1.খুব সকালে দোকান খুলে খদ্দরের প্রতীক্ষা করছি। দূরে কে যেন আসছে; একটু কাছে আসতেই মুখটা চিনতে পারলাম। খদ্দের দেখলে দোকানদারদের মনে অস্বাভাবিক খুশি উদ্ভুত হয়, কিন্তুু আমার ওই পরিচিত খদ্দেরটাকে দেখে দোকান ছেড়ে পালানোর তীব্র ইচ্ছা জাগরুক হল। দোকানে এসেছে এলাকার সবুজ(সবুইজ্জা/গাজাখোর সবুজ)
2.:কিরে,শরীপ,ভালো,?
:'শরীফ'নামটার এমন বিকৃত উচ্চারণে প্রচন্ড রাগ হলো কিন্তু বললাম, "হু, আপনে? "
:ভালা, তোর দারে(কাছে) বাডার আইসকিরিম(বক্স আইসক্রিম) আছে?
:হু, লন। দুইশ টাহা। আগেও আমনের বাহি(বাকী) রইছে পাশশো টাহা তাও গত বছরের।
:হ, জানি। আমারে বিশ্বাস অয় না তোর? আমি কি তোর টাহা মাইররা খামু? এহন থাক।আগামী মাস হইতে চাঁদা অ্যাকশো টেহা বাড়াইয়া দিবি, ঠিকাছে?
শালা! টাকাগুলা তো দিলই না বরং টাকার কথা বলায় চাঁদার টাকা বাড়িয়ে দিল;বেজাত একটা। কিছু বলতেও পারি না কারন গাজাখোরটা এলাকার নেতা-খ্যাতাদের খুব প্রিয়-ভাজন। অথচ এই মানুষগুলো এক একটা জীবন্ত বর্জ্যস্তুপ ছাড়া কিছুই না; সারা জীবন সমাজে এরা দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে তবুও কারো সাধ্য হয়না তাদের ডাস্টবিনে ফেলে আসবে।
3. ছোঁড়াটা দোকানের সামনে ঘুরঘুর করছে, কিছু একটা বাগানোর তাল করছে নির্ঘাত। উরচুঙ্গা(এক ধরনের পতঙ্গ) টাইপ ছেলেটার হঠাৎ কোথা থেকে উদ্ভব হয়েছে কে জানে? খুব গরিব বোঝা যায় বা ওর পরিবার বলতে আদৌ কিছু নাও থাকতে পারে। সেদিন দেখি একটা কেকের খোশা(কেক মোড়ানো কাগজ)চাটতে চাটতে খেয়ে ফেলল। শুনেছি দুর্ভিক্ষের সময় নাকি মানুষ মাটির বিস্কুট বানিয়ে খায়। আমাদের সমাজের কিছু অংশে বছরের পর বছর দুর্ভিক্ষ লেগে আছে যা আমরা টের পাই না। সেদিন ছেলেটার জন্য খুব মায়া হয়েছিল কিন্তুু আজ সবুইজ্জার কাছে এতগুলো টাকা লস যাবার পর মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে আছে। মেজাজটা আরও গরম হলো যখন দেখলাম ছোঁড়াটা দু'দুটো চিপসের প্যাকেট নিয়ে সটকে পড়ছে।
"ধর, ধর..."বলে ধরতে গেলাম কিন্তু ও রাস্তার ওপার লক্ষ্য করে দৌড় দিল। আর ধরতে পারবো না ভেবে দোকানেই বসে রইলাম। কিন্তু পরক্ষণেই ছুটে গেলাম রাস্তার মাঝখানে; যেখানে ও পড়ে আছে, আর দৌড়ে পালাচ্ছে না; হয়তো কোনোদিন আর পালাবেও না। রক্তে ভিজে গেছে পথটুকু, গাড়ির মাতাল চাকা থেতলে দিয়েছে সম্পুর্ণ মাথাটা। তবে ওর হাতে এখনও ধরা আছে চিপসের প্যাকেট দু'টি ;উপহাসের দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
নিজেকে তখন একটা জঞ্জাল মনে হলো;জীবন্ত মানব- জঞ্জাল।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
ক্ষুধা নিবারণ মানুষের সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা যেমন কবি বলেন, "ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্নিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি। "
২২ এপ্রিল - ২০২২
গল্প/কবিতা:
৯ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“ ” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ , থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।