৭১ সাল। রণক্ষেত্রে পরিণত সারাদেশ,
বাঙালির ঘরে আর্তনাদ শুধু, দুর্দশার নেই শেষ।
অসহ্য পর্যায়ে পৌঁছেছে হায়েনাদের নিপীড়ন,
নিরীহ কতজনে হারাল জীবন।
কত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট জ্বলেপুড়ে ছারখার;
জীবনে নামল ঘুটঘুটে অন্ধকার।
তরুণ আলমগীর বলিল মায়েরে ডাকি,
‘যুদ্ধে যাচ্ছি চলে;
রেখো না দাবি আমার ওপর, আঁখি
জল মুছে যেতে দাও বিদায়কালে।’
‘বিদায় বলিস না রে খোকা আর,’
এ কথা বলে মায় ছেলেরে ধরে,
বান বয়ে গেছে দু’নয়নে তাঁর-
বিলাপ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
মাকে ফাঁকি দিয়ে আলমগীর এলো যুদ্ধের ময়দানে,
জীবনের মায়া ছেড়ে লিপ্ত তুমুল রণে।
কিছুদিন চলে ঠিক এমনিভাবে,
দেশের জন্য নেমেছে যুদ্ধে সবে।
একদা আলমগীর যুদ্ধ করছে, সাথে দুই সাথী;
হঠাৎ একটা বুলেট গেল তার বক্ষে গাঁথি।
বলতে পারল না সে কিছু আর,
মাটিতে লুটিয়ে পড়ল নিথর দেহ তার।
বাংলার মাটি হলো রক্তে লাল,
ছিঁড়ল জীবন তরীর পাল।
ছেলের লাশ যখন এলো মায়ের সামনে,
বারবার মা চায় ছেলের মুখপানে।
পিপাসায় কাতর মন করছে হাহাকার,
অন্ধের নাড়ি তাকে ফাঁকি দিয়েছে এবার।
এখনও মা কাঁদে সমাধি পাড়ে বসে,
ঐ বুঝি তাঁর আলমগীর আসে।
কত আলমগীরের বিনিময়ে হলো দেশ স্বাধীন
তা-র কি ইয়ত্তা আছে?
ওঁরা বেঁচে ছিল, বেঁচে আছে; বেঁচে থাকবে চিরদিন
বাংলার শ্যামল প্রকৃতি আর মানুষের মাঝে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এস এফ শামীম হাসান
কবিতাটি আত্মত্যাগের দর্শনকে মানবিক বেদনার মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছে। এখানে স্বাধীনতা কোনো বিমূর্ত ধারণা নয়, বরং মায়ের অশ্রু, সন্তানের রক্ত এবং নিঃস্বতার মধ্য দিয়ে অর্জিত এক কঠিন সত্য। আলমগীর ব্যক্তিমানুষ থেকে চিরন্তন প্রতীকে রূপ নেয়—যেখানে মৃত্যু শেষ নয়, বরং স্মৃতি ও চেতনার মধ্যে অবিনশ্বর উপস্থিতি। কবিতাটি স্মরণ করিয়ে দেয়, ইতিহাসের মহত্ত্ব গড়ে ওঠে নীরব ত্যাগের ওপর, আর স্বাধীনতার মূল্য কখনোই সম্পূর্ণ শোধ হয় না।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।