ছয় ঘন্টার প্রেম

কষ্ট (জুন ২০১১)

রুহুল আমিন রুমী
  • ১২
  • 0
প্রায় বিশ মিনিট লাগলো আরাপপুর বাস স্টান্ডে পৌছাতে। রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে দিলাম। এরি মধ্যে ঢাকার বাসের বিভিন্ন কাউন্টারের লোকেরা এসে হাত ধরে টানা হ্যাচড়া করছিল। একটু ধমক দিলাম। নিজেদের এলাকা এটা। গাবতলি নয়। জে,আর পরিবহনে টিকিট করলাম। গাড়ি আসবে আসবে করে অনেক দেরি হলো। বুঝলাম ভালো গাড়িতেও ভগিজগি হয়। প্রায় এগারটা বাজলো বাস আসতে। ব্যাগটা বক্সে রেখে বাসের ভেতরে ঢুকলাম। চৌত্রিশ b¤^i ছিট। খুজে পেলাম। পাশের ছিট্‌টা ফাঁকা দেখে বেশ আনন্দ লাগলো। অনেক শান্তিতেই বসে ছিলাম। গাড়ি স্টাট হয়েগেছে। এখন কাউন্টার ত্যাগ করার পালা। ঠিক ঐ মূহুর্তে কন্ট্রাকটার এসে বলল- দেখি ভাই,একটু সরে বসেন। এটা আমার ছিট। আমি মাথাটা উচু করে তাকালাম। তার পাশে একটা মেয়ে। বেশিক্ষণ তাকালাম না। কন্ট্রাকার বলল- এটা আমার ছোট বোন, একটু দেখেন? আমি জি হ্যা বলে সরে বসলাম। হাল্‌কা দৃষ্টি রাখলাম। শুধু চোখের দিকে। কারণ-মেয়েটা ছিল বোরখা পরিহিত। চোখ দেখেই বুঝলাম খুবই নম্র,ভদ্র এবং অহল্যা নারী । কন্ট্রাকটার কোনো সমস্যা হলে ড্রাইভারকে জানাতে বলে বাস থেকে নেমে পড়লেন। আমি একেবারে সংযত হয়ে বসে রইলাম। এমনিতে মেয়েদের দেখলে শরীরের মধ্যে কেমন একটা লজ্জা লজ্জা অনুভুত হয়। পাশ দিয়ে হেটে গেলে-তো আর কথায় নেই। মাথা নিচু করে চোখ দিয়ে মাটি ছিদ্র করতে থাকি। আজ একেবারে পাশাপাশি ছিটে। আমি যেন বোবা হয়ে গেলাম। কিন্তু এভাবে আর কতক্ষণ। ব্যাগ থেকে i¨vwc‡W• বইটা বের করে পড়া শুরু করলাম। মেয়েটা কি করছে সেদিকে কোনো খেয়াল ছিলনা। পড়ার ভেতরে অনেক কিছুই ভাবলাম। এভাবে প্রতিবন্ধির ন্যায় ছয়টা ঘন্টা পার করতে হবে। আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে পরিচয়টা তো জানতো-ই । এভাবে প্রায় তিন ঘন্টা কেটে গেল। অনেক পথ অতিক্রম করলাম। ঝিনাইদহ থেকে মাগুরা,ফরিদপুর,রাজবাড়ি.....। শেষ পযর্ন্ত প্রতিবন্ধি জীবনের অবসান ঘটলো ঘাটে এসে। অর্থ্যাৎ ফেরী ঘাটে এসে।
এই পত্রিকা,পত্রিকা লন, প্রথম আলো, নয়া দিগন্ত...। কানে আসতেই চট্‌ করে একটা প্রথম আলো পত্রিকা কিনে নিলাম। পড়ছিলাম অনবরত। হঠাৎ মনে হলো- আর যায় হোক মেয়েটাকে কিছু জ্ঞান শেখার সুযোগ করে দিই। সাথে সাথে বলে ফেললাম- পত্রিকা পড়বেন? আচম্‌কা আমার দিকে তাকালো মেয়েটা। আমিও অপলোক তাকিয়ে থাকলাম। তারপর দিলাম পত্রিকা পড়তে। এবার শুরু হলো নিরবতা ভেঙ্গে বাকটতা। জিজ্ঞেস করলাম- আপনিও কি কোচিং করার জন্য ঢাকাতে যাচ্ছেন ? উত্তরটা শুনে অবাক হলাম। ভাইয়া- আামি তো ক্লাস টেনে পড়ি! কথাটা শুনে আমি কি বলবো কিছুই ভেবে পেলাম না। মেয়েটা আরো বলল- আর আমি ঢাকাতে যাচ্ছি চিকিৎসার জন্য। আরও অবাক হলাম, কথায় কথায় জিজ্ঞেস করলাম- আপনার বাসা কোন জায়গায় ? আরও জিজ্ঞেস করলাম- ঢাকাতে কেউ কি আছেন? বলল- সেজ আপুর কাছে যাচ্ছি। আরও জিজ্ঞেস করলাম- আপনারা কয় ভাই বোন? বলল- সাত বোন। শুনে বিষ্ময়ে বললাম- আপনি কত b¤^i? বলল- ছোট দুই বোনের আগে। এভাবে তাদের পরিবারের অনেক কিছুই জানা হলো। ভাবতেই পারিনি এতোকিছু মেয়েটার কাছ থেকে জানতে পারবো! ঝালমুড়ি, ঝালমুড়ি শব্দ কানে ভাসতেই আমার আগে মেয়েটা ঝালমুড়ি ওয়ালাকে দশ টাকার মাখায়ে দুই প্যাকে দিতে বলে । আমার হাতে একটা প্যাক দিয়ে খেতে বলল। আমি প্রথমে A¯^xK…wZ জানালাম। পরবর্তিতে নিতেই হলো। খুব লজ্জা লাগছিল। মেয়ে মানুষ কিছু কিনে খেতে দিচ্ছে। তাই পকেট থেকে একশত টাকার নোটটা বের করে ঝালমুড়ি ওয়ালাকে দিতে যায়। কিন্তু ভাগ্য মানে কার দোহায়। নোটটা ভাঙ্গতি করতে পারলোনা সে। তাই মেয়েটাই ঝালমুড়ি ওয়ালার বিল দিল । আমার নোট না নেওয়াতে মেয়েটা চমৎকার এক মুচকি হাসি দিয়েছিল। যা আমার হৃদয় ছুয়েছিল। মেয়েটা নেকাপ খুলে ফেললো। আমি চেহারার দিকে অপলোক চেয়েছিলাম। চোখ নামাতে পারছিলাম না। আমি যেন চাঁদের পাশে বসে আছি। মেয়েটাও আমার দিকে তাকালো। সেও যেন আমার চোখের মধ্যে কিছু খুজছে। এরপর একগাল হেসে ফেললাম। মেয়েটাও হাসলো। মনে হচ্ছিলো মেয়েটা আমার চির চেনা। বেশ সাহস করেই জিজ্ঞেস করলাম- আপনার অসুখটা কিসের? মেয়েটা বলল- দাঁত। আমি আবারও অবাক হলাম! আমি বললাম কেমন সমস্যা? মেয়েটা বেশ আগ্রহে ছোট্ট করে মুচকি হেসে গোলাপী কাঁচা ঠোঁট দুটো সরিয়ে দাঁত বের করে দিলো। দেখালো তার বাঁধায় করা দাঁতগুলো। তার চারটা দাঁত বাঁকা হয়ে যাচ্ছে, তাই সে পি,জি হাসপাতালে আগে দেখিয়েছিল। আর সেখানেই যাবে দ্বিতীয়বার দেখাতে। ঘাট পার হয়ে কখন যে গাবতলি চলে এসেছি তার ইয়োত্তা নেই। গাবতলির যাত্রি ছাউনি দেখে মনে ঝড় শুরু হলো। কি করি, গাবতলি নামবো না টেকনিক্যাল! ভাবতে ভাবতে টেকনিক্যাল-ই চলে এসেছে বাসটি। নেমে পড়তে হলো। মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বিদায় নিতে মন চাইছিলো না। তারপরও বিদায় নিতে হলো। মেয়েটাও বিদায় জানালো। মনের মধ্যে জেগে উঠা চারা প্রেমটা চারাতেই ভেঙ্গে গেলো। সমাপ্তি ঘটলো ছয় ঘন্টার প্রেমের। শুধু রয়ে গেলো স্মৃতি। দু’জনের কাছে মোবাইল থাকা সত্বেও b¤^i আদান-প্রদান করা হলোনা। হলোনা বলা বুকে জমে থাকা কথাগুলো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
শাহ্‌নাজ আক্তার আহারে বেচারা .....জীবনে চলার পথে যদি কোনদিন দেখা হয় মনে কি পড়বে অতীতের মাঝে অচেনা পরিচয় ?
ফাতেমা প্রমি পড়লাম...বেশ কিছু অসঙ্গতি আছে,বর্ণনা আরও সুন্দর হতে পারত-আজ আর বলব না। লিখতে থাকুন-আরও ভালো লিখবেন আশা রইল।
sakil জীবনে চলার পথে এমন ঘটনা অহরহ ঘটে কিন্তু ঘটনাকে রূপ দান koray apnake dhonnobad . valo লেগেছে , আপনার জন্য শুভকামনা রইলো .
খোরশেদুল আলম ঘটনাটি অল্পসময়ের ছোট করেলেখা সেতুলনায় ভালো হলেও কিছু বর্ণানায় সমস্যা আছে বলে মনে হলো, আশাকরি আরোএকটু সময় নিয়ে লিখলে আরো ভালো লেখা পাব সেই আশায় শূভকামনা।
উপকুল দেহলভি লেখাটি ভালো লাগলো; ভাই আর একটু বেশি সময় প্রেম করা গেলনা; আপনাকে আমার ঘরে আমন্ত্রণ;
সূর্য যে কোন লেখা, যদি শুধুই নিজের জন্য হয়, তখন আর পাঠকের কথা না ভাবলেও চলে। কিন্তু সেটা যদি পাঠকের কাছে দিতে হয়, তবে অবশ্যই তা যেন পাঠকের ভাল লাগে এবং কোন খুত না থাকে সেই চেষ্টা অবশ্যই করা উচিত। এই গল্পে তথ্য (আমার নোট না নেওয়াতে মেয়েটা চমৎকার এক মুচকি হাসি দিয়েছিল। যা আমার হৃদয় ছুয়েছিল। মেয়েটা নেকাপ খুলে ফেললো।>>> নেকাব খোলার আগে মুচকি হাসি দেখার ক্থা না) ও ফরমেটগত( আমি বললাম ও বলল>> ডায়লগ, উত্তম পুরুষ বক্তা হলে কখনই প্যারায় আসবেনা) অনেক ক্ষত আছে। ভবিষ্যতে লেখাগুলো আরো পরিনত হোক কামনা রইল..............
রনীল খুব মজা পেলাম... না পড়লে আসলেই বুঝতে পারতাম্ না কি লিখেছেন...
মিজানুর রহমান রানা একজন লেখক একটি গল্প লিখলো নিজের মতো করে। আর আলোচক-সমালোচকরা বললো, যদি ওভাবে লিখতেন অথবা সেভাবে ডায়লগ দিতেন তাহলে ভালো লাগতো। লেখক যদি এভাবে সব পাঠকের কথামতো পরিবর্তন করতে শুরু করে, তাহলে শেষ পর্যন্ত পরিবর্তন করতে করতে লেখকের নিজের আর মৌলিক বলে কিছু বলে থাকবে না। পরিবর্তন করতে করতে সব পাঠকের কথাই হয়ে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা নিজের মতটা জোর করে অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না। লেখকের ব্যক্তিগত একটা চিন্তা-চেতনা থাকতে পারে, সেখানে হস্তক্ষেপ করা ঠিক নয়।
আশা আপনি যা লিখলেন না ভাই? খুব মজা পাইলাম। আপনার দুঃখের গল্প পড়ে হাসতে হাসতে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। সবচেয়ে বেশি মজা পাইলাম--------- (আরও জিজ্ঞেস করলাম- ঢাকাতে কেউ কি আছেন? বলল- সেজ আপুর কাছে যাচ্ছি। আরও জিজ্ঞেস করলাম- আপনারা কয় ভাই বোন? বলল- সাত বোন। শুনে বিষ্ময়ে বললাম- আপনি কত number? বলল- ছোট দুই বোনের আগে।) অংশটা পড়ে। বুঝতে পারলাম- আপনার ৬ ঘণ্টার প্রেমিকা তার সিরয়াল নাম্বারটা ভুলে গিয়েছিলেন। হা..হা....হা....হা....
রুহুল আমিন রুমী একটু ডিকশনারী দেখে নিন ভাই, মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ

২৬ মার্চ - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪