একটা বয়সী হাত বড় দরকার

অর্জন (এপ্রিল ২০২৩)

বিষণ্ন সুমন
মোট ভোট ১৪ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৪.৮৫
  • ১১
  • 0
  • ৩৭০
ইদানীং তিনি হাঁটতে পারেন না।
আসলে দাঁড়াবার শক্তিটুকুই নেই তার।
মাঝে মাঝে ঘুনে ধরা লাঠির জোরে
উঠে দাঁড়াবার প্রয়াস পান।

বয়সের ভারে ন্যুজ দেহ তার
কড়মড়িয়ে উঠে
যেন ভেঙ্গে পড়বে এখুনি।

আমি স্মিত হেসে তাকে বুড়ো বলে উপহাস করি।
বলিঃ অযথাই লাফাচ্ছেন বুড়ো মিয়া।
আপনার তো তিনকাল গিয়ে শেষকালে ঠেকেছে।
এখন কি আর না দাঁড়ালেই নয়।

তিনি কটমটিয়ে তাকান।
ছানি পরা চোখে আগুন ঢেলে বলেন -
দুর হ হতচ্ছারা। তোর বয়সে আমি দৌঁড়ে বেড়িয়েছি।

আমি বিমর্ষ হয়ে যাই।
হোঁদল কুতকুত মার্কা শরীর নিয়ে সরে যেতে চাই।
কিন্তু, নড়তে পারিনা।
চর্বি সর্বস্ব শরীরে তেমন বল পাইনা।

তিনি কিন্তু ঠিক দাঁড়িয়ে গেলেন।
হাতের লাঠিটা মাটিতে ঠুকতে ঠুকতে
চলে এলেন আমার পাশে।
হাঁড় জিরজিরে বয়সী হাতখানা আমার কাঁধে রেখে বললেন-
ভেবে দেখলাম,
তোমাকে নড়াবার জন্য হলেও আমার দাঁড়াতে হবে।
অথচ দেখ দাঁড়াবার ছলে আমি এখন হাঁটতে পেরে গেছি।

আমার আধুনিক চোখে হতাশার গ্লানি।
কিন্তু, তাতে লজ্জা নেই।
নেই নিজের অপরাগতার স্বীকারোক্তি।
আমি এক দম্ভকাতর তরুন মানুষ
নিছক আলসেমীতে হারাতে বসেছি নিজেকে।
আমার মুখ চলে তো শরীর চলেনা।

তিনি কিন্তু আমাকে বিন্দুমাত্রও তাচ্ছিল্য করেননি।
তার শুকনো হাতের বয়সী অভিজ্ঞতার জোরে
আমাকে টেনে দাঁড় করিয়ে দিলেন।
উদাত্ত কন্ঠে বললেন-
এখন আলসেমী ধরে বসে থাকবার সময় নয় যুবক।
মনে রেখ তোমাকে দৌঁড়াতে হবে।
তোমাকে পৌঁছাতে হবে আগামী দিনের স্বর্ণালী প্রান্তে।
সেখানে সফলতার সফেদ আলোগুলো
তোমার ঝিম ধরা প্রজন্মকে রাঙ্গিয়ে দেবে।

তুমি সফল হলে তবেই না দাঁড়িয়ে যাবো আমি ।
আমি দাঁড়ালে তবেই না নতুন করে হাঁটতে শুরু করবো।
আমি হাঁটতে শুরু করলে তবেই না বদলে যাবে তুমি।

তুমি বদলালে বদলে যাবে সমাজ।
আর সমাজ বদলালে বদলে যাবে দেশ।

তার বলা কথাগুলো ভিন্নতর গুঞ্জন তুলে মাথায়।
এক পা দুই পা করে হেঁটে যাই।
এক সময় দৌঁড়াতে থাকি।

দৌঁড়াতে দৌঁড়াতেই থেমে যাই একদিন।
বয়সী ভারে ক্লান্ত হয়ে উঠি আমিও।
তারপরেও টের পাই
আমি আগের চেয়ে অনেক, অনেক বেশী সবল।
যতটা সবল হলে টেনে তোলা যায় একজন মানুষকে।
দুর্বল প্রজন্মের ভারে ডুবে যেতে বসা একটা গোটা দেশকে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Emrul Kayes অসাধারণ লেখা- আমার আধুনিক চোখে হতাশার গ্লানি। কিন্তু, তাতে লজ্জা নেই। নেই নিজের অপরাগতার স্বীকারোক্তি। আমি এক দম্ভকাতর তরুন মানুষ নিছক আলসেমীতে হারাতে বসেছি নিজেকে। আমার মুখ চলে তো শরীর চলেনা।
Jamal Uddin Ahmed প্রাণঢালা অভিনন্দন।
Jamal Uddin Ahmed কুণ্ঠা নিয়ে স্বীকার করি, সময়ের অপ্রতুলতা তো আছেই, উপরন্তু আগের মতো উদ্দীপনা নিয়ে গক'র লেখা পড়তে পারি না। গক কর্তৃপক্ষ আড়াই বছর ধরে কোনো পুরস্কার দিচ্ছে না (অন্তত আমার পাওনাগুলো দেয়নি)। এখন ইমেইল বাউন্স ব্যাক করে, অন্যভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। শিবের গীত শেষ। মূল কথা বলি, fbর বোতাম টিপে আপনার কবিতাটি দেখলাম। খুবই ভাল লাগলো, সুখপাঠ্য। অনেক অনেক শুভ কামনা।
আসলে ২০১১ এর দিকে যখন গল্প-কবিতা শুরু হয় তখন পুরস্কার নিয়ে খুব লালায়িত ছিলাম। সে সময় বেশ কিছু পুরস্কারও পেয়েছিলাম। পরবর্তীতে যখন প্রায় এক যুগ পর ২০২৩ এর ডিসেম্বরে এখানে ফিরেই যখন পুরস্কৃত হলাম তখনি মনে হলো আবার লিখা যায়। তবে এখন আর পুরস্কৃত হবার লোভে নয়, স্রেফ আমি ফুরিয়ে যাইনি এই আত্মবিশ্বাসটুকু ফিরে পাবার জন্যই আবার লিখছি। যদিও লাভ বলতে হয়েছে আপনার মত ভালো কিছু লিখিয়ের সাথে পরিচিত হতে পেরেছি। সো আমার কোন খেদ নেই ভাই। আমার মত সামান্য লিখিয়ে আপনার দৃষ্টিসীমায় আসতে পেরেছি এই বড় আনন্দ। গল্প-কবিতা পুরস্কার দিক বা না দিক তা নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই আমার। আমার কবিতাটুকু পড়বার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। ভালো থাকবেন ভাই।
ফয়জুল মহী শব্দে ছন্দে উপমায় দারুণ প্রকাশদ্বীপ্তিতা অনন্য সুন্দর অনুভূতিতে সাজানো
অনেক ধন্যবাদ ও ভালবাসা রইলো ভাই।
মোঃ মাইদুল সরকার তুমি বদলালে বদলে যাবে সমাজ। আর সমাজ বদলালে বদলে যাবে দেশ। দারুন বলেছেন ভাই। সুন্দর।
অনেক ধণ্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ভাই। সবসময় পাশেই থাকবেন।
Azaha Sultan সুমন, খুব ব্যস্ততার মধ্যেও তোমার কবিতাটা পড়লাম, ভালো লাগল অনেক দিন পর তোমার লেখা পড়ে...ভোট দিয়েছি...
অনেক ধন্যবাদ ও ভালবাসা দাদা

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

আমি আগের চেয়ে অনেক, অনেক বেশী সবল

২৪ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৬৮ টি

সমন্বিত স্কোর

৪.৮৫

বিচারক স্কোরঃ ২.০৫ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ২.৮ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী