বিষণ্ণ বর্ষা

বর্ষা (আগষ্ট ২০১১)

ম্যারিনা নাসরিন সীমা
  • ৪৭
  • 0
  • ৬৮

( একটি সত্য ঘটনার উপর ভিত্তি করে লেখা এই গল্পটি । তবে এখানে চরিত্র বা স্থানের নাম গোপন করা হয়েছে । কয়েক বছর আগে এ ভাবেই একজন মেধাবী ছাত্রের স্কুলের পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল । বর্ষা এলে এখনো লাবন্যরুপি সেই মা উদাস হয়ে বিষণ্ণভাবে তাকিয়ে থাকে আকাশের পানে । যদি একবার অমির দেখা পায় !)

(১)

আকাশটা যেন আজ অন্যরকম ভাবে সেজেছে । দিনভর মুখ গোমড়া করে আছে ,মাঝে মাঝে প্রচণ্ড তর্জন গর্জন । যেন তার আর অহংকারের শেষ নেই । কিছুক্ষন আগে এক পশলা ভারী বৃষ্টিও হয়ে গেছে । এখনো ঝির ঝির করে গুড়ি গুড়ি বিরাম হীন বৃষ্টি ঝরছে । থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না ।
চারতলার জানালার গ্রিলে মুখ লাগিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়ীয়ে আছে লাবণ্য । তার মুখে অদ্ভুত এক ছায়া খেলা করছে । একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে চোখের পাতা তির তির করে কাঁপছে তার। যেখানে স্বপ্নরা সব জড়ো হওয়ার কথা কিন্তু আজ সেটা অনুপস্থিত । তার চোখের তারায় আজ অন্যরকম বিষণ্ণতা । বৃষ্টির দিনে লাবণ্যর মন এমনিতেই উদাস থাকে কিন্তু আজ কেন জানি তার মন ভীষণ খারাপ লাগছে । মনে হচ্ছে কোথায় যেন কি একটা অশুভ ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে । টসটস করে চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে তার কোনও কারন ছাড়াই ।

খাল্লাম্মা নাস্তা করবেন না ?

না , ভাল্লাগছে না ।ক্ষুধা নেই , এখন আর খাব না ।

কাজের মেয়ে রুমার ডাকে চট করে চোখ মুছে উত্তর দেয় লাবণ্য । দেয়ালের ঝুলানো ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ঘণ্টার কাঁটা চারটার ঘর ছেড়ে পাঁচটার দিকে ঝুলে পড়েছে । দুপুর গড়িয়ে কখন বিকাল হয়েছে খেয়ালই করেনি ।

আচ্ছা শোন ! এক কাপ চা করে আন । বেশি করে দুধ দিবি ।

সাথে বিস্কিট দেব ? আজ দুপুর থেকে তো কিছু খাননি ।

নাহ ! তুই শুধু চা নিয়ে আয় ।



রুমা চলে যায় চা করতে । মেয়েটা এ বাসায় চার বছর ধরে কাজ করছে । কাজ কর্মে যেমন চটপটে তেমনি বিশ্বস্ত । যার কারণে পুরো বাসার ভার তার উপর ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে চাকরিতে যেতে কোনও সমস্যা হয়না লাবণ্যের । রান্নার হাতও ভাল । এখন সে লাবণ্যদের মত শুদ্ধ ভাষায় কথা বলে ।

অফিসের অনেক কাজ জমে আছে । কিন্তু কম্পিউটারে বসতে মন চাইছে না । শরীরটাও কদিন থেকে ভাল যাচ্ছেনা তার । সবসময় একটা ক্লান্তিভাব । আজ সকাল থেকে এত খারাপ লাগছে , অগত্যা অফিসে ফোন করে একদিনের ছুটি নিতে হলো ।

জানালার কাছ থেকে সরে এসে শোবার ঘরে আসে সে । সেখানে পাঁচ বছরের ছেলে অংকন অঘোরে ঘুমুচ্ছে । দুই পায়ের ফাঁকে বালিশ , চুলগুলো এলোমেলো হয়ে কপালে ছড়িয়ে আছে , মুখটা হাসি হাসি দেখলেই কেমন যেন আদর আদর লাগে । ছেলের কপালে আলতো করে চুমু দেয় লাবণ্য । হটাৎ কি খেয়াল হতেই দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে ডাকে রুমাকে ।

কিরে রুমা ? অরি এখনো স্কুল থেকে ফিরেনি ?

নাতো ! খাল্লাম্মা ।
লাবণ্যর হাতে চায়ের কাপ দিতে দিতে বলে ।

হাত দিয়ে চায়ের কাপ সরিয়ে দেয় লাবণ্য ।
কি ব্যাপার ? এখনো এলোনা কেন ছেলেটা ? এত দেরি হওয়ার তো কথা নয়!
অরি , পুরো নাম অরিন্দম চৌধুরী । লাবণ্যর বড় ছেলে । আদর করে সবাই তাকে অরি বলে ডাকে । জিলা স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে । ওকে ঘিরেই লাবণ্যের সব স্বপ্নের আনাগোনা । যেমন মেধাবী, তেমনি গান, আবৃত্তি, বিতর্ক সহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে চৌকস । অন্যদিকে বিনয়ী হিসাবে ছাত্র –শিক্ষক সবার নিকট প্রিয়।

ছোট্ট এই জেলা শহরে লাবণ্য আজ প্রায় দশ বছর ধরে বসবাস করছে । বেসরকারি মোবাইল কোম্পানির একটি প্রতিষ্ঠানে সম্মানজনক পদে চাকরি করে সে। স্বামী ঢাকায় একটা প্রাইভেট কন্সালটিং ফার্মের ইঞ্জিনিয়ার । মাসে বার দুয়েক পরিবারের কাছে আসার সুযোগ পায় । কাজেই চাকরি, সংসার, ছেলেমেয়ের লেখাপড়া সবকিছু একাই সামাল দিতে হয় লাবণ্যকে ।
মাঝে মাঝে ভীষণ একা লাগে । কিন্তু কি আর করার আছে !

ছেলের চিন্তায় অস্থির হয়ে ওঠে লাবণ্য । জিলা স্কুলে আজ বার্ষিক পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান । সেখানে অরিন্দম গান করবে । সকালে সাদা পাজামা পাঞ্জাবী আর লাল ওড়না গলার দুপাশে ঝুলিয়ে যখন বের হয়ে যায় তখন গর্বে লাবণ্যের চোখে পানি চলে আসে ।
কি সুন্দর যে লাগছিল ছেলেটিকে ! মায়ের নজর না লেগে যায় ! আয়াতুল কুরসী পড়ে সে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বিদায় করেছিল । এসব অনুষ্ঠানে লাবণ্য নিজে সবসময় ছেলের সাথে যায় । কিন্তু আজ শরীর খারাপ থাকাতে আজ সাথে যেতে পারেনি ।

বিকাল চারটার মধ্যে তো অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার কথা । এখন সাড়ে ছয়টার বেশি বাজে । নাহ ! লাবণ্য ড্রয়ার খুলে কাপড় বের করে দ্রুত রেডি হয় । রেডি হতে হতে রুমাকে বলে,

শোন, আমি অরির স্কুলে যাচ্ছি । এর মধ্যে যদি ও এসে পড়ে আমাকে ফোন করতে বলিস ।

স্যান্ডেল পায়ে গলিয়ে বের হতে যাবে সেই মুহূর্তে কলিং বেলের শব্দ । কেউ যেন পাগলের মত সুইচটাকে চেপেই চলেছে ।
এ তো অরি নয় ! বুকের মধ্যে এক অজানা আশংকায় কেঁপে ওঠে ।

দ্রুত দরজা খুলতেই বুকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অরি । এটার জন্য প্রস্তুত ছিলনা লাবণ্য । পড়তে পড়তে নিজেকে সামলে নিয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে । কি হয়েছে বাবা ?

অরি মায়ের বুকে মুখ গুঁজে ফুলে ফুলে কাঁদতে থাকে ।

অরি , প্লীজ বাবা ! আমাকে বল কি হয়েছে ?
কাঁদছ কেন ? কেও কিছু বলেছে ? স্কুলে কিছু হয়েছে ?

অরি ফুপাতে ফুপাতেই বলে , মা অমি !

হ্যাঁ বল বল অমির কি হয়েছে ?
ওর মা ফোন করেছিল তুমি বাসায় এসেছ কিনা জানতে । কি হয়েছে ?
ও কি তোমার সাথে ছিলনা ?

না মা । অমি, অমি !
আর বলতে পারেনা ।

ভিতরে ভিতরে অস্থির হয়ে ওঠে লাবণ্য । তার ছেলে তো এভাবে কোনদিনও কাঁদেনা ।

আহ কান্না থামাও ! বল অমির কি হয়েছে ? ধমক দিয়ে ওঠে সে ।

মা অমি পানিতে ডুবে গেছে । চিৎকার করে কেঁদে ওঠে অরিন্দম ।

বল কি তুমি ?

লাবণ্যের মাথার মধ্যে চক্কর দিয়ে ওঠে । ছেলেকে ছেড়ে দিয়ে ধপাস করে পাশের চেয়ারটায় বসে পড়ে । চোখ জ্বালা করে ওঠে । অমির মিষ্টি চেহারা ভেসে ওঠে চোখের সামনে ।

অমি অরির সাথে একই ক্লাসে পড়ে । তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু । সবসময় একসাথেই থাকে । প্রাইভেট পড়ে এক স্যারের কাছে, ক্লাসে সবসময় পাশাপাশি বসে । একদিন না দেখলেই একজন আর একজনের জন্য অস্থির হয়ে ওঠে । লাবণ্য আর চিন্তা করতে পারে না । সে উঠে দাঁড়ায় । অরির হাত ধরে বলে, চল ।

(২)
দ্রুত সিঁড়ি ভেঙ্গে নীচে নেমে আসে তারা । বাসার পাশেই স্কুল । তবুও একটা রিকশায় দুজন উঠে পড়ে ।

জিলা স্কুলে চল ।

লাবণ্য নীরবে চোখ মুছে । কারও মুখে কোনও কথা নেই । সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই । কিন্তু স্কুল লোকে লোকারণ্য । ভিড় ঠেলে এগিয়ে যায় সে ।
হঠাৎ করে থমকে দাঁড়ায় আর আগাতে পারে না ।

চোখ বন্ধ হয়ে আসে । মনে হল এখনই পড়ে যাবে । সামনেই নিথর হয়ে শুয়ে আছে তার অতি পরিচিত অমি ।
শরীরে স্কুল ড্রেস । মুখটা কি ভীষণ সাদা ! ঠোঁট দুটো নীল হয়ে আছে । লাবণ্যের মনে হল মুখে হাত বুলিয়ে একটু আদর করে দেয় । সে ঝুঁকে পড়ে ।মনে হল অমি তাকে ডেকে বলছে ,

আণ্টি, অমি কে প্লীজ একটু বলনা আমার সাথে বাসায় যাবে ।
অমি কখনো তাকে ‘আপনি” বলেনি সবসময় তুমি বলে সম্বোধন করত ।

অমির মা পাথরের মূর্তির মত বসে ছেলের পাশে ।
লাবন্যকে দেখে পাগলের মত জড়িয়ে ধরে ,
ভাবি আমি কি নিয়ে বাঁচব ?
দেখনা ! অমি ঘুম থেকে কিছুতেই উঠছে না । ও তো তোমার কথা শোনে । ওকে বলনা উঠতে ! সারাদিন কিছু খায়নি ছেলেটা !


লাবণ্য বুঝতে পারেনা অমির মাকে সে কি বলে সান্তনা দেবে ?
পৃথিবীতে এমন কোন ভাষা আছে ? যে ভাষায় সন্তান হারা মাকে সান্তনা দেওয়া যায়!

লাবণ্য অমির মাকে গভীর মমতায় বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে । নিজের চোখের স্রোতধারা মায়ের মাথার চুলের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় । অরি আর অমির মধ্যে যেমন গভীর বন্ধুত্ব , তেমনি এই দুই মায়ের মধ্যেও একটা গভীর আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে । একজনের সুখদুঃখে আর একজন সবসময় বন্ধুর মত পাশে এসে দাঁড়ায় ।

একটু ধাতস্থ হবার পর আশেপাশের টুকরো কথা থেকে লাবণ্য যতোটুকু জানতে পারে , সেটা হল আজকের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে ভি আই পি অতিথি রা আসার কথা ছিল । তাই ছাত্রদের উপস্থিতি বাধ্যতা মুলক করা হয়েছিল । না হলে এস.বি.এ নম্বর দেওয়া হবেনা । ফলে বেশির ভাগ ছাত্রই উপস্থিত হয়েছিল সকাল নয়টার মধ্যেই ।

সকাল থেকেই আজ বৃষ্টি । স্কুল মাঠ ভিজে পিচ্ছিল । এর মধ্যেই শামিয়ানা টানিয়ে অনুষ্ঠান চলতে থাকে । ঢাকা থেকে অতিথিরাও চলে আসেন । স্কুল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয় যাতে করে ছাত্ররা বাইরে যেতে না পারে ।

অমি খুব মেধাবী ছেলে । ক্লাসে সবসময় মেধা তালিকায় থাকে । তবে একটু চঞ্চল । অরিন্দম অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকায় সে অন্য বন্ধুদের সাথে ছিল । শিক্ষক সবাই ব্যস্ত । এই সুযোগে কিছু ছেলে পুকুরে নামে ।
স্কুলের পিছনে বিশাল এক গভীর পুকুর রয়েছে ।
ওদের সাথে অমিও পুকুরে নামে । সে সাঁতার জানত তবে খুব ভাল নয় ।

বৃষ্টির মধ্যে অনেক ছাত্র নেমে পড়ে পুকুরে । হৈ হুল্লোড় করে আবার যার যার মত উঠে চলে যায় বাসায় । কেউ আর খেয়াল করেনি যে, অমি আর পুকুর থেকে ওঠেনি ।
এদিকে পাঁচটা বেজে গেলেও যখন দেখলো ছেলে বাসায় ফিরছে না তখন মায়ের মন আর কিছুতেই মানতে চাইল না ।
অমির মা ছেলের খোঁজে চলে আসে স্কুলে । এসে দেখে স্কুল ফাঁকা । শুধু কয়েকজন শিক্ষক আর অরি সহ আরও কয়েকজন ছাত্র মাঠে দাঁড়ীয়ে আছে।

আমির মা অরিকে ডাকে ।
অরি, অমিকে দেখেছ ?

নাতো আণ্টি ? কেন, বাসায় যায়নি ?

না । কোথায় গেল তাহলে ?

এরপর শিক্ষকরা এগিয়ে আসেন । স্কুলের প্রতিটা রুম খুলে দেখা হয় । বন্ধুদের কাছে ফোন করে খোঁজ নেওয়া হয় , কিন্তু কোথাও আর অমিকে খুঁজে পাওয়া যায়না ।

যখন শহরে মাইকিং করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে , এসময় অরির ক্লাসের একটা ছেলে এসে বলে যে অমিকে সে পুকুরে নামতে দেখেছিল । এত সময় পুকুরের বিষয়টা কারো মাথায় আসেনি ।

সাথে সাথে জেলে এনে পুকুরে জাল ফেলা হয় । কয়েকবার জাল টানতেই উঠে আসে অমির স্পন্দনহীন শরীর । দেখে সমস্ত স্কুল জুড়ে কান্নার রোল পড়ে যায় ।

(৩)
অমিদের বাসা থেকে ফিরে থেকে আসতে আসতে অনেক রাত হয়ে যায় ।
অমির মাকে ঘুমের বড়ি খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখে এসেছে ।

অরিন্দম একেবারে চুপচাপ হয়ে গেছে কারো সাথে তেমন কথা বলছে না । শুধু নিজের মনে কি যেন বিড়বিড় করছে । ছেলের অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে যায় লাবণ্য । কিন্তু কিছু বলতে পারেনা ।

গভীর রাত । এখনো অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ছে । লাবণ্যের চোখের সামনে বার বার ভেসে উঠছে অমির নিষ্পাপ চেহারা । তার নানা আবদার । লাবণ্যের কাছে ছেলেটা মায়ের মতই নানা জিনিসের আবদার করত । লাবণ্য ও তাকে কখনো অরির থেকে আলাদা করে দেখেনি ।

কেন এমন হল ? আল্লাহ একজন মাকে কেন সন্তান হারাবার মত কষ্ট দেন ।

লাবণ্য নিজেই সহ্য করতে পারছেনা । অমির মা কিভাবে বেঁচে থাকবে ?
আর শুয়ে থাকতে পারেনা সে । বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় । সারাদিন খাওয়া না , শরীর কাঁপছে । সেই অবস্থায় আস্তে আস্তে ছেলের ঘরে আসে ।

কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছে ছেলেটা । আলতো করে করে গায়ে হাত বুলায় পরম মমতায় । ঘুমের মধ্যেই কেঁপে কেঁপে উঠছে অরির ছোট্ট শরীর ।

লাবণ্য আয়াতুল কুরসী পড়ে অমির মাথায় ফুঁ দেয় ।
ছেলের পাশে কিছুক্ষন দাঁড়ীয়ে কি যেন চিন্তা করে ।

তারপর দরজা খুলে ধীর পায়ে উঠে আসে পাঁচ তলার ছাদে । চারদিকে আলোআঁধারী , ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে । অন্য সময় হলে হয়ত ভয় পেত । আজ কিছুই মনে হলনা । ছাদের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ায় সে ।
বৃষ্টির পানিতে ভিজতে থাকে তার পুরো শরীর । সারাদিনের ধৈর্যের বাঁধ যেন ভেঙ্গে পড়তে চাইছে । ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কাঁদে । কিন্তু গলা দিয়ে
কোনও স্বর বের হয়না ।

আকাশের দিকে তাকায় সে । মনে হল সেখানে অনেক আলো ।
হঠাৎ করে একটা মুখ যেন ভেসে উঠলো আকাশে ।
একি ! সেই মিষ্টি মুখ ,সেই দুষ্টুমি ভরা হাসি । অমি !

ছি ! আণ্টি কান্না করোনা !

বাবা ! তুই কোথায় ?

ব্যাকুল হয়ে আকাশে খুঁজতে থাকে অমিকে লাবণ্য। কিন্তু কোথাও আর পাওয়া যায়না তাকে । বার বার সেখানে ভেসে ওঠে অরির মুখ । লাবণ্য বুঝতে পারে এটা তার মনের ভ্রম । চোখ বন্ধ করে বসে পড়ে শক্ত কংক্রিটে । বন্ধ চোখ দিয়ে অবিরল ধারায় গড়িয়ে পড়ে অশ্রু । বৃষ্টির জল আর চোখের জল একাকার হয়ে ভিজিয়ে দিতে থাকে এক জননীর শোকতপ্ত হৃদয় ।

-০-
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মনির খলজি আপু পুরস্কৃত হবার জন্য উষ্ণ অভিনন্দন ! .... আবারও ভালো করার শুভকামনা রইল আর ভালো থাকুন।
ভালো লাগেনি ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১
বশির আহমেদ সুন্দর খুব সুন্দর আপনার জন্য রইল শুভ কামনা .
খোরশেদুল আলম ছেলে হারা মায়ের কষ্ট, চরিত্র এবং বর্ণনা সুন্দর করে তুলে ধরেছেন ভালো লাগলো।
অবিবেচক দেবনাথ অনেক ভালো লাগল, সতত শুভকামনা।
নিরব নিশাচর ......................ভালো লাগার কোনো উপায় নেই আপ্পি... কষ্টে মনটা ফাকা ফাকা লাগছে... আর চোখের কোণে জমেছে দুই বিন্দু জল !! ৫.
শামীম আরা চৌধুরী ভাল লাগল। ধন্যবাদ
মোঃ ইকরামুজ্জামান (বাতেন) বেদনাদায়ক লেখাটি সুন্দর ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন, অনেক অনেক শুভ কামনা|
M.A.HALIM সত্যি একটা হূদয় বিদারক ঘটনা। অরির আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। সেই সাথে আপনার জন্য রলো অনেক অনেক আর্শিরবাদ। ওহ! ভোট না দিলেত অন্যায় হবে।
প্রজাপতি মন অনেক করুণ কাহিনী। একজন সন্তানহারা মায়ের মতই আকুতি ফুটে উঠেছে লাবন্যের চরিত্রে। খুবই কষ্ট লাগছে।
জুয়েল দেব খুব মন খারাপ হয়ে গেল । সম্ভাবনাগুলো এভাবেই ঝরে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত । অত্যন্ত ভালো লিখেছেন আপনি ।

০৩ মার্চ - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪