ঘূর্ণিজয় হালিমডাক

ঘূর্ণিঝড় (জুলাই ২০২৪)

ইবনে মনির হোসেন
  • 0
  • ৫৫
সদ্য বিবাহিত নব সংসার
তৃণ লতায় সাজানো স্বর্গ।
ঘরের কোণের পুরনো গাছটার ডালে
বাসায় দুটি ছানা চি-চি শব্দ
শুনতে ভালো লাগে। মা পাখিটি যখন
মুখে খাবার নিয়ে আসে
ডানা ঝাঁটিয়ে গলা লম্বা করে এগিয়ে আসে নগ্ন শরীরের বাচ্চা দুটি।
হালিম সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে ভরা জোয়ারে
খ্যাপা সাগরের বুক থেকে।

আজ অন্ধকারটা খুব বেশী ভয়ানক লাগছে,
আসে পাশের সবাই নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের আগাম খবর পেয়ে। হালিম ভাবল নতুন সংসার নতুন পাকা ঘর এটাই নিরাপদ। এই বাড়িতে জন্ম থেকে বড় হওয়া হালিম, বাড়ি ছেড়ে কোথাও যেতে মন টানে নি। আজকের মতো এতো ভয় ভয় কখনো লাগেনি। তবু সাহসের বুকে আগলে নিয়ে মন স্থির করল হালিম ।
এখন অনেক রাত বাহিরে ভয়ছে ঝড়ো হাওয়া, যেন ছিঁড়ছে রশি ভাঙ্গছে ডাল উড়ছে যেন কারো ঘরের চাল। যদিও হালিমের বুক ভয়ে ধুক ধুক করছে, তবু পাশে থাকা স্ত্রী-কে বুঝতে দেয়নি। টচটা জ্বালিয়ে ভয়ে আঁৎকে উঠে হালিম। ঘরের ভিতর যেন জোয়ারের পানি দরজার ফাঁক গলিয়ে ঢুকছে। স্ত্রী পরীবানু হালিম কে জড়িয়ে ধরলো। ভিতরটা অনুশোচনায় যেন কান্না করে উঠল হালিমের । পরীবানু বলে উঠলো এতো সাহস দেখিয়ে হালী বাড়িতে থাকা ভালো হয়নি। চলো আমরা বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়-আমার ভয় লাগছে!
হালিম শান্ত না দিলো ভয় পেয়ো না বানু দয়াল আছে কিছু হবে না! সাহস রাখো মনে, আমি তো তোমার পাশে আছি। গাছের ডালের পাখির দুটি বাচ্চা এখন কোথায় যাবে ? এখন যেন কি করছে পাখি গুলো। আমরা-তো ঘরের ভিতরেই আছি। পরিবানু পাখির বাচ্চা গুলোর কথা ভেবে নিজের ভয়ের কথা ভুলে গেলো। আকাশের গুড়ুম গু রুম ডাকে আর বিজলি চমকানো আলোতে শুকনো গলার দুটি প্রাণ সৃষ্টিকর্তার নাম জপে জপে গলা শুকিয়ে তৃষ্ণায় যেন বুক ফেটে যায় যায়। হঠাৎ যেন মনে হলো আকাশ নেমে এসেছে ঘরের ভিতর। হালিম পরিবানুকে বুকে চেপে ধরলো শক্ত করে। ঘরের পাকা ছাদ টা আস্ত কাগজের মতো উড়ে গেলো। পুরনো গাছটা উপড়ে পড়ল। আকাশের বিজলীর আলোয় চোখে পড়ল পাখির দুটি বাচ্চা প্রাণ হারালো! হালিমের ভাঙ্গা ছাদ ফুঁড়ে আসা আলোতে দেখল ঘরের পানিতে ভাসছে।

হালিম বউকে নিয়ে কোথাও বের হওয়ার সুযোগ হওয়ার আগেই ঘরের দেয়াল আঁচড়ে পড়লো দুজনের উপর। আর কোন শব্দ হালিম শুনতে পেলো না। অচেতন দেহে দেয়াল চাপায় পড়ে আছে ভয়াল রাত্রির বক্ষে।
বেলা গড়িয়ে দুপুর আগন্তুক ক্ষণে ঝিরঝির বৃষ্টি ভেজা ছন্নছাড়া ভাঙ্গা গাছের বাঁধা আর জোয়ারে ভাসা গ্রামের পথে যখন ফিরল মানুষ আপন গৃহে র খোঁজে। যদিও জোয়ারের পানি নেমে গেছে পেক কাদায় আর ঘূর্ণিঝড়ের লন্ডবন্ড তাণ্ডবে ভয়াল রাত্রির চিত্র এখন মানুষের চোখে, চির চেনা গ্রাম বড়ই অচেনা রূপ। তখন বাড়ির মানুষের কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল পুড়ো গ্রাম।
হালিম তো রাতে ঘরে ছিল সে কোথায় গেলো তার বৌ কোথায় ? হালিমের নতুন পাকা ঘর কাঁচের টুকরোর মতো ভেঙ্গে পরে আছে।
পরক্ষণেই চোখে পড়ল দেয়ালের নিচে চাপা পড়া দুটি অচেতন প্রাণ একজন অন্যজন কে জড়িয়ে ধরে আছে। কাছে গিয়ে কাছের মানুষ বুঝতে পার লো এখনো শরীরে উষ্ণতা আছে মানে বেঁচে আছে।

সেই থেকে বেঁচে ফেরা হালিমের ঘূর্ণিঝড় রাতের বর্ণনা শুনতে আশেপাশে গাঁয়ের মানুষ হালিম কে এক নামে চিনে ঘুর্ণিজয় হালিমডাক। তার ও একটা কারণ আছে যখনই কোন ঘূর্ণিঝড়ের খবর শুনে তখন থেকে আশে পাশে দুই গাঁয়ের মানুষের নিরাপত্তার ভার যেন হালিমের প্রাণে এসে লাগে তাই "ঘূর্ণিজয় হালিমডাক"সাইকেল নিয়ে বাড়ি বাড়ি ছুটে চলেন নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সচেতন তায়। যতক্ষণ মনে হয় দায়িত্ব শেষ হয়নি ততক্ষণ তিনি গ্রামের বাড়ি বাড়ি ছুটে চলেন নিরাপদে যাওয়ার তাগ্বিদেএগিয়ে চলেন তাই লোকের দেওয়া প্রিয় পরিচয় এখন ঘূর্ণিজয় হালিমডাক।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মাইদুল সরকার লিখতে থাকুন। ভাল হয়েছে গল্পটা।
ফয়জুল মহী অসাধারণ প্রকাশ করেছেন শুভ কামনা আপনার জন্য।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

সদ্য বিবাহিত নব সংসার তৃণ লতায় সাজানো স্বর্গ।

০৭ জুন - ২০২৪ গল্প/কবিতা: ১ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "গণহত্যা”
কবিতার বিষয় "গণহত্যা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর,২০২৪