পথে হলো পরিচয়

শীত (জানুয়ারী ২০১২)

বশির আহমেদ
  • ৪৮
  • 0
  • ১৬
শীতের সবে শুরু । ঢাকা শহরে শীতের অনুভব খুব একটা অনুভুত হচ্ছেনা । তিন বন্ধু কবীর, সুমন আর জাহিদ পরিকল্পনা করল বান্দরবন ভ্রমনে যাবে । তারা ভিন্ন ভিন্ন সরকারীও আধা সরকারী প্রতিষ্টানে চাকুরী করে । কবীর রাষ্টায়ত্ব বানিজ্যিক ব্যাংকে, সুমন বিসিকে আর জাহিদ এজিবি অডিটে ।তাদের সবারই চাকরীর বয়ষ আড়াই থেকে তিন বছর । তিনজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগের ছাত্র ছিল । জাহিদ আর সুমন ইতোমধ্যে বিয়ে করে সংসারী হয়েছে । কবীর বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে । তারা খিলগাঁওয়ে নিজ বাড়ীতে বসবাস করে । জাহিদদের বাড়ী সিরাজগঞ্জ ও সুমনদের চাঁদপুরে ।
কবীর চেয়ে ছিল জাহিদ আর সুমন তাদের স্ত্রীদের নিয়ে চলুক । কিন্তু জাহিদের স্ত্রী অন্তস্বত্তা তাই মুভকরা ডাক্তারের বারন । অপর দিকে সুমনের বাচ্চার বয়স সবে মাত্র তিন মাস তাই এই শীতে পাহাড়ী এলাকায় যাওয়ার ঝুঁকি নিতে রাজি হল না । অগত্যা তিন বন্ধু ডিসেম্বর এক বৃহস্পতিবার নাইট কোচে শ্যামলী পরিবহনে বান্দরবনের পথে রওয়ানা দিল ।
ফকিরাপুল শ্যামলী কাউন্টার থেকে বাস ছেড়েছে রাত বারটা এক মিনিটে । জাহিদ আর সুমন বসেছে সামনের সারীর বি/১,২ সিঠে আর কবীর বসেছে পেছনের সারীর সি/১ সিটে । কবীরের পাশের সি/২ ও সি/৩,৪ তখনো ফাঁকা । সায়েদাবাদ কাউন্টার থেকে এক ভদ্র লোক দুজন রমনী সহ উঠে সিট তিনটাতে বসল । ভদ্র লোক বেশ হ্যান্ডসাম । তিনি কবীরের পাশে এসে বসলেন । বুঝা যাচ্ছে এক জন ভদ্র লোকের স্ত্রী ও অন্যজন ছোট বোন কিংবা শ্যালিকা হবে ।

যাত্রাবাড়ী ছাড়ার পর দুরন্ত গতিতে বাস ছুটে চলেছে । কখন যে কাঁচপুর ব্রিজ পার হয়ে এল কবীর টেরই পেল না । সুপার ভাইজার এসে টিকিট চাইলে বাইরে তাকিয়ে দেখল তারা এখন মদনপুরে । জানাগেল ভদ্র লোক ও তার সঙ্গীরাও বান্দরবন যাবে । ভদ্র লোক মুখ খুললেন-আপনি কি বান্দরবন যাবেন ?
কবীর ষংক্ষেপে জবাব দিল জি :
ভদ্রলোক ফের বললেন- বান্দরবন কি ইতোপূর্বে গিয়েছেন ? না এই প্রথম ?
কবীর বলল- আমার এই প্রথম । তবে সাথে আমার দু বন্ধুর একজন ইতোপূর্বে একবার ঘুরে এসেছে ।
ভদ্র লোক বললেন আমাদের এই প্রথম । জানিনা কোথায় কি দেখার আছে । বলেই ভদ্রলোক থেমে গেলেন কথা আর এগোল না ।
গাড়ী মেঘনা ব্রীজ পার হয়ে এল । বাইরে ঘন কুঁয়াশা । গাড়ীর জোড়ালো হেড লাইটের আলোতেও দশ গজের বেশী কিছু নজরে আসছে না । বাধ্য হয়ে ড্রাইবার গতি কমিয়ে দিল । কবীরের তন্দ্রা এসে গেল । গাড়ী যখন চৌদ্দ গ্রামে তাজমহল হোটেলে এসে থামল তখন কবীরের তন্দ্রা কেটে গেল । পনের মিনিটের যাত্রা বিরতি । সবাই বাস থেকে নেমে এল । তিন বন্ধু ওয়াসরুম থেকে ফ্রেস হয়ে একটি টেবিলে এসে বসল । ভদ্র লোক তার স্তী ও সাথের মেয়েটিকে নিয়ে পাশের টেবিলে এসে বসল । কবীর লক্ষ্য করল মেয়েটির পড়নে কাঠালীচাঁপা ফুলের রঙে রাঙা সেলোয়ার কামিজ ও গায়ে ধূসর রঙা সুয়েটার চাপানো । মুখের আদল বম্বের নায়িকা মাধুরী টাইপ । তবে নাকটা একটু হাল্কা চাপা । হোটেলে বসে টের পেল দেশে শীতকাল চলছে । তারাতারি চা-নাস্তা সেরে তারা বাসে চড়ে বসল । অল্প কিছুক্ষন পরে ভদ্র লোক ও তার সাথীরা উঠে এল । কবীর দেখল মেয়েটির উচ্চতা পাঁচফুট চার ইঞ্চির মত হবে । হালকা পাতলা গড়ন গায়ের রঙ বেশ ফর্সা । বাস ছেড়ে দিল ।

পুরো বাসটিতে অন্ধকার নেমে এল । সময় তখন রাত তিনটা । কেসেট প্লেয়ারে বেজে চলেছে রবীন্দ্র সংগীত- আমার পরান যাহা চায় তুমি তাই-----------। কবীর মনে মনে হাসল ।
বাস যখন চট্রগ্রাম শহর পার হচ্ছে তখন ভোর সাড়ে ছটা । শাহ আমানত ব্রীজ পেরিয়ে বাস কক্সবাজার রোড ধরে ছুটে চলেছে । সাতকানিয়া পেরিয়ে বাসটি বান্দরবনের পথ ধরল । কেসেট প্লেয়ারে তখন বাজছে- গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙা মাটির পথ-----। কিছুক্ষন পরই শুরু হলো আঁকাবাঁকা উঁচুনিচু পাহাড়ী পথ । চড়াই উৎরায় পেরিয়ে বাস যখন বান্দরবন বাস ষ্ট্যান্ডে এসে থামল বেলা তখন সকাল নয়টা ।
তিন বন্ধু দ্রুত বাস থেকে নেমে লাগেজ বুঝে নিয়ে পাশেই থ্রী ষ্টার হোটেলের দিকে পা বাড়াল । হোটেল ম্যনেজারের কাছ থেকে চাবী নিয়ে তারা দোতলায় এ নং ফ্ল্যাটে এসে ঢুকল । হোটেলটি মুলত চার ইউনিট বিশিষ্ট একটি ফ্ল্যাট বাড়ী । প্রতি ইউনিটে তিনটি করে রুম, ড্রয়িং ডাইনিং কিচেন । দুটি বাথ রুম একটি বারান্দা ।
হোটেলে কাপড় ছেড়ে ফ্রেস হয়ে তারা নিচে রেষ্টুরেন্টে নাস্তা খেতে এল । রেষ্টুরেন্টটা বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও ছিমছাম । তিন বন্ধু এক কোনায় ছয় চেয়ার বিশিষ্ট একটি টেবিলে বসে নাস্তার অর্ডার দিল । রেষ্টুরেন্টের সব টেবিল পুর্ন । বেয়ারা খাবার সার্ব করছে এমন সময় বাসের সেই ভদ্র লোকও তার সাথীরা রেষ্টুরেন্টে ঢুকল । কোথাও কোন খালি জায়গা না পেয়ে কবীর কে বলল-আমরা কি একটু বসতে পারি ।
কবীর বলল স্যিওর স্যিওর ।
ভদ্র লোক ধণ্যবাদ জানিয়ে তার স্ত্রী ও মেয়েটিকে নিয়ে বসে পড়ল । নাস্তার অর্ডার দিযে কবীরদের দিকে তাকিয়ে বলল-আপনারা কি এ হোটেলেই উঠেছেন ?
জাহিদ জবাব দিল হ্যাঁ ।
ভদ্র লোক বললেন কোন ফ্লোরে ?
জাহিদ জানাল দোতলায এনং কক্ষে ।
ভদ্র লোক বললেন আমরা উঠেছি তিন তলায় বিনং কক্ষে । আচ্ছা আপনাদের নাম পরিচয় তো জানা হলোনা । বাইদা বাই আমার নাম সারোয়ার হোসেন । ঢাকার বংশালে মোটর পার্টস এর ব্যবসা করি । বাসা যুগীনগরে । আমার সাথে আমার স্ত্রী যুথী ও শ্যালিকা বিথী । আমার স্ত্রী স্রেফ গৃহিনী শ্যালিকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয বর্ষের ছাত্রী । এই প্রথম বারের মত বান্দরবন আসা ।
জাহিদ জানাল-আমি জাহিদ হাসান এজিবিতে অডিট অফিসার হিসাবে কর্মরত । ও সুমন ইসলাম বিসিক কর্মকর্তা, কবীর হোসেন রাষ্টায়ত্ব বানিজ্যিক ব্যাংক কর্মকর্তা । আমি বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে পশ্চিম মালিবাগে থাকি । সুমন স্ত্রী সন্তান নিয়ে মায়া কাননে ও কবীর এখনো বিয়ে করেনি পিতা মাতার সাথে নিজ বাড়ী খিলগাঁওয়ে থাকে ।
মি‍ সারোয়ার বললেন- আপনাদের কে যেন আগে একবার এসেছেন ? তিনি কি আমাদের একটু গাইড করতে পারেন ?
সুমন বলল-কেন নয় । কোথায় কোথায যেতে চান বলুন । নতুবা আমাদের সাথে যেতে পারেন ।
সারোয়ার সাহেব বললেন- তা হলেতো ভালই হয় । কি বল যুথী । বলেই স্ত্রীর মুখের দিকে তাকালেন ।
-দয়া করে উনারা যদি আমাদের সাথে নেন ।
ঠিক হলো আজ কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে লাঞ্চের পর শহরের কাছা কাছি স্থান সমুহ ঘুরে দেখবেন । আগামী কাল সারা দিন দুরের স্থান সমূহে ঘুরতে যাবেন ।
সুমন কবীরকে নিয়ে আনন্দ নামক এক জীপ ড্রাইভারের খুঁজে বেড়িয়ে পড়ল । জানা গেল আনন্দ আজ খ্যাপ নিয়ে নিলগিরি চলে গেছে । ফোনে যোগা যোগ করা হলে সে জানাল আগামী কাল তাদের নিয়ে মেঘলা, ণীলাচল, চিম্ভুক, নিলগিরি আর শৈলপ্রপাত যেতে পারবে ।
কবীর আর সুমন আজকে বেড়ানোর জন্য দুটো স্কুটার ভাড়া করে হোটেলে ফিরে এল ।
বেলা দেড়টার মধ্যে সবাই তৈরী হয়ে লাঞ্চ খেতে নিচে নেমে এল । এখন বিথী পড়েছে পিংক কালারের সালোয়ার কামিজ কপালে লাল ছোট্র টিপ । দুটোয় যাত্রা হলো শুরু । সবাই স্কুটারে এসে বসল । স্কুটার ছুটে চলেছে স্বর্নমন্দিরের উদ্দেশ্যে । ডাকবাংলো, সদর থানা, জেলা পরিষদ ভবন পেরিয়ে একটু বায়ে বাঁক নিয়ে কাপ্তাইয়ের পথ ধরল । সাঙ্গু ব্রীজে যখন উঠল দেখা গেল এঁকেবেঁকে নদটিঁ এগিয়ে গেছে সুদুর বঙ্গোপসাগরের দিকে । এখন নদীটি মৃত প্রায় । বর্ষায় নদীটি হয়ে উঠে খর স্রোতা শঙ্খিনী সাপের মত ।
স্বর্নমন্দিরের পাদদেশে এসে স্কুটার থামল । পাহাড়ের চুঁড়ায় দেখা যাচ্ছে স্বর্ন মন্দির । মন্দিরটি একশ মিটার উচুতে পাহাড়ের চুঁড়ায় স্থাপিত বৌব্ধ মন্দির । পাহাড়ের ঢালবেয়ে সবাই উপরে উঠার মুল সিড়ির কাছে এসে থামল । সিড়ির কয়েক ধাপ পেরোবার পর মন্দিরের গেইট । একেবেঁকে কবীর যখন শেষ সিড়িটায় পা রাখল তথন হিসাব করে দেখা গেল সে মোট একশত সত্তরটি ধাপ পেরিয়ে এসেছে । দশটাকা দর্শনীর বিনিময়ে তারা কেন্দ্রিয় মন্দিরে প্রবেশ করল । মন্দিরের মাঝখানে একটি বিরাট চুঁড়া । চারি পাশে ছোট ছোট বেশ কয়েকটি চুঁড়া । প্রতিটি চুঁড়ার মাথায় সুচাগ্র দন্ড বসানো । মন্দিরের প্রবেশ মুখে দুটো বড় বৌব্ধ মূর্তি ও চার পাশে অসংখ্য ছোট ছোট বৌব্ধ মুর্তি । মূল মন্দিরের ভেতর স্বর্নের তৈরী গৌতম বৌব্ধসহ আরও চারটি মূর্তি রয়েছে । চার পাশে বিশাল এক ঘন্টার সাথে অসংখ্য ঘন্টার সাড়ি । প্রতিটি জিনিষ সোনালী রঙে রঙিন । মন্দিরের চার পাশে দাড়িয়ে তারা অসংখ্য ছবি তুলল ।
এতক্ষনে বিথী মুখ খুলল- আসুন আমরা সবাই এক সঙ্গে গ্রুপ ছবি তুলি । বলেই বিথী কবীরের পাশে এসে দাড়াল । কবীরের চোখে মন্দির আর বিথী একাকার হয়ে উঠল । মূল বেদী থেকে বেড়িয়ে তারা একশত মিটার উচু পাহাড়ের চুঁড়ায় বিষ্ময়কর পুকুর পারে এসে দাড়াল । জানা গেল পুকুরটিতে কখনো পানির কমতি হয়না ।
নামার সময় বিথী কবীর কে বলল- আমি আপনার পাশে পাশে হাটলে আপনার কি কোন অসুবিধা হবে ?
কবীর মিষ্টিকরে হেসে বলল- না না কোন অসুবিধা নেই ।
বিথী বলল- আপা আর দুলা ভাইকে পাশপাশি হাতধরে চলার সুযোগ করে দেবার জন্যই আপনার সহযোগিতা চাচ্ছি ।
কবীর বলল- ঠিক আছে আমি আপনাকে সহযোগিতা করব । মনে মনে বলল আমিও তো চাই তোমার সান্নিধ্য ।
মন্দিরের চুঁড়া থেকে নিচে নেমে এসে তারা তাজা কচি ডাবের পানি খেযে স্কুটারে এসে বসল । চারি দিকে অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে । পাহাড়ী জনপদ নীরব নিথর । দুরে পাহাড়ের পাদ দেশে মাঝে মধ্যে দুএকটি টিম টিমে আলো চোখে পড়ছে । বান্দরবন শহরে ঢুকে প্রথমে তারা মুরাং রাজার রাজবাড়ী, ক্যামলং লেক, সংক্ষিপ্ত চিড়িয়া খানা পরিদর্শন শেষে উপজাতিদের দ্বারা পরিচালিত ও তাদের তৈরী জিনিষ পত্র ক্রয়ের জন্য বাজারে এসে ঢুকল । সবাই টুকটাক কিছু কেনা কাটা করে হোটেলের পথ ধরল । কবীর তার নিজের জন্য এক খানা কাউবয় হেড কিনল । বিথী আস্তে করে জানাল আপনাকে দারুন মানিয়েছে ।
রাত দশটার মধ্যে খাবার শেষে যার যার রুমে চলে গেল ।পরদিন খুব ভোরে উঠতে হব।
তাছাড়া গত রাতের জার্নিতে সবাই ক্লান্ত । আনন্দ রাতে হোটেলে এসে জানিয়ে গেল আগামী কাল ভোর সাতটায় বেড়িয়ে পড়তে হবে । সে পৌনে সাত টায় জীপ নিয়ে হোটেলের সামনে হাজির থাকবে ।
সকাল সাতটার মধ্যে নাস্তা খেয়ে সবাই ভ্রমনের জন্য প্রস্তুত । জীপে মুখোমুখি দুই সাড়ি সিট । সবাই বসে পড়ল । তিন বন্ধু একপাশে ও বিথীরা আর একপাশে বসল । বিথী আজ পড়েছে বক ফুলের রঙে রাঙা সেলোয়ার কামিজ ও কপালে ব্লু রঙয়ের টিপ । গাড়ী ছেড়ে দিল মেঘলা রিসোর্টের দিকে । রিসোর্টে ঢুকার টিকিট কিনে সবাই প্রবেশ করল । রিসোর্টটি বাংলাদেশ পর্যটন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিচালিত । ভেতরে নীলাভ পানির কৃত্রিম লেক । লেকের উপর ঝুলন্ত সেতু, বিশ্রামাগার, শিশুপার্ক, সাফারী পার্ক, লেকে বেড়ানোর স্পীড বোর্ড, প্যাডেল বোর্ড, ক্যাবল কার, পাহাড়ী পথ । তিন বন্ধুর সাথে বিথী ক্যাবল কারে, জুলন্ত সেতুতে লাফা লাফি সহ পাহাড়ী পথে হাটল । ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে লেকের পাড়ে এসে বসে বেশ অনেকক্ষন বিশ্রাম নিল । শীতের সকালের হিমেল বাতাসে প্রান ভরে নিষ্বাষ নিল । আপা দুলাভাই ফিরে এলে চটপটি আর ঝালমুড়ি খেয়ে রিসোর্ট থেকে বেড়িয়ে এল ।
আবার জীপে উঠে বসল । জীপ এবার ছুটে চলেছে নীলাচলের পথে ।পাহাড়ী আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে জীপ ক্রমশ উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে । যত উপরে উঠছে ততই ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চার দিক । দুপাশে ঘন বন আর বন মাঝে মাঝে দু একটি ক্ষুদ্র নৃ: গোষ্টির মাচান ঘর চোখে পড়ছে । নীলাচলের চুঁড়ায় যখন গাড়ী থামল তখন আকাশে সুর্য রক্তিম আলো ছড়িয়েছে । দেখতে দেথতে কুয়াশা কেটে গেল । চারি দিক স্পষ্ট নজরে আসছে । দক্ষিনে বহুদুরে নীল সমুদ্র ও চট্রগ্রামের কাফকো সার কারখানা, উত্তর পশ্চিমে বান্দর বন শহর সহ দুরে স্বর্ন মন্দির চুঁড়া, উত্তর পূর্ব সহ পুর্ব দিকে সবুজ আর সবুজের সমারূহ । বিশাল বিশাল পাহাড় পর্বত মালা । পাহাড় আর পর্বতের মাঝ খানে বিশাল গিরিখাদ । বিথীর মনে হচ্ছে প্রকৃতি এত সুন্দর স্ব চক্ষে না দেখলে সে বিস্বাসই করত না । এখান থেকে তারা ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টির আবাদ করা ছোট ছোট কলা ও পেপেঁ কিনে খেল । পেপেঁ খেয়ে তারা দুবোন বলে উঠল পেপেঁ এত মিষ্টি হয় আজ প্রথম জানলাম ।
নীলাচলে আধা ঘন্টা কাটিয়ে তারা জীপে চড়ে বসল । জীপ বান্দরবন শহর হয়ে নিলগিরির পথ ধরল । পাহাড়ী উচু নিচু সরু আঁকাবাঁকা পিচ ঢালা পথ । একপাশে খাড়া পাহাড়ের দেয়াল অন্য পাশে গভীর খাদ । প্রতিটা বাঁক নেয়ার সময় ভয়ে বুকটা দুরুদুরু করে উঠে । কিছু দুর যাবার পর ড্রাইভার আনন্দ জীপের হুড খুলে দিল ।গাড়ীটি এখন পাহাড়ী চান্দের গাড়ীর রূপ পেল । খোলা পেয়ে সবাই সিট ছেড়ে দাড়িয়ে পড়ল । বিথী আনন্দে আত্নহারা হয়ে গ্রামের চপলা কিশোরীর মত লাফিয়ে উঠল । তার দেখা দেখি সবাই নেচে উঠল । প্রায় দেড় ঘন্টা উঁচুনিচু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে জীপ নিলগিরির চুঁড়ায় এসে থামল । গাড়ী থেকে নেমে নোটিশ বোর্ডে লিখা তথ্য হতে জানা গেল বান্দরবন শহর থেকে নিলগিরির দুরত্ব ৫৪ কিলো মিটার ও সমুদ্র পৃষ্ট হতে উচ্চতা ৭৬১ মিটার ।
নিলগিরির চুঁড়ায় দাড়াতেই দেখা গেল আকাশের ভাসমান সাদা সাদা মেঘ গুলো যেন তাদের গা ছুয়ে ছুযে যাচ্চে । নিচে গিরি আর ঘন বনের উপর যেন মেঘগুলো ছাদ হয়ে ঢেকে রেথেছে । কবীর আর বিথীরা যেন সাদা মেঘের ভেলায় ভেসে বেড়াচ্ছে । বিথী কবীর কে পাশে নিয়ে বেশ কিছু ছবি তুলল । বিথীর আচরনে মনে হচ্ছে সে যেন তার অনেক দিনের চেনা । সাদা সাদা পেজা পেজা মেঘের রঙের সাথে বিথীর জামার রঙ মিলে মিশে একাকার । বিথীকে পরীর দেশের পরীর রাণীর মত মনে হচ্ছে । মেঘের ভেলায় দাড়িয়ে কবীরের কেবলই মনে হচ্ছে পুরানো দিনের সেই গানের কযেকটা কলি- দিগন্তে দাড়িয়ে দু বাহু বাড়িযে ডেকে নিতে চায় কে যেন আমায ডেকে নিতে চায------- ।
আবার জীপে উঠে পড়ল । জীপ ছুঠে চলছে । ড্রাইভার আনন্দ চিম্বুক পাহাড়ের পিক-৬৯ এর কাছে এনে জীপ থামাল । পাহাড়ের গায়ে লটকানো নোটিশ বোর্ড পড়ে দেখা গেল-এই পথটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পিচ ঢালা পথ । এই পথের উচ্চতা সাগর পৃষ্ট হতে ১১৫০ মিটার । পিচ ঢালা পথ থেকে ৬/৭ ফিট প্রস্তের একটি গড়ানো কাঁচা পথ চিম্বুক পাহাড়ের পিক-৬৯ চুড়ায় উঠে গেছে । রাস্তা থেকে চুঁড়ার উচ্চতা হবে ৫০ মিটারের মত । জাহিদ সুমন আর কবীর চুঁড়ায় চড়ার জন্য জীপ থেকে নেমে এল । তাদের সাথে সাথে বিথীও রওয়ানা দিল । জাহিদ আর সুমন তরতর করে উঠে যাচ্ছে । কবীর বিথীর জন্য মৃদু পদক্ষেপে এগিয়ে চলছে । অধের্ক পথ চলার পর বিথী বলল আমি আর পারছি না বলেই সে দাড়িয়ে পড়ল । কবীর পিছিয়ে গিয়ে তার হাতটা বাড়িযে দিল । বিথী শক্ত করে কবীরের হাতটি ধরে আস্তে আস্তে উঠতে লাগল । বিথী মনে মনে বলতে লাগল- একবার যখন এই হাতটা ধরেছি তখন সহজে আর ছারছি না মি: কবীর । কবীর মনে মনে ভাবছে এমন করে যদি তুমি সারা জীবন এই হাতটা ধরে থাকতে । ইতোমধ্যে জাহিদ আর সুমন চুঁড়ায় উঠে পড়েছে । কবীর আর বিথীও উঠে এল । চারিদিকে তাকিয়ে তারা অবাক । এ এক অপার বিষ্ময় কর সৌন্দর্য । যেন তাদের হাত ছানি দিয়ে ডাকছে । বাংলার প্রকৃত রূপ যেন এখানে অপার বিষ্ময়ে অপেক্ষা করছে । এখানে থরে থরে রূপ আর সৌন্দর্য কে যেন সাজিয়ে রেখেছে ।
চারি দিকে দিগন্ত বিস্তৃত বন ভুমি. সবুজ আর সবুজে ছাওযা । পূর্ব দিকে দুরে বহু দুরে তাজিংডং ও কিউক্রাডং পর্বত শৃঙ্গ । দক্ষিনে বঙ্গোপসাগরের বুকে রাজহংসীর মত ভেসে বেড়াচ্ছে মাছ ধরার ছোট্র ছোট্র অসংখ্য নৌকা । পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে ক্ষুদ্র নৃ;গোষ্টির বাসস্থান । খাড়া পাহাড়ের ডালে আদিম জুমচাষ । পাহাড়ের গা বেয়ে অজস্র ঝর্না ধারা । পাহাড়ী নাম না জানা বহু নদী খাল খাড়ি । বেত আর গুল্ম লতার ছড়া ছড়ি ।অজানা বহু পাহাড়ী ফুল ফুটে আছে থরে থরে । মাতাল করা পাগলা হাওয়া শরীরের সমস্ত ক্লান্তি দুর করে দেয় নিমেষে ই । কবীর গুন গুন করে গেয়ে উঠল- পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে---------।
পিক-৬৯ চুঁড়া থেকে নেমে জীপে চড়ে বসল ।প্রায় এক কিলোমিটার পর মুল চিম্ভুক পাহাড়ের পাদদেশে এসে জীপ থামল ।ইট বিছানো ঘুরানো পেছানো রাস্তা ধরে হেটে হেটে সবাই পহাড়ের চুঁড়ায় স্থাপিত বাংলোয় এসে বসল । উপজাতীয় বালিকাদের নিকট থেকে নানা রকম ফল ফলাদি কিনে ঘুধা নিবারন করল ।
চা খেয়ে ক্লান্তি দুর করে চিম্ভুক পাহাড় থেকে নেমে জীপে উঠল । একই পথে মিলন ছড়িতে এসে সাঙ্গু নদীর পাড়ে এসে নামল । তীব্র খর স্রোতা পাহাড়ী নদী সাঙ্গু । বর্তমানে নদীতে তেমন একটা স্রোত নেই । নদীতে বড় বড় পাথর পড়ে আছে । সাবধানে পা ফেলে তারা পাথরের উপর উঠে বসল । নদীর শীতল জলে বিথী পা ডুবিয়ে অনেক ক্ষন বসে রইল । ঝিরিঝিরি ঝরনার কুলকুল ধ্বনি কানে আসছে । পাহাড়ী ছোট্র মাছ স্বচ্ছ পানিতে এদিক ও দিক ছুটাছুটি করছে । তৃর্ষ্নার্ত সবাই আজলা ভরে জল পান করল । দেহ মনের সমস্ত ক্লান্তি যেন দুর হয়ে গেল । বেশ কিছুক্ষন কাটিয়ে জীপে এসে বসল । জীপ শৈলপ্রপাতের দিকে ছুটে চলল ।
শৈলপ্রপাতে যখন তারা পৌছাল বেলা তখন প্রায় চারটা । খাড়া সিড়ি বেয়ে সবাই ঝরনার কাছে এসে দাড়াল । ঝিরি ঝিরি স্বচ্ছ ঝরনার পানি গড়িয়ে যাচ্ছে । পাথরের উপর সাবধানী পা ফেলে ফেলে তিন বন্ধু ঝরনার অপর পাড়ে এসে দাড়াল । বিথী অসহায়ের মত কবীরের মুখ পানে তাকাল । কবীর বিথীকে হাত ধরে পার করে নিয়ে এল । কবীরে মুঠোর ভেতর বিথীর হাত বার বার কেঁপে কেঁপে উঠল । মি:সারোয়ার তার স্ত্রীকে হাত ধরে ধরে পার হয়ে এল । পাহাড়ের গা ঘেষে ক্ষুদ্র জন গোষ্টির পায়ে চলা পিচ্ছিল কর্দমাক্ত পথ । তা ধরে তারা গুপি গুটি পায়ে একশত ফুট নিচে নেমে এল । এখানে ঝর্নার জল বিশাল এক হ্রদের মত জলাধারের সৃষ্টি করেছে । জলাশয়ের মাঝে মাঝে বিরাট বিরাট পাথর । পাথরে দাড়িয়ে ঝর্নার ছবি তুলতে সবাই ব্যস্ত । কবীর একটি পাথরের কিনারায় দাড়িয়ে বিথী ও তার বোনের ছবি তুলতে যাবে হঠাৎ পা পিছলে লেকের জলে হাবু ডুবু ক্ষেতে শুরু করে দিল । জাহিদ আর সুমন দ্রুত তাকে পানি থেকে টেনে তুলল । সবাই হাসি ঠাট্রায় মেতে উঠল । বিথী গম্ভীর মুখে ঠাই দাড়িয়ে রইল । ফেরার পথে বিথী বার বার কবীরের কাছে জানতে চাইল সে কোথাও ব্যথা পেযেছে কি না । কবীর আঘাত বা ব্যথা পায়নি বলে জানায় । কিন্তু বিথী আস্বস্থ হতে পারছে না ।
গাড়ীতে চড়ে তিন বন্ধু ঘোষনা করল আজ রাতেই তারা ঢাকায় ফিরে যাবে । কথাটা শুনেই বিথীর মনটা ভেঙ্গে গেল । পথে আর একটা কথাও বলল না । হোটেলে ফিরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চার জন পাশেই সাঙ্গু নদীতে গোসল করতে চলে গেল । শীতের সন্ধ্যা, নদীর স্বচ্ছ শীতল পানি । কিছুক্ষনের মধ্যেই শরীরে কাপঁন ধরিয়ে দিল । হোটেলে এসে জামা কাপড় বদলিয়ে গরম কাপড় পড়ে তিন বন্ধু হালকা সপিংয়ে বেড়িয়ে পড়ল ।
রাতে খাবার টেবিলেও বিথী কোন কথা বলল না । রাত দশটায় কবীর সুমন আর জাহিদ সারোয়ার সাহেবদের কাছ থেকে বিদায় নিযে বাস ষ্ট্যান্ডের উদ্দ্যেশ্যে বেড়িয়ে পড়ল । বিথী সামনে এল না । মি: সারোয়ার ইতোমধ্যে তিন বন্ধুর ফোন নাম্বার ও ঠিকানা সংগ্রহ করে নিল । বাস ছেড়ে দিল । বিথী বারান্দায় সাথী হারা পাখীর মত ছটফট করতে লাগল । আর বারবার কাজী নজরুলের বিখ্যাত সেই গানটি তার মনে পড়তে লাগল- পথ হারা পাখী খুঁজে ফিরে একা---।
গল্পটা এখানেই শেষ করতে পারলে ছোট গল্প হিসেবে সার্থক হতো । কিন্তু জীবনের সব গল্পতো আর এক ভাবে শেষ হয় না ।

প্রায় দেড়মাস পরের ঘটনা । কবীর অফিসে কর্ম ব্যস্ত । হঠাৎ তার সেলোফোনটা বেজে উঠল । কবীর ফোনটা ধরে বলল- হ্যালো ।
অপর পাশ থেকে বলল মি: কবীর ?
জি বলছি ।
ওপাশ থেকে বলল- আমি; আমি সারোয়ার ।
কবীর বলল-সারোয়ার: কোন সারোয়ার ?
ওপাশ থেকে জবাব এল –এত তারাতারি ভুলে গেলেন ? আমি বংশালের সারোয়ার ।
কবীর জবাব দিল-বংশালের সারোয়ার বলেতো কাউকে চিনি বলে আমার মনে হচ্ছে না ।
ওপাশ থেকে কাতর কন্ঠে বলল –প্লিজ ফোনটা কাটবেন না । মনে আছে সেই বান্দরবনের কথা ।
কবীর বলল স্যরি । সারোয়ার ভাই স্যরি । আপনার সাথে আগে কখনো ফোনে কথা হয়নি তো তাই কন্ঠটা চিনতে পারিনি ।
ইটস ওকে । আমি কিছু মনে করিনি । আমি আপনার অফিসের কাছে মতিঝিলে একটা কাজে এসেছিলাম । ভাবলাম আপনার সাথে দেখাটা করে যাই । আপনি কি ফ্রি?
কবীর বলল-নো প্রোভলেম । চলে আসুন আমার অফিসে দোতলায ।
দশ পনের মিনিটের মধ্যেই আমি আসছি বলেই সারোয়ার সাহেব ফোনটা কেটে দিলেন ।

পনের মিনিটের মাথায় মি: সারোয়ার কবীরের টেবিলের সামনে এসে হাজির । কবীর হাতের কাজগুলো এক পাশে গুছিযে সারোয়ার সাহেবের মুখো মুখি বসল ।
মি:সারোয়ার বললেন-আমাদের এত দ্রুত ভুলে গেলেন সাহেব । একটা ফোন ও তো করলেন না ।
কবীর বলল স্যরি সারোয়ার ভাই । আপনাদের ফোন নাম্বার আমার কাছে নেই ।
সারোয়ার সাহেব বলল তাইতো আপনাদের কে তো আমার কোন নাম্বারই দেয়া হয় নি । এই নিন বলে পকেট থেকে একখানা কার্ড বের করে তার পেছনে বাসার ঠিকানা ও ফোন নাম্বার নিজ হাতে লিখে কবীরের হাতে তুলে দিলেন । তিনি আরও জানালেন আপনার ভাবী প্রায়ই আপনাদের কথা বলে । সময় করে একদিন বাসায় আসুন ।
কবীর বলল- ভাবীকে আমার সালাম জানাবেন । বিথী কেমন আছে বলতে গিয়েও মুখ ফুটে কিছু বলতে পারল না ।
সারোয়ার সাহেব চা খেয়ে আরো কিছুক্ষন গল্প করে চলে গেলেন ।

দিন কয়েক পর কবীর ত্রুটি যুক্ত কিছু ফরেন ডকুমেন্টস নিয়ে ব্যস্ত । নিবিষ্ট মনে ডকুমেন্ট গুলো পরীক্ষা করছে । দুজন তরুনী তার টেবিলের সামনে এসে দাড়াল । কবীরের ভ্রুক্ষেপ নেই । বেশ কিছুক্ষন পর কবীর মাথা তুলে সামনের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠল । আরে বিথী তুমি ? কখন এলে ?
বিথী বলল- বেশ অনেক ক্ষন ।
আমায় ডাকেন নি কেন ?
বিথী বলল প্রথম সম্বোধন টাইতো ভাল ছিল ।
কবীর লজ্জা পেয়ে বলল স্যরি । বসুন বসুন বলেই দুটো চেয়ার এগিয়ে দিল ।
বিথী আর তার সাথী চেয়ার দুটিতে বসল ।
কবীর বলল- এবার বলুন কেমন আছেন ?
বিথী বলল আগে পরিচয় করিয়ে দেই । ও হচ্ছে আমার প্রিয় বান্ধবী শিলা । আর শিলা উনি হচ্ছেন মি: কবীর হোসেন ভীষন ব্যস্ত মানুষ । আর বাকীটা তো তোকে আগেই বলেছি ।
কবীর বলল কিছু মনে করবেন না একটু বসুন । হাতের কাজটা আমার জুনিয়র কে বুঝিয়ে দেই তারপর কথা বলছি ।
বিথী বলল কোন সমস্যা নেই । আমরা বসছি । মনে মনে বলল-আপনার জন্য জনম জনম ধরে অপেক্ষা করতে রাজি আছি মি: কবীর ।
কবীর তার হাতের ডকুমেন্টস গুলো জুনিয়র কে বুঝিয়ে দিয়ে বসের অনুমতি নিয়ে বিথী আর শিলাকে নিয়ে বাইরে বেড়িয়ে এল ।
ইতোমধ্যে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ধলেশ্বরী আর শীতলক্ষার অনেক জল
বঙ্গোপসাগরে গড়িয়েছে । বিথী এখন কবীরের প্রেমময়ী প্রেরনা দাত্রী জায়া ও তার এক মাত্র সন্তানের জননী ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বশির আহমেদ ধন্যবাদ আবু ওয়াফা মো: মুফতি ।
ভালো লাগেনি ২৯ জানুয়ারী, ২০১২
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি চমত্কার! পছন্দের তালিকায় চলে গেল |
ভালো লাগেনি ২৯ জানুয়ারী, ২০১২
বশির আহমেদ ভাই সামসুল আলম ধন্যবাদ ।
ভালো লাগেনি ২৮ জানুয়ারী, ২০১২
বশির আহমেদ ভাই ইকবাল হোসেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
মো. ইকবাল হোসেন খুব ভাল লাগল.................
মিজানুর রহমান রানা সব সময়ই আমি সেরা ও জনপ্রিয় কবি-লেখকদের লেখা আগে পড়তাম। এতে করে শেষ পর্যায়ে সবার লেখা পড়তে না পারলে নবীন লেখকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। কিন্তু এবার আমি নবীন, প্রবীন, সেরা, অ-সেরা অর্থাৎ গড়পড়তা পড়েছি। ফলে কারো লেখায় আসতে একটু দেরি হয়েছে বেশ জনপ্রিয় লেখক হওয়া সত্ত্বেও। এটি আমার অনিচ্ছাকৃত। শুভ কামনা থাকলো আপনার জন্যে
ভালো লাগেনি ২৩ জানুয়ারী, ২০১২
বশির আহমেদ আমিতো মনে করেছিলাম রানা ভাই , বিন আরাফান ভাই, পন্ডীত মাহি হয়তো আমার প্রতি কোন কারনে মন ক্ষুন্ন তাই আমার গল্প পড়ছেন না । আপনাকে পেয়ে সে ধারনা ভুল প্রমানিত হলো । ধন্যবাদ আপনাকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন ।
ভালো লাগেনি ২৩ জানুয়ারী, ২০১২
মিজানুর রহমান রানা বেশ সুন্দর লিখেছেন। ভালো লেগেছে। এবার পণ করেছিলাম শেষ পর্যায়ে কিছু লেখা পড়বো। যখন লেখার কোনো পাঠক থাকবে না আমিই হবো তখন পাঠক। হলাম এখন। ভোট দিয়ে দিলাম বেশ করে। ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২৩ জানুয়ারী, ২০১২
বশির আহমেদ টনী হক বান্দরবান মুলত শীত অথবা বর্যায় যাবেন । শীতে বেড়িয়ে আরাম । বর্যায় মেঘের ভেলায় ভেসে বেড়ানো যায় ও ঝর্নাধারা বহমান পাওয়া যায়।
ভালো লাগেনি ১৯ জানুয়ারী, ২০১২

০৭ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪