একটুখানি শীতলপাটি আর কাঁঠাল গাছের ছায়া

মা (মে ২০১১)

সোয়াদ আহমেদ
  • ৩৬
  • 0
  • ৫৪
ভীষণ ক্লান্ত এক দুপুরে শান্ত, শীতল কাঁঠাল গাছের ছায়ায় পা এলিয়ে নাতি আব্দুল্লাহকে নিয়ে গল্প করছে বাদশার মা। আব্দুল্লাহ আদর খাওয়া বেড়ালের মত হাত পা গুটিয়ে দাদীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে অতি আগ্রহের সাথে গল্প শুনছে। আব্দুল্লার বড় বড় নির্ঘুম চোখে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি, আর দাদীর ঘুম ঢুলুঢুলু চোখে দূরের রোদ্দুর মাখা ধান ক্ষেত। দক্ষিণের উপার হতে আসা গৃহত্যাগী উচ্ছৃঙ্খল বাতাস দাদির ছেড়া শাড়ির আঁচল উড়িয়ে নিয়ে যেতে চায়। এই শীতল বাতাসের ক্লান্তিহীন সীমানায় তার শরীর এলিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে। সে ঘুম ঢুলুঢুলু, গভীর কালো ভেজা চোখে, ঝাপসা দৃষ্টিতে দূরের সীমানার দিকে তাকিয়ে অনর্থক স্মৃতিচারণ করতে থাকে। “আব্দুল্লা জানস, ঐ যে হলুদ ধানক্ষেতগুলা, আর ঐ যে ঐদিকে ব্যাটাগুলা সার ছিটায় ঐ গুলা সব তোর দাদার আছিল। তর বাপ, বাদাইম্যা সব বেইচ্যা খাইল। তর দাদাও খাইছে, সব খাইছে। তর দাদার বাপত জমিদার আছিল। কতযে জমি, ক্ষেতের পর ক্ষেত, সব আছিল। আর এহন তর বাপ মাইনষের ক্ষেতে কামলা দেয়রে।” দম ফেলার ফুসরত পায় না বুড়ি। তাকে আজ সব বলে শেষ করতে হবে। তার অতি পুরাতন, আটকে থাকা, অবহেলিত কথাগুলো আজ বর্ষার বান হয়ে বেড়িয়ে আসতে চায় উদ্ধত আবেগ নিয়ে এবং তা তার স্বামীর সর্বশেষ বংশধরের কাছে, যা কিনা তাকে জানাতেই হবে। এ তার পূর্বপুরুষের সত্যিকারের লুপ্তপ্রায় ইতিহাস। “আহারে কি দিন আছিল, কত ধান, কত চাল, মুড়ি, মুড়কি, পিঠা, মাছ কত কি! গণ্ডগলের বছর, ঐ হারামীরা আইলো, এত বড় বড়, লম্বা, শালা পাকিস্তানি খানকির পুতগুলান আইয়্যা তর দাদারে ধইরা নিয়া গেল। কত কানঁলামরে আব্দুল্লাহ, কত কাঁলনাম....।” একটু দম নেয় বুড়ি। আব্দুল্লার চোখে তখন বৃষ্টির পূর্ব প্রস্তুতি। “এই যে দেখ্ , বাদশার মা হাটুঅব্দি কাপড় তুলে আব্দুল্লাকে কাল, পুরাতন শুকিয়ে যাওয়া ক্ষত স্থানটা দেখায়। “এই হানে লাথ্থি মাইরা আমারে ফালাই দিছিল। তর দাদারে ওরা হুদাই ধইরা নিয়া গেল.. ..।” আব্দুল্লার চোখে তখন বাঁধ ভাঙা প্লাবন। ভেতরে অসংখ্য জিজ্ঞাসা। কিন্তু সে প্রশ্ন করে না। হা করে কান্নাঝড়া চোখ নিয়ে দাদির মুখের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে। দাদি বলতেই থাকে, “তারপরে ঐ হাপলার বিলের পাড়ে নিয়া যায় সবাইরে। গুলি কইরা মারলোরে আব্দুল্লা....” বুড়ির গাল বেয়ে টপটপ পানি পড়ে কোলের উপর। বুড়ি ভাঙা ভাঙা গলায় বলতে থাকে, “সবাইরে মারলরে, ঠাস্ ঠাস্ গুলি কইরা মারল। তর দাদা, মঞ্জুর দাদা, নঈমের দাদা, সবাইরে।” বুড়ি আনমনে কোথায় যেন হারিয়ে যায়। অচেনা কোন এক দূরদেশে, যে দেশে সে কাউকে চেনে না, সবাই কেমন অচেনা। তবে আব্দুল্লা অচেনা কোথাও যেতে আগ্রহী হয় না , সে তার দাদীর বহুদিনের আদরমাখা উষ্ণ কোলটিতে মুখ লুকায়।
ছালেহার কর্কশ ডাকে তাদের চেতনা ফেরে। “অই আব্দুল্লা, তরে কতক্ষণ ধইরা ডাকতাছি তর খেয়াল নাই? শুয়রের বাচ্চা, হারামী এই দিকে আয়।” বাদশার মা রিতিমত প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। “ঐ বউ, আমার নাতিরে ‘হারামী’ কবানা, সাবধান। ও কি করছে হ্যা, কি করছে?” ছালেহা বুড়ির কথায় কান না দিয়ে চেচাতে থাকে, “ ঐ স্কুলে যাস নাই ক্যান? বদের বাচ্চা, তর বাপের নাহাল কামলা দিয়া খাবি, না? আয় তাড়াতাড়ি আয়।” ছালেহা আব্দুল্লার হাত ধরে হ্যাচকা টান দেয়। বাদশার মা গগন কাঁপানো চিৎকার দিয়ে ওঠে, “ কি? আমার পোলা কামলা? আর তুই নাবাবের বেটি না? তুই হালা ফকিননির মাইয়া, ভাগ্যগুণে আমার বাড়িতে আইছস আর বড় বড় কতা কস্। কার খাস, কার পরস? সব আমার কপালের দুষ, নইলে আমার এমুন অইল ক্যান? অরে আল্লাহ! আমার নাতিরে আমার কাছ থিকা টাইন্যা নিয়া যায়, হায় হায় রে।”
বুড়ির খাপছাড়া বিলাপ সবাইকে নিতান্তই বিরক্ত করে। অবশ্য সলিমের বউয়ের মত দু-একজন মজা পেয়ে মুচকি মুচকি হাসে। তবে কেউ ঝগড়া থামতে আগ্রহ করে না। হর-হামেশা, অতি পুরাতন, স্বভাবিক এই ঘটনা কাউকে বিন্দুমাত্র বিচলিত করে না। শুধু বাদশার ভ্রু কিঞ্চিত কুঞ্চিত হয়। সে মায়ের ওপর নিতান্তই বিরক্ত। এই বুড়ি দিনকে দিন উটকো যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাদশার দিন আনে দিন খায় অবস্থা। সংসার চালাতে তার রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়, তার ওপর এই বুড়ি যেন শুধুই বোঝার উপর শাকের আঁটি ছাড়া আর কিছুই নয়। তারপর সংসারে প্রতিদিনকার এই ভীষণ অশান্তি; কিন্তু মা বলে তো আর তাকে এত ছাড় দেয়া যায় না। ছালেহা ঘরে ঢুকে রীতিমতো চেচাতে থাকে। “তোমার মা চায় না আমার পোলা লেখাপড়া কইরা বড় মানুষ হোক। বড় ডাক্তার হোক। বেটি পোলাডারে নষ্ট কইরা ছাড়ল। সারাদিন বইয়া বইয়া গাল-গল্প করা। খাইয়া দাইয়া অরত আর কোন কাম নাই। খালি খাব, আর পাড়া বেড়াব। আর আমি কই দেইখ্যা আমি খারাপ।” ছালেহা কিছুটা দম নেয়। এদিকে বাদশার মা ভয়ানক উত্তেজিত হয়ে দুয়ারে বসে বিলাপ শুরু করে। “ওরে বাদশা তর বউ আইজক্যাই আমারে এত বড় কথা কয়। তর বাপ বাইচ্যা থাকলে আইজক্যা আমার এই হাল অইত নারে....। আমি নাকি খাই আর পাড়া বেড়াই। ওই মাগী, হারাদিন গাই রাখে তর বাপ? গোবর ঘাটে কেডা? তুইত গেলেই তরে গুতা দেয়, লাথ্থি মারে। আমি সক্কালে উইঠ্যা দুধ পানাই, হারাদিন গরু রাখি, ঘাস-পানি খাওয়াই, বাড়ি ঝাড়পুছ করি। ঐগুলান কি তুই করস? খানকি মাগি, অই আমি আমার পুলারতা খাই, তর কি?” বুড়ি থামতেই চায় না। তার মুখে কথা খই হয়ে ফুটে। “এই ঘর, এই বাড়ি কি তর বাপের? তুই আমারে কতা হুনাস ক্যান? ওরে বাদশা তুই চুপ থাকস ক্যান? তর বউ তরে কি যাদু করল রে, তুই চুপ থাকস ক্যান? আমি তোর বাপ মরার পর তরে কত কষ্ট কইরা বড় করলাম, আর আইজক্যাই তর বউয়ের কাছে আমার কতা হুনতে অইল।” কিন্তু বাদশা বরাবরই নির্বিকার, নিশ্চুপ, যুধিষ্ঠির একজন। তার আর এসব ভাল লাগে না। সে সত্যিকার অর্থেই ক্লান্ত।
বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব কোণায় তিন তিনটি তালগাছ। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছগুলো ভর্তি কচি আর সবুজ তাল। কচি তালের ভেতরকার কোষ বাজারে বিক্রি করে বাদশা। এই তাল কাটার জন্য আছে এক বিশেষ ধরনের দা। লম্বা, সরু, ধারালো আর জীবন্ত এই দা’কে বলা হয় ছ্যান। বাদশা ছ্যান কোমরে বেঁধে, দড়ি বেয়ে গাছের মাথায় চলে যায়। ক্যাচ, ক্যাচ করে তালের বাদি কেটে নিচে নামিয়ে দেয় সে। ছ্যান দিয়ে চোখের নিমিষে কচি তালগুলো কেটে কোষ বের করে ফেলে সে, তারপর বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে ওগুলো। প্রতি কোষ এক টাকা। সব তাল সে পাড়ে না, কিছু তাল গাছেই রেখে দেয়। ভাদ্র মাসে ওগুলো পেকে কালো কুচকুচে আর রসে টইটুম্বুর হয়ে যায়। শুরু হয় তালের পিঠা তৈরির ধুম। বিভিন্ন রকম পিঠা, সব মিষ্টি তালের রস দিয়ে। তালের মিঠালো গন্ধে তখন ম-ম করে চারদিক। আবার কচি তালের এই কোষগুলো বেশ নরম, তুলতুলে, মাংশল এবং সুস্বাদু। এই কোষের ভেতর থাকে সুমিষ্টি রস। বাদশা কচি তালগুলোর এক প্রান্ত কেটে ভেতরের কোষগুলোর মাথা বের করে শুধু। একেক তালে তিন থেকে চারটি কোষ পাওয়া যায়। বাদশা এমন ভাবে তালের এক প্রান্ত কাটে, যাতে ভেতরের কোষগুলোর মাথা সামান্য একটু বেরিয়ে থাকে। এতে একজন সহজেই দুই আঙ্গুল দিয়ে কোষগুলো বের করে নিয়ে আসতে পারে।
আব্দুল্লা দ্রুতহাতে কোষগুলো বের করে কপকপ কামড় বসায়। কোষে একটু ছিদ্র হলেই সে মুখ দিয়ে টান মেরে রসটুকুন চুমুক দিয়ে গিলে ফেলে। তারপর আর সে কোষের বাকি সাদা, মাংশল অংশটুকু খাওয়ার আগ্রহ করে না। বাদশা চেচায় “মাইর চিনস্ আব্দুল্লা, খালি পানি খাইয়া কোষগুলান নষ্ট করতাছত না? সর এইহান থিক্যা। তরে নেশা ধরব, তুই বুজস!” তালের শাষে আর রসে এমনই নেশা, বাদশা একবার পচিঁশ ত্রিশ টা কোষ খেয়ে টানা দুই দিন ঘুমিয়ে ছিল। বাদশার মা’র সেদিন কি কান্নাকাটি। “ও বাদশা তোর কি অইলোরে, তুই উঠস না ক্যান?”
বাদশার মা আব্দুল্লার না খাওয়া উচ্ছিষ্ট কোষগুলো কামড়িয়ে কামড়িয়ে খাচ্ছিল। বুড়ির দাঁতে এখনও ভীষণ জোর। বুড়ি কচকচ শাঁষ কামড়ায়, আর ফোটাফোটা রস বুড়ির গাল বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে পড়ে। বুড়ি জিহ্বা দিয়ে ঐগুলো আবার ভেতরে নেবার চেষ্টা করে। ফিরোজার মা হয়ত তালের কোষের ভেজা গন্ধেই এদিকে এসেছিল। তাই হয়ত দেখেও সে প্রশ্ন করে, “ও বাদশার মা কি কর?” বুড়ি কোষ চিবুতে চিবুতে উত্তর দেয়, “ও ফিরোজার মা আও, তালের কোষ খাও।” বাদশার মা ফিরোজার মার হাতে দুইটা তালের কোষ ধরিয়ে দেয়। ফিরোজার মা অতি আগ্রহের সাথে রস শুষে আর শাঁষ চিবুতে থাকে। বাদশার মা আরও দুইটা আস্ত সবুজ তাল ফিরোজার মায়ের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে, “নেও, ফিরোজার মা’ও ফিরোজারে দিও। পোয়াতী মাইয়া, পাইলে খুব খুশি হব। আহারে পোয়াতী মাইনষের কত কিছু খাইতে ইচ্ছা অয়।” “ফিরোজার মা আহাল্লাদে রিতিমত আটখানা হয়ে উঠে, তার মুখ হতেও সমসুর বেরোয় “হগো বাদশার মা, হেদিন কত কইরা একটু তেঁতুল খাইতে চাইল, কও দেহি আমি তেঁতুল কুনে পাই? এহন কি তেঁতুলের মৌরসুম? আর জামাইডাও এক্কেবারে বাদাইম্যা, হারামী। একটা দিন খোঁজ নিবার আহে না।” একটুখানি ব্যস্ত হয় বাদশার মা “ও ফিরোজার মা খারাও আমি আইতাছি।” বুড়ি দৌড়ে রান্নাঘর থেকে বেশ বড় সাইজের একটি জাম্বুরা নিয়ে আসে। ফিরোজার মা জাম্বুরা পেয়ে যারপরনাই খুশি। “আহারে, পোয়াতী মানুষ, ঐ টকটাই তাগো কাছে অমিত্তি।” বলতে বলতে ফিরোজার মায়ের জিহ্বা হতেও জাম্বুরার জন্য দু-এক ফোটা লালা বেরিয়ে আসতে চায়। এতক্ষণ ধরে হয়ত একটু দূর থেকে এই অর্থহীন, অযথাই, একতরফা দেয়া-নেয়া, দেখছিল ছালেহা। এবার সে আর নিজেকে দাবিয়ে রাখতে পারল না। সে অত্যন্ত কঠিন মুর্তি নিয়ে তার মনের ভাব প্রকাশ করে, “হায় আল্লাহ! এমুন বেহায়া নিমক হারামতো কোনদিন দেহি নাই। নিজের পোলার জিনিস তুই মাইনষেরে ডাইক্যা আইনা দিয়া দিবি। নিজের পোলার জন্য তর দরদ নাই। এ কোনেকার পাষাণ, নিমক হারামগো!” বাদশার মা এবার যারপরনাই আগুন। তার ছেলের বউ তাকে আজকেই এই কথা বলবে? “কি কইলি তুই? দুই পয়সার মাগী। ফকিননির বেটি, আমি নিমক হারাম? আমি হারামী? আমি? হায় আল্লাগো.... এইদিন দেহাইতে আমারে বাঁচাই রাখছিলা? ওই বেশ্যা, আমার জিনিস আমি দেই, তর কি? তর বাপের জিনিসরে?” বুড়ি হাঁপাতে হাঁপাতে বলতে থকে “হায়, হায়রে...একদিন আমার কত কি আছিল। মাইনষেরে কত কিছু দিতাম। এহন পারি না। একটু জাম্বুরার ছাতা দিছি তাও আমার কতা হুনতে অয়। হায় হায়গো।” বুড়ি রীতিমতো করুণ সুরে বিলাপ শুরু করে।
এদিকে অবস্থা বেগতিক দেখে আগেই ফিরোজার মা সরে গেছে নিশ্চুপে। আবার ওদিকে বাদশার বউয়েরও বিরাম নেই। “হ তুই তর জামাইরে ফকির করছিলি, আবার এহন তর পোলারে ধরছস। তর হিসাব নাই, তুই কার কামাই খাস? তুই তোর পোলার জিনিস মাইনষেরে বিলাস।” বুড়িও দ্বিগুণ উদ্যমে চেঁচাতে থাকে “ওরে বাদশা তোর কি অইলোরে, তুই কি বশ্ হইলি? তুই তর বউরে কিছু কস না ক্যান?” কিন্তু বাদশা বরাবরের মতই যুধিষ্ঠির, নিশ্চুপ একজন। তার এই সংসার এখন অসহ্য লাগে। এই অবিরাম ঝগড়াঝাটি তাকে ভয়ানক ক্লান্তি ধরিয়ে দিয়েছে। সারাদিন এই হাড়ভাঙা খাটুনির পর এসব তার সহ্যের ওপারে। সে শুধুই চায় মুক্তি। সে না পারে তার মাকে কিছু বলতে, না পারে বউকে কিছু করতে। মাকে বললে সে চেঁচিয়ে সারাবাড়ি মাথায় তুলবে, আর বউকে বললে হাঁড়ি-পাতিল শিকেয় তুলে রান্না গুটিয়ে বসে থাকবে, অথবা বাপের বাড়ি রওনা দেবে। এভাবে চলতে পারে না, নিষ্ফল রাগে তার শরীর শিরশির করে। এইবেলা অবশ্য সে তার মায়ের ওপরেই বেশি বিরক্ত। কি দরকার ছিল মানুষ জনরে ডেকে এনে তাল, জাম্বুরা এইসব দিবার। এসব কি বেশি হয়ে গিয়েছিল? সে কি তার ছেলের অবস্থা বুঝবে না? তার ছেলের যে নুন আনতে পান্তা ফুরায় তাকি তার চোখে পড়ে না? কি করবে বাদশা। এ সংসার তার কাছে অসহ্য যন্ত্রণা। এই বোঝা তার কাছে অতিষ্ঠ। এই চাপ তার কাছে বিষ। এই সম্পর্ক তার কাছে নরক। কিন্তু বাদশা এই বিষ, এই নরক হতে সহজেই মুক্তি পায় না। এইত তার সংসার, তার পৃথিবী। এমনভাবেই তো চলে সবকিছু, এ জগতের নিরবিচ্ছিন্ন নিয়ম।
কালো গরুটা ইদানিং শুকিয়ে যাচ্ছে, পাজরের আর পিঠের হাড়গুলো দিনে দিনে স্পস্ট হয়ে উঠছে। বাছুরটা সারাদিন হাম্বা হাম্বা করে, দুধ খাবার জন্য মায়ের কাছাকাছি ঘোরাঘুরি করে। বুড়ি কখনোই সবটুকু দুধ দহন করে না। বেশ খানিকটুকু বাছুরের জন্য রেখে দেয়। আসলে দুধটুকুত বাছুরের জন্যই; কিন্তু মানুষের কি এত কাণ্ডজ্ঞান আছে? তারা হয় স্বার্থপর, নিজেরাই নিজেদের অধিকার কেড়ে নেয়, আর গরু বাছুরত অনেক দূরের বিষয়। ইদানিং গরুটা অনেক কম দুধ দিচ্ছে। তার ওপর বাছুরটাও বড় হচ্ছে, ওর জন্য আগের চেয়ে একটু বেশি দুধ রেখেই দহন করতে হচ্ছে বাদশার মাকে। ওদিকে জমিরের বাপ এক মাস ধরে ঘরে পড়ে আছে। এ যাত্রায় বোধকরি আর টিকতে পারবে না। বয়সে বাদশার মায়ের চেয়ে ছোটই হবে কিন্তু খুবই হাড্ডিসার আর রোগা শরীর আর তার চাইতে দুর্বল মন। সে তুলনায় বুড়ি অনেক ভাল আছে। এখনো কোন শক্ত ব্যাধি বাঁধিয়ে বসে নাই এবং শরীরও বেশ শক্ত-সামর্থ্য। সে বাটিতে কতটুকু দুধ আলাদা করে রাখে জমিরের বাপের জন্য। বুড়ো মানুষ, সামনে যা দেখে তাই খাইতে মন চায়। বুড়ো মানুষ আর বাচ্চারা প্রায় একই গোছের হয়। তাদের কেউই জিহ্বাকে সামলে রাখতে পারে না। মনে মনে ভাবে বাদশার মা। বুড়ি বাকি দুধটুকু মাটির পাত্রে তুলে আব্দুল্লার হাতে দেয়। “শোন, বেইচ্যা আমার জইন্যে দুই ট্যাকার পান আনিস।” আব্দুল্লাহ শাসন করে “ওই বুড়ি, তরে কই তুই পান খাইস না, পান খাইলে দাতে পোকা ধরে।” বুড়ি খিলখিল করে হাসে। “ওরে ডাক্তর, তোর মায়ের কাছে শুইন্যা যাইস কিছু আনা লাগব নাকি।” বুড়ি আস্তে আস্তে বাটিটা নিয়ে জমিরের বাপের ঘরের দিকে যায়।
এদিকে বাটি হাতে বুড়িকে ঐদিকে যেতে দেখে ছালেহার শরীরে প্রায় আগুন ধরে যায়। বাড়ির সামনের পাশের নিচু জমিতে ডাটাক্ষেত নিড়াচ্ছিল বাদশা। ছালেহা চিৎকার শুরু করে “হয় আমি এই বাড়িতে থাকমু, নয় তুমার মা’য় থাকব। কত্তবড় হারামী, আমার গাইয়ের দুধ ও মাইনষেরে খাওয়ায়.....” ছালেহা বক্তব্য প্রায় শেষও করতে পারে না। বাদশার গগনবিদারী ধমক তাকে মাঝ পেথেই থামিয়ে দেয়। সে একেবারে ভেজা তুলার মতো চুপসে যায়। প্রচণ্ড রাগে বাদশা থরথর করে কাঁপতে থাকে, সে চিৎকার করে ওঠে “হারামজাদী, তোরা আমারে পাগল বানাবার চাস? যা ভাগ এইহান থিকা .. .. ।” ছালেহা অবস্থা বেগতিগ বুঝে দ্রুত প্রস্থান করে; কিন্তু এত সহজে হার মানার পাত্রী ছালেহা ছিল না। বুড়িকে বাড়িতে পেয়ে সে তেলে-বেগুনে ঝলসে ওঠে। “তাইতো বলি দুধের কি অয়, দুধ কই যায়। হালার হারামী বেটি ওর নাগররে দুধ খাওয়ায়। আমার সংসারডা ধ্বংশ করলরে....” বুড়ির ব্যাপারটা বুঝতে কিছুক্ষণ সময় লাগল। এরপর তার পালা শুরু হল। সে এক কুরুক্ষেত্র। বাদশা দূর থেকে বাড়ির চ্যাঁচামেচি শুনতে পায়। বাদশার আর বাড়ির দিকে যেতে ইচ্ছে হয় না। সে হাঁটতে থাকে দূরের শেষ সীমানায় মিশে যাওয়া রাস্তাটার দিকে.. ..
সেদিন ছিল চৈত্রের প্রচণ্ড রুদ্রতপ্ত এক দুপুর। সূর্য শস্যহীন, শুষ্ক মাঠের বুকে আগুন ছড়াচ্ছিল। আগুনে পুড়ে যেতে চায় শুষ্ক মাটির চৌচির বুক, লেপ্টে থাকা ছোট ছোট দুর্বাঘাষ। ঝলসে যেতে চায় ক্ষেতের সরু আইল, সেদ্ধ হতে চলে গভীর গর্তে লুকিয়ে থাকা সাপ, কেচো, পোকা-মাকড়েরা। তবুও এই ভয়ানক আগুনে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয় বাদশাকে। সে কাস্তে দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে মাটি আগলা করছিল। এই শুষ্ক মাটিতে পাম্প মেশিন দিয়ে পানি ছড়ানো হবে, মাটি ভেজানো হবে। নরম সেই ভেজা মাটিতে রোপণ করা হবে হলুদাভ ধানের চারা। সেগুলো পানি পেয়ে ধীরে ধীরে সবুজ হবে। সবুজ থেকে হবে গাঢ় সবুজ, তারা দূরের প্রাচীন কেশবতী রাজকন্যার ঘন চুলের মত শেকড় ছড়াবে ভেজা মাটির নির্মল বুকে, তারা সারা মাঠ সবুজে, শ্যামলিমায় ভরিয়ে দেবে। তারা একদিন ছোট ছোট দানা নিয়ে প্রস্ফুটিত হবে, তারা শস্যল হবে। তারা দিগন্ত বিস্তৃত হাসি আর অতিচেনা মৃদুমন্দ গন্ধে মাঠের বাতাসকে ভরিয়ে তুলবে। তারা শস্যের ভারে নুইয়ে পড়বে। তারা আবার হলুদাভ হবে। সে হলুদ সবকিছুকে ছাপিয়ে যাবে সে এক অন্যরকম বাধভাঙা আনন্দের জোয়ার। সেখানে শুধুই সোনাঝরা ধান আর গরম ভাতের ধূয়াউঠা গন্ধ।
বাদশা অবশ্য এইমুহূর্তে এত কিছু ভাবছে না। তার এখন অতিমাত্রায় উত্তপ্ত অবস্থা। মাথার ঘাম দরদর করে পায়ের দিকে নামছে। কাস্তের একেক কোপ ভূমিকম্প হয়ে তার শরীরের কল-কব্জাকে নাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রচণ্ড উত্তাপে তার শরীর ম্যাজ ম্যাজ করে। সে খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিতে চায়; কিন্তু ভাবে একেবারে কাজ শেষ করেই বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম নেবে। সে মনে মনে ভাবে, বাড়িতে গিয়েই দক্ষিণের কাঁঠালগাছটার ছায়ায় ঠাণ্ডা শীতলপাটি বিছিয়ে সে গভীর ঘুম দেবে। সে দ্রুত হাতে কাস্তে চালায়। গলায় তার প্রচন্ড তৃষ্ণা, ভুলই করেছে বাদশা, পানির বোতলটা নিয়ে আসা উচিৎ ছিল। ভীষন তৃষ্ণায় তার বুকের ছাতি ফেটে যেতে চাচ্ছে, আশেপাশে অতি উওপ্ত গোমোট বিস্তৃর্ন প্রান্তর ছাড়া কোথাও পানির চিহ্ন পর্যন্ত নেই। পিপাসার্ত চৈতের ধূ ধূ প্রান্তর শুষে নিয়েছে সব। বাদশা এখন খরতপ্ত অসহায় চাতক পাখি। দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামে; কিন্তু সূর্যের তেজ একটুও কমে না। সে বাড়তি উচ্ছ্বাসে তখনো আগুন ঝরায়। সবকিছু পোড়ানোর পরেই যেন তার ছুটি।
বাদশা কাজ প্রায় শেষ করেই ফেলেছে, পূর্ব পাশের কোনাটুকুন বাকি আছে শুধু। না আজ আর নয়। সে বাড়ির দিকে দৃষ্টি দেয়। দূরে বাড়ি দেখা যাচ্ছে। ঐত দেখা যায়, তবুও মনে হয় যোজন যোজন দূর। যেন বিশাল পৃথিবীর ঐ প্রান্ত। বাদশার একটুও হাঁটতে ইচ্ছে করছে না। এইখানে, এই জলন্ত আগুনের বুকেই তার শরীর এলিয়ে শুয়ে পড়তে ইচ্ছে করে। না, তাকে ঐটুকু পথ যেতেই হবে। এতটুকুইত দূর। বাড়ির শীতল ছায়া তাকে হাতছানি দেয়। অতপর বাদশা রওনা দেয়, ধীর পায়ে কাস্তে কাঁধে তুলে, হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির পথে। এই পথ যেন আর শেষ হতে চায় না। প্রচণ্ড পিপাসায় তার বুকে তখন পদ্মার নিষ্প্রান বালুর চর। আশেপাশে বিস্তৃর্ন সীমানায় নেই পিপাসা নিবারণের জল অথবা কোন ছায়া। বাদশা দ্রুতবেগে হাঁটে। সে আবারও কুলকুল বেগে ঘামে, তার শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুততর হয়। তার গলায় রাজ্যের শুষ্কতা, পানির জন্য পিপাসা, সামনে গৃহের হীম-শীতল ছায়া, পেছনে শ্রান্তি, ক্লান্তি আর পরিশ্রম। এখানে যদি সে দম বন্ধ হয়ে পড়ে থাকে, তাহলে কী হবে? কী হবে বাকি পৃথিবীটার? কী হবে এই হাড়ভাঙা খাটুনির, এই দুশ্চিন্তার, এই অনাগত ভবিষ্যতের? বাদশা অগোছালোভাবে এসব ভাবে। মাথায় রাজ্যের ভাবনা, আর শরীরে কুলকুল করে নামা ময়লামাখা নোনা ঘামের স্রোত। বাদশা আরও দ্রুত হাঁটে, একটু দৌড়ের মত। এইত বাদশা বাড়ি চলে এসেছে, এই পৃথিবীতে এ তার সবচাইতে পরিচিত আর ভালবাসার জায়গা। আর একটুখানি পরেই তার শান্তির নীড়। কিন্তু যতই সে নিকটতর হয় ততই এক অতি পরিচিত বিচ্ছিরি শব্দের স্রোত তার কানের পর্দায় আঘাত করে। আবার সেই একঘেয়ে চিৎকার-চ্যাঁচামেচি তার কানকে ঝালাপালা করতে চায়। সর্বনাশী অশান্তি তাকে আবারও গ্রাস করতে যায়। কিন্তু সে কেবলই রেহাই চায়, সে চায় না এই চিৎকার, এই শব্দ আর অশান্তি। সে চায় শুধুই একটি শীতলপাটি, দক্ষিনের কাঁঠাল গাছটির ছায়া আর এক নির্ভাবনার ঘুম। কিন্তু তার মা আর বউ কি তাকে সেই শান্তিটুকুও দেবে না? কিন্তু এখন তার শান্তিই বেশি প্রয়োজন। তার চোখে যে রাজ্যের ক্লান্তি, শরীরে যে ভীষন অবসাদ, একটুখানি নিশব্দ ঘুম তো তার অধিকার।
সে তালগাছ তলা থেকে নিঃশব্দে ধারালো ছ্যানটা হাতে তুলে নেয়, অতপর সে হাঁটতে থাকে অনাগত, অজানা শান্তির দিকে। শরীরে আবার তার নোনা গরম ঘামের স্রোত, নিশ্বাসে বৈশাখী ঝড়। বাদশার কালচে শরীর তখন টকটকে লাল, ভীষণ কম্পমান তার চোয়ালের মাংশপেশী। তাকে দেখেই নিশ্চুপ বনে গেছে তার মা আর বউ। উবে গেছে হঠাৎ সব চিৎকার, শব্দ, আর ক্লান্তি। কিন্তু বাদশার মনে তখনো ভীষণ অশান্তি। মাথার মধ্যে তার দৌড়ে চলছে দুইশ’ কিলোমিটার বেগে ছুটন্ত রেলগাড়ি। প্রচণ্ড শব্দ করছে মাতাল গাড়িটা। দুর্ঘটনা না ঘটিয়ে তার যেন ক্ষ্যান্তি নেই। বাদশা সব শেষ করে দিতে চায়, এ পৃথিবীর সব যন্ত্রণা, সব অশান্তি, সবকিছু। সে লম্বা স্যান উঁচু করে কোপ বসায় তার মায়ের উপর। মা’র আজ বুঝতে একটুও দেরি হয়নি। সে শুধু একবার প্রচণ্ড চিৎকার করে ডাকে, “বাদশারে....” ততক্ষণে তার এক কাঁধ নেমে গেছে শরীর থেকে। ফিনকি দিয়ে রক্তের স্রোত বেরিয়ে আসে বাইরে। বাদশার মাথায় তখনো প্রচণ্ড বেগে আগ্রাসী রেলগাড়ির ছুটে চলা। শরীরে তার হাজার ওয়াটের বিদ্যুৎ। সে কুপিয়েই চলেছে একাধারে। অস্ফুট গোংগানি ছাড়া আর কোন শব্দই করে না বাদশার মা। বাদশা কুপিয়েই চলে। তার সারা শরীরে রক্ত। রক্তে ভেসে যাচ্ছে মাটি। এদিকে আগেই দূরে সরে গেছে ছালেহা। বাদশার তখনো সম্বিত নেই। সে তখনো খুঁজে চলেছে শান্তি। ছ্যানটাকে মাথার উপর তুলে পাগলের মতো ঘুরাতে থাকে আর চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। তারপর ধারালো স্যানের শরীর থেকে রক্ত বাদশার কুনুই বেয়ে তার ঘামের সাথে মিশে যায়। বাদশার খানিকটা চেতনা ফিরে আসতে থাকে। কিন্তু সে তখনো কোন শান্তি খুঁজে পায় না। সে অনাগত ভয়ানক অশান্তি আর ভয় সামনের সীমানায় দেখতে পায়। সে ছ্যান হাতে নিয়ে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুটতে থাকে। পেছনে ফেলে রেখে যায় তার অশান্তি অথবা শান্তি, বাদশা কিছুই জানে না। মাথার ভেতরের সেই রেলগাড়ি এখন তার শরীরেও ভর করে। সে পাগলা ঘোড়ার মতো ছ্যান হাতে সামনের সীমাহীন প্রান্তরের দিকে দৌড়াতে থকে। এবার তার শরীরে কোন ক্লান্তি নেই, শুধুই গতি।
চারিদিকে সন্ধ্যার ঘন অন্ধকার নেমে আসে; কিন্তু বাদশার গতি একটুও কমে না। বাদশা দৌড়াতেই থাকে। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত্রি নামে, বাদশা তবুও থামে না। রাত্রি গভীর হয়, অমাবস্যার নিকষ কালো রাত্রি। তখন বাদশা আর পারে না। ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত বাদশা ধপাস করে বসে পড়ে শক্ত মাটির উপরে। এই অচেনা অন্ধকারে বাদশা ঠাওর করতে পারে না কোথায় আছে সে। সে সবকিছু ভুলে যেতে চায়। কিন্তু সর্বনাশী অশান্তি তাকে কিছুই ভুলতে দেয় না, এত অশান্তি কেন পৃথিবীতে? মাথায় তার প্রচন্ড যন্ত্রনা, অনবরত চিনচিনে তীব্র ব্যথা। বাদশার মাথার মধ্যে তখন আরেকজন দৌড়াচ্ছে। এক কম বয়স্ক মহিলা, তার ছোট্ট ছেলেকে বগলদাবা করে প্রশ্চিমের সীমান্তের দিকে যাচ্ছে। পেছনে বিলের ধারে পড়ে আছে তার স্বামীর রক্তাক্ত লাশ, সামনে ভারতের নিরাপদ সীমান্ত। কোলে তার আদরের সন্তান, তার স্বামীর পৃথিবীতে ফেলে যাওয়া একমাত্র চিহ্ন, তার অতি আদরের ছোট্ট শিশু ’বাদশা’। তাকে নিয়ে সে শান্তির দিকে যাচ্ছে। সে দৌড়াচ্ছে, দৌড়াচ্ছে, দৌড়াচ্ছে। বাদশার মাথায় প্রচণ্ড যন্ত্রণা করে, সন্তান কোলে দৌড়াতে থাকা অসহায় মাহিলাটা। ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত, বাদশার বাঁধভেঙে কান্না চলে আসে চোখে। সে ‘মা, মা’ বলে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। কেউ তার কান্না শুনতে পায় না, এই অন্ধকারে কান্না প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে। বাদশা অঝোড় ধারায় কাঁদে। আষাঢ় মাসের উপচে পড়া বর্ষা তার চোখ ভাসিয়ে নিয়ে যায়। বাদশার চোখে তখন বৃষ্টি, তার চোখে ক্লান্তি, তার চোখে ঘুম, তার চোখে শুধুই একটুখানি শীতলপাটি আর কাঁঠালগাছের ছায়া অথবা তাঁর চির চেনা মায়ের অস্পষ্ট মুখচ্ছবি ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সোয়াদ আহমেদ অনেক ধন্যবাদ @ সুমননাহার (সুমি )
সুমননাহার (সুমি ) আপনি অনেক ভালো লিখেন
সোয়াদ আহমেদ অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাল থাকুন @ F.I. JEWEL
এফ, আই , জুয়েল সমাজের অন্তর ফাটা ঘটনা গুলোর কাব্যিক প্রকাশ ।।
সোয়াদ আহমেদ আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ __ ভাল থাকুন । @ শারমিন শায়লা
সেলিনা ইসলাম গল্পের মাঝে গ্রামের সাধারন পরিবারের চিত্র বেশ সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন যা আমাদের দেশের খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিদিনের জীবন ছবি। ভাল লাগল । ধন্যবাদা
বিন আরফান. নিয়মিত হোন আর লিখুন. ভালো ফলাফল পাবেন. আপনাকেও ধন্যবাদ.
সোয়াদ আহমেদ অনেক ধন্যবাদ @ সোশাসি
সোয়াদ আহমেদ এই লেখাটির বিপরীতে আপনার অনন্য সাধারন মন্তব্য আমার যোগ্যতার অতীত। অশেষ ধন্যবাদ, ভাল থাকুন @ বিন আরফান.
বিন আরফান. অসাধারণ গল্পে ভূমিকা করতে আমার ভালো লাগেনা. আর সেই ভাষা শক্তিও আমার নেই. শুভ কামনার সাথে এতটুকুই বলছি চালিয়ে যান. লেখার হাতে যশ আছে. একদিন উপরে উঠার সিড়ি আপনার কলমের কালীই আপনাকে দেখাবে.

০৪ মার্চ - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪