আমার নাম আব্দুল্লাহ। পেশায় অনেক কিছূ। স্বপ্ন দেখেছিলাম বড় হয়ে অনেক কিছু হব। কিন্তু সব স্বপ্ন থামিয়ে দিল দুই, তিন বর্ণের শব্দ, এক নিশ্বাসে বলা যায় "অভাব নাকি ক্ষুধা"। দুটিই বলার কারণ হল যে কোনটি আমার স্বপ্নকে থামিয়ে দিল সেটা নিয়ে সন্দেহে আছি তাই। ছোট বেলায় কোনদিন অভাবের মুখ দেখেনি যাও দেখেছি তা অল্প যাকে অভাব বলা যায় না। ছোট বেলায় টিভিতে নাটক, সিনেমায় দেখতাম অভাবের তাড়নায় পড়ে ছোট ছেলে খুন, ডাকাতি, রাহাজানি ইত্যাদি করে তখন মনে মনে কতইনা ধিক্কার ধিয়ে বলতাম অভাব আছে বলে মানুষ এত খারাব কাজ করবে? ছি!!! এটা কোন কথা হল। যখন আমি অষ্টম শ্রেণিতে টেলেন্টপুল বৃত্তি পেয়েছি, সবাই আমাকে নিয়ে কত ধরনের মন্তব্য করতে লাগল। কেউ বলে ডাক্তার, কেউবা ইঞ্জিনিয়ার অনেক কিছু। এক সময় আমি এস, এস, সি পরীক্ষাথর্ী তখন দেখা দিল অভাব, রেজিট্রেশন ও ফরম ফি: বাবদ অনেক গুলো টাকা আসল। তখন মায়ের এক মাত্র সম্বল হাতের চুড়ি বিক্রি করলেন। সেটা দিয়ে পরীক্ষা দিলাম। পরীক্ষা শেষ। এক সময় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন অ+ পেলাম। পরীক্ষার রেজাল্টের আগে মা বলেছিলেন, তুই যদি ভাল করে পাশ করতে পারিস তা হলে, আমি যেভাবে পারি তোকে আমি ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি করিয়ে দিব (আমার মাও শিক্ষিত)। ইন্টারমিডিয়েটেও বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হলাম। কিন্তু আর পড়া লেখা হল না। চাকুরী করতে চলে এলাম অনেক দূরে। চাকুরী করি প্রায় দেড় বছর। কিন্তু হঠাৎ করে আবার মাথায় লেখাপড়ার ভুত মাথায় চাপল। চলে এলাম চাকুরী থেকে। মাকে বল্লাম পড়ালেখার জন্য আপনাদের থেকে খরচ দিতে হবে না এবং আপনাদের খরচ বাবদ আমি কিছু টাকা দিব। মাও আমাকে কিছু বল্ল না। ভাল করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিলাম, পাশাপাশি চলতে লাগল টিউশনি, কেজি স্কুলে চাকুরি। এইচ, এস, সি তে পেলাম অ+ । এবার প্রস্তুতি নিতে লাগলাম ইউনিভার্সিটি অথবা ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তির জন্য। যেটার প্রতি আমার বিশেষ আগ্রহ ছিল সেটাতে ভর্তি হতে পারলাম, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পেলাম। এক সময় ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পড়ার খরচ চালানোর জন্য চাকুরী খুঁজতে লাগলাম আমার অর্জিত সার্টিফিকেট গুলো দিয়ে। কিন্তু না কোন সুরাহা হল না। যেখানে শিক্ষাগত যোগ্যাতা এস,এস,সি বা এইচ, এস, সি খুঁজে সেখানে মাষ্টার্স অথবা উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেটধারী যুবক যুবতীদের আনাগোনায় সেখানে কোন সুযোগ পাইনি। থেমে গেল লেখাপড়া। আবার ভর্তি হলাম বি.এ তে এক সময় বি.এ শেষ হলেও সে সার্টিফিকেট দিয়ে কোন চাকুরী মিলেনি। একদিন বাসার ছাঁদে দাড়িয়ে আছি, মনটা খুব খারাব। বাড়ি থেকে ফোন এল টাকার জন্য। কি করব বুঝতে পারলাম না। এক সময় মন বলে উঠল- ছিড়ে ফেল সব সার্টিফিকেট!!! যে সার্টিফিকেট মাবাবার মুখে খাদ্য তুলে দিতে পারে না, পারে না ভাইবোনের মুখে হাসি ফুটাতে। কি হবে সে সার্টিফিকেটের ঝুড়ি নিয়ে? ছিড়ে ফেল্লাম সব সার্টিফিকেট। মন ভরে এক শ্বাস নিলাম আকাশের দিকে। মনটা হালকা হয়ে এল। হাটলাম সামনের দিকে জানি না এ হাটার শেষ কোথায়?
আমার লেখাপড়া, জীবনের গতি কে থামিয়ে দিল, "অভাব নাকি ক্ষুধা"?
১১ এপ্রিল - ২০১১
গল্প/কবিতা:
১১ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪