বলতে পারিনি, আমি তোমাকে ভালবাসী

ভালবাসার গল্প (ফেব্রুয়ারী ২০২৪)

মোহাম্মদ শাহজামান
  • 0
  • ৬১
আমি সবে মাত্র দশম শ্রেণিতে উঠলাম। জানুয়ারি মাস। শীতের সকালে স্কুলে যাইতে কষ্ট হয়। একদিকে শীত অপরদিকে কুয়াশায় আছন্ন থাকে সারা সকাল। দুপুরের দিকে একটু সুর্যের আলো দেখা দিলেও শীতের কমতি তেমন হয় না। এইজন্যেই মায়ের বানানো সুয়েটার এবং মাফলার পরে স্কুলে যেতে হয়। বাড়ি থেকে দু কিলোমিটার হাঁটার পর স্কুলে পৌছাই। এই দুই কিলোমিটার রাস্তা হলো শিশির ভেজা জমির আইল, কাঁদা মাটি এবং বাশের সাঁকো। বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার যাবার পরই কনকলতাদের বাড়ি। কনকলতাদের বাড়ি পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। প্রায় সময় কনকলতাদের বাড়ি সামনে আসলে কনকলতার সাথে দেখা হয়। দেখা হলেই কনকলতা সুন্দর একটা হাঁসি দিয়ে আমাকে একটা ফুল দেয়। ফুল দিয়ে কিছু না বলেই চলে যেত বাড়ির ভিতরে। আমি ফুলের জন্য ধন্যবাদও দিতে পারি না। ফুল দেওয়ার সাথে সাথে একটি হাঁসি দিয়ে চলে যেতো কনকলতা। মাঝে মাঝে শুধু ধন্যবাদ বলার সময় পেতাম। তাদের বাড়িতে ফুলের বাগান আছে তাই প্রতিদিন ফুল দিলেও ফুলের অভাব হয় না।
কনকলতা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। বয়স কম হলে দেখতে খুবই সুন্দর।কনকলতা, অতুলনীয় সুন্দর, তার নাম শব্দটি আমার হৃদয়ে প্রেম ও শোভা জাগিয়ে তোলে। তার রূপচারণ একটি অদ্বিতীয় ছবির মতো, যা অদ্ভুত এবং আকর্ষণীয়।কনকলতা একটি চমৎকার চোখের সাথে যেন আকাশ ছুঁয়ে আসে, তার চোখ মায়াবী। তার মুখের হাসি সৃষ্টি করে একটি সুখবর্ধনা, যা তার সাথে থাকা সবার চোখে হৃদয় পূর্ণ করে। তার চুল হল একটি কৃষ্ণ রাতের মধ্যে ঝরা একটি মহাসাগর, যা তার মাধুর্যের প্রতীক।
সে কোন দিন আমাকে কোনকিছু বলতো না। আমার কাছ থেকেও কোন কিছু শোনতে চাইতো না। মাঝে মাঝে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে তুমি আমাকে প্রতিদিন ফুল দাও কেন? কিন্তু সে আমার কোন কথাই শোনতো না। শুধুমাত্র থ্যাঙ্কস বা ধন্যবাদ শোনেই চলে যেত। স্কুলে পথে বা স্কুলে আমার সাথে কোন কথা বলতো না। আমি মাঝে মধ্যে কথা বলার চেষ্টা করলেও আমাকে পাত্ত দিতো না। বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে এরিয়ে যেতো। তবে নিয়মিত আমাকে ফুল দিতো। আমার কাছে এই মেয়েটি একটি অদ্ভুত চরিত্রের মনে হলো। একুশে ফেব্রুয়ারিতে আমাকে ফুল কিনতে হয় না। কনকলতা আমাকে ফুলের তোড়া বানিয়ে দিতো। আমি বিষয়টি লক্ষ্য করেছি; কনকলতা ফুলের বিনিময় আমার কাছে কোন প্রত্যাশাও করেনি।
আমি স্কুল পাস করে কলেজে ভর্তি হলাম। কলেজে পড়ার সময় প্রায়ই কনকলতাকে মনে পড়তো। তাই বাড়িতে আসলেই কনকলতাদের বাড়ির আশে পাশে ঘুরতাম। কিন্তু কনকলতার দেখা পাইতাম না। কনকলতার প্রতি আমার ভিতরে প্রেম জাগ্রত হলো। ভাবলাম কনকলতার সাথে দেখা করে বলবো, কনকলতা আমি তোমাকে ভালবাসী। এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি আসলাম। বাড়ি এসেই পরেরদিন মনে অনেক সাহস নিয়ে কনকলতাদের বাড়িতে গেলাম। বাড়িতে চোখে পড়ল ফুলের বাগান। নানান রকম ফুল। ফুলের বাগানের সাথেই পুজার ঘর। পুজার ঘর থেকে একজন বৃদ্ধা মহিলা বের হয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল, কি চাই? আমি একটু ভয়ে ভয়ে বললাম, কনকলতার সাথে দেখা করতে চাই। এরপর বৃদ্ধা যা বলল তার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। বৃদ্ধা আমাকে ভালভাবে দেখে বলল, কনকলতা তো গত বছরই স্বর্গে গেছে। আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। আমার চোখে যেন অন্ধকারের ছায়া পড়ল। আমি যেন আমা্র ভিতরে নাই। আমি তো তাকে বলতে পারিনি, আমি তোমাকে ভালবাসী।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ডায়মান্ডা সান ভালো লিখেছেন ভাইয়া।
ভালো লাগেনি ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
আপনাকে ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
অথই মিষ্টি বাহ্ অনেক সুন্দর লিখেছেন লেখক মহাশয়
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
আপনাকে ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

আমি সবে মাত্র দশম শ্রেণিতে উঠলাম।

১১ আগষ্ট - ২০২৩ গল্প/কবিতা: ১০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪