অর্থহীন পথচলা

ঐশ্বরিক (মার্চ ২০১৭)

মুশফিক রুবেল
  • ৩৮
রাত খুব বেশি হয়নি তবুও রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা । বিরোধীদলের ডাকা একটানা অবরোধে রাতটা বয়সের তুলনায় একটু বেশিই বুড়িয়ে গেছে । রাতুল শাহবাগের আড্ডা শেষে বাসায় ফিরছে রিক্সায় করে , মাঝে মাঝে টুং টাং ঘন্টা বাজিয়ে দু একখানি রিক্সা যাচ্ছে, গাড়ী ঘোড়া নেই বললেই চলে । চারশ বছরেরে পুরনো শহরে অট্রলিকার জংগলে থালার মতো রুপালী চাঁদ টা নিস্প্রভ চেয়ে আছে । নিজের লেখা কবিটার দুটি লাইন বিড়বিড় করলো রাতুল -
" নীল জোছনার নীল কোথায় ,
রুপালী আলোর বিভ্রম ছড়িয়ে পড়েছে
নিওন আলোর শহরে । "
মাথার মধ্যে ঘুরছে আতাহারের শেষ কথাগুলো - আমরা কি বৃটিশদের শেখানো গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে পেরেছি ? আমরা কি স্বাধীনতা ভোগ করার যোগ্য হতে পেরেছি ? আমাদের মেরুদন্ড কি আগের চেয়ে শক্ত হয়েছে নাকি দুর্বল ? আমাদের পারক্যাপিটা নাকি বেড়েছে , সুখ কি সেই তুলনায় বেড়েছে ? ভূটানে উন্নতির পরিমাপ করা হয় তাদের নাগরিকদের সুখের মাত্রার উপর , জিডিপির পরিমাপের উপর নয় । রাতুল নিজেকে নিজে প্রশ্ন করছে আচ্ছা সুখের মাত্রা মাপে কিভাবে ?মতিঝিলে শাপলা চত্বর পার হওয়ার পর বাসার গলিতে ঢোকার বেশ খানিকটা আগে চেনা কন্ঠে আমার নাম শুনে দাড়িয়ে পড়লাম - সুখলাল চৌহানী একজন ছন্নছাড়া কবি বন্ধু আমার যেন জীবন বোধের খোঁজে নেমেছে সব কিছুকে পাশ কাটিয়ে । ওর সাথে কিছু সময় কাটালে হতাশা গুলো খানিকক্ষণ লুকিয়ে থাকে অন্য কোনখানে ;
" যদিও বিরহ তবুও মিলনের স্বপ্নজালই বুনি,
অশ্রুর কথা থাক , আবেগের কথা শুনি,
সহস্র রাত কেটে যাক ,
দূর আকাশের তাঁরা গুনি । "
বাসার গলি পেরিয়ে হাঁটতে থাকি ষ্টেশনের দিকে , ষ্টেশন টা বেশ ফাঁকা ফাঁকা , ষ্টেশন এর ভিতর ঢুকতে ঢুকতে সুখলাল বললো - আজ গুরুবার , আজ আমি গুরুর সাথে দেখা করতে যাবো । গুরুবার মানে ? সপ্তাহের এই দিনে গুরুর ওখানে গানের আসর বসে । তোকে আজ ছাড়ছি না , তোকেও যেতে হবে , কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল ট্রেনের ভিতরে , ট্রেনটা যেন আমাদের জন্য আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল ,উঠা মাত্রই দুলুনি দিয়ে চলতে শুরু করলো ।
অচিন্তপুর স্টেশনে নামলাম আমরা , রেললাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে পৌছলাম অজপাড়া গাঁয়ে , গ্রামের নাম নিশিপুর । জোনাকীর আলোয় পথ চলতে চলতে হাজির হলাম গুরুর বাড়ী - হ্যাসাক বাতির আলোয় চারিদিকে ফকফকা , মুলিবাঁশের বেড়া উপরে ছোনের চালা নিচে মাটির মেঝে , পাশাপাশি দুইটা ঘর সামনে বিশাল উঠান, শ-খানিক লোকের একটা দল আধ্যাত্নিক গানে মজে আছে ,
" ভাবুক বিনে ভাব জমে না ,
ভাব জাগাইয়া দাও আমার মনে ।"
সামনে ঘরের বারান্দায় মাদুর পেতে বসে আছেন একজন , যার গায়ের রং দুধে আলতা ,আর্যদের মতো টিকালো নাক ,এক রাশ সাদা চুল কাঁধ ছুয়েছে ,পরনে সফেদ পাঞ্জাবী আর লুঙি ; উনাকে ঘিরে বসে আছে চার পাঁচ জন লোক , সুখলাল এগিয়ে যেয়েই উনার পায়ে প্রণাম ঠুকে দিল , তাহলে ইনিই সেই গুরু , আমি দূর থেকেই প্রণাম করলাম , সুখলাল গুরুর পায়ের কাছেই বসে পড়লো আমি হাটি হাটি পায়ে চলে এলাম উঠানের শেষ মাথায় । কাঠের উনুনে বড় বড় তিনটি ডেকসিতে রান্নার আয়োজন চলছে , একটু দূরেই আধো আলো আধো অন্ধকারে দশ পনের জনের একটি দল গোল হয়ে বসে গেছে সিদ্ধি সাধনে , দমে দমে জ্বলছে আগুনের বল , সামনে এগুতেই কেউ একজন বলে উঠলো "জয় গুরু " , একজন কল্কিটা এগিয়ে ধরলো আমার দিকে , আমি দু হাত এক করে ক্ষমার ভঙ্গিতে তা প্রত্যাখ্যান করলাম । উঠান যেখানে শেষ হয়েছে সেখান থেকে শুরু হয়েছে একটি সুন্দর ঘাট বাধানো বিশাল পুকুর , সান বাধানো সিড়ি গুলো নেমে গেছে পুকুরের ভিতরে । একটু আগেও পৃথিবীটা ঘুমিয়ে ছিলো গাড় অন্ধকারে, এর মধ্যে কখন জানি কৃষ্ণ পক্ষের পূর্ণিমার চাঁদটি মেঘের আড়াল থেকে ঘুম ভেংগে জেগে উঠেছে । চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে সমস্ত চরাচর , পুকুরের টলমলে জলে প্রতিফলিত হচ্ছে এক অপার্থিব সৌন্ধর্য , সাদা সাদা মেঘ গুলো ভেসে যাচ্ছে দূরে কোথাও ; আর আমার মাথার মধ্যে প্রতিধ্বনি হচ্ছে আমার প্রিয় কবি জীবনান্দ দাশের ঘোড়া কবিতার কয়েকটি লাইন -
" আমরা যায়নি মরে আজো -
তবু কেবল দৃশ্যের জন্ম হয় ,
মহীনের ঘোড়াগুলি ঘাস খায়
কার্তিকের জোছনার প্রান্তরে ;
প্রস্তর যুগের সব ঘোড়া যেন -
এখনো ঘাসের লোভে চরে,
পৃথিবীর কিমাকার ডাইনামোর পরে । "
কিরে , তুই এখানে এসে বসে আছিস আর আমি তোরে সেই তখন থেকে তন্ন তন্ন করে খুজে বেড়াচ্ছি চারিদিকে , আমি সম্বিত ফিরে পিছনে তাকিয়ে দেখি সুখলাল চৌহানী সাথে একজন ত্রিশ পয়ত্রিশ বছর বয়সের মহিলা । সুখলাল পরিচয় করিয়ে দিলো - এই হচ্ছে রাণুদি আমাদের গুরু বোন , আর এই হচ্ছে আমার বন্ধু রাতুল । রাণুদি দুই হাতের তালু এক করে বললেল "জয়গুরু " , আমি ও পাল্টা জয় গুরু জানালাম । রাণুদি বললেন - ভাই রাতুল তুমি একলা এখানে এসে বসে আছ কেন , তোমার বুঝি খারাপ লাগছে ? না, খারাপ লাগবে কেন, হাঁটতে হাঁটতে এদিকে চলে এসেছি তারপর এই সান বাঁধানো পুকুরটা অনেক ভাল লাগলো তাই কিছুক্ষন বসলাম আরকি । ভাল লাগলে আবার এসে বসো এখন ঘরে চলো , কিছু জল খাবার খাবে , রাতের খাবার খেতে খেতে ভোর রাত হয়ে যাবে । রাণুদি হাত ধরে টানতে টানতে ঘরে নিয়ে যেয়ে নিমকি আর সন্দেশ খেতে দিলেন , খেতে অমৃতের মতো লাগলো , হয়তো ক্ষুধার্ত ছিলাম বুঝতে পারিনি ।
উঠানে গুরু গান ধরেছেন , সম্মুখে তাঁর শিষ্যগণ -
" যে জন হাওয়ার ঘরে ফাঁদ পেতেছে ,
ঘুচেছে তার মনের আঁধার ,
যে দিন ছাড়া নিরিখ বেঁধেছে
হাওয়ার দমে বেঁধে ভেলা
ঊর্ধে নালে সদা চলে
বহু সাধন গুণে কেউ দেখেছে ।।
হাওয়া দ্বারে দম কুঠুরি
মাঝখানে অটল বিহারী
শূন্য বিহার স্বর্ণ পূরী
কলকাঠি তার ব্রম্মদ্বারে আছে ।।
মন ছুটে প্রেম ফাঁসি করে
জ্ঞান শিকারী শিকার ধরে
ফকির লালন কয় বিনয় করে
সে ভাব ঘটলো না মোর
হৃদয় মাঝে ।।
গান শেষে গুরুর হাতে এখন সিদ্ধির কল্কি , দম দিয়ে ছেড়ে দিলেন এক শিষ্যের হাতে , তারপর হাত ঘুরে ঘুরে সুখলালের হাতে , তারপর রাণুদি দম দিয়ে ছাড়লেন আমার হাতে, না বলার সুযোগ পেলাম না , কিন্তু এর ব্যাবহার বিধিও আমার জানা নেই, রাণুদি যেন আমার মনের কথা বুঝলেন , আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিস ফিস করে বললেন - গুরুর সিন্নি ফিরিয়ে দিতে নেই , তাই অগত্যা উনার কোমল হাতেই সিদ্ধিতে দম দিলাম । এরপর গুরুর হাতে আর একটি কল্কি এলো , উনি দম দিয়ে আবার শিষ্যদের মধ্যে ছেড়ে দিলেন , এবারও যথারীতি রানুদির হাতেই দম ফুকলাম । গুরু আবার গান শুরু করলেন -
" চারটি চন্দ্র ভাবের ভূবনে ,
ও তার দুটি চন্দ্র প্রকাশ্য হয় ,
তাই জানে অনেক জনে ।
যে জানে সে চন্দ্রভেদ কথা,
বলবো কি তার ভক্তির ক্ষমতা ,
সে চাঁদ ধরে পায় চাঁদ অন্বেষণ
যে চাঁদ না কেউ পায় গুণে ।"
গান শুনতে শুনতে আমি কখন যেন চাঁদের পাহাড়ে উঠে গেছি বুঝতে পারিনি , এখন আমি পাহাড়ের কোণায় দাড়িয়ে আছি, যখন তখন পা পিছলে নিচে পড়ে যেতে পারি , হাত বাড়াতেই রাণুদি আমাকে শক্ত করে ধরে ফেললেন । আস্তে আস্তে পাহাড়ের কিনারা থেকে সরিয়ে আনলো , তারপর হাত ধরে নিরাপদে ঢালু পথ দিয়ে পাহাড় থেকে আমাকে নিচে নামাতে শুরু করলো । অনেকটা পথ ভেঙে নিচে নামতে নামতে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে , রাণুদির কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটছি আর হাঁটছি , কোথাও কোন জল নেই । নিজেকে ভীষণ তৃষ্ণার্ত মনে হলো , চারিদিকে রুপালী আলোয় ভেসে যাচ্ছে , হঠাৎ করেই মনে হলো চির বসন্তের দেশ থেকে মাতাল হাওয়া বইতে শুরু করেছে , বিশ্বজগতে আমরাই বুঝি সেই আদিম মানব মানবী ;

"এই রাত শুধুই হাওয়ার রাত -
শুষ্ক হাওয়ার রাত ,
এই জল জোছনায় আজ আকণ্ঠ অবগাহন,
কত সহস্র রজনীর বিনিদ্র স্বপ্ন পেরিয়ে
প্রেমময় এই অভিসার ,
কোন বিদর্ভ নগরীর -
ঘুমিয়ে থাকা প্রেম আজ আমাদের শরীরে,
আমাদের অহং , আমাদের চেতনা তাই
উদ্ভ্রান্ত কামনায় মিশে যায় ।
প্রেমময়ীর ঊন্মাষিক বক্ষদ্বয়
বসন্তে মাতাল মরূদ্যান হয়ে উঠেছে,
সমস্ত চরাচরের মধ্যে শুধু কয়েক ফোটা জল জমে আছে-
তার ওষ্ঠে , জিহবায়, মুখের ভিতর আর
গহীন নিম্নভুমিতে,
তাতেই তৃষ্ণা মেটালাম তবে ।

ঘুম ভাঙার পর চারিদিকে তাকিয়ে দেখছি , বুঝতে পারছি না আমি ঠিক কোথায় আছি - ছোনের চাল এর ঘর , মুলিবাঁশের বেড়া আর মাটির মেঝে , আমি শুয়ে আছি বিশাল এক চৌকিতে , চারিদিকে ভীষণ ঝকঝকে পরিষ্কার । এই যে তোমার ঘুম ভেঙেছে , রাণুদি স্নান করে এসেছে , ভিজে চুলগুলো পিঠের উপর ছড়ানো , সাদা শাড়ী নীল পাড় আর কাঁচা হলুদের মতো গায়ের রঙে তাকে দেবী প্রতিমার মতো মনে হচ্ছে । আমি খানিকটা আড়ষ্ট , এটা কি রাণুদির ঘর ? আমি কি রাতে এখানেই ঘুমিয়েছি ? রাণুদি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল , আর সুখলাল ? রাণুদি কিছু না বলেই বাইরে চলে গেল , একটু পরেই আবার ফিরে এসে বললো তোমার খাবার তৈরি হয়ে গেছে প্রায় , হাত মুখ ধুয়ে এসো বলে আবার বাইরে চলে গেল । আমি খানিক্ষণ ঝিম মেরে পড়ে থাকলাম তারপর বাইরে বের হতেই চোখে পড়লো ঘরের কোণে একটি ফুলে ফুলে ভরা একটি শিউলি ফুল গাছ এক্সেন বাসন্তী রঙের শাড়ী পড়ে আছে আর নীচে ও বিছিয়ে রেখেছে যেন একটি বাসন্তী রঙের চাদর , জাফরান রঙা সূর্য টা হলুদ হতে হতে রোদ্দুর ছড়ানো শুরু করেছে । পাশেই আরেকটি ঘর তার পাশে একটি ঝুপড়ির মতো রান্নাঘরের দাওয়ায় বসে আছে এক বৃদ্ধা আর পাঁচ ছয় বছর বয়সের একটি ছেলে । রান্নাঘর থেকে রাণুদি বের হয়ে আসলো , সামান্য দূরেই আঙুল তুলে দেখালো ঐখানে চাপকল , পাশেই টয়লেট আর ঐ পাশে পুকুর , আমি একটু সামনে এগুতেই রাণুদি পিছে পিছে এলো একটা গামছা আর লুঙি হাতে, হাত মুখে ধুয়ে স্নান করে নাও আমি তোমার নাস্তা রেডি করছি । হঠাৎ করেই রাণুদিকে মনে হলো অনেকদিনের পরিচিত , মাকে হারিয়েছি সেই ছোটবেলা , বাবা ও অল্প কিছুদিন পর মারা গেলেন , আমাকে লালন পালন করেছেন আমার দাদু । নাস্তা করে বের হয়ে যাচ্ছি এমন সময় রাণুদি বললেন কোথায় যাচ্ছ , গুরু তো বাড়ীতে নেই , সুখলাল ও গুরুর সাথে গিয়েছে ,ওরা আগামীকাল সকালে ফিরবে , আমি হতবাক হয়ে বললাম তার মানে ? খুব ভোরে সুখলাল এসেছিল তোমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কিন্তু তুমি তখন বেঘোরে ঘুমাচ্ছিলে , গতকাল রাতে যেহেতু তোমার শরীর খারাপ হয়েছিল , তাই আমি ডাকতে নিষেধ করেছিলাম , গুরু তার শিষ্যদের নিয়ে পাশের উপজেলার একটি গ্রামে এক ভক্তের গিয়েছেন দাওয়াতে , সেখানে আজ রাতে গানের জলসা হবে । খানিক্ষন চুপ করে থেকে - আমি তাহলে ঢাকা চলে যাচ্ছি বলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হয়েছি তখন রাণুদি আমার হাত টেনে ধরলো , কেন খুব জরুরী কাজ আছে বুঝি ? কেন যেন আমার সারা শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেল , এক জোড়া মায়াবী চোখে আমি যেন স্থির হয়ে গেলাম , আমি বাক রুদ্ধ হয়ে পড়েছি ,আমার সারা শরীর ঝিম ঝিম করছে , পড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে রাণুদি আমাকে ধরে ফেললো , নিয়ে গিয়ে আমাকে বিছানায় শুইয়ে দিলো , আমি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম ।
ঘুম থেকে উঠে দেখি রাণুদি আর বাচ্চা ছেলেটা আমার মাথার কাছে বসে রয়েছে, চোখ মেলতেই রাণুদি কপালে হাত রেখে বললো এখন জ্বর নেই , উঠে খাওয়া দাওয়া করে নাও , দুপুর পেরিয়ে বিকাল হয়ে গেছে , আজ আর তোমার যাওয়া হবে না, এখানেই থেকে যাবে । খাওয়া দাওয়া শেষে আমি বাইরে বের হলাম , হাঁটতে হাঁটতে বাড়ীর বাইরের দিকটায় চলে আসলাম , বাড়ীর বাইরের দিকটায় ঠাই দাড়িয়ে আছে একটি অতিকায় কৃষ্ণচূড়া গাছ , নীচেটা রাঙা হয়ে আছে ফুলে ফুলে , একঝাক টিয়া উড়ে যেয়ে বসলো একটি ফুলে ফুলে ভরা একটি শিমুল গাছের মগডালে । বাড়ীটি গ্রামের এক প্রান্তে - বাড়ীর একপাশে বিস্তীর্ণ বাঁশ বাগান তার ঐ পাশে কয়েকটি বাড়ী আর অন্যপাশে একটি মাঠ তারপর ছবির মতো সুন্দর একটি নদী , কাঁশফুলে ভরে আছে নদীর দুকূল , শরৎ এর আকাশে সাদা সাদা মেঘ গুলো ভেসে যায় দূরে কোথাও , রাণুদির কথায় আমার ঘোর ভাঙল , আমি জানতাম তুমি এদিকেই আসবে , জ্বি মানে এই দিকটা আসলেই অনেক সুন্দর । "জ্বি" , "আজ্ঞে" এসব ছাড়তো , তুমি এমনভাবে কথা বলো যেন আমি তোমার মস্ত বড় গুরুজন । আমি প্রসংগ পাল্টালাম , বাড়ীতে যে বাচ্চা ছেলেকে দেখলাম ও কে ? ও আমার ছেলে । ওর বাবা কোথায় ? ওর জন্মের দেড়বছর পরই সে মারা গেছে কলেরায় । ও .. , সরি । এতে সরি বলা লাগবে না । আর ঐ বৃদ্ধা ? উনি আমার দিদা , মা মারা যাওয়ার পর উনিই আমাকে বড় করেছে , বাবার গানের দল ছিলো , একবার সে ভাটি অঞ্চলে গান গাইতে যেয়ে আর কখনো ফেরেনি । আমার ভাগ্যটা দেখ - শিশু বয়সে মা , বাবাকে হারিয়েছি , অল্প বয়সেই বিধবা হয়েছি । আমার বয়সটা কি খুব বেশি মনে হয় তোমার কাছে ? না , তা মনে হবে কেন । তাহলে তুমিও আমাকে তুমি করে বলো । জ্বি , আচ্ছা । আবার জ্বি আচ্ছা ? আমি খানিকটা অসস্থিতে ভুগে চোখ নিচে নামিয়ে ফেললাম ।
রাণুদি বললো চলো ঐ দিকটায় গিয়ে বসি -একটি পুরানো অশ্বথ গাছ , শিকড়ের অর্ধেক টা বেয়ে চলে গেছে নদীটার খানিক ভিতরে , নদীতে পা ঝুলিয়ে দিয়ে বসার জন্য অনেক সুন্দর একটি জায়গা । নদীতে পা ঝুলিয়ে দিয়ে দুজনে পাশাপাশি বসে আছি , কত সুদীর্ঘ কাল নৈশব্দের প্রহর গুণে চলেছি জানিনা , দূর আকাশের মেঘের ভেলায় ভর করে পাড়ি জমিয়েছি কত দূর তাও জানিনা , মাথার ভিতর গেঁথে চলেছি নতুন কোন কবিতার খাপ ছাড়া কিছু লাইন -
" নীল আকাশ জুড়ে সাদা মেঘের-
ভেলায় তোমার স্বপ্ন গুলো ভেসে বেড়ায় জানি,
প্রজাপতির ডানায় ভর করে
তোমার অলস দুপুর গুলো,
তুমি নক্ষত্রের রাতের মতো জ্বল জ্বল করো
সহস্র আলোক বর্ষ দূরে,
তবুও আমার শ্রাবণ বেলায়
বৃষ্টি ভেজা তোমাকে চাই ।"

দুটি হাতের স্পর্শে স্বম্বিত ফিরে পেলাম, কি হে কবি ! দূরে তুমি কি খুজে চলেছ , আমি যে একজন মানুষ তোমার পাশেই বসে রয়েছি তুমি বোধ হয় তা ভুলে গিয়েছ । না , মানে কি বলবো ? কি বলবে সে কি আমার শিখিয়ে দিতে হবে ? ক্ষণকাল চুপ থেকে হঠাৎ রানুদি আমার একটি হাত দুহাতে চেপে ধরে তার কোলের উপর রাখলো , তারপর বললো - গতকাল রাতে তুমি কি কি করেছ সেটা কি তুমি জান ? তোমার কি কিছুই মনে নেই? জিজ্ঞাসা করলাম "মানে ?" । তুমি আমাকে তছনছ করে দিয়েছ , গতকাল রাতে তুমি ভীষণ তৃষ্ণার্ত হয়ে উঠেছিলে , আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি , তাই তোমার জন্য বরফগলা জল হয়ে গিয়েছিলাম , বলতে বলতে সিক্ত হয়ে উঠেছে রাণুদির দুচোখ । গোধূলীর গোলাপী আলোয় মায়াবী চোখ দুটি থেকে যেন গোলাপী মুক্তা ঝরছে , এতো সুন্দর বোধ হয় আমি কখনো দেখিনি , অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছি ঐ অনিন্দ্য সুন্দর মানবীর দিকে । আগে অনেক শুনেছি ঈশ্বরের সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টি হচ্ছে মানবী কিন্তু আজ তা হৃদয় দিয়ে অনুভব করলাম । ইচ্ছে করছে ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ব্যারিগেড দিয়ে আজকের এই গোধূলীকে ধরে রাখি অনন্তকাল , কিন্তু বুকের ভিতর খচখচ করে উঠলো লক্ষ্মীপেঁচার ডাকে , অনাহুত কোন ভয়ে । সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে , আমরা দুজন নিশ্চুপ হাঁটছি , সহসাই নৈশব্দের বাঁধন ছিড়ে রাণুদির দুহাত জড়িয়ে ধরে বললাম - আমাকে ক্ষমা করে দিন । ক্ষণকাল চুপ করে থেকে বললো , না তোমার কোন দোষ নেই , সব ভুল আমার ।
বাড়ীতে ফিরে দেখি সুখলাল বসে রয়েছে বারান্দায় । আরে সুখলাল , তুমি এখানে যে , তোমার না গুরুর সাথে আলমডাঙ্গা থাকার কথা ছিলো ? হ্যাঁ রাণুদি থাকার কথা ছিল কিন্তু হঠাৎ ঢাকায় কাজ পড়ে গেল , তাই রাতুলকে নিয়ে ঢাকায় চলে যাবো । কি বলছো তুমি , যেতে হয় তুমি একলা যাও , ওর শরীরটা ভালো না , সকালে ঘুম থেকে উঠার একটু পরেই আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে , শরীর পুড়ে যাচ্ছিলো প্রচন্ড জ্বরে , বিকালেই ও বিছানা থেকে উঠেছে , কি রাতুল বলো যে তোমার শরীর খারাপ না ? রাণুদি যেন আমার সম্মতি চাইছে , আমি শুধু মাথা নাড়ালাম । আজ তুমি কোথাও যাবে না , এখানেই থাকবে ,ঠিক আছে ? আমি যেন ঘোরের মধ্যে থেকে বললাম " জ্বি আচ্ছা , ঠিক আছে " । সুখলাল বললো 'জ্বি আচ্ছা ' মানে কি , তুই অসুস্থ সে জন্য ঢাকা আরো তাড়াতাড়ি যাওয়া দরকার , ওখানে ডাক্তারের কাছে তোর চিকিৎসা হবে । রাণুদি তুমি আর রাতুলকে বাঁধা দিও না , ওকে আমার সাথে ঢাকা যেতে দাও , বাড়ীতে ওর বৃদ্ধ দাদা ওর জন্য অপেক্ষা করছে । রাণুদি আমার দিকে কেমন যেন স্থির দৃষ্টিতে তাকালো , আমি নিশ্চল হয়ে গেলাম , আমার কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে না , আজীবন আমার এই মহিলার সাথে থাকতে ইচ্ছে করছে , যেন ওকে ছাড়া আমি একদিনও থাকতে পারবো না , সৃষ্টির শুরু থেকেই যেন আমি ওর সাথে ছিলাম । সুখলাল , আমি কোথাও যাবো না , আমি এখানেই থাকবো । রাতুল , তোর দাদু অসুস্থ , তোর ফোন সুইচড অফ পেয়ে আমাকে ফোন করেছিলেন , তাই ঢাকায় যাওয়া তোর জন্য জরুরী । কতক্ষণ বিহবল হয়ে তাকিয়ে থাকলাম সুখলালের দিকে , বাধ্য হয়েই বিদায় নিতে হলো রাণুদির কাছ থেকে , আসার সময় বলে আসলাম - আবার আসবো আমি ।
গ্রামের পথ ধরে হাটা শুরু করলাম , হাটতেছি আর হাটতেছি পথ যেন আর শেষ হয় না , খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে দাদুর জন্য । আকাশে কৃষ্ণ পক্ষের চাঁদ উঠেছে , পরিষ্কার আলোয় পথ দেখতে দেখতে সামনে এগুচ্ছি , আরেকটু এগুতেই বড় রাস্তায় এসে পড়লাম , সামনেই স্ট্যান্ডে দাঁড়ানো একটি ফাঁকা টেম্পুতে উঠে পড়লাম । টেম্পু ছাড়ার কিছুক্ষণ পর সুখলাল বললো , সরি বন্ধু তোকে মিথ্যে বলার জন্য , তোর অসুস্থতা নিয়ে আমি মিথ্যে বলেছি , ঐ মুহূর্তে অন্য কোন উপায় খুজে পাচ্ছিলাম না , এরকম নির্দয় মিথ্যে বলার জন্য আমি আসলেই দুঃখিত । আমরা এখন ঢাকা যাচ্ছি না আমরা যাচ্ছি গুরুর কাছে , গুরুর নির্দেশেই আমি তোকে নিতে এসেছিলাম , না হলে তুই অনেক বড় ঝামেলায় পড়তে যাচ্ছিলিস , বাকিটা গুরুর কাছে শুনিছ । সারাপথ দুজনের মধ্যে আর কথা হলো না । মনটা বড় উচাটান লাগছে রাণুদির জন্য , বেচারী খুব করে চাচ্ছিলো আমি যেন থাকি । আমার ও মা বাবা মারা গেছে ছোটবেলায় ওর ও তাই , এতো মায়া আমার প্রতি আগে কেউ কখনো দেখায়নি । প্রায় ঘন্টা খানিক পর আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌছলাম । উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা একটি বাড়ী , বাড়ীর ভিতরে একটি বটবৃক্ষের নীচে পাকা সান করা মেঝে স্টেজের মতো করে করা , প্রচুর লোক সমাগম হয়েছে , গানের পর গান হচ্ছে , আমার কিছুই ভালো লাগছে না , ভীষণ অস্থির লাগছে । গান বাজনা হতে হতে মাঝ রাত হয়ে গেছে , বড় বড় ডেকচিতে খাবার রান্না হয়েছে , গুরুর ইশারায় সুখলাল আমাকে উনার কাছে নিয়ে গেলো , হাত দিয়ে ইশারা করে উনার পাশেই আমাকে বসতে বললেন , সবার উদ্দেশ্যে গুরু বললেন এটাই আজকের আসরের শেষ গান , গুরু গান শুরু করলেন -
" কোন রসে কোন রতির খেলা ,
জানতে হয় এই বেলা,
সাড়ে তিন রতি বটে ,
লেখা যায় শাস্ত্র পাঠে ,
সাধ্যের মূল তিন রসে ঘটে
তিনশ ষাট রসের বালা ।
- - - - - - - - - - - - - - -
- - - - - - - - - - - - - - -
রস রতির নাই বিচক্ষণ
আন্দাজে করি সাধন ,
কিসে হয় প্রাপ্ত ধন ,
ঘোচে না মনের ঘোলা ,
আমি উজাই কি ভেটেল পড়ি
ত্রিপিনীর তীর নালা ।
শুদ্ধ প্রেম রসিক হলে
রসরতির উজান চলে
ভিয়ানে সদ্য ফলে অমৃত মিছরিওলা
লালন বলে , আমার কেবল
শুধুই জল তোলা ফেলা ।।
গান শেষ হয়ে গেলে খাওয়ার আয়োজন শুরু হয়ে গেলো , গুরুর কাছে আমি , সুখলাল আর অপরিচিত দুইজন বসে আছি , গুরু আমাকে বাদে সবাইকে চলে যেতে বললেন । গুরু আমার কাঁধে হাত রেখে বললেন - জানি তোমার মনটা অনেক খারাপ লাগছে তারপর খানিক্ষণ চুপ করে থাকলেন , আবার বলতে শুরু করলেন - তুমি এমন একজনের পাল্লায় পড়েছ যে কিনা তান্ত্রিক সাধন করে । আমি জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কার কথা বলছেন ? গুরু আবার চুপ করে গেলেন , ভাসা ভাসা চোখ দুটি চেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন , তারপর বললেন - আমি রাণুর কথা বলছি , তুমি ওর সংস্পর্শে থাকলে এলোমেলো হয়ে যাবে , তুমি কোনভাবেই সহ্য করতে পারবে না , ধীরে ধীরে তুমি বোধ শক্তিহীন হয়ে পড়বে , এতটাই শক্তি ওখানে যে তুমি অসাড় হয়ে যাবে , তার কিছু নমুনা গতকাল রাতে এবং আজ সকালে অনুভব করার কথা । গুরু আবার মৌন হয়ে গেলেন , একটুপরে আবার বলতে শুরু করলেন - কিছুদিন পরে সে ডাকিনী বিদ্যা ও চর্চা ও শুরু করবে , ও এক তন্ত্রসাধিকার পাল্লায় পড়েছে , আমার নিষেধ শর্তে ও সে গোপনে চর্চা করে যাচ্ছে । ক্ষনিক থেমে আবার বলে চললেন - বাউলদের সাধনার দুটি রীতি , একটি হলো জ্ঞানমার্গীয় যোগ সাধনা আরেকটি হলো মিথুনাত্নক যোগ সাধনা । জ্ঞানমার্গীয় যোগ সাধনা হলো সুফিদর্শন ও ব্রম্মচারী দর্শন থেকে সৃষ্ট আর মিথুনাত্নক যোগ সাধনা হলো সহজিয়ামত এবং তান্ত্রিক সাধনার মিশ্রন , এই মিথুনাত্নক সাধনে বাউলরা দেহবাদী আধ্যাত্নিক সাধনা করে , নর-নারীর দৈহিক মিলনকে ধর্ম সাধনার পথ হিসাবে ধরা হয় । সে যা হোক , আমি জ্ঞানমার্গীয় সাধনা করছি , আমার গুরুর কাছ থেকে আমি দুটি রুপই শিক্ষা গ্রহণ করেছি , তবে মিথুনাত্নক সাধনের আমি কেবল তাত্ত্বিক রুপটাই জানি , আমি যেহেতু ব্রম্মচারী তাই ঐ পথটা আমার নয় , তবে ঐ পথটা অনেক বিপদসংকুল পথ , পা পিছলানোই ঐ পথের ধর্ম । যারা ভুল পথে এগোয় তাঁরা তন্ত্রমন্ত্র তারপর ডাকিনীবিদ্যার দিকে ঝোকে , শয়তানের উপসনা শুরু করে , তখন আর মূল রয় না খাঁটি , যদিও সাধনার অনেক উচ্চস্তরে যেয়ে ভাল ,মন্দের আর পার্থক্য থাকে না কিন্তু শুরুতে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ । অনেকেই আবার দেহ সাধনের নামে শুধুই অবৈধ কামচর্চা করে , দেহতত্ত্ব সেই অর্থে বিপদজনক ও ভয়ঙ্কর । তোমাকে এতগুলো কথা বলার কারণ হচ্ছে তুমি আমার আসরে গান শুনতে এসে এক অজানা বিপদের সম্মুখীন হয়েছ , যা তুমি এখন পর্যন্ত অনুধাবন করতে পারো নাই । আমি দেহতত্ত্বের নিগুড় গানগুলো সাধারণত করি না , কিন্তু আজকের আসরের শেষ গানটি ছিল দেহতত্ত্বের একটি নিগুড় গান , যা তোমাকে শোনানোর জন্য গাওয়া হয়েছে , গানটির ভেদ ভালো করে জেনে নিও , আর আমি চাই না তুমি আর ঐ পথে যাও । গুরু তার শেষ কথাগুলো বলে চলে গেলেন- দর্শন জানো , ধর্মকে বোঝ , ঈশ্বরকে চেন ।
ভোরের আলো ফুটতেই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম , সূর্য টা ধীরে ধীরে অন্ধকার ভেদ করতে শুরু করেছে । হাঁটতে হাঁটতে মনে হলো দিনের সুন্দর সময় সূর্য উদয় এবং সূর্য অস্তের সময়







আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কাজী জাহাঙ্গীর গল্প হিসাবে নেওয়া যায় ‍যদিও উপপাদ্য ‍বিষয়ের মধ্যে নেই, বেশ লাগল কারন আপনি বোঝালেন গুরুর আড্ডা মানে ঐসব...তবে গুরুর শেষের উপদেশ গুলো কিছুটা ইমেজ রক্ষার কাজ করেছে । অনেক শুভকামনা আর আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
আহা রুবন বেশ যত্ন করে লিখেছে বোঝা যায়, তবে গল্প দানা বেঁধে ওঠেনি।
ধন্যবাদ , মূল্যবান মতামতের জন্য ,আসলে লিখছিলাম একটি উপন্যাস এটি তার অংশ , কিন্তু বউ বললো এটাকে উপন্যাসের অন্য অংশের সাথে না টানার জন্য , সে চাইছিল এটা ছোট গল্প হোক । আমার কাছে এটা অপূর্ণ লেগেছিল , তবুও অন্যের পছন্দ যাচাই করতে চেয়েছিলাম , thanks again
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী বেশ তো। খুব ভালো লিখেছেন। শুভকামনা ও ভোট রইলো। আর সেই সাথে আমার পাতায় আমন্ত্রণ রইলো।

০১ মার্চ - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪