দাদির ভালোবাসা

ভালবাসা (ফেব্রুয়ারী ২০২৫)

হুসাইন রিহান
  • 0
  • 0
মায়ের পরে আপন করে
সবচে বেশি আমায়,
আগলে রেখে রাখলে বেঁধে
অভেদ্য এক মায়ায়।
ছোট্ট থেকেই বেড়ে ওঠা
তোমার শীতল ছায়ায়,
তোমার ছোঁয়া লেপ্টে আছে
আমার সারা কায়ায়॥

সন্ধ্যে হলে তোমার দোরে
ধাক্কা দিতাম জোরে,
তোমার কাছে ঘুমোবো তাই
কাঁদতাম সন্ধ্যে ধরে।
বড় ভাইকে পাশে নিয়ে-
তোমার ছোট্ট ঘরে,
আঁচল নেড়ে ঘুম পাড়াতে
আমাকে পর করে॥

অভিমানে বুক ফুঁপিয়ে
বালিশ কামড়ে ধরে,
মায়ের কাছে নালিশ দিতাম
কাঁপা কাঁপা স্বরে।
সব অভিমান ভুলে গিয়ে
পরদিন আবার ভোরে,
পাড়ায় পাড়ায় ঘুরতাম আমি
তোমার কোলে করে॥

সকাল হলে ফুল কুড়িয়ে
আনতে ভরে ডালা,
শখের বশে গেঁথে দিতাম
লেবু ফুলের মালা।
যখন তুমি ভাত মাখিয়ে
আনতে ভরে থালা,
মজার ছলে তোমার হাতে
জড়িয়ে দিতাম বালা॥

তখন তুমি মুচকি হেসে
ভীষণ আদর করে,
আমার গালে চুমু দিতে
কিংবা কপাল ভরে।
মুখে তুলে ভাত খাওয়াতে
বসে রান্নাঘরে,
খাবার শেষে মুখ মুছিয়ে
দিতে আঁচল ধরে॥

আমি যখন ছুটে যেতাম
খেলতে সকালবেলা,
পিছন থেকে বলতে জোরে-
এখন কিসের খেলা?
ভাই গো আমার বই নিয়ে বস
আর করিস না হেলা,
জানতে হলে, বুঝতে হলে
পড়তে হবে মেলা॥

দুপুর হলে খুঁজতে আমায়
সারা পাড়া ঘুরে,
‘ভাই গো’ বলে ডাকতে আমায়
স্নেহমাখা সুরে।
খুঁজে ঠিকই পেতে তুমি
থাকতাম যতই দূরে,
আসার পথে কুড়ানো ফল
দিতে মুখে পুরে॥

বলতে তুমি, বেশ হয়েছে,
এবার বাড়ি চলো,
শুনছো না কি দুপুর বেলার
আজান শুরু হলো?
তখন কি আর তোমার কথা
লাগতো আমার ভালো?
তবুও যেতাম তোমার সাথে
মুখটা করে কালো॥

গোসল করতে যেতাম যখন
ভরা পুকুর ধারে,
ডুবে যাওয়ার হুঁশিয়ারি
করতে বারেবারে।
সাবান মেখে দিতে আমার
হাতে মুখে পায়ে,
গোসল শেষে তেল মাখিয়ে
দিতে সারা গায়ে॥

দুপুর বেলায় খাওয়ার পরে
আবার যেতাম চলে,
সুযোগ বুঝে বাড়ি থেকে
বেরুতাম না বলে।
পথের ধারে খালেক চাচার
শুকনো পুকুর তলে,
গোল্লা ছুট আর জুতো চুরি
খেলতাম দলে দলে।

বিকেল বেলার আজান হলে
খুঁজতে লাঠি নিয়ে,
মক্তবে না গেলে তখন
মারতে লাঠি দিয়ে।
আদর-শাসন-স্নেহ সবই
পেতাম তোমার কাছে,
যেথায় আমি, সেথায় তুমি-
থাকতে স্বদা পাছে॥

হঠাৎ, একদিন রাত্রি বেলা-
গেলে তুমি মরে!
চোখের জলে রাখলাম তোমায়
অন্ধকার ওই ঘরে!
বুকটা আমার শুন্য হলো-
কিছুতেই না ভরে;
তোমার আদর-ভালোবাসা
ভুলব কেমন করে!!

খোদার কাছে আর্জি আমার-
“ওগো আমার প্রভু,
সেই যে গেছে দাদি আমার,
দেখিনি আর কভু!
ভালো রেখো তাঁকে তুমি-
প্রিয় করে নিও,
বিচার দিনে ক্ষমা করে
জান্নাত তাঁকে দিও!”
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

ভালোবাসা না থাকলে পৃথিবী অশান্ত, উত্তাল হয়ে যেত। সৃষ্টিকর্তার অন্যতম একটি গুণ ভালোবাসা, যা তিনি সৃষ্টিজগতের মধ্যে অতি সামান্য পরিমাণে দান করেছেন। আর তাতেই একজন মানুষ অপর আরেকজন মানুষকে এতটা ভালবাসে। পিতা-মাতা সন্তানকে, শিক্ষক ছাত্রকে, স্বামী তার স্ত্রীকে এবং স্ত্রী স্বামীকে- এছাড়াও অবলা প্রাণীর প্রতি দুর্বলতা ভালোবাসার এক অনন্য নিদর্শন। তবে, আমি এমন একজন মানুষকে নিয়ে লিখেছি, যিনি পিতা-মাতার পর সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। হ্যাঁ, আমার দাদিকে নিয়ে লিখেছি আজ। এটা কোনো কাল্পনিক লেখা কিংবা অভিনয় নয়; বাস্তব ভালোবাসা। লিখতে লিখতে অঝোরে কেঁদেছি আমি।

১৭ জানুয়ারী - ২০২৫ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্বাধীনতা”
কবিতার বিষয় "স্বাধীনতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারী,২০২৫