বিকৃত ক্ষুধার কবলে অসহয় এক ষোড়শী

ক্ষুধা (সেপ্টেম্বর ২০১১)

Akther Hossain (আকাশ)
  • ৮৭
  • 0
মনোরা'র শরীর যতটানা কালো তার চেয়ে বেশী কালো দেখায় সারাদিন রান্না-বারা, ধোয়া-মাজার কাজে ব্যাস্ত থাকাতে। সকাল থেকে রাত পর্য়ন্ত গতর খাটিয়েও বেগম সাহেবার বকা শুনতে হয় তাকে, এটা করলি না, ওটা করলি না ক্যান আরো কত কি। কিন্তু না করে কি উপায় আছে? বার বছর বয়সে মা মারা যাবার পর তার কাজটি পেয়েছে মনোরা। সে সুবাদেই একটু মাথা গুজার ঠাই আর দু'বেলা দু'মুঠো ভাত খেয়ে অন্তত জীবন ঁেবচে আছে।

মনোরা তার বাবা'র চেহারা স্পষ্ট মনে করতে পারে না। চার বছর আগে মাকে হারিয়েছে। মায়ের কথা মনে হলে এখনো গুমরে গুমরে কাদে। তার ইচ্ছা করে এই শহর ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যেতে কিন্তু যাবে কোথায়? আপন বলতে পৃথিবীতে তার আর কেউ নেই। পাশের বাসার নার্গিস তার কথা বলার সথী। নার্গিস ওর চেয়ে বয়সে বড় স্বামী পরিত্যাক্তা। বছর খানেক আগে পাশের বাসায় কাজ নিয়েছে সে। বাসায় কেউ না থাকলেই চলে আসে এ বাসায়। আজও দ'ু জন মিলে গল্প করছিল ঠিক এমন সময় বেগম সাহেবা ডাকদেন মনোরাকে- মনু-------? কই গেলিরে? কতো বেলা হইছে অহনো রান্না চড়াইলিনা। খোকার উঠার সময় হইতাছে।

বেগম সাহেবা মনোরাকে মনু বলে ডাকেন। মনোরা ডাকতে উনার বেশী বেগ পেতে হয় তাই ও নামে ডাকেন না। খোকা এ বাড়ীর একমাত্র ছেলে দেশের বাইরে থেকে পড়াশোনা করেন, তার ভাল নাম ইসতিয়াক আনাম কিন্তু এ নামে বাসার কাউকে ডাকতে শোনা যায়না। মনোরা সব সময় ভাইজান বলে ডাকে। বেগম সাহেবার কথা মত মনোরা রান্না শুরু করে কিন্তু কাজে মন নেই তার, সারাক্ষন কি যেন ভাবে সে। তার ভাবনার কেন্দ্র বিন্ধু ভাইজান। তিন মাসের ছুটিতে এসে ছয় মাস পেরিয়ে, গেলেও যাওয়ার কোন নাম গন্ধ নেই। না গেলেই কিবা যায় আসে তার। সে তো এ বাড়ীর ছেলে কিন্তু সে ভাবনার জাল থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেনা মনোরা কারন তার যে ক্ষতি হবার তা অনেক আগেই হয়ে গেছে। ইদানিং সে তার নিজের ভিতরে আরও এক অনাগত, আস্বীকৃত মনোরার অস্তিত্ব অনুভব করছে।

ইসতিয়াক বাড়ীতে আসার সপ্তাহ দুয়েক পরে একদিন সাহেব এবং বেগম সাহেবা দু'জনে কোন এক অনুষ্ঠানে বাড়ীর বাইরে যান আর সে সুযোগে মনোরাকে কৌশলে নিজের ঘরে ডাকে।

- ভাই জান আমারে ডাকছেন? ঘরের দরজায় দাড়িয়ে মনোরার জবাব।
- তোকে ডাকছি কখন, দড়িয়ে আছিস কেন ভিতরে আয় মাথাটা খুব ব্যথা করছে একটু ম্যাসেস করে দেতো।

খাটের মাঝখানে উপুর হয়ে শুয়ে আছে সে। মনোরা ভিতরে ঢুকে দাড়িযে থাকে কি করবে বুঝে উঠতে পারছেনা। ভাইজান আগে কখনো এমন কাজের জন্য ডাকেনি তাকে। ইসতিয়াক ধমক দিলে তখন মাথায় হাত বুলাতে থাকে সে। এক পর্যায়ে ইসতিয়াক মনোরাকে জোর পূর্বক নিজের বুকের উপর টেনে নেয়। সমস্ত শক্তি দিয়ে খেলা করতে থাকে মনোরার শরীর নিয়ে। মনোরা বাধা দেয়, অনুরোধ করে ছেড়ে দিতে কিন্তু মানুষ নামের হিংস্র জানোয়ারের হাত থেকে রক্ষা পায়না। জলানজলি দিতে হয় তার কুমারিত্তকে হারাতে হয় অপুরনীয় সম্ভম। পূর্ণ ক্ষুধা মিটিয়ে তবেই ক্ষান্ত হয় ইসতিয়াক। এবং তাকে সাবধান করে দেয় কেউ যেন কোন ভাবে জানতে না পারে। মুখ খুললে গলা ধাক্কা দিয়ে এ বাড়ী থেকে বের করে দেবে সে কথা বলতেও বাদ রাখেনা।

মনোরার ষোড়শী শরীরের প্রতিটি ভাজে যৌবনের মাধুরতায় ভরপুর, ঠোটের কোনে একটু হাসি রেখে সবার সাথে কথা বলত। দু'মুঠো ভাতের জন্য নিজের কষ্টের কথা ভুলে আশ্রিত ছিল এখানে। তবে এটাই কি ছিল তার অপরাধ? যার কারনে কারও বিকৃত যৌবনের ক্ষুধার আহার হতে হলো তাকে। সে দিনের পর থেকে প্রায় রাতেই ইসতিয়াক তার রুমে যেত। লজ্জা, ভয়, ঘৃনায় কখনোই এ কথা প্রকাশ করতে পারতো না মনোরা। তবে নার্গিসকে বলতো হয়তো বেশী দিন আর এখানে থাকা হবে না তবে কোথায় যাবে কেন যাবে কখনো বলত না।

যেখানে পেটের খুধা মিটাতে প্রতিনিয়ত কারও যৌন খুধার আহার হতে হয় সেখানে আর অবস্থান না নিয়ে দু'চোখ যেদিকে যায় সে দিকে চলে যাওয়া ভাল মনে করে মনোরা। আর তাই কোন এক রাতের অন্ধকারে কাউকে কিছু না জানিয়ে নিজেকে মুক্তি দেয় নির্যাতিত এ কারাগর থেকে। কিন্তু মনোরা জানেনা শহরের ফুটপাতের আজকের রাতটাও তার জন্য কতটা নিরাপদ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Akther Hossain (আকাশ) সকল বন্ধুদের অনেক অনেক ধন্যবাদ ও সুভেচা গল্প পড়ার জন্য !
ভালো লাগেনি ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১১
Akther Hossain (আকাশ) obaidul hoque - dhonnobad sundhor coment korer jonno.
ভালো লাগেনি ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১
ওবাইদুল হক খুব নিবিড় ভাবনা সফল কামনা করি ।
Akther Hossain (আকাশ) রনীল = vai ami antorik vabe dukkito aponer moner moto golpo submit korte parinai bole. tai bole bule jaben na amake ! onek dhonnobad moner kotha ta boler jonno.
Akther Hossain (আকাশ) আরফান.- ভাই আপনাকে ধন্যবাদ দিয়ে চোট করতে চাই না, আপনার বিসিলোনাতক মন্তব্য আমাকে অনুপ্রারিত করে, আপনার জন্য সুভকামনা রইলো !
ভালো লাগেনি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১১
Akther Hossain (আকাশ) আনিসুর রহমান মানিক - thank ইউ.
ভালো লাগেনি ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১১
বিন আরফান. এরূপ গল্প আমার মনে আর দোলা দেয় না. নিজেই অনেক নিচ থেকে উঠে এসেছি আরো উঠতে চেষ্টা করছি . এতে অনেক লাঞ্চনা বঞ্চনার স্বীকার প্রতিটি পর্যায়ে পেতে হচ্ছে. যুগের সাথে তাল মিলানো ভিশন কষ্টের তখন মনটা ছোট হয়ে যায়. আর্মি স্টাইলে সালাম রইল বন্ধু. একটি গল্প কোন পর্যন্ত বিধ্লে অচেতন হয়ে নিজের কথাগুলো বরবর করে বলে ফেলে বুঝে নিবেন.
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১১
রনীল গত সংখ্যায় আকাশ ভাইয়ের ছাতা নিয়ে দুর্দান্ত মজার একটা গল্প পড়েছিলাম... সে রকম আশা নিয়েই এবার এসেছিলাম... কিন্তু এবারের গল্পটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের, পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল।
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১১
আনিসুর রহমান মানিক ভালো লাগলো /
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১১
Akther Hossain (আকাশ) পান্না = ভাই অসংখ ধন্যবাদ আপনার ভালো লেগেছে বলে !
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১১

০৯ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪