চলে যাবো

দেশপ্রেম (ডিসেম্বর ২০১১)

মিলন বনিক
  • ৪১
  • 0
  • ১২
চলে যাবি নিধু? কোথায় ?
ওপার বাংলায়! কিন্তু কেন ?
এপার বাংলায় তোর পূর্বপুরূষ,
জননীর জঠরের রক্ত এখনও ভাসে,
এখনও মিশে আছে, ভবানী মাসীর
কান্নার জল কাদাঁ হয়ে।
বহতা পদ্মা, মেঘনা, যমুনার স্রোতধারায়
বড্ড কেদেঁছিল মাসী,
ভাষা আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছিস বলে।
তারপর কতদিন গেলো,
তুলসী তলার মাটি আঁকড়ে পড়ে আছিস্
ভিটেয় পিদিম জ্বলবে না ভেবে।
বাবা মৃত্য শয্যায় - একাত্তর এলো
অনুমতি দিলো বাবা - যুদ্ধ করো।
ব্যর্থ কান্না মায়ের-
ছেলে হারানোর ভয়, আর
বুক ফাঁটা আর্তনাদ। তবুও রাইফেল কাধেঁ ছিল তোর,
ছিল অমিত তেজ, অকুতোভয় প্রাণ,
আর জন্মভূমির ভালোবাসা।
অথচ ৯০ - এর পর -------
তুই চলে গেলি। কেন ?
এখনও তোর ছনের চালে লাউয়ের ডগা,
বেশ মোটাসোটা, লোভনীয়,
মন্ডপের পাশে পলাশ গাছে ফুটেছে পলাশ,
আঙ্গিনায় ঝড়ছে শিউলী।
ন্যাড়া হয়ে আছে তুলসী গাছটা,
জল পড়েনা ক - ত - দি - ন।
অন্ধ বাড়ীটাতে ঝোপ-ঝাড়, আর
কিছু পাগলা কুকুরের আস্তানা।
যেখানে তোর জননীর নাভি কাটা জল,
সেখানে প্রস্রাব করে কুকুরগুলো।
গভীর রাতে শোনা যায় -
হিংস্র শেয়ালের হুক্কা হুয়া রব।
সে রাতের পর আর ফিরে আসে নি,
তোর ষোড়ষী রমা।
ধর্ষিতা রমনীর লাশ পাওয়া গেলো
কদিন পর, ঠিক রমার মতো দেখতে।
শিবের চরণে নৈবৈদ্য হয়ে ফিরে এলো
ছোপ ছোপ রক্ত।
ভালোই হলো তুই নেই, থাকলে ইচ্ছে হতো
আরেকবার যুদ্ধে যেতে।
সতেজ হতো ৭১ - এর মরচে পরা রাইফেলটা
ছুড়তো গুলি।
নিধু-রে তোর মৃত্য হতো ----
তবে শহীদ হয়ে নয়-
উলঙ্গ সভ্যতার নরবলী হয়ে।
বেওয়ারিশ লাশ হয়ে তোরও চিতাভস্ম উড়ত আকাশে।
মিলতনা কোন স্বীকৃতি।
বড্ড অভিমানে ? না কি ঘৃনায় ?
তুই চলে গেলি।
অথচ এ মাটিতে তোর ভালোবাসা
এখনও ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া হয়ে।
যদি ইচ্ছে হয় কখনও-
দেখে যাস বাংলার মাটিতে অতিথি হয়ে,
তোর ধর্ষিতা রমার মৃতদেহ, চিতাভস্ম হয়ে
কেমন মিশে আছে ধুলিকনায়।
শুনতে পাবি তুই, পূর্বপূরূষের আত্মার ক্রন্দন।
ওরা কেমন সুখে আছে ?
খালি হাতে চলে গেলি, অথচ কি পেলি ?
বাংলার ভালোবাসা ? না স্বীকৃতি ?
অথচ চলে যাবো বলে-ই,
চলে গেলি অভিমানে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
জুয়েল দেব কথাগুলো মনে গেঁথে গেল। একটা গল্প পড়লাম যেন। অনেক কষ্টের একটা আখ্যান। একদিন সবাই চলে যাবে এভাবে।
মিলন বনিক মনির মুকুল ভাই আপনাকে ধন্যবাদ। নিজেকে শুধরে নেব ।
মনির মুকুল চমৎকার। (ঘৃনায় = ঘৃণায়, ধুলিকনায় = ধুলিকণায়)।
মিলন বনিক প্রজাপতি মন, আপনাকে ধন্যবাদ ।
মিলন বনিক বশির আহমেদ ভাই , আপনার সাহসী পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।
মিলন বনিক সূর্য ভাই, কবিতায় শুধু মানুষ আর মানবিকতার বিষয়টি ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা করা হয়েছে । কোনো রাম রহিমের গল্প নয় । সবাই মানুষ । সবার শরীরে লাল রক্ত। হাউজিং , উন্নয়ন , উচ্ছেদ প্রসংগটা ভিন্ন । আপনার অসাধারণ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
প্রজাপতি মন চমত্কার কবিতা.
মিলন বনিক মোঃ আক্তারুজ্জামান ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।
বশির আহমেদ নরপিশাচ হায়েনারদল বার বার ফিরে ফিরে আসবে । কখনো মীরজাফরের বেশে কখনো রাজাকার হয়ে । আবার কখনো ভদ্রতার মুখোশ পড়ে । এদের ভয়ে জীবন থেকে পালিয়ে নয় রুখে দাড়াতে হবে মাজা শক্ত করে । দেখবেন সেদিন তারাই পালানোর পথ পাবে না । শক্তিমান কবি ধন্যবাদ ।
সূর্য অসাধারণ একটা কবিতা। ......................................................................... [আমি ব্যক্তিগতভাবে ধর্মের দেয়ালে বঞ্চিত এ ভাবটা মানতে নারাজ। হাজার হাজার মুসলমানদের বাড়ী-ঘর ও কিন্তু উন্নয়নের নামে, হাউজিং প্রকল্পের নামে কেড়ে নেয়া হচ্ছে অহরহ। সে হিসাবে এরা নিধুর চেয়েও দূর্ভাগা। নিধু তো তাও কোথাও চলে যাবার স্বপ্ন দেখতে পারে, এরা যাবে কোথায়? তার চেয়ে "এ মাটিতেই রয়ে যাব" এমন একটা চেতনা কী আমরা গড়ে তুলতে পারি না?]

০৭ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১১৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪