স্বীকৃতির বয়স আর বাংলাদেশের বয়স কয়েকমাস আগে পিছের ব্যবধান। স্বীকৃতির বয়স হলেও শিশুর মতো। মাকে চোখে হারায়। মা, শুধু ওর মা নয়, ওর একমাত্র বন্ধু। এই মা, তার নিজের জীবনের সব শখ আহ্লাদ বাদ দিয়ে বড়ো করেছে ওকে, সারাক্ষণ বন্ধুর মতো থেকেছে পাশে। ওর লেখাপড়া শেষ। চাকরি করছে একটা দৈনিকে। ওর মা, প্রিয়তি মাহমুদ এখন আর চাকরি করেন না। লেখালেখি করেন। একটা সংগঠনের সঙ্গে আছেন। এছাড়াও ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নাচ ও গানের স্কুল চালান।
ওর মা নাস্তা খাওয়া শেষে খবরের কাগজ পড়ে। প্রতিদিনকার মতো আজও চায়ের কাপসহ খবরের কাগজ নিয়ে ড্রয়িংরূমে এসেছে। কিন্তু খবরের কাগজ হাতে নিয়ে না পড়েই বসে আছে। এভাবে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে মায়ের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করে স্বীকৃতি, এমন করে বসে আছো কেন মা? কী হয়েছে? কাগজ এগিয়ে দেয় মা। ইনসেটে ছবিসহ দুর্ঘটনার সংবাদ। ট্রেণের সঙ্গে প্রাইভেট কার। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া গাড়ির ছবির সঙ্গে ইনসেটে শহীদ সাবের।
খবর দেখে মায়ের মতো ওরও বুকের ভেতর ভাঙচুর শুরু হয়। চোখ উপচে পড়ে জল। বাবাকে ও জানে না। বাবা বলতে জানে এই শহীদ সাবেরকেই। বাবা হোক আর বন্ধু হোক এই তার সব। দুই দিন আগে শহীদ সাবের একটা সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলো সিলেটে। আজ সকালে ফেরার কথা থাকলেও গতরাতে টেলিফোন করেছিলো। বলেছিলো, রওয়ানা দিচ্ছি। না করেছিলো প্রিয়তি। বলেছিলো রাতের জার্নি না করাই উচিত। ধীরেসুস্থে সকালেই রওয়ানা দাও। কিন্তু শোনে নি শহীদ। বলেছিলো অযথা ভয় পেও না। কিছু হবে না। জানো তো যেখানে যার মৃতু্য সেখানে সে পায়ে পায়ে হেঁটে যায়। কথাগুলো মনে হতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে স্বীকৃতি।
মেয়েকে জড়িয়ে ধরে প্রিয়তি। প্রিয়তির চোখে জল নেই। ওর চোখের জল তো সেই যুদ্ধের সময়ই শুকিয়ে গেছে। মা, মাগো বাবাকে কখনও দেখি নি, এই কাকুই ছিলো আমার বাবা, আমার ভাই, বন্ধু। কাকু তো কখনও আমাকে বাবার অভাব বুঝতে দেয় নি, ভাইয়ের মতো বন্ধুর মতো থেকেছে পাশে পাশে। কেন চলে গেলো মা। কেন এমন হয়। শহীদ কাকুর জীবনে তো আমরাই সব। তার তো আপন বলতে আর নেই কেউ। আমাদেরও তো সে তারা আর কেউ নেই। কেন মানুষ চলে যায় মা। কেন একটা সময় পর্যন্ত একজন মানুষ অন্যজনের কাছে থাকে না মা! কেন থাকে না!
স্বীকৃতির মনে ভাবনা ঘুরপাক খায় কেন একজন মানুষ এতোটা না পাওয়া নিয়ে চলে যায়। কেন তাকে সবটুকু দিলাম না। মা তো তার জীবনটা শহীদ কাকুর সঙ্গে কাটাতে পারতো। কিন্তু মা তা করে নি। কেন করে নি। অনেকদিন ভেবেছে মাকে জিজ্ঞাসা করবে কিন্তু করতে পারে নি। কী এক সংস্কার এসে আটকে দিয়েছে ওর কন্ঠ। যদিও মা ওর বন্ধু, তবুও পারে নি। এটাই হয়তো চিরায়ত বাঙালি মন। বন্ধু হলেও মা-মেয়ের মধ্যে একটা ফাঁক থেকেই গেছে।
মা, বুকে ধরে রেখেছে স্বীকৃতিকে। মায়ের চোখে জল নেই, কন্ঠে কথা নেই। অসহায় মনে করছে নিজেকে। এখন শুধু চিন্তা মেয়েকে নিয়ে। স্বাধীন দেশ, কিন্তু নিরাপত্তা নেই কারোর। অসহায় মানুষ। ওর আর সময় নেই জানে। কাউকে বলে নি। ওর 'এসিলি' নামের অসুখ। এই অসুখ খুব কম মানুষের হয়। কিন্তু হলে তার সব রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আস্তে আস্তে হারিয়ে যায়। আর সেই মানুষটা ক্রমশঃ নিস্তেজ হতে হতে মারা যায়। এ রোগের কথা শহীদকে তো বলে নি, বলে নি স্বীকৃতিকেও। এখন যে কোন সময় যে কোন রকম দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। ও তো নিশ্চিন্ত ছিলো শহীদ আছে, মেয়ে ওর খুবই ভালো থাকবে। কিন্তু মানুষ ভাবে এক আর ঈশ্বর ভাবে অন্য।
স্বীকৃতিকে বুকে রেখেই ভেজা কন্ঠে বলে প্রিয়তি, আমি চলে গেলে কী করবি তুই? কী ভাবে যাবে তোর দিন। আমাদের সমাজে একা মেয়ের চলা অনেক বিপদ। বিয়েও দিতে পারলাম না তোকে।
মায়ের সঙ্গে একমত স্বীকৃতিও। কিন্তু বুঝতে দেয় না মাকে। বলে, এতোদিন কাকু ছিলো দেখেছে, এখন আমিই সামলে নেবো মা। তুমি এসব নিয়ে একদম ভাববে না। সব ভাবনা এখন আমার। তুমি কোন চিন্তা করো না মা। আর বিয়ে ও এক সময় না এক সময় হয়েই যাবে দেখো! বিয়ে তো ঈশ্বরের ইশারা ছাড়া হয় না মা। তুমি চিন্তা করো না।
চিন্তা না করে কী করি বল। যখন তোর জন্ম হলো তখন তো পাশে ছিলো না কেউ। হাসপাতালের বিছানায় একা। চারদিকে পাকি-বাহিনীর টহল। গোলাগুলি, আগুন। পেটে ব্যাথা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম হাসপাতালে। প্রচন্ড ব্যথা। তবুও শুয়ে থাকতে পারছিলাম না। তোর বাবা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দরকারি জিনিসগুলো কিনতে গেছে। ঘন্টা পার হয়ে গেছে কিন্তু কোন খবর নেই। চিন্তা হচ্ছিলো খুব। ওই ব্যথা নিয়েই দাঁড়িয়েছিলাম জানালায়। দাউ দাউ জ্বলছে চারদিক। পুড়ছে ঘরবাড়ি। চিৎকার করছে মানুষ। এসব দেখে নট নড়ন-চড়ন দাঁড়িয়ে আছি। এমন সময় নার্স সঙ্গে ডাক্তার। নার্স এসে রাগারাগি। নার্সকে থামিয়ে দেয় ডাক্তার। বললো, আসুন। ওখানে দাঁড়িয়ে থাকবেন না। অঘটন ঘটে যেতে পারে। তাছাড়া এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে নেই। শুয়ে পড়ুন। নার্স শুইয়ে দেয় ওকে।
তোর বাবা এলো না। হাসপাতালে কেউ এলো না। দুইদিন হাসপাতালে থাকার পরও যখন কেউ এলো না তখন ডাক্তারই বাড়ি পেঁৗছে দিলো। হাসপাতাল থেকে ডাক্তারের সঙ্গেই বাড়ি ফিরে এলাম। পোড়া ঘর, পোড়া জমিন। লুট করে নিয়ে গেছে সব কে বা কারা! বাবা, মা, আরও আত্মীয় স্বজন সব শুয়ে আছে নিথর। কী করবো ? সব কথা হারিয়ে যায় আমার। চুপচাপ বসে থাকি। তোর কথাও মনে নেই আমার। তোর দায়িত্ব সব ওই ডাক্তারই নিয়েছে। তোকে খাইয়েছে, ঘুম পাড়িয়েছে। তারপর এদিক ওদিক খোঁজাখুঁজি করে জোগাড় করেছে কোদাল, মাটি ফেলার জন্য টুকরি। কিন্তু লোক কোথায়? কোথায় পাবে কবর খোঁড়ার জন্য গোর-খোদক।
বাড়ি ফিরে আসার ঘন্টা দুয়েক পর ওদের কাছে আসে পাড়াতুত রহিম চাচা। বাড়ির উঠানেই রহিম চাচাকে নিয়ে লাশগুলো দাফন করলো ডাক্তার। তারপর ডাক্তার ওকে বললো, চলুন আমার সঙ্গে। ডাক্তারের সঙ্গেই ওদের বাড়ি আসে প্রিয়তি। কয়েকদিন থাকে। তারপর ডাক্তারই থাকার জায়গা ঠিক করে দেয়। এরপর চাকরি, স্বীকৃতির দেখভাল। সবই করেছে ডাক্তার। এই ডাক্তারই শহীদ সাবের।
ও যখন স্বীকৃতিকে নিয়ে চোখে-মুখে পথ পাচ্ছিলো না তখন বন্ধুর হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো শহীদ। এজন্য শহীদকে ওর বাড়িতে নানা কথা শুনতে হয়েছে। শুনতে হয়েছে ওকেও। মাঝেমধ্যে শহীদকে চলে যেতে বলেছে, বলেছে যোগাযোগ না রাখতে। কিন্তু শোনে নি শহীদ। বলেছে, দেখো প্রিয়তি, আমরা জানি আমাদের মধ্যে কোন পাপ বা অন্যায় নেই। এ সমাজ নানা কথা বলবেই, সমাজের ধর্মই হলো কথা বলা। যে ভাবে এ সমাজ তৈরি হয়েছে, সমাজ সেভাবেই কথা বলবে। এতে মন খারাপ করার কিছু নেই। এ সমাজের মানুষ তোমাকে এক বেলা একমুঠো ভাত দিবে না। তোমার প্রয়োজনীয় জিনিস দিবে না তোমাকে। স্বীকৃতির জন্য একবাটি দুধের ব্যবস্থা কেউ করবে না। শুধু কথা বলবে। মানুষের ধর্মই কথা বলা। এসব বিষয় নিয়ে ভেবো না তো। ওকে কখনও মুখ খুলতে দেয় নি শহীদ। সেই থেকে আছে প্রিয়তি আর শহীদ। পথ চলছে একসঙ্গে।
প্রিয়তি মাহমুদ জানে মানুষের চলার পথে একজন ভালো বন্ধুর প্রয়োজন। এবং তা অনুভবও করেছে। আর সেই বন্ধু তার শহীদ। শহীদ না হলে সে এতোটা পথ হাঁটতে পারতো না। বড়ো করে তুলতে পারতো না মেয়েকে। এই মেয়ের জন্মের আগেই তো ওর স্বামী, সুজয় হারিয়ে যায়। ওর ধারণা পাকি- সেনারা মেরে ফেলেছে ওকে। বেঁচে থাকলে এতোদিনে নিশ্চয় ফিরে আসতো ওর কাছে, ওদের কাছে।
সেই যুদ্ধের সময় বাবা, মা, ভাই সকলকে মেরে ফেলেছে রাজাকার, শান্তিবাহিনীর যোগসাজসে পাকিরা। যুদ্ধে গিয়ে আর ফিরে আসে নি ওর বড়ো ভাই। এর পর একা । শ্বশুরপক্ষের কোন আত্নীয় স্বজন নেই। সুজয়ের জন্মের দুই মাস পর ওর বাবা মারা যায়, মা মারা যায় ইন্টারমিডিয়েট শেষ করার পর। এরপর শুরু সুজয়ের একা একা পথ চলা। আর সুজয় চলে যাওয়ার পর ওর একা পথ চলা।
সুজয় ছাত্রাবস্থা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পূর্ববাংলা ছা্ত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সক্রিয় সদস্য ছিলো সে। ১১ দফা আন্দোলন, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সঙ্গে ফারাক্কা আন্দোলনে অংশ নেওয়া, হরতাল, মিছিল, স্লোগান সব কিছুতেই আগে আগে থাকতো সুজয়। পরে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ে। রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার জন্য কোন চাকরি হয় নি। একটা স্কুলে চাকরি হয়েছিলো কিন্তু মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য সে চাকরিটা চলে যায়। আর কোন চাকরি না নিয়ে ফুলটাইম রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলো সুজয়। জেলও খেটেছে কয়েকবার। একটু বেশী বয়সেই বিয়ে করেছিলো সুজয়। প্রিয়তির বয়স সুজয়ের বয়সের অর্ধেক। তবুও মানুষটা ওর মন প্রাণ সব কেড়ে নিয়ে যাওয়ার সময় জীবনের সমস্ত আগ্রহটুকুও নিয়ে গেছে, কিছুই অবশিষ্ট রেখে যায় নি।
প্রিয়তি ভেবেছিলো, সুজয় চলে গেছে ওর জীবনও থেমে থাকবে। কিন্তু না কারও জন্য কারও জীবন থেমে থাকে না। জীবন নদীর মতো। যখন যেখানে বাঁক নেওয়ার প্রয়োজন সেখানেই সে বাঁক ন্য়ে। নদীর মতো জীবনও ধীরে ধীরে গড়ে তোলে তার নতুন নতুন বসতি। প্রিয়তিরও তাই। ওর জীবন তছনছ হয়েছে ঠিকই কিন্তু থেমে থাকে নি। একটা মানুষ চলে গেছে, সেই মানুষটা প্রিয়তির জীবনের সমস্ত আগ্রহও নিয়ে গেছে। তাই জীবনের দিকে ঘুরে দাঁড়ানো হয় নি ওর। শহীদ চেয়ে ছিলো কিন্তু হতে দেয় নি ও। সুজয়ের জন্য একটা মিনার গড়তে চেয়েছিলো, পারে নি।
ও রাজনীতিতে গিয়ে মিনার গড়তে চেয়েছিলো, চেয়েছিলো সুজয়ের অসমাপ্ত কাজ যতোটা পারে এগিয়ে নিয়ে যেতে কিন্তু পারে নি। রাজনীতিতে গিয়ে বুঝেছে আজকের রাজনীতি আর আগেকার রাজনীতির মধ্যে অনেক ফারাক। এখনকার রাজনীতিতে স্বচ্ছতা নেই, নেই জবাবদিহিতা। ওর তাই রাজনীতি করা হয় নি। কিন্তু তাতে কী, ও লেখা-লেখি শুরু করেছে। কলম রাজনীতির চেয়েও শক্তিশালী। ও সুজয়ের দেখানো পথের আদর্শে মিনার গড়তে পারে নি। তাই বলে তার ভালোবাসাকে মিথ্যে হতেও দেয় নি। শহীদকে বলেছে তুমি আমার ভালো বন্ধু , বন্ধুই থাকো। আমি সুজয়ের পাশে তোমাকে রাখতে পারি কিন্তু সুজয়কে মুছে ফেলে তোমাকে রাখতে পারি না। আমি এক ছিন্নভিন্ন মানুষ সত্য কিন্তু আমার বুকের তলে ভালোবাসার যে জমিন আছে, তাকে দুষিত করতে পারবো না। তাকে কোন ক্লেদ স্পর্শ করতে দিতে পারি না আমি। সুজয়ের প্রেম আর তোমার ভালোবাসা মিলে সৃষ্টি হয়েছে স্বীকৃতি নামের এক মহামূল্যবান কোহিনূর হীরা। যার দু্যতি আমি নষ্ট হতে দিতে পারি না। সেই আলোর ভেতরে সুজয় আর সেই আলোর স্বর্ণচূড়ায় তোমার স্থান। তোমরা স্বীকৃতির মধ্যে চির জাগরূক।
যে তারিখে সুজয় হারিয়ে যায় সে তারিখ ছিলো শহীদ সাবেরের জন্মদিন। কিন্তু শহীদ ওদেও সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর থেকে নিজের জন্মদিন পালন করতো না কখনও। সুজয়ের জন্য মসজিদে মিলাদ আর ফুটপাতে থাকা মানুষগুলোকে একবেলা খাবার দিতো শহীদ। বারবার না করেছে প্রিয়তি কিন্তু শোনে নি শহীদ। বলেছে, এই মিলাদ আর খাবার বিলানোতে জানি না সুজয়ের আত্মা শান্তি পায় কি না, তবে আমার আত্মা শান্তি পায়। আর এটা ওর দায়িত্ব, এবং কর্তব্য। যতোদিন স্বীকৃতি ওর বাবার কাজ করতে না পারছে ততোদিন এ কাজ আমিই করবো। স্বীকৃতি বলেছে, তুমিই তো আমার বাবা। এ কাজ তুমি করছো তুমিই করবে। আমি, এ কাজ কখনও করতে পারবো না। শহীদ স্বীকৃতিকে জড়িয়ে ধরেছে। ভেজা কন্ঠে বলেছে, তুই বাবা বললে আমার খুব ভালো লাগে কিন্তু বাবা বলিস না। আর এভাবে বলবি না। মনে রাখবি আমি তোর বাবা নই বাবার মতো। আমাকে বাবা বললে সুজয়ের হয়ে আমি খুব কষ্ট পাই। সেই থেকে স্বীকৃতি কখনও আর শহীদ সাবেরকে বাবা বলে নি। কিন্তু বাবা নামের যে সম্মান শহীদের জন্য তাও মুছে ফেলতে পারে নি।
শহীদ সাবের নিজের জন্মদিন পালন করতে দিতো না দেখে প্রিয়তি, প্রত্যেক বন্ধুদিবসে পালন করতো বন্ধুদিবস। বিশাল এক কেক কেটে আয়োজন করতো বন্ধুদিবসের। সকালে কেক কেটে দিনের শুরু করতো। তারপর সারাদিন তিনজনে দূরে কোথাও। খাওয়া দাওয়া ঘোরাঘুরি শেষে ঘরে ফেরা।
আজ শহীদ আসবে। পেঁৗছুবে সকালেই তাই রাতেই একটা কেক এনে রেখেছে। কেকের উপর লিখে এনেছে 'বন্ধু তুমিই চিরসত্য'। কাল রাতেই কথা হয়েছে ঘরে পেঁৗছেই আগে কেক কাটা হবে, তারপর আর সবকিছু। প্রিয়তির চোখের কোল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে জল। এ জল শুধু মাত্র শহীদের জন্য। এই জলের সঙ্গে মিশে আছে প্রিয়তির প্রেম, ভালোবাসা, আর বন্ধুত্ব।
প্রিয়তি কেক বের করে সজিয়ে রাখে টেবিলে। তারপর মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে যায় হাসপাতালের উদ্দেশে।