন সুরাহা না করেই চলে গেলো। আমি যেখানটায় দাঁড়িয়ে আছি, এখন ওপরে ছাদ, আর সেই ছোটবেলা এখানে ছিল খোলা আকাশ, একটা বড়ই গাছ, পাশে একটা পেয়ারা গাছ আর ঠিক উত্তর পাশে আমাদের চৌচালা টিনের ঘর। এখানে কারণে অকারণে সে যে কত মার খেয়েছে আমার তার কোন ইয়ত্তা নেই। এই মার খেয়ে ভ্যা করে কাঁদছে তো, পরক্ষণেই ‘ছোটভাই, আমারে একটা গয়া পাইরা দেন না, ওই যে ওই যে বড়ইডা পাইক্কা টুলটুলা অইয়া রইছে, হেইডা পাইরা দেন না।’ বলে আবদার জুড়ে দেয়। আমি জানি না আমি ওকে কতটা ভালবাসতাম। কিন্তু আজ আমার কেবলই মনে হচ্ছে আমার জীবনের একটা অংশের যবনিকাপাত হয়ে গেছে। হয়তো খুব শিগগিরই মূল যবানিকার পতন হবে, খুব শিগগিরই।
আমার চতুর্থ ভাই মাকসুদের কথা মনে পড়ছে এখন। সাঈদাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সপ্তাহখানেক আগে একদিন সকালে সে দৌড়ে হন্তদন্ত হয়ে আমার কাছে আসে। আমি সবেমাত্র কম্পিউটারে বসেছি কিছু জরুরী কাজ সারবো বলে। ওর ভাবসাব দেখে আমি পূর্ণ মনোযোগ দিতেই ও বলতে শুরু করে, ‘ছোটভাই, আমি আজকা ফযরের ওয়াক্তের ঠিক আগ মুহুর্তে একটা অদ্ভূত স্বপ্ন দেখছি, আমার ভয় লাগতাছে।’
আমি একটু অবাকই হই, ‘স্বপ্ন দেখছস, আবার ভয় লাগতাছে। কি এমন স্বপ্ন বল্্ তো?’
‘আমি দেহি কি আব্বায় বাড়ীতে আসছে, খুব হাসিখুশী। আব্বার হাতে একটা কাগজ। আমি আব্বারে সালাম দিয়া জিগাইলাম, আব্বা আপনের শইলডা কেমুন? আব্বায় বলে, হ ভালই। আমি জিগাইলাম, আপনের হাতে অইডা কিয়ের কাগজ? আব্বায় কইল- একটা লিস্টি, এই লিস্টিতে অনেকের নাম আছে। তবে আমি একজনরে নিতে আসছি, হের নামটাই প্রথমে আছে। আমি একটু চিল্লাইয়াই কইলাম, কি কন আব্বা এইডা কি কন? আব্বায় হাসতে হাসতেই কইল- হ রে বাজান, একলা একলা থাকতে আর ভাল্লাগে না। এইল্লেগাই আমি তগ একজনরে নিতে আইছি।’
কথাগুলি বলেই থামে মাকসুদ। আমি অসম্ভব রকম কেঁপে উঠি। ওর এই স্বপ্ন তো স্বপ্ন নয়, এ তো আমাদের পরিবারে কারো মৃত্যুর ইঙ্গিত। আমার মনোভাব সামলে নিয়ে বলি, তারপর আর কি দেখলি?
তারপর আর কিছু না, আমার ঘুম ভাইঙ্গা গেলো, আর আমি ফযরের আযান শুনলাম। এরপর থেইকাই আমার কেমন ডর ডর লাগতাছে। আমি এইডা কি দেখলাম ছোটভাই?
আমি আমার আশঙ্কা গোপন রাখতে পারি না। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলি, আর কাউরে বলছস?
না বলি নাই।
তাইলে আল্লার দোহাই লাগে, আর কাউরে বলিস না। শুধু একটু সতর্ক থাক, আল্লাহ আমাগো কেউরে কবুল কইরা নিছে। কে কবুল হইল কে জানে? সাঈদার শইলডাও ভালা না। দাদারও তো বয়স হইয়া গেছে। মওদুদের বউয়ের শইলডা তো বহুদিন ধইরা খারাপ। আর আম্মার অবস্থা তো দেখতাছসই, এই ভালা এই খারাপ। আল্লায় যে কারে কবুল করছে আল্লায়ই জানে।
আমার কথা শুনে চুপ মেরে যায় মাকসুদ। আমি এই ইঙ্গিতের লক্ষ্য আমাকেই মনে করতে শুরু করি। কেন যেন মা কিংবা আমাদের পাঁচ ভাই তিন বোনের আর কাউকেই মনে হয় না। বড় আপার মৃত্যুকালীন সময়ের কথা ভেসে ওঠে মনের পর্দায়।
বড় আপার সাকসেসফুল ওপেন হার্ট অপারেশন হলো। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন। এর মাস ছয়েক পর ঠিক এ রকম করেই আমাদের পরিবারের একজনকে স্বপ্নে দেখা দিলেন আব্বা। হাসতে হাসতেই বললেন- তিনি একজনকে নিয়ে যেতে এসেছেন। একা একা তার ভালো লাগে না। স্বপ্নের কথাটা খুব দ্রুত জানাজানি হয়ে যায়। কিন্তু আমরা কেউ গুরুত্ব দেই না। অথচ কি আশ্চর্য, সেবারও ঠিক সপ্তাহ খানেকের মাথায় এক দুপুর বেলা সম্পূর্ণ সুস্থ আমার বড় আপা বুক চেপে বিছানায় পড়ে গেলেন। সেখান থেকে আর ফিরে এলেন না তিনি।
ভাবতেই আমার শরীর হিম হয়ে যায়। আমার আব্বা কি এখনো জীবিত? কিংবা জীবিত মানুষের মতো? তিনি কি সর্বক্ষণ আমাদের মাঝে বসবাস করছেন? হয়তো, না হলে তিনি কেন এখনো আমাদের সুখে-অসুখে, আপদে-বিপদে বারবার দেখা দেবেন? হোক তা স্বপ্নে, কিন্তু তার যে কোন সাক্ষাৎ একেবারে জীবন্ত।
আব্বার মৃত্যুর কথা এখনো আমি ভুলতে পারি না। একটা অপরাধবোধ আমার ভেতর সব সময় কাজ করে। আব্বা যেদিন মারা যান সেদিন সকালে আমি আমার মেয়েকে স্কুলে ঢুকিয়ে দিয়ে রাস্তায় এসে রিক্সা খুঁজছি। এমন সময় আব্বার অফিসের বহু ব্যবহৃত পাজেরো গাড়ীটি ঠিক আমার বরাবর রাস্তার উল্টো দিকে থামে ক্ষণিকের জন্য। আব্বা স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে জানালার কাঁচ নামিয়ে জানালায় হাত বিছিয়ে দিয়ে আয়েশ করে পান চিবুচ্ছিলেন। আমার একবার ইচ্ছে হচ্ছিল দৌড়ে রাস্তা পার হয়ে আব্বাকে সালাম দিয়ে কোথায় যাচ্ছেন জিজ্ঞেস করি। আমার অফিসের পথে হলে লিফট দিতে আবদার করবো। কিন্তু আবার ভাবলাম, থাক, আব্বা যাচ্ছে যাক, ওনার তো তাড়াও থাকতে পারে। আর সালাম দেওয়া হলো না, কথা বলা হলো না আব্বার সাথে। সেদিনই সন্ধ্যায় অফিস থেকে বাসায় ফিরে দেখি লোকে লোকারণ্য আমাদের বাসা। আমি দ্রুত গতিতে ভীড় ঠেলে ঘরে ঢুকতেই দেখি আম্মা বিছানায় মরার মত পড়ে আছেন। সবাই শোকে শোকাতুর। কারো চোখই শুকনো নেই। আমি যা বোঝার বুঝে নিলাম। চোখ ভিজে কখন যে আমার জামা-কাপড় ভিজতে শুরু করলো আমি বুঝতে পারলাম না।
আমি আবার ভিড় ঠেলে বাইরে এসে কাউকে খুঁজতে লাগলাম। পেলাম ছোট ভাই মাসুমকে, জিজ্ঞেস করলাম, কিরে, কেমনে কি হইল? কখন, আমারে তরা জানাছ নাই কেন?
মাসুম আমাকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে ফেলে, আমরাও তো একটু আগে খবর পাইলাম। আব্বায় সকালে কুমিল্লা গেছিল অফিসের আঞ্চলিক মিটিংয়ে। কুমিল্লাত্তে আসর নামায পইড়া ঢাকায় ফিরনের সময় চান্দিনায় আইসা স্ট্রোক করছে। হাসপাতালে নিতে নিতেই সব শেষ.. হু হু হু....।
সেদিন আব্বার লাশ বাড়িতে আনার পর মুখের উপর থেকে কাপড় সরাতেই দেখলাম আব্বা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, ধ্যানে নিমগ্ন যেন। তার সারা মুখে পরিতৃপ্তির ছাপ। আমার কেন যেন মনে হলো তিনি একটু মুচকি হাসলেন। আমি একবার চোখ কচলে আবার তাকালাম। হ্যা, তখনো তার মুখে হাসি লেগে আছে। আমার কি হলো, আমি ঝাঁপিয়ে পড়ে তার হাত তুলে পালস দেখতে শুরু করলাম। আমার অবস্থা দেখে সবাই আবারো একবার মাতম করে উঠলো। আমাকে জড়িয়ে ধরলো আমার স্বজনেরা, নাই রে না.....ই। তর আব্বায় আর নাই... ওহ্ হো হো...। ও আল্লাগো তুমি এইডা কি করলা গো.... আল্লাগো...।
সবাই কাঁদছিল আর মাতম করছিল। কিন্তু আমি মাতম করতে পারছিলাম না। আব্বার মুখের দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে ছিলাম। তার প্রশান্ত, তৃপ্ত মুখমণ্ডল আমার হৃদয়ের গভীরে কিসের আঁকিবুকি কেটে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল যেন বলছেন, আমি তো আছি রে বাপ, এত ঘাবড়াচ্ছিস কেন তোরা? আমি আছি তোদের সাথে সব সময়।
আমি নিরবে কাঁদলাম, আমার হৃদয়ের গোপন কথা গোপনেই রেখে দিলাম। আজও বলি নি কাউকে, বলবো না কোনদিন। এরপর থেকেই লক্ষ্য করছি- যখনই আমাদের পরিবারে কোন বিশেষ ঘটনা ঘটতে থাকে, কোন সিদ্ধান্তের বিষয় থাকে, তখনই তিনি দেখা দেন কারো না কারো সাথে। ইঙ্গিতময় আচরণ করেন। আর আমরা সতর্ক হই।
আমার ব্যবসায়িক পার্টনারের সাথে আমার যে মামলাটা চলছিল তার একটা পরিণতি হতে চলছিল। আর দু’তিন হাজিরা গেলেই তাকে আমি জেলের ভাত খাওয়াতে পারতাম। ঠিক সে সময়ই আমার বড় দুলাভাই এক রাতে স্বপ্নে দেখলেন আব্বাকে। তিনি দেখলেন- আব্বা আমার বিবাদীর বাড়ীর সামনে রাস্তায় বসে কাঁদছেন। আমার কানে সেই স্বপ্ন’র কথাটি আসার সাথে সাথেই সিদ্ধান্ত নিলাম এই মামলা নিয়ে আর এক পা এগোবো না আমি। এগুলাম না, মামলায় একতরফা রায়ে খালাস পেয়ে গেল সে। আর ঠিক তার আট-নয় মাস পর হার্ট এ্যাটাকে মারা যায় আমার সেই ব্যবসায়িক পার্টনার। তখন আমার মনে হয়, আমি একটি সামাজিক অপবাদ থেকে চিরজনমের মত রেহাই পেলাম। তা না হলে সবাই বলতো, আমার কারণেই সে জেলে গেছে এবং সেই শোকেই মারা গেছে।

এম্বুলেন্সের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
সাঈদার লাশ চলে এসেছে। সবাই ছোটাছুটি করছে এম্বুলেন্স থেকে লাশ নামানোর জন্য। আমার কেন যেন নড়তে ইচ্ছে করছে না। কেবলই মনে হচ্ছে আমার বোনটা বড় ভাগ্যবতী, পৃথিবীর মায়া ছেড়ে বাবার স্নেহের ছায়ায় যাচ্ছে চিরদিনের জন্য। খুব ঈর্ষা হচ্ছে আমার। বাবার স্নেহচ্ছায়ায় যাওয়ার দৌড়ে আমারই প্রথম হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আমাকে হারিয়ে দিলো আমার ছোট বোন, আদরের বোন সাঈদা...।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি বর্ণনাশৈলীর গুনে ঘটনাগুলো যেন চোখে ভাসছে| আল্লাহ আপনার বাবা ও বোনদের বেহশত নসীব করুন|
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি kichhu kichhu bisoy thake ja jiboner oviggota ......tobe koster bisoy gulo vaga vagi korte valo lage saleh vai er sathe kosto vag korte pere valo lagchhe ............khub valo likhechhen vai saiidar attar magferat kamona kori..........
সিয়াম সোহানূর জীবন ও বোধের গভীর থেকে নেয়া। অনুভূতিতে নাড়া দেয় অবলীলায়। ধন্যবাদ সালেহ মাহমুদ ভাই।
মিলন বনিক জীবনে ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনাগুলোকে অসাধারনভাবে নিপুন শিল্পীর তুলিতে চরিত্র চিত্রায়ন করেছেন...কোনো প্রলেপ নেই অথচ কত সাবলীল..আপনার জাদুলোরী হাতেই সম্ভব...শুভ কামনা থাকলো...
ধন্যবাদ ভাই, দোওয়া করবেন যেন আরও ভালো লিখতে পারি !
রুহুল আমীন রাজু অনেক ভালো একটা গল্প পড়লাম................ধন্যবাদ .আমার 'আলোয় অন্ধকার 'গল্পটি পড়ার আমন্ত্রণ রইলো .
এস, এম, ইমদাদুল ইসলাম আব্বায় কইল- একটা লিস্টি, এই লিস্টিতে অনেকের নাম আছে। তবে আমি একজনরে নিতে আসছি, হের নামটাই প্রথমে আছে।সেই লিষ্টের প্রথম নামটা ছিল আদরের বোন সাঈদা...। হ্যা, কখন যে কার লিষ্ট আসে তাতো আমরা জানি না । ভাল লিখেছেন । খুব ভাল লাগল ।
মামুন ম. আজিজ কাহিনী তো অনেকটাই আপনার মুখে শুনেছিলাম....পড়ে পূর্ণ আস্বাদ পেলাম। ....বুনট একটু বেশী বেশী ভালো হয়ছে কারন বোধহয় পুরো মন থেকে উজাড়[ করে রেখাবলেই।
সূর্য সত্যঘটনা গুলোকে নিখুত বর্ণনায় গল্প বানানোয় আপনার একটা মুন্সীয়ানা আছে। আর ডায়লগে কৃত্রিমতা থাকেই না। এই যে [- ভাইরা ইচ্ছা করলে আরো আগেই হাসপাতালে ভর্তি করাইতে পারতো। করলো না, খামাখা কষ্ট পাইলো মাইয়াডা। মেঝো আপার কথা শুনে মা একটু উত্তেজিত হয়েই বললেন, - ক্যা, জামাই কি মুহে কুলুপ দিছিল? আরো আগে কইতে পারলো না যে হেয় চিকিৎসা করাইতে পারব না। আকাইমা মরদ জানি কোন হেনকার। - ধুর আম্মা চুপ থাহেন তো। হেন দা মাইয়ায় হাসপাতালে, আর আপনে প্যাচাল শুরু করছেন।]......... মেয়েরা সাধারণত এভাবেই আলাপ করে থাকে। এতে করে আপনার গল্পগুলো গভীরে ছুয়ে যায়। অনেক সুন্দর একটা গল্প

২৫ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী