“ঘুম পড়ানি মাসি পিষি, মোদের বাড়ি এসো; খাট নেই পালঙ্ক নেই বসতে দেবো কিসে! পিংকি মনির চক্ষু পেতে বসো”। -মায়ের মুখে এমন মধুর গান শুনতে-শুনতে ঘুম চোখে ভর করলো পিংকির। ঘুম হতেই এক অন্যরকম স্বপ্নে ব্যস্ত হয়ে গেলো। এ যেনো বাস্তব এক অভিজ্ঞতা পিংকির। কে যেনো পেছন থেকে আলতো করে সুরেলা কণ্ঠে ডাকছে-
—পিংকি...! পিংকি...!!
দমকা হাওয়া বয়ে গেলো পিংকির সম্পূর্ণ শরীর গড়িয়ে। শিওরে উঠলো গা। এত মধুর সুরে কেউ কখনো ডাকেনি পিংকিকে। ও পেছনে ফিরছে তো ফিরছে না। হঠাৎ ফিরেই বসলো, ফিরে যা দেখলো, তা দেখার জন্য পিংকি প্রস্তুত ছিলো না।
পিংকি: ওয়াও! এতো সুন্দর!
—ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো কয়েক মূহুর্ত। হঠাৎ কাছে এসে পিংকিকে ছুঁয়ে দিল, ওর অদ্ভুত একটা অনুভুতি হয়ে ধ্যান ভেঙে গেলো; আর হাত ধরে বললো-
—পিংকি, চলো...
ও হতবাগ! কই যাবো আমি তোমার সাথে? আর কে তুমি?
—আমি যে-ই হই, আজ তোমার একটা স্বপ্ন পূরণ করবো।
পিংকি: না..., আগে তোমার নাম বলো... তবেই যাবো।
—আচ্ছা বাবুনি, আমার নাম- রাশিনি।
পিংকি: (মনে মনে ভাবছে- এমন নাম তো আগে কখনো শুনিনি।) আচ্ছা আমার নাম জানলে কিভাবে তাহলে?
রাশিনি: আমি সব জানি গো, এবার চলো তো...
পিংকি: না, আগে বলো তো তাহলে আমার প্রাণপ্রিয় বন্ধু কে কে?
রাশিনি: ভিকি এবং শিকির কথা বলছো বুঝি...?
পিংকি: হুম, তুমি দেখি এটাও জানো, তাহলে এটা জানো না কেন যে... আমি আমার প্রাণপ্রিয় বন্ধুদের ছাড়া একার স্বপ্ন কখনোই পূরণ করবো না?
রাশিনি: ও, এই কথা? আগে বলবে তো! ১ মিনিট।
পিংকি: (কোথায় ১ মিনিট! ১ সেকেন্ডের মধ্যে দুজনকে হাজির করে দিলো। পিংকির চোখ তো আশ্চর্যে ছানাবড়া!) ভয়ে ভয়ে বললো-
—সত্যি করে বলো তো রাশিনি আপু তুমি কে?
রাশিনি: আসলে আমি পরির দেশ থেকে এসেছি, ওইযে দেখছো বিশাল সাগরটা, ওর মাঝখানেই ঠিকানা আমার। ভিকি শিকি একসাথে বলে উঠলো- ওয়াও! তুমি নিশ্চয়ই পরি তাহলে?
রাশিনি: না, শুধু পরি নয়, আজ থেকে তোমাদের বন্ধুও। আমাকে তোমরা বন্ধু বলেই ডাকবে। তবে আর দেরি নয়, চলো তো এবার রওনা করি...
ভিকি: ও, তুমি তাহলে পরির দেশে নিয়ে যাবে বন্ধু? কি মজা!
শিকি: আচ্ছা আমাদের ওখানে পৌঁছতে কতক্ষণ লাগবে?
রাশিনি: বলছি আমি, চোখ বন্ধ করো তোমরা।
ওরা চোখ বন্ধ করলো। ১ মিনিট না হতেই বললো-
—"এবার চোখ খুলো সবাই।"
চোখ খুলতেই ওরা থ... তারপর একসাথে চিৎকার করে বলে উঠলো- ইয়ে... আমরা চলে এসেছি পরির দেশে! আজ আমাদের স্বপ্ন পূরণ হলো!
ওদের খুশি দেখে রাশিনিও বেশ খুশি উপভোগ করতে লাগলো।
রাশিনি: এবার চলো তো তোমরা ঘুরে দেখবে।
ওরা: হ্যাঁ হ্যাঁ চলো বন্ধু।
~(পিংকি প্রায়ই ওর মায়ের মুখে পরির দেশের গল্প শুনতো। সেই গল্পের সাথে একে-একে সব মিলাতে লাগলো। বিশাল রাজপ্রাসাদ, প্রভাবশালী রাজা, অপরূপা রাণী, প্রাসাদের ভেতরে বাইরে যতো লোকের সমাগম, সবাই ভরপুর অলঙ্কারে সজ্জিত, পঙ্খিরাজ ঘোড়া, স্বর্ণের পাহাড়, ঝুলন্ত পালঙ্ক, জাদুর পালকি, উড়ন্ত দোলনা আরো কতো কি! চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অহরহ সোনা, রূপা, হিরা, মুক্তা, গহনা, স্বর্ণমূদ্রা আরো হরেক-হরেক নাম না জানা উজ্জ্বল ঝলমলে ধাতু সামগ্রী! এসবই যেনো পিংকির চেনা এক রূপ। মায়ের মুখ থেকেই এদের পরিচিতি। এভাবে অবাক করা না জানা না দেখা অনেক কিছুই ঘুরে ঘুরে দেখলো ভিকি শিকি পিংকি নতুন পরি বন্ধু রাশিনির সঙ্গে।)~
এরই মধ্যে পিংকির পায়ে কুটুস করে একটি মশা কামড় বসিয়ে দিলো। "উহু!" করে ঘুমের ঘুমের মাঝেই পায়ে থাপ্পর দিয়ে মশা তাড়ালো। এতে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় চোখের পাতা সরালো।
পিংকি: একি! চারিদিকে ঘুট্ঘুটে অন্ধকার কেনো? বন্ধু রাশিনি কই তুমি?
এটা শুনে মায়ের ঘুম ভেঙে গেলো, আর বললো-
—রাশিনি তোমার কোন্ কালের বন্ধু পিংকি? কে রাশিনি? কি সব বলছো গো!
পিংকি: ইয়ে মানে..... (বিড়বিড় করে উল্টোপাল্টা কী যেন বলছে পিংকি)
মা: হয়েছে বাবু ঘুমো এখন, সকালে তোমার বিড়বিড়ানি শুনবো, অনেক রাত এখন।
(তারপর গুনগুন গানে ঘুম পড়িয়ে দিলো পিংকিকে। আবার ঘুমের ঘোরে পিংকি অন্য কোনো স্বপ্নে ব্যস্ত হয়ে গেলো...।)
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
এই সংখ্যার বিষয়বস্তু হল- "স্বপ্নলোক"। এর সমর্থক শব্দ হয়- স্বপ্নের রাজ্য, কল্পনার রাজ্য, অবাস্তব কিন্তু সুন্দর; অর্থাৎ কাল্পপনিক এমন কিছু যা বাস্তবের তুলনায় সামঞ্জস্য নয়, তবে বিষয়টি অনেক সুন্দর ও কৌতুহলপূর্ণ। তাই আমি উক্ত বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে শিশুতোষ ছোট গল্প "পিংকির স্বপ্ন পূরণ" লিখেছি; যেখানে প্রধান চরিত্র পিংকিকে ঘিরে আবর্তিত হয় একটি পরির গল্প। যেখানে স্বপ্নযোগে পিংকির পরীর দেশ দেখার স্বপ্ন পূরণ হয়। রম্য-রসাত্মক ও কৌতুহলপূর্ণ এ কাল্পনিক গল্প থেকে বিনোদিত হতে পারে বড়রাও তথাপি শিশুদের জন্য বিশেষ করে লেখা। যা এ সংখ্যার বিষয়বস্তু "স্বপ্নলোক" এর সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
১৪ সেপ্টেম্বর - ২০২৩
গল্প/কবিতা:
১ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“নভেম্বর ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ নভেম্বর, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।
প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী