পেশা বদল করাটা কারো কারো কাছে নেশা। এই যেমন মমিন মিয়ার কাছে। শুটকির ব্যবসা থেকে শুরু করে অল্প পুঁজির নানান ব্যবসা সে করেছে। যখন যে ব্যবসা তাকে আকৃষ্ট করে তখন সেই ব্যবসা ধরে। গত ইলেকশনের সময় সে পোস্টারের ছাপাখানা দিয়েছিলো । শীতকাল আসলে সে লেপ-তোষকের দোকান দেয়। তাই তাকে মৌসুমী ব্যবসায়ী বলা চলে। গতবার একটা ব্যবসায় সে বেশ লাভবান হয়েছিলো। সেটা হলো পতাকার ব্যবসা। গতবার বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার সময় তার মাথায় বুদ্ধিটা আসে । তার বউ বাড়িতে দর্জিগিরি করে কিছু আয় করে। ঐ সময় সে তার বউকে লাগিয়ে দেয় পতাকা বানানোর কাজে । একাধারে তার বউ পতাকা বানাতে থাকে । অনেকেই পতাকা বানানোর অর্ডার দেয়। ২০ হাত পতাকা, ৫০ হাত পতাকা । ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইতালি, জার্মানি, ফান্স আরো কত দেশের পতাকা যে বানায়। রাস্তার ধারে তখন সারি সারি পতাকা। এই ব্যবসাটা তার মনে ধরে । যখন সে শুনতে পায় সামনের বছর বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ক্রিকেট হবে তখন সে যে কি খুশি! জানুয়ারি থেকে সে পতাকা বানাতে শুরু করে। পোষা গাভীটা বিক্রি করে। সে ভাবে খেলা শেষে লাভের টাকা দিয়ে ডাবল গরু কেনা যাবে। এবার বানায় শুধু বাংলাদেশের পতাকা। যেখানে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলছে সেখানে তো অন্য দেশের পতাকা বানানোর কোনো প্রশ্ন আসে না। খেলা শুরুর এক সপ্তাহ আগে সে দোকান দিয়ে বসে। দুএকটা করে পতাকা বিক্রি হয়। সে ভাবে খেলা শুরু হয়ে গেলে পুরোদমে বিক্রি হবে। খেলা শুরু হয় কিন্তু ফুটবল বিশ্বকাপের মত পতাকা বিক্রি হয় না। মমিনের মনটা খারাপ হয়ে যায়। মানুষগুলোর হলো কি? কোথায় আগের চেয়ে বেশি বিক্রি হবে সেখানে বিক্রি হয় না বললেই চলে । ২০ হাত, ৫০ হাত পতাকার অর্ডার আর পায় না। মাঝখানে সে শুনতে পায় একটা দলের সাথে বাংলাদেশ খুব শোচনীয়ভাবে হেরে গেছে। খেলোয়াড়দের প্রতি সাধারণ মানুষ রুষ্ট। এটা কি পতাকা না কেনার কারণ হতে পারে? আর্জেন্টিনা সেই কবে বিশ্বকাপ জিতেছিলো কই তাতে তো সাপোর্টাররা দল বদলায় না বা বিশ্বকাপ আসলে পতাকা কেনা বাদ দেয় না। হারলে অধিনায়কের বাসায় ঢিল ছুড়তে ছাড়ে না কিন্তু জিতলে তো কেউ ফুল দিয়ে আসে না। পাশের চায়ের দোকানে বসা লোকজনের কাছে এসব কথা শুনতে পায় সে। তার মনে হয় ইন্ডিয়া পাকিস্তানের পতাকা বানালে ভালো বিক্রি হবে। কিন্তু এই কাজটা সে কিছুতেই করতে পারবে না। তার মন সায় না। মমিন সিদ্ধান্ত নেয় যতই লাভের আশা থাক সে আর পতাকা বিক্রির কাজ করবে না । সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন । অনেকেই মানুষের (মৌসুমী!) দোয়া চেয়ে পোস্টার লাগানো শুরু করেছে। তফসিল ঘোষণা হলেই নির্বাচনী পোস্টার লাগানো শুরু হবে। সে সিদ্ধান্ত নেয় আবার পোস্টার ছাপানোর কাজ শুরু করবে। তবে যার তার পোস্টার সে ছাপবে না। এই যেমন সগীর উদ্দিনের। কেননা সে জানে সগীর উদ্দিন একজন রাজাকার। শোনা যাচ্ছে সগীর উদ্দিন এবার চেয়ারম্যান পদে দাঁড়াবে। মমিন ভাবে লোকজন খেলোয়াড়দের ঢিল না ছুঁড়ে সগীর উদ্দিনদের বাড়িতে তো ছুঁড়তে পারে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নাসিরুল আলম মন্ডল
জাকির আহমেদ ভাই কে বলছি ভাই আমি তীব্রভাবে আপনার কথার প্রতিবাদ জানাচ্ছি । উন্নতি যদি নাই হয় তো ২০০০ সালের বাংলাদেশ দল আর আজকের বাংলাদেশ দল এর দিকে তাকান । সবচেয়ে বড় পরিবর্তন বোধহয় এটাই যে, আপনার মত সমর্থকরা এখন সব সময় জয় আশা করছে ।
রিয়াজুল ইসলাম প্রিন্স
'' গাঁও গ্রামে জন্ম শাহেদুজ্জামান লিংকনের
মাটির ঢেলায় খেলা
কাঁচা হাতে লিখে গল্প
করিও না তোমরা হেলা ''।
অনেক সুন্দর লিখেছেন শাহেদুজ্জামান লিংকন ভাই কবিতার ভাষায় প্রকাশ না করে পারলাম না।
শাহেদুজ্জামান লিংকন
আসলে আমি একটি বাস্তব চরিত্র নিয়ে গল্পটা লিখেছিলাম। আমাদের গ্রামে মমিন নামেরই একজন আছে যে বারবার পেশা বদলায়। এখন শুনছি সমাগত ইউপি নির্বাচনে সে চেয়ারম্যান পদে দাঁড়াবে।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।