ছোট্ট একটি সাদা কেম্পের পাশে বসে অদূরে নীল আকাশপানে চেয়ে দাদার সদ্য পড়া ডায়েরীর পাতাটা নিয়ে ভাবছে রাইনা।বংশানুক্রমে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম বয়ে বেড়াচ্ছে পাতাটি।যদি ছিঁড়ে যায় আবার লিখা হয়।না কিছুতেই একে ধ্বংস হতে দেয়া যায় না। রাইনার আর কোনো ভাই বোন নেই।তাই দাদা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগমুহুর্তে দিয়ে যায় ডাইরীটি তার হাতে।আর বলে এ আমাদের বাপ দাদার ভিঁটের ঠিকানা তুই বেঁচে থাকতে যদি দেশ স্বাধীন হয় অবশ্যই যাবি সেখানে।আর তুই বেঁচে না থাকলে দিয়ে যাবি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। ভাবতে ভাবতে কখনযে অস্রুতে পিপাসার্ত ধুলিকনাগুলোর পিপাসা মিটে যায় দেখে অবাক হয় সে।প্রার্থনা করে মহান প্রভূর নিকট দু চোখে যেন নিজ জন্মভূমী দেখে যেতে পারে।হঠাৎ মায়ের ডাকে সম্ভিৎ ফিরে ফেল সে।দৌড়ে ছোট্ট সাদা কেম্পে ডুকে পড়ে । পুরো শহরটি ইসরাইলি সৈন্য দিয়ে ঘেরা।ইচ্ছে হলেই ঘুরে আসা যায়না বাইরে কোথাও। বেঁচে থাকা এখানে খাঁচায় বদ্ধ পাখির মত।অপেক্ষা শুধু এক নতুন ভোরের।বিএ পড়ে সে।এই শহরে যে কলেজটি রয়েছে সেখানেই পড়ে সে।বাবা ক্যাম্পের পাশের জমিনটুকুতে শাকসব্জি চাষ করে।মার আছে সেলাই মেশিন।
আল্লাহতায়ালা আদম (আঃ)কে শাস্তি স্বরুপ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন ।তারপর একটুখানি সদয় হলেন আর বললেন আমি পৃথিবীতে দূত পাঠাব তোমাদের হেদায়াতের জন্য। যে ঠিক পথে চলবে সে পাবে বেহেশ্ত।আর অন্যরা যাবে জাহান্নাম।খুব গভীরভাবে দেখলে বুঝা যায় আসলে পৃথিবীটা কিছুই না।এই ক্ষণিকের দুনিয়ায় বিলাসবহুলভাবে থাকার জন্য মানুষ কতইনা নির্মম হতে পারে।শক্তিশালী দেশগুলো শাষন করছে দুর্বলদের। প্রাকৃতিক সম্পদগুলো হাতিয়ে নেওয়ার জন্য পুরোদেশের মানুষগুলোকে কত নির্যাতন করছে।নিজ দেশে থাকতে হচ্ছে পরাধীন হয়ে।মানুষ যদি বুঝত পৃথিবীটা ক্ষণিকের যদি পরকাল সম্মন্ধে ভাবত তবে হয়ত এইভাবে রাইনাদের মত হাজার হাজার ফিলিস্তিনীকে কষ্ট পেতে হত না। সকালের নাস্তাটা সেরে কলেজের জন্য তৈরি হতে হতে এ জাতীয় অনেক কথাই দোল দিচ্ছে তার মনে।দেশটা যদি স্বাধীন হত কতইনা ভালো হত ছুটিতে যাত্তয়া যেতো গ্রামের বাড়ী।এখন আত্মীয়স্বজনদের একেকজন একেক দেশে পড়ে আছে। অনেক কাজই করতে হয় তাদেরকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে।কবে আসবে এমন কেউ যে তাদেরকে পরাধীনতার শিকল হতে মুক্ত করবে।বাসা থেকে কিছু দুরেই কলেজ।এই অল্প পথ যেতেই রাইনার বুক দুরু দুরু করে।কখন কোন সৈন্যের নজরে পড়ে যায় সে।কয়েক পুরুষধরে তারা এভাবেই জীবন অতিবাহিত করছে। মাথার কাপড়টা আরেকটু সামনে টেনে দ্রুত পা চালাচ্ছে সে।হঠাৎ এক যুবকের আর্তনাদে পাশ ফিরে সে। সারা শরীর রক্তে মাখামাখি।বাঁচবে কিনা সন্দেহ ।স্বাধীনতার জন্য যেসব যুবক বিভিন্ন দল গঠন করে প্রচেষ্টা চালায় তাদেরকে এভাবে প্রান দিতে হয়।কিছু না ভেবে দৌড়ে গেল সে যুবকটির কাছে।পাঁ দুটো ধরে অনেক কষ্টে তাকে টেনে নিয়ে গেল তাদের ছোট্ট ক্যাম্পে। মা বাবা এবং আশপাশের অন্যান্য ক্যাম্প থেকে অনেকেই দৌড়ে এল।প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেলেটার কিছুটা উন্নতি হল।কি হয়েছিল বাবা তোমার?রাইনার মায়ের এই প্রশ্নে ছেলেটির দু চোখ যেন জ্বলে উঠল।আর নয় এমন পরাধীন জীবন।নিজের দেশে মুক্ত বাতাসে অনেক দুর যেতে চাই মা।আপন ধুলোয় হামাগুঁড়ি দিতে চাই মা।একটা নতুন সূর্যোদয়ের জন্য না হয় জীবনটাই দিয়ে গেলাম।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সূর্য
যা আমি দেখিনি শুধু অনুভবে তার রেশ তুলে আনা খুব বেশি কল্পনা বিলাসী মনে হয় নিজের বেলায়। আর এমন একটা বাস্তবতা ফিলিস্তিনি কোন এক রাইনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলায় ধন্যবাদ। তবে কলেবর এবং বর্ণনা আর একটু বড় হলে বেশ হতো। ফিলিস্তিনের আকাশে স্বাধিনতার নতুন সূর্যোদয় হোক সহসাই।
এস, এম, ইমদাদুল ইসলাম
ফিলিস্তিনের পরাধীনতার বীজ বপন হয় মূলত আজ থেকে প্রায় ৮৯ বছর আগে তাদেরই বোকামীর কারণে । সেই সাথে যোগ হয়েছে নব্য হায়নার থাবা। মুসলমানদের অনৈক্য , ভায়ে ভায়ে হানাহানী এভাবে একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নির্মূল করে দিতে পারে তা দেখে আজো মুসলমান জাতি কিছু শিখল না। ধন্যবাদ আপনাকে ।
সেলিনা ইসলাম
রাইনার কষ্ট অসীম , শতচেষ্টায় ওর কষ্টের ভাগ কেউ নিতে পারবে না বা সম্ভব নয় তবে আপনি যে চেষ্টাটি করেছেন তা প্রশংসনীয় -রাইনাদের জন্য শুধুই সমবেদনা জানানো ছাড়া আর কিই বা করার আছে ? একটু গভীরভাবে ভাবলে দেখা যায় যে -আমাদের এক ভাই এই অত্যচারীদেরকে সহযোগীতা করছে আর একভাই এই অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে রক্ত দিচ্ছে ...! ধন্যবাদ আপু শুভেচ্ছা
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি
নিজের দেশে মুক্ত বাতাসে অনেক দুর যেতে চাই মা।আপন ধুলোয় হামাগুঁড়ি দিতে চাই মা।একটা নতুন সূর্যোদয়ের জন্য না হয় জীবনটাই দিয়ে গেলাম। // অসাধারন ত্যগের বানী কল্পনায় নয় সত্যের সয়ং প্রকাশ...ভালো লাগল ঝরা লেখার ধার আছে .....হবে .অশেষ ধন্যবাদ...মূল্যায়ন করলাম.....
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।