হক পথে বিজয় নিশ্চিত

বিজয় গাঁথা (ডিসেম্বর ২০২২)

S.M. Asadur Rahman
  • 0
  • 0
  • ৫৫
থানা হতে আসার সময় হলে,-'দাদা একসাথে যাই আজ আমার ডিউটি আপনাদের এলাকায় 'এস আই সুবির দাদা বললেন। রাত দশটা পার হতে চলছে না থাক আমার পরিবার আছে সাথে, ধন্যবাদ আসি তাহলে দাদা। এস আই সাহেব বললেন একটু দাঁড়ান বলেই ড্রাইভার কে কল দিলো,কি কথা হলো তারাই ভালো জানেন।বলল ড্রাইভার আসতেছে ঘুম হতে তুলে দিলাম, ফ্রেস হয়ে খেয়েই চলে আসবে দেরি হবে না।আচ্ছা বলে থেকে গেলাম। কৃতজ্ঞা থেকে বললাম তেলের টাকা তাহলে দাদা আমি দিব। আরে না ছি! আপনি কেন দিবেন! আর আপনার থেকে কি আমরা নিব নাকি? অসম্ভব, আর টাকা নেওয়ার অনেক জায়গা আছে। আমি আসছি টহল পুলিশ দুজনেই মনে হয় ঘুমে, কোথাও যাবেন না, একসাথে যাব কিন্তু দাদা, আসছি ওদের নিয়ে। ঠিক আছে বলে বিদায় দিয়ে ফিরে আসার প্রতীক্ষায়। সরকারি লোক ত, আসতে আসতে সেই রাত্র বারোটার সময় গাড়ি বের করলো। দাদা আমার সাক্ষীর একটা সাইকেল আছে যে।সমস্যা নেই ভ্যানে তুলে দিচ্ছি বলেই সকলে উঠে বসলাম। সাইফুল বড় মাপের ফুটবল খেলোয়াড়,তাঁর বাবা সাহসী ব্যাক্তি, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়ে আসলেন। আর সাইফুল কিনা চেয়ারম্যানের দলে। বাব - ছেলে দুই দলে।আমাদের বাজারে এসে পুলিশের ভ্যান থামলো। সাইফুল ও আরো দু'চার এগিয়ে আসলো। দেখছে ভ্যান হতে সাইকেল নামানো হচ্ছ্র এরপর সাহসী ব্যাক্তি নামলেন। সাইফুল তাঁর বাবা কে বললো বেশ অবাক করে পুলিশের গাড়িতে আসলেন!
হুম তাঁরাই বললো নিয়ে আসবে, তেলের টাকা পর্যন্ত নিলোনা। বোঝ এখন চেয়ারম্যান কার সাথে লাগছে। চেয়ারম্যান কে ভালো হইতে কস,হের চাচার কাছে আইসা মাফ চাইতে কস,সময় নাই রাত হয়েছ্র যাই গা, তুই গেলে আয়, না গেলে থাক বলেই বিদায় নিয়ে চলে৷ গেলেন। কত দম বুড়া বয়সে আর সাহসী, হক পথে যিনি তিনি দুর্বল হলেও তার পক্ষে আর চেয়ারম্যানের বিপক্ষে সাক্ষী দিয়ে আসতে পারলেন,শুধু নেহাত ই ভালো লোক বলে। সাইফুল ও তার গ্যাং অবাক এই জন্য যে পথিমধ্যে তাদের লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসীরা অপেক্ষায় ছিলো কিন্তু পুলিশের গাড়িতে সাক্ষী আসবে তা ভাবতে পারেনি।
বড়ভিটার চেয়ারম্যান সাহেব মিঃ চৌধুরী তার চাচার বাইক ছিনতাই করেছিলো, তার চাচার অপরাধ তিনি অন্য চেয়ারম্যানের হয়ে প্রচারে ছিলেন। কিন্তু তিনি নির্বাচিত হতে পারেন নি বলে তার লোকদের উপর জুলুম করছে। কার নির্বাচন করবে একদিকে ভাতিজা আর একদিকে ভায়রা ভাই। ভাইকে ভারী ও জ্ঞানী বিবেচনা করে তারই প্রচারে ছিলো,এটাই কাল হলো।
চেয়ারম্যানের চাচা বুদ্ধিজীবী বটে। কিন্তু তাহার বুদ্ধি কাজে না লাগায়ে শত্রুতা করে দুরত্ব বাড়ালো। শীতের মৌসুমে চারিদিকে ওয়াজ মাহফিল চলে। ফখরুদ্দিন - মঈনুদ্দিন সরকার তিন মাসের দায়িত্বে এসে ক্ষমতা লম্বা করে দুই বছর। সেই সময় ওয়াজ মাহফিল এর অনুমতি সহজে পাওয়া যেত না, বিভিন্ন শর্ত দিয়ে দিত তারপর কেউ কেউ করত কেউ কেউ করত না। কারণ বহু শর্তের মধ্যে একটা শর্ত ছিলো রাত দশটার মধ্যেই ওয়াজ শেষ করতে হবে। কিন্তু ওয়াজ মাহফিল গুলো জমতো শীতের রাত্রে দশটার পর থেকে।
দোকানে বসে আসি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম সাহেব এসে বসে চেয়ারম্যানের চাচা কে বলছেন, ভাই এবার ত নিজস্ব মসজিদ, এটার জন্য অনুমতি নিতে হবে এটা কি আর আনুষ্ঠানিক ভাবে বলতে হব্র,এটা ত আপনাদের ই মসজিদ। এবার ওয়াজ মাহফিল এর দিন ঠিক করা হলো। একটু খেদমত করেন দয়াকরে প্রশাসন হতে অনুমতি নিয়ে দেন। হুজুর চলে যাবার পর জিজ্ঞেস করলাম, অনুমতি নিতে আপনাকে কেন বললো? চেয়ারম্যান থাকতে। হাসি দিয়ে উনি বললেন এটাই জনগণের বিজয়। চেয়ারম্যান কে বাদ দিয়ে আসে যখন তখন চেয়ারম্যান এর উপর আমার বিজয়। আসলে গত মাসে পাশের পাড়ার মাদ্রাসা থেকে মাহফিলের ডেট ছিলো কিন্তু অনুমতি পায়নি। পরে চেয়ারম্যান গেছে মাজিস্ট্রেট মহোদয় এর কাছে, না করে দিয়েছেন। অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল সাকলাইন সাহেব ও ফেল মেরেছেন। যে ভায়রা ভাই চেয়ারম্যান নির্বাচনে হেরে গেছেন উনিও গেছেন দেয় নি অনুমতি। ত আমি চাঁদার রশিদ নিয়ে মাজিস্ট্রেট মহোদয় কে বলছি কিছু বাচ্চাদের পাগড়ি দেওয়া হবে তাহারা কোরআন মাজীদ কে হেফজ করেছে, সেই সাথে কিছু ওয়াজ নসিহত করা হবে যদি দয়া করে অনুমতি দিতেন। মহিলা মাজিস্ট্রেট ছিলেন মনোযোগ দিয়ে শোনার পর বেশ খুশি মনে অনুমতি দিয়ে বললেন উপরের চাপ আছে তাড়াতাড়ি শেষ করতে হবে দশটার আগে। ধন্যবাদ, দশটার আগে চেস্টা করা হতে গ্রাম এলাকা ত সমস্যা হবেনা, থানা হতে পুলিশ প্রটেকশন নিব আমরা সেক্ষেত্রে একটু দেরি হলে ও হতে পারে সমস্যা হবে না।আর যদি আপনি ও এই মহতি কাজে শরীক হতেন বলেই রশিদ আগায়ে দিলাম। তিনহাজার টাকা দান করেন উনি।
বের হয়ে এসে দেখি শত শত লোক দাড়ায়ে,বিভিন্ন এলাকার আলেমগন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। অনুমতি এবং দান দুটাই দেখে অবাক এও কি সম্ভব! যেখানে অনুমতি পাওয়াই কস্ট সাধ্য। চেয়ারম্যান এর হলো মন খারাপ। কিন্তু ভায়রা ভাই বেশ বুদ্ধিমান সে আমাকে বুকে জরায়ে ধরে বলল সাবাস তুমি পারবে জানতাম। আমার পক্ষের আলেমগন এখন সেই চেয়ারম্যান এর লোক হলো। তাই আমাদের ইমাম সাহেব আমার কাছে আসছিলেন। এটাও নিতে হবে।
যেদি ওয়াজ মাহফিল হয় সেদিন স্টেজে একটা চেয়ার ফাঁকা দেখা যায়। মাইকে ঢাকতেছে আনোয়ার ভাই আপনি আসুন, এই চেয়ার আপনার জন্য রাখা। আর আনোয়ার সাহেব ঘাসে পোয়ালের উপর বসে দেখছেন, পাশে বসে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরাও দেখছে আর হাসছে। এটাই ত সেই বিজয় নির্বাচন না করেও জনগণের মধ্যমনি কিভাবে হয়।দেখলাম -শিখলাম.।
বিজয় কি শুধু যুদ্ধের ময়দানে?
না। তা নয়। মানুষের মন জয় করাও কম কথা নয়।
আসেপাশে চেয়ারম্যান দের মত ক্ষমতাধর শত্রু থাকলেও জনমতের ঘৃণায় তাদের ও পরতে হয়। প্রায় দশ বছর পরে সেই চেয়ারম্যান এর খোঁজ পেলাম। তার বউ থাকে শহরে মেয়েকে ভালো স্কুলে দিছে, কিন্তু সম্পর্ক আগের মত নাই। সে এখন সাবেক চেয়ারম্যান। মদের আসরে তাসেরঘরে তারে পাওয়া যায়। মুরুব্বিদের পিছনে লেগে তার সংসার আজ ছন্নছাড়া। মাঝেমধ্যে সে যায় দেখে আসে। কিন্তু তার চাচা আনোয়ার হোসেন কে আজও আলেমগন স্মরণ করে শ্রদ্ধাভরে। আর রাজনৈতিক লোকজন ত বটেই।
লেখা থাক বিজয় গাঁথা হক পথের।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

হুম তাঁরাই বললো নিয়ে আসবে, তেলের টাকা পর্যন্ত নিলোনা। বোঝ এখন চেয়ারম্যান কার সাথে লাগছে। চেয়ারম্যান কে ভালো হইতে কস,হের চাচার কাছে আইসা মাফ চাইতে কস,সময় নাই রাত হয়েছ্র যাই গা, তুই গেলে আয়,

০১ জুলাই - ২০২২ গল্প/কবিতা: ১৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪