শুভ্র একজন মধ্যবয়সী মানুষ, সাধারণ চাকরি করে, ছোট পরিবারে তার সুখের সংসার। জীবনে এমন কিছু বিশেষ অর্জন নেই, যা নিয়ে সবাই তাকে নিয়ে কথা বলবে। কিন্তু শুভ্রর সবচেয়ে বড় গুণ হলো, জীবনের সব পরিস্থিতিতেই সে অবিচল, স্থিতিশীল। সুখে কিংবা দুঃখে, সাফল্যে বা ব্যর্থতায় তার মনের মধ্যে এক ধরনের শান্তি কাজ করে।
একদিন অফিসে শুভ্রর বড় ধরণের একটা সমস্যা হলো। তার দীর্ঘদিনের একটি প্রকল্পে ভুল ধরা পড়ল, এবং সেটা কোম্পানির ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ালো। সবাই ভাবলো, শুভ্র হয়তো এই ঘটনার জন্য খুব হতাশ বা ভেঙে পড়বে। কিন্তু উল্টো, শুভ্র সেদিনও সবার সাথে স্বাভাবিক ছিল, আগের মতো কাজ করছিল, এবং মিটিংয়ে সবাইকে শান্তভাবে বলল, “ভুল হয়েছে, তবে এটি ঠিক করা যায়। আমি দায়িত্ব নিচ্ছি এই কাজটি আবার নতুন করে করার।” শুভ্রর এমন স্থিতিশীল মনোভাব দেখে সবাই বিস্মিত হলো।
শুভ্রর সহকর্মী রিয়াজ একদিন তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কীভাবে এত স্থির থাকতে পারো? এত সমস্যা, অথচ তোমাকে দেখে মনে হয় না তুমি ভেতরে অস্থির হয়ে আছো।” শুভ্র হেসে উত্তর দিলো, “আমরা সবাই তো জীবনের স্রোতে ভাসছি, কিছু ঢেউ এলে ভেসে যেতে পারি। তবে আমি মনে করি, ঢেউয়ের আঘাত সত্ত্বেও নিজের ভিত শক্ত রাখাই জীবনের মূল কথা। সবকিছুরই সমাধান আছে, শুধু মনকে স্থিতিশীল রেখে পরিস্থিতিকে সামলানো শিখতে হয়।”
শুভ্রর এই মানসিকতা শুধু তার কর্মজীবনেই নয়, তার ব্যক্তিগত জীবনেও তাকে আরও দৃঢ় করে তুলেছিল। সংসারে কোনো সমস্যা হলে বা অর্থনৈতিক সংকট এলেও শুভ্র নিজেকে ধরে রাখত, তার পরিবারকেও সাহস দিত। সন্তানদের শেখাত, "জীবনে বড় হতে হলে শুধু সফল হওয়া জরুরি নয়, বরং প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও নিজেকে ধরে রাখা, নিজের স্থিরতা বজায় রাখা সবচেয়ে বড় শক্তি।”
সময়ের সাথে শুভ্রর জীবনেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু সে প্রতিটি চ্যালেঞ্জে স্থির থেকে মোকাবিলা করেছে, সবকিছুতে সহজ সমাধান খুঁজেছে। তার বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী, এমনকি পরিবারও তাকে নিয়ে গর্ববোধ করে। শুভ্রর জীবনের এই স্থিতিশীলতা তাকে শুধু একজন ভালো মানুষ নয়, একজন প্রেরণাদায়ী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে।
এভাবেই শুভ্রর জীবন যেন স্থিতিশীলতার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল। স্থিরতা, ধৈর্য, এবং স্থিতিশীলতার মাধ্যমে সে বুঝিয়ে দিয়েছিল যে, জীবনে বড় জয় কেবল উপরে ওঠার নয়, বরং সব পরিস্থিতিতে নিজেকে ধরে রাখার মধ্যেই প্রকৃত সাফল্য লুকিয়ে আছে।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
স্থিতিশীলতা আসে ধৈর্য থেকে, সময়ের পরীক্ষায় নিজেকে ধরে রাখা থেকে। জীবনের প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও স্থির থেকে সমাধানের পথ খুঁজে নেওয়া এবং আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা আমাদেরকে একজন পরিণত ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলে।
স্থিতিশীলতা মানে থেমে থাকা নয়, বরং প্রবাহমান সময়ের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং পরিবর্তনের মাঝেও নিজের আত্মবিশ্বাসে অবিচল থাকা।
২২ জুলাই - ২০২৩
গল্প/কবিতা:
১৩ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪