আগন্তুক

দেশপ্রেম (ডিসেম্বর ২০১৩)

মিলন বনিক
  • ১৫
নন্দীপাড়ায় একজন আগন্তুক এসেছে।
সারা গ্রামে রব উঠল। কারও ধারনা চোর ছ্যাঁচড় হবে হয়তো। না হয় খুন করে অন্য গাঁ থেকে পালিয়ে এসেছে। এখন সং সেজে পাগল হয়েছে। আধুনিক সভ্য যুব সমাজের ধারনা কোন সি আই ডি-র সোর্স হতে পারে। পাগল সেজেছে অথচ পাগলামি করছে না।

মহিলা মহলের ধারনা - কোন সিদ্ধপুরুষ হবে হয়তো। গ্রামটা পাপের আবর্তে ডুবে যাচ্ছিল। তাই উদ্ধার করতে এসেছে। তবুও একটা দ্বিধা দ্বন্ধ লেগে আছে। কোনটায় যে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। যে যাই বলছে তার কোনটায় অযৌক্তিক নয়। সবটায় যেন বিশ্বাসযোগ্য। পাড়ার ছেলেরা পিছু নিয়েছে লোকটির। কোথায় যাবে, কেন আসছে কিছুই বলছে না।

জীর্ণ শীর্ণ শরীর। গ্রামের এ রাস্তা ও রাস্তা ধরে এলোমেলো পথ চলছে। পা দুটো টেনে টেনে হাঁটছে। যেন টলছে। বেশ ভূষা কোন আত্মভোলা ফকিরের মত। মাথার চুলগুলো লম্বা। এলোমেলো। কাঁচা পাকা চুলগুলোয় জট বেঁধে আছে। পরনে ধুসর রঙের পাঞ্জাবী। হাঁটু পর্যন্ত লম্বা। গোড়ালির দিকটায় কয়েকটা ফুটো। পিঠের উপর কয়েকটা হাতে সেলাই করা তালি। গলায় একটা পুরানো চাদর জড়িয়ে রেখেছে। তৈলাক্ত ময়লা চিক্ চিক্ করছে। মুখভর্তি অবিন্যস্ত দাড়ি গোঁফ।

বড় মন্দিরটার পাশ ঘেঁষে নেমে গেছে বিন্দুবাসিনী সড়ক। সড়ক বলতে গ্রামের সরু কাঁচা রাস্তা। দুপাশে ধানী জমি, পুকুর, বাড়িঘর। আগন্তুক হাঁটছে। ভিড় ভিড় করে মনে মনে কি যেন বলছে। বাড়ীগুলোর সামনে এসে থমকে দাঁড়ায়। চারপাশটা একবার ভালো করে তাকিয়ে দেখে। ঝুলে পরা চাদরের ডান পাশটা কাঁধের উপর তুলে দিয়ে বলল-

শালারা সব কেন্দুয়া বাঘ। ভীতুর হাড্ডি। পালিয়েছে। সব শালারা পালিয়েছে। খালি ভয়..শুধু ভয়..ভয় কিসের..এ্যাঁ..এত ভয় করলে জীবন চলে। সব অমানুষের দল। কুকুর বেড়ালের মত খালি পালিয়ে বেড়ায়। বাঘ সিংহ হতে পারলিনা কেউ। সব কুত্তা..শালারা নেড়ি কুত্তা। তারপর লোকটি হো হো করে দু’হাত উপরে তুলে মনের আনন্দে নাচতে নাচতে নন্দীর হাটের দিকে এগিয়ে গেল।

পাড়ার দুষ্ট ছেলেরা কয়েক কথা বললো। ঢিলও ছুড়ল কয়েকটা। লোকটা পেছন ফিরতেই বাচ্চাগুলো দেয় ভোঁ দৌড়। আগন্তুক হেসে উঠে। তারপর ছেলেদের দিকে আঙ্গুল উঁচিয়ে বলল - পোলাদের সাহস কতো। এ্যাঁ..পারলে আমাকে মেরে সিংহ হয়ে যা। পালাচ্ছিস কেন কাপুরুষের বাচ্চারা..মানুষের পেটে যত সব কুকুর বেড়ালের বাচ্চা পয়দা হচ্ছে। হা..হা..হা..।

পাড়ার বৌ ঝিরা আড়াল থেকে তাকিয়ে দেখছে আগন্তুকের কাণ্ড। অনেকের মায়া হয়। কাছে ডেকে দু’কথা জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছা করছে। কারও কারও ইচ্ছা এ বাড়ীতে এলে শাকান্ন ভোজন করিয়ে একটু চরণধুলা নেবে। যদি একটু কৃপা হয় এই আধ্যাত্মিক মহা মানবটির।

পাশ থেকে নিতুর মা কলসীটা কাঁকে তুলে বলে উঠল - এরকম সাধু দরবেশ অনেক দেখেছি। বৌ ঝিদের পটিয়ে চিকিৎসার নামে ফষ্টি নষ্টি করার ফন্দি আঁটে। ধর্মের নামে নিজের স্বার্থ হাসিল করে। পাছায় লাঠি মারলে সব বেরিয়ে আসবে। মেরে তাড়ানো উচিত।

কথাটা মোটেও ভালো লাগেনি রুপার মায়ের। ধোয়া কাঁসের তালাগুলো হাতের তালুতে তুলে মুখে ভেংচি কেটে মনে মনে বলল-হুঁ..নিজে যেমন, সবাইকে ভাবেও তেমন। এমন একজন সাধু পুরুষকে নিয়ে কেউ এমন কথা বলতে পারে।

আগন্তুক নন্দী পাড়ার হাটে আসে। চারিদিকে কৌতূহলী মানুষের ভিড়। তার কোন দিকেই খেয়াল নেই। ছোট একটা পানের দোকান হারাধনের। গদি থেকে একরকম ছুটে আসল। অত্যন্ত ভক্তি সহকারে বিনয়ের সাথে বলল - বাবা কিছু খাবেন।

আগন্তুকের চোখ দু’টো জবা ফুলের মত লাল। হারাধনের দিকে চোখ তুলে তাকাতেই হারাধন পা ছুঁয়ে প্রণাম করল। আগন্তুকের কণ্ঠে বিরক্তি।
- তুই কেরে? এ্যাঁ.. খুব দয়ালু হয়েছিস না। আমি সাধু নই, পাগল। আমাকে বিষ খাইয়ে মারতে চাস তাই না। পারবি না..পারবি না। এই বলে দিলাম।
বাজারের মাঝখানে দু’শো বছরের পুরানো বটগাছ। কত কি এলো গেলো। বটগাছটা তেমনিই আছে। আগন্তুক চারপাশটা একবার দেখে নিল। তারপর এক দৃষ্টিতে কতক্ষণ চেয়ে থাকে। আলতো করে স্পর্শ করে। আবার দু’হাতে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে। আবার হো হো করে হেসে উঠে।
- বাহ! তুই তো দিব্যি আছিস। কোন ক্ষতি করতে পারেনি কেউ। পারবেও না। কেউ পারবে না। চারিদিকে আরও ডাল পালা ছড়িয়ে দে। আগন্তুক বড় একটা গুড়িতে বসে। কান লাগিয়ে দেয় গাছের সাথে। ফোঁস ফোঁস একটা শব্দ শুনতে পায়। ডালের আড়াল থেকে জোড়া কতক তক্ষক ডেকে উঠে। পাখিদের সংকীর্তন আর পাখা ঝাপটানি সারাক্ষণ মাতিয়ে রাখে বাজার।

আগন্তুক হাসি থামিয়ে বলে তুই তো ভালো জিনিষ পুষেছিস। বিষাক্ত সাপ। ভালো...ভালো। এইজন্য তোকে কেউ কাটতে সাহস করে না, নয়তো কবে সেই শিকড় শুদ্ধ উপড়ে ফেলত। বুঝলে বটবৃক্ষ..মানুষ...এই মানুষগুলো পালিয়ে বাঁচতে চায়, আর তুই কিনা ক’টা সাপ পুষে দিব্যি দাঁড়িয়ে আছিস। সত্যিই বুদ্ধিমান তুই, যেই কোন কাটুরিয়া কাটতে আসবে তখনই ফোঁস করে ফণা তুলে দাঁড়াতে বলবি তোর সৈন্যদের। ব্যাস...নীল হয়ে যাবে অমানুষের দল...ইস্ কি বীভৎস সেই চেহারা..আমি দেখেছি..আমি দেখেছি সেই চেহারা। আর তুই দাড়িয়ে হাততালি দিবি। তুই এত নিষ্ঠুর। ছি..ছি..ছি..।
আগন্তুক গাছের সাথে মাথা ঠেকিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে উঠল। তারপর চোখের জল মুছে দ্রুত পায়ে বাজার ত্যাগ করছিল। হারাধন পেছন পেছন ছুটছে। বাবা দয়া করে আমার দোকানে একবার পদধূলি দিন। আমাকে একবার কৃপা করুন। সংসারে সারাক্ষণ অভাব লেগে আছে।

আগন্তুক আর এগুলো না। দোকানে এসে কলার কাঁদিটায় হাত রেখে বলল- বেশ খাসা কলাতো। দেশের মাটিতে হয়েছে বুঝি। মাটিগুলো বড়ই উর্বর। দিবি একটা। হারাধন হাত জোড় করে বলল- বাবা আপনার যা ইচ্ছা খান। আমার ক্ষেতের কলা। আর কি খাবেন বলুন।

আগন্তুক হাসল। গেছো বাদুরের যা উপদ্রব, রাখলি কি করে। তবে পেট ভরে দু’টো খেয়ে যায়। আগন্তুক নিজেই দুটো কলা ছিঁড়ে নেয়। কৌতূহলী মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে একবার ফিক করে হেসে উঠল। হারাধন গদি থেকে দ্রুত নেমে আসে। আগন্তুকের পায়ের ধুলো মাথায় নেয়। হাত জোড় করে বলল-বাবা আমাকে কৃপা করুন। বউ বাচ্চা নিয়ে বড় কষ্টে আছি।

আগন্তুক হাঁটছে।
গ্রামের পাশ দিয়ে ছোট নদী। সবুজ ধানক্ষেত। নদীটা দুটো গ্রামকে আলাদা করে রেখেছে। নদীর দু’ধারে কাশবন। আকাশের কোল ঘেঁষে শালিক উড়ছে। এপাশ ওপাশ করে। ঝাঁক বেঁধে একদল ঘুঘু বসেছে হিজল গাছটাতে। বিচরণ করছে এডাল ওডাল। আর কিচির মিচির করে কি সব কথা বার্তা বলছে। আগন্তুক একটা মাটির ঢিল ছুঁড়ে মারে। পাখিগুলো উড়ে যায় নদীর ওপারে। হো হো করে হেসে উঠল। এইতো পালালি। সাহস করে বসে থাকতে পারলি না। যা যা পালিয়ে যা। প্রাণে বেঁচে থাকতে হবে তো।

এ বাড়ীটা খুব নির্জন। সামনে বড় একটা পুকুর। ঈশান কোণে দাড়িয়ে আছে আকাশ ছোঁয়া তালগাছ। পুকুরে গাছটির ছায়া পরেছে। জলের নীচেও গাছটাকে সমান লম্বা মনে হচ্ছে। বাড়ীর দক্ষিণ পূর্ব সীমান্ত জুড়ে পাঁচফুট উঁচু ইটের দেওয়াল। দূর থেকে দেখলে কোন ভিটে বাড়ী বলে মনে হয় না। কেবল ঝোপ ঝাড় আর আগাছায় ভর্তি একটা পাহাড় যেন।

বাড়ীটা ল্যাংড়া মুদীর। পুরো নাম পরেশ চন্দ্র দে। এক পা খোড়া। খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটত। দূর গ্রামের বিবির হাটে ছিল মুদীর দোকান। ভালোই চলছিল। খুব সকালে কাক ডাকা ভোরে উঠে দোকানে চলে যেত। আবার রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ীতে ফিরে আসত। বিয়ের পর স্বভাব পাল্টে গেল। দোকানে খুব একটা যাওয়া হয় না। ছোট ভাই পীযুষ দোকানের ভার নিল। পরেশ বাড়ীর জমি জিরাত যা আছে তাই নিয়ে পরে থাকল। মাঝে মাঝে দোকানে গিয়ে ছোট ভাইকে ব্যবসা শিখিয়ে আসত। পীযুষ ও কঠোর পরিশ্রম করে দোকানের আয় উন্নতি ভালোই করতে লাগল। এতে বড় ভাইয়ের হিংসাটাও দিন দিন বাড়তে লাগল।

অনেক বছর হয়ে গেল। সেই যে সেদিন রাতের অন্ধকারে বাড়িসুদ্ধ লোক সবাই বেরিয়ে গেলো আর ফিরে আসেনি। কি ঘটেছিলো সেদিন পাড়ার কেউ জানল না।
দেয়ালটা দিয়েছিলো পরেশ মুদি। পূর্ব পশ্চিম একশ বিশ ফুট লম্বা দেওয়াল। মাত্র দেড় হাত সীমানা নিয়ে পাশের বাড়ীর হরিশ দত্তের সাথে গন্ডগোল। কোর্ট কাচারিতে বছর দশেক গড়িয়ে গেলো। আইনের মারপ্যাঁচ। দু’পক্ষের টাকার শ্রাদ্ধ হলো অনেক। থানা পুলিশ, উকিল মোক্তার সবাই জড়িয়ে পরলো দেড় হাত জায়গার জন্য। প্রতিবেশীর বন্ধনটা আর থাকলো না। অবশেষে উঠে গেলো দেওয়াল। বছর খানেক দু’পাশের বৌ ঝি দের মধ্যে কথা বলা বন্ধ ছিল। কেউ কারও ছায়াও মারাত না। একসময় বাড়ীর পুরুষরা কাজে চলে গেলে বৌ ঝি রা গলা উঁচিয়ে এক অপরকে আড়চোখে দেখত। একসময় শিথিল হল আড়চোখে দেখা। একটু একটু করে গলা উঁচিয়ে শুরু হল কথাবার্তা। ভাব বিনিময় করতো আগের মতো। মনের দেয়ালটা আস্তে আস্তে সরে যেতে লাগল। এখন দেয়ালে ফাটল ধরেছে। শেওলা পরেছে। পরগাছাগুলো গজিয়েছে কচিপাতা। ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে পরগাছাগুলো।

ল্যাংড়া মুদির ছিল চৌচালা মাটির ঘর। বাড়ীর টিনগুলো মরচে ধরে ক্ষয়ে গেছে। মাটির দেয়ালগুলো খসে পরছে। গোঁড়ার দিকটা দেখলে মনে হয় প্রকাণ্ড উই পোকার ডিবি। চারপাশে অসংখ্য লতা গুল্ম। রাতে শেয়ালের আস্তানা। প্রথম প্রথম গ্রামের অনেকে কাঠখড় কুড়াতে আসত। এখন আসে না। প্রচণ্ড ভয় করে। কেমন যেন গা ঝিম ঝিম করে। দিনের বেলায়ও কেউ এসে বেশীক্ষণ দাঁড়ানোর সাহস পায়না।

শোনা যায় এ ভিটেতে ভূত আছে। সুযোগ পেলেই ঘাড় মটকে দেবে। রাতে কি সব বিদঘুটে শব্দ শোনা যায়। থেমে থেমে শোনা যায় বাচ্চা ছেলের কান্না। প্রতি অমাবস্যায় কারা যেন কলকলিয়ে হাসে। পাশাপাশি একটা কালো হুলো বেড়াল অবিকল মানুষের মত করে সারারাত কাঁদে। রাত দ্বিপ্রহরে থর থর করে কেঁপে উঠে সারা বাড়ী। নূপুরের শব্দ শোনা যায়। ব্যাকুল কণ্ঠে কোন নারীর আহাজারি শোনা যায়। আয় বাচা.. আমার কোলে আয়...আমার লক্ষ্মী শোনা...আমার যাদু মনি...আমার কোলে আয়...দুধ দেবো...কলা দেবো...আয় বাবা, আর লুকিয়ে থাকিস না। আমার কোলে আয়। অভাগী মা ছেলেকে ডাকছে। ছেলে আসে না। মা আবার খিলখিলয়ে হেসে উঠে। সে হাসির শব্দ সবাই শুনতে পায়।

পেছন বাগিচার সুপারি গাছগুলো আধভাঙ্গা হয়ে নুইয়ে পরেছে। উঠোনে বড় একটা কামিনী ফুলের গাছ। যখন ফুল ফোটে সারা গ্রামে মৌ মৌ গন্ধ ছড়ায়। ডালে ডালে পেছিয়ে থাকে বিষধর সব সাপ। জংলা ভিটেটা যেন এক প্রেতপুরী। জন মানুষের কোন পদচিহ্ন পরেনি অনেককাল। গ্রামের মানুষরাও ভয়ে এদিকে খুব একটা আসে না।

বেলা পরে এলো। এখনি সন্ধ্যা নামবে।
আগন্তুক সেই বাড়ীটার সামনে এসে দাঁড়ায়। দুষ্ট ছেলের দল পিছু ছাড়ছে না। ও বাড়ীতে ঢুকতে দেখে ছেলের দল ভয় পেয়ে গেলো। একজন বারণ করল-ও বাড়ীতে যেওনা। ওখানে ভূত আছে। তোমাকে গলা টিপে মেরে ফেলবে।


ভূত! আশ্চর্য হয়ে হো হো করে হেসে উঠল আগন্তুক। তবে তো একবার যেতে হয়। তোরা সব চলে যা। কতদিন ঘুমায়নি। আজ একটু শান্তিতে ঘুমাব। শালার ভূতটাকেও একবার দেখে নেব। হঠাৎ আগন্তুকের দু’চোখ বেয়ে বর্ষার ধারা নামে। ময়লা চাঁদরটা দিয়ে বার বার চোখ মুচছে আর বলছে-অনেকদিন পর আজ আমি পরম শান্তিতে ঘুমাতে পারব। আগন্তুক বাড়ীর চারপাশটা একবার ঘুরে দেখল। না কোন ভয় নেয়। মনে মনে বিড় বিড় করে কি যেন খুঁজছে। বেলা পরতেই বাড়ীটা অন্ধকার হয়ে আসে। পাশের বাড়ীর বৌ ঝিরা কয়েকবার উঁকি দিয়ে হা হুতাশ করে বাড়ীর ভিতর ঢুকে গেল। আর মনে মনে ইষ্ট নাম জপতে লাগল। না জানি সকাল বেলা কি শুনতে হয়। হয়তো লোকটির হাড় গোড় গুলো বাড়ীর চারপাশে ছড়ানো ছিটানো থাকবে। রাতে হয়তো মানুষ আর যমদূতের যুদ্ধ হবে। সারা রাত বুঝি আর ঘুমানো যাবে না। অন্ধকারে আগন্তুক সারা বাড়ীটা ঘুরে পেছনের সুপারি বাগানটাও দেখে আসল। তারপর কামিনী ফুলগাছটার নীচে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে গেল।

ঘরটা দু’কামড়ার। মাঝখানে সদর দরজা। সামনে লম্বা বারান্দা। দু’পাশে দু’ভাই। পীযুষ আর পরেশ বৌ নিয়ে থাকত। পীযুষও বিয়ে করেছে বছর খানেক হলো। বৌঠা দেখতে লক্ষ্মী প্রতিমার মত। এসেই দু’ভাইয়ের সংসারে নিজেকে বেশ মানিয়ে নিয়েছে। সুখেই কাটছিল দু’ভাইয়ের সংসার। একটানা বাড়ীতে থাকত পরেশ। সারাদিন খাটা খাটুনির পর প্রায়ই সন্ধ্যায় মদন বেপারীর কাছে যাওয়াটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। সন্ধ্যার পরে দু’প্যাগ বাংলা খেয়ে মনটা তাজা হলেও বৌ-এর সাথে এক আধটু বাড়া বাড়ি হতো। আবার ঠিকও হয়ে যেত। মাঝে মধ্যে মাত্রাটা একটু বেশী হয়। নিতান্ত ছোট খাট বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি। হাতাহাতি। দীর্ঘস্থায়ী হতো সে ঝগড়া।
আজ সকালে পীযুষের সাথে টাকা পয়সা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে। পরেশ হাজার পাঁচেক টাকা চেয়েছিল। বাঁধ সাধল পীযুষ। জিজ্ঞাসা করল-
- কি জন্য লাগবে।
- হাত খরচ।
- এই ক’দিন আগেও দু’হাজার টাকা এনেছ।
- সেই কৈফিয়ত কি তোকে দিতে হবে নাকি। আমার ব্যবসা। আমি যা খুশি করব।
- ব্যবসা তো তোমার নয়। বাবার ব্যবসা। বাবা মারা যাবার পর তুমি ব্যবসা দেখেছ। আমি ঘর বাড়ী দেখেছি। আর এখন তুমি ঘরবাড়ী দেখছ, আমি ব্যবসা দেখছি। তাছাড়া ঘরের বাজার সদাই, চাষের খরচ সব দোকান থেকে হচ্ছে। তোমার হাতখরচও যাচ্ছে দোকান থেকে। বেচা বিক্রিও তেমন নেয়। এভাবে বাড়তি টাকা দিতে গেলে তো ব্যবসা লাটে উঠবে।

পীযুষ আর কথা বাড়াইনি। ইদানীং যেন ঘন ঘন হাত খরচের পরিমানটা বেড়ে যাচ্ছে। প্রায়ই পাড়ার যদু নাথের সাথে মদন বেপারীর ঢেরায় যায়। তারপর মাতাল হয়ে ঘরে ফিরে।

আজ বিকালে বাজার থেকে বড় একটা ইলিশ এনেছে। পরেশ বৌকে বলেছে সর্ষে বাটা দিয়ে রান্না করতে। বেশী করে পেঁয়াজ দিয়ে ঝোলটা ঘন করতে বলেছে। সন্ধ্যায় পরেশের বউ সন্ধ্যা আহ্নিক শেষ করে চুলায় ভাত বসিয়েছে। পীযুষের বউ পাটায় সর্ষে বাটতে বসেছে। পরেশের বউ সাত মাসের পোয়াতি। পীযুষের বউ ভারী কাজকর্ম খুব একটা করতে দেয় না। দুই জা-এর মধ্যে সংসারের টুকি টাকি কথাবার্তা চলছিল।

সন্ধ্যার গাঢ় অন্ধকার। পীযুষ দোকান থেকে তখনও ফিরেনি। অন্ধকারের মধ্যে পরেশ দুলে দুলে বাড়ী আসছিল। পীযুষের বউ ইদানীং খেয়াল করছে - প্রায়ই মদ খেয়ে বাড়ী ফেরে। আজও মদন বেপারীর ওখান থেকে ছাইপাঁশ গিলে এসেছে। দরজায় বার কয়েক টোকা পরতেই পরেশের বউ দরজা খুলে দিল। পীযুষের বউটা ভাসুরের আগমন বুঝতে পের নিজের ঘরে চলে গেলো।

পরেশের হুঁস নেয়। পা দু’টো ভীষণ টলছে। স্থির হয়ে দাড়াতে পারছে না। লুঙ্গিও এক খোঁচা ধরে রেখেছে এক হাতে। কোমরের বেরটা খুলে পরতেই টাল মাতাল পরেশ কোনভাবে হাল্কা একটা বের দিয়ে দেয়। ভিড় ভিড় করে কি যেন বলছে আর মাঝে মধ্যে অশ্রাব্য ভাষায় কাকে যেন গালি দিয়ে যাচ্ছে। পরেশের স্ত্রী রান্নাঘর থেকে চেঁচিয়ে উঠল। অমন ছাইপাঁশ না খেলে কি হয়। মদ খেয়ে কুত্তা বিলাইর মত হুঁশ থাকে না। লাজ সরমের বালাই নাই। ঘরে একটা ছোট ভাইয়ের বউ।

পরেশের গর্জন আরো বেড়ে যায়। বউকে মারার জন্য তেড়ে যায়। মুখের উপর আঙ্গুল নেড়ে বলে - এই মাগী..তুই আমার বউ, আমার কাপড় খুলে গেলে তোর লজ্জা কি রে..এ্যাঁ।
- হয়েছে হয়েছে। দু’পয়সার মুরোদ নেই, লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে আবার বউ পিটাতে আসে। বউয়ের সম্বোধন তুই তোকারিতে নেমে আসে। হাত আগুন বাড়ানোর কাটিটা নিয়ে রান্না ঘরের দরজায় এসে দাড়ায়। তোর বাপের মাথা যখন খেয়েছিস রাস্তায় পরে মরতে পারিস না। এখানে কেন..অসভ্য।
এ্যঁই...এ্যঁই মাগী...চুপ...একদম চুপ... একদম কথা বলবি না...তোর বাপের পয়সা...। আমার পয়সা...আমার পয়সায় খাচ্ছি। ডান হাতটা বার বার বুকে টুকে বলছে - আমার আবার লজ্জা কি..এ্যঁই দেখ..দেখ..বলে লুঙ্গিও কাচাটা উপর দিকে তুলে ধরে।

সদর দরজার উত্তরের ঘরটা পীযুষের। ছোট বউ একবার উঁকি দিয়ে দেখছিল। লজ্জায় মুখ ডেকে নিজের ঘরে গিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে খাটের উপর। পুরুষ জাতটার উপর প্রচণ্ড ঘৃণা হচ্ছে। ভাবছে এ সমাজ কবে নারীকে মানুষের মর্যাদা দেবে। কত জঘন্য এ পুরুষটার ¯^ভাব। ¯^ভাব দেখে এখন আর ছোট বউয়ের দু’চার কথা বলতে মুখে বাধে না। সামনা সামনি শুনিয়ে দেয়। এতে পাড়ার মহিলারা কুৎসা রটায়। মুখ বাঁকা করে দু’চারটা বাঁকা কথা বলে। মুখে ভেংচি কেটে বলে-এ কেমন মেয়েরে বাবা। ভাসুরের সাথে ঝগড়া করে। ভাসুরের মুখের উপর কথা বলে। মুখে মুখে তর্ক করে। আচার বিচার সব রসাতলে গেলো। কোথায় মাথার কাপড়, পারলে যেন বুকের কাপড়টাও খুলে দেয়। কি মেয়েরে বাবা! শিক্ষিত মেয়ে বলে কথা। তাই বলে আচার বিচার মানতে নেই।

ছোট বউয়ের ইচ্ছা হচ্ছিল এ পশুটাকে এখুনি জুতা পেটা করে তাড়িয়ে দিতে। পারে না। ভাসুরকে তো ছোঁয়া যায় না। সমাজ সংস্কারকেরা এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কোন বিধান দিয়ে যায়নি।

এর মধ্যে কয়েকটা লাথি, চড়, থাপ্পড় দিয়েছে বড় বউকে। অবলা নারী। শক্তিতে কুলিয়ে উঠতে পারে না ঐ জানোয়ারটার সাথে। তার উপর অন্তঃসত্ত্বা। একটা লাথি পরেছে পেটে। বাবাগো মাগো বলে চেঁচাতে
থাকে। ছোট বউ ঘর থেকে বড় জা কে ধরতে যাওয়ার সাহস পায় না। পরেশ মাঝখানে দাড়িয়ে আছে। ছোট বউ গলা উঁচিয়ে বলল - এরকম জানোয়ারের সংসারে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো। ও আসুক আজকে। হয় আমি থাকবো নয়তো ও থাকবে। ছোট বউ নিজের ঘরে ঢুকে বিছানায় শুয়ে থাকে। দিদির জন্য ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। মেয়ে বলে কথা।

প্রায় বিবস্ত্র পরেশ পীযুষের ঘরে ঢুকে। দরজায় জ্বালিয়ে রাখা হারিকেনটা ছোট বউ এর মুখের উপর তুলে ধরে। তুই আমাকে জানোয়ার বলেছিস। হা করা মুখ দিয়ে বিশ্রী গন্ধ বের হচ্ছে। বীভৎস হাসি পরেশের। ছোট বৌ চিৎকার দেয়। দিদি আমাকে বাঁচাও। এই জানোয়ারটার কাণ্ড দেখে যাও।
বড় বৌ ছুটে আসে। ছিঃ ছিঃ ছিঃ। এ সংসারে কেন তোর মরণ হয় না। শেষ পর্যন্ত ছোট ভাইয়ের বৌ-এর গায়ে হাত দিয়েছিস। পরেশকে টেনে হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করার চেষ্টা করে। পারে না। তুই মরতে পারিস না। ভগবান কেন তোর মরণ দেয় না। আমি বিধবা হয়েও শান্তি পেতাম। দাড়া আজ তেকে দেখাচ্ছি মজা। আজ তোর একদিন কি আমার একদিন। এই বলে ঘরের কোণায় কি যেন খুঁজতে থাকে।

পরেশ বাধা দেয়। জিদ ধরে এগিয়ে যায় বড় বৌ। পরেশের চোখ দু’টো রক্ত জবার মত লাল। দরজার পাশে তিন হাত লম্বা পাকা বাঁশের লাঠি। রাত্রি বেলা দরজার খিল দেয়। পরেশ লাঠিটা তুলে নেয়। তেড়ে যায় বড় বৌ-এর দিকে। সজোরে আঘাত করে। পর পর আরো ক’টা ধপা ধপ শব্দ। বড় বৌ এর রক্তাক্ত শরীর মাটিতে লুটিয়ে পরে।

ছোট বৌ দৌঁড়ে ধরতে যাচ্ছিল। পরেশ ঝাপটে ধরে। চিৎকার দিতে চেষ্টা করে বড় বৌ। পারে না। ছোট বৌ জ্ঞান হারায়। মাটিতে ধূপ করে পরার একটা শব্দ হয়। ছোট বৌ-এর বুকের কাপড়টা সরিয়ে নেয় পরেশ। জিহ্বা দিয়ে চৈত্রের দুপুরে ছুটে আসা কুকুরের মত লালা ঝরছে। যেন কিছুই হয়নি।

দরজায় টক টক শব্দ হয়। কড়া নাড়ার শব্দ। পীযুষ হাঁক দেয়। সবাই নাক ডেকে ঘুমাচ্ছ নাকি। কোন সাড়া শব্দ নেয়। । মিনু ..ও মিনু, দরজা খোল। কোন সাড়া নেয়। ভেতর থেকে কেবল ঘোৎ ঘোৎ একটা শব্দ শুনতে পায়। সন্দেহ হয়। নিশ্চয় দাদা মদ খেয়ে কোন অঘটন ঘটিয়েছে।

সদর দরজা খুলতে দেরী হচ্ছে। পীযুষ ডান দিকে ঘুরে রান্না ঘরের পাশে আসে। বারান্দার দরজাটা খোলা। রান্না ঘরে তেলের কুপিটা মিট মিট করে জ্বলছে। পাটার উপর শর্ষে বাটাগুলো তেমনি পরে আছে। ঝাঁঝটা চোখে লাগছে খুব। চুলার উপর ভাতের হাড়ি। মাড় গড়িয়ে চুলাটা নিভু নিভু। ধোঁয়া উঠছে। পীযুষ চারদিকটা ভালো করে তাকিয়ে ঘরে ঢুকে।

হো হো করে হেসে উঠে পরেশ। আমি মেরেছি---- আমি। আমি না, আমি না---ঐ মাগী তোর বৌদি, আমাকে মেরেছে--- গালি দিয়েছে, এখন ঘুমিয়ে আছে। আমি মরে যাবো। পীযুষ বুঝতে পারে ব্যাপারটা। ছোট বৌ বারান্দায় শুয়ে আছে। বুকের কাপড়টা ছড়িয়ে আছে মাটিতে। একবার ডাকল - মিনু, কি হয়েছে তোমার। মিনুর সাড়া নেয়। সেও বেহুশ হয়ে পরে আছে। বুকের কাপড়টা গুছিয়ে দেয়। গায়ে হাত দিয়ে ডাকতে চেষ্টা করে। নিশ্চল পাথর যেন। চোখ দু’টো বন্ধ। দিব্যি আরামে ঘুমাচ্ছে। নাড়ি দেখল। নাকে হাত দিয়ে দেখল। নিশ্বাস পাওয়া যাচ্ছে না।

বিশ্বাস কর আমি কিছু করিনি। সেও কিনা আমাকে মারতে আসে। আমি নাকি জানোয়ার। রক্তাক্ত লাঠিটা পরে আছে মাটিতে। পীযুষ লাঠিটা নিতে গিয়ে বৌদির নাড়িটা পরীক্ষা করে। ততক্ষণে সব শেষ। শুধু মুখের উপর ভেসে উঠেছে ঘৃণার স্পষ্ট ছাপ। নিম্মাঙ্গের দিকে সবুজ শাড়ী চুপসে উঠছে ছোপ ছোপ রক্ত।

পীযুষ লাঠিটা শক্ত হাতে চেপে ধরে। তারপর ধুপ ধুপ শব্দ হয়। মাটিতে লুটিয়ে পরে পরেশ। লাঠিটা ছুড়ে ফেলে। মরতে যখন চেয়েছিস এভাবেই মর। অনেক সহ্য করেছি। আর পারলাম না। আমিও চললাম। কেউই যখন বেঁচে নেই আমার আর বেঁচে থেকে লাভ কি।

রাত বাড়তে থাকে। জোনাকির একটানা ঝিঁ ঝিঁ-র শব্দ। ভেসে আসছে বোবা কান্নার ধ্বনি। কে যেন ফুফিয়ে কাঁদছে। রাত দ্বিপ্রহর। চারিদিক নিস্তব্ধ। সেই শিশুটা কাঁদছে। মাকে ডেকে বলছে - আমার ক্ষিদে পেয়েছে। আমাকে খেতে দাও। আমিতো কোন অপরাধ করিনি। তবে আমাকে কেন কষ্ট দিচ্ছ। জানো এখন আমি অনেক বড় হয়েছি। আমি হাটতে পারি।

শেয়ালগুলো ডেকে উঠছে বার বার। বিকট শব্দে হাসছে আগন্তুক। কোন ভয় নেয়। সকালে পাড়ার লোক জড়ো হলো পরেশ মুদীর বাড়ীতে। আগন্তুক লোকটাকে কোথাও দেখা যাচ্চে না। হারাধন প্রাণ পণে খুঁজছে লোকটাকে। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দিনের বেলায় দু’টো শেয়াল ছুটে পালাল দক্ষিণের জঙ্গলে।

বাড়ীর পেছনে আম গাছের ডালে ঝুলছে আগন্তুকের লাশ। পা দু’টো শূন্যে। মাটির সাথে সব সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলেছে। হারাধন মাথাটা কোলে নিয়ে ভীষণ কাঁদছে। বুক পকেটে হারাধনের দেওয়া একটা কলা এখনও আছে। খাওয়া হয়নি। এক টুকরো কাগজ পাওয়া গেল পকেটে। তাতে লেখা আছে, আমাকে আমার মাটিতে শান্তিতে ঘুমাতে দাও।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মহিউদ্দীন সান্‌তু অসাধারন একটা গল্প পড়লাম, ছোট্ট একটা গল্পে অনেকগুলো বিষয় উঠে এসেছে, অনেক ধন্যবাদ লেখককে, খুব ভালো লাগলো লেখাটি।
ভালো লাগেনি ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৩
প্রিয় সানতু ভাই..চমৎকার মন্তব্য...অনেক অনেক শুভেচ্ছা....
ভালো লাগেনি ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৩
তানি হক অসম্ভব রকম টানটান গল্প .. খুব খুব ভালো লাগলো কাহিনীর বোঝাপরাটা ... আপনাকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা রইলো দাদা .. পড়তে দেরী হয়ে গেল .. ক্ষম সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশাকরি ... ভালো থাকবেন
প্রিয় তানি..অনেক বেশী কৃতজ্ঞ যে আপনি পড়েছেন..এবং চমৎকার একটা মন্তব্য করেছেন...আপনার জন্যও অনেক অনেক শুভেচ্ছা....
ভালো লাগেনি ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৩
মামুন ম. আজিজ সুন্দর গুছিয়ে লেখা।
ভালো লাগেনি ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৩
ধন্যবাদ মামুন ভাই....
ভালো লাগেনি ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৩
এফ, আই , জুয়েল # এক অন্যরকম ভাবনার গল্প ।।
ভালো লাগেনি ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩
জুয়েল ভাই...ধন্যবাদ...
ভালো লাগেনি ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৩
ছন্দদীপ বেরা বেশ ভাল । ভাল লাগল ।
ভালো লাগেনি ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩
ধন্যবাদ প্রিয় ছন্দদীপ....
ভালো লাগেনি ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৩
এশরার লতিফ ভিন্ন রকম কাহিনী, ভালো লাগলো অনেক.
ভালো লাগেনি ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩
লতিফ ভাই অনেক ধন্যবাদ...
ভালো লাগেনি ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩
মোঃ মোজাহারুল ইসলাম শাওন মহিলা মহলের ধারনা - কোন সিদ্ধপুরুষ হবে হয়তো। গ্রামটা পাপের আবর্তে ডুবে যাচ্ছিল। ... নারীদের চিন্তা এমন আলাদা কেন হল? গল্পটা সুন্দর। আমার এক কবিতার নায়ক হারাধন। ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১১ ডিসেম্বর, ২০১৩
শাওন ভাই...খুব সুন্দর মন্তব্য...আর নিরন্তর ভালো লাগা......ধন্যবাদ....
ভালো লাগেনি ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন অদ্ভুত সুন্দর একটা গল্প!! ভাল লিখেছেন। ভাল লেগেছে।
ভালো লাগেনি ১১ ডিসেম্বর, ২০১৩
দাদা..অনেক অনেক ধন্যবাদ....
ভালো লাগেনি ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩
সুমন অনেক ভাল লাগল।
ভালো লাগেনি ১০ ডিসেম্বর, ২০১৩
ধন্যবাদ সুমন ভাই...
ভালো লাগেনি ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩
সূর্য পীযুষই তো আগন্তুক তাই না মিলন দা। গল্প ভালো লেগেছে
ধন্যবাদ সুর্য ভাই...ঠিক বলেছেন....
ভালো লাগেনি ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩

০৭ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১১৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী